বার্সেলোনার হারে ৪ ম্যাচ আগেই চ্যাম্পিয়ন রিয়াল
দাপটের সঙ্গে স্প্যানিশ লিগ শিরোপা নিশ্চিত করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। চার ম্যাচ হাতে রেখে কার্লো আনচেলত্তির দলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পেছনে অবদান আছে বার্সেলোনারও। শনিবার রাতে স্প্যানিশ লা লিগায় জিরোনার বিপক্ষে ৪-২ গোলে হেরে যায় বার্সেলোনা। এর ফলে চ্যাম্পিয়ন হয় রিয়াল। লা লিগায় শনিবার রাতে রিয়াল ও বার্সেলোনা উভয়েরই খেলা ছিল। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সমীকরণ আনচেলত্তির দলের জন্য সহজ ছিল। কাদিজকে ৩-০ গোলে হারিয়ে সেই সহজ সমীকরণটা মিলিয়েছে রিয়াল। তবে বার্সা না হারলে রিয়ালকে আরও এক সপ্তাহ অপেক্ষায় থাকতে হতো। পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে থাকা জিরোনা জয়ে সেটা সম্ভব হয়েছে। অন্যভাবে বললে, বার্সা হেরে যাওয়ায় ৪ ম্যাচ হাতে রেখে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রিয়াল। এমন অনায়াস ভঙ্গিতে তাদের চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা তাৎপর্যপূর্ণ। লিগের শুরু থেকেই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বার্সা পিছিয়ে পড়ছিল। সেই ধারা লিগের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থেকেছে। অন্যদিকে জিরোনার উত্থান চোখে পড়ার মতো হলেও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো দক্ষতা তাদের ছিল না। শনিবার জয়ের পরও পয়েন্ট তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা জিরোনা কোনোভাবেই ছুঁতে পারবে না রিয়ালকে। ৩৪ ম্যাচ শেষে তাদের পয়েন্ট ৭৪। সমান ম্যাচে ৭৩ পয়েন্ট পেয়েছে বার্সা। দুই দল বাকি চার ম্যাচ জিতলেও রিয়ালকে ছুঁতে পারবে না। ৩৪ ম্যাচ শেষে ৮৭ পয়েন্ট নিয়ে লা লিগার পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে আছে রিয়াল। দ্বিতীয় স্থানে থাকা জিরোনার চেয়ে ১৩ পয়েন্টে এগিয়ে তারা। বাকি আর চারটি ম্যাচে জিরোনার পক্ষে ১২ পয়েন্টের বেশি পাওয়া সম্ভব নয়। এবার রিয়ালের লিগ শিরোপা জয়ে ভূমিকা রেখেছেন জুড বেলিংহাম ও ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। করিম বেনজেমা রিয়াল ছাড়ার পর এ দুজন অভাবটা বুঝতে দেননি। সঙ্গে আনচেলত্তির পরিকল্পনাও ভূমিকা রেখেছে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ক্ষেত্রে। এখন রিয়ালের সামনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের হাতছানি। মিউনিখে গিয়ে বায়ার্নের সঙ্গে ২-২-এ ড্র করেছে তারা। ঘরের মাঠে জিতলেই ফাইনালে। অপেক্ষাকৃত সহজ সমীকরণ মেলানোর জন্য মুখিয়ে আছে রিয়াল। লা লিগার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়ালের যখন এমন সুখের দিন, বার্সা তখন ধুঁকছে হতাশায়। ডিসেম্বরে ঘরের মাঠে লা লিগায় জিরোনার কাছে একই ব্যবধানে হেরেছিল বার্সা। পাঁচ মাস পর একই ফল জাভি হার্নান্দেজের দলের। অথচ শনিবার রাতে দুবার এগিয়ে গিয়েছিল বার্সা। ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই ক্রিস্টিনসেনের গোলে এগিয়ে যায়। এক মিনিট পর গোল করে সমতায় ফেরান আর্টেম দোবায়েক। এরপর প্রথমার্ধের শেষের দিকে রবার্ট লেভানডভস্কির গোলে বার্সা প্রথমার্ধ শেষ করে। দ্বিতীয়ার্ধে ১০ মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে জিরোনা। ৬৫ মিনিটে পোর্তু সমতায় ফেরান। পরে মিগুয়েল গুতেরেজ ও পোর্তুর দ্বিতীয় গোলে দলের জয় নিশ্চিত হয়। ম্যাচ শেষে হতাশ বার্সেলোনার কোচ জাভি বলেন, ‘দলের এ পারফরম্যান্সে আমি ক্ষুব্ধ, সমর্থকদের মনের অবস্থাও বুঝতে পারছি। ক্লাবের একজন সমর্থক থেকেই তো আমি কোচ। মানুষের হতাশাটা তাই খুব ভালোভাবে অনুভব করতে পারছি। আমাদের ওপরে থাকা দুই দল মাদ্রিদ ও জিরোনার বিপক্ষে চারটি ম্যাচেই আমরা ওদের চেয়ে ভালো খেলেছি। কিন্তু স্কোরলাইনে সেটির প্রতিফলন হয়নি। চারটি ম্যাচই আমরা হেরেছি। আমাদের তাই উন্নতি করতে হবে অনেক।’ এদিকে রিয়ালের ৩৬তম লা লিগা ট্রফি নিশ্চিত হওয়ার পর অধিনায়ক নাচো উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আমরা খুবই আনন্দিত। লিগ জেতা খুবই কঠিন। এটি বছরজুড়ে করা আমাদের কঠিন পরিশ্রম এবং আত্মত্যাগের ফল। আমরা খুব খুশি। এখন উপভোগ করব এবং বুধবারের ম্যাচ নিয়ে ভাবব। সেদিন আমাদের বড় একটি ম্যাচ খেলতে মাঠে নামতে হবে।’ দলের প্রশংসা করে নাচো বলেন, ‘যখন একটি দল লিগ জেতে, সেটার অর্থ দলটি ধারাবাহিক। রক্ষণে দাপটে আমরা অনেকগুলো ম্যাচে গোল হজম করিনি। আক্রমণেও আমরা দুর্দান্ত শক্তিশালী। পুরো দল দারুণ একটি মৌসুম কাটিয়েছে। আমরা এমন একটি ধারাবাহিক আর লড়াকু দল যারা কখনো হাল ছাড়ে না। রিয়াল অসাধারণ এক দল।’
০৬ মে, ২০২৪

আবারও চ্যাম্পিয়ন আবাহনী
এমন তাপপ্রবাহে বিকেএসপিতে খেলা সহজ ছিল না। তবে আবাহনীর সামনে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সমীকরণটা ছিল বেজায় সহজ। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে জিতলেই প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন হবে আবাহনী—এমন ম্যাচে কিছুটা রোমাঞ্চ ছড়িয়ে ১ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে জয় তুলে নিয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেনরা। আগে ব্যাটিং করে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ৯ উইকেটে ২৬৭ রান করে। জবাবে ৪৯.৫ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছায় আবাহনী। অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন ৫৩ রানে অপরাজিত ছিলেন। জয়ের জন্য শেষ ওভারে আবাহনীর প্রয়োজন ছিল ৯ রান। মোসাদ্দেক হোসেন চার বলে দুটি করে রান তুলে দলকে নিয়ে গেলেন জয়ের কাছে। পঞ্চম বলটি ছক্কায় উড়িয়ে আবাহনীর ২৩তম লিগ শিরোপা জয় নিশ্চিত করেন তিনি। অপরাজিত হাফ সেঞ্চুরির জন্য আবাহনীর অধিনায়ক মোসাদ্দেক ম্যাচসেরা হয়েছেন। লিগে দারুণ ধারাবাহিক ছিল আবাহনী। গতকালের জয়টি ছিল তাদের ১৪তম জয়। ফলে দুই ম্যাচ হাতে রেখেই লিগ শিরোপা জিতেছে তারা। ২০১৩-১৪ মৌসুমে লিস্ট ‘এ’ স্বীকৃতি পাওয়ার পর এটি তাদের ষষ্ঠ শিরোপা। শেখ জামালের হয়ে গতকাল মাঠে নেমেছিলেন সাকিব আল হাসান। ৪৯ রান করেন তিনি। বল হাতে ১ উইকেট নিয়েছেন, যা আবাহনীর জয় আটকানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না। শেখ জামাল ৪৩তম ওভারে ৮ উইকেটে ১৮৫ রান করেছিল। এখান থেকে তারা ২৬৭ করে জিয়াউর রহমানের ব্যাটিং ঝড়ে। ৫৮ বলে ৬ চার ও ৮ ছক্কায় তিনি করেন ৮৫ রান। জবাব দিতে নেমে আবাহনীর ৩২.৩ ওভারে শেষে ৩ উইকেটে ১৬৩ রান ছিল। আফিফ হোসেন-এনামুল হকের ১০৩ রানের জুটি ভাঙার পর নামেন মোসাদ্দেক। ৭৯ বলে ৬৭ রান করে আউট হন এনামুল। এরপর আফিফকে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে ৯.৪ ওভারে ৫০ রানের জুটি গড়েন মোসাদ্দেক। ৮৮ বলে ৮৩ রান করে আফিফ আউট হলেও ম্যাচ আবাহনীর হাতের মুঠোয় চলে আসে। বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে শাইনপুকুরের বিপক্ষে নিয়মরক্ষার ম্যাচটিতে ৮ রানে জিতেছে মোহামেডান। আগে ব্যাট করে ২৫৫ রানে অলআউট হয়েছিল তারা। জবাবে শাইনপুকুর ৪৯.৪ ওভারে অলআউট ২৪৭ রানে। খালিদ হাসান ৮৩ বলে ৪৮, মার্শাল আইয়ুব ৭২ বলে ৭০ আর অধিনায়ক আকবর আলীর ৬৭ বলে ৬১ রান করে প্রায় জয়ের কাছে চলে গিয়েছিলেন। ৪৯ রানে শেষ ৬ উইকেট হারিয়ে ডুবেছে তারা।
০১ মে, ২০২৪

আর্চারকে ফিরিয়েই বিশ্বকাপের দল ঘোষণা চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের 
আর এক মাস পরেই শুরু হতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মহাযজ্ঞ আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। বৈশ্বিক এই আসরকে সামনে রেখে ইতিমধ্যেই কয়েকটি দেশ ঘোষণা করে ফেলেছে তাদের দল। এবার সেই তালিকায় যোগ দিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডও। জস বাটলারের দলে এক বছর পর ফিরেছেন ইংল্যান্ডের তারকা পেসার জোফরা আর্চার। ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডও (ইসিবি) যদিও এটিকে প্রাথমিক স্কোয়াড বলে উল্লেখ করেছে। দীর্ঘদিন পর জোফরা আর্চারের সাথে ফিরেছেন অভিজ্ঞ পেস অলরাউন্ডার ক্রিস জর্ডানও । সর্বশেষ ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ইংলিশ দলে দেখা গিয়েছিল এই ক্রিকেটারকে। ইংল্যান্ডকে ২০১৮ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতাতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখা আর্চার ইনজুরিতে অনেক দিন ধরেই দলের বাইরে। সর্বশেষ গত বছরের মার্চে ইংল্যান্ডের বাংলাদেশ সফরের দলে তিনি ছিলেন। এরপর কনুইয়ের চোটের কারণে ওয়ানডে বিশ্বকাপও খেলা হয়নি তার। এছাড়াও ইংল্যান্ডের টেস্ট দলের বাঁ-হাতি স্পিনার টম হার্টলিও প্রথমবারের মতো সুযোগ পেয়েছেন ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি দলে। চলতি বছরের জুনের এক তারিখ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর বসবে। তবে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড মাঠে নামবে জুনের ৪ তারিখ। ইংল্যান্ড বার্বাডোজের কেনসিংটন ওভালে নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের মোকবিলা করবে। প্রথমবারের মতো এই বিশ্বকাপে খেলার জন্য ইংলিশ দলে ডাক পেয়েছেন আইপিএলে ঝড়ো শতক হাঁকানো উইল জ্যাকসও। বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাওয়ার বেশিরভাগ ক্রিকেটারই খেলছেন চলতি আইপিএলে। ২২ মে থেকে শুরু হতে যাওয়া পাকিস্তানের বিপক্ষে চার ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজও একই দল খেলবে। ক্রিস জর্ডান অবশ্য দলে ডাক পাওয়ার জন্য ক্রিস ওকসকে ধন্যবাদ জানাতে পারেন।  ইনজুরিতে ওকসের ছিটকে যাওয়ায় সুযোগ হয়েছে তার। জস বাটলারের নেতৃত্বাধীন দলটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন। সর্বশেষ ২০২২ আসরে তারা পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল। ওই জয়ে দারুণ ভূমিকা রাখা বেন স্টোকস আগেই নিজেকে বিশ্বকাপ থেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। এবার ওকসও ছিটকে যাওয়ায় আগের আসরের বড় দুই তারকাকে পাচ্ছে না ইংলিশরা। ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্কোয়াড : জস বাটলার (অধিনায়ক), ফিল সল্ট, উইল জ্যাকস, জনি বেয়ারস্টো, বেন ডাকেট, হ্যারি ব্রুক, লিয়াম লিভিংস্টোন, মঈন আলি (সহ-অধিনায়ক), স্যাম কারান, ক্রিস জর্ডান, টম হার্টলি, আদিল রশিদ, জোফরা আর্চার, মার্ক উড, রিস টপলি।
৩০ এপ্রিল, ২০২৪

আন্তর্জাতিক ভলিবলে বিকেএসপি চ্যাম্পিয়ন
আমন্ত্রণমূলক আন্তর্জাতিক ভলিবল প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) লাল দল। ‘বিকেএসপি কাপ’ নামে আন্তর্জাতিক এ প্রতিযোগিতা প্রথমবারের মতো আয়োজন করেছিল বিকেএসপি। সোমবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে বিকেএসপির জিমন্যাশিয়ামে অনুষ্ঠিত শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে বিকেএসপি লাল দল ৩-০ সেটে নেপালের রুরাল মিউনিসিপ্যালিটি ভলিবল দলকে পরাজিত করে শিরোপা জয়ের উল্লাসে মাতে।  প্রথম সেট ২৫-১৩ পয়েন্টে জিতে নেয় বিকেএসপি লাল দল। পরের সেটে তুলনামূলক প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় বটে, কিন্তু বিকেএসপি লাল দলের জয় রুখতে পারেনি অতিথিরা। এ সেটের স্কোরলাইন ছিল ২৫-২১। তৃতীয় সেটে ম্যাচটা শেষ করে দিলেও এ জন্য বেশ ঘাম ঝরাতে হয়েছে স্বাগতিকদের। ২৭-২৫-এ সেট জিতে শিরোপা নিশ্চিত করে বিকেএসপি লাল দল। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মহিউদ্দিন আহমেদ সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পুরস্কার বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিকেএসপির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন। এ সময় বিকিএসপির অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।  ৬ দিনের এ প্রতিযোগিতায় বিকেএসপির দুটি দল ছাড়াও মালদ্বীপ পুলিশ ক্লাব ও নেপাল রুরাল মিউনিসিপ্যালিটি ভলিবল দল অংশগ্রহণ করে।
২৯ এপ্রিল, ২০২৪

কুয়েতে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
কুয়েতে ডেজার্ট চ্যাম্পিয়নশিপ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, শ্রীলংকাসহ বিভিন্ন দেশের ২০টি দল অংশগ্রহণ করে টুর্নামেন্টে। কুয়েত ক্রিকেট ক্লাব কর্তৃক আয়োজিত সুলাইবিয়া ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) স্থানীয় সময় রাত এগারোটায় শুরু হয় ডেজার্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। খেলা চলে রাত তিনটা পর্যন্ত। বাংলাদেশ ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, শ্রীলংকাসহ বিভিন্ন দেশের ২০টি দলের সঙ্গে দীর্ঘ ছয় মাস খেলে ফাইনালে আসে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দল বি বাড়ীয়া একাদশ এবং ভারতীয় প্রবাসীদের দল।  টসে জিতে প্রথমে ভারতের রাজোয়েল ক্রিকেট ক্লাব ফিল্ডিং নিয়ে নির্দিষ্ট ওভার শেষে আট উইকেটে ১২১ রান করে। জবাবে বি বাড়ীয়া একাদশ চার উইকেটে ১৭ ওভার তিন বলে লক্ষ্যে পৌঁছায়।  দীর্ঘ ১১ বছরের সাধনার প্রতিফলন ঘটেছে বলে জানায় বি বাড়ীয়া একাদশ ক্লাবের কর্মকর্তারা। বাংলাদেশি প্রবাসীরা শুধু রেমিট্যান্স যোদ্ধা নয়, কর্মব্যস্ততার মাঝেও তাদের শ্রম আর মেধায় অর্জিত এই জয় কুয়েতে ক্রিকেট অঙ্গনে মাইলফলক মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। উক্ত খেলায় উপস্থিত ছিলেন, বি বাড়ীয়া একাদশ ক্লাবের উপদেষ্টা মঈন উদ্দিন মঈন, মির্জা সোহেল বেগ, বি বাড়ীয়া একাদশ ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শিপন, বাংলাদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন কুয়েতের সভাপতি জাহাঙ্গীর খান পলাশ, বাংলাদেশ প্রেসক্লাব কুয়েতের সভাপতি মঈন উদ্দিন সরকার সুমন, বাংলাদেশ প্রেসক্লাব কুয়েতের প্রচার সম্পাদক মহসিন পারভেজসহ ক্রিকেটপ্রেমীরা।
২৮ এপ্রিল, ২০২৪

গাছ লাগিয়ে চ্যাম্পিয়ন হতে চায় ছাত্রলীগ
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেছেন, আমরা আন্দোলন ও নির্বাচনে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। আমাদের সামনে লক্ষ্য এক ঘণ্টার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃক্ষরোপণের রেকর্ড করা। যেটি আমরা ইতোমধ্যে নির্ধারণ করেছি। গিনেস বুকস অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে আমরা জায়গা করে নিতে চাই। জলবায়ু পরিবর্তনের আন্দোলনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভূমিকা পালন করতে চান। আমরা বিশ্বাস করি এ বৃক্ষরোপণ অভিযানেও ছাত্রলীগ চ্যাম্পিয়ন থাকবে। শনিবার (২৭ এপ্রিল) ভোরে খাগড়াছড়িতে যাওয়ার পথে ফেনী পৌর চত্বরে জেলা ছাত্রলীগের আয়োজনে সংক্ষিপ্ত পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। সাদ্দাম হোসেন বলেন, যারা বাংলাদেশের মানুষের ভোট এবং ভাতের অধিকার নিয়ে নতুন করে ছিনিমিনি খেলার চেষ্টা করবে আপনারা তাদেরকে দুধভাত মনে করে প্রতিহত করবেন। আর কেউ যদি আগুন সন্ত্রাস কায়েম করার চেষ্টা করে সেসব রাজাকারদের বাংলার মসনদে বসার স্বপ্নকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দুঃস্বপ্নে পরিণত করবে। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাই আগামী দিনে ফেনীর গৌরবগাথা মাটি থেকে জন্ম নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে নেতৃত্ব দেবে। ফেনীর প্রতিটি ইঞ্চিতে লড়াইয়ের ইতিহাস, সংগ্রামের ইতিহাস, আত্মত্যাগের ইতিহাস, বিজয়ের ইতিহাস লেখা রয়েছে। এখান থেকে জন্ম নিয়েছে ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী নায়ক শমসের গাজী, মায়ের ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে অকুতোভয় শহীদ আবদুস সালাম, বুদ্ধিজীবী জহির রায়হান, পর্বতজয়ী ওয়াসফিয়া নাজরীন, চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী, ভাষাসৈনিক গাজীউল হক, আমাদের প্রিয় গিয়াস উদ্দিন সেলিম, প্রখ্যাত চিত্রনাট্যকার সেলিম আল দীন ও হাঙ্গর নদীর গ্রেনেড উপন্যাসের লেখক সেলিনা হোসেন। সাদ্দাম হোসেন বলেন, ফেনী জেলার গণমানুষের সর্বস্তরের প্রিয় কণ্ঠস্বর যিনি তৃণমূলের সাধারণ মানুষের ও নেতাকর্মীদের দায়িত্ব নিয়ে সংগঠন কীভাবে পরিচালনা করতে হয়, দল কীভাবে পরিচালনা করতে হয়, গণমানুষের উন্নয়নে কীভাবে ভূমিকা পালন করতে হয়, তৃণমূল মানুষের ওপর ভর করে কীভাবে রাজনীতিকে শক্তিশালী করতে হয় এবং ছাত্ররাজনীতির পদ প্রদর্শকের ভূমিকায় নেমে এসেছেন আজকের এই মঞ্চ থেকে আমি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আধুনিক যুগোপযোগী শিক্ষাবান্ধব স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্রলীগ চ্যাম্পিয়ন থাকবে এবং ছাত্রসমাজকে পথ দেখাবে। ফেনী পৌর চত্বর প্রাঙ্গণে আয়োজিত পথসভায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তোফায়েল আহমেদ তপুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুর করিম জাবেদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান। এ সময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, ৬ ডিসেম্বর ফেনী জেলা স্বাধীন হয় অর্থাৎ রাজাকার হানাদার ও পাকবাহিনী মুক্ত হয়। বাংলাদেশের বিজয় দিবসের ঠিক দশ দিন আগে ফেনী জেলা শত্রুমুক্ত হয়। এর মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হয় যে, বাংলাদেশের যেকয়টি জেলা বিজয় দিবসের আগে মুক্ত হয় তার মধ্যে ফেনী জেলা অন্যতম। আজকে আপনাদের এই বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস, জোয়ার দেখে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে ফেনী নদীর, মুহুরী নদীর কিংবা কহুয়া নদীর সমগ্র স্রোত যেন ফেনী শহরের এই প্রাঙ্গণে এসে জড়ো হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি নতুন বাংলাদেশ গড়ার যুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর দীক্ষায় আপনারা নিজেদেরকে স্মার্ট সিটিজেন হিসেবে গড়ে তুলবেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগামী দিনের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবেন। পথসভায় উপস্থিত ছিলেন, ফেনী জেলা ছাত্রলীগের ছয় উপজেলা ও পৌরসভার বিভিন্ন ইউনিটের ছাত্রলীগ বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীরা। এর আগে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক মহিপাল অংশে মোটরসাইকেল বহরযোগে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতাদের বরণ করে নেন ফেনী জেলা ছাত্রলীগ।
২৭ এপ্রিল, ২০২৪

জব্বারের বলী খেলা / নতুন চ্যাম্পিয়ন বাঘা শরীফ
তারা সতীর্থ। বলীর কসরত শিখেছেন একই ওস্তাদের কাছে। দারুণ সেসব কসরত দেখিয়ে এবার মাতিয়ে তুলেছেন চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলার ১১৫তম আসর। তাদের একজন এবারের নতুন চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার বাঘা শরীফ, অন্যজন রানারআপ মো. রাশেদ। দুজনই কুস্তির প্রশিক্ষণ নিয়েছেন গতবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার শাহজালাল বলীর কাছে। এদিকে এবারও তৃতীয় হয়েছেন খাগড়াছড়ির সৃজন চাকমা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠের অস্থায়ী মঞ্চে শুরু হয় বলীদের লড়াই। সকাল থেকে রেজিস্ট্রেশন করে যাচাই-বাছাই শেষে মূল মঞ্চে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ৮০ কুস্তিগির। প্রধান অতিথি হিসেবে ঐহিত্যবাহী এ মেলার উদ্বোধন করেন রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন। প্রতিযোগিতা শুরুর আগেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে ময়দান। আশপাশের বিভিন্ন ছাদ এবং ভবনের উঁচু স্থানে অনেকে ভিড় জমান। কুস্তিগিররাও বিভিন্ন ভঙ্গিতে শারীরিক কসরত দেখিয়ে দর্শকদের আনন্দ দিতে শুরু করেন। ৮০ কুস্তিগিরের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে শেষ পর্যন্ত শুরু হয় বহুল প্রতীক্ষিত এ প্রতিযোগিতা। কখনো মুষ্ঠিবদ্ধ হাত, কিংবা কপাল-কাঁধ ঠেকিয়ে লড়তে শুরু করেন কুস্তিগিররা। শেষ পর্যন্ত সেমিফাইনালে মুখোমুখি হন রাশেদ ও সৃজন চাকমা এবং বাঘা শরীফ ও মো. রাসেল। সেমিফাইনালে দুই ম্যাচ চলে প্রায় ৩০ মিনিট। সেমিফাইনালে বিজয়ী হয়ে ফাইনালে ওঠেন মো. রাশেদ ও বাঘা শরীফ। অন্যদিকে, রাসেলকে হারিয়ে এবারও তৃতীয় হন সৃজন চাকমা। এ নিয়ে পরপর তিনবারই তিনি তৃতীয় হয়েছেন। ফাইনালে ১১ মিনিটের রুদ্ধশ্বাস লড়াই: বিশালাকার শরীর আর চাহনিতে লড়াকু ভাব। দুজনই একই গুরুর শীর্ষ হওয়ায় একে অন্যজনকে চেনেন খুব ভালোভাবেই। আবার দুজনের বাড়িও একই জায়গায়। তবে লড়াই শুরুর পর কেউ যেন কাউকে ছাড় দেন না। ফাইনালে বাঘা শরীফ ও মো. রাশেদ দুজনই মরিয়া হয়ে ওঠেন জেতার জন্য। চলতে থাকে একের পর এক ঘাত-প্রতিঘাত। এভাবে প্রায় ১১ মিনিট জমজমাট লড়াই চলে তাদের মধ্যে। শুরু থেকে জিততে মরিয়া হলেও শেষ দিকে এসে হাল ছেড়ে দেন রাশেদ। হঠাৎ সতীর্থ শরীফের হাত তুলে ধরে জানান দেন হার মানার। এ সময় চ্যাম্পিয়ন শরীফ অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বলেন, গতবারের চ্যাম্পিয়ন শাহজালাল বলী খেলায় অংশ না নিয়ে আমাকে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। অন্যদিকে, রানারআপ রাশেদ বলেন, আমি আগে বলী খেলায় অংশ নিইনি। আমাকে খেলায় নিয়ে এসেছেন শরীফ ভাই। তাই তাকে জয়ী করে দিয়েছি। অন্যদিকে, দুই শিষ্যকে সুযোগ করে দিতে এবার খেলায় অংশ নেননি কুমিল্লার শাহজালাল বলী। এভাবে বলী খেলায় কুমিল্লার ওস্তাদ-সতীর্থদের এমন ভালোবাসাকে অভিনন্দন জানাতে ভোলেননি চট্টগ্রামের দর্শকরা। পতেঙ্গা থেকে আসা তরুণ মো. ইমতিয়াজ কালবেলাকে বলেন, ‘বলী প্রতিযোগিতায় ওস্তাদ-সতীর্থদের এমন ভালোবাসা দেখে খুবই ভালো লেগেছে।’ লড়ছেন ৭১ বছরেও: জীর্ণশীর্ণ শরীর, গালভর্তি সাদা দাড়ি। ৭২-এর ঘরে বয়স, অথচ এখনো বলীর নেশা কাটিয়ে উঠতে পারেননি খাজা আহমদ। বাবার হাত ধরে ১১ কি ১২ বছর বয়স থেকে বলী খেলায় অংশ নিচ্ছেন তিনি। ফুসফুসে নানা সমস্যা। গত বছর বলেছিলেন অসুস্থতার কারণে আর অংশ নেবেন না বলী খেলায়। কিন্তু এ নেশা কাটেনি তার। গতকালও তাকে দেখা গেছে লালদীঘির মাঠে। উঠেছেন স্টেজে, লড়েছেন বুক ফুলিয়ে। খাজা আহমদ জানালেন, তার বাবাও বলী খেলা খেলতেন। ১১ কি ১২ বছর বয়স থেকে তিনি নিজেও বলী খেলায় অংশ নিচ্ছেন। জব্বারের বলী খেলায় ৫১ বছরের বেশি সময় ধরে অংশ নিচ্ছেন। একবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন বলেও দাবি তার। কৃষিকাজ করেন খাজা আহমদ। তার বাড়ি চট্টগ্রামের পতেঙ্গায়। এলাকায় তিনি ‘খাজা আহমদ বলী’ নামে পরিচিত।
২৬ এপ্রিল, ২০২৪

চট্টগ্রামে জব্বারের বলী খেলায় চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার বাঘা শরীফ
তারা সতীর্থ। বলীর কসরত শিখেছেন একই ওস্তাদের কাছে। দারুণ সেই সব কসরত দেখিয়ে এবার মাতিয়ে তুলেছেন চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলার ১১৫তম আসর। তাদের একজন এবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার বাঘা শরীফ, অন্যজন রানার্স আপ মো. রাশেদ বলী। দুজনই কুস্তির প্রশিক্ষণ নিয়েছেন জব্বারের বলীখেলার গতবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার শাহজালাল বলীর কাছে। অন্যদিকে এবারও তৃতীয় হয়েছেন খাগড়াছড়ির সৃজন চাকমা।  এর আগে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে চট্টগ্রামের লালদিঘি মাঠের অস্থায়ী মঞ্চে শুরু হয় বলীদের লড়াই। সকাল থেকে শতাধিক বলী রেজিস্ট্রেশন করলে যাচাইবাছাই শেষে মূল মঞ্চে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ৮০ বলী। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বেলুন উড়িয়ে ঐহিত্যবাহী এ মেলার উদ্ধোধন করেন রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন।  প্রতিযোগিতা শুরুর আগ থেকেই কানাই কানাই পূর্ণ হয়ে উঠে লালদিঘির ময়দান। আশপাশের বিভিন্ন ছাদ এবং ভবনের উঁচু স্থানে অনেকে ভিড় জমান। বেলুন উড়িয়ে প্রতিযোগিতা শুরুর পর শিষ-আর করতালির শব্দ ভেসে আসতে শুরু করে চারদিক থেকে। বলীরাও বিভিন্ন ভঙ্গিতে শারীরিক কসরত দেখিয়ে দর্শকদের আনন্দ দিতে শুরু করে। ৮০ বলীর অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে  শেষ পর্যন্ত শুরু হয় বহুল প্রতিক্ষিত এ প্রতিযোগিতা। কখনো মুষ্ঠিবদ্ধ হাত, কিংবা কপাল-কাঁধ ঠেকিতে লড়তে শুরু করে বলীরা। শেষ পর্যন্ত সেমিফাইনালে মুখোমুখি হন মো. রাশেদ ও রাঙ্গামাটির সৃজন চাকমা বলী। অপর সেমিফাইনালে মুখোমুখি হন বাঘা শরীফ ও মো. রাসেল বলী। সেমিফাইনালে দুই ম্যাচ চলে প্রায় ৩০ মিনিট। সেমিফাইনালে বিজয়ী হয়ে ফাইনালে ওঠেন মো. রাশেদ ও বাঘা শরীফ বলী। অন্যদিকে তৃতীয় স্থান নির্ধারণীতে রাসেলকে হারিয়ে এবারও তৃতীয় হন সৃজন চাকমা। গত তিনবার জব্বারের বলীখেলায় অংশ নিয়ে তিনবারই তৃতীয় হয়েছেন সৃজন। খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি জেলায় অনুষ্ঠিত বিভিন্ন বলীখেলায় চ্যাম্পিয়ন তিনি। ফাইনালে ১১ মিনিটের রুদ্ধশ্বাস লড়াই বিশালকার শরীর আর চাহনিতে লড়াকু ভাব। দুজনের বাড়িই একই গুরুর শীর্ষ হওয়ায় একে অন্যজনকে চেনে খুব ভালোভাবেই। আবার দুজনের বাড়িও একই জায়গায়। তবে লড়াই শুরুর পর কেউ যেন কাউরে ছাড়ে না। ফাইনালে ওঠে বাঘা শরীফ ও মো. রাশেদ বলী দু’জনই মরিয়া হয়ে উঠে জেতার জন্য। চলতে থাকে একের পর এক ঘাত প্রতিঘাত। এভাবে কখনো ঘায়েল হচ্ছিল বাঘা শরীফ, ঘুরে দাঁড়িয়ে তারপর বাহু কিংবা কপাল ঠেকিয়ে বিড়বিড় করে কথা বলে দু’জনই। তারপর আবারও চলে লড়াই। এভাবে একে একে প্রায় ১১ মিনিট জমজমাট লড়াই চলে বাঘা শরীফ ও রাশেদ বলীর মধ্যে। শুরু থেকে জিততে মরিয়া হলেও শেষ দিকে এসে হাল ছেড়ে দেয় রাশেদ বলী। হঠাৎ সতীর্থ বাঘা  শরীফের হাত তুলে ধরে জানান দেয় হার মানার।  এভাবেই ফাইনালে প্রায় ১১ মিনিট লাড়াইয়ের পর বাঘা শরীফের হাত উচিয়ে ধরেন রাশেদ। এ সময় চ্যাম্পিয়ন শরীফ অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বলেন, গতবারের চ্যাম্পিয়ন শাহজালাল বলীখেলায় অংশ না নিয়ে আমাকে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন।  অন্যদিকে রানার্স আপ মো. রাশেদ বলেন, আমি আগে বলীখেলায় অংশ নেইনি। আমাকে জব্বারের বলী খেলায় নিয়ে এসেছেন শরীফ ভাই। তিনি আমার সিনিয়র। তাই তাকে জয়ী করে দিয়েছি। চ্যাম্পিয়ন শরীফ ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন। আমার জন্যেও দোয়া করবেন। অন্যদিকে নিজের দুই শিষ্যকে সুযোগ করে দিতে এবার খেলায় অংশ নেননি কুমিল্লার শাহজালাল বলী। এবারও অংশ নিয়ে গতবারের চ্যাম্পিয়ন শাহজালাল বলীর সামনে আবারও জয়ের মুকুট অর্জনের সুযোগ থাকলেও শিষ্যদের জন্য সেটি ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। এভাবে বলী খেলায় কুমিল্লার ওস্তাদ-সতীর্থদের এমন ভালোভাসাকে অভিনন্দন জানাতে ভুলে নি চট্টগ্রামের দর্শকরা। ফাইনাল শেষে হাততালি ও বাঁশি বাজিয়ে ভালোবাসার উষ্ঞ ভালোবাসার জানান দিয়েছে তারাও।  পতেঙ্গা থেকে আসা তরুণ মো. ইমতিয়াজ কালবেলাকে বলেন, ‘বলী প্রতিযোগিতায় ওস্তাদ-সতীর্থদের এমন ভালোবাসা দেখে খুবই ভালো লেগেছে।’
২৫ এপ্রিল, ২০২৪

ডার্বি জিতে সিরি-এ চ্যাম্পিয়ন ইন্টার মিলান
চলতি মৌসুমে ইউরোপের প্রথম লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বায়ার লেভারকুসেন। সপ্তাহখানেকের মধ্যে ইউরোপের দ্বিতীয় লিগ চ্যাম্পিয়নও পেয়ে গেছে ইউরোপা। সোমবার রাতে সিরি-এ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইন্টার মিলান। এটা তাদের ২০তম লিগ শিরোপা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এসি মিলানকে ২-১ গোলে হারিয়ে ১৭ পয়েন্ট এগিয়ে থেকে শিরোপা নিশ্চিত করে ইন্টার। সিরি-এ-তে এখনো পাঁচ ম্যাচ বাকি। তার আগেই লিগ শিরোপা নিশ্চিত করেছে ইন্টার মিলান। চলতি মৌসুমে অসাধারণ খেলেছে সিমিওনে ইনজাগির দল। ৩৩ ম্যাচে ২৭ জয় ও ৫ ড্রয়ে ৮৬ পয়েন্ট নিয়ে এসি মিলানের চেয়ে ১৭ পয়েন্ট এগিয়ে থেকে শীর্ষে আছে ইন্টার। চলতি মৌসুমে একটা মাত্র ম্যাচে হেরেছে তারা। সোমবার সানসিরোয় দারুণ খেলে ইন্টার। ২০২১ সালে দলের দায়িত্ব নিয়ে কোচ হিসেবে প্রথম সিরি-এ শিরোপা এনে দিলেন ইনজাগি। এসি মিলানের বিপক্ষে শুরু থেকে কার্যকর ফুটবল খেলেছে ইন্টার। যদিও বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে ছিল এসি মিলান। গোল বরাবর ১৫টি শট নিয়ে ছয়টি লক্ষ্যে রেখেও একটির বেশি গোল পায়নি তারা। অন্যদিকে ইন্টার মিলান ১১ শটের তিনটি লক্ষ্যে রেখে দুটি গোল পেয়েছে। ম্যাচের প্রথমার্ধের ১৮তম মিনিটে ফ্রান্সেসকো আচের্বির গোলে এগিয়ে যায় ইন্টার মিলান। দ্বিতীয়ার্ধের চতুর্থ মিনিটে লিড ২-০ করেন ফরাসি ফরোয়ার্ড মার্কাস থুরাম। ৮০তম মিনিটে ফিকায়ো তোমোরির গোলে ২-১-এ শেষ করে এসি মিলান। শেষের দিকে ডিফেন্ডার থিও এরনঁদেজ ও ইন্টারের ডিফেন্ডার ডেনজেল ডামফ্রিস লাল কার্ড দেখেন। কনুই মেরে ডিফেন্ডার দাভিদে কালাব্রিয়াও লাল কার্ড দেখলে ৯ জন নিয়ে খেলা শেষ করে এসি মিলান। ৪৮ বছর বয়সী ইনজাগি সিরি-এ শিরোপা জয়ের পর বলেছেন, ‘তিন বছরে ছয়টি ট্রফি জয় এবং একটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল খেলা, এতটা সাফল্য পাওয়ার কল্পনা করা কঠিনই। আপনাকে পুরো তিন বছরকে একসঙ্গে দেখতে হবে। এ বছর আমাদের ভালো কেটেছে। কিন্তু এই জয়ের পথ অনেক লম্বা সময় নিয়ে তৈরি করা হয়েছে।’ একটা রেকর্ডও গড়েছেন ইনজাগি। ইন্টারের কোচ হিসেবে সোমবারের ম্যাচটি ছিল তার শততম জয়। তার আগে ইন্টারের কোচ হিসেবে এই কীর্তি গড়েছেন হেলেনিও হেরেরা, রবার্তো মানচিনি, জিওভান্নি ত্রাপাত্তোনি ও আরপাদ ভেইস।
২৪ এপ্রিল, ২০২৪

২০২৩ সালে বায়ুদূষণে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, রানারআপ পাকিস্তান
মানুষ খাবার না খেয়ে দুই মাস বাঁচতে পারে। পানি ছাড়াও তিন দিন বেঁচে থাকা যাবে। তবে বাতাস ছাড়া একদিন তো দূরে থাক, কয়েক মিনিটের বেশি কেউ বাঁচতে পারবে না। তাই মানুষের জীবন ধারণ ও নিঃশ্বাস নিতে বাতাসের গুরুত্ব অপরিহার্য। অথচ গুণগত বায়ুর ধারে-কাছেও নেই বাংলাদেশ। উল্টো বায়ুদূষণের তালিকায় বিশ্বে সবার উপরে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পরই দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার পাকিস্তান ও ভারত। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সুইডেনভিত্তিক সংস্থা আইকিউএয়ারের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ‍বিশ্বের ১৩৪টি দেশ ও অঞ্চলের ৩০ হাজারের বেশি পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে আইকিউএয়ার। আইকিউএয়ারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বায়ুমানের দিক থেকে ২০২৩ সালে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত পাঁচ দেশ হলো : বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, তাজিকিস্তান ও বুরকিনা ফাসো। পিএম ২ দশমিক ৫ ধূলিকণা ও ২ দশমিক ৫ মাইক্রোমিটারের ছোট পদার্থকে বোঝায়, যা স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক। ওই কণাগুলো ফুসফুস ও রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করে থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী, বাতাসে পিএম ২ দশমিক ৫ এর পরিমাণ পাঁচ মাইক্রোগ্রামের বেশি থাকতে পারবে না। তবে ২০২৩ সালে এই পাঁচ দেশের বাতাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশকৃত পরিমাণের চেয়ে ৯ থেকে ১৫ গুণ পর্যন্ত বেশি ছিল বলে প্রতিবেদন উঠে এসেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর বাংলাদেশের বাতাসে পিএম ২.৫ এর পরিমাণ ছিল ৭৯ দশমিক ৯ মাইক্রোগ্রাম, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিত পরিমাণের চেয়ে ১৫ গুণ বেশি। পাকিস্তানে এর পরিমাণ ৭৩ দশমিক ৭ মাইক্রোগ্রাম, যা ১৪ গুণ এবং ভারতে ৫৪ দশমিক ৪ মাইক্রোগ্রাম, যা ১০ গুণ বেশি। অন্যদিকে তাজিকিস্তান ও বুরকিনা ফাসোর বাতাসের পরিমাণ ৯ গুণ বেশি ছিল। আইকিউএয়ারের বায়ুর গুণগত মানবিষয়ক বিজ্ঞানের ব্যবস্থাপক ক্রিস্টি চেস্টার শ্রোডার বলেছেন, জলবায়ু ও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় পিএম ২ দশমিক ৫ অনেক বেড়েছে। কারণ হলো এই অঞ্চল থেকে বায়ুর এই উপাদানের অন্যত্র যাওয়ার সুযোগ নেই। এসব কারণের মধ্যে সবার উপরে রয়েছে কৃষি ব্যবস্থা, শিল্প ও জনসংখ্যার ঘনত্বের মতো বিষয়। দুর্ভাগ্যবশত, এই পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার চেয়ে আরও অবনতি হবে বলে মনে হচ্ছে। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুদূষণ বিশেষজ্ঞ মো. ফিরোজ খান বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ২০ শতাংশ অকাল মৃত্যু বায়ুদূষণের কারণে হয়ে থাকে। এই সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যসেবার খরচ দেশের মোট জিডিপির ৪ থেকে ৫ শতাংশ। এর আগে ২০২২ সালে দূষিত বায়ুমানের তালিকায় বাংলাদেশ পঞ্চম এবং ভারত অষ্টম অবস্থানে ছিল।
১৯ মার্চ, ২০২৪
X