পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি আরাফাত ইসলাম খান সাগর ও তার অনুসারী কিছু ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান নির্মাণ কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চাঁদাবাজি, নির্মাণকাজে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মারধরের পাশাপাশি প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে স্থানীয় থানায় এবং উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগীরা।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন দুই হল শেখ রাসেল হল ও শেখ হাসিনা হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করা হয়।
জানা যায়, মঙ্গলবার রাত আনুমানিক নয়টায় পবিপ্রবি ক্যাম্পাসে নির্মাণাধীন শেখ রাসেল হলের সামনে নির্মাণকাজে নিযুক্ত ব্যক্তিদের ছাত্রলীগ নেতাকর্মী কর্তৃক হেনস্তার ঘটনা ঘটে। ঘটনায় ভুক্তভোগী হিসেবে আছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মের্সাস আমির ইন্জিনিয়ারিং করপোরেশনের প্রজেক্ট ম্যানেজার এনামুল হকসহ তার অন্যান্য সহযোগীরা।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প ব্যবস্থাপক এনামুল হক বুধবার রাতে দুমকি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'ছাত্রলীগ নেতারা মঙ্গলবার রাতে তার কাছে চাঁদা দাবি করেন। এর আগেও তারা চাঁদা নিয়েছেন। এখন আরও চাঁদা দাবি করছেন। চাঁদা না দিলে নির্মাণ কাজ বন্ধসহ শ্রমিকদের ওপর হামলা করার হুমকি দিয়েছেন।'
সংবাদ সম্মেলনে এনামুল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আরাফাত ইসলাম সাগর ও তার অনুসারীরা প্রায়ই তার কাছে চাঁদার জন্য আসেন। চাঁদা না দিলে কাজ বন্ধ করে দেওয়াসহ বিভিন্ন হুমকি দেন তারা। সম্প্রতি তিনি তাদের চাঁদাও দিয়েছেন। এখন তারা আরও টাকা দাবি করছেন।
তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার রাতে নির্মাণাধীন শেখ রাসেল হলের সামনে থেকে ছাত্রলীগ সভাপতির অনুসারী গোলাম রাব্বানী সুহৃদ, ইমরান হোসেনসহ ছয়-সাত জন ছাত্রলীগ নেতা একটি ভ্যানে করে জোর করে নির্মাণ কাজের রড নিয়ে যাচ্ছিলেন। প্রকল্পের সুপারভাইজার সালাউদ্দিন সিকদার কথা বলতে গেলে তারা বলেন যে ছাত্রলীগ সভাপতি তাদেরকে রড নিয়ে যেতে বলছেন। খবর পেয়ে এনামুল ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের রড নিতে বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ছাত্রলীগ নেতা গোলাম রাব্বানী সুহৃদ এনামুল, সালাউদ্দিনসহ নির্মাণ শ্রমিকদের মারধর করেন। তারা এনামুলের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যান। মারধরে আহত সালাউদ্দিনকে দুমকি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছে।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে পবিপ্রবি ছাত্রলীগ সভাপতি সাগরের অনুসারী গোলাম রাব্বানী সুহৃদ বলেন, 'এই অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাড়ির অবৈধ নম্বর প্লেট, বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানো, মেয়েদেরকে উত্যক্ত করাসহ নানা অনিয়মের বিষয়ে কথা বলতে গেলে ম্যানেজার এনামুল আমাদের মারতে উদ্যত হন। আত্মরক্ষার জন্য হলে অন্যদের ফোন করা হলে তারা পালিয়ে যান।'
অভিযোগের ব্যাপারে দুমকি থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল হান্নান বলেন, চাঁদা দাবির ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা নিশ্চিত করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটিতে বিষয়টি তোলা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন