ময়মনসিংহের নান্দাইলে নরসুন্দা নদে বাঁধ দিয়ে খরা জাল ও ড্রিম জাল পেতে মাছ নিধন করছে প্রভাবশালীরা। সরকারি নীতিমালাকে তোয়াক্কা না করে প্রতি এক কিলোমিটারে ১০টি বাঁধ দিয়ে মাছ নিধন করা হচ্ছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে মৎস্যসম্পদ।
সরেজমিন দেখা যায়, নান্দাইল উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নরসুন্দা নদের সিংরইল ইউনিয়নের ভোরাঘাট এলাকায় প্রায় ১ কিলোমিটারে ১০টি বাঁধ দিয়ে বিভিন্ন জাল পেতে মাছ নিধন করা হচ্ছে। নদীর এপাড় থেকে ওপাড় পর্যন্ত বাঁশ, কাঠ, বাঁশের ভানা ও জাল দিয়ে উঁচু করে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। শুধু জাল ফেলার অংশটুকুর মুখ খোলা রাখা হয়েছে। একমাত্র গতিপথ থাকায় জালে নিশ্চিতভাবে মাছ ধরা পড়ে। ফলে শিকারিরা লাভবান হলেও মাছের স্বাধীন বিচরণ যেমন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি মাছের বংশ বৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে। মাছ শিকারিরা অবৈধভাবে মাছ নিধন করায় দেশি প্রজাতির, তথা নদ-নদী, খাল-বিলের মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। এখন আর দেশি প্রজাতির মাছ বাজারে চোখে পড়ে না।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সিংরইল ইউনিয়নের বাসিন্দা শংকর বাবু, আব্দুল হাকিম, হাফিজ মিয়া, ফেরু মিয়া, হুমায়ূনসহ আরও অনেকেই নদে বাঁধ দিয়ে মাছ নিধন করছেন। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো নজরদারি না থাকায় নদে বাঁধ দেওয়ার যেন হিড়িক পড়েছে।
স্থানীয় বয়োজ্যেষ্ঠ মোফাজ্জল হোসেন ও যুবক আমিনুল ইসলাম জানান, আগে তো আমরা নদ থেকে মাছ ধরতে পারতাম। এখন নদে বাঁধ দিয়ে খরা ও ড্রিম জাল দিয়ে ধরায় মাছ বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ফলে বড় মাছ ধরা তো দূরের কথা, পোনা মাছও আর পাওয়া যায় না। স্থানীয়রা আরও জানান, মৎস্য অফিসের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই চলছে অবৈধভাবে মাছ নিধনের কর্মযজ্ঞ। অভিযোগ করলেও কোনো কাজ হবে না—এমনই কথা ছড়াচ্ছেন প্রভাবশালীরা। ফলে কেউ অভিযোগও করতে সাহস পান না। অথচ স্থানীয় বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনেই রয়েছে একাধিক বাঁধ।
এ বিষয়ে সিংরইল ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
নান্দাইল উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শাহানা নাজনীন বলেন, আমি বিষয়টি অবগত নই। তবে দুই-এক দিনের মধ্যে ঘটনাস্থলে যাব। বাঁধ দেওয়ার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
মন্তব্য করুন