কুবি উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা-২০২৪ ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় কেন্দ্রে না এসে সম্মানী নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে। শিক্ষকদের অভিযোগ তারা ক্ষমতা অপব্যবহার করে এ সম্মানী গ্রহণ করেছেন। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ১০ মে ভর্তি পরীক্ষার অংশ হিসেবে উপাচার্য ১৫ হাজার টাকা ও কোষাধ্যক্ষ ১২ হাজার টাকা নিয়েছেন। তবে তাদের কেউই পরীক্ষা কেন্দ্রে আসেননি। এ দিকে উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ ভর্তি পরীক্ষার দিন বাংলোতে ছিলেন বলে জানিয়েছেন উপাচার্যপন্থি শিক্ষকরা। এ বিষয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সি ইউনিটের অর্থ কমিটির সদস্য সচিব শুভ্র ব্রত সাহা বলেন, সদস্য সচিব হিসেবে আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি। এ বিষয়ে আহ্বায়ক ভালো বলতে পারবে। ভিসি আর ট্রেজারার বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত না হয়ে টাকা নিতে পারে কি না জানতে চাইলে অর্থ কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, আমি যতটুকু জানি ভিসি বাংলো ক্যাম্পাসের অন্তর্ভুক্ত। তবে আমি অর্থ কমিটির দায়িত্বে ছিলাম। কিন্তু অর্থ বণ্টন করে অর্থ দপ্তর। এতগুলো মানুষের টাকা এক ঘণ্টার মধ্যে বণ্টন করা সম্ভব না বিধায় পরীক্ষা শুরুর আগে থেকে বণ্টন করা হয়। অর্থ দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর নাসির উদ্দিন বলেন, স্যার বাংলোতে ছিল। কিন্তু এটাও ক্যাম্পাস। আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি। সি ইউনিটের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আহসান উল্ল্যাহ বলেন, ভিসি আর ট্রেজারার বাংলোতে ছিল। তবে উপউপাচার্য আমার সঙ্গে সার্বক্ষণিক ছিল। তিনি আমার সঙ্গে বিভিন্ন দপ্তরে গিয়েছিল। তারা ক্যাম্পাসে কেন আসেননি সেটা আমি জানি না। ওনারা টপ লেভেলের। আমি তো আর বলতে পারব না কেন আসে নাই, ওনাদের সঙ্গে কথা বলেন। আমাদের তারা নির্দেশ দেয় সেই অনুযায়ী কাজ করি। এখন তারা ক্যাম্পাসে আসছে কি না সেটা তারা ভালো বলতে পারবে। এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, যে লোকটা সেলারি শিট চুরি করতে পারে, (কর করাপশন ইনভলব) এলে সে লোকটা নিয়ে কমেন্ট করতে আমার রুচিতে বাধে। সে সারা দেশের গুচ্ছ অন্তর্ভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষা কমিটির কোষাধ্যক্ষের দায়িত্বে আছে যতদূর জানি। তবে সে জায়গা থেকে ন্যূনতম দায়িত্ববোধ মনে না করে অর্থনৈতিক সুবিধা নেবেন অনিয়মের মাধ্যমে। তবে ভিসি এবং কোষাধ্যক্ষ দুজনই সংঘবদ্ধ, দুজনেই যেমন সন্ত্রাসী তেমন দুর্নীতিতেও। তিনি যে বলছেন ‘দুর্নীতি-উন্নতি’ সে এটাতেই বিশ্বাসী। সম্মানী গ্রহণের বিষয়ে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, তোমার কাছে ভুল তথ্য আছে। আমি অফিস করেছি, স্বাক্ষরও করেছি। তবে কোষাধ্যক্ষ অফিসের সেকশন অফিসার নমিতা পাল বলেন, আমি যতক্ষণ ছিলাম স্যারকে দেখি নাই। এরপর আমি পরীক্ষার ডিউটিতে চলে যাই। পরীক্ষা শেষ বাংলোতে গিয়েছিলাম সেখানেও স্যারকে পাইনি। উপাচার্যের পিএস টু ভিসি হোসাইন মোরশেদ ফরহাদ বলেন, স্যার ক্যাম্পাসে আসেন নাই। তবে বাংলোতে ছিলেন। কেন আসে নাই জানতে চাইলে তিনি বলেন, হয়ত মনমানসিকতা ভালো নাই, এ ধরনের কাজকর্ম চললে সবার তো মনমানসিকতা খারাপ থাকতেই পারে। পরীক্ষার দায়িত্ব পালন না করে সম্মানী গ্রহণ করতে পারে কি না জানতে চেয়ে উপাচার্যকে মোবাইল ফোনে কল দিলেও ফোন রিসিভ হয়নি। পরে বাংলোতে গিয়েও দেখা হয়নি।
১৪ মে, ২০২৪

কুবি শিক্ষকদের ওপর হামলাকারী ভিসিপন্থি শিক্ষকদের মৌন অবস্থান
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষকদের ওপর হামলা করে এবার মৌন অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে উপাচার্যপন্থি শিক্ষকরা। কী কারণে এই মৌন অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে- তা জানতে চাইলে কথা না বলে তাড়াহুড়ো করে অবস্থান ত্যাগ করেন তারা। তবে আইকিউএসির পরিচালক অধ্যাপক ড. রশিদুল ইসলাম শেখ বলেন, আমরা কি জন্য এই কর্মসূচি পালন করতেছি তা প্ল্যাকার্ডে লেখা আছে।  রোববার (১২ মে) দুপুর সাড়ে ৩টায় এই কর্মসূচি পালন করে উপাচার্যপন্থি শিক্ষকরা। কর্মসূচিতে যুক্ত না হয়ে দূর নেতৃত্ব দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী।  এ সময় তারা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক হোক সৌহার্দ্যপূর্ণ্য, তালা সংস্কৃতির অবসান হোক, গবেষণার পথ সুপ্রসন্ন হোক, এগিয়ে যাবে সব সময় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, ২৮ এপ্রিল ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোকসহ নানা প্ল্যাকার্ড ব্যবহার করেন। এর আগে গত ২৮ এপ্রিল উপাচার্যের নেতৃত্বে শিক্ষকদের ওপর হামলা করেছেন আইকিউএসির পরিচালক অধ্যাপক ড. রশিদুল ইসলাম শেখ, পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. স্বপন চন্দ্র মজুমদার, সহকারী প্রক্টর আবু ওবায়দা রাহিদ, জাহিদ হাসান ও অমিত দত্ত ও অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান সিকদার। এরাসহ বিভিন্ন বিভাগের ১৭ জন উপাচার্যপন্থি শিক্ষক কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।  আয়োজন করেও কেন মৌন অবস্থান কর্মসূচিতে দাঁড়ায় নাই জানতে চাইলে প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, আমি আয়োজন করি নাই, শিক্ষকরা আমার কাছে চেয়েছে, আমি অনুমতি দিয়েছি। আমি প্রশাসনিক পার্ট হিসেবে তাদের সঙ্গে দাঁড়ায় নাই। তবে আমি শিক্ষকদের অবস্থানের সঙ্গে একমত পোষণ করছি। এ ব্যাপারে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫০ জন শিক্ষকের মাঝে মাত্র ১৫-১৬ জন নামছেন। এখানে বোঝাই যাচ্ছে উপাচার্যের সঙ্গে এখন কারা আছেন। এটা হাস্যকর। যারা শিক্ষকদের গায়ে হাত দিয়েছেন, বিভিন্ন নিপীড়নে সংযুক্ত হয়েছেন, যারা অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত, যারা অবৈধ সুযোগ-সুবিধা এবং অর্থ লুটপাটের সঙ্গে জড়িত, যাদের অবৈধভাবে ডিন ও চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ভেঙে অবৈধভাবে একাডেমিক বিশৃঙ্খলা করে বসে আছেন তারাই আজকে এখানে এসে মায়াকান্না করছেন। এটা ভূতের মুখে রাম নাম ছাড়া আর কিছু নয়। শিক্ষক সমিতি থেকে এদের সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
১২ মে, ২০২৪

কুবি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষকদের অনন্য সাফল্য
প্রায় আড়াই হাজার বছর পূর্বের বরেন্দ্রভূমির প্রবেশদ্বার ও বসতি আবিষ্কার করে অনন্য সাফল্য অর্জন করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষকরা। শনিবার (১১ মে) গবেষণালব্ধ ফলাফল রাজধানীর এশিয়াটিক সোসাইটি মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপন করেন তারা। তথ্য মতে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমোস্তাপুর উপজেলার প্রশাসনিক কেন্দ্র রোহনপুরে এ গবেষণার পরিচালনা করেন তারা। গবেষণা দলের সদস্যরা হলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক  ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন, সহকারী অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান খান, সহকারী অধ্যাপক মো. নিয়ামুল হুদা, সহকারী অধ্যাপক শারমিন রেজোয়ানা, সহকারী অধ্যাপক মুতাসিম বিল্লাহ এবং সান্তা মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ফারহানা নাজনীন ও রোহনপুর গ্রামের ঐতিহ্য সংগ্রাহক মাহির ইয়াসির। উপস্থাপনের সময় তারা ওই স্থান থেকে প্রাপ্ত হাজার বছরের পুরোনো ছাপাঙ্কিত রৌপ্যমুদ্রা, ছাঁচে ঢালা তাম্রমুদ্রা, উত্তরাঞ্চলীয় কালো চকচকে মসৃণ মৃৎপাত্র, স্বল্প মূল্যবান পাথরের পুঁতি, ধাতব নিদর্শন, মাটি ও পাথরের মূর্তি, নানা আকৃতির পাথরের বাটখারাসহ প্রাচীন নানা প্রত্ন বস্তু প্রদর্শন করা হয়। এসব প্রত্নসামগ্রীর বেশিরভাগ পাওয়া গেছে মুদ্রা ও প্রত্নবস্তু সংগ্রাহক মাহির ইয়াসিরের সংগ্রহশালা থেকে। গবেষকদলের দাবি, রোহনপুর অঞ্চলে প্রত্ন অনুসন্ধানে প্রাপ্ত বিভিন্ন প্রত্নবস্তু ও এ অঞ্চলের বস্তু বিশ্লেষণ, বসতি বিন্যাস বিশ্লেষণ, স্থাপত্যবিদ্যার ‘টেকসই অঞ্চল পরিকল্পনার’ আলোকে স্থানিক বিশ্লেষণ, অতীত পানি ব্যবস্থাপনা পর্যবেক্ষণ, এর উপরিভাগের ভূতত্ত্ব, মাটির ধরন, বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পানির উৎস পর্যবেক্ষণ, ১৯৬০ এর দশকের স্যাটেলাইট ইমেজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। গবেষকরা বলছেন, প্রাচীন সময়ে রোহনপুর ছিল উঁচু বরেন্দ্র এলাকার প্রবেশপথ। রোহনপুর অঞ্চলটি পুনর্ভবা ও মহানন্দা নদীর মাঝখানে এবং গঙ্গা ও পদ্মা নদীর মিলনস্থলে অবস্থিত হওয়ায় বাংলা অঞ্চলে প্রথম দিককার বসতি এলাকার মধ্যে এই অঞ্চল ছিল অন্যতম। নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর, সাপাহার ও পোরশা উপজেলা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল ও গোমস্তাপুর, রাজশাহীর তানোর ও গোদাগাড়ী এলাকায় একই সময় বসতি গড়ে উঠেছিল। বসতির পাশাপাশি সেখানে পানি সংরক্ষণাগার ও খাল তৈরির প্রমাণ পেয়েছেন গবেষকরা। বরেন্দ্রভূমি হিসেবে চিহ্নিত ওই এলাকার একাংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ অংশে পড়েছে। পুণ্ড্র রাজ্য ছিল রাজশাহী, রংপুর, বগুড়া, দিনাজপুর, পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম দিনাজপুর এলাকা নিয়ে বিস্তৃত। ব্রিটিশ প্রত্নতাত্ত্বিক ও ইতিহাসবিদ কানিংহামের মতে, ওই এলাকায় প্রাচীন স্থায়ী বসতির নিদর্শন ছিল। বরেন্দ্র এলাকার পূর্ব দিকে প্রাচীন পুণ্ড্রনগর বা মহাস্থানের অবস্থান। রহনপুরের সঙ্গে মহাস্থানগড়ের জল যোগাযোগ ছিল। গবেষণায় দেখা গেছে, একসময় পদ্মা নদী বর্তমান মহানন্দা ও তিস্তা হয়ে বয়ে যেত। বরেন্দ্র ভূমি আরও উঁচু হয়ে যাওয়ায় পদ্মা সেখান থেকে সরে যায়। পূর্ব ও মধ্য ভারতের সঙ্গে যোগাযোগের কেন্দ্রস্থল হিসেবে বর্তমান রহনপুর ব্যবহৃত হতো বাণিজ্য ও প্রশাসনিক কেন্দ্র হিসেবে। উত্তরাঞ্চলের প্রবেশপথ হিসেবে ওই এলাকাটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এ ব্যাপারে গবেষণা দলের প্রধান মোহাম্মদ সোহরাব উদ্দিন বলেন, রহনপুরের ওই এলাকায় দুই থেকে আড়াই হাজার বছর আগে আদি ঐতিহাসিক কালপর্বে অর্থাৎ খ্রিষ্টপূর্ব সময়ের বিভিন্ন স্বল্প মূল্যবান পাথরের পুঁতি, ধাতব নিদর্শন, মাটি ও পাথরের মূর্তি, নানা আকৃতির পাথরের বাটখারাসহ প্রাচীন নানা প্রত্নবস্তুর ওপর ভিত্তি করে বাণিজ্যকেন্দ্র ছিল বলে আমরা বেশ কিছু প্রমাণ পেয়েছি। ভবিষ্যতে রোহনপুরে পরিকল্পিত খনন চালালে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পাওয়া যাবে বলে আমরা মনে করছি। বাংলাদেশ প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক এবং গবেষক মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, স্থানীয় একজন শিক্ষক সেখানে সম্প্রতি বেলে লাল পাথরের একটি মূর্তি খুঁজে পেয়েছেন, যা খ্রিষ্টপূর্ব সময়ের। আজ গবেষণালব্ধ ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে বলা যায় রোহনপুর দুই থেকে আড়াই হাজার বছরের পুরোনো। তাই রোহনপুরে প্রত্নতাত্ত্বিক খননের মাধ্যমে প্রত্ন নিদর্শনগুলো দ্রুতই সংরক্ষণ করতে হবে।
১২ মে, ২০২৪

ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে কুবি ছাত্রলীগের পদযাত্রা
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিশ্বব্যাপী চলমান ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে পদযাত্রা ও সমাবেশ করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। সোমবার (৬ মে) দুপুরে বঙ্গবন্ধু ভাষ্কর্যের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশের পর মিছিল বের করে নেতাকর্মীরা। মিছিল ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকে এসে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তারা বলেন, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি এবং নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী শিক্ষার্থীসমাজ, শিক্ষক ও সচেতন নাগরিকরা সোচ্চার হয়েছেন। বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা ফিলিস্তিন রক্ষায় এগিয়ে আসুন। দখলদাররা যেভাবে শিশু-নারী হত্যায় মেতে উঠেছে তা বিশ্বযুদ্ধের বিভীষিকাকে ও হার মানাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল শাখা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক মহসিন জামিল বলেন, ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যের দখলদার অবৈধ রাষ্ট্র। যারা ফিলিস্তিনের ওপর সবসময় অত্যাচার-নির্যাতন এবং গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। এর প্রতিবাদে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করলে সেটি ছাত্রসমাজের মধ্যে ছড়িয়ে যায়। বাংলাদেশ সরকার সবসময় নির্যাতিতদের পক্ষে কথা বলে, সেই ধারাবাহিকতায় ছাত্রলীগের আজকের পদযাত্রা ও সমাবেশ। একই হলের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত উল্লাহ কালবেলাকে বলেন, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিশ্বব্যাপী চলমান ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে ছাত্রলীগের নির্দেশনার অংশ হিসেবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ এ আয়োজন করেছে।   পদযাত্রা ও সমাবেশে রাকিব হোসেনের সঞ্চলনায় আরও বক্তব্য রাখেন ওয়াসিফুল ইসলাম সাদীফ, রিফাত আহমেদ, আরমান হোসেন, সালাউদ্দিন প্রমুখ।
০৬ মে, ২০২৪

কুবি প্রশাসনকে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম শিক্ষার্থীদের
অনির্দিষ্টকালের জন্য কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিলে মানববন্ধন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় ৫ দফা দাবি পূরণে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন তারা। গতকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে এ মানববন্ধন হয়। ৫ দফা দাবি হলো, অবিলম্বে ক্যাম্পাস বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল করা, অবিলম্বে ক্লাস-পরীক্ষা চালু করা, পরিবহন ব্যবস্থা চালু করা, শিক্ষকদের ক্লাস বর্জনের সিদ্ধান্ত বাতিল ও ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইউজিসি বা সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে সংকট নিরসন করতে হবে। গণিত ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাকিব বলেন, শিক্ষক সমিতি তিনবার ক্লাস বর্জন করেছে। এখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস বন্ধের ঘোষণা দিল। আমরা এটা মানতে পারছি না। উপাচার্য ও শিক্ষক সমিতির বিরোধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। এই বিরোধের কারণে আমরা আবার সেশনজটে পড়তে যাচ্ছি। মূলত এই সংকটগুলোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করা হচ্ছে।
০৫ মে, ২০২৪

কুবি প্রশাসনকে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিল শিক্ষার্থীরা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) প্রশাসনের অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা এবং ক্লাস-পরীক্ষা চালু করতে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শনিবার (৪ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে মানববন্ধনে এ ঘোষণা দেন তারা।  মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে ক্যাম্পাস বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল করা, অবিলম্বে ক্লাস-পরীক্ষা চালু করা, পরিবহন ব্যবস্থা চালু করা, শিক্ষকদের ক্লাস বর্জনের সিদ্ধান্ত বাতিল ও ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইউজিসি/সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে সংকট নিরসন করার ৫ দফা দাবি উথাপন করেন। প্রশাসনের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গনিত ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাকিব বলেন, শিক্ষক সমিতি একে একে তিনবার ক্লাস বর্জন করল। এখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস বন্ধের ঘোষণা দিল। আমরা শিক্ষার্থীরা তা মানতে পারছি না। উপাচার্য ও শিক্ষক সমিতির বিরোধে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। এই বিরোধের কারণে আমরা পুনরায় সেশনজটে পড়তে যাচ্ছি। মূলত, তাদের এই সংকটগুলোর মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জিম্মি করা হচ্ছে। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহমিদা কানন বলেন, উপাচার্য ও শিক্ষকদের বিরোধে শক্তিপ্রয়োগের ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। আমরা যেমন শিক্ষকদের ন্যায্য দাবিকে সাদুবাদ জানাই তেমনি তাদের ক্লাস বর্জনের প্রতিবাদ জানাই। বিশ্ববিদ্যালয়ে সুস্থ ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা এখন সময়ের দাবি। এ ছাড়াও সকল অন্তঃকোন্দল দ্রুত সমাধান করে শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত ঘোষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট আহ্বান জানাই, না হলে আমরা কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।
০৪ মে, ২০২৪

বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধের সিদ্ধান্তের নির্দেশ প্রত্যাখ্যান কুবি শিক্ষার্থীদের
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘উদ্ভূত পরিস্থিতি’ নিরসনের জন্য অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এদিকে প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে মানববন্ধন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।  বুধবার (১ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা শিক্ষা অনুষদের সামনে ও গোলচত্বরে মানববন্ধন করেন তারা। সকাল ১১টায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে গোল চত্বরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নেওয়া সিদ্ধান্তের বিপক্ষে প্রতিবাদ করতে দেখা যায়। এ সময় শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, তারা দ্রুত ক্লাসে ফিরতে চান। বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিয়ে যেন হলগুলোতে প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়। এরপর দুপুর ১২টায় গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী অর্নব সিংহ রায়ের সঞ্চালনায় প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী মানববন্ধন করেন। শিক্ষার্থীদের বলেন, যে সমস্যা তৈরি হয়েছে তা যেন অতিদ্রুত সমাধান করা হয়। মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহমিদা সুলতানা বলেন, ‘শিক্ষক সমিতি আর ভিসিপন্থির ঝামেলার বলিরপাঁঠা হচ্ছি আমরা। আপনারা কথায় কথায় ক্লাস বর্জন করছেন, মগের মুল্লুক পেয়ে গেছেন না কি আপনারা? আমরা শিগগিরই ক্লাসে ফিরতে চাই।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪তম আবর্তনের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলাম পড়াশোনা করার জন্য, তবে গত কয়েক মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি চলছে। কখনো শিক্ষক সমিতি ক্লাস বর্জন করছে, এখন আবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিচ্ছে, হল বন্ধ করার নির্দেশ দিচ্ছে। একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আমার প্রশ্ন শিক্ষকদের এই দ্বন্দ্বে আমরা শিক্ষার্থীরা কীভাবে দোষী? আমরা কেন ভুক্তভোগী? এখানে অনেক শিক্ষার্থী অর্থাভাবে হলে থাকে, টিউশন করিয়ে নিজের আর পরিবারের ভরণপোষণ সামলায়। তারা কোথায় যাবে?’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্দোলনরত শিক্ষক সমিতির সহসভাপতি অধ্যাপক কাজী কামাল বলেন, প্রশাসনের এ সিদ্ধান্ত একটি স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত। বিভিন্ন হল প্রভোস্টদের সঙ্গে কথা বলেছি তারা বলেছে হল খুব সুন্দরভাবেই চলছে। আর একাডেমিক কার্যক্রম চলুক সেটাও আমি চাই। আমি মনে করি এ উপাচার্য একজন অদক্ষ প্রশাসক। তার পদত্যাগই সবকিছুর সমাধান।’ এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের পক্ষেই আছি। যখন কোনো একটা ছুটি হয়, তখন কিন্তু প্রতিবার একই নোটিশ যায় যে হল ছাড়তে হবে। অনেক সময় হল সিলগালা করে দেওয়া হয় সেক্ষেত্রে সবাইকে সেটা মানতে হবে। যেহেতু এই নোটিশে সিলগালার কথা বলা নেই, সেক্ষেত্রে কেউ যদি বিকেল ৪টার মধ্যে হল ত্যাগ না করে তাহলে নিশ্চয়ই হল প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত নেবে।’ এর আগে মঙ্গলবার ৯৩তম সিন্ডিকেট সভায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলো বন্ধের সিদ্ধান্তসহ মোট ৪টি সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন।
০১ মে, ২০২৪

কুবি কোষাধ্যক্ষের গাড়ি আটকে দিল শিক্ষক সমিতি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার পর এবার দাবি আদায়ে কোষাধ্যক্ষের গাড়ি আটকে দিয়েছেন শিক্ষক সমিতির নেতারা। শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে গাড়ি আটকে দেওয়া হয়।  প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান গাড়ি নিয়ে চলে যাওয়ার সময় প্রধান ফটকে তালা দিয়ে গাড়ি আটকে দেন শিক্ষক সমিতির নেতারা। এ সময় কোষাধ্যক্ষকে সঙ্গ দিতে আসেন উপাচার্যপন্থি কয়েকজন শিক্ষক। তখন কোষাধ্যক্ষ গাড়ি থেকে বের হয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলা শুরু করলে চলমান দাবি নিয়ে আলোচনা করেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। এ সময় আইকিউসির পরিচালক অধ্যাপক রশিদুল ইসলাম শেখ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু তাহেরকে মারতে যান। সাবেক শিক্ষার্থী ও  চাকরিপ্রার্থীরা শিক্ষকদের সঙ্গে উচ্চবাচ্য করেন। সাবেক শিক্ষার্থীদের এমন আচরণে প্রক্টরিয়াল বডি নীরব ভূমিকা পালন করলেও সন্ধ্যায় শিক্ষকরা মূল ফটকে চেয়ার নিয়ে বসলে প্রক্টর এসে বাধা দেন। এ সময় একজন নারী শিক্ষকের সঙ্গে উচ্চবাচ্য করতে দেখা যায় তাকে। শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান বলেন, আমরা নির্বাচিত শিক্ষক সমিতি যখন উপাচার্যের কার্যালয়ে যাই, তিনি গণতান্ত্রিক শিক্ষক সমিতিকে মানেন না বলে জানান। আমরা উপাচার্যের রুমে থাকা অবস্থায় রুমের দরজায় হামলা হলেও কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নেয়নি প্রক্টরিয়াল বডি। উপাচার্য বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষক নাকি জামায়াতের। তাহলে আমি উপাচার্যকে প্রশ্ন করি, স্যার সিমাগো র‍্যাঙ্কিংয়ে যে আগালো এটা কি জামায়াতের অবদান? বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবৈধভাবে ইনক্রিমেন্ট নেন উপাচার্য, তিনি তা স্বীকারও করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়কে তিনি ভোগের জায়গা বানিয়েছেন। এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আবু তাহের বলেন, ভর্তি পরীক্ষা নির্বিঘ্নে পরিচালনার জন্য আমরা কার্যালয়ের তালা খুলে দেই। পরে আবার কার্যালয়ে তালা দেই। তাকে বলি, স্যার আপনি এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ ব্যবহার করতে পারবেন না। তখন ওনি গাড়ি থেকে নামেন। এরপর আমাদের সাধারণ সম্পাদক ওনার সঙ্গে কথা বলতে গেলে আইকিউএসির ডিরেক্টর আমার দিকে মারার জন্য তেড়ে আসেন। তিনি বলেন, সন্ধ্যায় যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে আমরা শিক্ষকরা অবস্থান নেই তখন প্রক্টর এসে বাধা দেন। একজন নারী সহকর্মীর সঙ্গেও উচ্চবাচ্য করেন। শিক্ষকদের সঙ্গে যখন কিছু সাবেক শিক্ষার্থীরা উচ্চবাচ্য করেন তখন প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা নীরব ভূমিকা পালন করেন।  এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এখন কোনো কথা নাই। ইউ আর ওয়েল এক্সপেরিয়েন্সড অ্যাবাউট ইট। উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল মঈনকে ট্রেজারারের গাড়ি আটকে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার পদক্ষেপে ওরা সাড়া দেয় না।
২৭ এপ্রিল, ২০২৪

কুবি উপাচার্যের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড এএফএম আবদুল মঈন বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন বলে অভিযোগ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসানের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সোমবার (২৫ মার্চ) উপাচার্য ঢাকার সেগুনবাগিচা রেস্টুরেন্টে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে বিভিন্ন মিথ্যাচার করেছেন। তিনি বলেছেন, এক সময় স্থবির হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। শিক্ষক সমিতি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কখনোই স্থবির ছিল না। বর্তমান উপাচার্য যোগদানের পর থেকে নানা ধরনের অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতি, শিক্ষকদের সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য, প্রশাসনিক কার্যক্রমে দীর্ঘসূত্রতা তৈরি, নিয়োগ ও টেন্ডার বাণিজ্য, পদোন্নতি ও স্থায়ীকরণে বৈষম্য তৈরি, তথ্য গোপন করে ইনক্রিমেন্ট গ্রহণসহ আর্থিক কেলেঙ্কারির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল ও স্থবির করে রেখেছেন। অতীতের অন্য উপাচার্যরাই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প এনেছেন। তাদের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত ও অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ একাডেমিক এবং প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে অত্যন্ত গতিশীল ছিল। বিশেষ করে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরীর সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন প্রকল্প এসেছে।  এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ ১৬ বছরের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করার জন্য সাবেক উপাচার্য ২০২০ সালের ২৭ জানুয়ারি প্রথম সমাবর্তন সফলভাবে সম্পন্ন করেন। একদিনের জন্যও বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো অস্থিরতা ছিল না। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বর্তমান উপাচার্য ভর্তি পরীক্ষার টাকা থেকে শিক্ষকদের অ্যাওয়ার্ড ও শিক্ষার্থীদেরকে বৃত্তি প্রদানের নামে অর্থ আত্মসাৎ, গবেষণা খাতের বরাদ্দের তহবিল তছরুপ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি কলঙ্কময় অধ্যায় রচনা করেছেন। নিয়োগের শর্ত শিথিল করে, বিভাগীয় প্ল্যানিং কমিটির সুপারিশ অগ্রাহ্য করে এবং নিয়োগ বোর্ড সদস্যদের নোট অব ডিসেন্ট উপেক্ষা করে একাধিক বিভাগে অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন। শিক্ষক স্বল্পতার কারণে বিভাগগুলো চলছে ধুঁকে ধুঁকে। উপাচার্য দুই বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে মাত্র সাতজন শিক্ষকের পদ এনেছেন।  একটি কর্মকতা-কর্মচারীর পদও তিনি নতুন করে আনতে পারেননি। শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি টাকার উন্নয়ন বরাদ্দও আনতে পারেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে সে সকল উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড চলছে, সবই আগের উপাচার্যের আমলের।  উপাচার্য সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিল, স্থায়ীকরণ কমিটির সিদ্ধান্ত প্রতিনিয়ত পরিবর্তন করে কার্যবিবরণী মনগড়াভাবে তৈরি করেন। সবমিলিয়ে গত দুই বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি দৃশ্যমান কোনো উন্নয়নই করতে পারেননি। এমনকি তার সময়ে ক্রীড়াক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে এ দাবিও অমূলক। অতীতেও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সফলতার স্বাক্ষর রেখেছে। প্রতিনিয়ত তিনি আইন, নিয়ম-নীতি ও বিধি-বিধানের ব্যত্যয় ঘটিয়ে যাচ্ছেন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে অস্থিরতা বিরাজ করছে। উপাচার্য নিয়োগের প্রজ্ঞাপন নিয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি। উপাচার্য ২০১১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পদ থেকে অবসর নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেশন বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনিয়র প্রভাষক পদে চাকরি নিয়ে চলে যান। সেখানকার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন।  দীর্ঘ ১২ বছর একই পদে চাকরি করার পর পুনরায় চাকরি নবায়ন করতে না পেরে ২০২০ সালে দেশে ফিরে আসেন। ২০২০ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগে চুক্তিভিত্তিক অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্তির আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চুক্তিভিত্তিক কিংবা অবসরপ্রাপ্ত কথাটি উল্লেখ করেননি। ফলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক উপাচার্যের জারিকৃত প্রজ্ঞাপনটি নিয়েও নানা বিতর্ক তৈরি হয়েছে।  ২০১১ সালে অবসর গ্রহণকালীন সময়ে তার বেতন ছিল ৩৪,০০০/- টাকা। প্রজ্ঞাপন অনুসারে সর্বশেষ বেতন স্কেল ৩৪,০০০/- টাকা অথবা ৫৬,৫০০/- টাকা অনুযায়ী তার বেতন নির্ধারিত হওয়ার কথা। কিন্তু তিনি সম্পূর্ণ অবৈধভাবে ৬৮,৫৩০/- টাকা বেতন নির্ধারণ করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেতন-ভাতাদি গ্রহণ করছেন এবং পরবর্তীতে দুটি ইনক্রিমেন্ট যুক্ত করে বর্তমানে ৭৪,৪০০/-টাকা বেতন স্কেলে বেতন-ভাতাদি গ্রহণ করছেন।  যা সম্পূর্ণরূপে বেআইনি, অনৈতিক এবং আর্থিক কেলেঙ্কারির শামিল হিসেবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। তিনি অবৈধ বেতন-ভাতাদি গ্রহণ করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ক্ষতি করে যাচ্ছেন। বিজ্ঞপ্তিতে নেতারা আরও বলেন, শিক্ষক সমিতি মনে করে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে মিথ্যাচার করেছেন। তার দেওয়া বক্তব্য সম্পূর্ণ বানোয়াট, বিভ্রান্তিকর ও ভিত্তিহীন। উপাচার্যের এ ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান সম্মান ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।
২৭ মার্চ, ২০২৪

ফের ক্লাস বর্জনের ঘোষণা কুবি শিক্ষক সমিতির
শিক্ষকদের দাবি না মানায় পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ১৯ মার্চ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।  সোমবার (১৮ মার্চ) বিকেল ৩টায় প্রশাসনিক ভবনের  শিক্ষক লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক নেতারা এ কথা জানান।  সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ড. মাহমুদুল হাসান খান বলেন, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি শিক্ষক সমিতি গঠিত হয়। পরে পাঁচবার লিখিতভাবে আমাদের দাবিগুলো প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। কিন্তু উপাচার্য জানান, তিনি নাকি আমাদের এসব পড়ার সময় পাননি। আমরা দাবি আদায়ে ১৩ ও ১৪ মার্চ ক্লাস বর্জন করি এবং লিখিত দেই। তাও তিনি ভ্রূক্ষেপ করেনি। তিনি বলেন, ‘আমি এ পরিস্থিতিকে কোনো সংকট মনে করি না, তোমাদের যা ইচ্ছে করতে পারো। যদি কোর্টে যেতে চাও, যেতে পারো।’  তিনি আরও বলেন, আমরা শিক্ষকদের কাজ কী কোর্টে কোর্টে দৌঁড়ানো। আমরা প্রধানমন্ত্রী, ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুরোধ করছি, আপনারা এসে তদন্ত করুন। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকট নিরসনে আপনাদের সাহায্য প্রার্থনা করছি। উপাচার্যের এমন অসহযোগিতামূলক আচরণ ও দাবি আদায়ে অনিচ্ছা থাকায় আমরা পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আগামী ১৯ থেকে ২৭ তারিখ পর্যন্ত সব ক্লাস বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. আবু তাহের বলেন, আমরা শিক্ষক সমিতি যে দাবিগুলো দিয়ে ছিলাম আমরা মনে করেছি ভিসি আমাদেরকে ডাকবে। ওনি এসব নিয়ে আমাদের সঙ্গে বসেনি। আমাদের ছাত্রদের কাছ থেকে দূরে থাকতে কষ্ট লাগে তাই আমরা সদয় হয়ে ওনার কাছে গিয়েছি। আমরা চাই না বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা সংকটে পড়ে ক্লাস না করে সেশন জট আটকে যাক। কিন্তু ভিসি এসবকে কোনো কিছুই মনে করেন না। এতদিন আমরা যে চিঠির পর চিঠি দিয়েছি এসব দেখনি। এর মাধ্যমে প্রতীয়মান হয় যে, ওনি এসব সংকট সমাধান করতে চাচ্ছেন না। ক্লাস বর্জনের বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, শিক্ষক সমিতি আমার কাছে একটা চিঠি দিয়েছিল। এ বিষয়ে আমি তাদের সঙ্গে কার্যালয়ে বসে কথা বলি। তাদের পক্ষ থেকে শুধু সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক কথা বলবে। কিন্তু তারা ব্যক্তিগত আলাপ শুরু করে দিয়েছিল। একপর্যায়ে তারা বলেন, আমরা এখানে কথা বলতে না পারলে এখানে কেন আসছি? পরে তারা চলে যায়। তাদের দাবির বিষয়ে উপাচার্য বলেন, তাদের বলেছি আপনাদের দাবি আইনসম্মত হলে আমি মেনে নেব। ক্লাস বর্জনের বিষয়ের আমি তাদের অনুরোধ করেছি। আপনারা ক্লাস বর্জন করবেন না। এতে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হবে।  উল্লেখ্য, গত ১৩ ও ১৪ মার্চ ৭ দফা দাবিতে ক্লাস বর্জন করেছিল শিক্ষক সমিতি।
১৮ মার্চ, ২০২৪
X