শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১
পৃথিবী যতদিন থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধু ও রবীন্দ্রনাথের দর্শন-কর্ম থাকবে : ঢাবি উপাচার্য
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেছেন, পৃথিবী যতদিন থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কর্ম, চিন্তা-ভাবনা, আদর্শ ও দর্শন বেঁচে থাকবে।  বুধবার (৮ মে) বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।  ‘সোনার বাংলা স্বপ্ন ও বাস্তবতা: রবীন্দ্রনাথ থেকে বঙ্গবন্ধু’ প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে আয়োজিত এই আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ সম্মাননীয় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আজিজুল হক। রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন। উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, বঙ্গবন্ধু সারাজীবন কৃষক, শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের মুক্তির জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন, আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কবিতা, গল্প, গান, রচনা, সাহিত্য ও শিল্পকর্মে দরিদ্র্য কৃষক ও শ্রমিকের মুক্তির গান গেয়েছেন। তারা উভয়ই অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ, উগ্রজাতীয়তাবাদ পরিহার এবং আত্মশুদ্ধির পন্থা অবলম্বন করেছেন।  তিনি আরও বলেন, রবীন্দ্রনাথের চিন্তা-চেতনা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসাম্প্রদায়িক চেতনা, গণতান্ত্রিক ও মানবিক মূল্যবোধ, দেশপ্রেম, মাটি ও মানুষের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা নিয়ে সারাজীবন আন্দোলন- সংগ্রাম ও অপরিসীম ত্যাগের মাধ্যমে আমাদেরকে স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র উপহার দিয়েছেন। মানুষকে ভালোবেসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে ব্রিটিশ সরকার প্রদত্ত নাইটহুট উপাধি ত্যাগ করেছিলেন, ঠিক তেমনি নিজের জন্য খোঁড়া কবরের সামনে দাড়িয়ে পাকিস্তানি শাসকদের সাথে বাঙালীর অধিকার প্রতিষ্ঠা ও মুক্তির ব্যাপারে আপোস করেননি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এভাবেই বঙ্গবন্ধু ও রবীন্দ্রনাথের দর্শন ও চিন্তা-ভাবনায় অপূর্ব মিল রয়েছে।   প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর কবিতা ও সাহিত্য কর্মে সমাজের নানা অসংগতি, কুসংস্কার, বৈষম্য, মানুষের কষ্ট, প্রকৃতি, পরিবেশ, মানবপ্রেমসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেছেন। বঙ্গবন্ধু এবং রবীন্দ্রনাথ উভয়ই উগ্রজাতীয়তাবাদ বিরোধী ছিলেন। তাঁরা উভয়ই বিশ্বাস করতেন উগ্র জাতীয়তাবাদ সমাজে সংঘাত সৃষ্টি করে। অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন সমাজ প্রতিষ্ঠায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিন্তাভাবনা ও দর্শন সকলের সামনে সবসময় তুলে ধরতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। অধ্যাপক ড. সৈয়দ আজিজুল হক মূল প্রবন্ধে বলেন, সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু ও রবীন্দ্রনাথের ভাবনায় ও কর্মে অনেক মিল ছিল। বাঙালির ন্যায়সংগত অধিকার আদায়ে আত্মশক্তি অর্জনে উভয়ই সোচ্চার ছিলেন। রবীন্দ্রনাথের শ্রেষ্ঠ সৃজনশীল কাজগুলো তৎকালীন পূর্ববঙ্গের গ্রাম্যজীবন ও পদ্মাপাড়ের মানুষের জীবন নিয়ে রচিত। তিনি যেমন লেখনীর মাধ্যমে মানুষের চিন্তা-চেতনার পরিবর্তন করে সমাজ সংস্কার করতে চেয়েছেন, তেমনি বঙ্গবন্ধু তাঁর দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনে অপরিসীম ত্যাগের মাধ্যমে স্বাধীন ও সার্বভৌম সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় এককভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আলোচনা পর্ব শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত বিভাগ ও নৃত্যকলা বিভাগের যৌথ উদ্যোগে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
০৮ মে, ২০২৪

যমুনার বুকে দৃশ্যমান বঙ্গবন্ধু রেলসেতু
যমুনার বুকে পুরোপুরি দৃশ্যমান হলো উত্তরাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। ৫০টি পিলারের ওপর ৪৯টি স্প্যান বসিয়ে এ সেতুর পুরো ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার সুপার স্ট্রাকচার পুরোই দৃশ্যমান হয়েছে। চলছে এডজাস্টমেন্টের কাজ। তবে উভয়পাশের স্টেশন নির্মাণ, স্লিপারবিহীন রেলপথ স্থাপনসহ কিছু কাজ বাকি রয়েছে। রেলসেতুতে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণও শেষের দিকে। আগামী ডিসেম্বরেই সেতুটি নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।  সোমবার (৬ মে) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্প অফিস সূত্রে জানা গেছে, জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর নির্মাণ ব্যয় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। ডব্লিউডি-১ ও ডব্লিউডি-২ নামে দুটি প্যাকেজে জাপানি ৫টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।  ডব্লিউডি-১ প্যাকেজটি বাস্তবায়ন করছে জাপানি আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওবাইসি, টোআ করপোরেশন ও জেইসি (ওটিজে) জয়েন্ট ভেনচার। ডব্লিউডি-২ প্যাকেজটি বাস্তবায়নে রয়েছে জাপানের আইএইচআই ও এসএমসিসি জয়েন্ট ভেনচার। এ ছাড়া সেতুর উভয়প্রান্তের দুই স্টেশনে সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপনে ডব্লিউডি-৩ নামে অপর একটি প্যাকেজের কাজও চলছে। সেতুটি নির্মাণে জাপান, ভিয়েতনাম, নেপাল, অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপাইন ও বাংলাদেশের প্রায় কর্মীরা নিয়োজিত আছেন।  রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে যমুনার বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো এ সেতুটি ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগে নতুন দিগন্ত সূচিত করবে। ঢাকার সাথে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা অঞ্চলের রেল যোগাযোগে বর্তমান যে বিড়ম্বনা রয়েছে সেটা আর থাকবে না। নির্মাণের পর সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন অন্তত ৮৮টি যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেন চলাচল করবে। কমে যাবে পরিবহন খরচও। সেই সঙ্গে মহাসড়কের ওপর চাপও অনেকটা কমে আসবে। উত্তরবঙ্গ থেকে বিভিন্ন পণ্য সহজেই ঢাকাসহ সারা দেশ রপ্তানি করা সম্ভব হবে। ফলে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে।  বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতুর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ওরিয়েন্টাল কনসালটেন্ট গ্লোবাল লি. এর সাব স্ট্রাকচার ইঞ্জিনিয়ার রবিউল আলম কালবেলাকে বলেন, সেতুর ৫০টি পিলারের মধ্যে সবকটি বসানো হয়েছে। প্রতি দুটি পিলারের মাঝখানে একটি করে মোট ৪৯টি স্প্যান বসানো শেষ হয়েছে। সেতুর উপরে রেললাইন স্থাপন শেষ হয়েছে ২ দশমিক ২৫ কিলোমিটার।  তিনি বলেন, ডব্লিউডি-১ প্যাকেজের ৯৬ দশমিক ১৫ শতাংশ, ডব্লিউডি-২ প্যাকেজের ৯০ শতাংশ ও ডব্লিউডি-৩ প্যাকেজের প্রায় ৬৬ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে ডব্লিউডি-১ প্যাকেজে ২ হাজার ৯৭৯ ও ডব্লিউডি-টু প্যাকেজে ২ হাজার ৮৪১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত আছেন।  প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী তানভীরুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি স্প্যানের ওপর জাপানিদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির রেললাইন বসানো হচ্ছে। ফলে সেতুর ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করতে পারবে। সমান্তরাল ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকের এ সেতুটির নির্মাণকাজ ডিসেম্বরেই শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসুদুর রহমান কালবেলাকে বলেন, ইতোমধ্যে সেতুর ৮৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এখন শুধু এডজাস্টমেন্ট বাকি রয়েছে। এলাইনমেন্ট ও লেভেল ঠিক করা হচ্ছে। বিভিন্ন ড্রেইনে কাজ, কালভার্টগুলো শেষ হয়ে গেছে। দুই পাশের স্টেশন বিল্ডিংয়ের কাজ, প্ল্যাটফর্ম স্থাপনের কাজ ও ট্র্যাকের কাজ চলছে। ছোট ছোট কিছু পেরিমিটার ফেল্ট বাকি আছে। আশা করছি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই সব কাজ শেষ হয়ে যাবে।  ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় কমিয়ে দেওয়া হয় ট্রেনের গতিসীমা। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হওয়ায় সময়ের অপচয়ের পাশাপাশি ঘটছে সিডিউল বিপর্যয়। বাড়ছে যাত্রী ভোগান্তি। এসব সমস্যা সমাধানে সরকার যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।  ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটি নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এর পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের মার্চ মাসে।
০৭ মে, ২০২৪

কুমিল্লায় ‘খামারি’ মোবাইল অ্যাপ ও বঙ্গবন্ধু ধান ১০০ নিয়ে মাঠ দিবস
কুমিল্লার চান্দিনায় ‌‌‌‌‍‍‘খামারি’ মোবাইল অ্যাপের কার্যকারিতা যাচাই ও বঙ্গবন্ধু ধান ১০০ এর প্রদর্শনী ট্রায়ালের মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৩ মে) সকালে উপজেলার এতবারপুরে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত।।  এ সময় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাসের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, কৃষি মন্ত্রণালয় সম্প্রসারণ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মলয় চৌধুরী, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের সদস্য পরিচালক (শস্য) ড. মোহাম্মদ আব্দুস ছালাম ও এতবারপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইউসুফ।  প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, এক সময় আমাদের দেশে বোরো ধানের ফলন, বিঘা প্রতি হতো পাঁচ থেকে সাত মণ। কৃষিতে আধুনিকায়ন, ভর্তুকি এবং কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ এবং কৃষকদের সময় উপযোগী পরামর্শ দেওয়ার ফলে ধানের উৎপাদন অনেক বেড়েছে। এছাড়াও সারাবিশ্বে টালমাটাল পরিস্থিতি থাকলেও প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে বাংলাদেশে সারের ঘাটতি পূরণ করেছেন।  তিনি বলেন, কৃষিতে ‌‘খামারি’ মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারে কৃষকের ভালো ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি উৎপাদন খরচ কম। তাই ব্যবহারকারীরা আর্থিকভাবে অনেক বেশি লাভবান হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত সচিব ড. মলয় চৌধুরী বলেন, কৃষকরা তাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে উচ্চ ফলনশীল বঙ্গবন্ধু ধান ১০০ এর আবাদ করে বিঘা প্রতি ফলন পেয়েছেন ২২ থেকে ২৩ মণ। সেখানে খামারি অ্যাপ ব্যবহার করে কৃষকের উৎপাদন খরচ কমেছে এবং ফলন হয়েছে ২৩ থেকে ২৫ মণ। দেশের ইউনিয়ন পর্যায়ের সব উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকের দোর গোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। সভাপতির বক্তব্যে কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার বলেন, খামারি মোবাইল অ্যাপটি অত্যন্ত চমৎকার একটি অ্যাপ। এ অ্যাপ ওপেন করে নিজ জেলা, গ্রাম এবং মৌজা সার্চ করলে ওই জমিতে সিজন অনুযায়ী কোন ফসল চাষাবাদ করলে ভালো হবে সে নির্দেশনা পাওয়া যায়। এ ছাড়া এসব ফসল চাষাবাদের সব ধরনের পরামর্শ, সারের পরিমাণ এবং পানি সেচসহ যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়। এ অ্যাপ ব্যবহার করে বঙ্গবন্ধু ধান ১০০ চাষাবাদ করে কৃষকরা লাভবান হয়েছেন। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর জমিতে তিন থেকে পাঁচ মণ ধান বেশি ফলেছে এবং সার অনেক কম লেগেছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান, চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাবের মো. সোয়াইব, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লা অঞ্চলের উপপরিচালক কৃষিবিদ আইয়ুব মাহমুদ, প্রোগ্রাম কো-অডিনেটর মো. মিজানুর রহমান ও চান্দিনা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো. শাহিন। এদিকে সকালে জমি চাষ থেকে শুরু করে লাগানো, কাটা, শুকানো, ঝাড়া, মাড়াই সবকিছুর একটা পূর্ণাঙ্গ সমাধান হিসেবে কৃষকের মাঝে সরকারি অর্ধেক ভর্তুকিতে ৭০ লাখ টাকা মূল্যের দুটি আধুনিক কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। এ সময় চান্দিয়ারা গ্রামের দুই কৃষক ফখরুল ও ফয়েজের হাতে মেশিনের চাবি তুলে দেওয়া হয়।
০৪ মে, ২০২৪

বঙ্গবন্ধু কন্যাকে নৌকাখচিত চেয়ার উপহার দিতে চান হিরু কারিগর
তিন মাস শ্রম দিয়ে দৃষ্টিনন্দন নৌকাখচিত একটি চেয়ার বানিয়েছেন কাঠমিস্ত্রি হীরেন্দ্র চন্দ্র সরকার (হিরু)। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চেয়ারটি উপহার দিতে চান তিনি।  হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার আদাঐর গ্রামের বাসিন্দা হীরেন্দ্র চন্দ্র সরকার হিরু। তিন যুগ ধরে কাঠমিস্ত্রি পেশার সঙ্গে জড়িত। তারা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান হিসেবে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তার অগাত বিশ্বাস ভক্তি ভালবাসা শৈশব থেকেই। তাই তো সাধ্যের জায়গা থেকেই প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যার জন্য একটি নান্দনিক চেয়ার বানানোর ইচ্ছে জাগে তার মনে। সেই ইচ্ছা থেকে সেগুন ও গামাইর কাঠ সংগ্রহ করে তিন মাস ধরে রাত-দিন পরিশ্রম করে চেয়ারের কাজ শেষ করেন হিরু কারিগর। কাজটি করতে তার প্রায় অর্ধ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এখন অপেক্ষা শুধু প্রধানমন্ত্রীকে উপহার হিসেবে তুলে দেওয়ার। বিভিন্ন মিডিয়াকর্মী ও নেতাদের শরণাপন্ন হচ্ছেন তার স্বহস্তে বানানো চেয়ারটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। এখন ব্যতিক্রমী এই চেয়ারটি দেখতে অনেকে ভিড় জমাচ্ছেন তার বাড়িতে। মাধবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক এরশাদ আলী বলেন, আওয়ামী লীগ পরিবারের ওই কাঠমিস্ত্রি অত্যন্ত দলপরায়ন। বড় মাপের শিল্পীও। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তার নিঃস্বার্থ নিবেদন তথা উপহারটুকু পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা সাধ্যমত উপরে আলাপ করার চেষ্টা করব। উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ওসমান মোল্লা বলেন, অনেক সময় ও মেধা খাটিয়ে হিরু ভাই যে চেয়ারটি বানিয়েছেন তা অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন। সে ওই চেয়ারটিতে কাউকে বসতেও দেন না। এটা আরও প্রমাণ করে তৃণমূল আওয়ামী লীগ,বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি জনমানুষের ভালোবাসা কতটুকু। এই ধরনের শিল্পীকে সরকারি প্রণোদনার অন্তর্ভুক্ত করাও এখন সময় দাবি। চেয়ারের কারিগর কাঠমিস্ত্রি হীরেন্দ্র চন্দ্র সরকার বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জন্য উপহার হিসেবে চেয়ারটি ৩ মাস আগে বানানো শুরু করি। দিনরাত পরিশ্রম করে যত্ন নিয়ে চেয়ারটি বানিয়েছি শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেওয়ার জন্য।  হিরু চেয়ারটি প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে পৌঁছে দিতে মিডিয়ার লোকজনের সহযোগিতা চান। চেয়ারটি প্রধানমন্ত্রীকে উপহার হিসেবে দিতে না পারলে তার আক্ষেপ থেকে যাবে বলে জানান তিনি। কাঠমিস্ত্রি হিরো জানান আরও জানান, প্রতিদিনের পূজায় এই উপহারটুকু যাতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর হয় ও সেটা যেন তার কাছে পৌঁছে দিতে পারেন সে প্রার্থনা করে যাচ্ছেন।
০৩ মে, ২০২৪

বঙ্গবন্ধু হত্যা প্রতিরোধ যোদ্ধাদের স্বীকৃতি দিতে কমিটি গঠন হাইকোর্টের
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার প্রতিবাদকারী ‘প্রতিরোধ যোদ্ধাদের’ (১৯৭৫-১৯৭৯) চিহ্নিত করে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির জন্য সুপারিশ করতে চার সচিবের সমন্বয়ে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, সমাজকল্যাণ সচিব ও অর্থ সচিবকে নিয়ে করা এ কমিটিকে ৪ আগস্টের মধ্যে ‘প্রতিরোধ যোদ্ধাদের’ চিহ্নিত করার বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। পাঁচ ব্যক্তির করা এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে গতকাল সোমবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী বাকির উদ্দিন ভূঁইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত। আইনজীবী বাকির উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন সামরিক সরকার মিছিল-মিটিং বন্ধ করে দেয়। তা সত্ত্বেও নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, খুলনা, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ ও ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ হয়। ১৯৭৫ সালে জাতীয় মুক্তি বাহিনী ও জাতীয় মুজিব বাহিনী নামে দুটি সশস্ত্র প্রতিরোধ বাহিনী গঠিত হয়। বঙ্গবন্ধুভক্ত ছাত্র, তরুণ ও মুক্তিযোদ্ধারা তখন ওই বাহিনীতে যোগ দিয়ে ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। সপরিবার বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ৪৭ বছর পার হলেও সেই প্রতিরোধ যোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। তাই পাঁচজন প্রতিরোধ যোদ্ধা ২০২২ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। সেই রিটের শুনানি শেষে রায় দিলেন হাইকোর্ট।
৩০ এপ্রিল, ২০২৪

গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু ধানের ফসল কর্তন উৎসব
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বঙ্গবন্ধু ধান-১০০ এর ফসল কর্তন উৎসব ও মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় সদর উপজেলার হরিদাসপুর ইউনিয়নের আড়পাড়া গ্রামে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ে ফসল কর্তন উৎসব ও মাঠ দিবসের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপপরিচালক সঞ্জয় কুমার কুন্ডু। ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান ড. মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সৃজন চন্দ্র দাসের সঞ্চালনায় সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাফরোজা আক্তার, কৃষক সায়াদ উদ্দিন প্রমুখ। আড়পাড়া গ্রামের কৃষক সায়দ উদ্দিনের জমিতে উৎপাদিত বঙ্গবন্ধু ধান-১০০ কেটে ফসল কর্তন উৎসব ও মাঠ দিবস উদযাপন করা হয়। প্রধান অতিথি সঞ্জয় কুমার কুন্ডু বলেন, জিংক ও পুষ্টি সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধু ধান-১০০ প্রতি হেক্টরে আড়পাড়া গ্রামের জমিতে ৭.৮১ টন ফলন দিয়েছে। গোপালগঞ্জের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এস এম আশিক ইকবাল বলেন, মাটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে সুষম মাত্রায় সার ব্যবহার করলে সার কম প্রয়োজন হয় এবং ফসলের উৎপাদনও ভলো হয়। অন্যদিকে মাটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করে আন্দাজ করেবেশি মাত্রায় রাসায়নিক সার ব্যবহার করলে ফসলের উৎপাদন যেমন ব্যাহত হয় তেমনই ধীরে ধীরে মাটির উর্বরতা কমে গিয়ে উৎপাদন ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। এত কৃষকের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। তাই জমির মাটি পরীক্ষা করে সুষম মাত্রায় সার ব্যবহারের আবশ্যকতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট, গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে কৃষকদের এ ধরনের সহায়তা বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে। প্রদর্শনীর কৃষক মো. রবিউল ইসলাম বলেন, আমি পূর্বে অতিরিক্ত সার ব্যবহার করে যে ফলন পেয়েছি এবং এবার মৃত্তিকা বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীদের পরামর্শে তাদের দেওয়া কম পরিমাণের সার ব্যবহার করে বেশি ফলন পেয়েছি। মাঠ দিবসে অংশে নেওয়া আরেক কৃষক গোলাম কিবরিয়া বলেন, তিনি অতিরিক্ত মাত্রায় সার ব্যবহার করে তার ফসলের অনেক ক্ষতি হয়েছে, অনেক জায়গায় তার জমির ধান পুড়ে গেছে আবার অনেক জায়গায় ধান চিটা হয়ে গেছে। মৃত্তিকা বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে অল্প সার প্রয়োগে প্রদর্শনী কৃষকের ধান অনেক ভালো হয়েছে। সার কম ব্যবহার করায় তার খরচও অনেক কমে গেছে।
২৯ এপ্রিল, ২০২৪

বঙ্গবন্ধু মে দিবসকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন
১৮৮৬ সালের ৪ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটে দৈনিক ৮ ঘণ্টা শ্রমের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর গুলি চালিয়ে ১০-১২ জন শ্রমিককে হত্যার ঘটনার প্রেক্ষাপটে বিশ্ব মে দিবস পালন করা হয়ে থাকে। তখন কাজ করতে হতো ১২-১৪ ঘণ্টা। ১৮৮৯ সালে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব সোশ্যালিস্ট গ্রুপস এবং ট্রেড ইউনিয়নস যৌথভাবে পহেলা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়।  মে দিবস সারা বিশ্বে শ্রমিকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন এই দিনে শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাস প্রতিফলিত হয়েছে এবং একটি ন্যায্য, অধিকতর ন্যায়সঙ্গত সমাজ বিনির্মাণের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত হয়েছে। মে দিবসের মূল চেতনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে, বাংলাদেশ এবং সারা বিশ্বের শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার এবং শ্রমিক শ্রেণির ক্ষমতায়নের সপক্ষে সোচ্চার হওয়ার জন্য ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের অধিকার পাওয়া নিঃসন্দেহে শ্রমিক অধিকারের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিক। শ্রমিকদের একত্রিত হওয়া দুনিয়ার মজদুর এক হও এবং অবস্থার পরিবর্তনের দাবি করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদান করা মে দিবসের তাৎপর্য উপলব্ধির এক ফলিত দিক।  আমরা যাকে ঐতিহাসিক মে দিবস হিসেবে জানি, তা আবার আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস নামেও পরিচিত। বিশ্বব্যাপী শ্রমিক আন্দোলনের দীর্ঘ সংগ্রাম এবং তার অর্জনকে স্মরণ করার জন্যে প্রতিবছর পহেলা মে বিশ্বজুড়ে এই দিবস পালিত হয়। দিবসটির শেকড় নিহিত আছে শ্রমিকদের ঐতিহাসিক সংগ্রামের মধ্যে, যারা উন্নত কর্মপরিবেশ, ন্যায্য মজুরি এবং সংগঠিত হওয়ার অধিকারের জন্য লড়াই করেছিলেন যুগের পর যুগ ধরে। প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন অকাতরে।  বিশ্বের সব শ্রমিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট আন্দোলনের প্রেরণা হিসেবে কার্যকর ভূমিকা পালন করে আসছে। সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের জন্য চলমান লড়াই বাস্তবায়নের ক্ষেত্র প্রসারিত করছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং শ্রমিক আন্দোলনের ভূমিকার সাথে জড়িত। বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমশক্তির উৎস, কোটি কোটি শ্রমিক দেশে-বিদেশে বিভিন্ন শিল্প, যেমন-টেক্সটাইল, কৃষিসহ রকমারি উৎপাদনে নিযুক্ত। বাংলাদেশের গার্মেন্ট চীনের পর বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রফতানিকারক শিল্প।  ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিলের রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় ১১৭৫ জন শ্রমিক নিহত এবং ২ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছিলেন, যা বিশ্বের ইতিহাসে তৃতীয় বৃহত্তম শিল্প দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়। এই ঘটনা বাংলাদেশের শ্রমবাজারে মারাত্মকভাবে এক নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে আসে। একবিংশ শতাব্দীর রকমারি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার সঙ্গে সঙ্গে মে দিবস শ্রমিকদের অধিকারের জন্য চলমান সংগ্রাম এবং আরও ন্যায্য ও ন্যায়সঙ্গত সমাজের জন্য লড়াইয়ে চালক হিসেবে কাজ করে। সমাজে শ্রমিকদের মৌলিক ভূমিকার স্বীকৃতি এবং তাদের প্রতি ন্যায্য আচরণ ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধান মে দিবসের তাৎপর্য বর্ধন করে।  বিশ্বজুড়ে শ্রমিকদের অবস্থান ঐতিহাসিকভাবে প্রান্তিক হয়ে পড়ছে। শ্রমিকরা আজও নানামুখী শোষণ, অনিরাপদ কাজের পরিস্থিতি এবং মৌলিক অধিকার ও  অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধা বঞ্চিত থেকেই যাচ্ছে। মে দিবসের ঐতিহ্যপুষ্ট শ্রমিক জাগরণ সমস্যাগুলোর সমাধান নিশ্চিত করে শ্রমিকদের প্রাপ্য মর্যাদা ও যথাযথ সম্মান প্রদর্শনের পথ সুগম করে। আন্তর্জাতিক শ্রমিক আন্দোলন ও শ্রম অধিকার আদায়ের এ দিনটি বছরের পর বছর ধরে বিশ্বব্যাপী যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়ে আসছে। শ্রমিকদের সম্মানে মে দিবস বা পয়লা মে জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে পালন করে বিশ্বের শতাধিক দেশ। কিন্তু যাদের নিয়ে এই দিবস, তারা এ সম্পর্কে কতটা অবগত? অনেক শ্রমিক জানেনই না এর ইতিহাস। শ্রমিকদের অধিকার ও দাবির প্রতি সম্মান দেখিয়ে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে মে দিবস পালিত হয়। স্বাধীনতার পর মে দিবস রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে মহান মে দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে মে দিবসকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। এরপর থেকে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয় মে দিবস। এই দিবস পালনের মূল উদ্দেশ্য থাকে শ্রমিকদের তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা। যাতে করে তারা মে দিবসের প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারেন ও নিজ অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারেন। কিন্তু যে উদ্দেশ্যে আমরা মে দিবস পালন করি, সেটি কতটা সফল হয়, তা নিতে প্রশ্ন আসতে পারে। আসাটা বেশ স্বাভাবিক। শ্রমিকরা তাদের দাবি মালিকপক্ষ বা সরকারের কাছে তুলে ধরতে পারে। তাতে শ্রমিক ও মালিকপক্ষের দূরত্ব অনেকখানি লাঘব হচ্ছে। শ্রম আইনগুলো কঠোরতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করতে হবে। সেই সঙ্গে তৈরি করতে হবে শ্রমিকবান্ধব আইন, যা শ্রমিকদের স্বার্থে কথা বলবে। এর মাধ্যমে গড়ে উঠবে একটি বৈষম্যহীন শ্রমিক সংঘ এবং এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের অর্থনীতি। ১৮৮৬ থেকে ২০২৪। শ্রমের মর্যাদা, মূল্য ও ন্যায্য মজুরি শুধু নয়, যুক্তিসঙ্গত কর্ম সময় নির্ধারণের আন্দোলনের ১৩৮ বছর। গত ১৩৮ বছরে অনেক পরিবর্তন হয়েছে মানুষের সমাজ ও সভ্যতার। কিন্তু, এই প্রশ্নের আজো উত্তর খুঁজতে হয়, এতো উন্নতি-অগ্রগতি সাধিত হলেও শ্রমিকের অধিকার কতটুকু প্রতিষ্ঠিত হয়েছে? বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর থেকেই মে দিবস সরকারি ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। মে দিবসের প্রধান দাবি ৮ ঘণ্টা কর্মদিবস ২২ লাখের বেশি সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারীদের ক্ষেত্রে বাস্তবায়িত হলেও কোটি কোটি বেসরকারি শ্রমিক কর্মচারীরা এখনও ৮ ঘণ্টা কর্মদিবসের সুফল পায় না। বরং কৌশলে ১০ ঘণ্টা কাজের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নিম্ন মজুরির ফাঁদে শ্রমজীবী মানুষ এমনভাবে আটকে যায় যে শ্রমিকরা এখন বাধ্য হয় ওভার টাইম করতে, তা না হলে তার সংসার চালানো অসম্ভব। শ্রমিকের শ্রম, সময় বাড়ানো আর যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ানো। ফলে কর্মঘণ্টা বাড়ছে, উৎপাদন বাড়ছে। সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বেকারত্ব।  প্রতি বছর শ্রমবাজারে কাজ প্রত্যাশী ২০ থেকে ২২ লাখ তরুণ-যুবক আসে যাদের মাত্র দুই-তিন লাখ লাখের মতো কর্মসংস্থান রাষ্ট্র করতে পারে। এরপর, সাত থেকে ১০ লাখ মানুষ পাড়ি জমায় বিদেশে কাজ করতে। আর বাকিরা দেশে কোনোমতে কাজ খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করে। দেশের ছয় কোটি ৩৪ লাখ শ্রমজীবীর মধ্যে প্রায় তিন কোটি কাজ করে কৃষিখাতে। যেখানে বছরে ৩ মাসের বেশি কাজ থাকে না ফলে বহু ধরনের অপ্রাতিষ্ঠানিক কাজের মাধ্যমে তারা টিকে থাকার চেষ্টা করে। এর বাইরে ৪০ লাখ শ্রমিক গার্মেন্টসে; ৩০ লাখের বেশি নির্মাণ খাতে; ৫০ লাখ পরিবহন খাতে; ১০ লাখের বেশি দোকান কর্মচারী; পাট, চা, চামড়া, তাঁত, রি রোলিং, মোটর মেকানিক, লবণ, চিংড়ি, সংবাদমাধ্যম, হাসপাতাল-ক্লিনিক, পুস্তক বাঁধাই, হকার, রিকশাভ্যান চালক, ইজি-বাইক চালক, সিকিউরিটি গার্ডসহ বিভিন্ন খাতে কাজ করছে। শ্রম শক্তির ১ কোটি ২ লাখ প্রাতিষ্ঠানিক খাতে আর বাকিরা অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করে থাকে। মজুরি বোর্ডের মাধ্যমে ৪৩টি সেক্টরের শ্রমজীবীদের নিম্নতম মজুরি নির্ধারণের ব্যবস্থা থাকলেও বাকি কোটি কোটি শ্রমিকের কাজ নাই তো মজুরি নাই নীতিতে কাজ করানো হয়ে থাকে। শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার পথে আইনি এবং আইন বহির্ভূত অসংখ্য বাধা।  অটোমেশনের কারণে অনেক শ্রমভিত্তিক কাজ যন্ত্রনির্ভর হবে। যন্ত্রের শক্তি মানুষের শ্রমকে লাঘব করবে। ফলে অল্প সময়ে বেশি উৎপাদন হবে- এই প্রত্যাশা থাকলেও বাস্তবে শ্রমিকের শ্রম সময় কমছে না। নারী শ্রমিকের শিল্পে আগমন বেড়েছে কিন্তু তাদের মাতৃত্ব, সংসারের কাজ নিয়ে দ্বিগুণ চাপ বহন করতে হচ্ছে। কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিশ্রম এবং একঘেঁয়ে সাংসারিক কাজ নিংড়ে নিচ্ছে নারীদের শ্রমশক্তি।  মুনাফা এবং মজুরির যে বিরোধ- সেই বিরোধে শ্রমিক সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও দুর্বল এবং শোষিত। ফলে সারাদুনিয়াতে খাদ্য-পণ্য ও ব্যবহারিক পণ্য উৎপাদন বাড়লেও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। পুষ্টিকর খাদ্যদ্রব্য তা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। আয়ের বড় অংশ খাদ্য, বাড়িভাড়া, পোশাক, চিকিৎসায় ব্যয় হয়ে যাওয়ার ফলে সঞ্চয় যেমন থাকছে না তেমনি দক্ষতা অর্জনের জন্য বাড়তি খরচ করাও শ্রমিকের জন্য সম্ভব হয়ে উঠছে না। তবে শ্রমিকদের কল্যাণে কাজ করছে সরকার। তাদের জীবনমান উন্নয়ন এবং সুরক্ষায় আইনগত কাঠামো সূদৃঢ় করা হয়েছে। মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরির নিশ্চয়তা, চাকরির নিরাপত্তা এবং শ্রমিক কল্যাণ ও ট্রেড ইউনিয়ন অধিকারের স্বীকৃতি প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে সরকার। এছাড়া পুরুষ ও নারী শ্রমিকদের বেতন বৈষম্য দূর করতে নেওয়া হয়েছে কার্যকরী উদ্যোগ। শ্রমিক-মালিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে সরকারের উদ্যোগের পাশাপাশি দেশে ৪৩টি শিল্প সেক্টরের মধ্যে ৪০টি সেক্টরে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি শতভাগ বৃদ্ধি করে ৮ হাজার ৩০০ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার।  বাংলাদেশ কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির দেশ। কৃষিকে শিল্পে রূপান্তরের পাশাপাশি সরকার কৃষি কাজে নিয়োজিতদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। পোশাক শিল্পে পরিকল্পিত অন্তর্ঘাত এবং ফ্যাক্টরিতে উপর্যুপরি দুর্ঘটনা রোধ করতেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে শ্রম আইন নীতিমালা, শিশু  শ্রম নিরসন, গৃহকর্মী সুরক্ষা ও পেশাগত নিরাপত্তা বিধানে আইনগত কাঠামো সূদৃঢ় করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশের শ্রমজীবী মানুষের জীবন-মান উন্নয়ন ও কল্যাণে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। বিশ্বের শ্রমজীবী ও মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার গৌরবোজ্জ্বল ত্যাগের ঐতিহাসিক দিন মহান মে দিবসে ১৮৮৬ সালের পহেলা মে।  সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন শোষিত, বঞ্চিত ও শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছেন। শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি ১৯৭২ সালে শ্রমনীতি প্রণয়ন করেন। তিনি পরিত্যক্ত কল-কারখানা জাতীয়করণ করে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী এবং শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করেন।  মালিক-শ্রমিকের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সুসম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যমে নিরাপদ কর্মপরিবেশ, সামাজিক নিরাপত্তা ও শ্রমিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ শ্রম আইন যুগোপযোগী ও আধুনিকায়ন করে বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন-২০১৮ প্রণয়ন করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন খাতে কর্মরত শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়েছে।  এই তহবিল থেকে যেকোনো শ্রমিক কর্মরত অবস্থায় দুর্ঘটনাজনিত কারণে স্থায়ীভাবে অক্ষম হলে অথবা মৃত্যুবরণ করলে, জরুরি চিকিৎসা ব্যয়নির্বাহ ও দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসার জন্য এবং শ্রমিকদের সন্তানের উচ্চ শিক্ষার জন্যেও আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন। আমরা রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস শিল্পে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের সার্বিক কল্যাণে আর্থিক সহায়তা প্রদানে একটি কেন্দ্রীয় তহবিল গঠন করেছে এবং সহযোগিতা অব্যাহত রাখা হয়েছে। সব সেক্টরে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাড়ানো হয়েছে।  শ্রমিকদের সামাজিক মর্যাদা, স্বাস্থ্য ও সেইফটি নিশ্চিতকল্পে জাতীয় শ্রমনীতি-২০১২, জাতীয় শিশুশ্রম নিরসন নীতি-২০১০, জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি নীতিমালা ২০১৩, বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা-২০১৫ এবং গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি-২০১৫ প্রণয়ন করা হয়েছে; যা বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে স্থিতিশীল শিল্পসম্পর্ক এবং উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এবং কার্যক্রম আরো সুদৃঢ় হয়েছে। শিল্প-কারখানায় কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন পরিদপ্তরকে অধিদপ্তরে উন্নীত করা হয়েছে। শ্রমিক ও তাদের পরিবারের কল্যাণে বিভিন্ন সেবার সম্প্রসারণ ও জোরদারকরণে শ্রম পরিদপ্তরকে অধিদপ্তরে রূপান্তর করা হয়েছে। শ্রমিক ভাই-বোনদের যেকোনো সমস্যা সংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণ, অভিযোগ নিষ্পত্তি ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদানের জন্য সার্বক্ষণিক টোল ফ্রি হেল্প লাইন (১৬৩৫৭) চালু করা হয়েছে। শিল্প কারখানায় বিশেষ করে গার্মেন্টস শিল্পে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যথাযথ পরিদর্শন ও মনিটরিং ব্যবস্থা চলমান রয়েছে। এছাড়া শ্রমিকদের জন্য শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার প্রয়াসের অংশ হিসেবে রাজশাহীতে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তাবিষয়ক গবেষণা এবং প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নির্মাণ করা হচ্ছে। মহান মে দিবসের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে শ্রমিক এবং মালিক পরস্পর সুসম্পর্ক বজায় রেখে জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধিতে নিবেদিত হবেন। আমরা শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণ ও দেশের সার্বিক উন্নয়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। (লেখক : প্রাবন্ধিক, গবেষক ও কলামিস্ট)
২৯ এপ্রিল, ২০২৪

বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর মীরসরাই / দেশের অর্থনীতি পাল্টে দেবার এক অদম্য রূপকল্প : তবে...
বাংলাদেশের প্রথম পরিকল্পিত এবং সর্ববৃহৎ শিল্পনগর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরী মীরসরাই। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাই থেকে ১০ কি.মি. পশ্চিমে এবং চট্টগ্রাম শহর থেকে ৬০ কি.মি, উত্তরে অবস্থিত এই শিল্প নগরী। চট্টগ্রামের মীরসরাই, সীতাকুণ্ড, ফেনীর সোনাগাজী এবং নোয়াখালির কিছু অংশ ছুঁয়ে যাওয়া এই শিল্প নগরীর বিস্তৃত প্রায় ৩৫ হাজার একর জায়গা জুড়ে। সন্দীপের ১৩ হাজার একর এবং নোয়াখালির কোম্পানীগঞ্জের পাঁচ হাজার জায়গাও ভবিষ্যতে এই শিল্পনগরীর সাথে যুক্ত হবে বলে জানিয়েছে বেজা। সাগরের বুকে জেগে ওঠা চরে বিশাল শিল্পাঞ্চল তৈরির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার দিকে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। এই শিল্পনগরীর ধারণা আমাদের ধারণারও অতীত।  বিশাল এই এলাকা বালি দিয়ে ভরাট করে তৈরি হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন সড়ক এবং শিল্পকারখার অবকাঠামো। বিগত সাত বছরের কর্মযজ্ঞে এই শিল্পাঞ্চলে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১৫১টি প্রতিষ্ঠানকে। বিনিয়োগ এসেছে প্রায় ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের। পর্যায়ক্রমে এই শিল্পনগরীতে ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ হবে বলে দৃঢ়তার সাথে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।  দেশি বিদেশি বেশ কয়েকটি শিল্প কারখানা ইতোমধ্যে উৎপাদন শুরু করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য এশিয়া পেইন্ট, বার্জার, এ সি আই, বি এস আর এম, বসুন্ধরা ক্যামিক্যাল, ভারতীয় মার্কো ইত্যাদি। এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (ইপিজেড) ৪৩টি গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান তৈরির কাজ শুরু করেছে। কিছু ভবনের নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এসব কিছুর জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখতে দ্রুত এগিয়ে চলছে পাওয়ার স্টেশন নির্মাণ কাজ। বেশ কয়েকটি দৃষ্টিনন্দন সড়কের কাজ শেষ হয়েছে। আরও সড়ক তৈরির কাজ অব্যাহত রয়েছে।  ফেনীর সোনাগাজি থেকে মীরসরাইয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘেঁষে তৈরি হবে মেরিন ড্রাইভ, যা এখান থেকে কক্সবাজারের মেরিনড্রাইভ এর সাথে যুক্ত হবে। এতে যোগাযোগ হবে যেমন সহজ ও অবারিত তেমনি পর্যটনের জন্য হবে আকর্ষণীয়। চট্টগ্রাম, নোয়াখালি, ফেনী জেলা সংযুক্ত এই বিশাল এলাকায় অর্থনৈতিক সম্ভাবনার সাথে সাথে যোগাযোগ ও পর্যটনের অপার সম্ভাবনার দরজা খুলে যাবে। শিল্প কারখানা তৈরির কর্মযজ্ঞ, দৃষ্টিনন্দন সড়ক, নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ,অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য-সবমিলে অত্যাধুনিক এই শিল্প অঞ্চলের প্রতি বিশেষ আকর্ষণ আজ সবার। বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরী হবে দেশের প্রথম পরিবেশ শিল্প শহর বা ‘সবুজ’ শিল্প শহর। এখানে জ্বালানি ব্যবস্থাপনা এবং বর্জ্য ব্যবস্থনার সঙ্গে থাকবে সামঞ্জস্য।  সাগরের তীরঘেঁষা এই মীরসরাই শিল্পনগরীতে নির্মাণ হবে একটি নৌবন্দর। যার সম্ভাব্যতার কাজ শেষ হয়েছে। দুই বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে জাপানের একটি কোম্পানি এই বন্দর নির্মাণ করবে। এখানে ছোট ও মাঝারি ধরনের জাহাজ ভিড়তে পারবে । আগামী এক দশকের মধ্যে এটি হবে একটি মেগাসিটি। এখানে থাকবে বিমানবন্দর, ডজন খানেক ৫ তারকা হোটেল। এছাড়াও স্কুল-কলেজ, অত্যাধুনিক হাসপাতাল,ফায়ার স্টেশন, নিরাপত্তার জন্য পুলিশ স্টেশন। ব্যাংকিং খাত সহজ করার জন্য দেশি বিদেশি ব্যাংকগুলোর থাকবে পূর্ণ সুযোগ সুবিধা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক লাগোয়া মীরসরাইয়ে এই শিল্প নগরীর তীর ঘেঁষে থাকছে মেরিনড্রাইভ, যা ফেনীর সোনাগাজী থেকে শুরু হবে এবং কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভের সাথে সংযুক্ত থাকছে। এর সাথে যুক্ত হবে রেল যোগাযোগ। শিল্প, কর্মসংস্থান, যোগাযোগে, পর্যটনের সমন্বিত এই মহা রূপকল্প দাবিত হচ্ছে সমৃদ্ধ ও স্মার্ট এক বাংলাদেশের দিকে। বাংলাদেশের অর্থনীতিকে পাল্টে দেবার এই বিশাল কর্মযজ্ঞের কেন্দ্রস্থল চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ের ইছাখালি। সমৃদ্ধ জীবন এবং ঐতিহ্যের ধারক ‘ইছাখালি’ একটি ইউনিয়ন হলেও মূলত এর আকারে একে একটি উপজেলা বলা যেতে পারে। এই এলাকার মানুষের পরিচয়ের মধ্যে ফুটে ওঠে আভিজাত্য ও গৌরব। কার কত পরিমাণ ভূমি আছে ,মহিষের বাথান আছে, গরুর খামার আছে, ভেড়া-ছাগলের পাল পাল আছে-এই নিয়েই তাদের পরিচয়। এখানকার স্থানীয় বাজার মাদবার হাঁট, ঝুলনপোল বাজার, আবুর হাঁট, টেকের হাঁট, ভাঙনি, চর শরৎ, ভূইয়া রাস্তার মাথা ইত্যাদিতে ‘ভূমি লর্ড’দের আড্ডা বসে। তাদের আড্ডারি বিষয়বস্তু কে কত মণ ধান পেয়েছে, কত মণ খেসারীর ডাল হয়েছে, কার কত মণ মুগ মশুর, কলাই, ধইন্যা হয়েছে।  তাদের আড্ডায় আরও থাকে মহিষের বাথানে কার কতটি মহিষ আছে, খামারে কতটি গাভি দুধ দেয়, আগামী কোরবানি কতটি ষাড়-বলদ বিক্রি হবে, কার কত শত ভেড়া আছে ইত্যাদি। এর সাথে যুক্ত হয়েছে কার কত তরমুজের চাষা হয়েছে, এ পর্যন্ত কত লক্ষ টাকার তরমুজ বিক্রি হয়েছে। মহিষের দুধ ও দইয়ের জন্য ইছাখালির সুনাম সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই। এছাড়াও এখানকার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অন্যতম ভিত্তি স্থানীয় মৎস্য খামার। কার মৎস্য খামারে কত কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে এবং এই পর্যন্ত কত টাকা বিক্রি হয়েছে-এসব হচ্ছে এখানকার মানুষদের আলোচনার অতীব সাধারণ বিষয়। পারস্পরিক দেখা সাক্ষাতের এই আলোচনা ইছাখালির মানুষের প্রাত্যহিক জীবনেরই অংশ। সাধুর চর, চর নিলাক্ষী, চর শরৎসহ এসব এলাকার বিস্তীর্ণ জমির মালিক ইছাখালিসহ আশ-পাশের মানুষ জনের। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হচ্ছে ঠুকতো অজুহাত দেখিয়ে শত শত একর জমি শিল্পজোন গ্রাস করে নিচ্ছে। হুমকির মুখে আছে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ মিঠা পানির মৎস্য জোনটিও।  একসময় ফেনী নদীর করাল গ্রাসে শত শত একর জমি এক সময় বিলীন হয়ে যায়। ১৯৮৩-৮৪ ইংরেজি সনে ফেনী নদীর বুকে তৈরিকৃত মীরসরাই-সোনাগাজী মুহুরীপ্রজেক্ট। এর ইতিবাচক প্রভাবে পলি জমে বিলীন হওয়া এসব জমি চর হিসেবে আবার জেগে ওঠে। পূর্বের মালিকরা জেগে ওঠা চরে তাদের জমির পূন সীমানা নির্ধারণ করে চাষাবাদ শুরু করে । মাইলের পর মাইল সবুজ তৃণ ভূমিতে গড়ে ওঠে শত শত গরু, মহিষ, ভেড়ার খামার। মৌরসি এসব জমিতে কৃষি ভিত্তিক আয়ের অবারিত সুযোগ সৃষ্টি প্রেক্ষিতে এই অঞ্চলের লোকজন চাকুরির প্রতি ছিল সর্বদাই বিমুখ। কৃষিভিত্তিক সমৃদ্ধ অর্থনীতির কারণে ইছাখালি এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষজন বরাবরই ছিল আত্মনির্ভরশীল। কিন্তু তাদের মেরুদণ্ড আজ ভেঙে দিচ্ছে এই শিল্পজোন। আরএস, পি এস রেকর্ড ঠিক থাকলেও নদী সিকস্তির কারণে অধিকাংশ এসব জমির বিএস রেকর্ড হয়নি। যার ফলে এসব জমিকে খাস হিসেবে খোঁড়া অজুহাত দেখিয়ে বিনামূল্যে গ্রাস করে নিচ্ছে শিল্পজোন।  অপরদিকে সরকার চড়া দামে এসব জায়গা বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রি করছে। কিন্তু জমির প্রকৃত মালিক তাদের দিকে কারো কোনো নজর নেই। যার ফলে যারা এক সময় ‘ল্যান্ড লর্ড’ ছিল তারা এখন হয়ে যাচ্ছে ভূমিহীন। ভেঙে পড়ছে সমৃদ্ধ কৃষি অর্থনীতি। বিলীন হয়ে যাচ্ছে এখানকার সংস্কৃতি কৃষি খামার। এদিকে কয়েক হাজার একর জমিতে এখানকার সাধারণ মানুষের উদ্যোগে গড়ে ওঠা মৎস্য জোনের মালিকরাও খুবই দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়েছে। একই অজুহাতে এসব মৎস্য জোনও শিল্প জোনের অধিকারে চলে যাচ্ছে।  বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরীতে এখানকার স্থানীয় অধিবাসীদের চাকরির ব্যাপক সুযোগ হওয়ার কথা থাকলেও এখন তা হচ্ছে না। যে-সব শিল্প প্রতিষ্ঠান উৎপাদনের গেছে সেই সব প্রতিষ্ঠানে যোগ্যতার ঘাটতি দেখিয়ে স্থানীয়দের চাকরির পথ অনেকটা রুদ্ধ। ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতি পাল্টে দেবার মতো এরকম একটা শিল্পনগরী যাদের বুকের উপর প্রতিষ্ঠিত তারাই হয়ত ভবিষ্যতে কাগজ কুড়োবে এবং পান-বিড়ির টং দোকান দিয়ে কোনোমতে বেঁচে থাকার চেষ্টা করবে।  সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সৎ উদ্দেশ্যের প্রতি কারো কোনো সন্দেহ না থাকলেও স্থানীয় ভূমি মালিকদের নিঃশেষ হয়ে যাবার কথা হয়ত যথাস্থানে পৌঁছাচ্ছে না। এখনই উচিত স্থানীয় জমির মালিকদের যথার্থ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে ন্যূনতম অংশীদারিত্বের সুযোগ সৃষ্টি করা।  আবু জাফর সাঈদ: সাবেক সহকারী অধ্যাপক, বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, জেদ্দা
২৮ এপ্রিল, ২০২৪

বঙ্গবন্ধু রেলসেতুতে ডিসেম্বরে চলবে ট্রেন
দেশের উত্তর ও দক্ষিণের পথে ট্রেনযাত্রীদের কষ্টের দিন শেষ হতে যাচ্ছে। এই পথের জন্য নির্মিত বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। মার্চ পর্যন্ত অগ্রগতি ৮২ ভাগ। আর বাকি ১৮ ভাগ। মে মাসের মধ্যে শেষ হচ্ছে স্প্যান বসানোর কাজ। উদ্বোধন চলতি বছরের ডিসেম্বরেই। এর পরই ২৫০ কিলোমিটার সর্বোচ্চ গতিতে চলবে ট্রেন। প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু দিয়ে সাধারণ ট্রেন ছাড়াও দ্রুতগতির (হাইস্পিড) ট্রেন চালানোর উপযুক্ত করে নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে সেতুতে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৫০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো যাবে। তবে শুরুতে (উদ্বোধনের এক বছর) সাধারণত ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করবে। জানা গেছে, ঢাকা থেকে উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের ট্রেন চলাচলে বর্তমানে একটিই পথ বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতু। কিন্তু সেতুর সক্ষমতা কমে যাওয়ায় মাত্র ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পার হতে লেগে যায় ২৫ মিনিটের মতো। আরেক সমস্যা, সিঙ্গেল গেজ ট্র্যাক হওয়ায় ট্রেনগুলোকে সেতুর দুই পারের স্টেশনে সিগন্যালের জন্যে অপেক্ষা করতে হয়। মাত্র ৫ কিলোমিটার পথ পার হতে গেলে এক ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যায়। এ সমস্যা সমাধানে যমুনা নদীতে বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে নির্মিত হচ্ছে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের দেশের বৃহত্তম বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু। প্রকল্প পরিচালক (পিডি) আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান কালবেলাকে বলেন, এ রেলসেতুর কাজের ভৌত অগ্রগতি ৮২ শতাংশ। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সব কাজ শেষ করে অপারেশনে আসতে পারবে। রেল মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরকালে সে দেশের সরকার এ প্রকল্পে অর্থায়নে সম্মত হয়। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে নেওয়া প্রকল্পে চূড়ান্ত নকশা প্রণয়নসহ বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) দেশের বৃহত্তম এ রেলসেতু নির্মাণে ৭ হাজার ৭২৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। ২০১৭ সালের মার্চে পরামর্শক নিয়োগ করা হয়। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন শেষ হয়। এরপর প্রথম দফা ডিপিপি সংশোধনের পর সেতুর নির্মাণব্যয় ৭ হাজার ৪৭ কোটি টাকা বেড়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। প্রথমে ২০২৪ সালের আগস্টে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও পরবর্তী সময়ে ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শেখ নাইমুল হক কালবেলাকে বলেন, বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর ভৌত কাজ শেষ হয়েছে ৮২ শতাংশ। আর আর্থিক কাজের অগ্রগতি ৬০ দশমিক ৬১ শতাংশ। তিনি বলেন, ফিক্সিং ও ট্র্যাক বসানো হচ্ছে এখন। একই সঙ্গে টেলিকমিউনিকেশনের কাজও শেষ করা হচ্ছে। রেলওয়ে কর্মকর্তারা বলছেন, উত্তরবঙ্গের প্রধান তিন রুটের শেষ গন্তব্য পঞ্চগড়, বুড়িমারী, কুড়িগ্রাম পৌঁছাতে ঢাকা থেকে স্বাভাবিক শিডিউলেই ১০ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। আর শিডিউল বিপর্যয় হলে বিপাকে পড়তে হয় এ রুটের যাত্রীদের। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমানে ৪৮টি ট্রেন বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতু ব্যবহার করলেও ২০২৪ সালে যখন বঙ্গবন্ধু রেলসেতু উদ্বোধন হবে, তখন দ্বিগুণ ট্রেন চলাচল করবে। যার সংখ্যা প্রায় ৮৮টি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করবে। যার মাধ্যমে উত্তরবঙ্গ থেকে সহজে পণ্য পরিবহন করা যাবে রাজধানী ঢাকাতে। এ পথে কনটেইনার পরিবহনের মাধ্যমে আয়ের নতুন পথও খুলবে। প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী তানবিরুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, সেতুর পিলারগুলোর ফাউন্ডেশন জাপানি এসপিএসপি ফাউন্ডেশন পদ্ধতিতে দেওয়া হয়েছে। এ সেতুর ফলে রেলের মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে পণ্য পরিবহনে নিজেদের সক্ষমতা তৈরি হচ্ছে। সেতুটি চালু হলে উত্তরাঞ্চলের রেল যোগাযোগে যেমন গতি বাড়বে, তেমনি প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে রেলে পণ্য পরিবহনে সক্ষমতা তৈরি হবে। জানতে চাইলে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. হাদীউজ্জামান কালবেলাকে বলেন, সময়ের কারণে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। এই সেতু নিঃসন্দেহে রেলকে এগিয়ে নেবে। কিন্তু গোটা বিশ্ব এখন দ্রুত গতির ট্রেন চালুর দিকে। আমাদের কিছু কিছু রুটে সেরকম চিন্তা করতে হবে।
২৫ এপ্রিল, ২০২৪

যবিপ্রবির বঙ্গবন্ধু ক্যারিয়ার ক্লাবের সভাপতি জাকারিয়া, সম্পাদক নিলুফা
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) বঙ্গবন্ধু ক্যারিয়ার ক্লাবের কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতি পদে জাকারিয়া হাবিব জিম এবং সাধারণ সম্পাদক নিলুফার মাহারুফ মিম নির্বাচিত হয়েছেন।  শনিবার (২০ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ভবনের ২০১নং কক্ষে যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবির জাহিদ, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ও নির্বাচন কমিশনার ড. অভিনু কিবরীয়া ইসলাম এবং ড. মো. আশরাফুজ্জামান জাহিদ আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন।  কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হচ্ছেন- সহসভাপতি (প্রশাসনিক) তানজিদ মাহমুদ মাহিন, সহসভাপতি (পরিকল্পনা) সাদিয়া আফরিন, সহসাধারণ সম্পাদক (প্রশাসনিক) নাফিসা তাসনিম ঐশী, সহসাধারণ সম্পাদক (পরিকল্পনা) আবদুল্লাহ আল নোমান, সহকারী সাধারণ সম্পাদক (দপ্তর ও উচ্চশিক্ষা) আব্দুল আহাদ সৈকত, কোষাধ্যক্ষ দোলেনুর করিম,পরিচালক (পরিকল্পনা ও পরামর্শ)আব্দুল্লাহ আল মামুন অনিক, পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন) ফারহানা ইয়াসমিন, পরিচালক (অভ্যন্তরীণ বিষয়ক) অর্পিতা সাহা, পরিচালক (বহিরাগত) ফারিয়া বিনতে ফারুক, পরিচালক (ডিজাইন ও কন্টেন্ট রাইটিং) আবিদ হাসান, পরিচালক (মিডিয়া ও কমিউনিকেশন) তানজিম হাসান, পরিচালক (ইভেন্ট সমন্বয়কারী) জ্যোতিরণ মন্ডল জয়। এ ছাড়াও কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্যরা হচ্ছেন বিক্রমজিৎ বিশ্বাস, মো. মোহাইমিনুল ইসলাম মেহরাব, মো. সোহাগ হাসান, ফরিদ আহমেদ।
২১ এপ্রিল, ২০২৪
X