রোজার ফজিলত সম্পর্কিত ৫টি হাদিস
পবিত্র মাহে রমজান হিজরি সনের সেরা মাস। এ মাসেই আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআন মাজিদ নাজিল করেছেন। আল্লাহতায়ালার কাছে রোজা অত্যন্ত প্রিয় একটি ইবাদত। এর প্রতিদান আল্লাহতায়ালা  নিজে দেওয়ার ঘোশণা দিছেয়েন। অসংখ্য হাদিসে রোজার ফজিলত-মর্যাদা সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। নিম্নে রোজা সম্পর্কিত ৫টি হাদিস তুলে ধরা হলো-  এক. হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, কিয়ামতের দিন রোজা ও কোরআন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোজা বলবে, হে আমার প্রতিপালক, আমি তাকে পানাহার ও যৌনকর্ম থেকে বিরত রেখেছিলাম। সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। কোরআন বলবে, আমি তাকে রাতের ঘুম থেকে বিরত রেখেছিলাম। সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। নবী কমির (সা.) বলেন, অতএব উভয়ের সুপারিশই গৃহীত হবে। (মুসনাদে আহমাদ, সহিহ তারগিব, হাদিস : ৯৬৯) দুই.  হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, রোজা ঢালস্বরূপ। তোমাদের কেউ কোনোদিন সিয়াম পালন করলে তার মুখ থেকে যেন অশ্লীল কথা বের না হয়। কেউ যদি তাকে গালমন্দ করে অথবা ঝগড়ায় প্ররোচিত করতে চায় সে যেন বলে, আমি রোজা পালনকারী। (সহিহ বুখারি : ১৮৯৪, সহিহ মুসলিম : ১১৫১) তিন.  হজরত আবু সাইদ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে বান্দা আল্লাহর পথে একদিন মাত্র রোজা রাখবে, সেই বান্দাকে বিনিময়ে আল্লাহতায়ালা জাহান্নাম থেকে ৭০ বছরের পথ পরিমাণ দূরত্বে রাখবেন। (বুখারি, হাদিস : ২৮৪০) চার.  হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি পরিপূর্ণ বিশ্বাস ও পর্যালোচনাসহ রমজান মাসের রোজা পালন করবে, তার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী গুণাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (সহিহ বুখারি : ৩৮, সহিহ মুসলিম : ৭৬০) পাঁচ.  হজরত সাহল বিন সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, জান্নাতের একটি দরজা আছে, একে রাইয়ান বলা হয়। এই দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন একমাত্র রোজা পালনকারী ব্যক্তিই জান্নাতে প্রবেশ করবে। তাদের ছাড়া অন্য কেউ এই পথে প্রবেশ করবে না। সেদিন এই বলে আহ্বান করা হবে- সিয়াম পালনকারীগণ কোথায়? তারা যেন এই পথে প্রবেশ করে। এভাবে সব সিয়াম পালনকারী ভেতরে প্রবেশ করার পর দরজাটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। অতঃপর এ পথে আর কেউ প্রবেশ করেবে না। (সহিহ বুখারি : ১৮৯৬, সহিহ মুসলিম : ১১৫২) 
১১ মার্চ, ২০২৪

হাটহাজারী মাদ্রাসার সর্বপ্রথম শাইখুল হাদিস আর নেই
চট্টগ্রাম জামিয়া কাসেমুল উলূম চারিয়া মাদরাসার মুহতামিম হযরত মাওলানা আবদুল্লাহ হারুন মারা গিয়েছেন(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার মৃতুতে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার মুহতামিম আল্লামা মুফতি খলীল আহমদ কাসেমী (দা.বা.)। মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) প্রদত্ত এক শোক বার্তায় তিনি বলেন, মরহুম মাওলানা আবদুল্লাহ হারুন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত প্রায় ২৩ বছর যাবৎ হাটহাজারী মাদ্রাসার সর্বপ্রথম শাইখুল হাদিস হযরত মাওলানা সাঈদ আহমদ (রাহ.) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত জামিয়া কাসেমুল উলূম চারিয়া মাদ্রাসার মুহতামিমের দায়িত্ব অত্যন্ত দক্ষতা ও যোগ্যতার সাথে পালন করে এসেছেন। তার দায়িত্বকালে চারিয়া মাদ্রাসার প্রভূত উন্নতি হয়েছে এবং মাদ্রাসা প্রশাসন ও শিক্ষার সুষ্ঠু-সুন্দর পরিবেশ বজায় ছিল। তিনি প্রচার বিমুখ থেকে সাদাসিধে ও তাকওয়াপূর্ণ জীবনযাপন করতেন। সবার সঙ্গে উত্তম আচরণ করতেন এবং সবসময় মাদ্রাসার উন্নতি ও অগ্রগতি নিয়ে ফিকিরে থাকতেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ইলমে-দ্বীনের খেদমত করে গেছেন। তার দরসের মাধ্যমে হাজার হাজার আলেম তৈরি হয়ে দেশে-বিদেশে দ্বীনি খেদমত আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন।  স্মৃতিচারণ করে আল্লামা মুফতি খলীল আহমদ কাসেমী বলেন, মরহুম মাওলানা আবদুল্লাহ হারুনের সঙ্গে আমার অত্যন্ত আন্তরিকতাপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। বেশ কয়েক বছর তার সঙ্গে দ্বীনি কাজে যুক্ত ছিলাম। চারিয়া মাদ্রাসার যেকোনো সিদ্ধান্তমূলক কাজে তিনি গুরুত্ব দিয়ে আমার সাথে পরামর্শ করতেন। গত প্রায় তিন মাস আগে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মরহুমকে দেখতে গেলে তিনি আমার হাত ধরে বলেছিলেন, ‘আমার শারীরিক যে অসুস্থতা, জানি না আল্লাহ তাআলা আমাকে কতোদিন দুনিয়াতে রাখবেন। চারিয়া মাদ্রাসার প্রতি খেয়াল রাখবেন। মাদ্রাসার যে কোন প্রয়োজনে পাশে থাকবেন।’  শোকবার্তায় আল্লামা মুফতি খলীল আহমদ কাসেমী (দা.বা.) মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা জানিয়ে বলেন, তিনি যেন মরহুম মাওলানা আবদুল্লাহ হারুনকে মাগফিরাত দান করে আপন রহমতের ছায়াতলে আবৃত করে নেন এবং পরকালে জান্নাতের সুউচ্চ মাকাম দান করেন। পাশাপাশি চারিয়া মাদ্রাসার শোকাহত শিক্ষক-ছাত্রসহ মরহুমের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। 
১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

নির্বাচিত হাদিস
১) আমার সব উম্মতই জান্নাতে প্রবেশ করবে, শুধু অস্বীকারকারী ছাড়া। যারা আমাকে অনুসরণ করবে, তারাই জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যারা অনুসরণ করবে না, তারাই অস্বীকারকারী। —বোখারি। ২) যে ব্যক্তি একাগ্র বিশ্বাসের সঙ্গে সাক্ষ্য দেবে যে, ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ (সা.) তার রাসুল’, আল্লাহ তার জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম করে দেবেন। —বোখারি, মুসলিম। ৩) এক ঘণ্টার ধ্যান ৭০ বছরের নফল ইবাদতের চেয়ে উত্তম। —জামে উস-সগির, ইবনে হিব্বান। ৪) আল্লাহর সৃষ্টির বৈচিত্র্য নিয়ে ধ্যান করো, তার মহিমা আঁচ করতে পারবে। আল্লাহকে নিয়ে ধ্যান করতে যেও না (কারণ তুমি কখনো তার ক্ষমতার কূল-কিনারা পাবে না)। —আবু নায়িম, গাজ্জালি। ৫) যে মৌন থাকল, সে রেহাই পেল। —তিরমিজি ৬) সদাচরণ বা শুদ্ধাচার ও দীর্ঘ মৌনতার সমতুল্য কোনো আমল নেই। —আবু ইয়ালা, তাবারানি। ৭) হে আবু জর! তোমাকে কি আমি দুটি আমলের কথা বলব, যা পালন করা সহজ কিন্তু পাপ-পুণ্যের পাল্লায় ওজনে খুব ভারী? ‘অবশ্যই বলবেন, হে আল্লাহর রসুল’ [আবু জরের (রা.) উত্তর]। নবীজি (সা.) বললেন, আমল দুটি হচ্ছে—দীর্ঘ মৌনতা ও সদাচরণ বা শুদ্ধাচার! —মেশকাত, তাবারানি
১১ আগস্ট, ২০২৩

নির্বাচিত হাদিস
* প্রতিটি কাজ তুমি সবচেয়ে ভালোভাবে করবে। এটাই আল্লাহর নির্দেশ। যখন কোনো পশুকে জবেহ করবে—সঠিক নিয়মে ভালোভাবে জবেহ করবে, যাতে পশুটির কষ্ট কম হয়। ছুরি ভালো করে শানিয়ে নেবে, যাতে দ্রুত জবেহ হয়ে যায়। —মুসলিম, তিরমিজি * তোমার অধীনরা তোমার ভাই, তোমার খাদেম। আল্লাহ তাদের ওপর তোমাকে কর্তৃত্ব দিয়েছেন। তাই তাকে তাই খাওয়ানো উচিত, যা নিজে খাও। তাই পরানো উচিত, যা নিজে পরো। সামর্থ্যের বাইরে তাদের ওপর কাজের বোঝা চাপিয়ে দিও না। যদি তাদের ভারী কাজ দাও, তবে নিজেরাও সে কাজ সম্পাদনে (অতিরিক্ত মজুরি বা লোকবল দিয়ে) সাহায্য করো। —তিরমিজি, ইবনে মাজাহ * ‘অধীনস্থ কর্মীকে তার ভুলত্রুটির জন্য আমি কতবার ক্ষমা করব?’ একজন প্রশ্ন করল নবীজিকে (স.)।  নবীজি (স.) চুপ থাকলেন। দ্বিতীয়বার একই প্রশ্ন করার পরও নবীজি (স.) চুপ থাকলেন। তৃতীয়বার প্রশ্ন করার পর নবীজি (স.) উত্তর দিলেন—‘দৈনিক ৭০ বার ক্ষমা করবে।’ —আবু দাউদ, তিরমিজি * ক্রয়-বিক্রয় ও পাওনা টাকার তাগাদায় যে নমনীয়তা ও সৌজন্যবোধের পরিচয় দেয়, আল্লাহ তার ওপর রহমত বর্ষণ করেন। —বোখারি * অনেক ধনসম্পত্তি থাকলেই ধনী হওয়া যায় না। যার হৃদয় পরিতৃপ্ত, সেই হচ্ছে সত্যিকার ধনী। —বোখারি, তাবারানি
২১ জুলাই, ২০২৩

‍ নির্বাচিত হাদিস
n    প্রতিটি কাজ তুমি সবচেয়ে ভালোভাবে করবে। এটাই আল্লাহর নির্দেশ। যখন কোনো পশুকে জবেহ করবে—সঠিক নিয়মে ভালোভাবে জবেহ করবে, যাতে পশুটির কষ্ট কম হয়। ছুরি ভালো করে শানিয়ে নেবে, যাতে দ্রুত জবেহ হয়ে যায়। —মুসলিম, তিরমিজি n    তোমার অধীনরা তোমার ভাই, তোমার খাদেম। আল্লাহ তাদের ওপর তোমাকে কর্তৃত্ব দিয়েছেন। তাই তাকে তাই খাওয়ানো উচিত, যা নিজে খাও। তাই পরানো উচিত, যা নিজে পরো। সামর্থ্যের বাইরে তাদের ওপর কাজের বোঝা চাপিয়ে দিও না। যদি তাদের ভারী কাজ দাও, তবে নিজেরাও সে কাজ সম্পাদনে (অতিরিক্ত মজুরি বা লোকবল দিয়ে) সাহায্য করো।     —তিরমিজি, ইবনে মাজাহ n    ‘অধীনস্থ কর্মীকে তার ভুলত্রুটির জন্য আমি কতবার ক্ষমা করব?’ একজন প্রশ্ন করল নবীজিকে (স.)।  নবীজি (স.) চুপ থাকলেন। দ্বিতীয়বার একই প্রশ্ন করার পরও নবীজি (স.) চুপ থাকলেন। তৃতীয়বার প্রশ্ন করার পর নবীজি (স.) উত্তর দিলেন—‘দৈনিক ৭০ বার ক্ষমা করবে।’ —আবু দাউদ, তিরমিজি n    ক্রয়-বিক্রয় ও পাওনা টাকার তাগাদায় যে নমনীয়তা ও সৌজন্যবোধের পরিচয় দেয়, আল্লাহ তার ওপর রহমত বর্ষণ করেন।    —বোখারি n    অনেক ধনসম্পত্তি থাকলেই ধনী হওয়া যায় না। যার হৃদয় পরিতৃপ্ত, সেই হচ্ছে সত্যিকার ধনী।    —বোখারি, তাবারানি
২০ জুলাই, ২০২৩

‍ নির্বাচিত হাদিস
—ইমরান ইবনে হোসেইন (রা.); ইবনে মাজাহ যে কেউ আমার কাছে অঙ্গীকার করবে যে, কারও কাছে হাত পাতবে না—আমি তাকে জান্নাতের নিশ্চয়তা দেব। —সাওবান (রা.); আবু দাউদ মিথ্যুক, অঙ্গীকার ভঙ্গকারী, বিশ্বাস ভঙ্গকারী ও আমানতের খেয়ানতকারী কখনোই আমার অনুসারী হতে পারে না। —আবু হুরায়রা (রা.); বোখারি যে ব্যক্তি পাশা বা কোনো ধরনের জুয়ায় অংশ নিল, সে আল্লাহ ও তার রাসুলকে অমান্য করল। (ক্রিকেট, ফুটবলসহ যে কোনো খেলায় বাজি ধরাও জুয়া) —আবু মুসা আশয়ারি (রা.); আবু দাউদ, আহমদ দুনিয়ায় সৎকর্মশীলরা আখেরাতেও সৎকর্মশীল বলে বিবেচিত হবে। আর দুনিয়ায় জুলুমকারীরা আখেরাতেও জালেম হিসেবে গণ্য হবে। —কাবিসা ইবনে বুরমাহ (রা.); মুফরাদ (বোখারি) যদি কেউ অন্যের ওপর জুলুম করে, তবে জীবদ্দশায়ই যেন তার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নেয়। তা না হলে মহাবিচার দিবসে তার জুলুমের বিনিময়ে সমপরিমাণ নেকি কেটে নেওয়া হবে। যদি তার নেকি না থাকে, তবে নির্যাতিতের গুনাহ থেকে সমপরিমাণ গুনাহ জুলুমকারীর হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। —আবু হুরায়রা (রা); বোখারি যে ব্যক্তি সদাসর্বদা [‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ (ক্ষমা করো আল্লাহ) বলে] আল্লাহর কাছে গুনাহ মাফ চাইতে থাকে, আল্লাহ তার কঠিন বিপদ সহজ করে দেন। তাকে প্রতিটি দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত করেন। অভাবনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেন। —আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.); আবু দাউদ আল্লাহ বলেন, ‘হে আদম সন্তান! তুমি যতদিন পর্যন্ত আমার কাছে দোয়া করতে থাকবে এবং ক্ষমাপ্রার্থনা করতে থাকবে, আমি ততদিন পর্যন্ত তোমার গুনাহ মাফ করতে থাকব। তোমার গুনাহ যদি আকাশচুম্বীও হয় আর তুমি যদি আমার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করো, তাহলেও আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব। আমার সঙ্গে শরিক না করে তুমি যত গুনাহ করো না কেন, আমি ক্ষমা করে দেব।’ —আনাস ইবনে মালেক (রা.); তিরমিজি
০৭ জুলাই, ২০২৩
X