পটুয়াখালী পৌরসভার উন্নয়ন ৮০০ মিটার এলাকায় সীমাবদ্ধ
দেশের প্রাচীন পৌরসভার একটি হলো পটুয়াখালী পৌরসভা। গত পাঁচ বছর এই পৌরসভার তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি বললেই চলে। স্থানীয়দের মতে, মহিউদ্দিন আহমেদ মেয়র হওয়ার পর যে দুয়েকটি উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন, তা মাত্র ৮০০ মিটার এলাকার মধ্যে হয়েছে। অর্থাৎ একটি সেলফি রোড এবং দুটি লেক ছাড়া এলাকার আর কোনো উন্নয়ন হয়নি। তবে দৃশ্যমান কিছু উন্নয়নের নামে হয়েছে লুটপাট। এক রাস্তা নির্মাণে তিনবার বরাদ্দ, শহীদ মিনার এবং বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণে অনিয়ম, সরকারি কেনাকাটা এবং ঠিকাদারি কাজে দুর্নীতি, হত্যা, জমি-খাল দখল, স্বজনপ্রীতিসহ নানা অভিযোগ উঠেছে মেয়র মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে। ১৮৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই পৌরসভার বর্তমান আয়তন ২৬ বর্গকিলোমিটার। পটুয়াখালী শহরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে দৃষ্টিনন্দন সড়ক। কিছুদূর গেলেই চোখে পড়ে আলোচিত সেলফি রোড। এর কাছেই রয়েছে তিনটি কাঠের কালভার্ট, একটি শহীদ মিনার এবং একটি শিশু পার্ক। উন্নয়নের এই ছোঁয়া ৮০০ মিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ। বাকি ৯০ ভাগ সড়ক এবং স্থাপনায় কোনো উন্নয়ন হয়নি। ফলে বর্ষা মৌসুমে পানিতে ডুবে থাকা আর শুষ্ক মৌসুমে ধুলাবালুতে অতিষ্ঠ পটুয়াখালীর মানুষ। যানবাহন চলাচলে পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগ। অভিযোগ উঠেছে, দৃশ্যমান দুয়েকটি উন্নয়ন দেখিয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি বরাদ্দ লুটপাট করেছে। এমনকি অনিয়ম-দুর্নীতির পথ পরিষ্কার রাখতে পৌরসভায় নিজের লোকজন নিয়োগ দিয়ে লুটপাটের সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন মেয়র মহিউদ্দিন। শহরে শহীদ মিনার এবং বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণের নামেও হরিলুট হয়েছে। ৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ প্রকল্প নেওয়া হয়। প্রকল্পের আওতায় শহীদ মিনার ছাড়াও একটি জাদুঘর এবং রেস্টুরেন্ট করার কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে শহীদ মিনার ছাড়া আর কিছু হয়নি। বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণে বরাদ্দের ২ কোটি টাকা নিজের ব্যাংক হিসাব নম্বরে গচ্ছিত রাখেন মেয়র মহিউদ্দিন। এ নিয়ে সমালোচনার মুখে ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি ম্যুরাল নির্মাণ করান তিনি। কিন্তু নির্মাণে অনিয়ম নিয়ে স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়েন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। পরে ম্যুরালটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা হয়। প্রতি বছর পৌরসভায় ৮ কোটি টাকার কাগজপত্রসহ স্টেশনারি মালপত্রের প্রয়োজন হয়। সবশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরে দরপত্রের মাধ্যমে প্রিন্টিং এবং স্টেশনারি মালপত্র কেনা হয়। এরপর থেকে দরপত্র ছাড়াই কেনা হচ্ছে মালপত্র। পৌরসভার তিতাস মোড় থেকে রুস্তম হাওলাদারের কালভার্ট পর্যন্ত একটি সড়ক নির্মাণে তিনবার প্রকল্প গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে ৪ কোটি টাকার বালু ভরাট, ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং সবশেষ ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে পুনর্নির্মাণ ও প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ডাক্তার শফিকুল ইসলাম জানান, গত পাঁচ বছরে ৮০ ভাগ রাস্তাঘাটের কোনো উন্নয়ন হয়নি। এতে ভোগান্তি পোহাচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দারা। পটুয়াখালী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আজিম উদ্দিন আরজু জানান, গত ৫ বছরে ৯০ কিলোমিটার রাস্তার উন্নয়নে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। কিছু কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজ আগামী ৩ মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ জানান, গত ৫ বছরে ১৮০ কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছে। সব উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করতে আড়াই থেকে ৩ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। ব্যাংক ড্রাফট জালিয়াতি: পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আরজু মেয়রের অত্যন্ত কাছের লোক হিসেবে পরিচিত। একই প্রজেক্টকে বিভিন্ন দপ্তরের কাজ দেখিয়ে বিল আদায়ে সব ধরনের সহায়তা করেন এই আরজু। মেয়র মহিউদ্দিনের মেয়াদকালের প্রথম চার বছরে যত কনস্ট্রাকশনের কাজ হয়েছে তার মধ্যে ১৩২ কোটি টাকার ব্যাংক ড্রাফটই ছিল ভুয়া। যার মামলা এখনো চলমান। জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকায় পদ্মা ব্যাংকের ম্যানেজারসহ ৯ জন চাকরিচ্যুত হন। কচুরিপানা পরিষ্কারে ব্যয় ৭ কোটি টাকা: পৌরসভার ড্রেনেজ ও খাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে বেতনভুক্ত কর্মী রয়েছেন। যাদের বেতন প্রতি মাসে প্রায় ১৯ লাখ টাকা। এর বাইরে শহরে কচুরিপানা পরিষ্কারের নামে সুপারভাইজার ইউসুফ এবং হারুনর রশিদের মাধ্যমে আলাদা বিল করে প্রতি মাসে ১২ লাখ টাকা উঠানো হয়। যদিও পৌর এলাকায় কচুরিপানার কোনো অস্তিত্বই নেই। এই অপকর্মে সহায়তা করছে পৌরসভার হিসাবরক্ষক কামরুজ্জামান বুলবুল। মশকনিধন ও কম্বল বিতরণে হরিলুট: মশকনিধন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতি বছর হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে ৭২ লাখ টাকা। যদিও কোনো প্রকার মশকনিধন কার্যক্রম হয় না। অথচ মশার অত্যাচারে নগরীর মানুষ অতিষ্ঠ। এদিকে প্রতি বছর শীতার্তদের জন্য ৬০ লাখ টাকার কম্বল ক্রয় দেখানো হয়। কিন্তু বিতরণ করা হয় মাত্র দুই থেকে তিনশ কম্বল। তাও খুবই নিম্নমানের। পৌরসভার তহবিল থেকে দুস্থদের মধ্যে প্রতি মাসে ২ লাখ টাকা, বছরে ২৪ লাখ টাকা সহায়তার হিসাব দেখানো হচ্ছে। কিন্তু এই টাকা প্রকৃত দরিদ্ররা পায়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে। দোকান বরাদ্দে স্বজনপ্রীতি: শহরের পৌর নিউমাকের্ট বাজারে দোকান বরাদ্দের ক্ষেত্রেও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ রয়েছে মেয়রের বিরুদ্ধে। জানা গেছে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে মেয়র মহিউদ্দিন ও তার বন্ধু হাফিজুর রহমান লোকজন নিয়ে শহরের পৌর নিউমাকের্ট বাজারে কিচেন মার্কেট করার ঘোষণা দিয়ে সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নিতে মৌখিক নির্দেশ দেন। ব্যবসায়ীরা প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নিতে আপত্তি জানান। কিন্তু ওই বছরের ৬ অক্টোবর রাতে মার্কেটে আগুন লাগে। এতে বাজারের শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আংশিক ও সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়। এ বিষয়ে পটুয়াখালী শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. এনায়েত হোসেন বলেন, শহরের পৌর নিউমাকের্ট বাজারে আমার ওষুধের দোকান ছিল। কিন্তু আগুনে ২০২১ সালে নিউমার্কেট বাজারের আমার দোকান পুড়ে যায়। কিন্তু মেয়র আমাকে সেখানে দোকান বরাদ্দ দেয়নি। অথচ নামে-বেনামে দোকান পেয়েছেন মেয়রের চাচাতো ভাই, ভাতিজা, জেলা যুবলীগ সভাপতি ও কাছের লোকজন। পৌর পরিষদের ১২ জন কাউন্সিলর দোকান পেয়েছেন। এর বাইরে দৌড়ঝাঁপ করে যারা দোকান পেয়েছেন তাদের গুনতে হয়েছে নির্মাণ ব্যয়ের তিনগুণ বেশি টাকা। খালের ওপর বাসভবন: অভিযোগ উঠেছে, পৌরসভার আওতাধীন এলাকার নদী-খাল-জলাধার রক্ষার দায়িত্ব যার, তিনিই এসব দখল করে বসে আছেন। ফৌজদারি খালের ওপর মেয়র নির্মাণ করেছেন বহুতল ভবন, যা এলাকায় টাইটানিক নামে পরিচিত। ওই এলাকার নদীও তারই দখলে। জানা যায়, নদী রক্ষা কমিশন নদী ও খাল দূষণ বন্ধ এবং নদী ও খাল থেকে মেয়রের বাসভবনসহ সব স্থাপনা সরাতে নির্দেশ দিলেও মেয়র তাতে কর্ণপাত করেননি। পরে ১৫ দিন সময় দিয়ে এসব সরানোর নির্দেশ দিয়ে চিঠি দেওয়া হয় মেয়রকে। তিনি তাতেও কর্ণপাত করেননি। এরপর গত বছরের ১৪ মে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। আদালতের নির্দেশ অমান্য: মার্কেটে দোকান বরাদ্দ নিয়ে করা এক মামলায় আদালতে হাজির হন মেয়র মহিউদ্দিন। আদালতে তিনি ব্যবসায়ীদের দোকান বরাদ্দ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, দোকান বরাদ্দের ক্ষেত্রে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের অগ্রাধিকার এবং জমাকৃত অগ্রিম জামানত নতুন সালামির সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। অথচ মেয়রের কাছে দোকানের বিষয়ে জানতে চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ‘হাইকোর্টে গেছো, এখন হাইকোর্ট ঘর দেবেন, আমার কাছে কোনো ঘর নাই।’ মামলার বাদী রফিক গাজী বলেন, অগ্নিকাণ্ডের পর মেয়রের ডাকে ব্যবসায়ীরা পৌরসভায় যান। এরপর মেয়র লোকজনের স্বাক্ষর নেন। পরে ওই স্বাক্ষর জাল-জালিয়াতির করে মেয়র আদালতে উপস্থাপন করেন। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়র বলেন, পটুয়াখালী পৌরসভা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কিচেন মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। তবে এখনো শেষ হয়নি। হত্যার অভিযোগ: জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরী পটুয়াখালী পৌরসভার সুতাখালী খাল দেখতে যান এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। তখন খাল রক্ষার দাবি নিয়ে এগিয়ে আসেন বৃদ্ধ মো. মাকসুদুর রহমান তালুকদার। মেয়র সেখানেই তাকে হুমকি দেন। কিছুদিন পর শ্মশানে দাহ করার স্লাবের নিচ থেকে ওই বৃদ্ধকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ সময় দাহ করার জন্য রাখা কাঠ তার শরীরের ওপর ছিটানো ছিল। পরে তাকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তখন কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের বড় মেয়ে মাকসুদা আক্তার মিশু বলেন, বাবার মৃত্যুর সংবাদ শুনে আমি ঢাকা থেকে আসি। ততক্ষণে লাশ দাফন হয়ে যায়। আমাকে জানানো হয়, আমার বাবা স্ট্রোক করেছিল। যদিও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাবার শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তিনি দাবি করেন, তার বাবাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। মেয়রের লোকজন আমাদের বাসায় এসে হুমকি দিচ্ছে।
০৫ মার্চ, ২০২৪

অনিয়ম খতিয়ে দেখতে পবিপ্রবিতে ইউজিসি
সাম্প্রতিক নিয়োগের অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি খতিয়ে দেখতে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) তদন্ত কমিটি। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে তিন সদস্য বিশিষ্ট ওই কমিটি তদন্ত শুরু করেন। তিন সদস্য হলেন- কমিটির আহ্বায়ক ইউজিসির সচিব প্রফেসর ড. ফেরদৌস জামান, সদস্য ইউজিসির অর্থ ও হিসাব বিভাগের উপ পরিচালক মো. আব্দুল আলীম ও সদস্য সচিব ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের উপ পরিচালক মো. আমিরুল ইসলাম শেখ। তদন্ত কমিটি নিয়োগ সংক্রান্ত যেসব বিষয়ে তদন্ত করে সেগুলো হলো : আর্থিক মঞ্জুরী/অনুমোদন ছাড়া নিয়োগ, বিশ্ববিদ্যালয় আ্যক্ট ভঙ্গ করে নিয়োগ, পদবিহীন নিয়োগ, সংশ্লিষ্ট পদে আবেদন না করেও নিয়োগ ও নিয়োগের মানদণ্ড। প্রাথমিক তদন্ত শেষে দুপুর ২টায় ড. ফেরদৌস জামান সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গঠিত আমাদের তদন্ত কমিটির প্রাথমিক তদন্ত শেষ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র সরবরাহ করেছে। আমরা উভয়পক্ষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি এবং বক্তব্য শুনেছি।  অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন এটা বলা কঠিন। আমরা দ্রুত সময়ে আমাদের তদন্ত রিপোর্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিব। শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ২৭ ডিসেম্বর পবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পবিপ্রবিতে নিয়োগে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগের আবেদন করেন। সেই আবেদনের ভিত্তিতে চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ২৮ জানুয়ারি ইউজিসি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

পবিপ্রবিকে হারিয়ে শুভ সূচনা যবিপ্রবির ছাত্রীদের
আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় নারী ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় নিজেদের প্রথম ম্যাচে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে (পবিপ্রবি) হারিয়েছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি)। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দুপুরে খেলাটি শুরু হয়। টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) নারী ক্রিকেট দল। ১০ ওভারের খেলায় দুই উইকেট হারিয়ে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) ৮৬ রান করে। এর বিপরীতে ৮৭ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে মাঠে নামে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) নারী ক্রিকেট দল। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে পবিপ্রবি নারী ক্রিকেট দল।  ৯ ওভার ১ বলে ৩১ রানে পবিপ্রবিকে অলআউট করে সহজ জয় তুলে নেয় যবিপ্রবির নারী ক্রিকেট দল। খেলায় সর্বোচ্চ ২৭ রান সংগ্রহ করে অপরাজিত থাকেন যবিপ্রবি নারী ক্রিকেট দলের সদস্য অরুন্ধতী রায়, ২০ রান করে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করেন যবিপ্রবি নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক চৈতী। ৩ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির খাতায় নাম লেখান যবিপ্রবি নারী ক্রিকেট দলের সদস্য শিউলি। একই দলের কোহিনূর ও মুক্তা দুটি করে উইকেট নেন।
০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

পবিপ্রবির নিয়োগে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তদন্তে ইউজিসি
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) অনুমোদনহীন নিয়োগ, বিশ্ববিদ্যালয় নীতিমালা ভঙ্গ করে নিয়োগ, পদবিহীন নিয়োগ, সংশ্লিষ্ট পদে আবেদন না করেও নিয়োগ ও নিয়োগের মানদণ্ডসহ নানাবিধ অভিযোগ খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। জানা যায়, ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ মোট ৩৯ জনের নিয়োগের কথা থাকলেও গত ২ ডিসেম্বর রিজেন্ট বোর্ডে সর্বমোট ৫৮ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। মূলত, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ছেলেসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের পরিবারের সদস্যদের নিয়োগ দেওয়া হয়। পাশাপাশি এ নিয়োগে অনুমোদনহীন পদে নিয়োগসহ নানাবিধ অভিযোগ ওঠে, যা পরবর্তীতে দেশের প্রথম শ্রেণির গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়। এসব অভিযোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা (মাউশি) বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগে অনিয়মের প্রেক্ষিতে গত ১৪ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে ওই বিভাগকে অবহিত করার নির্দেশ প্রদান করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সচিব ড. ফেরদৌস জামানকে আহ্বায়ক করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অনান্য সদস্যরা হলেন, ইউজিসির অর্থ ও হিসাব বিভাগের উপপরিচালক মো. আব্দুল আলীম ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের উপপরিচালক মো. আমিরুল ইসলাম শেখ। এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে ইউজিসি সচিব এবং তদন্ত কমিটির আহবায়ক ড. ফেরদৌস জামান জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পবিপ্রবির সাম্প্রতিক নিয়োগে অনিয়ম হওয়ায় তা তদন্তের নির্দেশ দিয়ে চিঠি এসেছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য কমিশন আমাকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে। আমরা দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দিব।
০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

বিজয় দিবস উদযাপন নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মারামারি, বহিষ্কার ২
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের বাগবিতণ্ডা ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার জেরে শাখা ছাত্রলীগের ২ নেতাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র থেকে জানা যায়, মহান বিজয় দিবস উদযাপনে ক্যাম্পাস আলোকসজ্জার অর্থ নিয়ে মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে এ বাগবিতণ্ডা ও মারামারির ঘটনা ঘটে। মূলত আলোকসজ্জায় বরাদ্দকৃত উদ্বৃত্ত অর্থ নিয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সম্পাদক মেহেদী হাসান তারেক, শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মশিউর রহমান বাবু এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফ হোসাইন মারামারি ও হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। ঘটনার ফলে একই দিন সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মশিউর রহমান বাবু ও সাইফ হোসেনকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। একইসঙ্গে এ দুই নেতার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে আগামী ৭ দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে লিখিত জবাব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সদ্য বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা মশিউর রহমান বাবু জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আলোকসজ্জা উপকমিটিতে আমি ছাত্রলীগ প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। এতে শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তারেক আমার কাছে চাঁদা দাবি করে। আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সে আমাকে হুমকি দেয়। পরবর্তীতে তার সঙ্গে বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়।’ এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আমার বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের পরবর্তী ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে মনোনীত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এতে প্রতিহিংসাবসত মেহেদী হাসান তারেক আমার বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় কমিটিকে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করেছে।’ অপর বহিষ্কৃত নেতা সাইফ হোসেন জানান, ‘কোন অপরাধে আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে তা আমি অবগত নই, তবে আমি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মশিউর রহমানের সঙ্গে রাজনৈতিক পথচলায় একসঙ্গে রয়েছি। তার (মশিউর) পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এ কারণেই আমাকে জড়িয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে।’ এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তারেক বলেন, ‘ক্যাম্পাসে যেহেতু গ্রুপিং আছে আর আমি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দায়িত্বে আছি তাই তারা আমাকে হেনস্তা করে নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে চেয়েছে। এর প্রেক্ষিতেই বিকেলে তারা আমার ওপর অতর্কিত হামলার চেষ্টা করেছে। আর যারা গঠনতন্ত্রের পরিপন্থি কার্যকালাপে যুক্ত হবে তাদের জায়গা বাংলাদেশ ছাত্রলীগে নেই।’ তবে তিনি আলোকসজ্জা উপকমিটির কাছ থেকে চাঁদা চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় দিবস উদযাপনের অর্থ নিয়ে হাতাহাতির এ ঘটনার কারণ জানতে চাওয়া হলে বিজয় দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. ফজলুল হক বলেন, ‘বিজয় দিবস সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের জন্য কয়েকটি উপকমিটি করা হয়েছিল, উপকমিটি বাজেট উত্থাপন করলে সে বাজেট পাশ করা হয়, পরবর্তী কোনো ঘটনার দায়ভার মূল কমিটি বহন করবে না।’ এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসু বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সংঘর্ষের কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি, তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাত্রলীগের দুজন বহিষ্কৃত হওয়ার সংবাদ জেনেছি।’
২০ ডিসেম্বর, ২০২৩

পবিপ্রবিতে ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) আন্তঃঅনুষদীয় ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু হয়েছে। সোমবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী। আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসু, শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক সুজন কান্তি মালি, উপপরিচালক আবু হানিফ প্রমুখ।  প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত বলেন, ‘খেলাধুলা শুধু শারীরিক সুস্থতা আনে। এটি মন ও মানসিকতার উন্নতি সাধন করে।’ উদ্বোধনী খেলায় সিএসই ও ইডিএম অনুষদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।
২১ নভেম্বর, ২০২৩

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ
দৈনিক কালবেলার অনলাইন সংস্করণে ৩০ সেপ্টেম্বর ‘পবিপ্রবি ছাত্রলীগ সভাপতির চাঁদা আদায়ের ভিডিও ফাঁস!’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আরাফাত ইসলাম খান সাগর। প্রতিবাদলিপিতে আরাফাত তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে প্রকাশিত সংবাদ সত্য নয় বলে দাবি করেছেন। আরাফাত ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন শেখ রাসেল হলের কনস্ট্রাকশন সাইড থেকে আমার নেতৃত্বে রড নিয়ে যাওয়া এবং আমির ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনের ম্যানেজার এনামুল হোসেনকে মারধর বিষয়ে যে সংবাদ প্রকাশ করা হয় তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্রের অংশ এটি। যেদিন রাতে ঘটনা ঘটেছিল বলে উল্লেখ করা হয় সেদিন আমি ঢাকায় অবস্থান করি। যে ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে সেখানে আদৌ আমার ছবি স্পষ্ট দেখা যায়নি। আর যে ভয়েস ব্যবহার করা হয়েছে সেটি সুপার এডিটেড। যে চেহারা দেখানো হয়েছে তা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে লাগানো।’ তিনি বলেন, ‘আমির কন্সট্রাকশনের ম্যানেজার সংবাদ সম্মেলনে একবারও আমার নাম উচ্চারণ করেননি। সেখানে উল্লেখ করা গোলাম রব্বানী সুরিদ সাবেক ছাত্রলীগের সহসভাপতি বটে কিন্তু বর্তমানে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন এবং ইমরান হোসেনের নাম উল্লেখ করা হয়। কারও ব্যক্তিগত অপকর্মের দায় ছাত্রলীগ নেবে না।’ তিনি বলেন, ‘১৯ অক্টোবর প্রকাশিত গভীর রাতে হলে তরুণী নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা বিষয়ে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, সাজানো ও বানোয়াট। সম্পূর্ণ ভিডিও প্রকাশ না করে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য আংশিক ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট এবং বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমি অগ্রণী ভূমিকায় অবতীর্ণ থাকায় প্রশাসনের কতিপয় জামায়াত-বিএনপিপন্থি শিক্ষক-কর্মকর্তাদের রোষানলে পড়েছি। তারা সম্মিলিতভাবে ঠিকাদারকে ব্যবহার করে আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।’
২১ অক্টোবর, ২০২৩

পবিপ্রবি প্রশাসনের বিরুদ্ধে চার কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যক্তিগত সম্পর্কের খাতিরে মাস্টার রোলের চার কর্মকর্তা-কর্মচারীকে প্রতি মাসে ৪৫ দিনের বেতন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। রেজিস্ট্রার অফিসের তথ্য মতে, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন দপ্তরের ২৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী মাস্টাররোলে কর্মরত আছেন। তাদের সকলের মাসিক বেতনের হিসাব ৩০ দিনে হলেও চারজন কর্মকর্তা-কর্মচারী একদিন অফিস করে বেতন পান দেড় দিনের অর্থাৎ এক মাস অফিস করে ৪৫ দিনের বেতন নিচ্ছেন। ৪৫ দিন বেতন পাওয়া ডকুমেন্টস প্রতিবেদকের কাছে আছে। জানা যায়, প্রায় এক যুগ ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার রোলে চাকরি করলেও বর্তমান প্রশাসন তাদেরকে অধিক বেতন দিচ্ছে।   অভিযোগ রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় তাদেরকে বেশি বেতন দিচ্ছেন। এসব অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে কেউ কেউ মাসে ১০ দিনও অফিসে উপস্থিত থাকেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে পাওয়া তথ্য থেকে জান যায়, আয়শা সিদ্দিকা, মো. শামসুল হক (রাসেল), মো. সুমন হোসেন, নাসরিন আক্তার অতিরিক্ত বেতন পাচ্ছেন।   আয়শা সিদ্দিকা কর্মকর্তা পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন বাদলের স্ত্রী। এ ছাড়াও রয়েছেন রেজিস্ট্রার অফিসের সংস্থাপন শাখার মো. শামসুল হক (রাসেল) শিক্ষা ও বৃত্তি শাখার নাসরিন আক্তার এবং পরিবহন শাখার ড্রাইভার মো. সুমন হোসেন। অন্তত দশ জন শিক্ষক ও কর্মকর্তা আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, বর্তমান এই চারজনকে  বিশেষ সুবিধা দেওয়ায় উদ্দেশে এই অবৈধ নিয়মের চালু করেছিলেন। অনতিবিলম্বে এই নিয়ম বাতিল করা হোক এবং অতিরিক্ত অর্থ ফেরত নেওয়া হোক। এদের অনেকেই বিশেষ সুবিধা পাওয়া ফলে সিনিয়র অনেক অধ্যাপকের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছেন। এমনকি সিনিয়র এক শিক্ষকদের গায়ে হাত দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে মো. শামসুল হকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি ক্যাম্পাসের প্রথম ব্যাচের ছাত্র। দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার রোলে কাজ করছি। প্রশাসন ভালো মনে করেই অতিরিক্ত বেতন দিচ্ছে। নিয়মিত অফিস না করার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার সিনিয়র কর্মকর্তা আছে, এ বিষয় তারা দেখবেন। এ বিষয়ে আয়শা সিদ্দিকার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, মাঝে মধ্যে আমাদেরকে অতিরিক্ত কাজ করতে হয়। এজন্য আমরা বেতন বেশি পাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসুকে কয়েক বার ফোন দেওয়া পরে সে ফোন ধরে বিরক্ত দেখিয়ে ফোন কেটে দেয়। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত বলেন, ওই চারজন নির্ধারিত আট ঘণ্টার পরে অতিরিক্ত সময় কাজ করেন তাই তাদেরকে বেশি বেতন দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু নির্ধারিত সময়েও তারা অফিস করেন না, অতিরিক্ত কাজ কিভাবে করেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা করলে তারা বেতন পাবে না। বিভিন্ন কারণে তাদের চাকুরি স্থায়ী হয়নি তাই সিম্প্যাথি থেকে তাদেরকে বাড়তি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
০১ জানুয়ারি, ১৯৭০

পবিপ্রবিতে ছাত্রলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি আরাফাত ইসলাম খান সাগর ও তার অনুসারী কিছু ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান নির্মাণ কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চাঁদাবাজি, নির্মাণকাজে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মারধরের পাশাপাশি প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে স্থানীয় থানায় এবং উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগীরা। বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন দুই হল শেখ রাসেল হল ও শেখ হাসিনা হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করা হয়। জানা যায়, মঙ্গলবার রাত আনুমানিক নয়টায় পবিপ্রবি ক্যাম্পাসে নির্মাণাধীন শেখ রাসেল হলের সামনে নির্মাণকাজে নিযুক্ত ব্যক্তিদের ছাত্রলীগ নেতাকর্মী কর্তৃক হেনস্তার ঘটনা ঘটে। ঘটনায় ভুক্তভোগী হিসেবে আছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মের্সাস আমির ইন্জিনিয়ারিং করপোরেশনের প্রজেক্ট ম্যানেজার এনামুল হকসহ তার অন্যান্য সহযোগীরা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প ব্যবস্থাপক এনামুল হক বুধবার রাতে দুমকি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'ছাত্রলীগ নেতারা মঙ্গলবার রাতে তার কাছে চাঁদা দাবি করেন। এর আগেও তারা চাঁদা নিয়েছেন। এখন আরও চাঁদা দাবি করছেন। চাঁদা না দিলে নির্মাণ কাজ বন্ধসহ শ্রমিকদের ওপর হামলা করার হুমকি দিয়েছেন।' সংবাদ সম্মেলনে এনামুল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আরাফাত ইসলাম সাগর ও তার অনুসারীরা প্রায়ই তার কাছে চাঁদার জন্য আসেন। চাঁদা না দিলে কাজ বন্ধ করে দেওয়াসহ বিভিন্ন হুমকি দেন তারা। সম্প্রতি তিনি তাদের চাঁদাও দিয়েছেন। এখন তারা আরও টাকা দাবি করছেন। তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার রাতে নির্মাণাধীন শেখ রাসেল হলের সামনে থেকে ছাত্রলীগ সভাপতির অনুসারী গোলাম রাব্বানী সুহৃদ, ইমরান হোসেনসহ ছয়-সাত জন ছাত্রলীগ নেতা একটি ভ্যানে করে জোর করে নির্মাণ কাজের রড নিয়ে যাচ্ছিলেন। প্রকল্পের সুপারভাইজার সালাউদ্দিন সিকদার কথা বলতে গেলে তারা বলেন যে ছাত্রলীগ সভাপতি তাদেরকে রড নিয়ে যেতে বলছেন। খবর পেয়ে এনামুল ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের রড নিতে বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ছাত্রলীগ নেতা গোলাম রাব্বানী সুহৃদ এনামুল, সালাউদ্দিনসহ নির্মাণ শ্রমিকদের মারধর করেন। তারা এনামুলের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যান। মারধরে আহত সালাউদ্দিনকে দুমকি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছে। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে পবিপ্রবি ছাত্রলীগ সভাপতি সাগরের অনুসারী গোলাম রাব্বানী সুহৃদ বলেন, 'এই অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাড়ির অবৈধ নম্বর প্লেট, বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানো, মেয়েদেরকে উত্যক্ত করাসহ নানা অনিয়মের বিষয়ে কথা বলতে গেলে ম্যানেজার এনামুল আমাদের মারতে উদ্যত হন। আত্মরক্ষার জন্য হলে অন্যদের ফোন করা হলে তারা পালিয়ে যান।' অভিযোগের ব্যাপারে দুমকি থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল হান্নান বলেন, চাঁদা দাবির ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা নিশ্চিত করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটিতে বিষয়টি তোলা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
X