Tue, 21 May, 2024
সোশ্যাল মিডিয়া
মোবাইল অ্যাপস
আর্কাইভ
কনভার্টার
EN
আজকের পত্রিকা
ই-পেপার
ম্যাগাজিন
ঈদ সংখ্যা ২০২৪
ঈদ সংখ্যা ২০২৩
সারাবেলা ম্যাগাজিন
টি ২০ ম্যাগাজিন
আর্কাইভ
সোশ্যাল মিডিয়া
ফেসবুক পেজ
Kalbela
Kalbela Online
Kalbela News
kalbela.com
Kalbela World
Kalbela Sports
Kalbela Entertainment
ইউটিউব চ্যানেল
Kalbela News
image/svg+xml
Kalbela World
image/svg+xml
Kalbela Entertainment
Kalbela Sports
টিকটক
Kalbela News
টিকটক
Kalbela Entertainment
টুইটার
Kalbela
ইনস্টাগ্রাম
Kalbela
লিঙ্কডইন
Kalbela
টেলিগ্রাম
Kalbela
লাইকি
Kalbela News
সাউন্ডক্লাউড পডকাস্ট
Kalbela News
গুগল নিউজ
Kalbela
ইমু
Kalbala
হোয়াটসঅ্যাপ
Kalbala
থ্রেডস
Kalbela News
বাংলা কনভার্টার
রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি ৫০ বছরের পুরোনো
৫ ঘণ্টা আগে
ছেলের আত্মহত্যায় মায়ের বিষপান
৫ ঘণ্টা আগে
স্ত্রীর মরদেহ বিছানায়, ফ্যানে ঝুলছিলেন স্বামী
৬ ঘণ্টা আগে
শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে টেনিস বল গ্রাউন্ড নির্মাণকাজে অনিয়ম
৬ ঘণ্টা আগে
যাত্রীর ছুরিকাঘাতে অটোরিকশাচালক খুন
৬ ঘণ্টা আগে
সর্বশেষ
জাতীয়
রাজনীতি
সারাদেশ
বিশ্ব
খেলা
বিনোদন
শিক্ষা
বাণিজ্য
স্বাস্থ্য
ভিডিও
অডিও
মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
সর্বশেষ
জাতীয়
রাজনীতি
সারাদেশ
বিশ্ব
খেলা
বিনোদন
শিক্ষা
বাণিজ্য
স্বাস্থ্য
মতামত
ধর্ম
আইন-আদালত
অপরাধ
রাজধানী
প্রবাস
লাইফস্টাইল
প্রযুক্তি
শিল্প-সাহিত্য
চাকরি
চট্টগ্রাম সারাবেলা
নারী-শিশু
আইন ও পরামর্শ
সোশ্যাল মিডিয়া
বিচিত্র
কর্পোরেট
নবযাত্রার ১ বছর
বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক
পরিবেশ ও জলবায়ু
পিএসআই
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন
রম্যবেলা
ভিডিও স্টোরি
ফটো স্টোরি
ফটোগ্যালারি
ভিডিও গ্যালারি
অডিও
| ২১ মে ২০২৪
সর্বশেষ
জাতীয়
রাজনীতি
সারাদেশ
বিশ্ব
খেলা
বিনোদন
শিক্ষা
বাণিজ্য
স্বাস্থ্য
মতামত
ভিডিও
অডিও
মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
সর্বশেষ
জাতীয়
রাজনীতি
সারাদেশ
বিশ্ব
খেলা
বিনোদন
শিক্ষা
বাণিজ্য
স্বাস্থ্য
মতামত
ধর্ম
আইন-আদালত
অপরাধ
রাজধানী
প্রবাস
লাইফস্টাইল
প্রযুক্তি
শিল্প-সাহিত্য
চাকরি
চট্টগ্রাম সারাবেলা
নারী-শিশু
আইন ও পরামর্শ
সোশ্যাল মিডিয়া
বিচিত্র
কর্পোরেট
নবযাত্রার ১ বছর
বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক
পরিবেশ ও জলবায়ু
পিএসআই
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন
রম্যবেলা
ভিডিও স্টোরি
ফটো স্টোরি
ফটোগ্যালারি
ভিডিও গ্যালারি
অডিও
অনুসন্ধান
স্বাক্ষর জালিয়াতি করে জন্মনিবন্ধন বানিয়ে দিচ্ছিল দুই তরুণ
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) এক ওয়ার্ড কাউন্সিলরের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে নকল জন্ম নিবন্ধন বানিয়ে দেওয়ার অভিযোগে সাগর ও রেজাউল করিম নামে দুই তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৫ মে) সন্ধ্যায় হালিশহর থানার ওসি কায়সার হামিদ কালবেলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে মঙ্গলবার রাতে নগরের হালিশহর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় উদ্ধার করা হয় চসিকের প্যানেল মেয়র ও চসিক কাউন্সিলর আব্দুস সবুর লিটনের নামে বানানো সিল এবং প্যাড। তাছাড়া জন্ম নিবন্ধন সহকারী সুমন গুপ্তর নামে জন্ম নিবন্ধন লোগো সম্বলিত ৬টি সিল ও স্ট্যাম্প প্যাড উদ্ধার করা হয়। হালিশহর থানার ওসি কায়সার হামিদ কালবেলাকে বলেন, কাউন্সিলর অফিসের স্টাফ আবার কখনো পাসপোর্ট অফিসের স্টাফ বলে তারা পরিচয় দিত। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় কাউন্সিলর ও জন্ম নিবন্ধন সহকারীর নামে করা সিল-স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি, এসব ব্যবহার করে নকল জন্ম-নিবন্ধন বানিয়ে প্রতারণা করে আসছিল গ্রেপ্তারকৃতরা। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
১৫ মে, ২০২৪
জালিয়াতি করে জনপ্রতিনিধিদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
জামালপুরের ইসলামপুরে কিশোর-কিশোরী ক্লাবের কো-অর্ডিনেটরদের সম্মানী ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা কামরুন্নাহারের বিরুদ্ধে। জানা যায়, গত ২০২০ সালে মহিলাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধিনে কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভাসহ মোট ১৩টি ক্লাব স্থাপন করা হয়। পরে ক্লাবগুলো তদারকির জন্য প্রতিটি ইউনিয়নের একজন করে সংরক্ষিত ইউপি সদস্যদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাদের জন্য প্রতি মাসে দুই হাজার টাকা সম্মানী ভাতা বরাদ্দ দেয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। উপজেলা মহিলাবিষয়ক অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে কো-অর্ডিনেটরদের জন্য বরাদ্দকৃত ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা বিভিন্ন মেয়াদে দায়িত্বে থাকা সংরক্ষিত ইউপি সদস্যদের মাঝে বিতরণ দেখানো হয়। তবে সেই টাকা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন দায়িত্ব থাকা কো-অর্ডিনেটররা। পাথর্শী ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত সদস্য নাসিমা বেগম বলেন, আমি কিশোর-কিশোরী ক্লাবের দায়িত্বে আছি এটা শুনেছি। ইতোপূর্বে আমি কোনো টাকা পয়সা পায়নি। রোববার (৫ মে) আমার স্বামীর কাছে রশিদ নামে একজন ৬ হাজার টাকা দিয়েছে। তার নামে ১২ হাজার টাকা বিতরণ দেখানো হয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার নামে কত টাকা বিতরণ দেখানো হয়েছে এটা আমি জানি না। চরগোয়ালিনি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সংরক্ষিত সদস্য রুসনাই বেগম বলেন, আমাকে চলতি মাসের ১ তারিখে ১০ হাজার টাকার পরিবর্তে পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছে। আমার নামে কত বরাদ্দ সেটা আমি জানি না। টাকা দেওয়ার কথা ছিল গত দেড় বছর আগে। রেজিস্ট্রার আমার স্বাক্ষর জাল করে টাকা আত্মসাৎ করেছিল, আর সাংবাদিকদের অনুসন্ধানের মাধ্যমে আট দিন আগে বরাদ্দের অর্ধেক টাকা পেয়েছি। অবশিষ্ট টাকা পেতে আজ অফিসে এসেছি। সরকারি কর্মকর্তারা যদি স্বাক্ষর জাল করে জনপ্রতিনিধিদের টাকা আত্মসাৎ করে, তবে সাধারণ মানুষ এদের কাছ থেকে কতটুকু নিরাপদ সহযোগিতা কামনা করতে পারে। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি। এ সময় কথা হয় বর্তমান সংরক্ষিত ইউপি সদস্য মুনজুরা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমি কয়েক দিন মহিলাবিষয়ক অফিসে গেছি এই টাকার জন্য। তারা বলছে বরাদ্দ আসেনি এলে পাবেন। গত দুদিন আগে আমাকে ইসলামপুর বাজারে ডেকে নিয়ে পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছে। আমার নামে ১২ হাজার টাকা বিতরণ দেখানো হয়েছে এটা আমি জানি না। বিতরণকৃত টাকা আত্মসাতের বিষয়ে জানতে চাইলে মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা কামরুন্নাহার বলেন, আমি আমার অফিস স্টাফকে টাকা বিতরণের দায়িত্ব দিয়েছিলাম। বিতরণ করে আমাকে রেজিস্ট্রার দিয়েছে আমি তাতে স্বাক্ষর করেছি। দায়িত্বপ্রাপ্ত কো-অর্ডিনেটররা টাকা পেয়েছে কি না জানি না। তবে তাদের ডেকে বিষয়টি শুনব। এ ব্যাপারে ইউএনও মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি অবগত নই। এরকম অনিয়ম হয়ে থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
০৬ মে, ২০২৪
নিয়োগ-পদোন্নতিতে রুয়েট কর্মকর্তার ভয়াবহ জালিয়াতি
ক্ষমতার দাপট ও তৎকালীন প্রশাসনকে রাজনৈতিক প্রভাবের চাপে ফেলে নিয়োগের শর্ত শিথিল করে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) ২০১১ সালের ৩০ মে সহকারী রেজিস্ট্রার পদে চাকরিতে প্রবেশ। অনুমোদনহীন সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পদের (সহকারী রেজিস্ট্রার) বিপরীতে নিয়োগ পেয়ে তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ‘অবৈধভাবে’ দীর্ঘ ১৩ বছরের চাকরি জীবনে সেই মুফতি মাহমুদ রনি এখন রুয়েটের গবেষণা ও সম্প্রসারণ বিভাগের ‘গায়েবি সৃষ্ট’ অতিরিক্ত পরিচালক পদে কর্মরত। তবে এই পদে তিনি এমনিতেই আসেননি। এই অতিরিক্ত পরিচালক পদে আসতেও তাকে ধাপে ধাপে আশ্রয় নিতে হয়েছে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি, প্রতারণা আর জালিয়াতির। রুয়েটের ‘প্রভাবশালী’ এই কর্মকর্তার নিয়োগসহ পদোন্নতির প্রতিটি পদে পদে ভয়াবহ জালিয়াতি এবং একাডেমিক বিভিন্ন সনদপত্র, থিসিস জালিয়াতি নিতে নানা ‘কুটকৌশল’ কালবেলার দীর্ঘ অনুসন্ধানে ওঠে এসেছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১০ সালের ৫ অক্টোবর প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোকে সহকারী রেজিস্ট্রার (সপ্তম গ্রেড) পদের জন্য ২৬ অক্টোবর আবেদন করেন রনি। রুয়েটের চাকরির নীতিমালায় এই পদের ন্যূনতম যোগ্যতা সরকারি/আধাসরকারি কিংবা স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে প্রশাসনিক/একাডেমিক/পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা অত্যাবশ্যক বলে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু তিনি সহকারী রেজিস্ট্রার পদে চাকরিতে প্রবেশের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চাপে ফেলে ওই সময় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত শিথিল করে যে কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে (সরকারি/আধাসরকারি কিংবা স্বায়ত্বশাসিত উল্লেখ ছিল না) প্রশাসনিক কাজে ৫ বছরের অভিজ্ঞতার বিষয়টি উল্লেখ করিয়ে চাকরিতে আবেদন করেন। এই সুযোগে তিনি চাকরির আবেদন ফরমে ‘এস.এম. এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড’ নামে ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের (বেসরকারি) লিয়াজোঁ অফিসার হিসেবে ৬ বছর ৫ মাস ১১ দিনের (২০০৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০০৯ সালের ১৩ জুলাই) অভিজ্ঞতা উল্লেখ করেন। অথচ বিধিমালা অনুযায়ী, এস.এম. এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড একটি ঠিকাদারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হওয়ায় ওই পদে চাকরির জন্য রনির আবেদন করার যোগ্যতাই ছিল না। কিন্তু তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে ‘লিয়াজোঁ’ ও প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করে অবৈধভাবে তিনি বাগিয়ে নিয়েছেন সপ্তম গ্রেডের এই চাকরি। শুধু তাই নয়; ৬ বছর ৫ মাস ১১ দিনের ‘লিয়াজোঁ অফিসার’ পদে যে সনদ দেখিয়ে তিনি সহকারী রেজিস্ট্রার পদে চাকরিতে ঢুকেছেন ওই সময়ের মধ্যে তার (রনি) আরও তিনটি প্রতিষ্ঠানে (আর.এম সলিউশন, আব্দুর রহিম অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস এবং রেডিয়েন্ট পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং) কাজ করার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলেছে। অবৈধভাবে চাকরি নিয়েই থেমে থাকেননি রুয়েটের এই ‘অবৈধ’ কর্মকর্তা। ২০১৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোকে তিনি উপ-পরিচালক (গবেষণা ও সম্প্রসারণ) পদে আবেদন করেন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও রুয়েটের চাকরি নীতিমালা অনুযায়ী, এই পদে ন্যূনতম যোগ্যতা চাওয়া হয়েছিল গবেষণা সম্প্রসারণ/ প্রশাসনিক কাজে সরকারি/ আধাসরকারি কিংবা স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে কমপক্ষে ১০ বছরের অভিজ্ঞতা। এর মধ্যে সহকারী পরিচালক (গবেষণা ও সম্প্রসারণ) বা সমমানের পদে কমপক্ষে ৫ বছরের অভিজ্ঞতার বিষয়টি উল্লেখ ছিল। অথচ এই পদের জন্য আবেদনপত্রে তিনি সরকারি/ আধাসরকারি/ স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে রুয়েটে সহকারী রেজিস্ট্রার পদে চাকরিরত ৪ বছর ৮ মাসের (৫ বছর হয়নি) অভিজ্ঞতা দেখিয়েছেন। আর এই পদে নিয়োগের জন্য সরকারি/ আধাসরকারি/ স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে কমপক্ষে ১০ বছরের অভিজ্ঞতার শর্ত পূরণে তিনি আবারও পুলিশ ভেরিফিকেশন ব্যতিত দ্বিতীয় নিয়োগপ্রাপ্তিতেও কথিত সেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের (এস.এম. এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড) ভুয়া সনদটিই ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়টির ৮০তম সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ২০১৭ সালের ২৯ এপ্রিল তিনি উপ-পরিচালক (গবেষণা ও সম্প্রসারণ) পদে ‘অবৈধভাবে’ নিয়োগ পান। এখানেই থেমে থাকেনি ‘অবৈধ’ এই কর্মকর্তার অনৈতিক পদোন্নতির লালসা। ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জরি কমিশনের (ইউজিসি) পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ জামিনুর রহমান স্বাক্ষতি এক চিঠিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে চতুর্থ গ্রেডভুক্ত পদ হিসেবে অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার/সমমানের পদ সৃষ্টি প্রসঙ্গে একটি চিঠি ইস্যু হয়। চিঠিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শুধু রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অর্থ ও হিসাব এবং লাইব্রেরি- এই চার দপ্তরে চতুর্থ গ্রেডভুক্ত পদ থাকবে। সেখানে আরও বলা হয়েছে, জাতীয় বেতনস্কেল-২০১৫-তে বর্ণিত গ্রেড-৪ এর পূর্ণ বেতন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ন্যূনতম চাকরির যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা কোনোক্রমেই শিলিথযোগ্য নয়। এ ছাড়া চতুর্থ গ্রেডভুক্ত উল্লেখিত পদে জনবল সর্বদা উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সরাসরি নিয়োগ দিতে হবে; পদোন্নতি/আপগ্রেডেশন/পর্যায়োন্নয়ন দেওয়া যাবে না। কিন্তু এই কর্মকর্তা প্রশাসনকে জিম্মি করে বিশ্ববিদ্যালয়টির গবেষণা ও সম্প্রসারণ দপ্তরে উন্মুক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর চতুর্থ গ্রেডভুক্ত অতিরিক্ত পরিচালক (গবেষণা ও সম্প্রসারণ) পদে আপগ্রেডেশন/পর্যায়োন্নয়ন পান। এ ছাড়া চাকরির নীতিমালা অনুযায়ী, এই পদের জন্য সরকারি/আধাসরকারি কিংবা স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে কমপক্ষে ১৩ বছরের অভিজ্ঞতার বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও মাত্র ১০ বছরের অভিজ্ঞাতেই তিনি অতিরিক্ত পরিচালক বনে যান। শুধু তাই নয়; রুয়েটের অর্গানোগ্রামে গবেষণা ও সম্প্রসারণ দপ্তরে অতিরিক্ত পরিচালকের কোনো পদের অস্তিত্ব নেই। অথচ তিনি আবারও তৎকালীন প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করে ‘অস্তিত্ববিহীন’ এই পদেই বর্তমানে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এত গেল রুয়েটের এই কর্মকর্তার চাকরিপ্রাপ্তি ও পদোন্নতির অনিয়ম-জালিয়াতির খতিয়ান। নিজের একাডেমিক কাজেও তিনি আশ্রয় নিয়েছেন নানা অনিয়ম-জালিয়াতির। ২০১১ সালে রনি যখন সহকারী রেজিস্ট্রার পদে চাকরিতে প্রবেশ করেন তখন তার চাকরির আবেদনে রুয়েটে এম.এসসি এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ প্রোগ্রামে অধ্যয়নরত থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেননি। অথচ চাকরি পাওয়ার পর তিনি ২০১১ সালের ১২ জুলাই এমএসসি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ারিং কোর্স সম্পন্ন করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর আবেদন করেন। রুয়েটে চাকরিরত অবস্থায় এমএসসি কোর্স সম্পন্নের জন্য আবেদন করলেও একই সময়ে দুটি প্রতিষ্ঠানে (রুয়েটে এম.এসসি ও রাবিতে এমবিএ) অধ্যয়নরত থাকায় রাবিতে এমবিএ কোর্স করার বিষয়টি গোপন রাখেন রনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবহিত না করেই শেষাবধি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে এমবিএ পরীক্ষার সনদপত্র পেয়ে যান তিনি। এমবিএ করার বিষয়টি গোপন রাখলেও শেষ পর্যন্ত এমবিএ’র সদনপত্র চাকরির ব্যক্তিগত নথিতে নথিভুক্ত করতে ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই তৎকালীন ভিসি বরাবর তিনি আবেদন করেন। এভাবে রনি একদিকে রুয়েটের চাকরির বিধি ও নীতিমালা লঙ্ঘন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবহিত না করেই অন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছিলেন; অপরদিকে চাকরিরত অবস্থায় একই সময়ে দুই প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত থাকায় তিনি শিক্ষা সনদের বিধিও চরমভাবে লঙ্ঘন করেন। এতেই থেমে থাকেনি রনি। এই কর্মকর্তা বিশ্ববিদ্যালয়ে এম.এসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রির (রোল: ০৮০৪২০২০০১) অংশ হিসেবে যে থিসিস করেছেন সেখানেও করেছেন ভয়াবহ জালিয়াতি। তিনি ০৭২০৯৯ রোল নম্বরধারী মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও ০৭২০৬২ রোল নম্বরধারী কামরুন নাহার নামের বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের দুই শিক্ষার্থীর যৌথ থিসিস পেপার নকল করে নিজের পেপারস জমা দিয়েছেন বলেও বিস্তর অভিযোগ পাওয়া গেছে। জালিয়াতির বিষয়ে অভিযুক্ত রুয়েট কর্মকর্তা মুফতি মাহমুদ রনি কালবেলাকে বলেন, ‘নিয়োগের সকল শর্ত পূরণ করেই ২০১১ সালে সহকারী রেজিস্ট্রার পদে প্রশাসন আমাকে চাকরি দেয়। পরবর্তী নিয়োগ (উপ-পরিচালক) ও পদোন্নতিও ( অতিরিক্ত পরিচালক) নিয়োগের শর্ত, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাকে দিয়েছে। আমার যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা না থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কেন নিয়োগ ও পদোন্নতি দিল? চাকরিরত অবস্থায় একইসঙ্গে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে কীভাবে অধ্যয়নরত ছিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রুয়েটে এমএসসি করার জন্য অনুমতি নিয়েছিলাম। কিন্তু রাবিতে এমবিএ সান্ধ্যকালীন কোর্স করেছি। কিন্তু সেখানে অনুমতি নেওয়া হয়নি।’ থিসিস জালিয়াতির বিষয়ে মুফতি মাহমুদ রনি বলেন, ‘ওই দুই শিক্ষার্থী বিএসসির থিসিস করেছে। আর আমি করেছি এমএসসির থিসিস। কিন্তু আমাদের একই শিক্ষক তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন। থিসিস করার সময় তাদেরকে আমার সঙ্গে কাজ করতে বলে। সঙ্গত কারণে থিসিসের কিছু বিষয় একই ছিল। এটি কোনো জালিয়াতি বা কপি করার ঘটনা নয়।’ জানতে চাইলে রুয়েটের তৎকালীন ভাইস-চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ড. সিরাজুল করিম চৌধুরী কালবেলাকে বলেন, ‘আজ থেকে ১৩ বছর আগের কথা। ওই সময় নিয়োগে কী শর্ত চাওয়া হয়েছিল সেগুলো তো মনে নেই। আমি ভিসি ছিলাম। এ ছাড়া নিয়োগ বোর্ডের ৬-৮ সদস্য ছিল। চাকরি প্রার্থীকে পরীক্ষা-ভাইভা ফেস করেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তার বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট ছিল কি না, আমি মনে করতে পারছি না। অফিসের ফাইল ও রেকর্ডপত্র দেখলে বোঝা যাবে আসলে কী হয়েছে না হয়েছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নিয়োগে চাপ তো ছিলই, স্থানীয় নেতারা নিয়োগের সময় অনবরত ফোন করতেই থাকে। এটি সব নিয়োগের ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে।’ ২০১৬ এই কর্মকর্তা যখন উপ-পরিচালক পদে নিয়োগ পান তখন রুয়েটের রেজিস্ট্রার ছিলেন অধ্যাপক ড. মো. মোশাররফ হোসেন। কীভাবে যোগ্যতা ছাড়াই এই পদে চাকরি পেলেন তা জানতে তিনি বলেন, ‘আসলে অনেক আগের বিষয়। ফাইল না দেখে তো বলতে পারব না।’ বিস্তারিত জানতে তিনি বর্তমান রেজিস্ট্রারের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। যখন তিনি অতিরিক্ত পরিচালক (গবেষণা ও সম্প্রসারণ) পদে নিয়োগ পান তখন রুয়েটের ভিসি ও রেজিস্ট্রার ছিলেন অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম সেখ ও অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেন। যোগ্যতা না থাকা এবং রুয়েটের অর্গানোগ্রামে এই পদের কোনো অস্তিত্ব না থাকার পরও তিনি কীভাবে উক্ত পদে নিয়োগ পেলেন তা জানতে ভিসি ও রেজিস্ট্রারকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তারা রিসিভ করেননি। রুয়েটের বর্তমান রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) আরিফ হোসেন চৌধুরী কালবেলাকে বলেন, ‘তৎকালীন প্রশাসন তাকে কোন ক্রাইটেরিয়ার ভিত্তিতে চাকরি দিয়েছেন তা আমার জানার কথা নয়। ফাইল দেখতে হবে। আর ফাইলপত্র ঘেটে দেখা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। যদি নিয়োগ কিংবা পদোন্নতির ক্ষেত্রে এই কর্মকর্তা জালিয়াতি করেই থাকে তাহলে সেই বিষয়ে সিন্ডিকেট কিংবা ফাইলে নোট দিতে হবে।’ এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘চাকরিরত অবস্থায় অন্য কোথাও অধ্যয়নরত থাকলে অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে। আর যদি সে থিসিস জালিয়াতি করে থাকেন তাহলে সে ফৌজদারি অপরাধ করেছে।’ রেজিস্ট্রার আরও বলেন, ‘কারও থিসিসের সঙ্গে যদি ৩০ শতাংশের মিল পাওয়া যায় তাহলে সেটি অপরাধ এবং বাতিলযোগ্য।’
০৪ মে, ২০২৪
জালিয়াতি ধরা পড়ার পরও বুক ফুলিয়ে ঘুরছেন ওসমান
নাম ওসমান আলী। চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার কেওচিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তিনি। এ ছাড়াও তিনি উত্তর সাতকানিয়া সাংগঠনিক উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। এলাকায় ভীষণ দাপট তার। হেন কোনো কাজ নেই যা তিনি পারেন না। সম্প্রতি বিএস সংশোধনের একটি মামলায় আলোচনায় আসেন ওসমান চেয়ারম্যান। বাদীর অজান্তে স্বাক্ষর জালিয়াতি করে আরেকজনকে ভুয়া বাদী সাজিয়ে প্রত্যাহার করা হয় মামলা। যার নেপথ্যে রয়েছেন ওসমান চেয়ারম্যান। বিষয়টি ধরা পড়লে খোদ আদালতের নাজির বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। কিন্তু এরপরও ঠেকানো যায়নি প্রভাবশালী এ চেয়ারম্যানকে। এখনো বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ওসমান চেয়ারম্যান। স্বাক্ষর জালিয়াতির ঘটনায় গত ২৬ এপ্রিল কেওচিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওসমান আলী ও আজিজুল হকের বিরুদ্ধে সাতকানিয়া থানায় মামলা করেন সাতকানিয়া সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের নাজির মোহাম্মদ আবদুল হান্নান। বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসেন জুনায়েদের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন ওসমান আলী। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী শুভ্র প্রকাশ দে ও চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত জেলা কোর্ট ইন্সপেক্টর মাহবুব মিল্কি কালবেলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এদিকে কোন অদৃশ্য শক্তিতে বীরদর্পে এখনো এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন ওসমান! খোদ আদালত বাদী হয়ে মামলা করার পরেও হাওয়াতে জামিন নিয়েছে কীভাবে– তা নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা কালবেলাকে বলেন, জায়গা-জমি দখল থেকে শুরু করে এমন কোনো কাজ নেই যা তিনি পারেন না। ইউপি চেয়ারম্যান ওসমান আলী প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায় না। আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের কেঁওচিয়া চেয়ারম্যান পাড়া এলাকার বাসিন্দা নুরুল আমিন নামে এক ব্যক্তিসহ ১৯ জন ব্যক্তি তাদের জায়গার ভুল বিএস সংশোধনের জন্য সাতকানিয়া যুগ্ম জেলা জজ আদালতে একটি মামলা করেন। ২০২১ সালে মামলাটি সাতকানিয়া সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে বদলি করা হয়। এরপর ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে (এলএসটি) এটি তালিকাভুক্ত হয়। এ মামলার বিষয়টি ২০২৪ সালের ৩০ জানুয়ারি ৩০ ধারার জন্য তদবিরের দিন ধার্য ছিল। পরে ৩১ জানুয়ারি মামলাটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। অথচ বাদী পক্ষের আইনজীবীই বিষয়টি জানতেন না। মামলার বাদী মো. বেলালসহ রহিম বকসু ও মোজাফ্ফর আহমদ নামে দুইজন মৃত ব্যক্তি এবং এক প্রবাসীর স্বাক্ষর জালিয়াতি করে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়েছিল। প্রকৃত বাদীরা বিষয়টি জেনে ১১ মার্চ আগের আদেশ এবং মামলার নম্বর বহাল রাখতে আদালতে আবেদন করেন। বিষয়টি তদন্ত করে আদালত বাদী-বিবাদীর উপস্থিতিতে ২৫ এপ্রিল শুনানির দিন ধার্য করে। এদিন সাতকানিয়া সিনিয়র সহকারী জজ শরিফুল হকের আদালতে জবানবন্দি দেন আজিজুল হক (৫৬)। সাক্ষর জালিয়াতির সঙ্গে দুজনের জড়িত থাকার প্রমাণ পায় আদালত। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাতকানিয়া থানার করা মামলা নথি সূত্রে জানা যায়, বিএস সংশোধনের মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য গত ৪ এপ্রিল আদালতে আবেদন করা হয়। ওই আবেদনে প্রকৃত বাদী মো. বেলালের স্বাক্ষর ছিল না। এজলাস চলাকালে বিষয়টি বুঝতে পারে আদালত। এ বিষয়ে আইনজীবীর সহকারী (ক্লার্ক) নেজাম উদ্দীন জানান, আজিজুল হক নামে এক ব্যক্তির অনুরোধেই আইনজীবীর মাধ্যমে তিনি আবেদনটি ফাইল করেন। ২৫ এপ্রিল সেই আজিজুল হককে আদালতে হাজির করানো হয়। মামলার প্রকৃত বাদী মো. বেলালও এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বেলাল জবানবন্দিতে জানান, মামলা প্রত্যাহারের আবেদনে করা স্বাক্ষরগুলো তার নয়। অপরদিকে, জবানবন্দিতে অভিযুক্ত আজিজুল হক কেওচিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ওসমান আলীর নির্দেশেই মামলা প্রত্যাহারের আবেদন ও একটি আপসনামা আদালতে জমা দেন বলে স্বীকার করেন। এদিকে আদালত বাদীর আর্জি, জাতীয় পরিচয়পত্র, মামলা প্রত্যাহারের আবেদন ও জবানবন্দিতে দেওয়া স্বাক্ষরগুলো তুলনা করেন। এতে, স্বাক্ষর জালিয়াতি ও প্রতারণায় আজিজুল হক ও ওসমান আলীর জড়িত থাকার প্রমাণ পান আদালত। পরে এজলাসে থাকা অবস্থায় আজিজকে আটক করা হয়। চট্টগ্রাম আদালতের বিজ্ঞ আইনজীবীরা বলেন, ভুয়া ব্যক্তিকে বাদী সাজিয়ে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করা- এ যেন বিজ্ঞ আদালতের সঙ্গেই আয়নাবাজি করা যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আসামিপক্ষের আইনজীবী বেলাল কালবেলাকে বলেন, বৃহস্পতিবার (২ মে) আত্মসমর্পণপূর্বক জামিনের প্রার্থনা করলে আদালত তা মঞ্জুর করে মামলার দুই নম্বর আসামি ওসমান আলীকে জামিন দেন।
০৩ মে, ২০২৪
রাজশাহীতে জালিয়াতি করে সরকারি খাসজমি বিক্রির পাঁয়তারা
রাজশাহীতে একটি সমবায় সমিতির নামে লিজ নেওয়া সরকারি একটি খাসজমি রাতারাতি দুই কোটি টাকায় বিক্রির পাঁয়তারা চলছে। এ জন্য রাজশাহীর ধনাঢ্য দুই ব্যক্তির সঙ্গে হস্তান্তর নামা একটি দলিলও করা হয়েছে। ভয়াবহ এই অনিয়মের ব্যাপারে সমিতিরই এক সদস্য বাদী হয়ে মামলাও করেছেন। জেলা প্রশাসন বলছে, লিজ নেওয়া খাসজমি বিক্রির কোনো সুযোগ নেই। ওই সমিতির নাম রাজশাহী রিফিউজি কো-অপারেটিভ স’মিল লিমিটেড। এটি ভারত থেকে রাজশাহীতে আসা মুহাজির বা রিফিউজি কাঠ মিল ব্যবসায়ীদের সংগঠন। ১৯৫২ সালে সমিতিটি নিবন্ধন পায়। এর নিবন্ধন নম্বর-২২। ১৯৬৬ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকারের জেলা প্রশাসক রাজশাহী নগরীর গোরহাঙ্গা এলাকায় ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত সাড়ে ১৪ কাঠা খাস জমি সমিতিটিকে ইজারা দেয়। এখনও ওই ইজারা চলমান। আইন অনুযায়ী, লিজ নেওয়া খাসজমি বিক্রি কিংবা হস্তান্তরের কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু গত ৩ মার্চ এই সম্পত্তি বিক্রির জন্য নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে হস্তান্তরনামা দলিল করা হয়েছে। তেলেসমাতি এই কারবারে দলিলের প্রথম পক্ষ হিসেবে সমিতির সভাপতি আবদুল জাব্বার আনসারী, সাধারণ সম্পাদক আসলাম পারভেজ, সদস্য আরিফ ইকবাল, মো. সরফরাজ ও জুলেখা খাতুন নুরীর নাম লেখা হয়েছে। আর ক্রেতা হিসেবে দ্বিতীয়পক্ষে আছেন নগরীর হেতেমখাঁ এলাকার ব্যবসায়ী আরিফুজ্জামান সরকার ও তার ভাই আশাফউজ্জামান সরকার। দলিলে উল্লেখ রয়েছে, দুই কোটি ৫ লাখ টাকায় এই জমিটি বিক্রি করা হচ্ছে। চুক্তির দিন দ্বিতীয় পক্ষ প্রথমপক্ষকে পাঁচ লাখ টাকা দিয়েছেন। এ ছাড়া এনআরবিসি ব্যাংকের রাজশাহী শাখার ৫৫০৫২২০ নম্বর চেকে গত ৩১ মার্চের তারিখে এক কোটির একটি চেক দেওয়া হয়। এ ছাড়া ৫৫০৫২২১ নম্বর চেকে আরও একটি এক কোটি টাকার চেক দেওয়া হলো। দ্বিতীয় চেকটি নগদায়ন করা যাবে আগামী ৩১ মে। সেদিন চেকে টাকা উঠানো না গেলে চুক্তি বাতিল বলে গণ্য হবে। রাজশাহী নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে এই হস্তান্তরনামা দলিলের নিবন্ধন নম্বর-০০০০১৮২১। নগরীর প্রাণকেন্দ্রের মহামূল্যবান এই জমি বিক্রির অপচেষ্টার বিষয়ে জানতে পেরে গত ৩ এপ্রিল সমিতির সহসভাপতি মো. সোবহান বাদী হয়ে রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে একটি মামলা করেছেন। এতে আরিফউজ্জামান সরকার, তার ভাই আশিক উজ্জামান সরকার, বিপ্লব সরকার এবং তাদের সহযোগী এমদাদুল হক বাবুকে আসামি করা হয়েছে। তারা অবৈধভাবে জমিটি দখলের চেষ্টা করছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার বাদী মো. সোবহান বলেন, ‘আমাদের বাপ-দাদার আমল থেকে এই জমির ইজারা চলে আসছে। এ জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রাজস্ব শাখায় নিয়মিত লিজের অর্থ জমা দিতে হয়। সরকারি এই জমি বিক্রির কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু সমিতির সভাপতি-সম্পাদকসহ পাঁচ সদস্য আর্থিকভাবে লাভবান হতে অবৈধভাবে জমিটি বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। এমদাদুল হক বাবু জমি কেনার জন্য টাকা দিচ্ছেন। তাই মামলায় তাকেও আসামি করা হয়েছে।’ এদিকে সমিতির পাঁচ সদস্যের সঙ্গে জমি কেনার জন্য হস্তান্তরনামা দলিল করার পর থেকেই আসামিরা জমিটি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন। জমিতে সমিতির পক্ষ থেকে বেশকিছু দোকানপাট করে ভাড়া দেওয়া আছে। ভাড়াটিয়ারা জানান, সম্প্রতি মামলার এই আসামিরা গিয়ে তাদের দোকান ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলেছেন। তারা দোকান ছাড়তে না চাইলে গালিগালাজ করা হয়। আসামিরা তাদের কাছে দাবি করেছেন, জমির মালিক এখন তারা। এ সময় সমিতির আরেক সদস্য মো. আলমগীর বাধা দিতে গেলে আসামিরা তাকে ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এ নিয়ে আলমগীর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। হস্তান্তরনামা দলিল করার কথা স্বীকার করলেও সবকিছু পড়ে দেখেননি বলে দাবি করেছেন স’মিল সমিতির সভাপতি আবদুল জাব্বার আনসারী। তিনি স্বীকার করেন, লিজ নেওয়া এই জমি বিক্রির ক্ষমতা তার নেই। এরপরও দলিল করার কারণ জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দেননি। খাস জমি কিনতে হস্তান্তরনামা দলিল করার বিষয়ে কথা বলতে আরিফুজ্জামান সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তার ভাই বিপ্লব সরকারকে কয়েক দফা ফোন করা হলেও ধরেননি। তাদের সহযোগী এমদাদুল হক বাবু বলেন, ‘এই জমির মূল মালিক আরিফুজ্জামান সরকারের প্রয়াত বাবা। যেভাবেই হোক এখন এটার দখলে আছে স’মিল সমিতি। তাই তাদের কাছ থেকে আপসে জমির দখল নিতে দুই কোটি টাকার চুক্তি করা হয়েছে। তবে সবশেষ ২০২৩ সালের ১ আগস্ট রাজশাহীর বড়কুঠি ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মেহেদী হাসানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত ৪৫৩৬ ও ৪৭১৯ নম্বর দাগের এই জমির শ্রেণি স’মিল। এটি বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ডেপুটি কমিশনার, রাজশাহী নামে প্রচলিত। দাগে মহাজেরিন সমবায় সমিতি লেখা আছে। লিজ দেওয়া এই জমি বিক্রির চেষ্টার বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আনিসুল ইসলাম বলেন, ‘লিজ নেওয়ার পর খাস জমি বিক্রি কিংবা হস্তান্তরের আইনগত কোনো সুযোগ নেই। আমি ঢাকায় প্রশিক্ষণে আছি। ফেরার পরে বিষয়টি খতিয়ে দেখব।’
২৯ এপ্রিল, ২০২৪
নির্বাচনী জালিয়াতি করেছেন ট্রাম্প
যৌন সম্পর্কের কথা গোপন রাখতে পর্নো তারকাকে ঘুষ দেওয়ার ঘটনা ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক ‘নির্ভেজাল নির্বাচনী জালিয়াতি’ ছিল বলে মন্তব্য করেছেন কৌঁসুলিরা। ঘুষ কেলেঙ্কারির ওই ঘটনায় সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার বিচারের শুনানিতে এ মন্তব্য করেন তারা। শুনানিতে কৌঁসুলিরা ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র করা ও যৌন কেলেঙ্কারি লুকানোর অভিযোগ এনেছেন। খবর সিএনএনের। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে করা ফৌজদারি মামলায় ১৫ এপ্রিল বিচারকাজ শুরু হয় নিউইয়র্কের আদালতে। সেদিন আদালতে হাজিরও হন তিনি। তিনিই প্রথম কোনো সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যিনি ফৌজদারি মামলায় বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন। নিউইয়র্কের আদালতে শুরু হওয়া ঐতিহাসিক এ মামলার বিচারে গত সোমবার জুরিবোর্ডের সামনে প্রাথমিক আইনি যুক্তিতর্কে (ওপেনিং স্টেটমেন্ট) একজন আইনজীবী বলেন, ‘এটি ছিল নির্বাচনী জালিয়াতি; একেবারে নির্ভেজাল ও সোজাসাপটা।’
২৪ এপ্রিল, ২০২৪
কারিগরি বোর্ডের চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার হতে পারেন : ডিবির হারুন
দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে হাজির হন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদ থেকে সদ্য অব্যাহতি পাওয়া আলী আকবর। তারপরই প্রশ্ন ওঠে বোর্ডের সার্টিফিকেট জালিয়াতির সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা রয়েছে কিনা। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) কারিগরির চেয়ারম্যান ডিবি কার্যালয় থেকে বের হওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ। তিনি বলেন, সার্টিফিকেট জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত মনে হলে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদ থেকে সদ্য অব্যাহতি পাওয়া আলী আকবরকেও গ্রেপ্তার করা হবে। ডিবির হারুন বলেন, চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তিনি জানিয়েছেন, বোর্ডে পর্যাপ্ত পরিমাণ লোক ছিল না। তাই নজরদারি রাখতে পারেননি। তবে তিনি এই জালিয়াতির দায় কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা অনেক প্রশ্ন করেছি। তিনি দু-এক দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা দেবেন। হারুন অর রশিদ আরও বলেন, আজকের মতো ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চেয়ারম্যানকে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তিনি এখনো আমাদের নজরদারিতে আছেন। বুয়েটের একটি প্রতিনিধি দলকে নিয়ে আবারও তার সঙ্গে বসব। আমাদের যদি মনে হয় তিনি জড়িত তবে তাকেও গ্রেপ্তার করা হবে। সার্টিফিকেট জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকায় বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচজন আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন বলেও জানান ডিবির হারুন। যারা এই সার্টিফিকেটগুলো কিনেছেন তারাও জড়িত। তাদেরও তালিকা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডিবির এই কর্মকর্তা।
২৩ এপ্রিল, ২০২৪
জালিয়াতি করে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অবসরপ্রাপ্ত মেজর
শরীয়তপুরে মনিরুজ্জামান তালুকদার নামে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তালিকা থেকে তার নাম বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে অবসরপ্রাপ্ত ওই সেনা কর্মকর্তা দাবি করেন, একটি মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। মনিরুজ্জামান শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার পুটিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমান তালুকদারের ছেলে। বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম তালুকদার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করায় বিষয়টি আমলে নেয় মন্ত্রণালয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মনিরুজ্জামান সেনাবাহিনীর জি এল মেজর পদে থাকা অবস্থায় চাকরি থেকে অবসর নেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ছাত্র ছিলেন। তার দাবি, যুদ্ধের সময় তিনি শরীয়তপুরের আক্কাছ বাহিনীর হয়ে যুদ্ধ করেছেন। আক্কাছ বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য জানান, মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ইপিআর, সেনা ও নৌবাহিনীর বাঙালি সদস্যদের নিয়ে আক্কাছ বাহিনী গঠিত হয়। এ বাহিনীতে কোনো বেসামরিক লোক ছিল না। মুক্তিযুদ্ধের সময় মনিরুজ্জামান কোনো বাহিনীতে ছিলেন না। ছাত্রাবস্থায় থেকে আক্কাছ বাহিনীতে যুদ্ধ করার কোনো সুযোগ ছিল না। ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সভাপতিত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা প্রদান কমিটির মিটিংয়েও মনিরুজ্জামানের উপস্থিতিতে বেশ কয়েকবারই মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার স্বীকৃতি নিয়ে আলোচনা হয়। এ ছাড়া তৎকালীন থানা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আকবর মাস্টারের নেতৃত্বে এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা একজোট হয়ে বিরোধিতা করায় ভাতার তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে আক্কাছ বাহিনীর ভেদরগঞ্জ উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা মো. হোসেন মোড়ল কালবেলাকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের সঙ্গে একজনও বেসামরিক লোক ছিল না। কেউ যদি দাবি করে সে আক্কাছ বাহিনীর হয়ে যুদ্ধ করেছে, তবে সে মিথ্যা বলছে। এ বিষয়ে ভেদরগঞ্জ উপজেলার ছয়গাঁও ইউনিয়নের ছয়গাঁও গ্রামের যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া জানান, মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমি আক্কাছ বাহিনীতে ছিলাম। এই বাহিনীতে কোনো বেসামরিক লোক ছিল না। আক্কাছ বাহিনীর আরেক সদস্য নড়িয়া উপজেলার শালদ গ্রামের মো. হাফিজুর রহমান রাঢ়ী বলেন, আমি ও আমার ভাই শহিদ আব্দুল মান্নান রাঢ়ী এই বাহিনীর হয়ে যুদ্ধ করেছি। যুদ্ধে আমার ভাই শহীদ হয়েছে। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, এই বাহিনীতে কোনো বেসামরিক লোক ছিল না। ভেদরগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ ভাসানী কালবেলাকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি গেরিলা বাহিনীর হয়ে যুদ্ধ করেছি। সে সময় আক্কাছ বাহিনীকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। আক্কাছ বাহিনীতে শুধু সামরিক বাহিনীর সদস্যরাই ছিল। এখন কেউ যদি এসে বলে আমি আক্কাছ বাহিনীতে ছিলাম, তবে তা শতভাগ ভুয়া। জয়নাল সুবেদার মারা যাওয়ার পর তার স্বাক্ষরিত একটি কাগজ নিয়ে এসে মনিরুজ্জামান দাবি করেন তিনি মুক্তিযোদ্ধা। আমার মতে, ওই কাগজটিও ভুয়া। কারণ তিনি কখনো মূল কাগজ দেখাতে পারেননি। বরাবরই কপি দেখিয়েছেন। সার্বিক পর্যালোচনা করে বুঝতে পারছি যে, মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার হীন উদ্দেশ্যে জাল কাগজ তৈরি করে তা ব্যবহার করেছেন তিনি। ২০০৫ সালের গেজেটে মনিরুজ্জামানের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়। এ ঘটনায় হতবাক হন ভেদরগঞ্জ উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা। তাদের সমালোচনার মুখে তৎকালীন ইউএনও নারায়ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মনিরুজ্জামানের ছোট ভাই মো. নাজিম উদ্দীন তালুকদারের কাছে এ বিষয়ে জানতে চান। তখন তিনি জানান, তার ভাই মুক্তিযোদ্ধা নন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার ভাই ছাত্র ছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার বেশ কয়েক বছর পর তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নায়েব সুবেদার পদে চাকরিতে যোগদান করেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মেজর মনিরুজ্জামান তালুকদার কালবেলাকে বলেন, আমি আক্কাছ বাহিনীতে যুদ্ধ করেছি। কিন্তু একটি মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা রটাচ্ছে। ভেদরগঞ্জের ইউএনও রাজিবুল ইসলাম বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম তালুকদারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে গত বছরের ১৯ অক্টোবর একটি চিঠি পাই। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত মেজর মনিরুজ্জামান তালুকদারের গেজেট বাতিলের জন্য যে চিঠি এসেছে, তাতে ২১ জুন ২০১৭ সালের জারিকৃত প্রজ্ঞাপন সঠিকভাবে মানা হয়নি। তাই এ নিয়ে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছি। কারণ, প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় কারও অন্তর্ভুক্তি নিয়ে কোনো প্রশ্ন বা বিতর্ক সৃষ্টি হলে তা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট বাহিনীর কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে নিষ্পত্তি করতে হবে।
২১ এপ্রিল, ২০২৪
চট্টগ্রামে রেলের টিকিটে ডিজিটাল জালিয়াতি
আব্দুল আজিজ। পেশায় বেসরকারি চাকরিজীবী। তার ঘরবাড়ি চট্টগ্রাম নগরীতে। আত্মীয়স্বজন সবাই এই নগরীতেই থাকেন। ট্রেনে চড়ে কখনো শহরের বাইরে যাননি তিনি। ট্রেনে না চড়লেও গত এক বছরে তার মোবাইল নম্বরের বিপরীতে ট্রেনের টিকিট কাটা হয়েছে ১৮৪ বার।
৩০ মার্চ, ২০২৪
প্রাথমিকে নিয়োগ পরীক্ষার তৃতীয় ধাপেও জালিয়াতি
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে প্রথম দুই ধাপে প্রশ্নফাঁস ও ডিজিটাল ডিভাইস জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছিল। সেজন্য তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা আয়োজনে সতর্ক হয়েছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ডিজিটাল ডিভাইস জালিয়াতি রোধে পরীক্ষামূলক (পাইলটিং) হিসেবে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) উদ্ভাবিত ডিভাইস পাঁচটি কেন্দ্রে ব্যবহার করা হয়েছিল; কিন্তু এই ধাপেও সারা দেশে সুষ্ঠু পরিবেশে পরীক্ষা আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পরীক্ষার্থী বোন ও তার ভাই এবং কক্সবাজার সিটি কলেজকেন্দ্র থেকে দুজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে মোবাইল ও ইলেকট্রনিক ডিভাইস। ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি জানিয়েছেন, জেলার পৌর ডিগ্রি কলেজকেন্দ্রে গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হয়। এ সময় কেন্দ্রের ১০১নং কক্ষে পরীক্ষার্থী রিনা আক্তার পরীক্ষা শুরুর পরও প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে উত্তরপত্রে কোনো কিছু না লিখে বসে থাকেন। কেন্দ্রে ডিউটিরত কেন্দ্র পরিদর্শকের সন্দেহ হলে তার দেহ তল্লাশি করে বিশেষ কায়দায় কানের ভেতরে লুকিয়ে রাখা ছোট একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি তিনি কলেজের অধ্যক্ষকে জানালে অধ্যক্ষ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সেলিম শেখকে খবর দেন। পরবর্তী সময়ে ইউএনও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আটক পরীক্ষার্থী রিনা আক্তার জেলার বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের টুকচানপুর এলাকার আব্দুল মালেকের মেয়ে। তার দেওয়া তথ্যে তার ভাই ভাই আব্দুল জলিলকেও আটক করা হয়। ইউএনও মোহাম্মদ সেলিম শেখ জানান, এটি একটি বিশাল চক্র। ওই পরীক্ষার্থী তার ভাইয়ের মাধ্যমে ডিভাইসটি সংগ্রহ করে। পরে তার ভাইকেও আটক করা হয়। এ ঘটনায় একটি মামলা করা হয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে জড়িত সবাইকে আটক করা হবে। কক্সবাজার প্রতিনিধি জানিয়েছেন, পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ও ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে পরীক্ষা দিতে এসে কক্সবাজার সিটি কলেজকেন্দ্র থেকে আটক হয়েছেন দুই পরীক্ষার্থী। তারা হলেন সদর উপজেলার খুরুশকুল তেতৈয়া এলাকার নুরুল হকের ছেলে বশির আহমেদ এবং চকরিয়া চিরিঙ্গা ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শামসুল আলমের ছেলে তোহিদুল ইসলাম। জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদের আটক করা হয় বলে জানিয়েছেন কেন্দ্র সচিব কলেজ অধ্যক্ষ ক্যথিং অং। কক্সবাজার মডেল থানার ওসি মো. রাকিবুজ্জামান বলেন, আটক দুজন আমাদের হেফাজতে রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলার প্রস্তুতি চলছে।
৩০ মার্চ, ২০২৪
আরও
X