রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে জনগণের শক্তি বাড়াতে হবে : আনু মুহাম্মদ
রাষ্ট্রীয় শক্তি খুব সংঘবদ্ধ, তারা সংগঠিত এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে জনগণের শক্তি বাড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। ‘নিত্যপণ্যের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, দফায় দফায় বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির রুখতে’ শুক্রবার (২৯ মার্চ) বিকাল ৩টায় শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন। সমাবেশে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের সভাপতিত্বে ও  গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অঙ্কন চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহা মীর্জা, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. হারুন অব রশীদ, গণমুক্তি ইউনিয়নের সভাপতি নাসির উদ্দীন আহমেদ নাসু, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমাদত্ত, বঙ্গন্ধু হলে ছাত্র সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কাফী, নারী অধিকার কর্মী মার্জিয়া প্রভা, সিনিয়র নাগরিক সুজিত চৌধুরী প্রমূখ। আনু মুহাম্মদ বলেন, এদেশটি শাসকগোষ্ঠী, লুটেরা গোষ্ঠী  দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে এবং তাদের অনুগ্রহের আমরা ঠিকে আছি, বেঁচে আছি এই বোধ থেকে দেশের জনগণ মুক্ত না হলে এবং দেশের ওপরে জনগণের মালিকানা বোধ তৈরি না হলে ক্ষমতা তৈরি করার রাজনীতি বিকাশ হবে না। তিনি আরও বলেন, একটা দেশের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, জনসমর্থন, জনসম্মতি ছাড়া কর্তৃত্ব এবং ফ্যাসিবাদী বৈশিষ্ট্য নিয়ে একটা সরকার দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতাই থাকলে এর পরিণতি কি হয় এটি দেশের জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি ও মানুষের জীবন যাত্রার দেখে তা স্পষ্ট হয়। সুতরাং এটা লড়াইয়ের সাথে কোনো না কোনোভাবে সম্পর্কিত। এর বিরুদ্ধে সর্বশক্তি নিয়োগ করতে হবে, এর ছাড়া আমাদের কোনো পথ নাই। এ লড়াইয়ে দেশের জনসাধরণ সর্বশক্তি নিয়োগ দেবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন। সাংবাদিক আবু সাঈদ খান বলেন, একটি দেশের বাজার ব্যবস্থা এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এটা কঠিন কিছু নয়। বাজার ব্যবস্থার জন্য বাজারের সুশাসনের পাশাপাশি যে জিনিসটা দরকার বিকল্প বাজারের ব্যবস্থা। কিন্তু সরকার তা করেনি। তিনি আরও বলেন, দেশের চাল, ডাল, তেল, আটা, পেঁয়াজের ব্যবসা মুষ্টিমেয় লোকের হাতে চলে গেছে। এখানে যদি মধ্যবিত্ত ও ছোটখাটো ব্যবসা যারা আগে ছিল তারা যদি থাকতো তাহলে বাজারে এ ধরণে সিন্ডিকেট তৈরি হতো না। সে কারণে দেশের বাজার ব্যবস্থাকে সংস্কার করা দরকার। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় মধ্যবিত্ত ও ছোটখাটো ব্যবসায়ীদেরকে সুযোগ সুবিধা দেওয়া দরকার। বাজারের জিনিসের দাম বেড়ে গেছে সরকারের তো কোনো ক্ষতি নেই, তাদের লোকজনের এত দুঃখ নেই। একমাত্র একটা ব্যাপার ছিল ভোটের সময় জবাবদিহিতা করতে হতো, কিন্তু এখনতো আর ভোট হয় না, সে কারণে তাদের জবাবদিহিতাও করতে হয় না।
২৯ মার্চ, ২০২৪

যা দেখি যা শুনি / দ্রব্যমূল্যের ন্যায্যতা মিলবে কীভাবে
দুদিন আগে ফেসবুকে বেশ কয়েকজন লিখেছেন: ‘আলু ৩০ টাকা, বেগুন ২৫ টাকা, পেঁয়াজ ৬০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। দাম কমার খবর প্রচার হয় না।’ যশোরের এক কৃষক-সন্তান জানালেন, আমাদের জমিতে অনেক বেগুন হয়েছে। কিন্তু বিক্রি করতে পারছি না। কেননা ভোক্তা অধিকার রাজধানীসহ সারা দেশে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। গত ২২ মার্চ ‘দৈনিক বণিক বার্তা’র প্রধান শিরোনাম ছিল ‘এক সপ্তাহেও বাস্তবায়ন হয়নি কৃষি বিপণন অধিদপ্তর নির্ধারিত ২৯ পণ্যের যৌক্তিক মূল্য’, ‘সবজির দাম কমলেও মাছ-মাংসের দাম ১০-২৫ শতাংশ বাড়তি’। সবাই স্বীকার করবেন সরকারের নানা সংস্থা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনার নানা ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু মাঝে মাঝে ভাবি, তারা সব সময় কি ঠিক কাজটি করতে পারছে? জানি না কী কারণে সব সহলের মানুষের গণমাধ্যমের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। খুব কি প্রয়োজন বাজার মনিটর করতে গিয়ে আগেভাগে টেলিভিশনের ক্যামেরাগুলোকে খবর দিয়ে দেওয়া। আমার তো মনে হয়, যারাই বাজার তদারকি করতে যাবেন তাদের মতো করে যাবেন। কোথায় কোথায় সমস্যা হচ্ছে তা পর্যবেক্ষণ করবেন, যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এবং পরে সংস্থার অফিসে এসে সাংবাদিকদের অবহিত করবেন। আবার কেউ কেউ বলেন, সাংবাদিক ও ক্যামেরা না থাকলে ম্যাজিস্ট্রেটদের বিরুদ্ধে সত্য-মিথ্যার মিশেলে সংবাদ তৈরি হয়ে যাবে। তখন ম্যাজিস্ট্রেটরা বিপদে পড়বেন। গত কয়েকদিনে আমি কয়েকটি জেলা শহরে গিয়েছি। কাঁচাবাজারে গিয়েছি, চালের বাজারে গিয়েছি, নিজের চোখে দেখেছি কীভাবে নানা ধরনের সিন্ডিকেট কাজ করে। গত শুক্রবার সকালবেলা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকায় সবজি বিক্রেতার কাছে জানলাম, তখনো বেগুনের দাম ৬০ টাকা। অথচ তার এক দিন আগে কুমিল্লার রাস্তার পাশে সবজি বিক্রেতা বলেন, বেগুনের দাম ৩০ টাকা। তাহলে এখানে বড় ধরনের গলদ আছে। আমি কয়েকদিনে বুঝতে পেরেছি, আর সরকারি কর্মকর্তারা এগুলো বুঝতে পারছেন না? অবশ্যই বোঝেন। বাজারে গিয়ে ব্যবসায়ীদের জরিমানা করলে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। জরিমানা করাটাও জরুরি; কিন্তু কোন ব্যবসায়ীদের জরিমানা করবেন, তা ভেবেচিন্তে করতে হবে। খুচরা বাজারে অভিযান চালানো, জেল-জরিমানা করার মধ্য দিয়ে বাজার স্থিতিশীল করা সম্ভব নয়। বাজার স্থিতিশীল করতে স্মার্ট বাজার ব্যবস্থাপনার কোনো বিকল্প নেই। অল্প পুঁজির ব্যবসায়ীরাও লোভে পড়ে অতি মুনাফার দিকে ঝুঁকে যান; কিন্তু বড় ব্যবসায়ীরা যারা ওই নির্দিষ্ট বাজারে প্রভাব বিস্তার করেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনো কোনো সময় দেখা যায়, বড় বড় ব্যবসায়ী ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যান। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে বাজার অস্থির করে বাজার নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না। গোয়েন্দা নজরদারিতে চিহ্নিত করে ফেলতে হবে কোন কোন ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা চক্র তৈরি করেছেন এবং তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড কী? গরুর মাংস এখন পলিটিক্যাল প্রোডাক্ট হয়ে গেছে। ব্যবসায়ীদের ভয় দেখিয়ে কাজ করানো যাবে না। এক বেসরকারি টেলিভিশনের সংবাদে দেখলাম, কাতারে রমজান উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় ৯০০টি পণ্যের মূল্য অর্ধেক করা হয়েছে। সরকার নির্ধারিত মূল্যের বেশি কেউ বিক্রি করতে পারবে না। কাতার বিশ্বের ধনী দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে। দেশটি বিশ্বের অসহায় মুসলমানদের সাহায্য করে সব সময়। প্রতি বছরের মতো এবারও পবিত্র রমজান মাসের আগে কয়েকশ পণ্যের দাম কমাল কাতার সরকার। ২০২১ সালে দেশটি প্রায় ৬৫০টি পণ্যের দাম কমিয়েছিল। ২০২২ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮০০-তে, ২০২৩ সালে সেটি আরও বাড়িয়ে ৯০০-র বেশি পণ্যের দাম কমায় মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশটি। এ বছরও প্রায় একই সংখ্যক পণ্যের দাম কমিয়েছে কাতার। কাতারের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশটিতে ৯ শতাধিক পণ্যে বিশেষ মূল্যছাড় দেওয়া হচ্ছে। গত ৪ মার্চ থেকে কার্যকর হয়েছে নতুন মূল্যতালিকা, চলবে রমজান মাসের শেষদিন পর্যন্ত। দেশটির বড় বড় খুচরা বিক্রয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হচ্ছে বলে জানিয়েছে কাতার সরকার। কাতারে রমজান মাস উপলক্ষে মূল্যছাড় দেওয়া পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে দুধ, দই এবং দুগ্ধজাত পণ্য, টিস্যু পেপার, পরিচ্ছন্নতা উপকরণ, রান্নার তেল ও ঘি, পনির, হিমায়িত সবজি, বাদাম, বোতলজাত পানি, জুস, মধু, মুরগি, রুটি, টিনজাত খাবার, পাস্তা, ভার্মিসেলি, গোলাপজলসহ আরও অনেক কিছু। কাতার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, খাদ্য ও ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় পবিত্র রমজান মাসে সেগুলো কম দামে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গত ১১ মার্চ আওয়ামী লীগ সরকারের টানা চতুর্থ মেয়াদের দুই মাস পূর্ণ হয়েছে। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে ১১ জানুয়ারি সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। বিজয়ী সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নতুন মন্ত্রিসভার জন্য দুই মাস যথেষ্ট সময় না হলেও, গত দুই মাসে সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত সাধারণ মানুষের কল্যাণে আসবে বলে মনে করেন অনেকে। সরকারের সামনে ছিল মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চ্যালেঞ্জ। সরকারের প্রথম ক্যাবিনেট বৈঠকে চাল, ভোজ্যতেল, চিনি ও খেজুরের ওপর শুল্ক কমানোর নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর এই চার পণ্যের শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় এনবিআর। এনবিআর সিদ্ধ ও আতপ চাল আমদানির ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেয়। একই সঙ্গে সিদ্ধ ও আতপ চাল আমদানিতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বা রেগুলেটরি ডিউটি ২৫ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করে। অপরিশোধিত চিনি আমদানিতে প্রতি মেট্রিক টনে আমদানি শুল্ক কমিয়ে ১ হাজার টাকা করা হয়েছে। আগে যা ছিল দেড় হাজার টাকা। আর পরিশোধিত চিনি আমদানিতে টনপ্রতি শুল্ক কমিয়ে করা হয়েছে ২ হাজার টাকা, আগে যা ছিল ৩ হাজার টাকা। পরিশোধিত ও অপরিশোধিত সয়াবিন তেল এবং পাম অয়েল আমদানির ক্ষেত্রে আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। আর খেজুর আমদানির ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক ২৫ থেকে ১০ শতাংশ কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। দুই. একটা আশাবাদী হওয়ার মতো সংবাদ আছে; নিত্যপণ্যের বাজারে মধ্যস্বত্বভোগী থাকবে না। নিত্যপণ্যের বাজারে মধ্যস্বত্বভোগীর দৌরাত্ম্য বিলীন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এবার অনলাইনে অ্যাপের মাধ্যমে নির্দিষ্ট করা হবে নিত্যপণ্যের উৎপাদক, আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের তালিকা। অ্যাপের মাধ্যমে সহজে জানা যাবে কোন আমদানিকারক কোন পণ্য কত পরিমাণ আমদানি করেছেন, কত পরিমাণ বাজারজাত করেছেন, কত পরিমাণ পণ্য তার কাছে মজুত আছে। একইভাবে অ্যাপের মাধ্যমে জানা যাবে তালিকায় থাকা কোন পাইকারি ব্যবসায়ীর কাছে কত পরিমাণ পণ্য মজুত আছে বা বাজারজাত করেছেন। সরকার মনে করছে, এর মধ্য দিয়ে বাজারে সব ধরনের নিত্যপণ্যের সরবরাহ পরিস্থিতি সুনিশ্চিত করা যাবে, কেউ অধিক মুনাফার আশায় মজুত করতে পারবে না এবং এ ব্যবস্থায় থাকবে না কোনো মধ্যস্বত্বভোগী। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, সরকার স্মার্ট বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে। একই সঙ্গে নিত্যপণ্যের বাজারে মধ্যস্বত্বভোগীর অস্তিত্ব বিলীন করারও উদ্যোগ নিয়েছে। কারণ, বাজার অস্থির করার পেছনে বড় ভূমিকা পালন করে মধ্যস্বত্বভোগীরা। তাদের দৌরাত্ম্যে জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। অনৈতিক মুনাফার আশায় সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করে বাজারে পণ্যের সংকট তৈরি করে এরা। এতে কষ্ট বাড়ে ভোক্তার, বিব্রত হয় সরকার। এমন পরিস্থিতি থেকে রেহাই পেতে নিত্যপণ্যের বাজার ব্যবস্থাপনায় অনলাইন পদ্ধতি চালুর কথা ভাবছে সরকার। এ কাজের জন্য নতুন অ্যাপ চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে খুচরা ব্যবসায়ীদের পণ্য কেনার ক্ষেত্রে ভাউচার সংগ্রহের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। অ্যাপের মাধ্যমে বাজার ব্যবস্থাপনায় জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে লাইসেন্স নিতে হবে। সেই লাইসেন্সই নির্দিষ্ট করবে কে পাইকারি ব্যবসায়ী, কে খুচরা ব্যবসায়ী আর কে আমদানিকারক। সরকার উৎপাদক থেকে শুরু করে খুচরা পর্যায় পর্যন্ত অ্যাপের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করবে। এতে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতার পরিচয় পরিষ্কার থাকবে। এই লাইসেন্সের মাধ্যমে কে কোন পণ্যের হোলসেল করবেন, কত পণ্য এলো, কত পণ্য বিক্রি হলো, এগুলোর খোঁজ-খবর রাখবেন জেলা প্রশাসক। সূত্র আরও জানায়, নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে যে অভিযান চালাচ্ছে সরকার, তার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বাজার স্থিতিশীল রাখা, কাউকে ভয় দেখানো নয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নিয়মিত বাজারে অভিযান চালাচ্ছে বলে দাবি করছে সরকার। এসব অভিযানে অধিক মূল্য, সরবরাহে ত্রুটিসহ নানাবিধ ত্রুটির অভিযোগে মূলত খুচরা ব্যবসায়ীদের দায়ী করা হয়। ফলে জেল-জরিমানার মুখোমুখি হন খুচরা ব্যবসায়ীরা। তিন. সরকার যখন ভারত থেকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ টন চিনি ও ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তখন গত ২২ মার্চ বিএনপি ভারতের পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছে। বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী কয়েক বছর আগে ভারতীয় বাজার থেকে কেনা গায়ের শাল ছুড়ে ফেলে দিয়ে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছেন। অথচ ১৮ মার্চ বিএনপি নেতা মঈন খান বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের জন্য বন্ধু রাষ্ট্রের সহায়তা চাই।’ সরকারের নানামুখী তৎপরতায় জিনিসপত্রের দাম কমতে শুরু করেছে। তিন সপ্তাহ আগের ১২৫ টাকা কেজি পেঁয়াজ এখন ৫০ টাকায় নেমেছে। বিএনপি যখন দেখছে সরকার দ্রব্যমূল্যের লাগাম টেনে ধরেছে এবং ভারত থেকে আমদানিকৃত চিনি ও পেঁয়াজের আমদানির সংবাদে কেজিপ্রতি ৭৫ টাকা কমেছে, তখনই ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে। কোথাও কোথাও প্রতি কেজি গরুর মাংস পাওয়া যাচ্ছে ৬০০ টাকার নিচে। শুধু তাই নয়, বেশিরভাগ সবজির দাম এখন নিম্নমুখী। এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক পদক্ষেপের কারণে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে ডলারের সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, চলমান রমজান মাস ও আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে পরিবার-পরিজনের কাছে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। তাতে বাজারে ডলারের সরবরাহ আরও বেড়ে যাবে। ফলে ঈদ ঘিরে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভে চাপ কিছুটা সহনীয় থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। রমজান মাসকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। চলতি মার্চ মাসের প্রথম ১৫ দিনে বৈধ বা ব্যাংকিং চ্যানেলে ১০২ কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ দেশে এসেছে। এতে সব পর্যায়ে ডলারের দাম কমতে শুরু করেছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্যাংক ও খোলাবাজারে ডলারের অনানুষ্ঠানিক দাম প্রায় ৪ থেকে ৬ টাকা কমেছে। ঈদ সামনে রেখে ডলারের সরবরাহ আরও বাড়ার প্রত্যাশা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে আগামীতে ডলারের দাম আরও কমার আশা করা হচ্ছে। ডলারের সরবরাহ বাড়ায় ব্যাংকগুলোও এখন এলসি খুলতে আগ্রহ দেখাচ্ছে। এমনকি আমদানি হচ্ছে আগের তুলনায় বেশি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় আমদানি বেড়েছে ১ দশমিক ৫২ শতাংশ। এর ফলে আমদানি করা পণ্যের দামও ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করেছে। ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, ঘরে রাখা ডলার ব্যাংকে ফিরতে শুরু করেছে, প্রবাসী আয়ে গতি এবং রপ্তানি আয়ের ইতিবাচক প্রবণতাকে এর মূল কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। লেখক: রাজনৈতিক বিশ্লেষক
২৪ মার্চ, ২০২৪

কার্যকর ভূমিকা না নেওয়ায় বাজার চলছে তার ইচ্ছামতো : বাম জোট 
বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার নানা কথা বলছে- এমনকি পণ্যের দাম বেঁধেও দিয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে কার্যকর ভূমিকা না নেওয়ায় বাজার চলছে তার ইচ্ছামতো। মুক্তবাজারের নামে বাজার সিন্ডিকেটের গুটিকয়েক মানুষ, চাঁদাবাজ কমিশনভোগীদের পকেটে যাচ্ছে জনগণের টাকা। আর এসব হচ্ছে ক্ষমতাসীনদের প্রশ্রয়ে। রোববার (১৭ মার্চ) সিপিবি কার্যালয়ে বাম জোটের সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। তারা বলেন, দেশে উৎপাদিত পণ্যের উৎপাদন খরচ কমানো, ‘উৎপাদক ও ক্রেতা সমবায় গড়ে তোলা’, রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে আমদানিকৃত পণ্যের বাফার স্টক গড়ে তোলা, সারা দেশে সর্বজনীন রেশন ব্যবস্থা, ন্যায্যমূল্যের দোকান চালু করা ছাড়া দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। দক্ষ দুর্নীতিমুক্তভাবে এসব কাজ করতে হবে। বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি ও ধাপে ধাপে মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্তে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে নেতারা বলেন, বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ বাড়ার কথা বলে এই মূল্যবৃদ্ধির কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু এক্ষেত্রে দায়মুক্তি দিয়ে, অহেতুক, অযৌক্তিক উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির দায় জনগণের নয়। বিদ্যুৎ খাতে সরকারের গণবিরোধী পদক্ষেপের জন্যই এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এর সাথে জড়িত নীতি প্রণেতা, দুর্নীতিবাজ ও কমিশনভোগীদের চিহ্নিত করে বিচার করতে হবে। বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে আরও দাম কমানো এবং সারা দেশে নিরবচ্ছিন্নভাবেই বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবিও জানানো হয় সভা থেকে। সভায় নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে দ্রব্যমূল্য সহনশীল পর্যায়ে রাখার ও বিদ্যুৎ জ্বালানির দাম কমানোর দাবিতে আগামী ২০ মার্চ, রাজধানীর কারওয়ানবাজারের সামনে, ২৩ মার্চ, মিরপুর-১০ নম্বর ও ২৪ মার্চ, শান্তিনগর বাজারের সামনে বিক্ষোভের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। বাম গণতান্ত্রিক জোট ঢাকা মহানগরের সমন্বয়ক তৈমুর আলম খান অপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় জোটের সমন্বয়ক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলী সদস্য নজরুল ইসলাম, বাসদের নেতা খালেকুজ্জামান লিপন, সিপিবি নেতা ডা. সাজেদুল হক রুবেল, সাইফুল ইসলাম সমীর, মঞ্জুর মঈন, বাসদ (মার্কসবাদী)’র নেতা সীমা দত্ত, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের ইকবাল কবীর জাহিদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির আমেনা আক্তার, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির রুবেল শিকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
১৭ মার্চ, ২০২৪

রোজায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ
রোজায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। গতকাল সোমবার সদর দপ্তরে এক সভা থেকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। গত জানুয়ারিতে সারা দেশে সংঘটিত অপরাধ পর্যালোচনা করতে ওই সভা হয়। অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় ভার্চুয়ালি সব মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার পুলিশ সুপাররা অংশ নেন। পুলিশ সদর দপ্তর প্রান্তে অপারেশনস বিভাগের ডিআইজি (অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতি পাওয়া) মো. আনোয়ার হোসেন, ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) জয়দেব কুমার ভদ্রসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। রমজানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা ছাড়াও অতিরিক্ত আইজিপি হারানো মোবাইল সেট উদ্ধার অভিযান জোরদারের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি মোবাইল ছিনতাই রোধে টহল বাড়ানোর নির্দেশ দেন। পুলিশ সদর দপ্তরের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের পুলিশ সুপার ইনামুল হক সাগর জানান, সভায় সার্বিক অপরাধ পর্যালোচনা, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, মামলা তদন্ত, সাজার হার এবং গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার আলোচনা করা হয়।
১২ মার্চ, ২০২৪

রমজানের শুরুতেই সিলেটে নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন
সিলেটের বাজারে রমজান শুরু হতে না হতেই সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে অসাধু ব্যবসাীরা। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাড়ানো হচ্ছে সব জিনিষপত্রের দাম। সুযোগ বুঝে যে যেভাবে পারে দাম নিচ্ছে। অসহায় ক্রেতারাও পণ্য কিনছে অধিক মূল্যে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫ জন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নেতৃত্ব মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও কোনোভাবেই বাজার নিয়ন্ত্রণে আসছে না। রমজানে প্রয়োজনীয় ছোলা, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি, আদা, রসুন ও পেঁয়াজের দাম বাড়ছেই। শনিবার (১১ মার্চ) বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। তবে, ব্যবসায়ীরা বলছেন, ক্রেতাদের অতিরিক্ত চাহিদা থাকায় কিছু সংখ্যক অসাধু ব্যবসায়ী এ সুযোগ নিচ্ছেন। প্রয়োজনের অতিরিক্ত পণ্য সরবরাহ করতে বাজারে সংকট দেখা দিচ্ছে। এ অবস্থায় ক্রেতাদেরও সচেতন হতে হবে। সিলেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী আতিকুর রহমান বলেন, সিলেটের প্রায় প্রতিটি পরিবারে এক মাসের বাজার করার জন্য দোকানে আসে। এতে দোকান খালি হয়ে যায়। এ অভ্যাস বাদ দিতে হবে।   সবজি বাজার অস্তির বাজার ঘুরে দেখা যায়, শসা প্রতি কেজি  ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকা, টমেটো ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কাচা মরিচ ১০০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা, লেবুর প্রতি হালি ৬০ টাকা থেকে ৮০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা থেকে ৮০ টাকা, সিম একদিন আগে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বিক্রি হলেও সোমবার প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। লাল শাক প্রতি আঁটি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, কচুর লতি ১৪০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা ধরে বিক্রি হয়েছে। চাল-ডাল ঊধ্বমুখী সিলেটের কালিঘাটের পাইকারী বাজারে চালের দাম বেড়েছে প্রতি বস্তায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। প্রতি কেজি আটাশ ও পাইজাম ৬০ থেকে ৬২, নাজির শাইল ৭০ থেকে ৭৫, মোটা চাল ৫৫ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ময়দার বস্তা ১৭শ টাকা থেকে ২১শ ৫০ টাকা পর্যন্ত, ছোলা ৭৬ টাকা, আদা ১৬০ টাকা, মুগডাল ১৫৫ টাকা, মসুরি ডাল মোটা ১১০ টাকা ও ছোট ১১০ টাকা, দারচিনি সাড়ে ৪ শত টাকা, আলু ৩৫ টাকা, তেল ৫ লিটার ৭৯০ টাকা, ১ লিটার ১৬০ টাকা, ২ লিটার ৩৩০ টাকা, পেঁয়াজ ১২০ টাকা, রসুন চায়না ২০০ টাকা, আদা ২১০ টাকা, মুগডাল ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, মসুরি ডাল মোটা ১১০ টাকা, ছোট মসুরি ডাল ১৬০ টাকা, দারচিনি সাড়ে ৫০০ টাকা, তেল ৫ লিটার ৮০০ টাকা, ২ লিটার তেল ৩২৬ টাকা, ১ লিটার তেল ১৬৩ টাকা, রুহআফজা ৩৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৫০০ টাকা। মাংসের বাজারে অসাধু চক্র সিলেটে মাংসের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে অসাধু চক্র। সুযোগ বুঝে ইচ্ছেমত দাম বাড়িয়ে দেয়। চাহিদা দেখলেই তারা বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে। বিভিন্ন বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, খাশির মাংস বিক্রি হয়েছে ১০০০ থেকে ১১০০ টাকা পর্যন্ত। তবে, সোমবার সন্ধার দিকে গরুর মাংস ৭৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। মুরগির বাজারে ছিল অস্তিরতা। সোমবার সকালের দিকে ২১০ টাকা কেজি বয়লার মোরগ বিক্রি হলেও সন্ধার দিকে ২২০ থেকে ২৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া মোরগরে হালি একদিন আগে ৪০ টাকা বিক্রি হলেও সোমবার ব্রয়লার মুরগির ডিম ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, হাঁসের ডিম ৬০ টাকা থেকে ৬৫ টাকা বিক্রি হয়েছে। এ ব্যাপারে সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ মোহাম্মদ রাসেল হাসান কালবেলাকে জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজার নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, ক্র্যাব নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মিটিং করা হয়েছে। বাজারে কোনো ধরনের সংকট হবে না। মহানগরে ৫ জন এডিসির নেতৃত্বে বাজার মনিটরিং করা হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন উপজেলা ইউএনওদেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত বাজার মনিটরিং করা হবে। খেজুরে বিভ্রান্তি রমজানের অন্যতম অনুসঙ্গ খেজুর। নামে বেনামে বিভিন্ন দেশের নাম ব্যবহার করে ক্রেতাদের পকেট কাটা হচ্ছে। এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় সব ধরনের খেজুরে দাম দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ পর্যন্ত রাখা হচ্ছে। ইরাক থেকে আমদানি করা খেজুর ২০০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ইরানের মরিয়ম প্রিমিয়াম ৯৫০ থেকে ১০০০ টাকা, সৌদি আরবের জারুয়া ১১০০ টাকা, আলজারিরা খেজুর ৬০০ টাকা, আমেরিকার মেটজুল ১৭০০ টাকা। তবে, একাধিক ক্রেতা জানান, এ ধরনের নাম দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়। অধিক টাকা নেওয়ার জন্য তাদের নিজস্ব তৈরি নাম এগুলো।
১১ মার্চ, ২০২৪

রোজায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ
রোজার মধ্যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। সোমবার (১১ মার্চ) সদর দপ্তরে এক সভা থেকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।  গত জানুয়ারি মাসে সারাদেশে সংঘটিত অপরাধ পর্যালোচনা করতে ওই সভা হয়। অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মোঃ আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে সব মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার পুলিশ সুপাররা অংশ নেন।  পুলিশ সদর দপ্তর প্রান্তে অপারেশন্স বিভাগের ডিআইজি (অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতি পাওয়া) মো. আনোয়ার হোসেন, ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) জয়দেব কুমার ভদ্রসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। রমজানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা ছাড়াও অতিরিক্ত আইজিপি হারানো মোবাইল সেট উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশন দেন। পাশাপাশি মোবাইল সেট ছিনতাই বা চুরি প্রতিরোধে টহল বাড়ানোর নির্দেশ দেন। তিনি কিশোর অপরাধ দমনের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, কোনো এলাকায় কিশোর গ্যাং গড়ে উঠার আগেই তা নির্মূলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। সভায় আঞ্চলিক সড়কে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া এবং অপমৃত্যু মামলা প্রতিরোধে প্রোঅ্যাকটিভ পুলিশিংয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। পুলিশ সদর দপ্তরের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের পুলিশ সুপার ইনামুল হক সাগর জানান, জানুয়ারি মাসের অপরাধ পর্যালোচনা সভায় সার্বিক অপরাধ পর্যালোচনা, সাজাপ্রাপ্ত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, মামলা তদন্ত ও বিচারের ফলাফল, সাজার হার এবং সাম্প্রতিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার আলোচনা করা হয়।
১১ মার্চ, ২০২৪

ধর্মীয় সংস্কৃতির বিরোধিতা করছে সরকার : রিজভী
সরকার ধর্মীয় সংস্কৃতির বিরোধিতা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শুক্রবার (৮ মার্চ) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।  রিজভী বলেন, দেশের কোটি কোটি মুসলমানের ইফতারের জন্য খেজুর আমদানির ওপর ভর্তুকি দূরে থাক উল্টো খেজুর আমদানির ওপর অস্বাভাবিক হারে শুল্কারোপ করা হয়েছে। বছরে একটি মাত্র মাসে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সারাদিন রোজা শেষে অর্থের অভাবে হয়তো ইফতারের সময় একটি খেজুর খেতে পারবেন না, এটি অন্যায়। এটি অন্যায্য। সারাদিন রোজা শেষে সকল রোজাদারের কাছে ইফতারের সময় খেজুর শুধু সাধারণ একটি ফল হিসেবে বিবেচিত নয় বরং এটি নবীর (সা.)-এর একটি সুন্নত। এটি মুসলমানদের ধর্মীয় অনুষঙ্গ কিংবা রীতি।  এ সময় তিনি বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য আজাদ চৌধুরী নাহিদকে গ্রেপ্তার এবং শুক্রবার আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে মহিলা দলের শান্তিপূর্ণ র‌্যালিতে বাধা দেওয়ার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। রিজভী বলেন, পবিত্র রমজান মাসে মানুষ একটু শান্তি এবং স্বস্তিকর পরিবেশে রোজা পালন করবে, সেহরি-ইফতার করবে, একাগ্রতা নিয়ে এবাদত বন্দেগি করবে, এমনটিই ছিল জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা। কিন্তু দেশে এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। প্রতিদিন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েই চলছে। অন্তত রমজান মাসের জন্য হলেও খেজুর আমদানির ওপর শুল্ক মওকুফ সময়ের দাবি। এ সময় রিজভী বলেন, আন্তর্জাতিক নারী দিবস এমন একসময় পালিত হচ্ছে যখন বাংলাদেশের নারীরা ঘরে-বাইরে-কর্মস্থলে সর্বত্রই নির্যাতিত-নিপীড়িত-লাঞ্ছিত ও খুনের শিকার হচ্ছেন। গত ১৬ বছরের সবচেয়ে বেশি লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়েছেন নারীরা। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া একজন মহীয়সী নারী। যিনি অবরুদ্ধ গণতন্ত্রকে বারবার মুক্ত করেছেন, নারী সমাজের অগ্রগতিতে অসামান্য অবদান রেখেছেন। অথচ তাকে সীমাহীন হয়রানি ও হেনস্তা করতে অন্যায় এবং বেআইনিভাবে মিথ্যা মামলায় আটক করে রাখা হয়েছে। সমস্ত মৌলিক মানবাধিকার, সাংবিধানিক অধিকারকে পদদলিত করে তাকে সুচিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে।  রিজভী আরও বলেন, সরকার কাউকে মানুষ বলেই গণ্য করছে না। এক যুগের বেশি সময়েও সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার বিচার হয়নি। গত ১৫ বছরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার একটি ঘটনারও সুষ্ঠু তদন্ত কিংবা বিচার হয়নি। দেশে সংঘটিত একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনারও বিচার হয়নি। ব্যাংক খেকোদের বিচার হয়নি। অথচ ঠুনকো অভিযোগে একজন নোবেল লোরিয়েটকে প্রায় প্রতিদিন আদালতের বারান্দায় ঘুরতে হচ্ছে।  তিনি আরও বলেন, নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমেই কেবল জনগণের কাছে জবাবদিহিতামূলক একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব। সেই লক্ষ্যেই আমাদের চলমান আন্দোলনে গণতন্ত্রকামী জনগণের স্লোগান, বাংলাদেশ যাবে কোন পথে ফয়সালা হবে রাজপথে। গণতন্ত্রের বিজয় সুনিশ্চিত ইনশাআল্লাহ। 
০৯ মার্চ, ২০২৪

রমজানকে ঘিরে ১ টাকা লাভে পণ্য বিক্রি করছেন তিনি
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মাঝেও রমজানকে ঘিরে ১ টাকা লাভে পণ্য বিক্রি শুরু করেছেন চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ পৌর ৯নং ওয়ার্ডের দোকানি শাহ আলম। মূলত অন্য ব্যবসায়ীদের রমজানে বেশি মুনাফা না করে সামান্য লাভে পণ্য বিক্রিতে উৎসাহিত করতেই তার এ উদ্যোগ। বুধবার (৬ মার্চ) চরকুমিরা তালতলা মার্কেটের শাহ আলম স্টোরে গেলে ক্রয় মূল্যের চেয়ে তাকে মাত্র ১ টাকা লাভে রমজানের খাদ্যসামগ্রী বিক্রি করতে দেখা গেছে। স্থানীয়রা জানান, গেল ২০২৩ সালের রমজানেও শাহ আলম তার দোকানে ১ টাকা লাভে রমজানের খাদ্যসামগ্রী বিক্রি করেছে। ধারাবাহিকতা রাখতে এবারও তিনি সিন্ডিকেট অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে উদাহরণ হতে কম দামে পণ্য বিক্রির উদ্যোগ বজায় রেখেছেন। বর্তমানে তিনি ১ টাকা লাভে প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি করছেন ৯৯ টাকা, খেসারি ১০৯ টাকা, চিড়া ৫৬ টাকা, চিনি ১৩৯ টাকা, বেসন ৮১ টাকা, মুড়ি ৬৩ টাকা, ভোজ্য তেল (সয়াবিন) প্রতি লিটার ১৪০ টাকা দামে বিক্রি করছেন। স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা বলছেন, বাজারে সব দোকানের চেয়ে কম দামে রমজানের পণ্য বিক্রি করার বিষয়টি সবার নজর কেড়েছে। দূর-দূরান্ত থেকেও এখানে পণ্য কিনতে এসে মধ্যবিত্ত ও অসহায়রা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। অন্যান্য বড় ব্যবসায়ীদেরও মুনাফা কমিয়ে সমাজের প্রয়োজনে এই রমজানে এগিয়ে আসা উচিত বলে সবাই মনে করছেন। ব্যবসায়ী শাহ আলম বলেন, সমাজের মানুষের উপকারের কথা চিন্তা করেই গেল বছর থেকে রমজান এলে ১ টাকা লাভে পণ্য বিক্রি শুরু করে দেই। সাধ্যের মধ্যে থেকে মানুষের জন্য নিবেদিত হতে পেরে নিজেরও ভালো লাগছে। এখান থেকে পণ্যসামগ্রী ক্রয় করে উপকৃত হচ্ছেন। শাহ আলম আরও বলেন, উদার মানসিকতার প্রত্যেক ব্যবসায়ীর প্রতি অনুরোধ থাকবে। যাতে তারাও ১ টাকা লাভে পণ্য বিক্রি করেন। তাহলে অসহায়, মধ্যবিত্ত ও গরিব মানুষজন এই রমজানে পণ্য কিনে কিছুটা স্বস্তি পাবেন। তাই সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানাচ্ছি।
০৬ মার্চ, ২০২৪

মানুষের হাতে এখন প্রয়োজনের চেয়ে বেশি টাকা : বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী 
দেশে খাদ্যের কোনো সংকট নেই। কাউকে না খেয়ে থাকতে হয় না। মানুষের হাতে এখন প্রয়োজনের চেয়ে বেশি টাকা আছে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সিরডাপ অডিটোরিয়ামে ‌‘দ্রব্যমূল্যে অস্থিরতা : উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এমন মন্তব্য করেন। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাজারে যে পণ্যটা ওঠে সেটা অবিক্রিত থাকছে না। মানুষও খালি হাতে ফিরছে না। এ দেশেই কিন্তু খাদ্যের অভাব ছিল, দুর্ভিক্ষ ছিল। বাজারে টাকা দিয়েও খাদ্য মিলত না। সেখান থেকে আমরা বের হয়ে এসেছি। আমাদের এখন চাল বাইরে থেকে আমদানি করতে হয় না। এই মুহূর্তে মানুষের হাতে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পরিমাণ টাকা আছে। আমাদের বাজারে মানি সাপ্লাইটা বেশি। তিনি বলেন, আমরা বাজারের অত্যাবশ্যকীয় পণ্যগুলোকে ১২ মাসই নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ করতে চাই। একইসঙ্গে পূর্ণাঙ্গভাবে সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট, আধুনিক বাজার ব্যবস্থাপনা এবং ভ্যালু চেইন নিয়ে কাজ করতে চাই। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা বাজারে প্রতিযোগিতা এস্টাবলিশ করতে চাই। যারাই আমদানিকারক বা উৎপাদক আছেন তারা যদি একটি প্রতিযোগিতার মধ্যে থাকে তাহলে কিন্তু ন্যায্যমূল্যে পণ্য সরবরাহ করতে পারব। বাজার নিয়ন্ত্রণের করণীয় ও ধাপগুলো কেউ দিয়ে দিলে প্রতিমন্ত্রী খুশি হতেন উল্লেখ করে বলেন, এখন গবেষণা নেই। গবেষণা করবে কে? বিআইডিএসের কাজ গবেষণা করা। আমাদের কৃষিপণ্য নিয়ে গবেষণা করতে হবে। সুগার নিয়ে গবেষণা করতে হবে। আমরা কি আগের মতো সুগার মিল চালু করব? ইক্ষু চাষ করব না কি চিনি আমদানি করব এ বিষয়েও গবেষণা করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের রিজার্ভ নেই এটি একটি সঠিক বক্তব্য নয়। আমাদের যে পরিমাণ রিজার্ভ আছে তা চাপের বিষয় এতে সন্দেহ নেই। ৪৮ বিলিয়ন থেকে এটা ২০ বিলিয়নে এসেছে। আইএমএফের মানদণ্ড অনুযায়ী আগামী তিন মাসের আমদানির জন্য এ রিজার্ভ  যথেষ্ট। আমরা যদি রিজার্ভ রেখে দিয়ে ভ্যাকসিন না আনতাম তাহলে কিন্তু দেশে আরও একটা দুরবস্থা তৈরি হতো। তিনি আরও বলেন, এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও কিন্তু সাড়ে তের লাখ টন খাদ্যপণ্য আমদানি হয়েছে। এর কারণে আমরা দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি রমজানে আমাদের কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সংকট থাকবে না। আমরা যদি আমদানি না করতাম তাহলে তো রিজার্ভ আরও বেশি থাকত। আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, আমাদের রিজার্ভের টাকা তেল আমদানিতে খরচ হচ্ছে। বিলিয়ন ডলার খরচ হচ্ছে জ্বালানি আমদানিতে। আগে আমাদের সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট সক্ষমতা ছিল কিন্তু সেটা এখন বেড়ে ২৫ হাজার মেগাওয়াটের বেশি হয়েছে। এটা চালাতে তো আমাদের ফুয়েল দরকার হয়। আমাদের কিছু গ্যাস থাকলেও এ খাত শতভাগ আমদানিনির্ভর। আমরা এই আপনার একটা না করলে আমাদের রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়নে থাকত। আমি মনে করি, ২০ বিলিয়ন রিজার্ভ চাপে থাকলেও আছে। আমরা এটা কি বৃদ্ধি করতে চাই। এটার জন্য আমাদের রপ্তানি বাড়াতে হবে। আমদানি ব্যবস্থাপনাকে শৃঙ্খলায় নিয়ে আসতে হবে। আমরা কিন্তু বসে নেই। দৈনিক যুগান্তরের পঁচিশ বছর উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। যুগান্তরের প্রকাশক ও যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামের সভাপতিত্বে এতে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) রিসার্চ ফেলো ড. বদরুন্নেসা আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম। বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে ছিলেন বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক ড. এম কে মুজেরী, ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান ও সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান। সম্মানিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী।
২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

আ.লীগের সিন্ডিকেটেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি : সেলিমা রহমান
আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেটের কারণেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান। বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আয়োজনে লিফলেট বিতরণ শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি। সেলিমা রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ একতরফা নির্বাচন করে ক্ষমতা দখল করে আছে। জনগণের কথা না ভেবে দুর্নীতি ও জুলুম, নির্যাতনে ব্যস্ত রয়েছে। কারাগারে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর বিভিন্নভাবে নির্মম নির্যাতন চালাচ্ছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সরকারের সব দুর্নীতি ও অপকর্মের হিসাব অবশ্যই জনগণকে দিতে হবে। সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে থাকার আহ্বান জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বাতিল, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের দাবি এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে বিএনপির গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণের পাঁচ দিনের কর্মসূচি শুরু হয়েছে মঙ্গলবার। এ সময় বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহসভাপতি ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল, ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের আহ্বায়ক শেখ খালিদ হাসান জ্যাকি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির নেত্রী আরিফা সুলতানা রুমা প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
X