Thu, 09 May, 2024
সোশ্যাল মিডিয়া
মোবাইল অ্যাপস
আর্কাইভ
কনভার্টার
EN
আজকের পত্রিকা
ই-পেপার
ম্যাগাজিন
ঈদ সংখ্যা ২০২৪
ঈদ সংখ্যা ২০২৩
সারাবেলা ম্যাগাজিন
টি ২০ ম্যাগাজিন
আর্কাইভ
সোশ্যাল মিডিয়া
ফেসবুক পেজ
Kalbela
Kalbela Online
Kalbela News
kalbela.com
Kalbela World
Kalbela Sports
Kalbela Entertainment
ইউটিউব চ্যানেল
Kalbela News
image/svg+xml
Kalbela World
image/svg+xml
Kalbela Entertainment
Kalbela Sports
টিকটক
Kalbela
টুইটার
Kalbela
ইনস্টাগ্রাম
Kalbela
লিঙ্কডইন
Kalbela
টেলিগ্রাম
Kalbela
লাইকি
Kalbela News
সাউন্ডক্লাউড পডকাস্ট
Kalbela News
গুগল নিউজ
Kalbela
ইমু
Kalbala
হোয়াটসঅ্যাপ
Kalbala
বাংলা কনভার্টার
‘মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া ব্যবসায় মানোন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার’
১২ ঘণ্টা আগে
বিয়ের দাবিতে জুয়েলের বাড়িতে ২ সন্তানের জননীর অনশন
১৩ ঘণ্টা আগে
২ হাজার কোটি টাকা পাচার মামলার আসামি হলেন উপজেলা চেয়ারম্যান
১৩ ঘণ্টা আগে
নানা আয়োজনে ‘বিশ্ব রেড ক্রস ও রেড সেন্ট দিবস’ পালিত
১৩ ঘণ্টা আগে
৩৪০ টাকার জন্য লাথি মেরে গর্ভের সন্তান হত্যা
১৩ ঘণ্টা আগে
সর্বশেষ
জাতীয়
রাজনীতি
সারাদেশ
বিশ্ব
খেলা
বিনোদন
শিক্ষা
বাণিজ্য
স্বাস্থ্য
ভিডিও
অডিও
বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১
সর্বশেষ
জাতীয়
রাজনীতি
সারাদেশ
বিশ্ব
খেলা
বিনোদন
শিক্ষা
বাণিজ্য
স্বাস্থ্য
মতামত
ধর্ম
আইন-আদালত
অপরাধ
রাজধানী
প্রবাস
লাইফস্টাইল
প্রযুক্তি
শিল্প-সাহিত্য
চাকরি
চট্টগ্রাম সারাবেলা
নারী-শিশু
আইন ও পরামর্শ
সোশ্যাল মিডিয়া
বিচিত্র
কর্পোরেট
নবযাত্রার ১ বছর
বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক
পরিবেশ ও জলবায়ু
পিএসআই
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন
রম্যবেলা
ভিডিও স্টোরি
ফটো স্টোরি
ফটোগ্যালারি
ভিডিও গ্যালারি
অডিও
| ০৯ মে ২০২৪
সর্বশেষ
জাতীয়
রাজনীতি
সারাদেশ
বিশ্ব
খেলা
বিনোদন
শিক্ষা
বাণিজ্য
স্বাস্থ্য
মতামত
ভিডিও
অডিও
বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১
সর্বশেষ
জাতীয়
রাজনীতি
সারাদেশ
বিশ্ব
খেলা
বিনোদন
শিক্ষা
বাণিজ্য
স্বাস্থ্য
মতামত
ধর্ম
আইন-আদালত
অপরাধ
রাজধানী
প্রবাস
লাইফস্টাইল
প্রযুক্তি
শিল্প-সাহিত্য
চাকরি
চট্টগ্রাম সারাবেলা
নারী-শিশু
আইন ও পরামর্শ
সোশ্যাল মিডিয়া
বিচিত্র
কর্পোরেট
নবযাত্রার ১ বছর
বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক
পরিবেশ ও জলবায়ু
পিএসআই
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন
রম্যবেলা
ভিডিও স্টোরি
ফটো স্টোরি
ফটোগ্যালারি
ভিডিও গ্যালারি
অডিও
অনুসন্ধান
তরুণদের বিদেশে যাওয়া ‘বন্ধ’ করল মিয়ানমার জান্তা
তরুণদের দেশের বাইরে আর কাজ করার অনুমতি দেবে না মিয়ানমারের জান্তা সরকার। বৃহস্পতিবার এ নির্দেশনা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে মিয়ানমারের একটি বৃহৎ সংখ্যক প্রবাসী রয়েছেন। এর আগে চাকরির জন্য স্থানীয়দের বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হলেও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে চলমান সংঘাতে বহু সেনাসদস্য হারানোর পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশটির ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী তরুণদের সেনাবাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক করেছে জান্তা সরকার। এর পরপরই দেশটি থেকে বহু মানুষ পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। জানা গেছে, গত তিন মাসে প্রায় এক লাখ পুরুষ ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করেছিলেন।
০৪ মে, ২০২৪
বাংলাদেশে পালিয়ে এলো মিয়ানমারের ১৭ জান্তা সদস্য
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের জামছড়ি লেবুবাগান এলাকা দিয়ে নতুন করে মিয়ানমারের আরও ১৭ জন জান্তা সদস্য বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকালে তারা প্রাণের ভয়ে মিয়ানমার থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আসে। পরে তাদের নিরস্ত্র করে বিজিবির হেফাজতে নেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম। আশ্রয় নেওয়া এ ১৭ জান্তা সদস্যকে নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমন সত্যতা নিশ্চিত করেন। প্রসঙ্গত বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র মিয়ানমারের অভ্যন্তরে তাদের দেশের বেশ কয়েকটি সশস্ত্র বিদ্রোহী গ্রুপের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নিয়ে চলে আসছে তুমুল যুদ্ধ। চলমান সংঘর্ষের কারণে বিদ্রোহী সশস্ত্র গ্রুপের সঙ্গে যুদ্ধে টিকতে না পেরে মিয়ানমার সরকার নিয়ন্ত্রিত বাহিনীর সদস্যরা প্রাণের ভয়ে বিভিন্ন সময় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এখন পর্যন্ত ২১৩ জন সেনা ও বিজিপির সদস্য বাংলাদেশের আশ্রয়ে আছেন। তারা সবাই নাইক্ষ্যংছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মঙ্গলবার দুপুর ২টার পর আরও কিছু বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণ করেছে বলে জানা যায়। তবে এ বিষয়ে বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। এ দিকে ইতোপূর্বে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের সেনাসহ ৩৩০ জনকে দুই দেশের সমঝোতার মাধ্যমে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের উখিয়া ইনানী নৌ-বাহিনীর জেটিঘাট থেকে জাহাজে করে তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়।
১৬ এপ্রিল, ২০২৪
থাই-মিয়ানমার সংযোগ সেতুর নিয়ন্ত্রণ হারাল জান্তা বাহিনী
মিয়ানমারে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে সশস্ত্র বিদ্রোহীরা। গত কয়েক মাসে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ বেশকিছু শহরের দখলও নিয়ে নিয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো। বিশেষ করে সীমান্ত অঞ্চলগুলোতে তারা অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন এলাকায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর আক্রমণে কোনঠাসা হয়ে পড়েছে সেনারা। একের পর এক সেনাঘাঁটি ও গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে নিচ্ছে কেএনইউ, আরাকান আর্মিসহ অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীর যোদ্ধারা। এবার মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডের সঙ্গে যুক্তকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত সেতুর নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে জান্তা বাহিনী। মিয়ানমারের মায়াওয়াদ্দি শহরটির অবস্থান থাইল্যান্ডের ম্যাসো শহরের কাছাকাছি। স্থানীয় গণমাধ্যম ও একটি জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীর মুখপাত্র জানিয়েছে- এই সেতুটি মিয়ানমারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরের সাথে সংযুক্ত। সেতুটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত ক্রসিংয়ের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে জান্তা সরকার। এই শহরটিতে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন (কেএনইউ)। পালিয়ে যাওয়া প্রায় ২০০ জান্তা সেনা থাইল্যান্ডের সীমান্ত ক্রসিংয়ে জড়ো হয়েছে বলে জানিয়েছে কেএনইউয়ের মুখপাত্র স তাও নি। এখন পর্যন্ত জান্তা সেনাদের আশ্রয় দেয়নি থাই সরকার। এ বিষয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স মিয়ানমার জান্তা সরকারের মুখপাত্রের কাছে জানতে চাইলে তারা কোনো সারা দেয়নি। এর কিছুদিন আগে কেএনইউ জানিয়েছিল, তারা মায়াওয়াদ্দিতে একটি সেনাঘাঁটিতে আক্রমণ চালিয়ে সেখানে থাকা ৬০০ সেনা ও তাদের পরিবারকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করে। এদিকে এই ঘটনার পর থেকে নিজেদের সীমান্ত সুরক্ষায় সামরিক শক্তি জোরদার করেছে থাইল্যান্ড। মিয়ানমারের জান্তা ও সশস্ত্র প্রতিরোধ যোদ্ধাদের মধ্যকার লড়াইয়ে জান্তা সরকারের অবস্থান অনেকটাই নড়বড়ে। বিভিন্ন এলাকায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর আক্রমণে কোনঠাসা হয়ে পড়েছে সেনারা। প্রায় প্রতিদিনই জান্তার একাধিক সেনাঘাঁটি দখলে নিচ্ছে সশস্ত্র বিদ্রোহীরা। প্রতিরোধযোদ্ধাদের হামলায় প্রাণ হারাচ্ছে অনেক সেনা। অনেকে পালিয়ে যাচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশে। এ নিয়ে গত ২২ দিনে রাজ্যটিতে ৬০টির বেশি সেনাঘাঁটির দখল নিল বিদ্রোহীরা।
১১ এপ্রিল, ২০২৪
রোহিঙ্গাদের কাছে সাহায্য চাইছে সামরিক জান্তা
বছরের পর বছর ধরে মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনীর দ্বারা নির্যাতিত হয়ে আসছে দেশটির সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গারা। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গণধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও শিশুহত্যাসহ সব ধরনের মানবিক অপরাধ চালানো হয়েছে তাদের ওপর। সর্বশেষ ২০১৬-১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো হয় গণহত্যা। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও পুলিশ হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা করে এবং জীবন বাঁচাতে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। ২০২১ সালে নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে মিয়ানমারের ক্ষমতা গ্রহণ করে সেনাবাহিনী। তবে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে রাস্তায় নামে মিয়ানমারের জনগণ। বহু উপজাতির দেশটিতে এরপর শুরু হয় গৃহযুদ্ধ। সম্প্রতি বিদ্রোহীরা সেনাবাহিনীকে হটিয়ে দেশটিতে বিভিন্ন অঞ্চল ও শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে। রাখাইনে জান্তা বাহিনী পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে বলে মনে করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের সহায়তা চাইছে দেশটির সামরিক জান্তা। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে বিবিসির সাংবাদিকরা জানতে পেরেছেন, জান্তা বাহিনীর হয়ে যুদ্ধ করতে রোহিঙ্গাদের নিজেদের দলে নিচ্ছেন সেনারা। নিজ উদ্যোগে সেনা দলে যোগদান না করলে জোরপূর্বক সেনাবাহিনীর দলে নেওয়া হচ্ছে তাদের। বিবিসি জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে অন্তত ১০০ জন রোহিঙ্গাকে বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিবিসি এমন সাতজন রোহিঙ্গার সাক্ষাৎকার নিয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের আসল নাম প্রকাশ করেনি বিবিসি। মোহাম্মদ (ছদ্মনাম) নামের এক রোহিঙ্গা বিবিসিকে বলেন, ‘আমি ভীত ছিলাম, কিন্তু আমাকে যেতে হয়েছিল।’ তিনি রাখাইনের রাজধানী সিত্তওয়ের কাছে বাও দু ফা ক্যাম্পে থাকেন। গত এক দশক ধরে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত অন্তত দেড় লাখ রোহিঙ্গা আইডিপি ক্যাম্পে থাকতে বাধ্য হয়েছে। তিন সন্তানের জনক ৩১ বছর বয়সি মোহাম্মদ জানান, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে ক্যাম্পের নেতা গভীর রাতে আমার কাছে আসেন। তিনি বলেছিলেন, আমাকে সামরিক প্রশিক্ষণে যেতে হবে, এটি সেনাবাহিনীর আদেশ। আদেশ না মানলে আমার পরিবারের ক্ষতি করা হবে বলে তারা হুমকি দিয়েছিল। মোহাম্মদের মতো রোহিঙ্গা পুরুষদের জন্য চরম পরিহাসের বিষয় হলো- মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা এখনো নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত। আর নিজস্ব সম্প্রদায়ের বাইরে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার মতো বৈষম্যমূলক বিধিনিষেধের একটি ভয়ানক পরিস্থিতির শিকার তারা। ২০১২ সালে রাখাইন রাজ্যের মিশ্র সম্প্রদায় থেকে কয়েক হাজার রোহিঙ্গাকে বিতাড়িত করা হয়েছিল। আর তাদের নির্ধারিত এসব শিবিরে বসবাস করতে বাধ্য করা হয়েছিল। পাঁচ বছর পর ২০১৭ সালের আগস্টে সেনাবাহিনী তাদের বিরুদ্ধে নৃশংস জাতিগত নিধন অপারেশন শুরু করে। সেই নিধন অপারেশনে হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়। ধর্ষণ করা হয় তাদের নারীদের। এ ছাড়া জ্বালিয়ে দেওয়া হয় তাদের গ্রাম। ওই সময় অন্তত ৭ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। তা সত্ত্বেও এখনো প্রায় ছয় লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমারে টিকে আছে। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা পরিচালনার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলার কার্যক্রম এখনো চলছে। সম্প্রতি বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির কাছে রাখাইন অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ভূখণ্ডে দখল হারানোর পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। দেশের অন্যান্য অংশেও ক্ষতির শিকার হয়েছে দেশটির সামরিক জান্তা। শনিবার পূর্বাঞ্চলে থাইল্যান্ড-মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ শহর মায়াবতীর দখল হারিয়েছে ক্ষমতাসীন জান্তা। বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসাবে এই স্থলবন্দরটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রতিক সংঘর্ষগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সেনাও হারিয়েছে তারা। বিদ্রোহীদের হামলায় অনেক সেনা নিহত হয়েছে, আত্মসমর্পণ করেছে কেউ কেউ। ফলে নতুন সেনা খুঁজে পেতে হিমশিম খাচ্ছে জান্তা। সেনাবাহিনীতে সদস্য বাড়াতে এখন রোহিঙ্গাদের শরণাপন্ন হচ্ছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার।
০৯ এপ্রিল, ২০২৪
গুরুত্বপূর্ণ শহরের নিয়ন্ত্রণ হারাল মিয়ানমার জান্তা
তিন বছর আগে ক্ষমতা দখল করা মিয়ানমারের সামরিক সরকার আরও একটি বড় পরাজয়ের মুখে পড়ল। এবার জান্তা বাহিনী দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী একটি শহরের নিয়ন্ত্রণ হারাতে যাচ্ছে। সেনা অভ্যুত্থানবিরোধী অন্য সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে মিলে কয়েক সপ্তাহ ধরে শহরটিতে হামলা চালিয়ে আসছিল জাতিগত কারেন বিদ্রোহীরা। শেষ পর্যন্ত সীমান্তবর্তী গুরুত্বপূর্ণ শহর মায়াওয়াদ্দির নিরাপত্তায় নিয়োজিত শত শত সেনা আত্মসমর্পণে রাজি হয়েছে। খবর বিবিসির। থাইল্যান্ডের সঙ্গে মিয়ানমারের স্থল বাণিজ্যের বেশিরভাগই হয়ে থাকে মায়াওয়াদ্দি শহরের মাধ্যমে। শুক্রবার কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন ঘোষণা দেয়, মায়াওয়াদ্দি শহরের ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে থাঙ্গানিনাংয়ে অবস্থিত সেনা ব্যাটালিয়নের আত্মসমর্পণের প্রস্তাব তারা গ্রহণ করেছে। কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন তাদের উজ্জীবিত যোদ্ধাদের একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। এতে ওই যোদ্ধাদের হস্তগত হওয়া উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অস্ত্র প্রদর্শন করতে দেখা গেছে। বেশ কিছুদিন ধরে কারেন বাহিনী মায়াওয়াদ্দির ভেতরে থাকা শেষ ব্যাটালিয়নটির সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে আসছিল। দৃশ্যত এখন তারা আত্মসমর্পণ করতে রাজি হয়েছে। যে কোনো সময় তারা আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করবে বলে জানা গেছে। এটিকে সামরিক সরকারের জন্য একটি মারাত্মক ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে শান রাজ্যের চীন সীমান্তবর্তী বিশাল এলাকা এবং আরাকান রাজ্যের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা থেকেও জান্তা বাহিনীকে হটিয়ে দেওয়া হয়েছে। চলমান এ সংঘাতে হাজারো সেনা হয় এরই মধ্যে নিহত হয়েছেন বা আত্মসমর্পণ করেছেন কিংবা বিরোধী পক্ষে ভিড়েছেন। এই ঘাটতি পূরণ করতে সাধারণ মানুষের ওপর বাধ্যতামূলক সামরিক সেবা চাপিয়ে দিয়েছে জান্তা সরকার। মিয়ানমার ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভ করে। এরপর থেকেই জাতিগত কারেন জনগোষ্ঠীর জন্য স্বশাসনের দাবিতে লড়াই করে আসছে কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক অভ্যুত্থানে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন মিয়ানমারের নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে সামরিক বাহিনী। সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং ক্ষমতা দখল করেন। এরপর থেকে একাধিক ফ্রন্টে বিদ্রোহ দমনে হিমশিম খেতে হচ্ছে জান্তা সরকারকে। ১৯৬২ সালের পর জান্তাকে এই প্রথম বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
০৮ এপ্রিল, ২০২৪
সীমান্তে আরেক শহরের পতন, বড় পরাজয়ের মুখে মিয়ানমারের জান্তা
বড় পরাজয়ের মুখে পড়েছে মিয়ানমারের জান্তা। দেশটিতে সীমান্তবর্তী একটি শহরের পতন হতে চলেছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীদের হাতে পতন হতে যাওয়া শহরটি মিয়ানমার-থাইল্যান্ড সীমান্তে অবস্থিত। শনিবার (৬ এপ্রিল) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তিন বছর আগে মিয়ানমারের জান্তা দেশটির ক্ষমতা দখল করে। এরপর এ শহরটি পতনের মধ্যে দিয়ে আরও একবার বড় পরাজয়ের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে তারা। পতনের মুখে পড়া শহরটি থাইল্যান্ডের সঙ্গে দেশটির পূর্ব সীমান্তবর্তী এলাকা। কারেন বিদ্রোহীদের আক্রমণের মুখে জান্তার সৈন্যদের শহরটি হাতছাড়া হয়েছে। অন্যান্য অভ্যুত্থানবিরোধী বাহিনীর মিত্র হিসেবে জাতিগত কারেন বিদ্রোহীরা জান্তার সঙ্গে লড়াই করে চলছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্য গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে কয়েক সপ্তাহ ধরে কারেন বিদ্রোহীরা হামলা চালিয়ে আসছে। শেষ পর্যন্ত সীমান্তবর্তী গুরুত্বপূর্ণ শহর মায়াওয়াদ্দির নিরাপত্তায় নিয়োজিত শত শত সেনা আত্মসমর্পণে রাজি হয়েছে। মায়াওয়াদ্দি শহর দিয়ে থাইল্যান্ডের সঙ্গে মিয়ানমারের বেশিরভাগ স্থল বাণিজ্য হয়ে থাকে। শুক্রবার কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন ঘোষণা দিয়েছে যে মায়াওয়াদ্দি শহরের ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে থাঙ্গানিনাংয়ে অবস্থিত সেনা ব্যাটালিয়ন আত্মসমর্পণে রাজি হয়েছে। তাদের প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন কারেন বিদ্রোহীরা। কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। ভিডিওতে তাদের সেনাদের হস্তহত হওয়া উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অস্ত্র প্রদর্শন করতে দেখা গেছে। বিদ্রোহীদের কাছে শহরটির পতন জান্তার জন্য বড় পরাজয়। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে শান রাজ্যের চীন সীমান্তবর্তী বিপুল এলাকা এবং আরাকান রাজ্যের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী অঞ্চল দখলে নিয়েছে বিদ্রোহীরা। চলমান সংঘাতে হাজারও সেনা এরই মধ্যে নিহত বা আত্মসমর্পণ করেছেন অথবা তারা বিরোধীর দলে যোগ দিয়েছেন। ফলে ঘাটতি পূরণে জান্তা প্রশাসন বাধ্যতামূলকভাবে সামরিক সেবা সাধারণ মানুষের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে।
০৭ এপ্রিল, ২০২৪
রাখাইনে নির্বিচারে রোহিঙ্গাদের হত্যা করছে জান্তা বাহিনী
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মিনবিয়া শহরে গত সোমবার সামরিক জান্তা বাহিনীর বোমা হামলায় অন্তত ২৩ রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩৩ জন। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, কোনো ধরনের উসকানি ছাড়াই এই হামলা চালিয়েছে জান্তা বাহিনী। মঙ্গলবার মিয়ানমারের সংবাদপত্র দ্য ইরাবতির এক খবরে বলা হয়, সোমবার থারডার এলাকায় জান্তা বাহিনী যুদ্ধবিমান থেকে দুটি বোমা নিক্ষেপ করেছে। এতে ২৩ জন নিহত হন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে এক ধর্মীয় নেতা, তার স্ত্রী ও বেশ কয়েকটি শিশু রয়েছে। এক বাসিন্দা দ্য ইরাবতিকে বলেন, বিদ্রোহী আরাকান আর্মি (এএ) বোমা হামলায় আহত ১৮ রোহিঙ্গার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। তুলনামূলক কম আহত আরও অন্তত ১৫ জনকে স্থানীয় ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ওই বাসিন্দা বলেন, আহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বাকিদের অবস্থা স্থিতিশীল। মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। থারডার এলাকায় প্রায় ৩০০ রোহিঙ্গা পরিবার বসবাস করে, যাদের জনসংখ্যা ২ হাজারের বেশি। বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের অনেকেই ওই এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। রোহিঙ্গা সমাজকর্মী নায় সান লিউইন বলেন, ‘মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অপকর্মের জন্য কখনো তাদের শাস্তি হয়নি। দায়মুক্তি পেয়ে এরা শুধু রোহিঙ্গাদের ওপরই দমন-পীড়ন করছে না, বরং অন্যান্য জাতিগোষ্ঠী মানুষের ওপরও দমন-পীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। এই দায়মুক্তি তুলে নেওয়া না হলে তাদের অপরাধ কখনো বন্ধ হবে না। এএ বিদ্রোহীরা গত ৬ ফেব্রুয়ারি মিনবিয়া শহর দখলের পর সামরিক জান্তা প্রায়ই সেখানে বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ করছে। রাখাইনের রাজধানী সিতওয়ের ঘাঁটি থেকে সামরিক জান্তা ৮ মার্চ স্থানীয় সময় সকাল ১১টার দিকে মিনবিয়ার দুটি এলাকায় গোলাবর্ষণ করে। ১৬ মার্চ জান্তা মিনবিয়ার একটি সরকারি বিদ্যালয়ে হামলা চালায়। এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ১২ মার্চ জান্তা বাহিনীর আরেক হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। আরাকান আর্মির দখল করা অন্যান্য শহরেও সামরিক জান্তা প্রায়ই হামলা চালাচ্ছে। গত বছরের নভেম্বরে জান্তার বিরুদ্ধে অভিযান শুরুর পর রাখাইন রাজ্যের পাকতাউ, পোনাজিউন, ম্রাউক-ইউ, মিনবিয়া, মায়েবন, রাম্রি, রথেডং, কাইয়াকতাউ ও টং পাইউ লেটউই শহর এবং পাশের চিন রাজ্যের পালেতাওয়া শহর বিদ্রোহী গোষ্ঠী এএ দখল করেছে।
২০ মার্চ, ২০২৪
অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় আরও ২৩ জান্তা সদস্য
মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর আরও ২৩ সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার অপেক্ষায় আছে বলে জানিয়েছেন সোমবার আশ্রয় নেওয়া ১৭৭ জনের একজন। তার নাম টুয়ো মং। বয়স (৪২)। মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) এই সদস্য জানান, ১০ মার্চ বিকেলে তারা দুই শতাধিক সদস্য বিদ্রোহী দমনে টহলে বের হন। তারা বলিবাজার জান্তা বাহিনীর তাদের সতীর্থ সেনা ব্যাটালিয়নে ১১ মার্চ রাত যাপন করার কথা ছিল। কিন্তু পথে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির কমান্ডোরা অতর্কিত তাদের টহল দলের ওপর হামলা শুরু করে। টুয়ো মং জানান, রানী ও অংচাপ্রে নামক স্থানের দক্ষিণ-পশ্চিমে ২০ কিলোমিটার গহিন বনে এ ঘটনা ঘটায় তারা কঠিন সমস্যায় পড়েন। পরে তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করলে তাদের নির্দেশে তারা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। ২০০ সদস্যের ১৭৭ বাংলাদেশ সীমানা পার হলেও বাকি ২৩ সদস্য এখনো বাংলাদেশ সীমানা ঘেঁষে লুকিয়ে আছেন। তারা যে কোনো সময় বাংলাদেশে পালিয়ে আসবেন। এদিকে রাখাইনের মন্ডু জেলা শহর থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া ১৭৭ বিজিপি সদস্যকে নাইক্ষ্যংছড়ি সদরের ১১-বিজিবির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। তাদের মানবিক সব ধরনের সহায়তা ও সেবা দেওয়া হচ্ছে। এ স্কুলে বিজিপি সদস্যদের অবস্থানের কারণে মঙ্গলবার থেকে স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বান্দরবান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মুজাহিদ উদ্দিন জানান, ১৭৭ মিয়ানমার বাহিনীর সদস্যকে নাইক্ষ্যংছড়িস্থ বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে। তাদের বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকের পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত মোতাবেক কার্যক্রম জানানো হবে। প্রশাসনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি রমজানে স্কুল বন্ধ রাখা নিয়ে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের বিষয় আপিল বিভাগে স্কুল খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেন। এতে প্রাথমিক রমজানের প্রথম ১০ দিন খোলা রাখতে হবে। এখন এ পর্যায়ে বিজিবি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ১৭৭ মিয়ানমার সেনাকে অন্যত্র সরানোর বিষয়টি মঙ্গলবার বিকেলে সিদ্ধান্ত দেবে সরকার। না হলে ওই স্কুলের ছয় শতাধিক শিক্ষার্থীর শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হবে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রিরতণ চাকমা বলেন, ১১ বিজিবি অধিনায়কের প্রস্তাবেই তাদের বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে। সে কারণে স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ১০ রমজানের পর স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে।
১৪ মার্চ, ২০২৪
অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় আরও ২৩ জান্তা সদস্য
মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর আরও ২৩ সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার অপেক্ষায় আছে বলে জানিয়েছেন সোমবার আশ্রয় নেওয়া ১৭৭ জনের একজন। তার নাম টুয়ো মং। বয়স (৪২)। মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) এই সদস্য জানান, ১০ মার্চ বিকেলে তারা দুই শতাধিক সদস্য বিদ্রোহী দমনে টহলে বের হন। তারা বলিবাজার জান্তা বাহিনীর তাদের সতীর্থ সেনা ব্যাটালিয়নে ১১ মার্চ রাত যাপন করার কথা ছিল। কিন্তু পথে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির কমান্ডোরা অতর্কিত তাদের টহল দলের ওপর হামলা শুরু করে। টুয়ো মং জানান, রানী ও অংচাপ্রে নামক স্থানের দক্ষিণ-পশ্চিমে ২০ কিলোমিটার গহিন বনে এ ঘটনা ঘটায় তারা কঠিন সমস্যায় পড়েন। পরে তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করলে তাদের নির্দেশে তারা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। ২০০ সদস্যের ১৭৭ বাংলাদেশ সীমানা পার হলেও বাকি ২৩ সদস্য এখনো বাংলাদেশ সীমানা ঘেঁষে লুকিয়ে আছেন। তারা যে কোনো সময় বাংলাদেশে পালিয়ে আসবেন। এদিকে রাখাইনের মন্ডু জেলা শহর থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া ১৭৭ বিজিপি সদস্যকে নাইক্ষ্যংছড়ি সদরের ১১-বিজিবির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। তাদের মানবিক সব ধরনের সহায়তা ও সেবা দেওয়া হচ্ছে। এ স্কুলে বিজিপি সদস্যদের অবস্থানের কারণে মঙ্গলবার থেকে স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বান্দরবান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মুজাহিদ উদ্দিন জানান, ১৭৭ মিয়ানমার বাহিনীর সদস্যকে নাইক্ষ্যংছড়িস্থ বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে। তাদের বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকের পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত মোতাবেক কার্যক্রম জানানো হবে। প্রশাসনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি রমজানে স্কুল বন্ধ রাখা নিয়ে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের বিষয় আপিল বিভাগে স্কুল খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেন। এতে প্রাথমিক রমজানের প্রথম ১০ দিন খোলা রাখতে হবে। এখন এ পর্যায়ে বিজিবি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ১৭৭ মিয়ানমার সেনাকে অন্যত্র সরানোর বিষয়টি মঙ্গলবার বিকেলে সিদ্ধান্ত দেবে সরকার। না হলে ওই স্কুলের ছয় শতাধিক শিক্ষার্থীর শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হবে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রিরতণ চাকমা বলেন, ১১ বিজিবি অধিনায়কের প্রস্তাবেই তাদের বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে। সে কারণে স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ১০ রমজানের পর স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে।
১৪ মার্চ, ২০২৪
দ্য ডিপ্লোম্যাট থেকে /
জান্তা সরকার নাকি আরাকান আর্মি, কাকে সমর্থন করবে বাংলাদেশ?
মিয়ানমারের দীর্ঘদিনের গৃহযুদ্ধ নতুন মোড় নিয়েছে গত বছর। দেশটির জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো একজোট হয়েছে। তিনটি বৃহৎ সশস্ত্র সংগঠন- মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (MNDAA), তায়াং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (TNLA), এবং আরাকান আর্মি (AA) একত্র হয়ে তৈরি করেছে থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স। গত বছরের ২৭ অক্টোবর মিয়ানমার সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে অপারেশন ১০২৭ শুরু করে এই সম্মিলিত জোট। মিয়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চলে গত কয়েক মাস ধরে তীব্র লড়াই চলছে। এই লড়াইয়ের প্রভাব শুধু মিয়ানমারেই অনুভব করা যাচ্ছে তা নয়। ক্রমবর্ধমানভাবে বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্যও প্রভাবসহ একটি আঞ্চলিক নিরাপত্তা সমস্যা হয়ে উঠছে এটি। রাখাইন, চিন ও শান প্রদেশে প্রায় প্রতিদিনই পাওয়া যাচ্ছে সেনাবাহিনীর পরাজয়ের খবর। রাখাইন রাজ্যে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে হামলা চালাচ্ছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। রাজ্যটি কয়েক বছর ধরে অশান্ত এবং রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের আবাসস্থল। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর এখানে গণহত্যা চালায় মিয়ানমার সামরিক বাহিনী। জীবন বাঁচাতে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা তাদের বাড়িঘর ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে চীনের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত হয় দ্বিপাক্ষিক চুক্তি। অথচ ২০১৭ থেকে ২০২৪, ৬ বছরেও রোহিঙ্গাদেরকে তাদের জন্মভূমিতে ফিরিয়ে নেয়নি মিয়ানমার সরকার। বিদ্রোহী ও সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ শুধু মিয়ানমারের ভূখণ্ডের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তে ছড়িয়ে পড়ছে এই লড়াই। মর্টার শেল এবং রাইফেলের গুলি এসে পড়ছে বাংলাদেশের মধ্যেও। মিয়ানমার থেকে আসা মর্টার শেলের আঘাতে দুই বাংলাদেশির মৃত্যুও হয়েছে এবং সীমান্তে বসবাসকারী মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এ ছাড়া মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তত ৩৪০ সদস্য বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। বাংলাদেশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রধান সে সময় সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর চেষ্টা করছে মিয়ানমার জান্তা। তবে বাংলাদেশ–মিয়ানমারের মধ্যে যুদ্ধ বাধার সম্ভাবনাকে নাকচ করে দিয়েছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সাম্প্রতিক ঘটনাবলি আমাদেরকে মিয়ানমার নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে। বিশেষ করে রাখাইন রাজ্যে জান্তার পরাজয় ঘটতে যাচ্ছে। বিদ্রোহীরা রাখাইনসহ আরও কিছু রাজ্যে স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে বলে মনে হচ্ছে। বিদ্রোহীরা যদি রাখাইনের স্বাধীনতা ঘোষণা করে তবে তা মিয়ানমারে একটি নতুন যুগের সূচনা করবে। রাখাইনের জাতিগোষ্ঠীগুলোর সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধারের জন্য লড়াই করছে আরাকান আর্মি (AA)। সংগঠনটি স্থানীয় বৌদ্ধদের বিভিন্ন গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত। রোহিঙ্গারা সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম। মিয়ানমারের মধ্যে রোহিঙ্গারাও আরাকান আর্মিতে যোগ দিচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। রোহিঙ্গা যুবকদের বিশ্বাস, রাখাইন রাজ্য থেকে জান্তা সরকারকে বিতাড়িত করতে পারলে এবং রাখাইনকে স্বাধীন করতে পারলে রোহিঙ্গারা তাদের জন্মভূমিতে ফিরতে পারবে। রোহিঙ্গারা তাদের সম্পত্তি এবং বাড়িঘর ফিরে পাবে। তবে বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে থাকা অনেক রোহিঙ্গা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান। কারণ আরাকান আর্মি (AA) এখনো রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। তাই আরাকান আর্মি রাখাইনে বিজয়ী হলেও রোহিঙ্গাদের ভাগ্যে প্রকৃতপক্ষে কি ঘটবে সেটা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েই গেছে। এছাড়া, মিয়ানমারের সংঘাত, বিশেষ করে রাখাইনে, এখানে শুধু জান্তা এবং বিদ্রোহীরা জড়িত নয়। দুটি আঞ্চলিক শক্তির অর্থনৈতিক ও কৌশলগত স্বার্থও এখানে জড়িত। মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক রয়েছে চীনের। এই এলাকায় একটি বড় অংশীদারিত্ব রয়েছে পরাশক্তি দেশটির। বঙ্গোপসাগরে নবনির্মিত কিয়াকফিউ বন্দর এবং বন্দর ও দক্ষিণ চীনের মধ্যে একটি পাইপলাইনসহ পরিকল্পিত সড়ক ও রেল যোগাযোগ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এর মধ্যে। চীনের আলোচিত বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (BRI) এর-ও একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই বন্দর। ফলে ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের পর থেকে জান্তাকে সমর্থন অব্যাহত রেখেছে চীন। অন্যদিকে, ভারতের কালাদান মাল্টি-মোডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্প রয়েছে এখানে। প্রায় অর্ধ বিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্পে রয়েছে সিটওয়েতে একটি বন্দর যা বাংলাদেশকে বাইপাস করে পশ্চিম মিয়ানমারের রাখাইন এবং চিন রাজ্যের মধ্য দিয়ে ভারতের ল্যান্ডলকড উত্তর-পূর্বের সাথে কলকাতাকে সংযুক্ত করে। এই প্রকল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট চিন রাজ্যের পালেতওয়া টাউনশিপ। জায়গাটি আরাকান আর্মির দখলে রয়েছে। ভারতীয় প্রকল্পটি কেবল অর্থনৈতিক কারণেই নয়, বরং মিয়ানমারে চীনা প্রভাব মোকাবিলা এবং ভারত মহাসাগরের অবিচ্ছেদ্য অংশ বঙ্গোপসাগরে নিজের শক্তিশালী উপস্থিতির জন্যও প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ। চীন গোপনে আরাকান আর্মি (AA)-কে সমর্থন করছে বলে দাবি করছেন অনেকে। যা ভারতের জন্য উদ্বেগ তৈরি করে। ভৌগোলিক নৈকট্য এবং সংঘাতের সঙ্গে জড়িত পক্ষগুলো বাংলাদেশকেও সংঘাতের দিকে টেনে নিতে চেষ্টা করবে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রতিক্রিয়া যুদ্ধকে বাংলাদেশের দোরগোড়ায় নিয়ে যাচ্ছে। রাখাইন রাজ্যে সংঘাতের ক্রমাগত বৃদ্ধি এবং AA এর সম্ভাব্য অগ্রগতি বাংলাদেশের জন্য গুরুতর প্রভাব ফেলবে। এর প্রভাব শুধু সীমান্ত এলাকায় সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং বাংলাদেশের বৈদেশিক সম্পর্কও প্রভাবিত হবে। নিঃসন্দেহে, বাংলাদেশের ওপর কড়া নজর রাখবে মিয়ানমার। এছাড়া রাখাইনে চীন ও ভারত পরস্পর নিজেদের স্বার্থ দেখার পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের দিকেও নজর রাখবে তারা। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশকে বিবেচনা করতে হবে, মিয়ানমার সম্পর্কে বিশেষ করে এএ-এর প্রতি বাংলাদেশ তার নীতি পরিবর্তন করবে কিনা। বাংলাদেশের সামনে এখন তিনটি বিকল্প রয়েছে। স্থিতাবস্থা বজায় রাখা, আরাকান আর্মি (AA)-এর সঙ্গে কাজ করা, অথবা AA-এর অগ্রগতিতে সক্রিয় অবস্থান নেওয়া। বাংলাদেশ সরকার এখন পর্যন্ত নিরপেক্ষতা বজায় রেখেছে এবং বাংলাদেশের ভূখণ্ডে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অনুপ্রবেশের প্রতিবাদ করেছে। রাখাইন এবং আরও কয়েকটি রাজ্য নিয়ন্ত্রণ হারালেও সমগ্র মিয়ানমারে জান্তার পতনের সম্ভাবনা কম। তবে পরিস্থিতির অবনতি হলে রাখাইন থেকে উদ্বাস্তুদের একটি নতুন ঢেউ বাংলাদেশে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশ কোনোভাবেই এটা চায় না। বাংলাদেশ যদি আরাকান আর্মি (AA)-কে উপেক্ষা করে এবং এই গোষ্ঠীর সঙ্গে যদি বাংলাদেশের একটি উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয় তবে তা আরও বড় সমস্যার সৃষ্টি করবে। আরেকটি বিকল্প হলো- আরাকান আর্মি এবং জাতীয় ঐক্য সরকার (NUG) এর সাথে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ স্থাপন করা। একটি সম্ভাব্য ভবিষ্যতের সম্পর্ক স্থাপন করা। বিদ্রোহীরা যদি একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করতে সফল হয় এবং বিশাল একটি অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করে তবে বাংলাদেশের জন্য তারা অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। অবশ্য ইতিমধ্যেই আরাকান আর্মি এবং এর রাজনৈতিক শাখা ইউনাইটেড লীগ অব আরাকান একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হয়ে উঠেছে তা অস্বীকার করার উপায় নেই। AA-এর সাথে যুক্ত হলে তা মিয়ানমার সরকারের সাথে বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তবে, নিরাপত্তার কারণে প্রতিবেশী দেশগুলোর নন-স্টেট অ্যাক্টরদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা নজিরবিহীন কিছু নয়। যাইহোক, ঢাকাকে তার সর্বোত্তম স্বার্থ বিবেচনা করতে হবে এবং সক্রিয়ভাবে সেই স্বার্থগুলো অনুসরণ করতে হবে। পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে এবং সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে। আলী রীয়াজ : যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর, আটলান্টিক কাউন্সিলের অনাবাসিক সিনিয়র ফেলো এবং আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট। ভাষান্তর - মুজাহিদুল ইসলাম
০৩ মার্চ, ২০২৪
আরও
X