সরকার ধর্মীয় সংস্কৃতির বিরোধিতা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শুক্রবার (৮ মার্চ) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
রিজভী বলেন, দেশের কোটি কোটি মুসলমানের ইফতারের জন্য খেজুর আমদানির ওপর ভর্তুকি দূরে থাক উল্টো খেজুর আমদানির ওপর অস্বাভাবিক হারে শুল্কারোপ করা হয়েছে। বছরে একটি মাত্র মাসে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সারাদিন রোজা শেষে অর্থের অভাবে হয়তো ইফতারের সময় একটি খেজুর খেতে পারবেন না, এটি অন্যায়। এটি অন্যায্য। সারাদিন রোজা শেষে সকল রোজাদারের কাছে ইফতারের সময় খেজুর শুধু সাধারণ একটি ফল হিসেবে বিবেচিত নয় বরং এটি নবীর (সা.)-এর একটি সুন্নত। এটি মুসলমানদের ধর্মীয় অনুষঙ্গ কিংবা রীতি।
এ সময় তিনি বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য আজাদ চৌধুরী নাহিদকে গ্রেপ্তার এবং শুক্রবার আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে মহিলা দলের শান্তিপূর্ণ র্যালিতে বাধা দেওয়ার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
রিজভী বলেন, পবিত্র রমজান মাসে মানুষ একটু শান্তি এবং স্বস্তিকর পরিবেশে রোজা পালন করবে, সেহরি-ইফতার করবে, একাগ্রতা নিয়ে এবাদত বন্দেগি করবে, এমনটিই ছিল জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা। কিন্তু দেশে এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। প্রতিদিন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েই চলছে। অন্তত রমজান মাসের জন্য হলেও খেজুর আমদানির ওপর শুল্ক মওকুফ সময়ের দাবি।
এ সময় রিজভী বলেন, আন্তর্জাতিক নারী দিবস এমন একসময় পালিত হচ্ছে যখন বাংলাদেশের নারীরা ঘরে-বাইরে-কর্মস্থলে সর্বত্রই নির্যাতিত-নিপীড়িত-লাঞ্ছিত ও খুনের শিকার হচ্ছেন। গত ১৬ বছরের সবচেয়ে বেশি লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়েছেন নারীরা।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া একজন মহীয়সী নারী। যিনি অবরুদ্ধ গণতন্ত্রকে বারবার মুক্ত করেছেন, নারী সমাজের অগ্রগতিতে অসামান্য অবদান রেখেছেন। অথচ তাকে সীমাহীন হয়রানি ও হেনস্তা করতে অন্যায় এবং বেআইনিভাবে মিথ্যা মামলায় আটক করে রাখা হয়েছে। সমস্ত মৌলিক মানবাধিকার, সাংবিধানিক অধিকারকে পদদলিত করে তাকে সুচিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে।
রিজভী আরও বলেন, সরকার কাউকে মানুষ বলেই গণ্য করছে না। এক যুগের বেশি সময়েও সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার বিচার হয়নি। গত ১৫ বছরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার একটি ঘটনারও সুষ্ঠু তদন্ত কিংবা বিচার হয়নি। দেশে সংঘটিত একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনারও বিচার হয়নি। ব্যাংক খেকোদের বিচার হয়নি। অথচ ঠুনকো অভিযোগে একজন নোবেল লোরিয়েটকে প্রায় প্রতিদিন আদালতের বারান্দায় ঘুরতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমেই কেবল জনগণের কাছে জবাবদিহিতামূলক একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব। সেই লক্ষ্যেই আমাদের চলমান আন্দোলনে গণতন্ত্রকামী জনগণের স্লোগান, বাংলাদেশ যাবে কোন পথে ফয়সালা হবে রাজপথে। গণতন্ত্রের বিজয় সুনিশ্চিত ইনশাআল্লাহ।
মন্তব্য করুন