জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচন বানচাল করার অপচেষ্টা, সাংবিধানিক ধারা ধ্বংস করার চক্রান্ত ব্যর্থ হয়ে গেছে। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা, সমালোচনা, বিশ্লেষণ, গবেষণা হচ্ছে। শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় যুবজোটের জাতীয় কমিটির সভায় যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা সমুন্নত রেখে নির্বাচিত সংসদ যথাসময়ে কার্যক্রম চালু করেছে। এর মধ্য দিয়ে দেশে অস্বাভাবিকভাবে সরকার অদল-বদলের চক্রান্ত মুখ থুবড়ে পড়েছে, ব্যর্থ হয়েছে। সরকার উৎখাতের যুদ্ধের ভেতরে নির্বাচন সম্পন্ন করা, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির ও দেশের জন্য রাজনৈতিক সাফল্য। এই সাফল্যের ওপর দাঁড়িয়ে নতুন সরকার যাত্রা শুরু করেছে।
তিনি বলন, আমি মনে করি, যারা নির্বাচনের বিগত ৫ বছর ধরে সরকার উৎখাতের হুংকার ছেড়েছে, চক্রান্ত করেছে, চেষ্টা করেছে তারা তাদের লক্ষ্য হাছিলে ব্যর্থ হলেও হাল ছাড়েনি। রাজনীতির অঙ্গনে বিএনপি-জামায়াত, কতিপয় রাজনীতিক মোল্লারা নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতিতে আবারও সরকার উৎখাতের আওয়াজ তোলার চেষ্টা করছে।
বাংলাদেশ আর কতদিন সরকার উৎখাতের খেলার চক্রের ভেতরে ঘুরপাক খেতে থাকবে এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, এটার একটা নিষ্পত্তি হওয়া দরকার। কারণ এই মুহূর্তে ইউক্রেন যুদ্ধ, গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণের ঘটনা, লোহিত সাগরে পাল্টাপাল্টি আক্রমণ- সবকিছু মিলিয়ে পৃথিবীতে অস্থিরতা। সামরিক তৎপরতার ফলে পৃথিবীর অর্থনীতিতে বিভিন্ন রকম ধাক্কা লাগছে। এ রকম একটা পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে অর্থনীতি সংকটের ভেতর দিয়ে এগোচ্ছে।
মূল্যস্ফিতি, দ্রব্যমূল্য, নিত্যপণ্যের বাজার এখানো আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, নির্বাচনের আগেও নিত্যবাজার অস্থির ছিল, নির্বাচনের পরেও স্বাভাবিক হয়নি। বাজারে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য আছে। দেশের আমদানি-রপ্তানি খাতে বিভিন্ন রকম সমস্যা, জ্বালানি সংকট সবকিছু মিলিয়ে সরকারকে একটা গভীর অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।তিনি বলেন, এ রকম পরিস্থিতিতে দেশ বাঁচাতে, মানুষ বাঁচাতে, অর্থনীতি বাঁচাতে হলে সবকিছুর আগে নিত্যপণ্যের বাজারকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। মূল্যস্ফিতি সহ্যের ভেতরে আনতে হবে- এটাই এ মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক কর্তব্য।
১৪ দলের অন্যতম এই শরিক নেতা বলেন, নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিএনপি-জামায়াত চক্রের আবার সরকার উৎখাতের হুংকারে- জনজীবনের সংকট মোকাবিলার কাজ আড়ালে চলে যাচ্ছে। এবার অস্বাভাবিকভাবে ক্ষমতা দখলের চক্রান্ত বাদ দিয়ে সাংবিধানিক ধারার মধ্যে থেকে কীভাবে সমাজের, রাজনীতি, গণতন্ত্রের, অর্থনীতি ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো সংশোধন করা যায়- সে বিষয়ে মনোনিবেশ করুন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় যুব জোটের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম সুজন, কার্যকারী সভাপতি আমিনুল আজিম বনিসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
মন্তব্য করুন