চট্টগ্রামে গণপরিবহন ধর্মঘট স্থগিত
চট্টগ্রামে ডাকা পরিবহন ধর্মঘট ১২ ঘণ্টার মাথায় তা স্থগিত করেছে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। রোববার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভার পর এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।  এর আগে ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্তিতি সামাল দিতে বৈঠকে ডাক দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। এ সময় সংগঠনটির নেতারা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ বিষয়ে আলোচনায় বসেন। দুপুরে শুরু হওয়া আলোচনা শেষ হয় বিকেল ৬টার দিকে। সর্বশেষ আলোচনা শেষে কিছু দাবি দাওয়া তুলে ধরেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। পরে জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে ধর্মঘট স্থগিত করা হয়। বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ মুছা কালবেলাকে বলেন, আপাতত আমরা ধর্মঘট স্থগিত করেছি। কিন্তু আমরা চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে আমাদের নিরাপত্তা চায়। এখন থেকে কাপ্তাই সড়কে পুলিশ পাহারা দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে। যদি আমাদের কোনো গাড়িতে ফের হামলা হয়, সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। এর আগে ধর্মঘট চলাকালীন সময় সরেজমিনে দেখা যায়, ঘড়ির কাঁটা তখন দুপুর ১২টায়। মাথার ওপরে তপ্ত রোদ। সাতকানিয়া থেকে মাকে চিকিৎসক দেখাতে ছোট ছোট যানবাহনে চড়ে চট্টগ্রামের নতুন ব্রিজ পর্যন্ত আসেন ইব্রাহিম। মূল শহরে আসার প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরুত্ব পাড়ি দিতে বাসে চড়ে লাগে ১ থেকে দেড় ঘণ্টা। কিন্তু রোববার পুরো ৩ ঘণ্টায় সিএনজি চালিত অটোরিকশায় চেপে নগরের প্রবেশমুখ নতুন ব্রিজ পর্যন্ত এসেছেন ইব্রাহিম। এইটুকু দুরুত্ব পাড়ি দিতে তীব্র গরমে হাপিয়ে উঠেছেন তিনি, সঙ্গে কাতরাচ্ছিলেন ছিলেন অসুস্থ মা।  চট্টগ্রামে গণপরিবহন ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে এমনটাই দুর্ভোগে মুখে পড়েন ইব্রাহিম। এভাবে ইব্রাহিম একা নয়। বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে দুর্ভোগে পড়েছেন হাজারো মানুষ। নতুন ব্রিজ এলাকায় বাস-মিনিবাস না পেয়ে চট্টগ্রাম থেকে বাড়ির পথে যেতে কেউ ব্যাগ নিয়ে উঠে পড়েন ট্রাকে, কেউ ভাড়া করেন মিনি ট্রাক। তুলনামূলক কাছাকাছি দূরুত্বে যারা পাড়ি দিচ্ছিলেন তাদের ভরসা ছিল ভ্যানগাড়ি কিংবা বাইক। বাইক-ট্রাক-ভ্যানগাড়িকে ভরসা করে অনেকেই গন্তব্যে যেতে পারলেও তল্পিতল্পা হাতে অনেকেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলেন ফুটপাত কিংবা সড়কে। জেলা-উপজেলা থেকে কোনো গণপরিবহনও নগরীতে প্রবেশ করেনি। দূরপাল্লার গণপরিবহনেরও একই পরিস্থিতি। পরিবহন ধর্মঘটকে সকাল থেকে কার্যত চট্টগ্রাম অঞ্চল সড়ক পথে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এরপর বেলা গড়াতেই গণপরিবহন সংকটের সাথে পাল্লা দিয়ে তপ্ত রোদ যেন সেই দুর্ভোগে বাড়তি মাত্রা যোগ করে দেয়।  রোববার সকাল থেকে কাপ্তাই রাস্তার মাথা, সিটি গেইট, নতুন ব্রিজ এলাকাসহ নগরের বিভিন্ন প্রবেশমুখে একই চিত্র দেখা গেছে। গণপরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘটে মহাসড়ক-সড়ক ও প্রবেশমুখগুলো ছিল একেবারেই গণপরিবহন শূন্য। মূলত চট্টগ্রাম শহর থেকে ছেড়ে যাওয়া এবং চট্টগ্রামমুখী গণপরিবহন চলাচল একেবারেই বন্ধ ছিল। এর আগে গত সোমবার (২২ এপ্রিল) চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী চুয়েট শিক্ষার্থী শান্ত সাহা এবং তাওফিক হোসাইন নিহত হন। সহপাঠী মৃত্যুর ঘটনায় টানা চার দিন আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা। এসময় অবরুদ্ধ ছিল চট্টগ্রাম-কাপ্তাই আঞ্চলিক মহাসড়ক। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সব অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় প্রশাসন। এতে ছাত্রদের বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার মধ্যে ও ছাত্রীদের শুক্রবার সকাল ৯টার মধ্যে হলত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ ঘোষণার পরপর শিক্ষার্থীরা আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।ক্যাম্পাসের স্বাধীনতা চত্বরে থাকা ও মূল ফটকে রাখা দুটি বাসে তারা আগুন ধরিয়ে দেন।  পরে ক্যাম্পাস অনির্দিষ্টকালের বন্ধ ঘোষণা থেকে সরে আসে চুয়েট কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) জরুরি সিন্ডিকেট সভা শেষে ঘোষণা হয় ৯ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি। এরই ধারাবাহিকতায় ক্ষতিগ্রস্ত বাসের ক্ষতিপূরণ দাবিসহ বিভিন্ন দাবিতে রোববার থেকে ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘটের ডাক দেয় চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। রোববার ধর্মঘটের প্রথম দিনে সড়ক ও মহাসড়কগুলোতে সৃষ্টি হয় ভয়াবহ সংকট। দুর্ভোগে পড়েন বিভিন্ন রুটের যাত্রীরা।  নগরের অন্যতম প্রবেশমুখ কাপ্তাই রাস্তা এলাকা। রাঙ্গুনিয়া, রাউজান, রাঙ্গামাটি, কাপ্তাই, বিলাইছড়ি, রাজস্থলীসহ আশপাশের জেলা-উপজেলা থেকে এ প্রবেশমুখ দিয়েই প্রতিদিন মূল শহরে যাতায়াত করে অন্তত ৮ লাখ মানুষ। দুর্ঘটনায় চুয়েটের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে টানা চারদিন সড়কটি অবরুদ্ধ ছিল। রোববারের ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে সড়কটি একেবারেই গণপরিবহনশূন্য হয়ে পড়ে। নগরের অন্যতম প্রবেশমুখ সিটি গেইট এলাকার চিত্রও ছিল একই রকম।  রাঙ্গামাটির বাসিন্দা খলিলুর রহমান কালবেলাকে বলেন, ‘চুয়েটের দুজন স্টুডেন্ট এক্সিডেন্টের পর থেকে চারদিন দুর্ভোগ হয়েছে। শুনেছি এতদিন তারা আন্দোলন করেছে। আজকে শুনছি বাস চালকরা আন্দোলন করছে। আজকে কাপ্তাই রাস্তা মাথা পর্যন্ত এসেছি ট্রাকে চড়ে। এগুলো নিয়ে প্রতিদিন দুর্ভোগের মধ্যে আছি। এগুলো করে কি লাভ?’ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে হামলা গণপরিবহন ধর্মঘট চলাকালে নগরের অক্সিজেন মোড় এলাকায় একটি বাসে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ওই বাসটি চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল বলে জানা গেছে। এ ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় মোতায়েন করা হয় বাড়তি পুলিশ। বিকেল ৫টার দিকে এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো সংশ্লিষ্ট থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি বলে জানা গেছে।   চুয়েট শিক্ষার্থীদের পাশে ক্যাব এদিকে চুয়েট শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। এ সময় ক্যাবের নেতারা বলেন, বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ বা অন্য যারা এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সবাই সরকারি দলের নেতা বা কর্মী। আর তারাই বিভিন্ন সময়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলে দাবি আদায়ের জন্য জনগণকে বারবার জিম্মি করেন। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সরকার দলীয় নেতাকর্মী হিসাবে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এধরনের কর্মকাণ্ড থেকে তাদের বিরত থাকা উচিত।  ক্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, গণপরিবহন, শ্রমিক ও মালিকরা দেশের আইনের শাসনের প্রতি বৃদ্ধাঙুলি প্রদর্শন করে বারবার দেশের জনগণকে জিম্মি করে দাবি আদায় করার কারনে তারা বেপরোয়া হয়ে গণপরিবহনের লাইসেন্স, ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালিয়ে মানুষ হত্যা করবে আর তাদের বিরুদ্ধে আইনগত প্রতিকার করতে চাইলেই মানুষকে জিম্মি করে ঘর্মঘট ডাকবে এটা নিছক বর্বরতা ছাড়া কিছুই নয়। তারা যদি আইনের শাসনে প্রতি বিশ্বাসী হয় তাহলে আইনগতভাবেই তাদের বিরুদ্ধে কোনো অন্যায় হয়ে থাকলে তার প্রতিকার চাইতে পারতো। 
২৮ এপ্রিল, ২০২৪

পরিবেশবান্ধব গণপরিবহন ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে : পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশবান্ধব মেট্রোরেলে চড়ে পরিবেশ অধিদপ্তর পরিদর্শনে গেলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। সোমবার, (২২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় তিনি বাংলাদেশ সচিবালয় মেট্রো স্টেশন থেকে মেট্রোতে চড়ে আগারগাঁও মেট্রো স্টেশনে নামেন এবং পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যালয়ে যান। মেট্রোরেলে ভ্রমণকালে পরিবেশমন্ত্রী যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং পরিবেশবান্ধব গণপরিবহন ব্যবহারের জন্য জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণে জনসাধারণের অংশগ্রহণ অপরিহার্য। পরিবহন মালিকরা পরিবেশবান্ধব পরিবহন পরিচালনা করলে এবং জনসাধারণ পরিবেশবান্ধব যানবাহন ব্যবহার করলে বায়ুদূষণ পরিস্থিতির উন্নতি হবে। এসময় অন্যদের মধ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ডক্টর ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন, অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) ড ফাহমিদা খানমসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।   পরিবেশ অধিদপ্তর পরিদর্শন শেষে তিনি পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড আবদুল হামিদ সহ সদর দপ্তর ও মাঠ পর্যায়ের সকল কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন। এসময় তিনি পরিবেশ সংরক্ষণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের এবং জনগণকে ঝামেলা মুক্তভাবে সেবা প্রদানের জন্য কর্মকর্তদের প্রতি নির্দেশ প্রদান করেন। তিনি বলেন, সকল প্রকার দুর্নীতিমুক্ত থেকে আইন, বিধিবিধান মোতাবেক সরকারি কর্মকাণ্ড সম্পাদন করতে হবে।  
২২ জানুয়ারি, ২০২৪

ভোটের দিন গণপরিবহন চলবে কিনা জানালেন জননিরাপত্তা সচিব
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটারদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য ভোটের দিন গণপরিবহন, প্রাইভেটকার, সিএনজি ও অটোরিকশা চলাচল করার অনুমতি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফিজুর রহমান। মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দ্বিতীয় পর্যায়ে এক্সিকিউটিভ (নির্বাহী) ম্যাজিস্ট্রেটদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য এসব কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার এসব যানবাহন চলাচলের বিষয়ে কিছুটা শিথিলতা আনা হয়েছে। তবে মোটরসাইকেল, স্পিডবোটসহ বেশকিছু যানবাহনের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মো. জাহাংগীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনিছুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার বিভাগের সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান। এর আগে গত ৩১ ডিসেম্বর সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, ৬ জানুয়ারি দিবাগত মধ্যরাত ১২টা থেকে ৭ জানুয়ারি মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত (২৪ ঘণ্টা) ট্যাক্সি, পিক আপ, মাইক্রোবাস ও ট্রাক চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে। 
০২ জানুয়ারি, ২০২৪

ফরিদপুরে গণপরিবহন চালাতে প্রশাসনের নিরাপত্তা প্রদানের আশ্বাস
হরতাল-অবরোধসহ যে কোনো পরিস্থিতিতে গণপরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন ফরিদপুর প্রশাসন সংশ্লিষ্টরা। সোমবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে জেলা পুলিশের আয়োজনে এক মতবিনিময় সভায় এ আশ্বাস দেওয়া হয়।   ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. শাহজাহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার।  এ ছাড়া হাইওয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহিনুর আলম খান, র‌্যাব-১০ এর কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার কে এম শাইখ আখতার, জাতীয় শ্রমিক লীগের জেলা শাখার সভাপতি গোলাম মো. নাছির, ফরিদপুর জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি খন্দকার আবদুর রাশেদ, সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান, জেলা মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি বজলুর রশিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত গণপরিবহন সংশ্লিষ্ট কয়েকশ মালিক ও শ্রমিকরা দাঁড়িয়ে থাকা পরিবহনে আগুন দেওয়ার তথ্য উল্লেখ করে শঙ্কা প্রকাশ করেন। তারা বাস-ট্রাকসহ গণপরিবহন ও সংশ্লিষ্ট পরিচালনাকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান। শ্রমিকদের পক্ষে জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি গোলাম মো. নাছির বলেন, মালিক ও শ্রমিকদের সহায়তায় আমরা ফরিদপুর থেকে পরিবহন চালাচ্ছি, কিন্তু অন্য জেলা থেকে পরিবহন কম চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, অনেক নামিদামি পরিবহন কোম্পানি তাদের বাস চালাচ্ছেন না। যে কোনো পরিবহনের জন্য ফরিদপুরকে নিরাপদ রাখতে হবে।  প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, প্রতিদিন অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি বিজিবি সদস্যরা কাজ করবেন। যেখানে সমস্যা মনে করবেন আমাদের জানালে সেখানেই নিরাপত্তা দেওয়া হবে। জেলা ও উপজেলা সদরের মহাসড়ক-সড়কে পুলিশ-বিজিবিসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।  সভাপতির বক্তব্যে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান বলেন, ফরিদপুরে কেউ কোনো যানবাহনে কোনো ধরনের নাশকতা ঘটানোর চেষ্ট করলে কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে। কেউ কোনো ধরনের নাশকতা করলে তাকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। ফরিদপুরকে শতভাগ নিরাপদ রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত মাদারীপুর রিজিওনের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহিনুর আলম খান জানান, আপনারা নির্দ্বিধায় রাস্তায় বের হবেন, সড়কে সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আপনাদের পাশে থাকবে হাইওয়ে পুলিশ।  এদিকে প্রশাসন সংশ্লিষ্টরা আগামী দিনে যে কোনো ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে ভূমিকা নেওয়াসহ কেউ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটালে সর্বোচ্চ চেষ্টার মাধ্যমে হলেও তাকে আইনের আওতায় আনার ঘোষণা দেওয়া হয়।
০৬ নভেম্বর, ২০২৩

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গণপরিবহন সংকটে যাত্রীভোগান্তি চরমে
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলাচলরত দক্ষিণবঙ্গগামী দূরপাল্লার বাসের যাত্রীদের জন্য সাভারের নবীনগর বাস টার্মিনালে সকাল থেকে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। বাসের জন্য সকাল থেকেই অপেক্ষা করছেন যাত্রীরা। হরতালের কারণে কাঙ্ক্ষিত যাত্রী না থাকায় ঢাকা থেকে বাস ছেড়ে না আসায় এই টার্মিনালের কাউন্টারগুলো থেকে টিকিটও বিক্রি করছেন না খোলা থাকা ৪-৫টি কাউন্টার। সকাল ১০টার দিকে ৩২টি কাউন্টারের মধ্যে মাত্র ৪-৫টি কাউন্টার খোলা দেখা গেছে। রোববার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, টার্মিনালটিতে ৪-৫টি কাউন্টার খোলা রয়েছে। আর এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন খুলনা, বেনাপোল, বাগেরহাট, মাগুরা, গোপালগঞ্জ, পিরোজপুর, বরিশাল, খুলনাসহ কয়েকটি জেলার যাত্রীরা। তাদের অভিযোগ কাউন্টার থেকে টিকিট দেওয়া হচ্ছে না। তবে টিকিট কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের দাবি, হরতালের কারণে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। তাই যারা টিকিট কিনতে আসছেন, তাদের অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে। কাঙ্ক্ষিত যাত্রী পাওয়ার পর টিকিট বিক্রি করা হবে। রোববার সকাল থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত সরেজমিনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড, নবীনগর, আশুলিয়ার বাইপাইল ও ধামরাইয়ের ঢুলিভিটা বাসস্ট্যান্ড ঘুরে দেখা যায়, সড়কে তেমন কোনো গণপরিবহন নেই। তাই বেশিরভাগ মানুষ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, লেগুনায় চড়ে গন্তব্যে পাড়ি দিচ্ছেন। হঠাৎ দুই একটি স্বল্প দূরত্বের বাসের দেখা মিললেও দূরপাল্লার বাসের দেখা মিলেনি কোথাও। আশুলিয়ার জিরানী এলাকা থেকে টিকিট কাটতে এসে টিকিট পাননি শিক্ষার্থী শাহরিয়াত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, ফরিদপুর টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটে কাল আমার ভর্তির শেষ দিন। আজকে যাব তাই টিকিট কাটতে এসেছিলাম। কিন্তু পেলাম না। তাই এখন কীভাবে যাব জানি না। কমফোর্ট লাইন পরিবহনের কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা ইয়াকুব আলী জানান, সকাল থেকে কাউন্টার খুলে বসে আছেন কিন্তু যাত্রী নাই। দুই একজন যাত্রী আসায় তাদের অপেক্ষা করতে বলেছি। যদি ঢাকা থেকে বাস আসে তবে তাদের টিকিট দিব। প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে ১০টার মধ্যে ৩-৪টি বাস যায়। আজ একটিও ঢাকা থেকে আসেনি। এদিকে মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ ও র‍্যাবের একাধিক টিমকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস ও ট্রাফিক উত্তর) আব্দুল্লাহিল কাফী কালবেলাকে বলেন, সড়কে চলমান যানবাহন ও যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিক টিম সাভারের মহাসড়কগুলো বিশেষ দায়িত্ব পালন করছেন। যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনারোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছে।
২৯ অক্টোবর, ২০২৩

হরতালেও সিলেটে গণপরিবহন চালানোর সিদ্ধান্ত
আজকের হরতাল মানবেন না সিলেটের পরিবহন শ্রমিকরা। হরতাল ঘোষণার পর ঢাকা ও সিলেটে পরিবহন চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন বাস মালিক ও পরিবহন শ্রমিক সমিতি। আগামীকাল রোববার (২৯ অক্টোবর) সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে বিএনপি। শনিবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে নয়াপল্টনে সমাবেশ শেষে দলীয় কার্যালয়ের নিচে হ্যান্ড মাইকে হরতালের ঘোষণা দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার সন্ধ্যায় সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এ হরতালের পক্ষে নই। বাস মালিক সমিতির সিদ্ধান্তের আলোকে রোববার আমাদের শ্রমিকরা যথারীতি গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বের হবেন।’ এ ছাড়া রোববার হরতালে গণপরিবহন চালানোর ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা বাস মালিক সমিতি। এদিকে, দলীয় কর্মসূচি ঘোষণার পরপরই শনিবার বিকেলে সিলেটে সর্বাত্মক হরতাল পালনের আহবান জানিয়েছে জেলা বিএনপি।  সিলেট জেলা বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক মাহবুব আলম এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দেশের গণতন্ত্র, বাক স্বাধীনতা ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় রোববার সিলেট জেলার সর্বত্র সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক হরতাল পালন করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীসহ সিলেটবাসীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী। সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, সিলেট বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংঠনের নেতাকর্মীদের একাংশ ঢাকায় থাকলেও বড় অংশ সিলেটে রয়ে গেছেন। রোববার সকাল থেকে তারা সিলেটের রাস্তাঘাট দখলে নিয়ে হরতাল সফল করবেন। এ ছাড়া আমরা যারা ঢাকায় আছি, তারা রাতেই বিভিন্নভাবে সিলেটে ফেরার কথা রয়েছে।
২৮ অক্টোবর, ২০২৩

ঢাকার সড়কে গণপরিবহন কম, বৃষ্টিতে ভোগান্তি
রাজধানীতে আজ আওয়ামী লীগের তিন অঙ্গসংগঠন ও বিএনপির পাল্টাপাল্টি সমাবেশ চলছে। সমাবেশ ঘিরে রাজধানীতে গণপরিবহন চলাচল কমেছে। যাত্রীদের সংখ্যাও অন্যদিনের থেকে কম। তবে জরুরি প্রয়োজনে যারা ঘরের বাইরে বের হয়েছেন তারা বাস-সিএনজি সংকটে ভোগান্তিতে পড়েছেন বলে জানা গেছে। দুপুরের পর বৃষ্টিতে এ ভোগান্তি আরও বেড়েছে।  আজ সকাল থেকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়ক বন্ধ থাকায় অনেককে ভোগান্তিতেও পড়তে হয়েছে। প্রেস ক্লাবেও একই অবস্থা। দুপুরে রাজধানীর কাজীপাড়া, আগারগাঁও, শ্যামলি, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, শাহবাগ, পল্টন, গুলিস্তান, মহাখালী সড়ক ঘুরেও একই চিত্র দেখা গেছে। অধিকাংশ সড়কে বাস কম। কোনো কোনো সড়কে বাস চললেও যাত্রী নেই।  আরও পড়ুন : মহাসমাবেশে এসে বিএনপি নেতার মৃত্যু বাংলামোটর বাসস্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা আরাফাত খান বলেন, ‘রাস্তায় বাস খুব কম। মানুষও কম। শুনেছি কীসের সমাবেশ তাই বাস নেই। সিএনজি কইরা যামু, টাকা কই? হাইটা যাওয়ার উপায় নাই, বৃষ্টিতে আটকাইয়া আছি।’ ফার্মগেট মোড়ে অন্যদিনের তুলনায় যানবাহন চলাচল কম। বৃষ্টিতে আটকে থাকা তরিকুল বলেন, ‘জরুরি কাজে মতিঝিল যাব। কিন্তু বাস কম, সেই সঙ্গে বৃষ্টিতে ঝামেলায় পড়েছি।’  আরও পড়ুন : তল্লাশি ছাড়াই ঢাকায় ঢুকল ৩০০ গাড়ি বর্তমান সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে নয়াপল্টনে দুপুর ২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় বিএনপির মহাসমাবেশ। সকাল থেকেই সমাবেশে দলের নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। বেলা ১১টার মধ্যেই বিএনপি নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে ভরে যায় সমাবেশস্থল। আশপাশের এলাকা মতিঝিল, কাকরাইল, মালিবাগ ছাড়িয়ে পড়ে নেতাকর্মীদের ভিড়। মগবাজার, মালিবাগ, মৎস্য ভবন এবং জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনেও জড়ো হন বিএনপি নেতাকর্মীরা। বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা ছয়দলীয় জোট গণতন্ত্র মঞ্চসহ ৩৭টি দলও আজ একই দাবিতে পৃথকভাবে সমাবেশ করছে।  এদিকে, রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটের সামনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম তিন সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের শান্তি সমাবেশ চলছে। এর আগে শুক্রবার (২৮ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সমাবেশের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। প্রথমেই ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ গান পরিবেশন করা হয়।  সমাবেশ উপলক্ষে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে জড়ো হন। জুমার নামাজের পরে যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের ঢল নামে। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন।
২৮ জুলাই, ২০২৩
X