নতুন প্রজন্ম জানতে পারবে পাকিস্তানের নির্যাতনের কথা : মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী 
মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, পাকিস্তানিরা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে এ দেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সেই চিত্র যারা সচক্ষে দেখেননি তাদের বোঝানো খুব কঠিন। বরেণ্য চিত্রশিল্পী রঘু রাই, ‘রাইজ অব এ নেশন’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে মানুষের নিদারুণ কষ্ট, জীবন বাঁচানোর যে আকুতি, সেটি ফুটিয়ে তুলেছেন। তিনি বলেন, এ চিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে অত্যাচারের চিত্র কিছুটা হলেও নতুন প্রজন্ম জানতে পারবে এবং গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির ক্ষেত্রে এ চিত্রকর্ম সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। রোববার (৫ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ মিলনায়তনে চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে দুর্জয় বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় বিশ্বখ্যাত ভারতীয় আলোকচিত্রী রঘু রাই-এর ‌‘রাউজ অব এ নেশন’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীরা আমাদের মহান পবিত্র ধর্মকে কলঙ্কিত করে, অপব্যখা করে, ধর্মে যা আছে তার বিপরীত ব্যাখ্যা করেছে। এগুলো তারা মৌখিকভাবে বলেনি, লিখিত ফতোয়া দিয়েছে। পাকিস্তান না থাকলে ইসলাম ধর্ম থাকবে না। তারা ভাষা আন্দোলনের সময়ও একই কথা বলেছিল, বাংলা যদি রাষ্ট্রভাষা হয় ইসলাম ধর্ম থাকবে না। বর্তমান সময়েও অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিলুপ্তির পথে। এ ধরনের উদ্যোগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষায় ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের উপাচার্য ড. রুবানা হক, স্কায়র গ্ৰপের পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন এবং দুর্জয় বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা দুর্জয় রহমান বক্তব্য দেন। এরপর মন্ত্রী চারুকলা অনুষদের জয়নুল আবেদীন গ্যালারিতে রঘু রাইয়ের একক চিত্রপ্রদর্শনী বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন। প্রদর্শনীতে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তোলা ৫২টি চিত্রকর্ম স্থান পায়।
০৫ মে, ২০২৪

জাগ্রত হোক তরুণ প্রজন্ম বাঙালি সংস্কৃতির চেতনায়
তরুণ প্রজন্ম নববর্ষকে ধারণ করে আপন মহিমায়। বাঙালি সংস্কৃতির চেতনায় পহেলা বৈশাখ উদযাপনে অংশ নেওয়া কয়েকজন তরুণী জানালেন তাদের ভাবনার কথা। লিখেছেন—শিল্পী নাগ ছবি রনি বাউল আফরিন সুলতানা আফরিন সুলতানা। এবার মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছেন। বছর তিনেক আগে চারুকলা অনুষদের ড্রইং অ্যান্ড পেইন্টিং থেকে মাস্টার্স করেছেন। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে শিশুদের ড্রইং শেখান। চারুকলা অনুষদে পড়ার ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের সহযোগিতা পেয়েছেন অনেক। লেখাপড়া শেষ হলেও মনের টানে চলে আসেন মঙ্গল শোভাযাত্রার কাজে অংশ নিতে। আফরিন সুলতানা বলেন, মনের টানে মঙ্গল শোভাযাত্রার কাজে অংশ নিতে আসি। শিক্ষক, পুরোনো শিক্ষার্থী, নতুন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা হয়। সব মিলিয়ে এক ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হই। এবার সরায় রিকশা পেইন্ট, বিভিন্ন মোটিফ, গ্রাম বাংলার দৃশ্য, পিঠার নকশা ইত্যাদির ওপর নকশা করেছি। ঈদের দুদিন পরই বৈশাখ। মঙ্গল শোভাযাত্রার তহবিলের জন্য যে অর্থ দরকার, তা এবার কম হয়েছে। রমজানের কারণে মানুষের আনগোনাও তুলনামূলক কম ছিল। যে কারণে বিক্রির পরিমাণও কম ছিল। তিনি বলেন, রমজানে মঙ্গল শোভাযাত্রার কাজ করেছি, অনেকে মেনে নিতে পারেন নি। নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখেছেন। অনেকে বলেছেন, রোজা রেখে মানুষের ছবি আঁকছি, নামাজ পড়ছি না। মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে পড়ে আছি। কিন্তু শিল্পীসত্তা ধর্মের বেড়াজালে আবদ্ধ নয়। আসলে যে যা বিশ্বাস করেন। কিন্তু আমি মনে করি—একজন শিল্পী হিসেবে আমি আমার কাজের পাশাপাশি ধর্মও পালন করতে পারি। আমি সেক্টর অনুযায়ী সব কিছু ভাগ করে নিয়েছি, কখন কোন কাজটা করব। মেহেনাজ আশরাফী কারুশিল্প বিভাগে মাস্টার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেনাজ আশরাফী। এবার বর্ষবরণে ১৭৩ এরও বেশি দলগতভাবে প্যাঁচার মুখোশ এঁকেছেন। রোজা রেখে ক্লাস করে মঙ্গল শোভাযাত্রার কাজেও অংশ নিয়েছেন। ক্লান্ত হলেও প্রস্তুতির কাজ চালিয়ে গেছেন। খুলনার মেয়ে মেহেনাজ আশরাফীর মতে, সেহরি খেয়ে সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে যেত। সন্ধ্যায় ইফতার। এ কারণে এবারে সমাগম দিনে একটু কম, রাতে বেশি ছিল। ইফতারের পর মানুষ এসেছে। যারা ঈদে ঢাকায় ছিলেন, তারা চারুকলায় ঘুরতে এসেছেন। কারণ ঢাকায় ঘুরতে যাওয়ার জায়গার খুব অভাব। চারুকলা এমন একটা জায়গা, এত রঙিন, এখানে এলে মানুষের মন ভালো হয়ে যায়। ঈদের সময়ও আমাদের কাজ চলেছে। যারা মঙ্গল শোভাযাত্রার কমিটিতে ছিলেন, তারা এবার ঈদে বাড়ি যাননি। এখানেই ঈদ করেছি। কাঙ্ক্ষিতা কবীর কাঙ্ক্ষিতা কবীর। চারুকলা অনুষদের কারুশিল্প বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। দ্বিতীয়বারের মতো মঙ্গল শোভাযাত্রার অংশ নিয়েছেন। ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে ছোট প্যাঁচা, তুহিন পাখি তৈরি করেছেন। কাঙ্ক্ষিতা কবীরের মতে, ২টা পর্যন্ত ক্লাস করেছেন। এরপর পাখি ঘরে চলে গেছেন। পরিবারের সঙ্গে থাকলেও এখানে কাজ করতে কোনো সমস্যা হয়নি। চারুকলা অনুষদে ভর্তি হওয়া থেকে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া সব কিছুতেই মা তাকে সহযোগিতা করেছেন। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান হওয়ায় অনেক আদরের কাঙ্ক্ষিতা। হাতিরপুলে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকেন। ছোটবেলা থেকেই চারুকলায় তার পড়ার শখ। এজন্য এইচএসসি পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। চান্সও পেয়ে যান। সন্ধ্যা পর্যন্ত মঙ্গল শোভাযাত্রার কাজ করেছেন। কখনো ইফতারের পরও কিছুটা সময় কাজ করে বাড়ি ফিরেছেন। এখানে ইফতারের ব্যবস্থা থাকায় খাওয়া-দাওয়ার কোনো সমস্যা হয়নি জানিয়েছেন কাঙ্ক্ষিতা কবীর।
২২ এপ্রিল, ২০২৪

‘মুজিবনগর দিবসে বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে’
রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেছেন, মুজিবনগর দিবসে দেশবাসীকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে নিজ নিজ অবস্থান থেকে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উদ্যাপনের মাধ্যমে বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করবে। বুধবার (১৭ এপ্রিল) ঐতিহাসিক ‘মুজিবনগর দিবস’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। দিবসটি উপলক্ষে আমি দেশবাসী ও প্রবাসে অবস্থানরত সব বাংলাদেশিকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। এই মাহেন্দ্রক্ষণে আমি কৃতজ্ঞচিত্তে ও গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলার রূপকার, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। স্মরণ করছি জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে, যাদের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার পরিচালনার মাধ্যমে ৯ মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় আমাদের মহান স্বাধীনতা। আমি সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করছি মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী ত্রিশ লাখ বীর মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গনা, শহিদ বুদ্ধিজীবী এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ও সমর্থনকারী সকল স্তরের জনগণ ও বিদেশি বন্ধুদের। মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে পাকিস্তানি শোষকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মুক্তিসংগ্রামের যে পথ চলা শুরু হয়, ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠনের মাধ্যমে তা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল তদানীন্তন মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে স্বাধীন-সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথগ্রহণ করে। তিনি বলেন, মুজিবনগর সরকার গঠনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য ১৯৭০-এর নির্বাচনে জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নেতৃত্বে একটি সাংবিধানিক সরকার আত্মপ্রকাশ করে। মুজিবনগর সরকার গঠনের মাধ্যমে স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামরত বাঙালিদের প্রতি বিশ্ববাসীর সমর্থন ও সহযোগিতার পথ প্রসারিত হয়। জনমত সৃষ্টি, শরণার্থীদের ব্যবস্থাপনা ও যুদ্ধের রণকৌশল নির্ধারণে মুজিবনগর সরকার যে অনবদ্য ভূমিকা পালন করেছে তা বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক অনন্য গৌরবগাঁথার স্বাক্ষর হয়ে থাকবে। রাষ্ট্রপতি বলেন, অনেক ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের মহান স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধু সবসময় রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি একটি সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখতেন। তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে সরকার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বল্লোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে অবস্থান নিয়েছে। নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ আজ বিশ্ববাসীর কাছে রোল মডেল। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনসহ স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে। নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত পদ্মা সেতুসহ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেলসহ মেগাপ্রকল্পগুলো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইতিবাচক অবদান রাখছে বলে তিনি বাণীতে উল্লেখ করেন।
১৭ এপ্রিল, ২০২৪

মুক্তিযুদ্ধের নতুন প্রজন্ম গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে : মেজর হাফিজ
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেছেন, আমরা দেশবাসীর জন্য সংগ্রাম করছি এই সংগ্রামে দেশ অবশ্যই আমাদেরকে জয়ী হতে হবে। এই সংগ্রামে চুল-দাঁড়ি পেকে গেলেও মুক্তিযোদ্ধাদেরকেই নেতৃত্ব দিতে হবে। আপনারা (মুক্তিযোদ্ধা) দেশের আদর্শ। আপনাদের দিকে তাকিয়ে একজন তরুণ অনুপ্রাণিত হবে। মুক্তিযুদ্ধের নতুন প্রজন্ম গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে, মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্বাধীনতা দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মেজর হাফিজ এসব কথা বলেন। রাজধানীর সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে ‘অরক্ষিত স্বাধীনতা, মানবাধিকার ও গণতন্ত্রবিহীন বিপন্ন বাংলাদেশ: আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।  তিনি বলেন, আগামী দিনগুলোতে আমরা-আপনারা আগামী প্রজন্মকে দীক্ষা দিয়ে যাবো দেশকে ভালোবাসো, দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করার মনমানসিকতা অর্জন করো। এটাই হলো আজকের দিনে আমাদের সবার প্রতিজ্ঞা। আমরা যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নেমেছি এই সংগ্রাম ব্যর্থ হতে পারে না। অবশ্যই দুঃশাসনের অবসান হবেই। হাফিজ বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রধান রাজনৈতিক দল তারা জনগণের ভোট পেয়েছে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্যে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে দোষের কিছু নাই। ২৪ বছর অনেক অন্যায়-অবিচার-বঞ্চনার শিকার আমরা হয়েছি। শেখ মুজিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ন্যায্য দাবিদার ছিলেন সেটাই তিনি চেষ্টা করেছেন দোষের কিছুই নাই। কিন্তু তার দলের অনুসারীরা প্রমাণ করে যে, স্বাধীনতার ঘোষণা তিনি দিয়ে গিয়েছেন। তাজউদ্দিন আহমেদ সাহেব মিলিটারি মুভেমেন্ট শুরু হওয়ার পরেই তিনি সম্ভবত সর্বশেষ শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের সঙ্গে দেখা করেছিলেন সেখানে টেপ রেকর্ডার নিয়ে গিয়ে বলেছিলেন, আপনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেন পাকিস্তান সেনা বাহিনী আক্রমনাত্মকভাবে জনতার উপরে আক্রমন করবে শিগগিরই। রাজপথে তারা ছড়িয়ে গিয়েছে। আপনি স্বাধীনতার ঘোষণাটি দেন। তিনি বলেছিলেন, আমি পাকিস্তান ভাঙার দায়িত্ব নিতে পারি না। আমি বিচ্ছন্নতাবাদী হিসেবে চিহ্নিত হবো যদি স্বাধীনতার ঘোষণা দেই, এটি হলো বাস্তব সত্য। আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদকের কথা। দেশের অবস্থা থেকে উত্তরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপির পথ নির্দেশ করেছে তারেক রহমান। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (মহাসচিব) সহ শীর্ষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ পরিশ্রম করে যাচ্ছেন স্বাধীনতার মূল্যবোধকে উজ্জীবিত করার জন্যে। স্বাধীনতার লক্ষ্যসমূহকে বাস্তবায়ন করার জন্যে বিএনপি আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিএনপির সংগ্রাম জনগণের ভোটাধিকার ফিরে পাবার সংগ্রাম, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যে সংগ্রাম। তিনি বলেন, তার (শেখ মুজিবুর রহমান) অনেক কৃতিত্ব আছে। কিন্তু একজন সৈনিক চট্টগ্রাম থেকে জীবন বিপন্ন করে মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন এই কৃতিত্ব আপনাকে দিতে হবে। এটুকু কৃতিত্ব অন্যকে দিতে কেনো এতো অপরাগতা? কেনো বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানকে পাকিস্তানি এজেন্ট বলে প্রমাণ করতে চায়? তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধূলিসাত করে দিয়েছে। অবাক হয়ে ভাবি কিভাবে দেশটা নষ্ট হয়ে গেলো। দেশে যা কিছু করে ভালো-খারাপ সবকিছু বিএনপি করেছে। আমরা ক্ষমতায় নেই এতো বছর এই জিনিসপত্রের দাম নাকি বিএনপি বাড়াচ্ছে তাদের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য। সভায় মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে ও সাহাবুদ্দিন রেজার সঞ্চালনায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, ফজলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।  আরও উপস্থিত ছিলেন দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, তথ্য ও গবেষণা বিষক সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল হালিম মিঞা, সৈয়দ সরোয়ার আলম, আবদুস সামাদ, ফরিদ উদ্দিন, মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের শাহ নেছারুল হক, কাজী মনিরুজ্জামান মনির, নুরুর রহমান জাহাঙ্গীর প্রমুখ।   
২৩ মার্চ, ২০২৪

শাবিপ্রবিতে ইফতার ইস্যু নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম কাউন্সিলের বিবৃতি 
পবিত্র রমজান মাসে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে ইফতার পার্টি নিষিদ্ধ করে ১০ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের দেওয়া আদেশকে দুরভিসন্ধিমূলক বলেছে মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম কাউন্সিল। সোমবার (১১ মার্চ) এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি শহিদুল ইসলাম কবির উপরোক্ত কথা বলেন। তিনি বলেন, মুসলিম প্রধান বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন অনুষ্ঠান নির্দ্বিধায় আয়োজন করা হলেও মাহে রমজানে ইফতার পার্টি আয়োজনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে কোন কারণে? শহিদুল ইসলাম কবির বলেন, হযরত শাহজালাল ইয়ামেনী রহঃ এর নামে প্রতিষ্ঠিত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার পার্টি নিষিদ্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামী কৃষ্টি কালচার নিষিদ্ধের প্রথমিক কার্যক্রম শুরু করা হলো কিনা তা দেশব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের নিকট জানতে চায়। মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম কাউন্সিল সভাপতি বলেন, মুসলিম প্রধান বাংলাদেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন সিদ্ধান্ত ইসলাম বিরোধী গোষ্ঠীর চক্রান্ত ছাড়া আর কিছুই নয়। তিনি অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবি জানান।
১১ মার্চ, ২০২৪

‘তরুণ প্রজন্ম অপশক্তির কাছে মাথা নত করবে না’ 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেছেন, তরুণ প্রজন্ম কখনো অপশক্তির কাছে মাথা নত করবে না। একুশ মানেই মাথা নত না করা। সেটাই তরুণ প্রজন্মের কাছে আমাদের প্রত্যয়।   বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে শহীদ মিনারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরাও প্রত্যাশা করব, আমাদের সভ্যতা, সংস্কৃতি ও সার্বভৌমত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য তরুণ প্রজন্ম উদ্বুদ্ধ হবে। তারা কখনো অপশক্তির কাছে মাথা নত করবে না।   প্রতি বছর বহু ভাষা হারিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পৃথিবী থেকে প্রতিবছর ৯টি ভাষা হারিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের মধ্য দিয়ে সেই ভাষাগুলোকে রক্ষা করাই আমাদের প্রত্যয়। শিক্ষাক্রমে ভাষা শিক্ষার বিকল্প নেই জানিয়ে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা সামগ্রিকভাবে ডিজিটালাইজেশন করার পথে অগ্রগতি হচ্ছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা ভাষার সকল কার্যক্রম ডিজিটাল লাইজেশন করার কাজ শুরু করেছি। তিনি বলেন, অফিস থেকে সকল কার্যক্রম মাতৃভাষায় পরিচালনা করছি। তরুণ প্রজন্মের কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে অন্য ভাষার প্রতি যেন শ্রদ্ধা থাকে। 
২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

এক মিনিট বাংলাতে কথা বলতে পারছে না তরুণ প্রজন্ম
প্রতিনিয়ত বাংলা ভাষা থেকে সরে যাচ্ছে বাঙালিরা। মায়ের ভাষাকে ঠিকভাবে বলতে পারছে না বর্তমান প্রজন্ম। সময়ের সাথে সাথে প্রতিনিয়ত বিদেশি ভাষা স্থান করে নিচ্ছে বাংলা ভাষার ভেতর। অথচ এই ভাষার জন্য বাঙালির কত সংগ্রাম। মাতৃভাষা বাংলা করতে দিতে হয়েছিল জীবন। শত সংগ্রামের পরে আমরা গর্ব করে কথা বলছি বাংলা ভাষাতে। অথচ সেই ভাষারই হচ্ছে এখন অপব্যবহার। বর্তমানে বাংলাতে দুটি বাক্য বলতে গেলে সেখানে বেশিরভাগ থাকে বৈদেশিক শব্দের ব্যবহার। ভাষার মাসে ভাষা নিয়ে কথা হয় তরুণ প্রজন্মের সাথে। বিদেশি ভাষার ব্যবহার ছাড়া টানা এক মিনিট বাংলাতে কথা বলতে বলা হয় তাদের। তবে তারা কেউই শুদ্ধ বাংলায় এক মিনিট কথা বলতে পারেনি। যারা মোটামুটি বলতে চেষ্টা করেছিল, তারা সবাই বিদেশি ভাষার সহযোগিতায় কথা বলেছে। বিদেশি ভাষার সহযোগিতা ছাড়া শুদ্ধ বাংলায় কথা বলা খুব কঠিন কিনা জানতে চাইলে তারা কেউই এ বিষয়ে সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি। বরং হাসির ছলে বিষয়টি এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করেছেন। প্রতিনিয়ত নিজ ভাষা থেকে সরে যাওয়া এবং বিদেশি ভাষার ব্যবহার ছাড়া কথা বলতে না পারাটা দুঃখজনক মনে করে সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে গণমাধ্যম কর্মী ও লেখক সালাহ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের মায়ের ভাষা থেকে সরে যাচ্ছি। বর্তমানে তরুণ প্রজন্ম বিদেশি ভাষার ব্যবহার ছাড়া কথাই বলতে পারছে না। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের বাংলা ভাষা হারিয়ে যেতে শুরু করবে। তিনি আরও বলেন, এমন কিছু শব্দ রয়েছে যেগুলো আমরা বাংলা শব্দের মতো করেই ব্যবহার করে থাকি। তবে এগুলো সম্পূর্ণ বিদেশি শব্দ। বেশিরভাগ মানুষ এই শব্দগুলো ব্যবহার করে থাকলেও তারা মূলত জানেন না এই শব্দগুলো দেশি নাকি বিদেশি। তবে আমাদের এই বিষয়গুলোতে সচেতন হওয়া খুবই জরুরি।
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

আসিফ মাহতাবকে পুনর্বহালের দাবি / ‘ব্র্যাকের সব প্রতিষ্ঠান বয়কট করবে জনগণ’
ট্রান্সজেন্ডার নিয়ে বক্তব্য দেওয়ার কারণে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার আসিফ মাহতাবকে চাকরিচ্যুত করার সংবাদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম কাউন্সিল।  সোমবার (২২ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম কাউন্সিল সভাপতি শহিদুল ইসলাম কবির ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।  বিবৃতিতে মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম কাউন্সিল সভাপতি বলেন, ড. আসিফ মাহতাব গত ১৯ জানুয়ারি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিউটে অনুষ্ঠিত শিক্ষা সেমিনারে পাঠ্যপুস্তকে ট্রান্সজেন্ডারের নামে ইসলাম নিষিদ্ধ সমকামিতাকে উৎসাহিত করার গল্পের উদ্ধৃতি দিয়ে সমকামিতা থেকে ৯২ শতাংশ মুসলমানদের সতর্ক করতে বক্তব্য দিয়েছিলেন। এ বক্তব্যের কারণে লেকচারার আসিফ মাহতাবকে শিক্ষাদান থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়ে সমকামিতাকে প্রতিষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।  শহিদুল ইসলাম কবির বলেন, ৯২ শতাংশ মুসলমানদের দেশে ট্রান্সজেন্ডারের নামে সমকামিতা দেশের মানুষ যেমন মেনে নেবে না তেমনি আসিফ মাহতাবকে পাঠদান থেকে বিরত রাখা সহ্য করবে না।  তিনি বলেন, লেকচারার আসিফ মাহতাবকে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি পুনরায় পাঠদানের ব্যবস্থা না করে, তবে দেশের ৯২ শতাংশ মুসলমানরা শুধু ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় নয় ব্র্যাক সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান বয়কট করতে বাধ্য হবে। এর আগে সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিকবিজ্ঞান বইয়ের একটি অধ্যায়ে ট্রান্সজেন্ডার নিয়ে আলোচনা করে চাকরি খোয়ান শিক্ষক আসিফ মাহতাব উৎস।
২২ জানুয়ারি, ২০২৪

ইসরায়েলি হামলায় প্রজন্ম হারানোর ঝুঁকিতে গাজা
ইসরায়েলি হামলায় অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। নেতানিয়াহু বাহিনীর ভয়াবহ হামলায় গাজায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে যে, সেখানে শিশুদের একটা প্রজন্ম হারিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা। খবর বিবিসির। গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। ইসরায়েলি হামলায় এরই মধ্যে গাজায় নিহত মানুষের সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। গত নভেম্বরে কাতারের মধ্যস্থতায় প্রথমবারের মতো সাত দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তি করে ইসরায়েল ও হামাস। চুক্তির অংশ হিসেবে ১১০ ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেয় হামাস। বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগার থেকে কয়েকশ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয় ইসরায়েল। তবে এখনো গাজায় হামাসের হাতে শতাধিক ইসরায়েলি বন্দি। জাতিসংঘ বলছে, বিশ্বের যে কোনো সমাজের মতো শিশুরা গাজার ভবিষ্যৎ। তবে এখন তারা যুদ্ধের প্রধান ভুক্তভোগীতে পরিণত হচ্ছে। ফলে তাদের একটা প্রজন্ম পৃথিবী থেকে পুরোপুরি হারিয়ে যেতে পারে। যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে প্রতিদিনই বুলেটিন প্রকাশ করে ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর দ্য কো-অর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ওচা)। সংস্থাটি তাদের সবশেষ বুলেটিনে বলেছে, গাজার অন্তত ৬০ শতাংশ বাড়ি বা আবাসন ইউনিট ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রতি ১০টি স্কুলের মধ্যে ৯টির বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হাসপাতাল, সরকারি ভবন ও বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমির মোহাম্মদ আল-নাজ্জারির বয়স ২২ বছর। তিনি মূলত উত্তর গাজার জাবালিয়ার বাসিন্দা। কিন্তু কয়েক মাস ধরে বাধ্য হয়ে পরিবারের সঙ্গে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের কাছে একটি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস করছেন। তিনি বলেছেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আমাদের স্বপ্ন কর্পূরের মতো বাতাসে মিলিয়ে গেছে। আমার বোন আল-কুদস বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিল। কিন্তু বোমায় এটি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। আমার ভাই খলিল আল-রহমান স্কুলের শেষ বর্ষের ছাত্র। খলিল আল-রহমান স্কুলও বোমায় উড়ে গেছে। আমির বলেন, আমি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিগ্রি শেষ করেছি। যুদ্ধ না হলে আমার চাকরির ইন্টারভিউ থাকত। সম্ভবত আমি চাকরিটা পেয়েও যেতাম। আমার আরেকটা ছোট ভাই আছে। সে জাতিসংঘের একটি বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত। কিন্তু এর কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। ফিলিপ লাজারিনি জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর কমিশনার জেনারেল। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে তিনি ঘন ঘন গাজা সফর করছেন। মাত্র কয়েকদিন আগেই চতুর্থবারের মতো গাজা সফর থেকে ফিরেছেন তিনি। ফিলিপ লাজারিনি বলেন, গাজায় ৫ লাখের বেশি শিশু প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। তারা যদি বাড়ি না ফিরতে পারে, তাহলে কীভাবে স্কুলে আসবে। অবশ্য তাদের বাড়িঘর এরই মধ্যে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। আমি ভয় পাচ্ছি যে, আমরা এখানে শিশুদের একটা প্রজন্ম হারানোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। গাজার পরিস্থিতি যখন এমন ভয়াবহ—সে মুহূর্তে বোমায় সেখানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উড়িয়ে দেওয়ার পর ইসরায়েলি সেনারা উল্লাস করছেন। তাদের উল্লাসের বেশ কিছু ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা হয়। একের পর এক অভিযোগ উঠতে থাকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে। এদের মধ্যে সবচেয়ে বড় অভিযোগ হলো, হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে ফিলিস্তিনিদের সম্মিলিত শাস্তি দিচ্ছে ইসরায়েল।
২১ জানুয়ারি, ২০২৪
X