রাইসিকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে, বললেন ইসরায়েলি নেতা
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন কয়েকজন ইহুদি ধর্মীয় নেতা। এটা ঈশ্বরের পক্ষ থেকে শাস্তি বলেও বিশ্বাস তাদের। হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় রাইসির মৃত্যুর পর সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে নিয়ে বিভিন্ন পোস্ট করেছেন ইহুদি ধর্মীয় নেতারা। ইসরায়েল সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না বললেও ইহুদি ধর্মীয় নেতারা রাইসির মৃত্যুর পর তার প্রতি ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন। ঘন কুয়াশার কারণে রোববার ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশে রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়। সফরসঙ্গীসহ রাইসি নিহত হওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর বিশ্বের বিভিন্ন নেতারা শোক প্রকাশ করছেন। তার বিপরীতের ইহুদি ধর্মীয় নেতারা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন। বেশ কয়েকজন ইসরায়েলি ইহুদি ধর্মীয় নেতা দাবি করেছেন, এটা ঐশ্বরিক হস্তক্ষেপ ছিল। রাইসিকে ‘তেহরানের জল্লাদ’ উল্লেখ করেছেন রাবি মেইর আবুতবুল। ফেসবুকে এক পোস্ট করে তিনি রীতিমতো রাইসির সমালোচনা করেছেন। ইসরায়েল ও ইহুদিদের প্রতি রাইসির মনোভাবের কঠোর নিন্দা জানান আবুতবুল। তার ভাষায়, এই হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনা ঐশ্বরিক শাস্তি। খুব নোংরা ভাষায় আবুতবুল লেখেন, সে ইহুদিদের ঝুলাতে চেয়েছিল, তাই ঈশ্বর তাকে এবং তার সঙ্গে থাকা ইসরায়েল বিরোধী ক্রুকে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত করে বাতাসে বিক্ষিপ্ত করে দিয়েছেন। ইরানের সদ্য প্রয়াত প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে বিষবাষ্প উগড়ে দিয়েছেন রাবি নির বেন আর্টজিও। এ ঘটনাকে ঈশ্বরের অসন্তোষ বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। এক ফেসবুক পোস্টে এই রাবি লেখেন, নিজের প্রতি জুলুম করো না, ঈশ্বর বলেছেন, যথেষ্ট হয়েছে। আপনি ঈশ্বরকে রাগান্তিত করেছেন। রাইসি ও তার প্রশাসনের পদক্ষেপের দিকে ইঙ্গিত করে এমন মন্তব্য করেন বেন আর্টজি। ইহুদি আরেক ধর্মীয় নেতা রাবি ইৎজ-চাক বাৎজরি আরও এক কাঠি সরেস। তিনি রাইসিকে ফেরাউনের দোসর হামানের সঙ্গে তুলনা করেছেন। রাইসির মৃত্যুর খবর আসার আগে বাৎজরি ফেসবুকে এক পোস্টে লেখেন, হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে দুষ্টু হামান। নিজের পোস্টে বাইবেলের একটি লাইনও জুড়ে দেন এই রাবি। ইরানের উত্তরাঞ্চলে মর্মান্তিক ওই হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় রাইসিসহ আরোহী ৯ জনের কেউ প্রাণে বাঁচেননি। প্রায় ১৫ ঘণ্টার অভিযান শেষে দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারকারীরা কারও জীবনের চিহ্নই খুঁজে পাননি। ইরানের সরকার জানিয়েছে, হার্ড ল্যান্ডিং কারণে এই দুর্ঘটনার ঘটেছে। তবে দুর্ঘটনার আগে হেলিকপ্টার থেকে একবার যোগাযোগ করা হয়, সেই ছিল শেষ কথা।
২০ মে, ২০২৪

গাজার উত্তরে প্রতিরোধের মুখে ইসরায়েলি বাহিনী
ফিলিস্তিনের গাজার উত্তরাঞ্চলীয় শহর জাবালিয়ার সরু গলিপথগুলোর সবকিছু গুঁড়িয়ে দিয়ে এগোচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের বিমান থেকে ছোড়া বোমা আর ট্যাঙ্কগুলো মার্কেট, দোকান ও বাড়ি মাটিতে মিশিয়ে দিচ্ছে। তবে এবার প্রতিরোধের চেষ্টা করছে হামাসের যোদ্ধারা। এতে ওই অঞ্চলের সরু পথগুলোতে দুপক্ষের তীব্র লড়াই হচ্ছে। আর দক্ষিণের রাফার চতুর্দিকে জড়ো হওয়া ইসরায়েলের ট্যাঙ্কগুলোতেও হামলা চালাচ্ছে হামাস। খবর রয়টার্সের। স্থানীয়রা বলছেন, গাজার সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির জাবালিয়ার কেন্দ্রস্থলের বাজার এলাকায় ইসরায়েলের সাঁজোয়া যানের বহর ঢুকে পড়েছে। সেগুলো এগিয়ে যাওয়ার পথে বুলডোজার দিয়ে বাড়ি, দোকানসহ আশপাশের সব গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। পশ্চিম জাবালিয়ার বাসিন্দা আয়মান রজব রয়টার্সকে বলেন, ‘বিমান ও ট্যাঙ্কগুলো আবাসিক এলাকা, মার্কেট, দোকান, রেস্তোরাঁসহ সবকিছু মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে।’ ইসরায়েল জানিয়েছিল, যুদ্ধের প্রথম দিকেই সামরিক বাহিনী জাবালিয়া পরিষ্কার করে ফেলেছিল। তবে হামাসের ফের সংঘটিত হওয়ার চেষ্টা রুখে দিতে গত সপ্তাহে আবার তাদের বাহিনী সেখানে ফিরেছে। এরই মধ্যে দীর্ঘমেয়াদে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। এর সামরিক শাখা আল-কাসেম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু উবেইদা শুক্রবার ভিডিওবার্তায় বলেন, ‘আমাদের জনগণের ওপর কয়েক মাস ধরে যে নির্মম আগ্রাসন চলছে, তা বন্ধের জন্য আমরা পুরোপুরি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, গত কয়েকদিনে তাদের সেনারা জাবালিয়ায় ৬০ জনেরও বেশি হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে এবং একটি ‘ডিভিশনাল পর্যায়ের অভিযানে’ অস্ত্র গুদাম খুঁজে পেয়েছে। ডিভিশনাল পর্যায়ের অভিযানে সাধারণত কয়েক হাজার সেনা সম্বলিত বেশ কয়েকটি ব্রিগেড অংশ নিয়ে থাকে, তাতে এটি গাজা যুদ্ধের অন্যতম বৃহত্তম অভিযানের রূপ নিয়েছে। দেশটির সামরিক বাহিনী আইডিএফ বলেছে, ‘সপ্তম ব্রিগেডের নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র বহু বিমান হামলা পরিচালনা করেছে, এতে শত্রু নির্মূল হওয়ার পাশাপাশি তাদের অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে।’ আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার উত্তরেও হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। মাত্র কয়েক ঘণ্টায় সেখানে অন্তত ৪০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আল ফালুজা নামক এলাকায় পানি আনতে গিয়ে অন্তত আট ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। এ ছাড়া খান ইউনিসে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। গতকালও মিশরের সীমান্তবর্তী রাফার আকাশে ঘন ধোঁয়ার কুণ্ডু্লী উঠছিল। এখানে বাড়তে থাকা ইসরায়েলি হামলার কারণে শহরটি থেকে কয়েক লাখ মানুষ পালিয়ে গেছে। গাজার অপেক্ষাকৃত নিরাপদ শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল রাফাহ। জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের মুখপাত্র জিনস লার্কে বলেছেন, ‘লোকজন আতঙ্কিত হয়ে আছে আর পালানোর চেষ্টা করছে। ইসরায়েলের নির্দেশ অনুযায়ী অধিকাংশ বাসিন্দা উত্তর দিকে উপকূলের দিকে সরে যাচ্ছে। তবে সেখানে যাওয়ার মতো কোনো নিরাপদ সড়ক নেই।’ শুক্রবার ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক ও যুদ্ধবিমানগুলো রাফার কয়েকটি অংশে বোমা বর্ষণ করেছে। হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসেম ব্রিগেড ও তাদের মিত্র ইসলামিক জিহাদ জানিয়েছে, রাফার পূর্বদিকে, দক্ষিণ-পূর্ব দিকে এবং মিশরের সঙ্গে সীমান্ত ক্রসিংয়ের ভেতরে জড়ো হওয়া ইসরায়েলি বাহিনীকে লক্ষ্য করে তারা ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী গোলা ও মর্টারের গোলা ছুড়েছে। ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের মূল ত্রাণ সংস্থা জানিয়েছে, ৬ মে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর রাফাহ থেকে ৬ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ পালিয়ে গেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সাড়ে সাত মাস ধরে চলা যুদ্ধে অন্তত ৩৫ হাজার ৩০৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ত্রাণ সংস্থাগুলো বারবার সতর্ক করে বলেছে, ব্যাপক অনাহার এবং জ্বালানি ও ওষুধের তীব্র সংকটে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। ইসরায়েল বলছে, হামাসকে ধ্বংস ও তাদের দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবশ্যই রাফাহ দখল করতে হবে। তীব্র লড়াইয়ের মধ্যেই মার্কিন সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গাজার উপকূলে তাদের স্থাপিত অস্থায়ী জেটি থেকে ত্রাণ নিয়ে ট্রাকগুলো ভূখণ্ডটির ভেতরে প্রবেশ করা শুরু করেছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এই প্রথম অবরুদ্ধ গাজায় সাগরপথে ত্রাণ পৌঁছানো শুরু হল। তবে এ উদ্যোগ কোনোভাবেই স্থলপথে ত্রাণ সরবরাহের বিকল্প হতে পারবে না বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন।
১৯ মে, ২০২৪

বন্ধু হারাচ্ছে ইসরায়েল, চাপে নেতানিয়াহু
একে একে হাত ছাড়ছে মিত্ররা। আর তাই ক্রমেই একঘরে হয়ে পড়ছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। পরম মিত্র যুক্তরাষ্ট্র পাশে থাকলেও ইউরোপে পায়ে নিচ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে ইসরায়েলের। নেতানিয়াহুর পশ্চিমা বন্ধুরা এখন তার টুঁটি চেপে ধরেছেন। তাই বুঝি শেষ রক্ষা হচ্ছে না, ক্ষমতার লোভে মসনদ আঁকড়ে থাকা নেতানিয়াহুর। সারা দুনিয়া একদিকে আর নেতানিয়াহু একদিকে। কারও কথা গায়েই মাখছেন না তিনি। গাজায় নিরপরাধ নারী ও শিশুসহ প্রায় ৩৫ হাজার মানুষকে হত্যার কুশীলব নেতানিয়াহুকে, কেউই যেন থামাতে পারছে না। তবে বিশ্বজুড়ে চাপ বাড়ছে নেতানিয়াহুর ওপর। ঘরের ভেতরও জ্বলছে বিক্ষোভের আগুন। এবার সম্ভবত সবচেয়ে বড় ধাক্কাটাই খেতে যাচ্ছেন নেতানিয়াহু। সম্প্রতি ইসরায়েলি সরকারকে একটি চিঠি লিখেছে বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ। বার্তা সংস্থা রয়টার্স শুক্রবার ওই চিঠিটি দেখেছে। সেখানে বলা হয়েছে, গাজায় যেন আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলে ইসরায়েল। আর মানবিক সহায়তা নিশ্চিতেও ইসরায়েলি সরকারকে চাপ দিয়েছে বিশ্বের শক্তিশালী এসব দেশ। তাই মনে করা হচ্ছে, এবার ভালোই চাপে পড়বেন নেতানিয়াহু। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ফোরাম, গ্রুপ সেভেনের সদস্য দেশ- কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও যুক্তরাজ্য ওই চিঠিতে সই করেছে। তবে পিঠ টান দিয়েছে গ্রুপের অন্যতম সদস্য যুক্তরাষ্ট্র। গ্রুপ সেভেনের বাইরেও অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, নিউজিল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক, সুইডেন ও ফিনল্যান্ড চিঠিতে সই করেছে। এসব দেশের অধিকাংশের কাছ থেকেই অস্ত্র আমদানি করে ইসরায়েল। গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায় অভিযান চালাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে নেতানিয়াহু সরকার। সেখানে থাকা হামাসের যোদ্ধাদের নির্মূল করতে চায় তেল আবিব। কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছে, এতে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে। কেননা গেল প্রায় সাত মাস ধরে গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি হামলার কারণে ১০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি রাফায় আশ্রয় নিয়েছে। চিঠিতে ইসরায়েলের পশ্চিমা মিত্ররা জানায়, নিজের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে গেলেও দেশটিকে পুরোপুরিভাবে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলতে হবে। গেল ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভেতর ঢুকে হামাসের হামলার ঘটনার পর একই মাসের শেষদিকে নেতানিয়াহু প্রশাসন পাল্টা পদক্ষেপ নেয়, তবে তা অনেক ক্ষেত্রেই আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে। পশ্চিমা দেশগুলো ইসরায়েলকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তারা রাফায় পূর্ণমাত্রার অভিযানের বিরোধী। একই সঙ্গে গাজার জনগোষ্ঠীর কাছে যেন ত্রাণ পৌঁছে সেটাও নিশ্চিত করতে আহ্বান জানিয়েছে তারা। কিন্তু ইসরায়েল বলছে, তারা গাজায় ত্রাণ পৌঁছাতে বাধা দিচ্ছে না। যদিও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এর ভিন্ন চিত্রই দেখা মিলছে।
১৮ মে, ২০২৪

গাজায় তীব্র লড়াই, ৫ ইসরায়েলি সেনা নিহত
গাজায় যুদ্ধে ইসরায়েলের পাঁচ সেনা নিহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সঙ্গে তীব্র লড়াই চলাকালে একটি এলাকায় তারা প্রাণ হারান। তবে কাদের হামলায় সেনারা নিহত হলেন তা নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। আলজাজিরা জানায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাবাহিনী (আইডিএফ) একটি পোস্ট দিয়ে নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে। তারা জানায়, উত্তর গাজায় ‘সন্ত্রাসীদের’ সঙ্গে তুমুল লড়াই হচ্ছে। এর মধ্যে একটি ঘটনাতেই ইসরায়েল ৫ সেনা হারিয়েছে। আহত হয়েছেন আরও তিনজন। তাদের অবস্থা গুরুতর। বুধবার এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জন্য আইডিএফ নির্দিষ্ট করে কাউকে দাবি করেনি। তবে ইসরায়েলের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করছে, আইডিএফের ট্যাংক থেকে ভুল লক্ষ্যে ছোড়া গোলায় তারা নিহত হন।  নিহতদের চারজন সার্জেন্ট এবং একজন ক্যাপ্টেন পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তাদের বয়স ২০ থেকে ২২ বছরের মধ্যে। তারা সবাই প্যারাসুট ব্রিগেডের সদস্য ছিলেন। এদিকে রাফায়ও তীব্র লড়াই হয়েছে। মঙ্গলবার সেখানে এক ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন। গত সপ্তাহে গাজার সর্ব দক্ষিণের ওই এলাকায় শুরু করা স্থল অভিযানে এই প্রথম কোনো ইসরায়েলি সেনা নিহত হলেন। সোমবার পর্যন্ত ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর অফিসিয়াল হিসাবে গাজায় চলমান স্থল অভিযান শুরুর পর ২৭২ সেনা নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ হাজার ৬৭৪ সেনা। এর সঙ্গে গত দুই দিনের নিহতের সংখ্যা যোগ হবে। অপরদিকে গাজাবাসীর জন্য আরও একটি সুখবর আছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাবাসীদের জন্য মানবিক সাহায্য পাঠাচ্ছে যুক্তরাজ্য। ব্রিটিশ ত্রাণবাহী জাহাজটি ইতিমধ্যে সাইপ্রাস থেকে গাজার উদ্দেশে রওনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। প্রায় ১০০ টন সাহায্যের ব্রিটিশ চালানটি যত দ্রুত সম্ভব গাজায় পৌঁছবে। জাহাজটি গাজা উপকূলে মার্কিন সামরিক বাহিনী দ্বারা নির্মিত অস্থায়ী বন্দরে ভিড়বে। এটিই হবে বন্দরটিতে ভেড়া প্রথম কোনো জাহাজ।
১৬ মে, ২০২৪

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কাছে তুলাধুনা হলেন নেতানিয়াহু
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের তোপের মুখে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে বিবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় যুদ্ধোত্তর পরিকল্পনার প্রশ্নে সরকারের ব্যর্থতার জন্য খোলাখুলি হতাশা প্রকাশ করেছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। এতে যুদ্ধকালীন মন্ত্রিপরিষদের মধ্যে সামরিক অভিযানের দিকনির্দেশনা নিয়ে বিভক্তি প্রকাশ্যে এলো। ইসরায়েলের নেতাদের মধ্যে এ ধরনের বিভক্তি খুবই বিরল। এক সভায় গ্যালান্ট প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে জনসমক্ষে যুদ্ধপরবর্তী পরিকল্পনা নিয়ে ঘোষণা দিতে বলেন। তিনি বলেন, গাজায় যে ইসরায়েলের বেসামরিক বা সামরিক শাসন প্রতিষ্ঠার কোনো পরিকল্পনা নেই তা জনসম্মুখে নেতানিয়াহু বলে দিক। তিনি রাগান্বিত সুরে বলেন, অক্টোবর থেকে আমি মন্ত্রিসভায় এই বিষয়টি ধারাবাহিকভাবে উত্থাপন করছি। কিন্তু কোনো সাড়া পাইনি। এতে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু কঠোর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস ও ফাতাহের কার্যকলাপ তুলে ধরেন। নেতানিয়াহু জানান, তিনি ‘ফাতাহস্তানের’ কাছে ‘হামাস্তান’ দিয়ে দিতে এখনই প্রস্তুত নন।  ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী সতর্ক করে বলেন, সিদ্ধান্তহীনতা গাজায় কেবল দুটি খারাপ বিকল্প রেখে যাবে। ইসরায়েলের অভিযান শেষে হামাসই গাজা শাসন করবে। নয়তো ইসরায়েলি সামরিক শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। হতে পারে, আমাদের সামরিক অর্জনগুলো ক্ষয় হয়ে যাবে। হামাসের ওপর চাপ কমিয়ে দেবে এবং জিম্মিদের মুক্তির জন্য একটি কাঠামো অর্জনের সম্ভাবনাকে ধ্বংস করবে। যুদ্ধ মন্ত্রিসভার আরেক সদস্য বেনি গ্যান্টজ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে একমত পোষণ করেন। এ সদস্য এর আগেও নেতানিয়াহুর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘গ্যালান্ট সত্য কথা বলেছেন। যে কোনো মূল্যে দেশের জন্য সঠিক কাজ করা নেতৃত্বের (নেতানিয়াহুর) দায়িত্ব।’ এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনও গ্যালান্টের সুরে কথা বলেছেন। গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে ইসরায়েলের একটি পরিষ্কার এবং সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকা প্রয়াজন বলে তিনি মনে করেন। বুধবার (১৫ মে) কিয়েভে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলি দখলদারিত্বকে আমরা সমর্থন করি না এবং করবও না। অবশ্যই আমরা গাজায় হামাস শাসনকেও সমর্থন করি না।’ এ বিষয়ে একটি সমন্বিত পরিকল্পনায় আসতে ইসরায়েলকে তাগিদ দেন তিনি।
১৬ মে, ২০২৪

ইসরায়েলি লবির সঙ্গে যুক্ত হয়ে ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, গত নির্বাচন নিয়ে বিএনপির চক্রান্ত ভেস্তে যাওয়ার পর তারা আন্তর্জাতিক ইসরায়েলি লবির সঙ্গে যুক্ত হয়ে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। মঙ্গলবার (১৪ মে) দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত ‘ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধের দাবিতে ও বিএনপির দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সমাবেশ ও মানববন্ধনে’ তিনি এ অভিযোগ করেন।  পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিনি হত্যা বন্ধে কোনো প্রতিবাদ না করে বিএনপি-জামায়াত ধর্মীয় ‘সেন্টিমেন্ট’ নিয়ে অপরাজনীতি করছে। ফিলিস্তিনের পক্ষে না দাঁড়িয়ে তারা ইসরায়েলের দোসরে পরিণত হয়েছে, নেতানিয়াহুর দোসরে পরিণত হয়েছে। ইসরায়েলের এজেন্টদের সঙ্গে মিলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। আমাদের কাছে তথ্য-প্রমাণ আছে। এদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। তিনি বলেন, পুরো পৃথিবী গাজায় ইসরায়েলের বর্বরতার প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি বিএনপি ও জামায়াত, যারা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করার অপচেষ্টা করে, এই মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে তারা একটা শব্দও উচ্চারণ করেনি। কারণ কেউ অসন্তুষ্ট হতে পারে। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যার বিরুদ্ধে নিশ্চুপ থাকা ইসলামী দলগুলোরও সমালোচনা করেন মন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, আমাদের দেশে কিছু ইসলামী দল আছে, তারা কারণে-অকারণে বায়তুল মোকাররমে দাঁড়িয়ে যায়। এখন আপনাদের কেন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না? আপনারা কোথায় এখন? নির্বাচনের আগে সরকার নামানোর জন্য বায়তুল মোকাররমের সামনে এসে আন্দোলন করেন। ফিলিস্তিনি ভাইদের পক্ষে, ইসরায়েলের বিপক্ষে তো একটা বড় মিছিল করতে দেখলাম না আপনাদের। তিনি বলেন, এরা আসলে ইসলামপ্রেমী নয়, এরা হলো মুখোশধারী ধর্ম ব্যবসায়ী। এদের মুখোশও উন্মোচন করতে হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান বলেন, সরকারের সমালোচনাকারী নামসর্বস্ব রাজনৈতিক দলের নেতাদের অনেকেরই দলের চেয়ে ব্যক্তি বড়, শরীরের চেয়ে গাল বড়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেককেই দেখি সরকারের বিরুদ্ধে বড় বড় ভাষণ দেয়, বিষোদগার করে। কিন্তু নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে তো তাদের কথা বলতে শুনলাম না। এরা কোথায়? এরা কোথায় লুকিয়ে আছে?  ফিলিস্তিনিদের প্রতি অটল সমর্থন ব্যক্ত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সরকার ও মানুষের অবস্থান সবসময় ফিলিস্তিনিদের পক্ষে। আমাদের নীতি ফিলিস্তিনি মুক্তিকামী মানুষের পক্ষে। বাংলাদেশ  স্বাধীনতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন টয়েলের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য বলরাম পোদ্দার, আওয়ামী লীগ নেতা এমএ করিম, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা মানিক লাল ঘোষ, স্বাধীনতা পরিষদের নেতা ফরিদুজ্জামান, মুহাম্মদ রোকন উদ্দিন পাঠান প্রমুখ।
১৪ মে, ২০২৪

‘নিহত হয়েছে দেড় হাজার ইসরায়েলি সেনা’
লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর মহাসচিব সাইয়েদ হাসান নাসরুল্লাহ বলেছেন, গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত আঞ্চলিক প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হামলায় অন্তত দেড় হাজার দখলদার ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে। হাসান নাসরুল্লাহর উদ্বৃতি দিয়ে খবর প্রেস টিভির।  সাম্প্রতিক মাসগুলোতে লেবানন-ইসরায়েল সীমান্ত সংঘর্ষে নিহত দখলদার সেনাদের সংখ্যা এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত কি না তা পরিষ্কার করেননি হিজবুল্লাহ মহাসচিব। গতকাল (সোমবার) হিজবুল্লাহর সিনিয়র কমান্ডার মোস্তফা বদরুদ্দিনের শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া ভাষণে এ তথ্য প্রকাশ করেন হাসান নাসরুল্লাহ। ২০১৬ সালে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইহুদিবাদী ইসরায়েলের হামলায় শহিদ হন মোস্তফা বদরুদ্দীন।  গাজার প্রতিরোধকামী যোদ্ধা এবং হিজবুল্লাহর রকেট ও ড্রোন হামলায় হতাহত ইসরায়েলি সেনাদের কথা গোপন রাখে নেতানিয়াহু সরকার।  হিজবুল্লাহ মহাসচিব তার বক্তৃতায় আরও বলেন, গাজা উপত্যকায় ৩৫ হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিক হত্যা করলেও ইহুদিবাদী ইসরায়েল তাদের ঘোষিত কোনো লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি।  উল্লেখ্য, ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা করে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এই হামলায় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের মতে, ১ হাজার ২০০ ফিলিস্তিনি নিহত হন। এর প্রতিক্রিয়ায় গাজায় নির্বিচারে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ইসরায়েলি সেনাদের হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ৩৫ হাজারেরও বেশি নিরীহ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।  গাজায় নিহতের অর্ধেকই নারী ও শিশু। সেখানে প্রতি ১০ মিনিটে নিহত হচ্ছে একটি করে শিশু। আহত হয়েছে লক্ষাধিক মানুষ। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ায় এখনো নিখোঁজ মানুষের সংখ্যা হাজার হাজার। ইসরায়েলি হামলায় গাজার এক-তৃতীয়াংশের বেশি ভবন মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। উপত্যাকার ২৩ লাখ মানুষের প্রায় সবাই উদ্বাস্তু হয়ে পড়েছে।  গাজায় মানবিক সহায়তা নিয়ে ঢুকতে পারছে না কোনো গাড়ি। ত্রানবাহী ট্রাকেও হামলা করছে ইসরায়েলী সেনারা। কখনো কখনো ত্রানবাহী ট্রাক আটকে গাজাবাসীর জন্য নিয়ে যাওয়া দ্রব্য সমাগ্রী ফেলে দিচ্ছে তারা। ফলে ব্যাপক খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে সেখানে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ব্যাপক মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে পুরো গাজা উপত্যকায়।  জাতিসংঘ সহ অন্যন্য মানবাধিকার সংস্থা গাজায় দুর্ভিক্ষের সতর্কতা উচ্চারণ করছে বারবার। এছাড়া গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ বিক্ষোভ অব্যাহত থাকলেও তা কানে তুলছে না ইসরায়েল। 
১৪ মে, ২০২৪

আল আকসায় তাণ্ডব চালিয়ে ইসরায়েলি পতাকা প্রদর্শন
ইসলামের তৃতীয় পবিত্র স্থান আল আকসা মসজিদে তাণ্ডব চালিয়েছে ইসরায়েলিরা। মঙ্গলবার (১৪ মে) মসজিদে কয়েক ডজন ইসরায়েলি ঢুকে পড়ে। এ সময় সেখানে এক ব্যক্তি ইসরায়েলি পতাকা প্রদর্শন করেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক ডজন ইসরায়েলি নাগরিক আল আকসা প্রাঙ্গণে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছে। এ সময় সেখানে এক উগ্রবাদী ইসরায়েলি পতাকা প্রদর্শন করেন।  সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, আল আকসা প্রাঙ্গণে এক ইহুদি ব্যক্তি ইসরায়েলের পতাকা বের করে মেলে ধরলে সেখানে ইসরায়েলি পুলিশের কয়েকজন সদস্য তার সঙ্গে শান্তভাবে কথা বলতে থাকেন। পুলিশের সঙ্গে কথা বলার সময় ওই ব্যক্তি কিছুক্ষণ পতাকা প্রদর্শন করে তা গুটিয়ে নেন এবং মসজিদ প্রাঙ্গণের একদিকে চলে যান।  ইসরায়েলের এ পতাকাটি পবিত্র স্থানটির সঙ্গে ইহুদিদের সংযোগ বাড়াতে বেয়াদেনু র‌্যালির পর প্রদর্শন করা হয়েছে। বেয়াদেনু ইহুদির একটি গোষ্ঠী যারা আল আকসার নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়। ইসরায়েলি পতাকা উত্তোলনের জন্য তারা ১৪ মে এ র‌্যালির আয়োজন করে।  অন্যদিকে ফিলিস্তিনিরা এ দিবসকে নাকাবা বা মহাবিপর্যয়ের দিন হিসেবে স্মরণ করে থাকেন। এ দিনের ঘটনার মধ্য দিয়ে ইসরায়েল সৃষ্টির প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছিল।  উল্লেখ্য, আল আকসা কম্পাউন্ডে ইসরায়েলিদের তাণ্ডব নিয়মিত ঘটনা। যদিও ইহুদি ধর্মের নিয়ম অনুযায়ী পবিত্রতার ধারণার কারণে আল আকসা প্রাঙ্গণে ইহুদিদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।  অন্যদিকে গত ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনি মুসলিমদের জুমার নামাজেও বাধা দিয়ে আসছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। তবে তাদের বাধার কারণে অনেকে পুরাতন এ নগরীর সড়কে নামাজ আদায় তরে থাকেন।  ইসরায়েলি বাহিনীর তাণ্ডব নতুন নয়। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে ইসরায়েলিরা মসজিদে নামাজরত অবস্থায় মুসল্লিদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
১৪ মে, ২০২৪

রাফাহতে ইসরায়েলি আক্রমণে হামাস নির্মূল হবে না
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার রাফাহ শহরে সর্বাত্মক ইসরায়েলি আক্রমণে হামাস নির্মূল হবে না; বরং তা নৈরাজ্য উসকে দেবে। রোববার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএসের এক অনুষ্ঠানে ব্লিঙ্কেন এ কথা বলেন। এদিকে উত্তর গাজায় হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর তীব্র লড়াই চলছে বলে জানা গেছে। রোববার রাতে এখানকার জাবালিয়া শহরে আক্রমণ করে ইসরায়েলি বাহিনী। অন্যদিকে দক্ষিণের রাফাহ শহরে থেমে থেমে আকাশ হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। শহরটি থেকে এ পর্যন্ত ৩ লাখ ৬০ হাজার মানুষ সরে গেছে। খবর রয়টার্সের। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএসের এক অনুষ্ঠানে ব্লিঙ্কেন বলেন, রাফাহতে পূর্ণমাত্রায় ইসরায়েলি আক্রমণ সম্ভাব্যভাবে অবিশ্বাস্য চড়া মূল্য নিয়ে আসতে পারে। এমনকি রাফাহতে একটি বড় আক্রমণ হামাসের হুমকির অবসান ঘটাতে পারবে না। উল্লেখ্য, রাফাহতে ইসরায়েলের সর্বাত্মক হামলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র। এ ধরনের হামলা না চালাতে ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়িয়েছে ওয়াশিংটন। কিন্তু তা সত্ত্বেও সেখানে আকাশ হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জাচি হানেবির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। এ ফোনালাপে রাফাহতে ইসরায়েলের সম্ভাব্য বড় আক্রমণের বিষয়ে ওয়াশিংটনের উদ্বেগের কথা হানেবিকে জানিয়ে দেন সুলিভান। ফোনালাপ নিয়ে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাফাহতে সম্ভাব্য একটি বড় ইসরায়েলি স্থল অভিযান নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দীর্ঘদিনের উদ্বেগের কথা সুলিভান আবার বলেছেন। হোয়াইট হাউস আরও বলেছে, হানেবি নিশ্চিত করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগকে বিবেচনায় নিচ্ছে ইসরায়েল। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। রাফাহর পূর্বাঞ্চলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এরই মধ্যে ৩ লাখ ৬০ হাজার ফিলিস্তিনি এলাকাটি ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশ সতর্ক করে বলেছে, রাফাহতে পূর্ণমাত্রায় ইসরায়েলি আক্রমণ সেখানে থাকা উদ্বাস্তুদের ওপর একটি বিপর্যয়কর প্রভাব ফেলতে পারে। ইসরায়েল বলেছে, তারা রাফাহতে বেসামরিক মানুষের হতাহতের সংখ্যা ন্যূনতম রাখার চেষ্টা করছে। এদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জানান, উত্তর গাজার জাবালিয়া এলাকায় বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান বোমা ফেলছে। জাবালিয়া খুবই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। এখানে শরণার্থী শিবিরও রয়েছে। হামলার শুরুর আগে সাধারণ মানুষকে এলাকা থেকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয় ইসরায়েল। টাইমস অফ ইসরায়েল রোববার জানিয়েছে, ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) এক থেকে দেড় লাখ ফিলিস্তিনিকে জাবালিয়া এলাকা থেকে চলে যেতে বলেছে। জাবালিয়াতেও হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাদের তীব্র লড়াই হচ্ছে বলে জানা গেছে।
১৪ মে, ২০২৪

গাজায় সেনাদের ভয়াবহ পরিণতির কথা জানালেন ইসরায়েলি সেনাপ্রধান
সাত মাস পেরিয়েছে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান। এ অভিযানে প্রাণ হারিয়েছেন কয়েকশ ইসরায়েলি সেনা। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও কয়েক হাজার। যদিও এসব বিষয় প্রকাশ্যে শিকার করেনি ইসরায়েলি বাহিনী। তবে এবার গাজায় সেনাদের ভয়াবহ পরিণতির খবর জানিয়েছেন ইসরায়েলের সেনাপ্রধান। সোমবার (১৩ মে) আশরাক আল-আওসাতের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  রোববার (১২ মে) ইসরায়েলের সেনাপ্রধান হার্জি হালেভি বলেন, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা করে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। তাদের হামলার ফলে ইসরায়েলে যা ঘটেছে তার জন্য তিনি দায়বদ্ধ।  তিনি বলেন, প্রতিদিন আমি এগুলোর ভার আমার কাঁধে অনুভব করি। আমার হৃদয়ও এ ঘটনার তাৎপর্য পুরোপুরি বুঝতে পারে।  সেনাপ্রধান বলেন, আমি সেই কমান্ডার যে আপনাদের ছেলেমেয়েদের যুদ্ধে পাঠিয়েছি। সেখান থেকে তারা এখনো ফিরতে পারেনি। এমন পরিস্থিতির কারণে তারা সেখানে অপহরণেরও শিকার হয়েছে।  গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় হামাস। ফিলিস্তিনি  এ গোষ্ঠীর হামলায় ইসরায়েলের প্রায় এক হাজার ২০০ মানুষ নিহত হন। বার্তা সংস্থা এএফপি ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বরাতে জানিয়েছে, নিহতদের বেশিরভাগ বেসামরিক লোক।  নজিরবিহীন এ হামলার পর দেশটি থেকে প্রায় ২৫০ জন ইসরায়েলি এবং বিদেশিকে অপহরণ করে হামাস। এরপর তাদের গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়।  দেশটির তথ্যমতে, হামাসের হাতে এখনো ১২৮ জন জিম্মি রয়েছেন। তাদের মধ্যে  ৩৬ জন নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মধ্যে সেনাসদস্যরাও রয়েছেন।  অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। এ ছাড়া এ পর্যন্ত ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।
১৩ মে, ২০২৪
X