মানুষের বিরোধিতা করতে গিয়েই মাছের এই পরিণতি!
আমাদের কাছে অত্যন্ত পরিচিত একটি প্রাণী মাছ। পৃথিবীর অন্যসব প্রাণীর জবান থাকলেও মাছের জবান নেই এবং এরা পানিতেই বসবাস করে। কেন মাছের জবান কেড়ে নেওয়া হলো এবং তাদের মৃত অবস্থায়ও খাওয়া হালাল করা হলো? এর নেপথ্যে রয়েছে একটি চমকপদ ঘটনা।  একবার হজরত আলী (রা.)কে এক ব্যক্তি প্রশ্ন করলেন- হে আলী, পৃথিবীর অন্যসব প্রাণীর জবান থাকলে মাছের জবান নেই কেন এবং মাছ কেন পানিতে বসবাস করে?   জবাবে হজরত আলী (রা.) বলেন- মাছেরও জবান ছিল এবং তারা কথা বলতে পারত। কিন্তু তারা নিজেদের ওপর জুলুম করার কারণে মহান আল্লাহ তাআলা তাদের জবান কেড়ে নিয়েছেন।  ওই ব্যক্তি আবারও প্রশ্ন করলেন হে আলী, মাছেরা নিজেদের ওপর কী জুলুম করেছিল? তখন হজরত আলী (রা.) পুরো ঘটনা বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ইবলিস আদম (আ.) সিজদা দিতে অস্বীকার করায় তাকে আল্লাহ তাআলা বিতাড়িত করেন এবং দুনিয়াতে পাঠিয়ে দেন। ইবলিশ দুনিয়াতে আসার পর সব ধরনের প্রাণীদের কুমন্ত্রণা দিতে লাগল। সবার প্রথমে সে কুমন্ত্রণা দেয় মাছকে।  ইবলিশ মাছকে বলে- সাবধান। মানুষ এসে পৃথিবীতে জুলুম অত্যাচার করে ঘুরে বেড়াবে। ওই সময় মাছেরা জল ও স্থলে চলাচল করতে পারত এবং কথাও বলতে পারত। ইবলিশ মাছদের বলল, মানুষ পৃথিবীতে এসে তোমাদের জীবিত অবস্থায় টুকরো টুকরো করে কেটে খাবে। মাছেরা ইবলিশের এই কথা শুনে সমুদ্রের অন্যান্য প্রাণীদের মানুষের বিরুদ্ধে এসব কথা বলতে এবং সবাইকে একত্রিত করতে লাগল। তখন মহান আল্লাহ তাআলা মাছের কথা বলার ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার পাশাপাশি স্থলে চলাচলও বন্ধ করে দেন। এরপর থেকে মাছ আর কথা বলতে পারে না এবং শুধু পানিতে বসবাস করে। শুধু তাই নয়, মাছের জন্য মহান আল্লাহ নতুন একটি বিধান জারি করেন। তা হলো- মাছ জবেহ করে খাওয়ার প্রয়োজন নেই। তাদের জীবিত কিংবা মৃত উভয় অবস্থায় কাটা যাবে এবং খাওয়া যাবে। বস্তুত মাছ ছাড়া অন্য কোনো প্রাণী জবেহ করার আগে মৃত অবস্থায় খাওয়া জায়েজ নেই।   এ জন্য অন্য সব হালাল প্রাণীকে আল্লাহর নাম নিয়ে জবেহ করার বিধান থাললেও মাছের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। মাছদের বলা হয়েছে- তোমাদের যখন পানি থেকে উঠানো হবে। তখন তোমরা ছটফট করতে করতে মারা যাবে। এ জন্য মাছদের যখন পানি থেকে উঠানো হয় তখন তাদের দেহের সমস্ত রক্ত তাদের গলার কাছে থাকা একটি বিশেষ গ্রন্থিতে এসে জমা হয় এবং মাছের শরীরের মাংস দূষিত রক্ত থেকে পবিত্র হয়ে যায়।  স্থলভূমিতে পশুপালনের জন্য মানুষকে অনেক কষ্ট করতে হয়। কিন্তু সাগরে আল্লাহ তাআলা বিভিন্ন জাতের মাছের ব্যবস্থা করেছেন। মাছ খাদ্য হিসেবে যেমন উৎকৃষ্ট, তেমনি সহজলভ্য। মহান আল্লাহ তার কুদরতের নিদর্শন বর্ণনা করতে গিয়ে সাগর ও মাছের প্রসঙ্গ টেনেছেন। তিনি ইরশাদ করেন, ‘দুই সাগর এক ধরনের নয়। একটির পানি সুমিষ্ট ও সুপেয়। অন্যটির পানি লোনা। প্রত্যেকটি থেকে তোমরা তাজা গোশত আহার করো।’ সূরা ফাতিহের উল্লিখিত আয়াতে ‘তাজা মাছ’ বোঝাতে ‘টাটকা গোশত’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। এতে ইঙ্গিত করা হয়েছে, অন্যান্য হালাল জীবের মতো মাছকে জবাই করা জরুরি নয়। এ যেন আপনাআপনি তৈরি গোশত! এ ছাড়া হাদিসে মৃত মাছ খাওয়াও বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। মানব জীবনে মাছের গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে ইহরাম অবস্থাতেও মাছ শিকারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
১৫ ঘণ্টা আগে

জমজম কূপের ভেতরের রহস্য অবাক করল ডুবুরিদের
দুনিয়ার বুকে আল্লাহ তায়ালার অনন্য কুদরত জমজম কূপ। মসজিদুল হারামের ভেতর পবিত্র কাবাঘরের ২০ মিটার পূর্বে এই কূপের অবস্থান। ধারণা করা হয়, প্রায় ৪ হাজার বছর আগে এই কূপের উৎপত্তি। ইব্রাহিম (আ.) ও তার ছেলে ইসমাইল (আ.) এর সঙ্গে জমজম কূপের ইতিহাস জড়িয়ে আছে। তবে কালের বিবর্তনে জমজম কূপের মুখ বন্ধ হয়ে যায়। পরে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর দাদা আব্দুল মুত্তালিব স্বপ্নযোগে আদেশপ্রাপ্ত হয়ে এই কূপ পুনর্খনন করেন।  জমজম কূপের পানির স্তর ভূপৃষ্ঠের প্রায় ১০.৬ ফুট নিচে। এখান থেকে প্রতি সেকেন্ডে ৮ হাজার লিটার হারে পানি তোলা হয়। পানির স্তর ভূপৃষ্ঠের প্রায় ৪৪ ফুট নিচে নেমে গেলে পানি তোলা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন পানির স্তর মাত্র ১১ মিনিটে আবার ১৩ ফুট উচ্চতায় ফিরে আসে। জমজম কূপ থেকে প্রতি ঘণ্টায় ২৮.৮ মিলিয়ন লিটার ও প্রতিদিন ৬৯১.২ মিলিয়ন লিটার পানি উত্তোলন করা হয়। এ পর্যন্ত দুইবার জমজম কূপ পরিষ্কার করা হয়েছে। ১৯৭৯ সালে তৎকালীন সৌদি বাদশাহ খালিদের নির্দেশে পেশাদার ডুবুরিদের কূপের ভেতর পাঠানো হয়। দুইবারই এই কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সৌদির একজন একাডেমিক ড. ইয়াহইয়া খোশাক। ডুবুরিরা টর্চলাইট নিয়ে প্রায় আধা ঘণ্টার মতো কূপের ভেতর অবস্থান করেন। সেখানে তারা দেখতে পান, কূপের গভীরতা ১৯ দশমিক ২ থেকে ১৯ দশমিক ৮ মিটার পর্যন্ত। এর মধ্যে ৯ মিটার পর্যন্ত প্লাস্টার করা। প্লাস্টার করা অংশের নিচে পানির মধ্যে কম্পাসের কার্যকারিতা বন্ধ হয়ে যায়। একেবারে নিচে নেমে তারা ধাতব বালতিসহ বিভিন্ন পরিত্যক্ত জিনিস দেখতে পান।  কূপের আশপাশ থেকে সাবমারসিবল পাম্প দিয়ে উত্তোলন করা হয়। এতে কূপের ভেতর পানির স্তর ৫ মিটারে নেমে আসে। তখনই কয়েক মিনিটের জন্য পানির উৎস দেখতে পেরেছিলেন ডুবুরিরা। পরে জমজম কূপের পানির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় দেখা যায়, জমজম কূপের পানিতে কোনো দূষণ বা ব্যাকটেরিয়া নেই। জমজম কূপের পানির কোনো রঙ বা গন্ধ নেই। তবে এর বিশেষ স্বাদ রয়েছে। কিং সৌদ বিশ্ববিদ্যালয় জমজম কূপের পানি পরীক্ষা করেছে এবং তারা এর পুষ্টিগুণ ও উপাদানগুলো নির্ণয় করেছে। জমজম পানির উপাদানগুলো হলো- প্রতি লিটারে আছে সোডিয়াম ১৩৩ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৯৬ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেশিয়াম ৩৮.৮৮ মিলিগ্রাম, ফ্লোরাইড ০.৭২ মিলিগ্রাম, নাইট্রেট ১২৪.৮ মিলিগ্রাম, সালফেট ১২৪ মিলিগ্রাম।   জমজম কূপের বিভিন্ন ফজিলত হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। হজরত আবুবকর সিদ্দিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, 'রাসুল (সা.)  জমজমের পানি সম্পর্কে বলেছেন যে, জমজমের পানি হচ্ছে বরকতময় ও তৃপ্তিদায়ক।' হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) বলেছেন, পৃথিবীর সর্বোত্তম পানি হচ্ছে জমজম। প্রতি বছর লাখ লাখ হাজি জমজম কূপ থেকে পানি নিয়ে আসেন। কিন্তু কখনও পানির স্বল্পতা দেখা যায়নি। তাই জমজম কূপ মানুষের জন্য মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর এক অপূর্ব নেয়ামত ও বরকতময় উপহার বলে মনে করা হয়। বৈজ্ঞানিক গবেষণাতেও এই পানির উপকারিতা প্রমাণিত।
১৬ ঘণ্টা আগে

কেন ১৫০০ বছর ধরে কাবার চাবি এই সাধারণ পরিবারের কাছে?
মহান আল্লাহর ঘর পবিত্র কাবা শরিফ সৌদি আরবের পবিত্র নগরী মক্কায় অবস্থিত। দীর্ঘকাল ধরে কাবা শরিফে বিভিন্ন ধরনের বিশেষ তালা ও চাবির ব্যবহার হয়ে আসছে। তবে একটা আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, সৌদি আরবের সবকিছু রাজপরিবারের কাছে থাকলেও প্রাক ইসলামি যুগ থেকে এখন পর্যন্ত পবিত্র কাবা শরিফের চাবির দায়িত্ব একটি পরিবারের কাছেই রয়েছে, যা এখনো বর্তমান। এই সম্মানিত পরিবারটি হলো মক্কার বনু তালহা গোত্র। এই গোত্রের লোক গত ১৫০০ বছর ধরে এ দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বনু তালহা গোত্রের সবচেয়ে মুরব্বি তথা বয়স্ক সদস্যরাই উত্তরাধিকার সূত্রে এ দায়িত্ব প্রাপ্ত হন এবং সম্মানের সঙ্গে আমৃত্যু এ দায়িত্ব পালন করে থাকেন। মক্কা বিজয়ের পর অনেক কিছুতে পরিবর্তন হলেও মহানবী (সা.) এই গোত্রের হাতেই কাবাঘরের চাবিটি রেখে দেন। ফলে তারাই কাবাঘরের আনুষ্ঠানিক সেবক। মক্কা বিজয়ের দিন নবী করিম (সা.) তাদের কাছ থেকে চাবি নিয়ে কাবাঘর পবিত্র করেন। পরে আবার তাদের হাতেই চাবি ফিরিয়ে দেন। চাবি ফেরত দেওয়ার সময় নবী করিম (সা.) বলেন, ‘হে বনি আবদুদ দুর! কিয়ামত পর্যন্ত চিরদিনের জন্য এই চাবি গ্রহণ করো। জালেম ছাড়া কেউ তোমাদের কাছ থেকে এই চাবি ছিনিয়ে নেবে না। ’ পবিত্র কাবাঘরের সেবা অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। ফলে সমকালীন শাসকরা এর সৌন্দর্য বৃদ্ধির কাজ করেছেন। এর অংশ হিসেবেই কাবাঘরের দরজা তৈরি করা হয়েছে স্বর্ণ দিয়ে। ১৩৯৬ হিজরি সালে তৎকালীন সৌদি বাদশাহ খালেদ ২৮৬ কেজি স্বর্ণ দিয়ে কাবা শরিফের বর্তমান দরজাটি তৈরি করেছেন। দরজায় আল্লাহ তায়ালার নাম এবং কোরআনের আয়াত লেখা রয়েছে। কাবা শরিফের দরজাটি দুই পাল্লার। মাঝে আছে তালা লাগানোর ব্যবস্থা। কাবা শরিফের চাবি রাখার জন্য কিসওয়ার কাপড় দ্বারা তৈরি বিশেষ বক্স তৈরি করা হয়। যার মধ্যে রাখা হয় পবিত্র কাবা শরিফের চাবি। কাবার তালা-চাবির ইতিহাস পর্যালোচনায় জানা যায়, আব্বাসীয় মামলুক ও অটোমান উসমানি খেলাফতের যুগে কাবা শরিফের মেরামত উপলক্ষে অথবা বিশেষ অনুষ্ঠান করে তালা-চাবি ব্যবহার করা হতো। প্রাচীনকালে কাবা শরিফের সর্বশেষ তালা-চাবি অটোমানের যুগের উসমানি খেলাফতের মাজলুম বাদশা আব্দুল হামিদের নির্দেশে ১৩০৯ হিজরিতে তৈরি করা হয়, যা সৌদি বাদশাহ আল সৌদের যুগ পর্যন্ত স্থায়ী হয়।    আধুনিক সৌদি আরবের জনক বাদশাহ খালেদ ইবনে আব্দুল আজিজ আল সৌদি এ তালা ও চাবি পরিবর্তন করেন। তারপর ২০১২ সালেও পরিবর্তন করা হয় পবিত্র কাবা শরিফের তালা এবং চাবি, যা এখনো বর্তমান। বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তন করা কাবা ঘরের তালা-চাবি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে তুরস্কের প্রাচীন শহর ইস্তাম্বুলে তোপকাপি জাদুঘরেই রয়েছে ৫৪টি চাবি। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের একটি জাদুঘরে রয়েছে ২টি চাবি এবং মিসরের রাজধানী কায়রোর ইসলামি আর্ট জাদুঘরে রয়েছে ১টি চাবি।
১৬ ঘণ্টা আগে

যে কারণে আল্লাহতায়ালা বৃষ্টি বন্ধ করে দেন
ইসলামের ৫টি স্তম্ভের মধ্যে একটি হচ্ছে জাকাত। জাকাত পার্থিব জীবনে যেমন দারিদ্র্যবিমোচনে সহায়তা করে, তেমনি পরকালের কঠিন দিনে স্বস্তি দেয়। হজরত আবদুল্লাহ বিন উমার (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের দিকে এগিয়ে এসে বলেন, হে মুহাজিরগণ! তোমরা ৫টি বিষয়ে পরীক্ষার সম্মুখীন হবে। তবে আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন তোমরা তার সম্মুখীন না হও। যখন কোনো জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তখন সেখানে মহামারি আকারে প্লেগরোগের প্রাদুর্ভাব হয়। তাছাড়া এমন সব ব্যাধির উদ্ভব হয়, যা পূর্বেকার লোকদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি। যখন কোনো জাতি ওজন ও পরিমাপে কারচুপি করে তখন তাদের ওপর নেমে আসে দুর্ভিক্ষ, কঠিন বিপদ-মুসিবত। আর জাকাত আদায় না করলে তখন আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। যদি ভূ-পৃষ্ঠে চতুষ্পদ জন্তু ও নির্বাক প্রাণী না থাকত তাহলে আর কখনো বৃষ্টিপাত হতো না। যখন কোনো জাতি আল্লাহ ও তার রাসুলের অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, তখন আল্লাহ তাদের ওপর তাদের বিজাতীয় দুশমনকে ক্ষমতাসীন করেন এবং সে তাদের সহায়-সম্পদ সবকিছু কেড়ে নেয়। যখন তোমাদের শাসকবর্গ আল্লাহর কিতাব মোতাবেক মীমাংসা করে না এবং আল্লাহর নাজিলকৃত বিধানকে গ্রহণ করে না, তখন আল্লাহ তাদের পরস্পরের মধ্যে যুদ্ধ বাধিয়ে দেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস ৪০১৯) ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ইসলামের ভিত্তি ৫টি বিষয়ের ওপর। এই কথার সাক্ষ্য দেওয়া যে আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল। নামাজ প্রতিষ্ঠা করা, জাকাত আদায় করা, হজ করা ও রমজান মাসে রোজা রাখা। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮) সঠিকভাবে জাকাত আদায় বিত্তবানদের অন্তর পরিশুদ্ধ করে এবং তাদের সম্পদকে পবিত্র করে। তাই এটিকে কোরআনের সাফল্যের অংশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।  আল্লাহতায়ালা সুরা মুমিনুনের ১-৫ আয়াতে বলেছেন, অবশ্যই মুমিনরা সফল। যারা নামাজে বিনম্র থাকে, অনর্থক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকে, যারা জাকাত আদায় করে এবং নিজেদের লজ্জাস্থান সংযত রাখে। ইসলামে অত্যাবশ্যক বিধানগুলোর একটি জাকাত। কেউ জাকাতের বিধান অস্বীকার করলে সে মুসলিম থাকবে না। তাই যথাযথভাবে জাকাত আদায় করা কর্তব্য। নতুবা পরকালে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
২৫ এপ্রিল, ২০২৪

প্রভাষ আমিনের নিবন্ধ / ধর্ম আর সংস্কৃতিকে মুখোমুখি করবেন না
পরপর দুটি উৎসবে মাতোয়ারা ছিল গোটা দেশ। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতরের দুদিন পরই ছিল বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। দুয়ে মিলে এবার লম্বা ছুটিতে উৎসবে মেতেছিল বাংলাদেশের মানুষ। ছুটির কারণে এবার উৎসব ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা দেশে। ছুটি শেষ হয়েছে। তবে উৎসবের রেশ রয়ে গেছে এখনো। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলেনি বলে রাস্তাঘাটে এখনো ছুটির আমেজ। উৎসবের রেশ যেমন রয়ে গেছে, সঙ্গে রয়ে গেছে বিতর্কের পাল্টাপাল্টিও। বাঙালি উৎসবপ্রিয় জাতি। কিছু উৎসব ধর্মীয়, কিছু জাতীয়, কিছু আবার রাষ্ট্রীয়। শোকের দিন ২১ ফেব্রুয়ারিকেও আমরা উৎসব বানিয়ে ফেলেছি। ২৬ মার্চ, ১৬ ডিসেম্বর আমাদের রাষ্ট্রের জন্মোৎসব। ঈদ, পূজা, বড়দিন, প্রবারণা পূর্ণিমা—এই ধর্মীয় উৎসবগুলোতেও আমরা মেতে উঠি আনন্দে। ছেলেবেলায় আমরা সব উৎসবেই শামিল হতাম। মুসলমানদের দুই ঈদের উৎসব তো আছেই। আমরা শবেকদর, শবেমেরাজ, শবেবরাতকেও উৎসব বানিয়ে ফেলতাম। এ তিনটি উৎসবই রাতে। তাই আমরা অবধারিতভাবে রাতে ইচ্ছেমতো ঘুরে বেড়ানোর স্বাধীনতা পেয়ে যেতাম। ছুটিটা পেতাম আসলে মসজিদে নামাজ পড়ার জন্য। কিন্তু মসজিদে একটু হাজিরা দিয়ে আমরা রাতভর ঘুরে বেড়াতাম। রাতে বাইরে থাকার আনন্দটাই অন্যরকম। আর হিন্দু সম্প্রদায়ের তো বারো মাসে তেরো পূজা। তার অনেকগুলোতে আমরা অংশ নিতাম। আমাদের ছেলেবেলা ছিল উৎসবময়। আমাদের এলাকায় অন্য ধর্মের মানুষ ছিল না বলে, বড়দিন বা প্রবারণা পূর্ণিমার আনন্দটা ছেলেবেলায় মিস করেছি। কিন্তু বড় হয়ে দেখেছি, বড়দিনের ক্রিসমাস ট্রি বা সান্তা ক্লজের উপহার আর প্রবারণা পূর্ণিমার ফানুস ওড়ানোও কম আনন্দের নয়। ধর্মীর প্রার্থনার অংশটুকু বাদ দিলে, সব ধর্মের সব উৎসবই আনন্দের, আমাদের সবার। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। তবে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ, নববর্ষ। এই একটি দিনে সব ধর্মের, সব শ্রেণির, সব পেশার মানুষ বাংলাদেশের গ্রামেগঞ্জে, আনাচেকানাচে উৎসবে মেতে ওঠে। শুধু বাঙালি নয়, আদিবাসীরাও বৈসাবি উৎসব নিয়ে শামিল হয় বাংলা বর্ষবরণে। এই একটি দিনে বাংলার ঘরে ঘরে আনন্দের বান ডাকে যেন। গ্রামে গ্রামে বৈশাখী মেলা, হরেক খাবার, হরেক খেলনা, নাগরদোলা; সত্যিই যেন আনন্দের মেলা বসে। তবে ইদানীং একটা অপশক্তি উৎসব বিরোধিতায় নেমেছে। তাদের কাছে পহেলা বৈশাখ হিন্দুয়ানি, শবেবরাত বেদাত, মঙ্গল শোভাযাত্রা খারাপ। এ অপশক্তি শুধু বিরোধিতা করেই বসে থাকেনি। ছায়ানটের বর্ষবরণে, তাজিয়া মিছিলে হামলা করে তারা উৎসবে রাশ টানতে চেয়েছে। এই অপশক্তির ভয়ে সরকারও উৎসব নিয়ন্ত্রণ করতে মরিয়া। সন্ধ্যার পর উৎসব আয়োজন ঠেকাতে তাদের চেষ্টার কমতি নেই। পুলিশের ভিড়ে এখন আর মঙ্গল শোভযাত্রা বা তাজিয়া মিছিল দেখাই যায় না। উৎসব নিয়ন্ত্রণ করে নয়, এই অপশক্তিকে মোকাবিলা করতে হবে উৎসব আরও ছড়িয়ে দিয়ে। সন্ধ্যার পর উৎসব বন্ধ করে অপশক্তিকে মোকাবিলা করা যাবে না। কারণ অতীতে অধিকাংশ হামলা দিনেই হয়েছে। বলছিলাম পহেলা বৈশাখের কথা। বাংলাদেশে আমরা তিনটি সাল ব্যবহার করি। আমাদের ধর্ম, জাতীয়তা বা সংস্কৃতির সঙ্গে যার কোনো মিল নেই, সম্পর্ক নেই; সেই খ্রিষ্টাব্দ ব্যবহার করি সবচেয়ে বেশি। অফিস, আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সর্বত্রই খ্রিষ্টাব্দের জয়জয়কার। আমরাও ইংরেজি মাসের তারিখ যতটা জানি, বাংলা বা হিজরি মাসের তারিখ ততটা জানি না। হিজরি সাল বা আরবি ক্যালেন্ডার প্রতিদিন না লাগলেও আমাদের নিয়মিতই লাগে। ইসলাম ধর্মের সব হিসাব-নিকাশ এই চান্দ্র মাস বা হিজরি সাল ধরেই হয়। তবে বাংলা বছরের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ আমাদের জীবনে আসে উৎসবের ডালি সাজিয়ে—গানে, মেলায়, উৎসবে, রঙে অনন্যতা নিয়ে। মৌলবাদীদের কেউ কেউ পহেলা বৈশাখকে হিন্দুয়ানি সংস্কৃতি বলেন, এর বিরোধিতা করেন। কিন্তু বাংলা সনের সঙ্গে কোনো ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই। কিছুটা সম্পর্ক থাকতে পারে ইসলাম ধর্মের সঙ্গে। কারণ বাংলা সন গণনা চালু করেছিলেন মোগল সম্রাট আকবর। বাংলা সনের সঙ্গে ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই, সম্পর্ক হলো কৃষিকাজের, কৃষকের। শুরুতে এটাকে ফসলি সনও বলা হতো। ভারতবর্ষে মোগল সাম্রাজ্য শুরুর পর হিজরি সাল অনুসারে কৃষিপণ্যের খাজনা আদায় হতো। কিন্তু হিজরি সাল চাঁদের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় তা কৃষি ফলনের সঙ্গে মিলত না। প্রতি বছরই হিজরি সালে দিনের ওলটপালট হয়ে যায়। তাই কৃষকদের ওপর অসময়ে খাজনা দেওয়ার চাপ তৈরি হতো। এ ঝামেলা মেটাতেই সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। সম্রাট আকবরের নির্দেশে প্রাচীন বর্ষপঞ্জি সংস্কার করে ফসলি সন বা বাংলা সন চালু করা হয়। আর এ সংস্কারের কাজটি করেছিলেন তখনকার বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদ ফতেহউল্লাহ সিরাজি। তিনি সৌর সন এবং আরবি হিজরি সনের ওপর ভিত্তি করে নতুন বাংলা সনের নিয়ম চালু করেন। আকবরের সময় থেকেই পহেলা বৈশাখ উদযাপন শুরু হয়। তখন চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে সব খাজনা, মাশুল ও শুল্ক পরিশোধ করতে হতো। সব দেনা মিটিয়ে পহেলা বৈশাখ শুরু হতো নতুন আশা নিয়ে। ব্যবসায়ীরা নতুন বছর শুরু করতেন নতুন খাতা দিয়ে, যেটাকে বলা হয় হালখাতা। হালখাতা উৎসবও হয়। ব্যবসায়ীরা পাওনা আদায়ে উৎসব করতেন। পহেলা বৈশাখের সঙ্গে কোনো হিন্দুয়ানির সম্পর্ক নেই। যে দুজনের নাম আছে—একজন সম্রাট, একজন জ্যোতির্বিদ, দুজনই মুসলমান। পহেলা বৈশাখের উৎসবটা হিন্দুয়ানি যেমন নয়, ইসলামিকও নয়; পহেলা বৈশাখ বাঙালির সংস্কৃতি, এই মাটির সংস্কৃতি। বাঙালি মুসলমানরা যেমন অন্য বাঙালির সঙ্গে মিলে নববর্ষ পালন করে, অন্য দেশের মুসলমানরাও নিজ নিজ অঞ্চলের উৎসব পালন করে। ইরানের মুসলমানরা তাদের নববর্ষ ‘নওরোজ’ পালন করে বিপুল উৎসবে। ইসলাম প্রবর্তনের সময় পহেলা বৈশাখ ছিল না, তাই এর সঙ্গে ইসলামের কোনো বৈরিতা থাকার সুযোগই নেই। ফেসবুকে দেখলাম এক হুজুর গলা ফুলিয়ে আল্লাহর কসম কেটে বলছেন, পহেলা বৈশাখে যারা পাঞ্জাবি কিনবে; তারা জাহান্নামি, জাহান্নামি, জাহান্নামি। সেই কথাটিও কিন্তু তিনি বলছেন, পাঞ্জাবি পরেই। আমি যে পাঞ্জাবি পরে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করি, সেই পাঞ্জাবি পরেই ঈদের নামাজে যাই। পোশাক হলো মানুষের স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য। পোশাকের কোনো ধর্ম নেই। দেশে দেশে, অঞ্চলে অঞ্চলে পোশাক বদলে যায়। বাঙালি মুসলমানরা জীবনযাপন করে এ অঞ্চলের পোশাক পরে। গরমের দেশ সৌদি আরবের মুসলমানরা যে পোশাক পরবে, শীতের দেশ রাশিয়ার মুসলমানরা নিশ্চয়ই সে পোশাক পরবে না। ধর্মকে যারা সংস্কৃতির মুখোমুখি করতে চান তাদের উদ্দেশ্য সৎ নয়। আদতে তারা ধর্মেরই অবমাননা করেন। গ্রামে গ্রামে বৈশাখী মেলা বসলেও ঢাকায় বর্ষবরণের ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে পহেলা বৈশাখের ভোরে ছায়ানটের বর্ষবরণ। ষাটের দশকে পাকিস্তানি সামরিক শাসকদের রবীন্দ্রনাথ ও বাঙালি সংস্কৃতিবিরোধী আগ্রাসনের প্রতিবাদে গড়ে ওঠে ছায়ানট। পাশাপাশি স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে রাজনৈতিক আন্দোলনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ১৯৮৯ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় শুরু হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা, প্রথম আয়োজনে যার নাম ছিল আনন্দ শোভাযাত্রা। সব অমঙ্গলকে দূর করার আকাঙ্ক্ষায় শুরু হওয়া মঙ্গল শোভাযাত্রা ইউএনডিপির বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। কিন্তু পাকিস্তান আমলের মতো গত কয়েক বছর ধরে ধর্মীয় বিবেচনায় বর্ষবরণ আর মঙ্গল শোভাযাত্রার বিরোধিতা করা হচ্ছে। সময় এসেছে আবারও রুখে দাঁড়ানোর। বর্ষবরণ উৎসবের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো রঙের ছটা। কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, জারুলের মতো উজ্জ্বল রঙের ফুলে ফুলে প্রকৃতি সাজে নতুন রূপে। এর ছোঁয়া লাগে মানুষের হৃদয়ে, যা ফুটে ওঠে উৎসবের ডালিতেও। পহেলা বৈশাখের সব আয়োজনে তাই রঙের বাহার। আঁকা বর্ণাঢ্য আলপনা। মঙ্গল শোভাযাত্রা, চারুকলা সর্বত্রই রঙের ছড়াছড়ি। কয়েক বছর ধরেই মানিক মিয়া অ্যাভিনিউসহ রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক রঙিন হয়ে যায় আলপনার রঙে। এবার গুলশানেও বসেছিল বৈশাখী আয়োজন, গুলশানের রাস্তায়ও লেগেছিল রঙের ছোঁয়া। তবে এবার প্রথমবারের মতো কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলায় হাওরের বুকে নির্মিত অলওয়েদার সড়কের মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার সড়কে দৃষ্টিনন্দন আলপনা আঁকা হয়। এ আলপনা বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘ তো বটেই, সম্ভবত বিশ্বের দীর্ঘতম আলপনাও এটি। গিনেস বুকে অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদনও করা হবে। অলওয়েদার সড়ক নিয়ে বিতর্ক আছে। আমিও মনে করি এটি একটি অপ্রয়োজনীয় রাস্তা, যা হাওরের প্রবহমানতা রুদ্ধ করেছে। এটি একটি অপচয়। কিন্তু এই রাস্তাটি এখন বাস্তবতাও। রাস্তাটি যত অপ্রয়োজনীয়ই হোক, ১৪ কিলোমিটার লম্বা আলপনা দেখে আমার মন ভরে গেছে। কিন্তু হঠাৎ করে কিছু পরিবেশবাদী এ আলপনা নিয়ে সমালোচনায় মেতেছেন। বৃষ্টি হলে এই রং হাওরে মিশবে, হাওরের পানি বিষাক্ত হবে, সেই বিষ মাছ ও ফসল হয়ে মানুষের শরীরে আসবে, তাতে ক্যান্সার হবে, মানুষ মারা যাবে ইত্যাদি ইত্যাদি। পরিবেশবাদীদের দাবির সঙ্গে আমি একমত। কিন্তু ভাই, বছরের এক দিনের একটা আলপনায় হাওর ধ্বংস হয়ে যাবে, মানুষ মরে সাফ হয়ে যাবে; এতটা ভাবা বাড়াবাড়ি। প্রতিদিন আমরা প্রকৃতি ধ্বংস করছি, নদী-নালা দখল করছি। ঢাকা পৃথিবীর সবচেয়ে দূষিত নগরীর একটি। আমাদের চোখের সামনে বুড়িগঙ্গা ধ্বংস হয়ে গেছে। চামড়াশিল্প সরিয়ে ধলেশ্বরীর ধ্বংস অনিবার্য করে তুলেছি। এত কিছু বাদ দিয়ে আমরা এক দিনের উৎসব ঠেকাতে হঠাৎ পরিবেশবাদী হয়ে উঠছি; এটা সন্দেহজনক। তবে আমি হতাশ নই। এবার লম্বা ছুটির কারণে ঢাকা প্রায় ফাঁকা ছিল। তারপরও পহেলা বৈশাখে চারুকলা, রমনা, শিশু পার্ক, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, রবীন্দ্র সরোবর, গুলশানসহ নগরীর পথে পথে নতুন পোশাকে ঝলমলে মানুষের প্রাণবন্ত উপস্থিতি আমাকে আশাবাদী করেছে। ধর্মের দোহাই দিয়ে কোনো অপশক্তিই আমাদের হৃদয় থেকে উৎসব, আনন্দ কেড়ে নিতে পারবে না। লেখক: হেড অব নিউজ, এটিএন নিউজ
১৮ এপ্রিল, ২০২৪

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ : কলেজে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
খুলনার সরকারি সুন্দরবন আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের এক শিক্ষকের ধর্মীয় কটূক্তিমূলক একটি পোস্ট শেয়ার করাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। বুধবার (২৭ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে তারা বিক্ষোভ করে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় এবং খানজাহান আলী সড়ক অবরোধ করে। পরে কলেজ ছাত্রলীগের নেতা ও শিক্ষকদের অনুরোধে তারা অবরোধ তুলে নেয়। সুন্দরবন কলেজের ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি তরিকুল ইসলাম সুমন জানান, কিছুদিন আগে বাংলা বিভাগের শিক্ষক বাসুদের ফেসবুকে ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তিমূলক একটি পোস্ট শেয়ার করেন। তাৎক্ষণিক শিক্ষার্থীরা এটা নিয়ে আপত্তি জানান। বিষয়টি গত ২৪ মার্চ লিখিতভাবে অধ্যক্ষকে জানানো হয়। অধ্যক্ষ ওই শিক্ষককে শোকজ করেন। এর মধ্যে কলেজ বন্ধ হয়ে গেলে বিষয়টি স্থিমিত হয়ে যায়।  তিনি বলেন, বুধবার ক্যাম্পাস খুললে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আবার বিক্ষোভে নামে। অধ্যক্ষ, অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। সুন্দরবন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মাকসুদা সুলতানা জানান, গত ২৪ মার্চ ওই শিক্ষকের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
২৮ মার্চ, ২০২৪

জেনে নিন আজকের নামাজের সময়সূচি
ইসলামের ৫টি রুকনের মধ্যে নামাজ অন্যতম। পঞ্চস্তম্ভের মধ্যে এটি দ্বিতীয়। ইমান বা বিশ্বাসের পর নামাজই ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। কিয়ামতের দিন প্রথম হিসাব নেওয়া হবে নামাজের। পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের বাইরে ওয়াজিব, সুন্নত ও কিছু নফল নামাজ রয়েছে। যতই ব্যস্ততা থাকুক না কেন ওয়াক্তমতো ফরজ নামাজ আদায় করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪ ইংরেজি, ৯ চৈত্র ১৪৩০ বাংলা, ১২ রমজান ১৪৪৫ হিজরি। ঢাকা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো- নামাজের সময়সূচি জোহর- ১২:১০ মিনিট। আসর- ৪:২৭ মিনিট। মাগরিব- ৬:১২ মিনিট। এশা- ৭:২৫ মিনিট। আগামীকাল রোববার (ফজর- ৪:৪৫ মিনিট)। বিভাগীয় শহরের জন্য উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগে সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, তাহলো- বিয়োগ করতে হবে- চট্টগ্রাম : ০৫ মিনিট।  সিলেট : ০৬ মিনিট। যোগ করতে হবে- খুলনা : ০৩ মিনিট। রাজশাহী : ০৭ মিনিট। রংপুর : ০৮ মিনিট। বরিশাল : ০১ মিনিট।
২৩ মার্চ, ২০২৪

ধর্ম অবমাননায় সর্বোচ্চ শাস্তি চান হাইকোর্ট
যে কোনো ধর্ম অবমাননায় সর্বোচ্চ শাস্তি ও জামিন অযোগ্য অপরাধ হিসেবে অভিহিত করে আইনে বিধান যুক্ত করতে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মহানবীকে (সা.) নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের মামলায় কুষ্টিয়ার একজনের জামিন আবেদনের বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের বেঞ্চ এ পরামর্শ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) একেএম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, ধর্ম অবমাননার বিষয়ে আদেশটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু এ বিষয়ে দণ্ডের কোনো বিধান নেই, সেজন্য সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবনসহ অজামিনযোগ্য আইন প্রণয়নের মতামত দেন হাইকোর্ট। কোরআন শরিফ, নবী-রাসুলসহ যে কোনো ধর্মগ্রন্থের বিষয়ে কটূক্তি করলে ২০২৩ সালের সাইবার নিরাপত্তা আইনের ধারায় জামিন অযোগ্যসহ সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান করার বিষয়ে মত দেন হাইকোর্ট। আদালত বলেন, পূর্ববর্তী আইনে জামিন অযোগ্য ধারা ছিল। বর্তমান আইনে ধর্মীয় অনুভূতির বিষয়ে কটূক্তি করলে জামিনযোগ্য ধারা হওয়ায় অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে। ডিএজি আমিন উদ্দিন মানিক জানান, কুষ্টিয়া ভেড়ামারার সেলিম খান হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে ফেসবুক লিঙ্কে কুরুচিপূর্ণ কমেন্ট করেন। এ মামলায় তার জামিন প্রশ্নে রুল শুনানিতে ২৫ লাখ টাকা ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে ও ফেসবুকে বাজে মন্তব্য পোস্টকারী নাফিসা চৌধুরীর বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত প্রমাণ থাকায় সম্পূরক চার্জশিটের মাধ্যমে অভিযুক্ত করার জন্য তদন্ত কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়ে ধারা জামিনযোগ্য হওয়ায় রুল নিষ্পত্তি করেন হাইকোর্ট। শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাহাব উদ্দিন আহমেদ টিপু ও মজিবুর রহমান। আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন।
১৩ মার্চ, ২০২৪

চট্টগ্রামে জ্যোতিশ্বরানন্দের আবির্ভাব উৎসব
শঙ্কর মঠ ও মিশনের উদ্যোগে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে যোগাচার্য পরমহংস শ্রীশ্রীমৎ স্বামী জ্যোতিশ্বরানন্দ গিরি মহারাজের ১১৫তম আবির্ভাব উৎসব।  শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) সকালে নগরের জেএমসেন হলে বেলুন উড়িয়ে আবির্ভাব উৎসবের উদ্বোধন করেন শঙ্কর মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ ও উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্রীমৎ স্বামী তপনানন্দ গিরি মহারাজ। শঙ্কর মঠ ও মিশন চট্টগ্রাম মহানগর শাখার উদ্যোগে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী উৎসবের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শঙ্কর মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ সভাপতি শ্রীমৎ স্বামী তপনানন্দ গিরি মহারাজ সভাপতিত্ব করেন। সঞ্চালনা করেন উৎসব উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক লায়ন সন্তোষ কুমার নন্দী। এতে মহান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রীশ্রী কৈবল্যধামের মোহন্ত মহারাজ এবং প্রধান বক্তা ছিলেন হাটহাজারীর পুন্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ শ্রীপাদ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। এ সময় বক্তারা বলেন, ধর্ম চেতনা ও ধর্মবোধ মানুষকে সত্য সনাতন সুন্দরের পথে পরিচালিত করার ফলে সমাজ থেকে অন্যায়-অনাচার দূরীভূত হয়। ধর্মবোধ মানুষকে ন্যায়ের শিক্ষা দিয়ে সভ্য করেছে। নিষ্কাম কর্ম ও অন্ধকারাচ্ছন্ন পথ থেকে উত্তরণের জন্য মনুষ্যত্বের সাধনা করাই হলো গীতা শিক্ষা। তাই গীতার আদর্শ ও উদ্দেশ্য বুকে ধারণ করতে পারলে সুন্দর সমাজ বিনির্মাণ হবে। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক (অব.) ড. জ্যোতি প্রকাশ দত্ত, চবির ইংরেজি বিভাগের সিন্ডিকেট মেম্বার প্রফেসর ড. সুকান্ত ভট্টাচার্য, ধর্মতত্ত্ববিদ অধ্যাপক স্বদেশ চক্রবর্তী, চবির সংস্কৃত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কুশল বরণ চক্রবর্তী, চুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক স্থপতি কানু কুমার দাশ ও চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন উৎসব উদযাপন পরিষদের অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক লায়ন দিলীপ কুমার শীল ও সাংগঠনিক সম্পাদক অজিত কুমার শীল। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন শঙ্কর মঠ ও মিশনের শ্রীমৎ জগদীশ্বরানন্দ ব্রহ্মচারী মহারাজ, অধ্যাপক তড়িৎ কুমার ভট্টাচার্য, মাষ্টার অজিত কুমার শীল, ইঞ্জিনিয়ার সুবল শীল, সাংবাদিক রনজিত কুমার শীল, অর্পণ ধর, মিন্টু পাল লিটু, ডা.বাসুদেব দাশ, লিটন পাল, মিন্টু শীল, চিত্তরঞ্জন প্রমূখ। শঙ্কর মঠ ও মিশনের সর্বস্তরের ব্রহ্মচারী, সন্ন্যাসীসহ হাজারো ভক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
২৬ জানুয়ারি, ২০২৪
X