

মৃত্যু জীবনের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী। জন্ম নিলে একদিন মারা যেতে হবে। মায়াঘেরা দুনিয়ার রূপ-রঙ ছেড়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমাতে হবে— যেখানে কেউ কারও বন্ধু হবে না, হবে না শত্রুও। নিজের দায়িত্ব নিজেই নিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে রাব্বুল আলামিন মহাগ্রন্থ আল কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে এবং তোমরা নিজ নিজ কাজের প্রতিফল সম্পূর্ণভাবেই কিয়ামতের দিন পাবে।’ (সুরা আলে ইমরান : ১৮৫, সুরা আনকাবুত : ৫৭)
সুরা নাহলে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘অতঃপর নির্ধারিত সময়ে যখন তাদের মৃত্যু এসে যাবে, তখন এক মুহূর্তও বিলম্বিত কিংবা ত্বরান্বিত করতে পারবে না।’ (আয়াত : ৬১)
এ ক্ষেত্রে রুহ গ্রহণ করার জন্য আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে ফেরেশতা নির্ধারিত আছেন। তাকে মালাকুল মওত বা মৃত্যুর ফেরেশতা বলা হয়।
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, তোমাদের জন্য নিযুক্ত মৃত্যুর ফেরেশতা তোমাদের প্রাণ হরণ করবে। তারপর তোমাদের রবের নিকট তোমাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে। (সুরা আস-সাজদাহ : ১১)
এখন অনেকেই জানতে চান, মালাকুল মওত কি মানুষের মতো পশু-পাখিদেরও প্রাণ হরণ করবেন? এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মুসলিম বাংলায় বলা হয়েছে, ‘মৃত্যুর দায়িত্বে থাকা ফেরেশতা বা মালাকুল মওত মানুষসহ সব ধরনের জীবিত প্রাণীর রুহ কবজ করেন। এক হাদিসে বর্ণিত আছে যে, একবার মালাকুল মওত নবী করিমকে (সা.) বললেন, আমি আল্লাহর অনুমতি ছাড়া এমনকি একটি মশার প্রাণও নিজ ইচ্ছায় গ্রহণ করতে পারি না।’
ইমাম কুরতুবি (রহ.) এই প্রসঙ্গে বলেন, এই হাদিস থেকে বোঝা যায় যে, প্রত্যেক জীবের প্রাণ গ্রহণ করার দায়িত্ব আল্লাহ তায়ালা মালাকুল মওতকে দিয়েছেন।
এ ছাড়া, ইমাম মালিক ইবনে আনাসকে (রহ.) জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, মশার প্রাণও কি মালাকুল মউত কবজা করেন? তিনি পাল্টা জিজ্ঞাসা করলেন, এতে কি প্রাণ আছে? উত্তর দেওয়া হলো, জি হ্যাঁ।
তখন তিনি বললেন, তাহলে এর প্রাণও মালাকুল মাওতই কবজা করেন, কারণ কোরআনে এসেছে, আল্লাহ জীবসমূহের প্রাণ হরণ করেন তাদের মৃত্যুর সময় এবং যারা মরেনি তাদের নিদ্রার সময়। তারপর যার জন্য তিনি মৃত্যুর ফয়সালা করেন, তার প্রাণ তিনি রেখে দেন এবং অন্যগুলো ফিরিয়ে দেন একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল কওমের জন্য অনেক নিদর্শন রয়েছে। (সুরা আজ-জুমার : ৪২)
মন্তব্য করুন