নিত্যপণ্যের বাজার চলছে ইচ্ছামতো: বাম জোট
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার নানা কথা বলছে, এমনকি দাম বেঁধেও দিয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে কার্যকর ভূমিকা না নেওয়ায় বাজার চলছে তার ইচ্ছামতো। মুক্তবাজারের নামে বাজার সিন্ডিকেটের গুটিকয়েক মানুষ, চাঁদাবাজ, কমিশন ভোগীদের পকেটে যাচ্ছে জনগণের টাকা। আর এসব হচ্ছে ক্ষমতাসীনদের প্রশ্রয়ে। গতকাল সিপিবি কার্যালয়ে বাম জোটের সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। তারা বলেন, দেশে উৎপাদিত পণ্যের উৎপাদন খরচ কমানো, উৎপাদক ও ক্রেতা সমবায় গড়ে তোলা, রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে আমদানিকৃত পণ্যের বাফার স্টক গড়ে তোলা, সারা দেশে সর্বজনীন রেশন ব্যবস্থা এবং ন্যায্য মূল্যের দোকান চালু করা ছাড়া দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। সভায় নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে দ্রব্যমূল্য সহনশীল পর্যায়ে রাখা এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম কমানোর দাবিতে আগামী ২০ মার্চ রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সামনে, ২৩ মার্চ মিরপুর ১০ নম্বর ও ২৪ মার্চ শান্তিনগর বাজারের সামনে বিক্ষোভের কর্মসূচির সিদ্ধান্ত হয়। বাম গণতান্ত্রিক জোট ঢাকা মহানগরের সমন্বয়ক তৈমুর আলম খান অপুর সভাপতিত্বে এতে আরও উপস্থিত ছিলেন জোটের সমন্বয়ক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলী সদস্য নজরুল ইসলাম, বাসদের নেতা খালেকুজ্জামান লিপন, সিপিবি নেতা ডা. সাজেদুল হক রুবেল, সাইফুল ইসলাম সমীর, মঞ্জুর মঈন, বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা সীমা দত্ত, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের ইকবাল কবীর জাহিদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির আমেনা আক্তার, বাসদের রুবেল শিকদার প্রমুখ।
১৮ মার্চ, ২০২৪

সরকার নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ : ইসলামী যুব আন্দোলন
ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ নেছার উদ্দিন বলেছেন, সরকার নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। নিত্যপণ্যের সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলেও রোজাদার মানুষের সঙ্গে উপহাস করছে। শিল্পমন্ত্রী বরই দিয়ে ইফতার করার কথা বললেও নিজে আঙুর আপেলসহ সবধরনের ফল দিয়ে ইফতার করেন।  বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিভাগের আয়োজনে ঢাকার একটি রেস্টুরেন্টে যুব ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নেতারা বলেন, প্রহসনের নির্বাচনী বৈতরণী পার হয়ে সরকার বেসামাল হয়ে উঠছে। মিতব্যয়ীতার নামে ইফতার মাহফিল বন্ধ করে রোজাদারদের নিরুৎসাহিত করছেন। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাম্প্রদায়িক চর্চা হচ্ছে। ইফতার মাহফিলে নিষেধাজ্ঞা ইসলামের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র। তিনি বলেন, মন্ত্রী-এমপি ও সরকার দলীয় লোকজনের দুর্নীতি বন্ধ না করে ইফতার মাহফিল বন্ধ ইসলামের বিরুদ্ধে দুরভিসন্ধি। ইঞ্জিনিয়ার এহতেশামুল হক পাঠানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, ইসলামী যুব আন্দোলনের সেক্রেটারি জেনারেল মুফতি মানসুর আহমাদ সাকী।  আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর সেক্রেটারি মাওলানা আরিফুল ইসলাম, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় শিল্প ও কল-কারখানাবিষয়ক সম্পাদক হাজি এমদাদুল ফেরদৌস, এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল মুফতি রহমাতুল্লাহ বিন হাবিব, অর্থ সম্পাদক আলহাজ শফিকুল ইসলাম, যুবকল্যাণ ও কর্ম সংস্থান সম্পাদক মাওলানা ইউনুছ তালুকদার, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মুফতি শেখ মুহাম্মাদ নুরুন্নাবী প্রমুখ।
১৪ মার্চ, ২০২৪

অস্থির বরিশালের নিত্যপণ্যের বাজার
রমজান ঘিরে বরিশালে বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে ছোলা, ডাল ও আলুর দাম বেড়েছে ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। গত বছরের তুলনায় এ বছর দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে খেজুর ও রুহ আফজা। ভোক্তারা বলছেন, দুই দিন পরপর লোক দেখানো অভিযান কোনো কাজেই আসছে না। শুরু হয়েছে পবিত্র মাহে রমজান। আর এই সময়ে ভোক্তার চাহিদাকে টার্গেট করে অস্থির বরিশালের নিত্যপণ্যের বাজার। সোমবার (১১ মার্চ) বিকেলে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৯৫ টাকার ছোলা ঠেকেছে ১১০ টাকায়। এক লাফে ৪০ টাকা বেড়েছে মুগ ডালে। বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়। বাজারে খেসারি ডালের দাম বেড়েছে ৪০ টাকা, বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। মুড়িতে কেজি প্রতি বেড়েছে ২০ টাকা। বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। চিড়ার কেজি ৬০ টাকা ও চিনি ১৪০ টাকা। রুহ আফজার বছরের চেয়ে ২০০ টাকা দাম বেড়েছে। আগে ছিল ৩৫০ টাকা এখন ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে কেজি প্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে ফলের দাম। পাঁচ টাকা বেড়ে আলুর কেজি ৩৫ টাকা। তবে দাম কমেছে সয়াবিন তেলের। ১৭৩ টাকার পরিবর্তে বিক্রি হচ্ছে ১৬২ টাকায়। এ ছাড়া খেজুরের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। মরিয়ম ১১৫০ টাকা, আজোয়া ১১৫০ টাকা, ডাল খেজুর ৬৫০ টাকা, নাগাল ৬৫০ টাকা, বরই খেজুর ৪৮০ টাকা, দাবাস ৫৮০ টাকা, ছালবি ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গতবারের তুলনায় দ্বিগুণ।  মুদি দোকানের বিক্রেতা আল আমিন জানায়, পাইকারি বাজার থেকে তারা যে দামে কিনে আনেন সেই দামেই বিক্রি করতে হয় তাদের। পাইকার বেশি রাখলে তাদের কিছুই করার থাকে না। বাধ্য হয়ে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। রহিম নামে এক ফল বিক্রেতা জানান, গতবার যে খেজুর বিক্রি করেছে ৫০০ টাকায়, এবার সেই খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়। ফলে চাহিদার তুলনায় তেমন ক্রেতাও নেই। এ ছাড়া সব ধরনের ফলের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা। আর ভোক্তারা বলছেন, দুই দিন পর পর লোক দেখানো অভিযান কোনো কাজেই আসছে না। আনিস নামের এক ভোক্তা জানান, রমজানকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ায়। ব্যবসায়ীদের এমন মনোভাব কবে পরিবর্তন হবে জানা নেই। সবুজ নামে আরেক ভোক্তা জানান, আমরা বাজারে দায়সারা অভিযান চাই না। মিডিয়া এনে জরিমানা করলো কিন্তু পরের দিন আবারও দাম বাড়তি সেই অভিযান করে কী লাভ। কঠোর অভিযানের দাবি জানাচ্ছি বাজারগুলোতে। বাজার নিয়ন্ত্রণে ভোক্তাদেরও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান ক্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।  বরিশাল ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক রণজিৎ দত্ত বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা যেমন সিন্ডিকেট করে ভোক্তাদেরও এখন সিন্ডিকেট করার সময় হয়েছে। ভোক্তারা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ার ভয়ে কেউ যেন পণ্য মজুত না করে। তাহলে বাজার ক্রেতাদের নিয়ন্ত্রণে আসবে।’ বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মনদীপ ঘরাই বলেন, ‘রমজানে বাজার মনিটরিংয়ের পাশাপাশি নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হবে।’  এদিকে, রোজার আগে বাজারে পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে গত ৮ ফেব্রুয়ারি চাল, চিনি, তেল ও খেজুরের শুল্ক-কর কমানোর ঘোষণা দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। তবে, বরিশালের বাজারে পণ্যের দাম না কমায় ক্ষুব্ধ ক্রেতারা।
১১ মার্চ, ২০২৪

রংপুরে নিত্যপণ্যের বাজার চড়া, বিপাকে ক্রেতারা
রংপুরে রমজান শুরুর আগেই হইহই করে বাড়ল প্রায় সব পণ্যের দাম। ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে একটি অসাধু চক্র। পণ্যের দামে এমন আগুন লাগায় চরম বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা। নিয়মিত বাজার মনিটরিং না করায় এমন দাম বাড়ছে বলেও অভিযোগ তাদের। সোমবার (১১ মার্চ) রংপুর নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায় নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের দাম চড়া। সবজির বাজারে গিয়ে দেখা যায়, চিকন বেগুন ৭০ টাকা এবং মাঝারি ও গোল বেগুন ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া টমেটো ৩০-৪০, গাজর ২৫-৩০ টাকা, পেঁপে ২৫-৩০ টাকা, করলা ১৩০-১৪০ টাকা, লেবু প্রতিহালি ১০-১৫ টাকা থেকে লাফিয়ে ২৫-৩০ টাকা, শুকনা মরিচ ৪৮০-৫০০ টাকা, প্রতি পিস লাউ (আকারভেদে) ৫০-৬০ টাকা, পটোল ১২০ টাকা, দেশি রসুন ১৪০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।   অন্যদিকে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১০০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৯০ টাকা। এ ছাড়া পোলট্রি মুরগির ডিমের হালি ৪০-৪২ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এখানে প্রতিটি পণ্যের দাম ১০-১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বাজারে কার্ডিনাল আলু ৩০ টাকা, শিল আলু ৫০ টাকা, বগুড়ার সাদা পাকরি আলু ৪০ টাকা, গ্রানুলা ৩৫-৪০ টাকা এবং ঝাউ আলুর দাম বেড়ে ৫০-৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে কাঁচামরিচ ৬০ থেকে এক লাভে ৯০ টাকা টাকা এবং দেশি আদার কেজি ২২০-২৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলেন, রমজান মাসে বেগুনের চাহিদা বেড়ে যায়, কিন্তু আমদানি কম থাকায় দাম বেড়েছে। এদিকে বাজার ঘুরে দেখা যায়, খোলা চিনি ১৪৫-১৫০ টাকা, প্যাকেট আটা আগের মতোই ৫৫-৬০ টাকা, খোলা আটা ৪৮-৫০ টাকা, ছোলাবুট ৯৫-১০০ টাকা, প্যাকেট ময়দা ৭০ টাকা, মসুর ডাল (মাঝারি) ১২০ টাকা, চিকন ১৩৫-১৪০ টাকা, মুগডাল ১৭০-১৮০ টাকা এবং বুটডাল ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মুরগি বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে ব্রয়লার মুরগি ১৯০-২০০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগির দাম বেড়ে ৩১০-৩২০ টাকা, পাকিস্তানি হাইব্রিড ২৭০-২৮০ টাকা থেকে বেড়ে ২৯০-৩০০ টাকা, পাকিস্তানি লেয়ার ২৯০-৩০০ টাকা এবং দেশি ৪৮০-৫০০ টাকা থেকে বেড়ে ৫২০-৫৩০ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে গরুর মাংস ৬৮০ থেকে ৭২০ টাকা এবং খাসির মাংস ৮০০-৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মুলাটোল আমতলা বাজারের মুরগি বিক্রেতা আল আমির হোসেন বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম সামান্য কমলেও অন্য জাতের মুরগির দাম বেড়েছে। তেলের বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন আগের মতোই ১৭৩ টাকা এবং দুই লিটার ৩৪৬ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেল ১৬০-১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, আকারভেদে রুই মাছ ২৫০-৩৫০ টাকা, মৃগেল ২২০-২৫০ টাকা, কারপু ২০০-২২০ টাকা, পাঙাস ১৫০-১৬০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৬০, কাতল ৪০০-৪৫০ টাকা, বাটা ১৬০-১৮০ টাকা, শিং ৩০০-৪০০ টাকা, সিলভার কার্প ১৫০-২৫০ টাকা এবং গছিমাছ ৮০০-১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। রংপুর ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজার রহমান বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করছি। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
১১ মার্চ, ২০২৪

আগে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে
সাত জানুয়ারি নির্বাচনের মাধ্যমে ভোট বানচালের অপচেষ্টা ও সাংবিধানিক ধারা ধ্বংসের চক্রান্ত ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, এখন সবকিছুর আগে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় যুবজোটের জাতীয় কমিটির সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাসদ সভাপতি বলেন, দেশে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা সমুন্নত রেখে নির্বাচিত সংসদ যথাসময়ে কার্যক্রম চালু করেছে। এর মধ্য দিয়ে দেশে অস্বাভাবিকভাবে সরকার বদলের চক্রান্ত মুখ থুবড়ে পড়েছে। নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের আগেও বাজার অস্থির ছিল, পরেও স্বাভাবিক হয়নি। সিন্ডিকেটের দৌড়াত্ম্য আছে। এ রকম পরিস্থিতিতে দেশ বাঁচাতে, মানুষ বাঁচাতে, অর্থনীতি বাঁচাতে হলে সবকিছুর আগে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। এটাই এ মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কর্তব্য। সভায় সভাপতিত্ব করেন যুবজোটের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম সুজন। অংশ নেন কার্যকরী সভাপতি আমিনুল আজিম বনিসহ অন্য নেতারা।
০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

সবকিছুর আগে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে : ইনু 
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচন বানচাল করার অপচেষ্টা, সাংবিধানিক ধারা ধ্বংস করার চক্রান্ত ব্যর্থ হয়ে গেছে। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা, সমালোচনা, বিশ্লেষণ, গবেষণা হচ্ছে।   শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় যুবজোটের জাতীয় কমিটির সভায় যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।  তিনি বলেন, বাংলাদেশে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা সমুন্নত রেখে নির্বাচিত সংসদ যথাসময়ে কার্যক্রম চালু করেছে। এর মধ্য দিয়ে দেশে অস্বাভাবিকভাবে সরকার অদল-বদলের চক্রান্ত মুখ থুবড়ে পড়েছে, ব্যর্থ হয়েছে। সরকার উৎখাতের যুদ্ধের ভেতরে নির্বাচন সম্পন্ন করা, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির ও দেশের জন্য রাজনৈতিক সাফল্য। এই সাফল্যের ওপর দাঁড়িয়ে নতুন সরকার যাত্রা শুরু করেছে।   তিনি বলন, আমি মনে করি, যারা নির্বাচনের বিগত ৫ বছর ধরে সরকার উৎখাতের হুংকার ছেড়েছে, চক্রান্ত করেছে, চেষ্টা করেছে তারা তাদের লক্ষ্য হাছিলে ব্যর্থ হলেও হাল ছাড়েনি। রাজনীতির অঙ্গনে বিএনপি-জামায়াত, কতিপয় রাজনীতিক মোল্লারা নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতিতে আবারও সরকার উৎখাতের আওয়াজ তোলার চেষ্টা করছে।   বাংলাদেশ আর কতদিন সরকার উৎখাতের খেলার চক্রের ভেতরে ঘুরপাক খেতে থাকবে এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, এটার একটা নিষ্পত্তি হওয়া দরকার। কারণ এই মুহূর্তে ইউক্রেন যুদ্ধ, গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণের ঘটনা, লোহিত সাগরে পাল্টাপাল্টি আক্রমণ- সবকিছু মিলিয়ে পৃথিবীতে অস্থিরতা। সামরিক তৎপরতার ফলে পৃথিবীর অর্থনীতিতে বিভিন্ন রকম ধাক্কা লাগছে। এ রকম একটা পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে অর্থনীতি সংকটের ভেতর দিয়ে এগোচ্ছে।    মূল্যস্ফিতি, দ্রব্যমূল্য, নিত্যপণ্যের বাজার এখানো আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, নির্বাচনের আগেও নিত্যবাজার অস্থির ছিল, নির্বাচনের পরেও স্বাভাবিক হয়নি। বাজারে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য আছে। দেশের আমদানি-রপ্তানি খাতে বিভিন্ন রকম সমস্যা, জ্বালানি সংকট সবকিছু মিলিয়ে সরকারকে একটা গভীর অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।  তিনি বলেন, এ রকম পরিস্থিতিতে দেশ বাঁচাতে, মানুষ বাঁচাতে, অর্থনীতি বাঁচাতে হলে সবকিছুর আগে নিত্যপণ্যের বাজারকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। মূল্যস্ফিতি সহ্যের ভেতরে আনতে হবে- এটাই এ মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক কর্তব্য।  ১৪ দলের অন্যতম এই শরিক নেতা বলেন, নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিএনপি-জামায়াত চক্রের আবার সরকার উৎখাতের হুংকারে- জনজীবনের সংকট মোকাবিলার কাজ আড়ালে চলে যাচ্ছে। এবার অস্বাভাবিকভাবে ক্ষমতা দখলের চক্রান্ত বাদ দিয়ে সাংবিধানিক ধারার মধ্যে থেকে কীভাবে সমাজের, রাজনীতি, গণতন্ত্রের, অর্থনীতি ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো সংশোধন করা যায়- সে বিষয়ে মনোনিবেশ করুন। সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় যুব জোটের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম সুজন, কার্যকারী সভাপতি আমিনুল আজিম বনিসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

রোজার আগেই বেপরোয়া নিত্যপণ্যের বাজার
রমজান মাস আসতে এখনো বাকি দুই মাস। এর আগেই দেশের বাজারে বেপরোয়া ভাবে বাড়তে শুরু করেছে নিত্যপণ্যের দাম। বিশেষ করে—দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর থেকে চাল, ডাল, তেল, আটা, ময়দা, চিনি, ছোলা, মাছ, মাংসের কেজিতে ৫ থেকে ৩০ টাকা বা তারও বেশি বেড়েছে। যদিও সরকার গঠনের পর অর্থমন্ত্রী ও বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে কঠোর হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, দাম বাড়িয়ে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট সরকারকে পরীক্ষা করছে, সরকার তাদের ঘোষণা কতটুকু বাস্তবায়ন করে, তারা সেটি দেখছে। এ ছাড়া রোজার আগে দাম বাড়িয়ে রোজার সময় পণ্যের বাজার স্থিতিশীল বা রোজায় দাম না বাড়ানোর চালাকি শুরু করেছে বলেও মনে করছেন অনেকে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বলছে, অস্বাভাবিকভাবে কোনো পণ্যের সংকট তৈরি করা সম্ভব নয়। বাজারে সব পণ্যের চাহিদা ও জোগান ঠিক রাখতে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একনিষ্ঠভাবে কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ফলে কারসাজি বা কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে পারবে না কেউ। গতকাল সোমবার রাজধানীর খুচরা বাজার ও রাষ্ট্রীয় বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্যমতে, মানভেদে প্রতি কেজি চালে দাম বেড়েছে ২ থেকে ৫ টাকা। ভোটের আগে প্রতি কেজি চিকন চাল (নাজির) ৬০ থেকে ৭০ টাকা, যা ভোটের পরে পর্যায়ক্রমে ৬২ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া মোটা চাল কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে মসুর ডাল কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলেছেন, দাম আরও বাড়বে। মোকামে ভালো মানের মসুর ডালের কেজি ১৮০ টাকা পড়বে, যা খুচরা পর্যায়ে ২০০ টাকা বা তারও বেশি দামে বিক্রি করতে হবে। মটর ডালের কেজি ৯০ টাকা থেকে বেড়ে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কয়েকদিন আগে এ ডালের কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা মধ্যে ছিল। পাশাপাশি মুগ ডালের কেজি ১২০ থেকে বেড়ে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে ভোজ্যতেলের খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ডিলার বা কোম্পানির প্রতিনিধিরা কয়েকদিন থেকে সয়াবিন তেলের অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। এরই মধ্যে ঘোষণা ছাড়াই তারা লিটারে ৪ থেকে ৫ টাকা দাম বাড়িয়েছেন। বর্তমান বাজারে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা সপ্তাহ পূর্বে ছিল ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা। ২ কেজির প্যাকেট আটা ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা ভোটের আগে ছিল ১০০ টাকা। ২ কেজির প্যাকেট ময়দা ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কয়েকদিন আগেও ১৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। চিনির দামের সঠিক চিত্র রাজধানীর কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। এলাকা ও বাজার ভেদে প্রতি কেজি খোলা চিনি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্যাকেট চিনি কেটে খোলা চিনি হিসেবে বিক্রি এখনো অব্যাহত রয়েছে। এ কারণে বাজারে প্যাকেট চিনির সংকট বিদ্যমান। এ ছাড়া মানভেদে সব ধরনের ছোলার দাম কেজিতে ১০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে ৯০ থেকে ১২০ টাকায় উঠেছে। সাধারণ মানের খেজুর গত বছরের তুলনায় কেজিতে ১০০ টাকা বেড়ে ২৫০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক থেকে দেড় কেজি ওজনের রুই বা জিয়ল মাছের কেজি ৩০০ টাকা ছাড়িয়েছে, যা এর আগে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় পাওয়া যেত। কোথাও কোথাও গরুর মাংসের কেজি ৭০০ টাকা অতিক্রম করেছে। নির্ধারিত ৬৫০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, শিগগির ৮০০ টাকা ছাড়াবে গরুর মাংসের দাম। ১০ দিনের ব্যবধানে রাজধানীতে ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়। দাম আরও বাড়বে বলে দোকানিরা আভাস দিচ্ছেন। পোলট্রি খাত বিষয়ক প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বিপিএ সভাপতি সুমন হাওলাদার জানান, ঘোষণা দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। গত বছরও একইভাবে ব্রয়লারের দাম বেড়েছিল। দাম নিয়ন্ত্রণ করতে হলে এখনই পোলট্রি খাদ্য ও বাচ্চার দাম কমাতে হবে। তাহলে রোজায় এ খাতে কোনো অস্থিরতা হবে না। তার মতে, বাজারে ২০০ থেকে ২১০ টাকার মধ্যে ব্রয়লার মুরগির দাম যৌক্তিক। বাজার পরিস্থিতির বিষয়ে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান কালবেলাকে বলেন, কয়েক বছর থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে—রমজানের আগেই ব্যবসায়ীরা জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। তাই রমজানে আর দাম বাড়ে না। এটা তাদের একটা কারসাজি। সরকারের উচিত নিত্যপণ্যের আমদানির ক্ষেত্রে যেন কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি না হয়। আরেকটা বিষয় হলো, নতুন সরকারের মন্ত্রীরা ঘোষণা দিয়েছেন, কারসাজি করতে দেবে না। তাই চতুর ব্যবসায়ীরা পরীক্ষা করে দেখতে চাইছেনÑমন্ত্রীদের ঘোষণা কতটুকু বাস্তবায়ন হয়। তাই সরকারকে কারসাজির বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে। কথায় আছে, প্রথম দিনেই বিড়াল মারতে হয়।
১৬ জানুয়ারি, ২০২৪

নিত্যপণ্যের বাজার আবার অস্থির
দেশে নিত্যপণ্যের বজারে আবার অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বাড়তে শুরু করেছে পেঁয়াজ, ডিম, শাক-সবজি ও মাছ-মাংসের দাম। এদিকে দাম আরও বেড়ে যেতে পারে—এমন গুজবে অনেককে চাহিদার অতিরিক্ত পণ্য কিনতে দেখা গেছে। এতে বাজারের ওপর চাপ আরও বাড়ছে। এ সুযোগে দাম বাড়িয়ে চলছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে বাজারের তালিকায় কাটছাঁট করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, চলতি সপ্তাহের শুরু থেকে বাড়তে শুরু করেছে ডিমের দাম। প্রতি হালি ডিমে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এর সঙ্গে দেশি পেঁয়াজের দামও কেজিতে ১৫ টাকা বেড়ে এখন ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমাদানি করা পেঁয়াজও কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। এর সঙ্গে গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি কেজি সবজিতে দাম বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। অন্যদিকে দীর্ঘদিন থেকে মাছ-মাংসের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে রয়েছে। ইলিশের ভরা মৌসুমেও দাম কমছে না মাছের। বাজারে ৬০০ বা ৭০০ গ্রামের ইলিশের কেজি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। ৯০০ গ্রাম থেকে এক কেজি বা তারও বেশি ওজনের ইলিশের কেজি ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ছোট বা আড়ইশ থেকে সাড়ে তিনশ গ্রামের ইলিশের কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই সঙ্গে বাজারে রুই-কাতলার কেজি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর তেলাপিয়া, পাঙাশের কেজি ২২০ থেকে আড়াইশ টাকা। নলা মাছের কেজি সাড়ে ৩০০ থেকে সাড়ে ৪০০ টাকার মধ্যে। ছোট মাছের কেজি ৫০০ থেকে শুরু করে হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৭০০ থেকে ৭৮০ টাকায়। খাসির মাংসের কেজি ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে। ব্রয়লার মুরগির কেজি কিছুটা সহনীয় থাকলেও গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সোনালি বা কক মুরগির কেজি ৩২০ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকা। দেশি মুরগির কেজি ৭০০ থেকে সাড়ে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিমের পাইকারি বাজার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ঢাকার বাজারে প্রতি একশ ডিম (বাদামি) বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ২৩০ টাকায়। এ হিসাবে প্রতি পিসের দাম পড়েছে ১২ টাকা ৩০ পয়সা। হাত বদল হয়ে খুচরা পর্যায় এসে প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকায়। হালি ৫৫ টাকা দরে। এতে প্রতি পিস ডিমের দাম পড়ছে ১৩ টাকা ৭৫ পয়সা। তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আমান উল্লাহ কালবেলাকে বলেন, চাহিদার তুলনায় বাজারে ডিমের সরবরাহ কম। এর ফলে দাম কিছুটা বেড়েছে। বৃষ্টিপাত কমলে, বাজারে শাক-সবজির সরবরাহ বাড়লে ডিমের ওপর থেকে চাপ কমবে। তখন হয়তো দাম কমতে পারে। এদিকে আমদানি স্বাভাবিক থাকলেও দেশের পাইকারি বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বাড়ছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। অন্যদিকে কৃষক পর্যায়ে দেশি পেঁয়াজ কমে আসায় মজুতদাররা দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছে বলে জানা গেছে। গতকাল ঢাকার পাইকারি বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি পাইকারিতে ছিল ৪৩ টাকা, যা চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকা বা তারও বেশি দামে। টিসিবির তথ্যমতে, গতকাল ঢাকার বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। আর গত বছর এই সময়ে ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকার মধ্যে। গতকাল মানভেদে আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি ছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। গত বছরের এই সময়ে ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে। পেঁয়াজের বাজার পরিস্থিতির বিষয়ে শ্যামবাজার কৃষিপণ্য আড়ত বণিক সমিতির সভাপতি হাজি মো. সাঈদ কালবেলাকে বলেন, দেশি পেঁয়াজ কমে আসায় বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজের চাহিদা বেড়েছে। তবে সীমান্ত এলাকায় আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হওয়ায় পাইকারি বাজারে এসে দাম বাড়ছে। চাহিদার তুলনায় পেঁয়াজের ঘাটতি নেই। অন্যদিকে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের পাইকারি বাজার হামিদুল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস জানান, তাদের মার্কেটে দেশি পেঁয়াজ কম। আমদানি করা পেঁয়াজ থাকলেও কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা বেড়ে ৪৫ থেকে ৪৭ টাকায় উঠেছে। সার্বিক বিষয়ে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান কালবেলাকে বলেন, প্রয়োজনের অতিরিক্ত কেনাকাটায় বাজারের ওপর আরও চাপ বাড়ে। তবে বাজারে দাম বাড়তে থাকলে ভোক্তার মধ্যে এক ধরনের অস্থিরতা কাজ করে। এজন্য অনেকে এক দিনের পরিবর্তে এক সপ্তাহের বাজার করেন। তবে এটি সঠিক সমাধান না। এখন যেটি হচ্ছে, বাজারের ওপর কারও নিয়ন্ত্রণ নেই। হতে পারে এ সুযোগে গুজবও কাজ করছে।
১১ আগস্ট, ২০২৩

নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিন
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের তুলনায় জুনে বেশিরভাগ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। বেশ কিছু পণ্য রয়েছে, যেগুলোর দাম প্রতিমাসেই দফায় দফায় বেড়েছে। ভোজ্যতেলের দাম নিয়ে ভোক্তার অস্বস্তি অনেক দিনের। বাজার কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। পেঁয়াজের দাম নিয়ে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল। আমদানির পরও খুচরা বাজারে কোনো প্রভাব পড়েনি। বাজারে সরবরাহ নেই, এ অজুহাতে আদার দাম বাড়ানো হয়েছে অনেক আগেই। গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, পবিত্র ঈদুল আজহা ঘিরে মসলার বাজারে উত্তাপ ছড়াচ্ছে জিরা ও এলাচ। দাম বেড়েছে দেড় থেকে তিনগুণ। চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে এখন প্রতি কেজি জিরা বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ টাকায়। বিভিন্ন হাত ঘুরে এ জিরা খুচরা পর্যায়ে ১ হাজার টাকার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। গত এপ্রিলে একই জিরা বিক্রি হয় ৪০০ টাকা কেজি দরে। গত বছর বিক্রি হয়েছিল ৩৫০ টাকা দরে। পাইকারি বাজারে গুয়াতেমালার এলাচ মানভেদে ১ হাজার ২৫০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ভারতের এলাচ ১ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লবঙ্গের দামও বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। খাতুনগঞ্জে চলতি সপ্তাহে কেজিতে ৭০০ টাকা বেড়ে লবঙ্গ ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতি কেজি চিনি ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। বাংলাদেশের বাস্তবতা হচ্ছে, এখানে বাজার ব্যবস্থাপনা মোটেই সংগঠিত নয়। এর সুযোগ নিয়ে একশ্রেণির ব্যবসায়ী বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। কোনো কোনো সময় বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেও পণ্যের দাম বাড়ানো হয়। বাজারে পণ্যের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে একটি অদৃশ্য সিন্ডিকেটের কথা শোনা যায়। এ সিন্ডিকেট বাজার নিয়ন্ত্রণ করে, এমন কথাও চালু আছে। বাংলাদেশের বাজারে পণ্যের দাম বাড়ানোর জন্য অনেক ক্ষেত্রেই কোনো উপলক্ষ প্রয়োজন পড়ে না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলার সংকট, শুল্কহার বৃদ্ধির কারণে এলাচ ও জিরার আমদানি এবার কম হয়েছে। এ কারণে এসব মসলার দাম বাড়তি। কোরবানির ঈদে এমনিতেই মসলার চাহিদা বেশি থাকে। ব্যবসায়ীদের ধারণা, কোরবানি ঘিরে চাহিদা বেশি থাকে; সে অনুযায়ী তো আমদানি হয়নি। ফলে দাম বাড়তি। কোরবানির পর দাম কমে যাবে। অনেকে মনে করছেন, মসলার বাজারে চোরাচালান বেড়েছে। মসলার প্রকৃত আমদানিকারকরা মসলা থেকে দূরে সরে গেছেন চোরাচালানের কারণে। ঋণপত্র খুলতে কড়াকড়ি, ডলার সংকট এবং শুল্কহার বাড়িয়ে দেওয়ায় মসলা পণ্যের দাম বেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। চাল, আটা, চিনি, তেল, মাছ-মাংস-সবজি নাগালের ভেতরে নেই কোনোটাই। নিত্যপণ্যের বাজারে দিন দিন অস্থিরতা বাড়ছেই। দফায় দফায় দাম বেড়ে এখন প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা। মাস দুয়েক আগেও ১৫০ থেকে ১৬০ টাকার মধ্যে ছিল। অর্থাৎ এ সময়ে দাম বেড়েছে প্রতি কেজি ৭০ টাকা। আর শেষ দফায় গত এক সপ্তাহে বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও দাম ছিল ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। বেড়েছে ফার্মের মুরগির ডিমের দামও। প্রতি ডজন ডিমের দাম বেড়েছে ১৫ টাকা। বর্তমানে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। প্রতি হালি ৫০ টাকা। ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের মতো দাম বেড়েছে গরুর মাংসেরও। বেশিরভাগ বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা দরে। অন্যদিকে বাজারে সবজির দামও কিন্তু খুব বেশি স্বস্তিদায়ক নয়। এদিকে স্থিতিশীল রয়েছে মাছের বাজার। বাজারে নেই কোনো মনিটরিংও। মানুষ চরম এক অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যে রয়েছে। এ কথা ঠিক, সারা বিশ্বই এখন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। তবে বাংলাদেশের বাজার ব্যবস্থায় কোনো মনিটরিং না থাকায় অসৎ ব্যবসায়ীরা যা ইচ্ছা তাই করার সাহস দেখাচ্ছেন। মজুতদারদের অপতৎপরতাও সংকট বাড়াচ্ছে। ঈদে পণ্যমূল্য যাতে ভোক্তাদের সাধ্যের মধ্যে থাকে তার জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। মনিটরিং বাড়াতে হবে। পণ্য যেন ভোক্তাসাধারণের কাছে সহজলভ্য হয়, সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। আমরা আশা করব, সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আর কে চৌধুরী, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান এবং সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের উপদেষ্টা
২৪ জুন, ২০২৩
X