সরকারের ইচ্ছাতে জনপ্রতিনিধি হচ্ছে : রিজভী
উপজেলা নির্বাচন সম্পূর্ণ ভুয়া ও জালিয়াতি উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এই নির্বাচনে জনগণের কোনো ভূমিকা নেই। এ নির্বাচন জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করার নির্বাচন। এখন প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছামতো উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হচ্ছেন। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) সকালে উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সমর্থনে রাজধানীর শান্তিনগর বাজার এলাকায় সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ শেষে তিনি এসব কথা বলেন। আজকে যারা ক্ষমতায় আছেন তারা দখলদার সরকার—এমন অভিযোগ করে রিজভী বলেন, এদের জনগণের কোনো ম্যান্ডেট নেই, এরা জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি নয়। তাই এদের জনগণের ভোটের কোনো প্রয়োজন পড়ে না।  রিজভী বলেন, এখানে নির্বাচনের নামে শুধু আনুষ্ঠানিকতা, শুধু একটা প্রহসন। সরকার বাংলাদেশকে একটি লুটপাটের দেশ বানাতে চাচ্ছে। দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করছেন আওয়ামী লীগের লোক, ক্ষমতাসীন দলের আত্মীয়স্বজন। আজকে দুবাইয়ে ৩৯৪টি বাড়ির খবর পাওয়া গেছে। প্রকল্প ব্যাংক পদ্মা সেতু লুটের টাকা দিয়েই তারা আজ বিদেশে বাড়ি করছে।  বাংলাদেশ ব্যাংকের ভেতরে কী হচ্ছে জানতে দেওয়া হচ্ছে না এমন অভিযোগ তুলে রিজভী বলেন, ব্যাংকে ঢুকতে সাংবাদিকদের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। সাংবাদিকরা ঢুকে যাতে কোনো তথ্য জানতে না পারে সেই ব্যবস্থা করেছে ব্যাংক। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির অর্থনৈতিক বিষয়ক সহসম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, সদস্য আমিনুল ইসলাম, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ডা. জাহেদুল কবির জাহিদ, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সাদরেজ জামান, বিএনপি নেতা জাকির হোসেন, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সাবেক সহসভাপতি এজমল হোসেন পাইলট, তারেক উজ জামান তারেক, হুমায়ুন কবির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়াল, সহসাংগঠনিক সম্পাদক সাদেক আহসান, ঢাবি ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রাজু আহমেদ, ঢাকা উত্তর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব সজীব রায়হান, ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সহসাধারণ সম্পাদক শাহ পরান, যুবদল নেতা মন্জুর রহমান, কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা মিরাজ হোসেন, আশরাফুল আসাদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল নেতা এসএম. আল মাহমুদ দিপু, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল নেতা মুরাদ, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইব্রাহীম চৌধুরীসহ নেতারা।
১৬ মে, ২০২৪

কাজে তারা জনবিদ্বেষী হতে চান জনপ্রতিনিধি
অতীত রেকর্ড সবই অপরাধমূলক। ধর্ষণ থেকে শুরু করে মাদক ব্যবসা, জমি দখল, নারী শ্রমিক নির্যাতন, নিয়োগ-বাণিজ্যসহ নানা জনবিদ্বেষী কাজে সিদ্ধহস্ত। এমন সব অভিযোগের পাহাড় যাদের মাথায়, তারাই হতে চান জনপ্রতিনিধি। শেরপুর জেলার নকলা উপজেলায় বেশিরভাগ চেয়ারম্যান প্রার্থীর অতীত রেকর্ড এমনই ভয়াবহ। জনসমর্থন নয়, জেলা পর্যায়ের দুই নেতার আশীর্বাদে এসব দাগি ব্যক্তি জনপ্রতিনিধি হতে চেষ্টা করছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। উপজেলা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে শেরপুর জেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২১ মে। নকলা উপজেলা নির্বাচনে ৭৯টি ভোটকেন্দ্রে মোট ১ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৬ জন ভোটার রয়েছেন। এসব ভোটারের মন টানতে নানা প্রতিশ্রুতি শোনাচ্ছেন প্রার্থীরা। তবে বেশিরভাগ প্রার্থীর অতীত রেকর্ড ভয়াবহ। দাগি ও নানা অপরাধে অভিযুক্ত প্রার্থীদের মধ্যে অন্যতম শাহ মো. বুরহান, সফিকুল ইসলাম জিন্নাহ ও মোকসেদুল ইসলাম শিবলু। শাহ মো. বুরহান উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সদস্য শাহ মো. বুরহান ২০১৯ সালে নৌকার বিরোধিতা করায় উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কার হন। তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মাদক সেবনের অভিযোগ বেশ পুরোনো। এলাকায় বিষয়টি ওপেন সিক্রেট। ২০১৬ সালে তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। নকলা পোস্ট অফিসের পেছনের বাড়ি থেকে এক ব্যক্তির মেয়েকে (সামাজিক নিরাপত্তার কারণে নাম গোপন রাখা হলো) তিনি ধর্ষণ করেন বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী। ওই সময় মেয়েটি আহত হওয়ায় ঘটনা জানাজানি হয়ে যায়। বুরহানের বিরুদ্ধে মাটি কাটার এক নারী শ্রমিককে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ আছে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলনজনিত অনেক ঘটনারও অভিযোগ রয়েছে। বুরহানের বিরুদ্ধে জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণ, নকলা মুরগিহাটির জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণ, গড়েরগাঁও এলাকার এক ব্যক্তিকে মামলায় জড়িয়ে তাদের জমি আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া বাইপাস রোড এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে বিবাদ লাগিয়ে বিবদমান জমি নিজেই দখলে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বুরহানের বিরুদ্ধে নিয়োগ-বাণিজ্যেরও অভিযোগ রয়েছে। পাঁচকাহনিয়া মাদ্রাসায় নিয়োগ-বাণিজ্য করতে গিয়ে সভাপতির পদ হারান তিনি। একই পদের জন্য একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে ঘুষ নেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে নিয়োগ বাতিল হয় এবং তাকে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি থেকে বাদ দেওয়া হয়। এ ছাড়া নকলা হাইস্কুলের সভাপতি থাকাকালে কোটি টাকার নিয়োগ-বাণিজ্যেরও অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে হানিফ নামে এক শিক্ষকের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি সর্বমহলে আলোচিত। এ ছাড়া হাসপাতালে নিয়োগের কথা বলে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মেরে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। পিপড়িকান্দি এলাকার মজিবর নামে এক ব্যক্তির ছেলেকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ৪ লাখ ও ৫নং বানেশ্বর্দীর বাউসা হাইস্কুলের নিয়োগ-বাণিজ্য করে ৩০-৪০ লাখ টাকা ঘুষের অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে উপজেলা পরিষদে ৫ বছরে শিক্ষাবৃত্তির ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা নিজেই আত্মসাৎ করেছেন বলে জানা গেছে। অভিযোগের বিষয়ে বুরহানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে একাধিকবার মোবাইলে ফোন দিলে ফোনটি রিসিভ হয়নি। পরে তার মোবাইলে খুদেবার্তা পাঠালেও তিনি উত্তর দেননি। সফিকুল ইসলাম জিন্নাহ বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম জিন্নাহ মূলত দলছুট রাজনীতিবিদ। আওয়ামী লীগের লোক পরিচয় দিলেও ২০০১ সালের নির্বাচনে নৌকা তথা মতিয়া চৌধুরীকে পরাজিত করতে গামছা মার্কা নিয়ে সংসদ নির্বাচন করে নৌকার পরাজয় ঘটান। তার বিরুদ্ধে ঘুষ-অনিয়ম-দুর্নীতির অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। গত কয়েক বছরে জিন্নাহর সম্পদ বেড়েছে ১০ গুণেরও বেশি। হঠাৎ করেই তার আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার বিষয়টি এলাকায় বেশ আলোচিত। সম্প্রতি তিনি পৌরসভায় দুটি বাড়ি ও জমি কিনেছেন। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জিন্নাহর বিরুদ্ধে ব্যাপক মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। যোগ্য প্রার্থীদের মনোনয়ন না দিয়ে টাকার বিনিময়ে বিতর্কিতদের মনোনয়ন দেন। ফলে পুরো উপজেলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়। গত উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে জিন্নাহর অনিয়ম-স্বজনপ্রীতি-দুর্নীতি-বাণিজ্য দলের হাইকমান্ড অবগত। একই পরিবারের দুই ভাইকে পদ দেন তিনি। আবার একই ব্যক্তি আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও যুবলীগের আহ্বায়ক। তারই সহোদরকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল। কিন্তু তাকে বাদ দিয়ে জিন্নাহ উপজেলায় ১৬১ জন মুক্তিযোদ্ধা জীবিত থাকতে নিজের আপন ভাতিজা বুলবুলকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক বানান। বুলবুল এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। বিপুল পরিমাণ মাদকসহ র্যাবের হাতে গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন বুলবুল। জিন্নাহ সম্প্রতি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি করতে গিয়েও কোটি টাকার বাণিজ্য করেছেন বলে স্থানীয় নেতাদের অভিযোগ রয়েছে। কমিটি নিয়ে ক্রমাগত দুর্নীতির কারণে গত বছরের শেষের দিকে ৮নং চর অষ্টধর ইউনিয়ন কমিটি দিতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার হন তিনি। সারা দেশে ঘটনাটি আলোচিত। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মাঠকর্মী পদে স্থানীয় নিয়োগে ঘুষ নিয়ে লোক নিয়োগ দেওয়ায় জনমনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। অভিযোগের বিষয়ে জিন্নাহর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কালবেলাকে বলেন, যারা অভিযোগ করছে তাদের কাছ থেকে জেনে নিন। যারা চোর তাদেরই বড় গলা থাকে। তাই এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। মোকসেদুল ইসলাম শিবলু জেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সদস্য মোকসেদুল ইসলাম শিবলু ধর্ষণ ও অস্ত্র মামলায় ১৪ বছর জেল খেটেছেন। গত বছর তিনি কারাগার থেকে বের হন। শিবলুর বিরুদ্ধে অন্তত ১০টি ডাকাতির আলোচিত অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের ইফতার মাহফিলে গুলিবর্ষণ, বেগম মতিয়া চৌধুরীর শাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টার কারণে দলের ভেতরে কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। শিবলু ও তার ভাইদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিরও অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে শিবলুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কালবেলাকে বলেন, আমি যদি এ ধরনের অপরাধ করতাম, তা হলে তো আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারতাম না। আমার প্রতিপক্ষ এসব অভিযোগ করেছে। আমার বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে মামলা হয়েছিল। আমি হাইকোর্টে খালাস পেয়েছি। আমি এলাকায় জনপ্রিয় নেতা। আমি জেল থেকে নির্বাচনে জয়ী হয়েছি। জনগণ এসবের জবাব ২১ তারিখে দেবে। গোপন মিটিংয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এদিকে নকলার নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে গত রোববার (১২ মে) বিকেল ৩টার পর জেলা আওয়ামী লীগের নেতা ও শেরপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির রোমানের সঙ্গে মিটিং করেন কয়েকজন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। জেলা পরিষদ কার্যালয়ে মিটিং শেষে তারা শেরপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছানোয়ার হোসেন ছানুর বাসায় গিয়েও মিটিং করেন। মিটিংয়ে গণপদ্দী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামসুর রহমান আবুল, চর অষ্টধর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী, পাঠাকাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম ও চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান গেন্দু উপস্থিত ছিলেন। মিটিংয়ে গত সোমবার (১৩ মে) থেকে এসব ব্যক্তি নির্বাচনের দিন কেন্দ্র দখল ও ভোট কাটার প্রস্তুতি শুরু করবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়। নির্বাচনী বিধিমালা অনুযায়ী, সংসদ সদস্য বা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচন নিয়ে কোনো সভা করতে পারেন না। ছবি ক্যাপশন : বাঁ থেকে শিবলু, বুরহান, জিন্নাহ ছবি : সংগৃহীত
১৫ মে, ২০২৪

কাজে তারা জনবিদ্বেষী, হতে চান জনপ্রতিনিধি
অতীত রেকর্ড সবই অপরাধমূলক। ধর্ষণ থেকে শুরু করে মাদক ব্যবসা, জমি দখল, নারী শ্রমিক নির্যাতন, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা জনবিদ্বেষী কাজে সিদ্ধহস্ত। এমন সব অভিযোগের পাহাড় যাদের মাথায়, তারাই হতে চান জনপ্রতিনিধি। শেরপুর জেলার নকলা উপজেলায় বেশিরভাগ চেয়ারম্যান প্রার্থীর অতীত রেকর্ড এমনই ভয়াবহ। জনসমর্থন নয়, জেলা পর্যায়ের দুই নেতার আশীর্বাদে এসব দাগি ব্যক্তি জনপ্রতিনিধি হতে চেষ্টা করছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। উপজেলা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে শেরপুর জেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২১ মে। নকলা উপজেলা নির্বাচনে ৭৯টি ভোটকেন্দ্রে মোট ১ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৬ জন ভোটার রয়েছেন। এসব ভোটারের মন টানতে নানা প্রতিশ্রুতি শোনাচ্ছেন প্রার্থীরা। তবে বেশিরভাগ প্রার্থীর অতীত রেকর্ড ভয়াবহ। দাগি ও নানা অপরাধে অভিযুক্ত প্রার্থীদের মধ্যে অন্যতম শাহ মো. বুরহান, সফিকুল ইসলাম জিন্নাহ ও মোকসেদুল ইসলাম শিবলু। শাহ মো. বুরহান উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সদস্য শাহ মো. বুরহান ২০১৯ সালে নৌকার বিরোধিতা করায় উপজেলা যুগ্ম সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কার হন। তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মাদক সেবনের অভিযোগ বেশ পুরোনো। এলাকায় বিষয়টি ওপেন সিক্রেট। ২০১৬ সালে তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। নকলা পোস্ট অফিসের পেছনের বাড়ি থেকে এক ব্যক্তির মেয়েকে (সামাজিক নিরাপত্তার কারণে নাম গোপন রাখা হলো) তিনি ধর্ষণ করেন বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী। ওই সময় মেয়েটি আহত হওয়ায় ঘটনা জানাজানি হয়ে যায়। বুরহানের বিরুদ্ধে মাটি কাটার এক নারী শ্রমিককে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ আছে। এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলনজনিত অনেক ঘটনারও অভিযোগ রয়েছে। বুরহানের বিরুদ্ধে জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণ, নকলা মুরগিহাটির জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণ, গড়েরগাঁও এলাকার এক ব্যক্তিকে মামলায় জড়িয়ে তাদের জমি আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া বাইপাস রোড এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে বিবাদ লাগিয়ে বিবদমান জমি নিজেই দখলে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বুরহানের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যেরও অভিযোগ রয়েছে। পাঁচকাহনিয়া মাদ্রাসায় নিয়োগ বাণিজ্য করতে গিয়ে সভাপতির পদ হারান তিনি। একই পদের জন্য একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে ঘুষ নেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে নিয়োগ বাতিল হয় এবং তাকে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি থেকে বাদ দেওয়া হয়। এ ছাড়া নকলা হাইস্কুলের সভাপতি থাকাকালে কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্যেরও অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে হানিফ নামের এক শিক্ষকের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি সর্বমহলে আলোচিত।  এ ছাড়া হাসপাতালে নিয়োগের কথা বলে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মেরে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। পিপড়িকান্দি এলাকার মজিবর নামের এক ব্যক্তির ছেলেকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ৪ লাখ ও ৫নং বানেশ্বর্দীর বাউসা হাইস্কুলের নিয়োগ বাণিজ্য করে ৩০-৪০ লাখ টাকা ঘুষের অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে উপজেলা পরিষদে ৫ বছরে শিক্ষাবৃত্তির ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা নিজেই আত্মসাৎ করেছেন বলে জানা গেছে।  অভিযোগের বিষয়ে বুরহানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে একাধিকবার মোবাইলে ফোন দিলে ফোনটি রিসিভ হয়নি। পরে তার মোবাইলে ক্ষুদেবার্তা পাঠালেও তিনি উত্তর দেননি। সফিকুল ইসলাম জিন্নাহ বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম জিন্নাহ মূলত দলছুট রাজনীতিবিদ। আ.লীগের লোক পরিচয় দিলেও ২০০১ সালের নির্বাচনে নৌকা তথা মতিয়া চৌধুরীকে পরাজিত করতে গামছা মার্কা নিয়ে সংসদ নির্বাচন করে নৌকার পরাজয় ঘটান। তার বিরুদ্ধে ঘুষ-অনিয়ম-দুর্নীতির অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। গত কয়েক বছরে জিন্নাহর সম্পত্তি বেড়েছে ১০ গুনেরও বেশি। হঠাৎ করেই তার আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার বিষয়টি এলাকায় বেশ আলোচিত। সম্প্রতি তিনি পৌরসভায় দুটি বাড়ি ও জমি কিনেছেন। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জিন্নাহর বিরুদ্ধে ব্যাপক মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। যোগ্য প্রার্থীদের মনোনয়ন না দিয়ে টাকার বিনিময়ে বিতর্কিতদের মনোনয়ন দেন। ফলে পুরো উপজেলায় আ.লীগের প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়। গত উপজেলা আ.লীগের সম্মেলনে জিন্নাহর অনিয়ম স্বজনপ্রীতি-দুর্নীতি বাণিজ্য দলের হাই কমান্ড অবগত।  একই পরিবারের দুই ভাইকে পদ দেন তিনি। আবার একই ব্যক্তি আ.লীগের দপ্তর সম্পাদক ও যুবলীগের আহ্বায়ক। তারই সহোদরকে আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করেন। উপজেলা আ.লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল। কিন্তু তাকে বাদ দিয়ে জিন্নাহ উপজেলায় ১৬১ জন মুক্তিযোদ্ধা জীবিত থাকতে নিজের আপন ভাতিজা বুলবুলকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক বানান। বুলবুল এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। বিপুল পরিমাণ মাদকসহ র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন বুলবুল। জিন্নাহ সম্প্রতি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি করতে গিয়েও কোটি টাকার বাণিজ্য করেছেন বলে স্থানীয় নেতাদের অভিযোগ রয়েছে। কমিটি নিয়ে ক্রমাগত দুর্নীতির কারণে গত বছরের শেষের দিকে ৮নং চর অষ্টধর ইউনিয়ন কমিটি দিতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার হন তিনি। সারা দেশে ঘটনাটি আলোচিত। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মাঠকর্মী পদে স্থানীয় নিয়োগে ঘুষ নিয়ে লোক নিয়োগ দেওয়ায় জনমনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। অভিযোগের বিষয়ে জিন্নাহর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কালবেলাকে বলেন, যারা অভিযোগ করছে তাদের কাছ থেকে জেনে নিন। যারা চোর তাদেরই বড় গলা থাকে। তাই এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। মোকসেদুল ইসলাম শিবলু জেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সদস্য মোকসেদুল ইসলাম শিবলু ধর্ষণ ও অস্ত্র মামলায় ১৪ বছর জেল খেটেছেন। গত বছর তিনি কারাগার থেকে বের হন। শিবলুর বিরুদ্ধে অন্তত ১০টি ডাকাতির মামলা রয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের ইফতার মাহফিলে গুলিবর্ষণ, বেগম মতিয়া চৌধুরীর শাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টার কারণে দলের ভেতরে কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। শিবলু ও তার ভাইদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিরও অভিযোগ রয়েছে।  এসব অভিযোগের বিষয়ে শিবলুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কালবেলাকে বলেন, আমি যদি এ ধরনের অপরাধ করতাম তাহলে তো আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারতাম না। আমার প্রতিপক্ষ এসব অভিযোগ করেছে। আমার বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে মামলা হয়েছিল। আমি হাইকোর্টে খালাস পেয়েছি। আমি এলাকায় জনপ্রিয় নেতা। আমি জেল থেকে নির্বাচনে জয়ী হয়েছি। জনগণ এসবের জবাব ২১ তারিখে দেবে। গোপন মিটিংয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এদিকে নকলার নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে গত রোববার (১২ মে) বিকেল ৩টার পর জেলা আওয়ামী লীগের নেতা ও শেরপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির রোমানের সঙ্গে মিটিং করেন কয়েকজন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। জেলা পরিষদ কার্যালয়ে মিটিং শেষে তারা শেরপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছানোয়ার হোসেন ছানুর বাসায় গিয়েও মিটিং করেন। মিটিংয়ে গণপদ্দী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামসুর রহমান আবুল, চর অষ্টধর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী, পাঠাকাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম ও চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান গেন্দু উপস্থিত ছিলেন। মিটিংয়ে আজ সোমবার (১৩ মে) থেকে এসব ব্যক্তি নির্বাচনের দিন কেন্দ্র দখল ও ভোট কাটার প্রস্তুতি শুরু করবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। নির্বাচনী বিধিমালা অনুযায়ী, সংসদ সদস্য বা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচন নিয়ে কোনো সভা করতে পারেন না।
১৩ মে, ২০২৪

গরু চোরাচালানে জড়িত ছাত্রলীগ নেতা ও জনপ্রতিনিধি
পার্বত্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্ত দিয়ে নিয়মিত অবৈধ পথে প্রবেশ করছে গরু। রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি এবং ব্যবসায়ীরা এসব গরু চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত বলে উভিযোগ উঠেছে। আর পাহাড়ে অবস্থান করা ডাকাত দলের পাহারায় এসব গরু সীমান্ত পার করিয়ে পৌঁছে দেওয়া হয় গন্তব্যে। এতে মিলছে কাড়ি কাড়ি নগদ টাকা। ফলে চোরাচালানে যোগ দিচ্ছেন শ্রমজীবী, বেকারসহ অপরাধীরা। এসব টাকার ভাগ যাচ্ছে শৃংখলা বাহিনীর হাতেও। গরু চোরাচালানের টাকার ভাগকে কেন্দ্র করে পাহাড়ি ডাকাত দলের দুই গ্রুপের গোলাগুলিতে বাবা ছেলেসহ তিনজন নিহত হয়েছে। এসব ঘটনায় পৃথক মামলা হলেও এখনো গ্রেপ্তার হয়নি কেউ। এতে একদিকে যেমন অপরাধ বাড়ছে, তেমনি সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে গরু চোরাচালান বন্ধের পাশাপাশি ডাকাত দলের সদস্যদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল। নিহতরা হলেন- স্থানীয় বাসিন্দা আবু তালেব, জাফর আলম এবং তার ছেলে সেলিম। তথ্য মতে, মিয়ানমারের ওপার থেকে প্রতিদিন কয়েকশ গরু অবৈধভাবে বাংলাদেশে সরবরাহ করছে চোরাকারবারি দলের সদস্যরা। বান্দবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ফুলতলা, লেবুছড়ি, চাকঢালাসহ কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে আনা এসব গরু বুঝে দেওয়া হয় গর্জনিয়া পাহাড়ের শীর্ষ ডাকাত ও ডজন মামলার পলাতক আসামি শাহীন গ্রুপকে। শাহীনের নিজস্ব বাহিনী দিয়ে এসব গরু ফুলতলা, লেবুছড়ি হয়ে ব্যঙডেবা, থোয়াইঙ্গাকাটা, মাঝিরকাটা এবং বড়বিল হয়ে বাইশারি সীমান্ত কিংবা জোয়ারিয়ানালা পর্যন্ত গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হয়। আবার বাইশারী সীমান্ত দিয়ে কালিরছড়া, ঈদগাঁও পর্যন্ত পৌঁছে দিতে থোয়াইঙ্গাকাটা এলাকার শীর্ষ ডাকাত শাহীন বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড আবছার ডাকাত এবং ঈদগড়ের রুস্তম আলী ডাকাত ওরফে রুস্তম মেম্বার। পরে এসব গরু ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রতিটি গরুর পেছনে ৮-১০ হাজার টাকা পায় ডাকাত দল। যেখানে দিনমজুর থেকে শুরু করে শৃংখলা বাহিনীর সদস্য এবং অন্য স্তরের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, এসব গরু চোরাচালানের সঙ্গে ঢাকার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি জড়িত স্থানীয় প্রভাবশালীরা। তাদের সঙ্গে জেলা থেকে নাম উঠে এসেছে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসেন ও তার ভাই আব্দু শুক্কুরের।  প্রথম দিকে সাদ্দামের হয়ে মাঠে কাজ করতেন ছাত্রলীগ নেতা ইমাদ সিকদার, শাকিল আদনান, তারেক উদ্দিন মিশুক। এখন তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন সোহেল সিকদার, শাহজাহান সিরাজ শাকিল ওরফে শাকিল মেম্বার এবং ডাকাত সর্দার শাহীন। ব্যবসায়ী হিসেবে আরও যাদের নাম সামনে এসেছে তারা হলেন, কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ড সদস্য জসিম উদ্দিন, ১নং ওয়ার্ডের সদস্য নজরুল মেম্বার, ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য জসিম উদ্দিন, নাইক্ষ্যংছড়ি রূপনগর এলাকার বাসিন্দা ও যুবদল নেতা আনোয়ার ইসলাম রাশেল, গর্জনিয়া বাজার সমিতির সভাপতি এরশাদ উল্লাহ, ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক নেতা জহিরুল ইসলাম, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ইয়াছিন আরফাত রিশাদ, মাদকের বিভিন্ন মামলার আসামি জহির উদ্দিন, মো. আলী ওরফে মাতালি, নজরুল ইসলাম (তার বিরুদ্ধে মাদক মামলাও রয়েছে)। অনুসন্ধানে আরও ওঠে আসে, সীমান্ত পারের পর পাহাড়ি যেসব পথ দিয়ে গরু পাচার করা হয় সেখানে রাত জেগে পাহারা বসিয়েছে পুলিশ। থোয়াইঙ্গাকাটা এলাকায় পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করেন কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন কৃষকদলের সভাপতি তিতারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন এবং বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলম। এ ছাড়া সপ্তাহে যে দুইদিন গর্জনিয়া বাজার বসে সেদিন এসব সোর্সদের নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করেন জামায়াত নেতা বেলাল সিকদার। পুলিশের হয়ে টাকা উত্তোলন করেন সোহেল নামে আরেক যুবক। তার সঙ্গে থাকেন পুলিশ সদস্য আজমির। গেল রমজানে টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে শাহীন বাহিনীর প্রধান শাহীনের সঙ্গে তার সেকেন্ড ইন কমান্ড আবছারের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এরপর আলাদা বাহিনী গড়ে তোলে আবছার। পরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ২৮ রমজান থোয়াইঙ্গাকাটা এলাকায় দুই গ্রুপের মাঝে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে আবছার বাহিনীর সদস্য আবু তালেব নিহত হন। এ ঘটনার পর আবছার ঈদগড় ও আশপাশের চিহ্নিত ডাকাতদের একত্র করে বাড়ান নিজের বাহিনীর আকার। এরপরই শাহিনী বাহিনীর ওপর প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে আবছার গ্রুপ। এরই জেরে ২১ এপ্রিল রাতে থোয়াইঙ্গাকাটা এলাকায় সশস্ত্র হামলা চালিয়ে শাহীনের বিশ্বস্ত শ্রমিক হিসেবে পরিচিত সেলিমকে কুপিয়ে হত্যা করে আবছার বাহিনী। ওই রাত ১২টার দিকে সেলিম একটি দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় মুখোশধারী ২৫-৩০ জনের গ্রুপ অতর্কিত হামলা চালিয়ে কুপিয়ে তাকে হত্যা করে। ছেলেকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে পিতা জাফর আলমকে গুলি করে হত্যার পর পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। চোরাচালানে সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এসব কাজে আমি কখনো জড়িত নই। এক বছর আগে থেকে আমার নাম ব্যবহার করার বিষয়টি আমি জেনেছি। সে সময় কেউ আমার নাম ব্যবহার করে থাকলে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে আগে থেকেই বলা ছিল। সে যদি আমার ভাইও হয়ে থাকে। তার দাবি, চোরাচালানে আমার অনুসারি যাদের নাম আসছে তারা স্থানীয় এমপিরও অনুসারি। কচ্চপিয়া ইউপি সদস্য শাহজাহান সিরাজ শাকিল সিকদার ওরফে শাকিল মেম্বার ও যুবলীগ নেতা নাছির উদ্দিন সোহেল সিকদার তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, হয়তো কেউ কেউ আমাদের নাম ব্যবহার করে থাকতে পারে। অথচ আমরাই অপরাধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে যাচ্ছি। গরু চোরাচালানে জড়িত নয় দাবি করলেও নিজেকে গাছ ব্যবসায়ী বলে দাবি করেছেন শাকিল মেম্বার। পুলিশের অভিযান শুরুর পর মোবাইল ফোন বন্ধ রাখায় শাহীন বাহিনীর প্রধান শাহীনের এবং আবছার বাহিনীর প্রধান আবছারের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এসব ঘটনার বিষয়ে জানতে গর্জনিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আইসি সাইফুল ইসলামকে ফোন করা হলে তিনি অভিযানে আছেন উল্লেখ করে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। রামু থানার ওসি আবু তাহের দেওয়ান বলেন, বাবা-ছেলে হত্যার ঘটনায় আবছার ও জাহাঙ্গীর নামে দু'জন ডাকাতের নামে উল্লেখ করে ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাত দিয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহত জাফরের ছেলে রুম্মান উল্লাহ। অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চলছে। পাশাপাশি চোরাচালানিদের কাছ থেকে গরু প্রতি টাকা পাওয়ার বিষয় অস্বীকার করে ওসি বলেন, পাচারকারীদের সহযোগিতার প্রশ্নই আসে না। পুলিশের নামে কেউ টাকা নেওয়ার কথা বললে তা অপপ্রচার ছাড়া কিছু নয়। কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সীমান্তে পুলিশের কোনো কাজ নেই। তারপরও পুলিশের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর অপরাধীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
২৬ এপ্রিল, ২০২৪

ছাত্রলীগকর্মীদের বেধড়ক পিটুনি, রোষানলে জনপ্রতিনিধি
খুলনার পাইকগাছায় ছাত্রলীগকর্মীদের ওপর হামলা করে রক্তাক্ত জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোনাদানা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান গাজীর ভাই খুলনা জেলা পরিষদের সদস্য রবি গাজীসহ তার দলবলের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করা হয়। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সোনাদানা ইউনিয়নের চারবান্দা বাজারে ঘটনাটি ঘটে।  জানা যায়, উপজেলার চারবান্দা বাজারে ছাত্রলীগকর্মী আবির ও তার বন্ধু সাগর  ক্যারম খেলছিল। এমন সময় হঠাৎ জেলা পরিষদের সদস্য রবি গাজীসহ তার দলবল অতর্কিত হামলা করে ছাত্রলীগকর্মী আবিরের ওপর। এ সময় তার বন্ধু ছাত্রলীগকর্মী সাগর ঠেকাতে গেলে তাকেও আহত করা হয়। পাশ থেকে আবিরের চাচাতো ভাই ইমরান ঠেকাতে গেলে ইমরানকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে তারা। স্থানীয়রা ছাত্রলীগকর্মীদের উদ্ধার করে পাইকগাছা হাসপাতালে ভর্তি করে। এ খবর পেয়ে জেলা পরিষদের সদস্য রবিসহ তার দলবল রাত ৮টার দিকে তার ভাগনেকে নিয়ে পাইকগাছা হাসপাতালে আসে। এ সময় স্থানীয়দের রোষানলে পড়েন তারা।  জেলা পরিষদের সদস্য রবি গাজীর ভাই সোনাদানা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান গাজী বলেন, চারবান্দা বাজারে ঘটনায় আমার ভাই রবি ও ভাগনে আজাদ আহত হলে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর কথা বললে, গাড়িতে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা হলে হাসপাতাল মোড়ে গাড়ি থামিয়ে দুর্বৃত্তরা আমার ভাই রবিসহ গাড়িতে থাকা লোকদের মারধর  করে। এমন খবর পেয়ে থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।  এ বিষয়ে ছাত্রলীগকর্মী আবিরের পিতা আলহাজ হাফিজুর গাজী জানান, ছাত্রলীগ করলেও তাদের সঙ্গে না থাকার কারণে আমার ছেলেকেসহ তার বন্ধুদের মারধর করে রক্তাক্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে পাইকগাছা থানার ওসি মো. ওবায়দুর রহমান জানান, বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি  নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এখনো কোনো পক্ষই অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
২০ এপ্রিল, ২০২৪

একাধিক আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল / জনপ্রতিনিধি ও ধনীরাই লামিয়ার টার্গেট
বরগুনার তালতলীতে এক তরুণীর সঙ্গে দুই ইউপি চেয়ারম্যান ও এক ছাত্রলীগ নেতার আপত্তিকর ভিডিও ভাইরালের ঘটনা জেলাজুড়ে এখন মুখরোচক গল্পে পরিণত হয়েছে। টানা তিন দিন ধরে একের পর এক এসব ভিডিও ভাইরাল হয়। ছাত্রলীগ নেতা বাদে ভিডিও ভাইরাল হওয়া দুই ইউপি চেয়ারম্যানই আবার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা। তবে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এখনও কারও বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ভাইরাল হওয়া তিনটি ভিডিওতে আমতলী উপজেলা দক্ষিণ আমতলী এলাকার বাহাদুর আকনের মেয়ে ইসরাত জাহান লামিয়ার সঙ্গে তালতলীর নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু, পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ. রাজ্জাক হাওলাদার এবং তালতলী উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল আবেদিন মিঠুকে দেখা গেছে।  এসব ভিডিও ভাইরালের আগে গত ১২ এপ্রিল রাতে ইসরাত জাহান লামিয়া এবং তার সহযোগী হিসেবে উল্লেখ করে জাহিদুল ইসলাম সবুজ ফকির নামে এক যুবকের তালতলী থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বাচ্চু। এ মামলায় আবার অপর দুটি ভিডিও ভাইরাল হওয়া চেয়ারম্যান আ. রাজ্জাক হাওলাদার ও মিনহাজুল আবেদিন মিঠুকে সাক্ষী করা হয়েছে। পরবর্তীতে আসামিদের গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠায় পুলিশ।  মামলার বিবরণে বাদী কামরুজ্জামান বাচ্চু উল্লেখ করেন, ঘটনার প্রায় এক বছর আগে অভিযুক্ত নারী ইশরাত আমার মোবাইল ফোনের হোয়াটস অ্যাপে কল করে। প্রথমে আমি বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও পরবর্তীতে কল রিভিস করি এবং ওই নারী আমাকে বলে, ‘আমার এক পরিচিত মনে করে ভুলবশত ফোন চলে গেছে’। এ সময় নারী পরিচয় দেন তিনি বরিশালে থাকেন এবং ঢাকায় একটি এলএলবি অধ্যায়নরত। তিনি বলেন, পরিচয়ের কয়েক দিন পর ঢাকায় কাজের জন্য গেলে ওই নারী (১নং আসামি) আমার সঙ্গে দেখা করতে চাইলে আমরা একটি রেস্টুরেন্টে দেখা করি। এরপর থেকে সে আমার হোয়াটসঅ্যাপে কল করতো এবং কুশলাদি বিনিময় হতো। যার ফলে আমাদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর অনেক দিন পর অফিসিয়াল কাজ শেষে ঢাকা থেকে ফেরার পথে লঞ্চে আমার কেবিনের পাশে সেও কবিন ভাড়া নেয়। পথিমধ্যে রাতে এক সময় সে আমার কেবিনে প্রবেশ করে বলে ‘রাতের খাবার খাই নাই’। সরল বিশ্বাসে আমি খাবার অর্ডার এবং দুজনে একসঙ্গে বসে রাতের খাবার খাই। খাওয়া শেষে আমি তাকে কেবিনে যেতে বললে সে সুকৌশলে আমার কেবিনে শুয়ে পড়ে। একপর্যায়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে তার মোবাইলের মাধ্যমে গোপন ভিডিও ধারণ করে।   এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, লামিয়ার ধারণ করা গোপন সেই ভিডিও গত বছরের ২৮ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুর রহমান তনুর হোয়াটসঅ্যাপ থেকে আমার মোবাইলে পাঠানো হয়। লামিয়া নিজেই সুকৌশলে ওই ভিডিও পাঠায়।  একই সময়ে সে পচাকোড়ালিয়া চেয়ারম্যান আ. রাজ্জাক হাওলাদার ও উপজেলা ছাত্রলীগের সেক্রেটারি মিনহাজুল আবেদীন মিঠুর দুটি ভিডিও আমাকে পাঠানো হয়। পরে সে হোয়াটসঅ্যাপে কল দিয়ে আমাকে বলে, ‘আমার বড় ভাই মনিরুজ্জামান মিন্টুর পক্ষে উপজেলা নির্বাচন না করলে তোমাদের ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেব’। এ সময় লামিয়া আমার কাছে মোটা অংকের টাকাও দাবি করে।  তালতলী থানায় দায়েরকৃত ওই মামলা সূত্রে জানা গেছে পর্নোগ্রাফি আইনের ৮(১)(২)(৩)(৫) এর (ক) (৭) ধারায় মামলা দায়ের করেছেন চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বাচ্চু। মামলাটি অধিকতর তদন্তের স্বার্থে বরগুনা জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে বরগুনা জেলা গোয়েন্দা শাখায় পাঠানো হয়েছে।  এ বিষয়ে বরগুনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. বশিরুল আলম জানান, চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বাচ্চু পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত আবেদন করলে আমরা ওই নারী ও তার সহযোগী সবুজ ফকিরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসি। জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন এবং আমরা ইতোমধ্যে কিছু আলামত উদ্ধার করেছি।  জেলার আমতলী ও তালতলীতে অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইসরাত জাহান লামিয়া একজন পেশাদার ব্লাকমেইলার। জনপ্রতিনিধি, সমাজের গণ্যমান্য ও ধনী ব্যক্তিদের টার্গেট করতে তিনি। এরপর কৌশলে তাদেরকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে গোপন ভিডিও ধারণের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতই তার নেশা ও পেশা।  নাম পরিচয় গোপন রাখার স্বার্থে ভুক্তভোগী এক ব্যক্তির স্ত্রী অভিযোগ করে কালবেলাকে বলেন, আমার স্বামীর সাথেও ফেসবুকে লামিয়ার পরিচয় হয়েছিল। শুরুতে লামিয়া নিজেকে অসহায় হিসেবে উপস্থাপন করে এবং কৌশলে আমার স্বামীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরবর্তীতে বিভিন্ন ছবি ও স্ক্রিনশট নিয়ে আমার স্বামীকে একের পর এক ব্লাকমেইল করতে থাকে এবং টাকা দাবি করে। এ সময় আমার স্বামী টাকা না দিয়ে লামিয়ার নামে মামলা করেন। ওই মামলায় অনেক দিন জেলে ছিলেন লামিয়া।  এদিকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, ইসরাত জাহান লামিয়া ও তার সহযোগী জাহিদুল ইসলাম সবুজ ফকির  আমাদের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে একজন জনপ্রতিনিধির নাম উল্লেখ করেছেন। তাদের দাবি, এই জনপ্রতিনিধিই তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন।  এ ঘটনার রহস্য উন্মোচন করতে অনুসন্ধান করছে কালবেলা।   
২০ এপ্রিল, ২০২৪

জনপ্রতিনিধি নয়, জনগণই আসল ক্ষমতার মালিক : এবিএম মোস্তাকিম
জনপ্রতিনিধিরা কখনোই জনগণের চেয়ে শক্তিশালী হতে পারে না। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় বসতে হয়। সুতরাং জনগণই আসল ক্ষমতার মালিক বলে মন্তব্য করেছেন সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবিএম মোস্তাকিম। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে আশাশুনি গার্লস স্কুল মাঠে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, জনগণ চেয়েছিল বলেই আগে তিন তিনবার আমি আশাশুনি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। আবারও অবাধ, সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ আমাকে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করবেন। এবিএম মোস্তাকিম বলেন, উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা রকম কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য ছড়ানো হচ্ছে। আপনারা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া প্রপাগান্ডা দেখে বিচলিত হবেন না। কারও সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে ভোট বাড়ানো যায় না, বরঞ্চ এতে আরও ভোট কমে যায়। আমি বিশ্বাস করি, জনগণ বিগত সময় আমাকে ভালোবেসে ভোট দিয়েছিল, সে কারণে আমি তিন তিনবার আশাশুনি উপজেলার চেয়ারম্যান হিসেবে আপনাদের সেবা করতে পেরেছি। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, কেউ কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনারা নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে আসবেন এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে আপনার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিবেন। যদি আমি ভালো কাজ করে থাকি তাহলে অবশ্যই আমি আপনাদের কাছে ভোটের দাবিদার। আর কাউকে যদি আমার থেকে আপনাদের নিকট যোগ্য মনে হয় তাহলে তাকে ভোট দিবেন এতে আমার কোনো কষ্ট থাকবে না। আমি আপনাদের পাশে ছিলাম, আছি, থাকব। আশাশুনি উপজেলার শ্রমিক লীগের সভাপতি ঢালী মো. সামছুল আলমের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, বড়দল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জগদীশ সানা, শ্রীউলা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবু হেনা শাকিল, বুধহাটা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আ ব ম মোসাদ্দেক, দরগাপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান জমির উদ্দীন, শোভনালী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম, আশাশুনি গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও আশাশুনি রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ বাচ্চু, আশাশুনি উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আসমাউল হোসাইন, যুবলীগ নেতা আহসান উল্লাহ আছু, ইয়াহিয়া ইকবাল, মঙ্গল মেম্বার, রনদা প্রসাদ রনো, আশরাফুল আলম টিক্কা, সন্তোষ মেম্বার, মেহেরুন্নেছা, তুলসি পাল, কাশিনাথ মন্ডল, পরেশ অধিকারী, মৃন্ময় মল্লিক, মুরশিদ আলম, আনিসুল ইসলাম চঞ্চল প্রমুখ। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক আগামী ২১ মে ২য় দফায় আশাশুনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।
১৬ এপ্রিল, ২০২৪

জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে এমপি রশীদুজ্জামানের মতবিনিময়
খুলনার পাইকগাছায় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য মো. রশীদুজ্জামানের সঙ্গে জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের প্রথম মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।  মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভার মধ্যমণি ছিলেন খুলনা ৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য মো. রশীদুজ্জামান। সভা প্রধান ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার ইকবাল মন্টু।  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আল আমিনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর, ভাইস চেয়ারম্যান শিয়াবুদ্দীন ফিরোজ বুলু, লিপিকা ঢালী, ওসি মো. ওবাইদুর রহমান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নীতিশ চন্দ্র গোলদার, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেখ শাহাদাত হোসেন বাচ্চু। জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে বক্তৃতা করেন ইউপি চেয়ারম্যান কাওছার আলী জোয়াদ্দার, কাজল কান্তি বিশ্বাস, রিপন কুমার মণ্ডল, আব্দুল মান্নান গাজী, কে এম আরিফুজ্জামান তুহিন, শেখ জিয়াদুল ইসলাম জিয়া, আবুল কালাম আজাদ, শাহাজাদা আবু ইলিয়াস ও আব্দুস ছালাম কেরু। সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে বক্তৃব্য রাখেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বিষ্ণুপদ বিশ্বাস, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা পবিত্র কুমার দাস, কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অসীম কুমার দাশ, শিক্ষা অফিসার বিদ্যুৎ রঞ্জন সাহা, যুবউন্নয়ন কর্মকর্তা পারভীন আক্তার বানু, সমাজসেবা কর্মকর্তা অনাথ কুমার বিশ্বাস, পল্লী বিদ্যুৎ ডিজিএম মো. ছিদ্দিকুর রহমান, সমবায় কর্মকর্তা হুমায়ূন কবির, পল্লী দারিদ্র্যবিমোচন কর্মকর্তা বিপ্লব কান্তি বৈদ্য, বন কর্মকর্তা প্রেমানন্দ রায়, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক ব্যবস্থাপক জয়ন্ত কুমার ঘোষ, খাদ্য নিয়ন্ত্রক হাসিবুর রহমান, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা রেশমা আক্তার, বিআরডিবি কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মৃদুল কান্তি দাশ, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ছামিউল আলম, সমবায় কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহাজান আলী শেখ, ইউআরসি ইন্সট্রাকটর মো. ঈমান উদ্দীন, একাডেমি সুপারভাইজার মীর নুরে আলম সিদ্দিকী, আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা মোছা. মৌলুদা খাতুন, জনস্বাস্থ্য উপসহকারী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম, সহকারী যুবউন্নয়ন কর্মকর্তা বাবলুর রহমান ও উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন। এ ছাড়াও বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
১৭ জানুয়ারি, ২০২৪

মাদক নির্মূলে প্রয়োজন নির্লোভ জনপ্রতিনিধি
চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী ও সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মোতালেব, সিআইপি বলেছেন, মাদক গ্রহণ এবং বিক্রি ভয়ানক ব্যাধি ও অপরাধ, যা তরুণ যুবকদের নিজেদের ক্ষতির পাশাপাশি উঠতি বয়সীদের ধ্বংসের হাতছানি দেয়। নলুয়া ইউনিয়ন এলাকায়ও ক্ষমতাধর জনপ্রতিনিধিদের ছত্রছায়ায় থেকে মাদকের বিস্তার ঘটেছে। গতকাল সোমবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত সাতকানিয়া উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নের হাঙ্গরমুখ, গাটিয়াডেঙ্গা, তালতল ও বোর্ড অফিস এলাকায় নির্বাচনী গণসংযোগ এবং পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী আরও বলেন, সাঙ্গু ও ডলু নদী থেকে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে নদী তীরবর্তী লোকজন ভাঙনের মুখোমুখি হয়ে নিজের বসতভিটা হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছে। এসব অপকর্ম ও এর সঙ্গে জড়িতদের এলাকা থেকে বিতাড়িত করতে আগামী ৭ জানুয়ারি ঈগল মার্কায় ভোট দিয়ে আমাকে জয়যুক্ত করবেন। কারণ এলাকা থেকে অপরাধ ও সমাজ বিধ্বংসী কাজ দূর করতে নির্লোভ এবং নির্মোহ জনপ্রতিনিধি প্রয়োজন। এম এ মোতালেব আরও বলেন, আমি সেই ব্যক্তি, যার শুরু শিক্ষকতা দিয়ে এবং পরবর্তী সময়ে ব্যবসায় নিজেকে জড়িত করে ৫০ বছরের অধিক সময় মানবসেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছি। এ সময় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অধ্যাপক ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান, সাতকানিয়া পৌর মেয়র মোহাম্মদ জোবায়ের, অ্যাডভোকেট আহমদ সাইফুদ্দিন সিদ্দিকী, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক উপকমিটির সদস্য সন্তোষ কুমার মল্লিক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক হোসাইন কবির, সাংগঠনিক সম্পাদক জাফর আলম, মো.শাহজাহান, বঙ্গবন্ধু পরিষদ সাতকানিয়া উপজেলার সভাপতি আলহাজ শফিকুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগ সদস্য রেজাউল করিম, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক নাসির উদ্দিন মিন্টু, সাতকানিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আসাদ, চেয়ারম্যান রিদুয়ানুল ইসলাম সুমন, নলুয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান তসলিমা আকতার প্রমুখ।
০২ জানুয়ারি, ২০২৪

বগুড়ায় দুই কূলই হারালেন দুই জনপ্রতিনিধি
বগুড়ার তিনটি আসন শরিক দলকে ছেড়ে দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। একারণে দুটি আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীতরা প্রার্থিতা হারানোর পাশাপাশি জনপ্রতিনিধির পদও হারিয়েছেন। ওই দুজনের মধ্যে একজন ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং অন্যজন ছিলেন পৌর মেয়র। ভোটে অংশ নেওয়ার উদ্দেশ্যে জনপ্রতিনিধির পদ থেকে পদত্যাগ করে তারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রের পদ ছেড়ে দলীয় মনোনয়ন পেলেও শেষ পর্যন্ত তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিতে হয়েছে। জনপ্রতিনিধি পদ হারানো ওই দুই নেতা হলেন- বগুড়ার আদমদীঘী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম খান রাজু এবং শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও শিবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র তৌহিদুর রহমান মানিক।  রাজু বগুড়া-৩ (আদমদীঘি-দুপচাঁচিয়া) আসন থেকে এবং মানিক বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসন থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন। মনোনয়ন পাওয়ার পরপরই তারা উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় তারা নির্বাচনী সংযোগও শুরু করেছিলেন। সর্বশেষ কেন্দ্রীয়ভাবে আওয়ামী লীগ ওই দুই আসন জাতীয় পার্টিকে এবং বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসন শরিক দল জাসদকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। একারণে ওই দুজন এবং বগুড়া-৪ আসন থেকে কাহালু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন কবিরাজ তাঁর মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। যোগাযোগ করা হলে আদমদীঘী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম খান রাজু বলেন, দলীয় সিদ্ধান্তে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছি। দল যা ভাল মনে করেছে সেটাই সঠিক। উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনে আবারও অংশ নেবেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন- সময় ও পরিস্থিতি সেটা বলে দিবে।  শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান মানিক বলেন, দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে কোন কথা থাকতে পারে না। দলীয় প্রধান যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটা আমরা সকলেই মেনে নিয়েছি। উপনির্বাচনে পৌর মেয়র পদে আবারও দাঁড়াবেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটাও দলীয়ভাবেই নির্ধারণ করা হবে। দল চাইলে নির্বাচন করব, আর দল না চাইলে করব না।
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৩
X