ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের তোপের মুখে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় যুদ্ধোত্তর পরিকল্পনার প্রশ্নে সরকারের ব্যর্থতার জন্য খোলাখুলি হতাশা প্রকাশ করেছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। এতে যুদ্ধকালীন মন্ত্রিপরিষদের মধ্যে সামরিক অভিযানের দিকনির্দেশনা নিয়ে বিভক্তি প্রকাশ্যে এলো। ইসরায়েলের নেতাদের মধ্যে এ ধরনের বিভক্তি খুবই বিরল।
এক সভায় গ্যালান্ট প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে জনসমক্ষে যুদ্ধপরবর্তী পরিকল্পনা নিয়ে ঘোষণা দিতে বলেন। তিনি বলেন, গাজায় যে ইসরায়েলের বেসামরিক বা সামরিক শাসন প্রতিষ্ঠার কোনো পরিকল্পনা নেই তা জনসম্মুখে নেতানিয়াহু বলে দিক।
তিনি রাগান্বিত সুরে বলেন, অক্টোবর থেকে আমি মন্ত্রিসভায় এই বিষয়টি ধারাবাহিকভাবে উত্থাপন করছি। কিন্তু কোনো সাড়া পাইনি।
এতে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু কঠোর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস ও ফাতাহের কার্যকলাপ তুলে ধরেন। নেতানিয়াহু জানান, তিনি ‘ফাতাহস্তানের’ কাছে ‘হামাস্তান’ দিয়ে দিতে এখনই প্রস্তুত নন।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী সতর্ক করে বলেন, সিদ্ধান্তহীনতা গাজায় কেবল দুটি খারাপ বিকল্প রেখে যাবে। ইসরায়েলের অভিযান শেষে হামাসই গাজা শাসন করবে। নয়তো ইসরায়েলি সামরিক শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। হতে পারে, আমাদের সামরিক অর্জনগুলো ক্ষয় হয়ে যাবে। হামাসের ওপর চাপ কমিয়ে দেবে এবং জিম্মিদের মুক্তির জন্য একটি কাঠামো অর্জনের সম্ভাবনাকে ধ্বংস করবে।
যুদ্ধ মন্ত্রিসভার আরেক সদস্য বেনি গ্যান্টজ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে একমত পোষণ করেন। এ সদস্য এর আগেও নেতানিয়াহুর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘গ্যালান্ট সত্য কথা বলেছেন। যে কোনো মূল্যে দেশের জন্য সঠিক কাজ করা নেতৃত্বের (নেতানিয়াহুর) দায়িত্ব।’
এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনও গ্যালান্টের সুরে কথা বলেছেন। গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে ইসরায়েলের একটি পরিষ্কার এবং সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকা প্রয়াজন বলে তিনি মনে করেন।
বুধবার (১৫ মে) কিয়েভে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলি দখলদারিত্বকে আমরা সমর্থন করি না এবং করবও না। অবশ্যই আমরা গাজায় হামাস শাসনকেও সমর্থন করি না।’ এ বিষয়ে একটি সমন্বিত পরিকল্পনায় আসতে ইসরায়েলকে তাগিদ দেন তিনি।
মন্তব্য করুন