পুঁজিবাজারে লেনদেনে খরা
কোনোভাবেই দেশের পুঁজিবাজার বের হতে পারছে না পতনের বৃত্ত থেকে। একই সঙ্গে চলছে লেনদেনে খরা। সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর কমার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক কমেছে। আর ডিএসইতে লেনদেন নেমেছে ৩০০ কোটি টাকার ঘরে। গতকাল মঙ্গলবার পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরুর কয়েক মিনিটের মাথায় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে যায়। দরপতনের ধারা অব্যাহত থাকায় একপর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ৫৬ পয়েন্ট কমে যায়। তবে শেষদিকে কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর বৃদ্ধিতে পতনের মাত্রা কিছুটা কমে আসে। ডিএসইতে এদিন দাম বেড়েছে ৭৯ প্রতিষ্ঠানের, কমেছে ২৬৮টির। আর ৪৩টির দামে কোনো পরিবর্তন হয়নি। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ২২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৭৩৮ পয়েন্টে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৬ পয়েন্ট কমে হয়েছে ১ হাজার ২৪৫ পয়েন্ট। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৬৭ কোটি ৬৫ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৬৮ কোটি ৮২ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ১০১ কোটি ১৭ লাখ টাকা। লেনদেনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার। কোম্পানিটির ২১ কোটি ৯৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা শাহিনপুকুর সিরামিকসের ১৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মালেক স্পিনিং। এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিস, এমারেল্ড অয়েল, বেস্ট হোল্ডিং, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, গোল্ডেন সন, ফরচুন সুজ ও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস। সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৭৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০৫ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৮টির এবং ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৮ কোটি ১৬ লাখ টাকা। এর আগে গত সপ্তাহ লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসের মধ্যে প্রথম তিন কার্যদিবসেই পুঁজিবাজারে দরপতন হয়। তবে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে মূল্যসূচক কিছুটা বাড়ে।
০৩ এপ্রিল, ২০২৪

তালগাছের দীর্ঘতম ঘুঘুডাঙ্গা, খরা ও বজ্রপাতে প্রাকৃতিক ঢাল
চৈত্র ও বৈশাখ মাসে রুক্ষ হয়ে ওঠে বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রকৃতি। এরই মধ্যে প্রশান্তি ও শোভাবর্ধন করছে পথের দু’ধারের সারিবদ্ধ তালগাছ। খরা ও বজ্রপাতে প্রকৃতিকে সহনীয় পর্যায়ে রাখতে নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার বিভিন্ন সড়কে এভাবেই লাগানো হয়েছে তালগাছ। স্থানীয় এমন একটি সড়ক তালসড়ক নামেই পরিচিতি পেয়েছে। আশির দশকে তালপাখার বাতাস না হলে মন জুড়াত না। বর্তমানে এসবের ব্যবহার খুবই কমেছে। কিন্তু আজও তালের পিঠা, গুড়ের পায়েস কিংবা তালের রুটি না খেলে বাঙালির মন জুড়ায় না। আর বজ্রপাতের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে তালগাছের তো কোনো বিকল্পই নেই। তাই বিভিন্ন সড়ক, বাড়ি ও জমির ধারে লাগানো হয়েছে তালগাছ। সবুজ মাঠের বুক চিরে নিয়ামতপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে হাজিনগর ইউনিয়নের অবস্থিত ছোট্ট একটি গ্রাম ঘুঘুডাঙ্গা। মজুমদার মোড় থেকে ঘুঘুডাঙ্গা গ্রাম পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তার দুই ধারে প্রায় ৬শ টি তালগাছ দাঁড়িয়ে আছে। বৃক্ষপ্রেমী ও ভ্রমণ পিয়াসীরা বেড়াতে আসেন এ তালসড়কে। স্থানীয় সূত্রে ও বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) সূত্রে জানা যায়, বরেন্দ্র অঞ্চলে তালগাছসহ অন্যান্য বড় বড় গাছ হারিয়ে যাওয়ায় বজ্রপাত বেড়ে গিয়েছে। বজ্রপাত বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা মাঠে-খাটে কাজ করতে গিয়ে মারাও যাচ্ছেন। উপজেলার হাজিনগর ইউনিয়নের ঘুঘুডাঙ্গা গ্রামের ফারুক বলেন, গত কয়েক বছর থেকে এ সড়কটি তালতলি হিসেবে পরিচিত পেয়েছে। দূর-দুরান্ত থেকে মানুষ প্রতিদিনই দেখতে আসছে। তালতলিতে স্থায়ীভাবে কয়েকটি দোকান হওয়ায় বেশ কয়েকজনের কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হয়েছে। বৃক্ষপ্রেমী মোস্তাকিন বলেন, ফেসবুক ও ইন্টারনেটে এ জায়গাটির কথা শুনেছি। তবে কখনো আসা হয়নি। জায়গাটি অনেক সুন্দর। হাজিনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন, রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় তালগাছের ছায়ায় এক অন্যরকম প্রশান্তি অনুভব করি। সড়কের দুই পাশে দেখা মিলবে সবুজের ফসলের ক্ষেত। এটি একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করছে অন্যদিকে এ জায়গাটি পর্যটকদের কাছে এখন বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে পরিণত হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ বলেন, গ্রামে এখন তেমন তালগাছ দেখা যায় না। এখানে একসঙ্গে অসংখ্য তালগাছ এবং নির্মল পরিবেশ দেখে সত্যি মুগ্ধ হই। তালগাছ শুধু সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য নয়, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১৯ মার্চ, ২০২৪

পর্যটকের খরা রাঙামাটিতে, বাতিল হচ্ছে অগ্রিম বুকিং
পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে পর্যটকের ভরা মৌসুম নভেম্বর থেকে জানুয়ারি। এই সময়ে মেঘের রাজ্য সাজেকসহ জেলার পর্যটন স্পটগুলো পর্যটকের পদচারণায় মুখর থাকে। কিন্তু বিএনপির অবরোধ-হরতালের কারণে সাজেকের নভেম্বর মাসের অগ্রিম বুকিং বাতিল করছেন পর্যটকরা। পাশাপাশি রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্স ও শহরের হোটেল-মোটেলগুলোরও একই অবস্থা। দেশে শীতের শিশির ভেজা পরশের দেখা মিললেই পার্বত্যাঞ্চলের পর্যটন মৌসুমের দুয়ার খুলে। মেঘের রাজ্য সাজেক থেকে শুরু করে জেলার পর্যটন স্পটগুলো ও রাঙামাটি জেলা শহর পর্যটকের পদচারণায় সকাল থেকে রাত মুখরিত থাকে। সপ্তাহের অন্যান্য দিনগুলো থেকে ছুটির দিনগুলোতে সে পদচারণা কয়েকগুণ বেশি থাকে। সচল হয় পর্যটকনির্ভর প্রতিষ্ঠানগুলো, ঘুরে এই অঞ্চলের অর্থনীতির চাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পর্যটকের ভরা মৌসুমে এইবার বাধ সেজেছে বিএনপির চলমান অবরোধ-হরতালের মতো কর্মসূচি। সাজেকে ১২৬টি কটেজ রয়েছে। যার মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন হাজার পর্যটক থাকতে পারেন। প্রতি বছরের মতো এবার সরকারি ছুটির দিনগুলোতে প্রায় প্রতিটি কটেজ বুকিং হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু অবরোধ হরতালের কারণে নভেম্বর মাসের বুকিং পর্যটকরা বাতিল করেছেন বলে জানায় সাজেক কটেজ মালিক সমিতি। রাঙামাটি শহরের হোটেল-মোটেল সূত্রে জানা যায়, অবরোধ হরতালের কারণে বুকিং বাতিল হচ্ছে। তবে মাঝে মধ্যে দুই-একজন করে পর্যটক আসছেন। এতে হোটেল-মোটেলগুলোর কর্মচারীদের বেতনসহ বিদ্যুৎ বিল দেওয়া কষ্ট হচ্ছে। একই অবস্থা পর্যটকনির্ভর ট্যুরিস্ট বোটগুলোরও। সাজেক কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সুর্পণ দেব বর্মন বলেন, এখন সাজেক পর্যটনের ভারা মৌসুম। কিন্তু অবরোধ হরতালের কারণে পর্যটকরা ভয়ে আসছেন না। পাশাপাশি এই সময়টাতে প্রতি বছরের মতো এই বছরও সরকারি ছুটির দিনসহ অন্যান্য দিনগুলোতে কমবেশি অগ্রিম বুকিং ছিল কটেজগুলোর। পরে অবরোধ-হরতালের কারণে এখন পর্যন্ত নভেম্বর মাসের অগ্রিম বুকিং বাতিল করেছেন পর্যটকরা। রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, ‘আমাদের প্রায় সব অগ্রিম বুকিং বাতিল হয়েছে। দুই-একজন পর্যটক আসছেন, তাও খুবই কম।’
২০ নভেম্বর, ২০২৩

‘তাপমাত্রা বাড়লে বরেন্দ্র অঞ্চলের খরা দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়বে’
তাপমাত্রা আরও দুই ডিগ্রি বাড়লে বর্তমানে বাংলাদেশের বরেন্দ্র অঞ্চলে যে খরা হচ্ছে তা ক্রমান্বয়ে দেশের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়বে। এতে খাদ্য নিরাপত্তায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। আজ শুক্রবার (৩ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর পিআইবি মিলনায়তনে ‘জার্নালিজম ইন দ্য এজ অব ক্লাইমেট অ্যাকশন : কপ ২৮ কাভারেজ স্ট্র্যাটেজিকস অ্যান্ড মেনটরিং’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আসন্ন জলবায়ু সম্মেলনের (কপ ২৮) সংবাদ গ্রহণের প্রস্তুতির লক্ষ্যে বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এবং প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) এই কর্মশালার আয়োজন করেছে। আরও ১০টি পরিবেশবাদী সংগঠন এই আয়োজনে সহযোগী হিসেবে রয়েছে। অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেন, লস অ্যান্ড ড্যামেজ নিয়ে বিগত জলবায়ু সম্মেলনগুলোতে (কপ) আলোচনা হলেও ফান্ড নিয়ে তেমন কোনো কথা হয়নি। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাপমাত্রা বাড়ছে, কোথাও কমছে। আর তাপমাত্রা বাড়ার কারণে মানুষের কর্মক্ষমতা কমে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বর্তমানে গ্রিন ইন্ডাস্ট্রির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু তার জন্য যে অর্থায়ন প্রয়োজন, তা কে দেবে? বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বিশ্বের সপ্তম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। বিশ্বের তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি রাখতে পারলে দুর্যোগে ক্ষতি কম হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশে এখন ছয় ঋতু খুঁজে পাওয়া যায় না। আমরা এখন বছরের ৯ মাস উত্তাপের মধ্যে কাটাই। শীতের প্রকোপও অনেক বেড়েছে। তিনি বলেন, বিগত জলবায়ু সম্মেলনগুলোতে অনেক কথা বলা হয়েছে, কিন্তু ফল শূন্য। আসন্ন দুবাই সম্মেলন যাতে এই অবস্থায় না পড়ে, তা খেয়াল রাখতে হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়বিষয়ক সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য রানা মোহাম্মদ সোহেল এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কর্মশালার প্রধান সমন্বয়কারী, ক্যাপস ও স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার। এতে প্রশিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন পরিবেশ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত। কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশের সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, সিপিআরডির মো. শামসুজ্জোহা প্রমুখ। আগামীকালের (শনিবার) অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন ফ্রান্স দূতাবাস বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুয় এবং সুইডেনের দূতাবাস, বাংলাদেশের ফার্স্ট সেক্রেটারি, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং ডেপুটি হেড, ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন সেকশনের নাইওকা মার্টিনেজ ব্যাকস্ট্রোম।
০৩ নভেম্বর, ২০২৩

নদে বাঁধ দিয়ে খরা জালে মাছ শিকার
ময়মনসিংহের নান্দাইলে নরসুন্দা নদে বাঁধ দিয়ে খরা জাল ও ড্রিম জাল পেতে মাছ নিধন করছে প্রভাবশালীরা। সরকারি নীতিমালাকে তোয়াক্কা না করে প্রতি এক কিলোমিটারে ১০টি বাঁধ দিয়ে মাছ নিধন করা হচ্ছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে মৎস্যসম্পদ। সরেজমিন দেখা যায়, নান্দাইল উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নরসুন্দা নদের সিংরইল ইউনিয়নের ভোরাঘাট এলাকায় প্রায় ১ কিলোমিটারে ১০টি বাঁধ দিয়ে বিভিন্ন জাল পেতে মাছ নিধন করা হচ্ছে। নদীর এপাড় থেকে ওপাড় পর্যন্ত বাঁশ, কাঠ, বাঁশের ভানা ও জাল দিয়ে উঁচু করে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। শুধু জাল ফেলার অংশটুকুর মুখ খোলা রাখা হয়েছে। একমাত্র গতিপথ থাকায় জালে নিশ্চিতভাবে মাছ ধরা পড়ে। ফলে শিকারিরা লাভবান হলেও মাছের স্বাধীন বিচরণ যেমন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি মাছের বংশ বৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে। মাছ শিকারিরা অবৈধভাবে মাছ নিধন করায় দেশি প্রজাতির, তথা নদ-নদী, খাল-বিলের মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। এখন আর দেশি প্রজাতির মাছ বাজারে চোখে পড়ে না। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সিংরইল ইউনিয়নের বাসিন্দা শংকর বাবু, আব্দুল হাকিম, হাফিজ মিয়া, ফেরু মিয়া, হুমায়ূনসহ আরও অনেকেই নদে বাঁধ দিয়ে মাছ নিধন করছেন। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো নজরদারি না থাকায় নদে বাঁধ দেওয়ার যেন হিড়িক পড়েছে। স্থানীয় বয়োজ্যেষ্ঠ মোফাজ্জল হোসেন ও যুবক আমিনুল ইসলাম জানান, আগে তো আমরা নদ থেকে মাছ ধরতে পারতাম। এখন নদে বাঁধ দিয়ে খরা ও ড্রিম জাল দিয়ে ধরায় মাছ বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ফলে বড় মাছ ধরা তো দূরের কথা, পোনা মাছও আর পাওয়া যায় না। স্থানীয়রা আরও জানান, মৎস্য অফিসের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই চলছে অবৈধভাবে মাছ নিধনের কর্মযজ্ঞ। অভিযোগ করলেও কোনো কাজ হবে না—এমনই কথা ছড়াচ্ছেন প্রভাবশালীরা। ফলে কেউ অভিযোগও করতে সাহস পান না। অথচ স্থানীয় বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনেই রয়েছে একাধিক বাঁধ। এ বিষয়ে সিংরইল ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। নান্দাইল উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শাহানা নাজনীন বলেন, আমি বিষয়টি অবগত নই। তবে দুই-এক দিনের মধ্যে ঘটনাস্থলে যাব। বাঁধ দেওয়ার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
০৮ জুলাই, ২০২৩
X