হালাল খাদ্যের বাজার ধরার আহ্বান
হালাল খাদ্যের বৈশ্বিক বাজারে বড় সম্ভাবনা দেখছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা। সেজন্য খাদ্য উৎপাদন থেকে প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ এবং বাজারজাতকরণ—প্রতিটি ধাপে কমপ্লায়েন্স ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা জরুরি বলে মনে করছেন তারা। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী হালাল খাদ্যের বাজারে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে ইকোসিস্টেম উন্নয়নের আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। গতকাল রোববার এফবিসিসিআইর মতিঝিল কার্যালয়ে হালাল ফুডবিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় এসব বিষয় উঠে আসে। সভায় সভাপতিত্ব করেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন ইউসুফ। কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ ছিলেন এফবিসিসিআইর পরিচালক মুনতাকিম আশরাফ টিটু। সভার প্রধান অতিথি এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, মানব স্বাস্থ্যের জন্য হালাল খাদ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিষয়টি অনুধাবন করে মুসলিমদের পাশাপাশি বিশ্বের অমুসলিমরাও হালাল খাদ্যের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে কিছু দেশ হালাল খাদ্যের বৈশ্বিক বাজারে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করেছে। এ বাজারে বাংলাদেশেরও সম্ভাবনা অপার। খাদ্যসহ হালাল শিল্পের উন্নয়নে দেশে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা হওয়া জরুরি বলে জানান এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম। বিএসটিআই এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন এ দুটি প্রতিষ্ঠান দেশে বর্তমানে হালাল সার্টিফিকেট দিচ্ছে। সার্টিফিকেশন প্রক্রিয়া সহজ, গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করা এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে হালাল সনদ প্রদানের জন্য সুনির্দিষ্ট একটি কর্তৃপক্ষ গড়ে তোলার ওপর জোর দেন এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহসভাপতি আমিন হেলালী। এ সময় হালাল শিল্পের উন্নয়নে কমিটির সদস্যদের সুনির্দিষ্ট পরামর্শ লিখিত আকারে জমা দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। সভায় ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, হালাল ফুড ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে সবার আগে অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে নিরাপদ এবং গুণগত খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে। সেজন্য উৎপাদনকারী ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান, সরকারসহ এ খাতের বড় অংশীজনের সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। এ সময় বিএসটিআই এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে হালাল সার্টিফিকেট প্রাপ্তির প্রক্রিয়া সহজ করাসহ সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন, বাস্তবায়ন এবং হালাল শিল্পের জন্য নীতি সুবিধা আহ্বান করেন কমিটির সদস্যরা। পাশাপাশি হালাল শিল্পের জন্য দক্ষ জনবল গড়ে তোলা, অর্থায়ন সুবিধা, গবেষণা ও উদ্ভাবন এবং সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতার গুরুত্ব তুলে ধরেন তারা। সভায় আরও ছিলেন এফবিসিসিআইর পরিচালক হাফেজ হাজী হারুন-অর-রশিদ, নিয়াজ আলী চিশতি, সৈয়দ মো. বখতিয়ার, এফবিসিসিআইর মহাসচিব মো. আলমগীর প্রমুখ।
১৩ মে, ২০২৪

এবার নাগালের বাইরে শুঁটকি বাজার
দীর্ঘদিন ধরে অস্থিরতা চলছে ভোগ্যপণ্যের বাজারে। এবার দাম বেড়ে ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে গেছে শুঁটকি। মাসের ব্যবধানে সব ধরনের শুঁটকি কেজিতে দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ৩শ টাকা পর্যন্ত। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাগরে মাছের পরিমাণ কমে যাওয়া, শুঁটকি তৈরির অন্যতম উপাদান লবণের দাম বৃদ্ধি ও হিমায়িত করে মাছ বিদেশে রপ্তানি করার কারণে শুঁটকির উৎপাদন কমে গেছে। পাশাপাশি আগের তুলনায় পরিবহন খরচ ও শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যাওয়ার কারণে শুঁটকির দামও এখন বাড়তির দিকে। লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে শিয়ালখোওয়া বাজারে বিভিন্ন শুঁটকির দোকান ঘুরে দেখা গেছে, সব ধরনের শুঁটকি কেজিতে  ৫০ থেকে ৩শ টাকা বেড়েছে। কেজিতে ভেটকি শুঁটকি ১ হাজার টাকা, দেশি চেপা শুঁটকি ১ হাজার ২শ টাকা, চিংড়ি শুঁটকি ছয়শ টাকা, বালিয়া শুঁটকি ৪শ টাকা, লইট্টা এক হাজার দুইশ টাকা, ফেওয়া শুঁটকি ৪শ টাকা, হিছুটিমলা শুঁটকি ৪শ টাকা, ছুরি শুঁটকি ৫শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে চিংড়ি শুঁটকি ৫৫০ টাকা, বাঁশপাতা সিদল শুঁটকি ৪শ টাকা ও ৫০ টাকা বেড়ে চেপা শুঁটকি (বড়) ৮শ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কালীগঞ্জের শিয়ালখোওয়া বাজার এলাকার শুঁটকি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইব্রাহিম কালবেলাকে বলেন, লবণের দাম আগে ৫শ টাকা ছিল, এখন ৮শ টাকা। তার ওপর সাগরে মাছ কমে গেছে, হিমায়িত মাছের রপ্তানি বেড়েছে। তাই আমাদের দেশে শুঁটকির উৎপাদন অনেক কমে গেছে। শুঁটকি আমদানি করতে গিয়েও বাড়তি খরচ দিতে হচ্ছে। আমাদের দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, শ্রমিকের মজুরি তো আছেই। সবমিলিয়ে দামটা বেড়েছে। তাই ক্রেতার সংখ্যাও কমে গেছে। আরেক ব্যবসায়ী মো. কাশেম মিয়া বলেন, বাজারে মাছের দাম বেশ চড়া। এক কেজি ছুরি শুঁটকি উৎপাদনে পাঁচ থেকে ছয় কেজি মাছ লাগে। আট কেজি লইট্টা মাছ শুকালে এক কেজি লইট্টা শুঁটকি পাওয়া যায়। তার ওপর লবণ আর মজুরি বেড়েছে। তাই দাম বেশি।
১১ মে, ২০২৪

চকচকে চাল খাওয়া বন্ধ করলে দাম কমবে : খাদ্যমন্ত্রী
চকচকে চাল খাওয়া বন্ধ করলে দাম কমবে বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।  বৃহস্পতিবার (৯ মে) ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) একটি আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, আমাদের শুধু ছাঁটাই করে যে চাল নষ্ট হচ্ছে, সেটা অর্ধেক রপ্তানি করলেই হবে। কারণ উৎপাদিত প্রায় চার কোটি টনের মধ্যে তিন শতাংশ হারে প্রায় ১২ লাখ টন চাল ছাঁটাই করার কারণে অপচয় হচ্ছে। আমাদের চাল পাঁচ দফা ছাঁটাই করে চকচকে করা হচ্ছে। দুবার ছাঁটাই করলেও ৫-৭ লাখ টন চাল বাড়বে।  সাধন চন্দ্র বলেন, দফায় দফায় ছাঁটাই করার পর চালের মধ্যে শুধু কার্বোহাইড্রেট ছাড়া অন্য কোনো পুষ্টি থাকছে না। এতে খরচ হচ্ছে বিদ্যুৎ, শ্রমিকের মজুরি সবকিছু মিলে প্রতি কেজিতে প্রায় চার টাকা। যে ভার ভোক্তাকে বহন করতে হচ্ছে। চালের দামে এ খরচ যুক্ত হচ্ছে। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা নতুন আইন করে চাল ছাঁটাই বন্ধ করছি, মিনিকেট বা বিভিন্ন নামে চাল বাজারজাত করাও বন্ধ করেছি। ভোক্তাদের আমি বলব, আপনারা চকচকে চাল খাওয়া বন্ধ করুন। তাহলে যেমন চালের দাম কমবে, আমরা চাল রপ্তানি করতেও সফল হব। এ আইন কার্যকর হওয়ার পর আগামী আমন মৌসুম থেকে চাল ছাঁটাই করলে মিল মালিকরা জরিমানার শিকার হবে। আসুন সবার প্রচেষ্টায় আমরা চাল রপ্তানির প্রস্তুতি নিই। সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ অ্যান্ড এশিয়া প্যাসিফিক এর প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড গ্রুপ ম্যানেজিং ডিরেক্টর মেহেরুন এন. ইসলামের স্বাগত বক্তব্যে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান ও সিইও এ এইচ এম আহসান। আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) চেয়ারম্যান মো. জাকারিয়া, কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ হাসান আরিফ, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) পরিচালক (বিপণন, নকশা ও কারুশিল্প) আব্দুন নাসের খান। 
০৯ মে, ২০২৪

বাজার থেকে টিকা তুলে নিচ্ছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা
বাজার থেকে কভিড-১৯ টিকা তুলে নিচ্ছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। কোম্পানিটি ভ্যাক্সজেভ্রিয়া বা কোভিশিল্ড টিকা তুলে নেবে। করোনা মহামারির সময় অ্যাস্ট্রাজেনেকা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কভিভ-১৯-এর যে টিকা উৎপাদন করে, তার ব্র্যান্ড নাম ভ্যাক্সজেভ্রিয়া। এর পর ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট সেই টিকা উৎপাদনের লাইসেন্স পায়। তারা কোভিশিল্ড নামে সেই টিকা বাজারজাত করে। সিএনএন ও দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়, গত মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলেছে, চাহিদা হ্রাস পাওয়ার কারণে কভিড টিকা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। বাজারে বর্তমানে কভিডের অনেক টিকা এসেছে। ফলে ভ্যাক্সজেভ্রিয়ার চাহিদা কমে যাওয়ায় উদ্বৃত্ত থাকছে। তাই এই টিকা আর উৎপাদন বা সরবরাহ করা হবে না। এ ছাড়া ভাইরাসের অনেক উপধরনের কারণে কভিড-১৯ এখন দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই ভাইরাস এখন আর আগের মতো প্রাণঘাতী নয়। এসব বিবেচনা করে অ্যাস্ট্রাজেনেকা বাজার থেকে টিকা প্রত্যাহার করে নেওয়া শুরু করেছে। তারা দাবি করেছে, শুধুমাত্র বাণিজ্যিক কারণেই বাজার থেকে টিকা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এর সঙ্গে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। যদিও এর আগে অ্যাস্ট্রাজেনেকা আদালতে স্বীকার করেছিল, এই টিকার কারণে রক্ত জমাট বাঁধা ও রক্তচাপ কমে যাওয়ার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। চলতি বছরের মার্চে অ্যাস্ট্রাজেনেকা এই টিকা বাজার থেকে তুলে নেওয়ার আবেদন করে। মঙ্গলবার থেকে তা কার্যকর হয়। যদিও অন্যান্য দেশ এরই মধ্যে এই টিকা প্রয়োগ বন্ধ করে দিয়েছে। ২০২৩ সালের মার্চে অস্ট্রেলিয়ায় এই টিকার প্রয়োগ বন্ধ হয়। কোম্পানিটি বাণিজ্যিক কারণে টিকা তুলে নেওয়ার কথা বললেও তাদের বিরুদ্ধে মামলা চলমান। মামলায় বলা হয়েছে, কোভিশিল্ডের টিকা নেওয়ার পর একাধিক মৃত্যু ও গুরুতর অসুস্থতার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। ভারতে করুনিয়া নামে এক তরুণী কোভিশিল্ড টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মারা গেছেন বলে অভিযোগ করেছেন তার বাবা। এদিকে বিশ্বব্যাপী অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রত্যাহারের ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশেও গ্রহীতারা কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগছেন কি না জানতে জরিপ চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। গতকাল বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণে টিকাদান কর্মসূচিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। স্বাস্থমন্ত্রী বলেন, এটা (টিকা তুলে নেওয়ার বিষয়) আমরা শুনেছি। তবে, আমাদের দেশে এ ধরনের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার রিপোর্ট আমরা এখনো পাইনি। বিষয়টি জানার পর এরই মধ্যে ডিজি হেলথকে নির্দেশনা দিয়েছি। তারা এটা জরিপ করছে। মানে যাদের এ টিকা দেওয়া হয়েছে, তাদের ওপর জরিপ চারিয়ে আমাকে রিপোর্ট দেবে। আমরা বিষয়টি নিয়ে কনসার্ন করব। উল্লেখ্য, কভিড-১৯-এর টিকা আবিষ্কারের পর তা বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এর পর এই টিকা ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর ব্রিটেনে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়। এর পর প্রথম টিকা দেওয়া হয় ২০২১ সালের ৪ জানুয়ারি। এক হিসাবে, ২০২১ সালেই ৬৫ লাখের বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে এই টিকা বিশ্বব্যাপী সরবরাহ করা হয় ৩০০ কোটিরও বেশি ডোজ।
০৯ মে, ২০২৪

বাজার থেকে করোনা টিকা তুলে নিচ্ছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা
বাজার থেকে নিজেদের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা তুলে নিচ্ছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। মঙ্গলবার (৭ মে) তারা এ ঘোষণা দেয়। কোম্পানিটি নতুন করে আর কোভিড-১৯-এর টিকা উৎপাদনও করবে না। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনা টিকায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ধরা পড়ে। ব্রিটিশ-সুইডিশ ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রতি আদালতের প্রেরণ করা নথিতে স্বীকার করেছে, টিকাটি গ্রহণকারীর দেহে রক্ত​জমাট বাঁধা এবং রক্তের প্ল্যাটিলেট সংখ্যা কম হওয়ার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। কিন্তু মঙ্গলবারের বিবৃতিতে অ্যাস্ট্রাজেনেকা এসবের কিছুই উল্লেখ করেনি। বাজার থেকে টিকা প্রত্যাহারের কারণ হিসেবে তারা জানায়, করোনার বিভিন্ন ধরন মোকাবিলায় বাজারে যথেষ্ট টিকা আছে। সেসব সাম্প্রতিক হওয়ায় বেশি কার্যকর। এতে অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকার চাহিদা কমে গেছে। এ জন্য তারা নতুন উৎপাদনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে সঙ্গে বাজারে থাকা টিকাগুলোও কোম্পানিটি তুলে নেবে। এর আগে গত মার্চে অ্যাস্ট্রাজেনেকা স্বেচ্ছায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারজাতকরণ অনুমোদন চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়। মূলত এই চুক্তি ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে ওষুধ বাজারজাত করার অনুমতি দেয়। এবার পুরো বিশ্ব থেকে টিকা সরিয়ে নিচ্ছে তারা। ওই কোভিড ভ্যাকসিনটি ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সীদের ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত ছিল। সাধারণত তিন মাসের ব্যবধানে বাহুর পেশিতে দুটি ইনজেকশন হিসেবে টিকাটি দেওয়া হতো। কিছু দেশে বুস্টার ডোজ হিসেবে তৃতীয় ইনজেকশনে টিকা দেওয়া হয়েছে। পরে টিকাটি নিয়ে বিতর্ক উঠতে থাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর হলো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ‘খুব বিরল টিটিএস’-এর ঘটনা। এর ফলেই রক্তে প্ল্যাটিলেট কমে যাওয়া এবং রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে। খবরটি প্রচার পেলে বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক তৈরি হয়। অনেকে ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেন। অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে ব্রিটিশ হাইকোর্টে ৫১টি মামলা চলছে। এদিকে বাংলাদেশ ও ভারতের অনেকে এ টিকা গ্রহণ করেছেন। টিকা গ্রহণকারীরা কতটা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ভারতের সংবাদ সংস্থা আইএএনএস-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেশটির সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঈশ্বর গিলাদা জানিয়েছেন, থ্রোম্বোটিক থ্রম্বোসাইটোপেনিক সিনড্রোম হলো বিরল। কিন্তু এর প্রভাব গুরুতর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মাত্র ০.০০২ শতাংশ ক্ষেত্রেই এ ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। অর্থাৎ প্রতি ৫০ হাজার লোকের মধ্যে একজনেরও কম মানুষ এমন ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। ভারতের মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের ন্যাশনাল কোভিড-১৯ টাস্কফোর্সের কো-চেয়ারম্যান ডা. রাজীব জয়দেব জানান, এ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া শুধু প্রথম ডোজ নেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে দেখা গেছে। এরপর আর দেখা যায়নি। এ ছাড়া ভারতে ‘থ্রম্বোসিস থ্রোম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম’ হওয়ার কোনো খবর নেই বলেও জানান তিনি।
০৮ মে, ২০২৪

বাজার করতে গিয়ে দোকানির হাতে মারধরের শিকার চবি শিক্ষার্থী
বাজার করতে গিয়ে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে মারধরের শিকার হয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার (৭ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের ২নং ফটকে সন্ধ্যা ৭টার দিকে মারধরের ঘটনা ঘটে। আহত ওই শিক্ষার্থীর নাম আনাস মাহদী। তিনি চারুকলা ইনস্টিটিউটের ২০২০-২১ সেশনের ছাত্র। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যা ৭টার দিকে ২নং ফটকে বাজার করতে যান ওই শিক্ষার্থী। দোকানির সঙ্গে দামাদামির একপর্যায়ে কথাকাটাকাটি হয়। পরে ওই শিক্ষার্থীর ওপর হাত তোলেন দোকানি। এ সময় পাশ থেকে আরও কয়েকজন গিয়ে মারধর করে ভুক্তভোগীকে। এ ঘটনায় মাথা ফেটে রক্ত বের হয় তার ভুক্তভোগীর।  মারধরের শিকার আনাস মাহদী কালবেলাকে বলেন, প্রতিদিনের মতোই আমি বাজার করতে ২নং ফটকে যাই। এ সময় রহমানিয়া হোটেলের পাশের একটি দোকানে বাজার করতে গেলে দাম বেশি চায় শামসুদ্দিন নামের ওই দোকানি। তখন কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে আমাকে ওই দোকানি ও তার কিছু অনুসারী মিলে মারধর করে। এতে আমার মাথা ফেটে রক্ত পড়ে পুরো গেঞ্জি লাল যায়।  আনাস মাহদী আরও বলেন, পরবর্তীতে খোঁজ পেয়ে আমার কিছু বড় ভাই ও প্রক্টর স্যার আসেন। চবি মেডিকেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হাটহাজারী থানায় একটি একটি সাধারণ ডায়েরি করছি। প্রশাসনের কাছে আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া এমন ঘটনার বিচার চাচ্ছি।  এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে বাদী হয়ে মামলা করার দাবি জানায় চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।  এ বিষয়ে চবি মেডিকেলে দায়িত্বরত ডা. আতাউল গনি পারভেজ বলেন, মারধরের ঘটনায় তার (ভুক্তভোগী) মাথা থেকে রক্ত ঝরেছে অনেক।  তাকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।    বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. অহিদুল আলম বলেন, ২নং ফটকে মারধরের ঘটনা শুনে আমি তাৎক্ষণিক ওই জায়গায় যাই। পরে স্থানীয় দোকানদের সঙ্গে কথা বলে তাকে (ভুক্তভোগী) মেডিকেলে পাঠাই। সে হাটহাজারী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে। এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ কর্তৃপক্ষ নেবে।
০৮ মে, ২০২৪

অবৈধ সিগারেটে বাজার সয়লাব
দেশের বাজারে দেদার বিক্রি হচ্ছে বিদেশি সিগারেট। পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে পাইকারি বাজারেও মিলছে অবৈধভাবে আমদানি হওয়া এসব সিগারেট। প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডের সিগারেটের তুলনায় দাম কম হওয়া এসব সিগারেটে ঝুঁকছেন ধূমপায়ীরা। এতে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। এ অবস্থায় অবৈধ সিগারেটের আমদানি, উৎপাদন ও বাজারজাত বন্ধে সারা দেশে জেরা টাস্কফোর্সের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনার জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে চিঠি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সংশ্লিষ্টদের মতে, বাজারে চাহিদা থাকায় ওরিস ও ইজি ব্র্যান্ডের সিগারেট হাত বাড়ালেই মিলছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নকল সিগারেটও। এসব সিগারেট অবাধে আমদানিযোগ্য না হওয়ায় শুল্ক ফাঁকি দিয়ে চোরাই পথে দেশে আসছে। আর কিছু দেশীয় প্রতিষ্ঠানও নামে-বেনামে এসব সিগারেট তৈরি করে বাজারে বিক্রি করছে। যার প্রমাণ মেলে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে। এসব ব্র্যান্ডের দেশি ও বিদেশি সিগারেটে প্যাকেটপ্রতি দামের পার্থক্য একশ টাকারও বেশি। দেশি-বিদেশি এসব সিগারেট উচ্চ শুল্কের পণ্য হলেও সরকার ন্যূনতমও রাজস্ব পাচ্ছে না। যার কারণে এরই মধ্যে এসব সিগারেট বিক্রি ও মজুত বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সূত্র জানায়, বাজারে অবৈধ সিগারেট উৎপাদন ও বিক্রি বন্ধ করতে বারবার নির্দেশনা দেওয়ার পরও কাজ হচ্ছে না। যার কারণে বিষয়টি টাস্কফোর্সের কমিটিতে উপস্থাপন করা হয়। টাস্কফোর্স এসব অবৈধ সিগারেট বন্ধে অভিযান পরিচালনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরই আলোকে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের কাছে একটি চিঠি দিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, সিগারেট আমদানির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, দেশে গত বছর একটি বিদেশি সিগারেটও বৈধভাবে আমদানি হয়নি। অথচ বাজারে অরিস, মন্ড, ডানহিল, ইজি ব্র্যান্ডের সিগারেট সহজলভ্য হয়ে উঠেছে। আমদানিযোগ্য সিগারেটের প্যাকেটে ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর শব্দটি স্পষ্ট বাংলায় লেখা থাকতে হবে। যেসব সিগারেটের প্যাকেটে এ কথাটি লেখা থাকবে না, সেটাই অবৈধ সিগারেট। এসব সিগারেটের বাজারজাত বন্ধে জেলা টাস্কফোর্সের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনাসহ কঠোর আইনি ব্যবস্থাও চেয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, দেশে সাধারণত চার স্তরের সিগারেট বিক্রি হয়। এর মধ্যে অতি উচ্চ স্তর, উচ্চ স্তর ও মধ্যম স্তরের সিগারেটে সরকার রাজস্ব পায় ৮১ শতাংশ। নিম্ন স্তরে সরকার রাজস্ব পায় ৭৪ শতাংশ। অথচ চোরাচালানের মাধ্যমে আসা বিদেশি সিগারেট বাজারে বিক্রি হলেও সরকার কোনো রাজস্ব পাচ্ছে না। এ ছাড়া যেসব দেশি প্রতিষ্ঠান নকল করে এসব পণ্য বিক্রি করছে, তাদের কাছ থেকেও সরকার কোনো রাজস্ব পাচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে, দেশের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, সুপারশপ, শপিংমল ও সাধারণ মুদি দোকানে চোরাচালানের মাধ্যমে আসা অবৈধ বিদেশি সিগারেট বিক্রি হচ্ছে। দেশের বিদ্যমান আইন ও বিধিবিধান না মেনে আনা এসব সিগারেট বাজারজাতকরণের ফলে আইন ভঙ্গের পাশাপাশি দেশীয় শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং সরকার কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব হারাচ্ছে। এতে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ ছাড়া কাস্টমস আইনের ধারা-২ (এস)-এ কোন ধরনের কার্যক্রম চোরাচালান হিসেবে বিবেচিত হবে, তার সংজ্ঞা বা ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, কাস্টমস আইন ও আমদানি নীতি আদেশের উল্লেখিত বিধিবিধান লঙ্ঘন করে বিদেশি সিগারেট আমদানি, উৎপাদন, সরবরাহ, বাজারজাত ও বিক্রয় করা চোরাচালান হিসেবে গণ্য হবে এবং তা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। মূল্য সংযোজন কর, সম্পূরক শুল্ক আইন ও সংশ্লিষ্ট বিধি অনুসারে অনুযায়ী ব্যান্ডরোলবিহীন কিংবা জাল ব্যান্ডরোলযুক্ত সিগারেট কিংবা বিড়ি তৈরি, মজুত, সরবরাহ বিক্রয় ও ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। এর আগে দেশের বাজারে বিদেশি সিগারেট আমদানি ও বিক্রয় না করতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছে এনবিআর। এক সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর বলেছে, আমদানিকারক, উৎপাদনকারী, সরবরাহকারী ও ব্যবসায়ীদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ, তারা যেন দেশের প্রচলিত আইন পরিপালন ব্যতীত বিদেশি সিগারেট আমদানি, উৎপাদন, সরবরাহ, বাজারজাত ও বিক্রয় না করেন। এ ছাড়া কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে চোরাচালানকৃত বিদেশি সিগারেট পাওয়া গেলে তা বাজেয়াপ্ত করাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাস্টমস আইন ১৯৬৯, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন ২০১২ ও বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানায় এনবিআর।
২৩ এপ্রিল, ২০২৪

মালয়েশিয়া যেতে আগ্রহীদের বিরাট দুঃসংবাদ
জুন থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী যাওয়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তবে পরবর্তীতে কীভাবে কর্মী যাবে, কী কী করণীয় এবং শ্রমবাজার পরিস্থিতির নানা বিষয় নিয়ে মালয়েশিয়ার সঙ্গে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। এজন্য হাইকমিশনের মাধ্যমে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রুহুল আমিন।   রোববার (২১ এপ্রিল) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অভিবাসন খাতের সাংবাদিকদের সঙ্গে ঈদ ও বাংলা নববর্ষ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. শফিকুর রহমান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। সচিব বলেন, ৩১ মে’র মধ্যে আগের যেসব কর্মীর কোটা আছে, তারা সে দেশে প্রবেশ করতে পারবে। এই শর্ত শুধু আমাদের জন্য না, যে ১৪টি দেশ থেকে মালয়েশিয়া কর্মী নেয় সেসব দেশের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ৩১ মে’র পর তারা তাদের ব্যবস্থাপনা রিভিউ করছে, সেটি করে পরবর্তী নিয়োগের জন্য কাজ করবে। আমাদের তরফ থেকে মালয়েশিয়ায় সবসময় যোগাযোগ আছে। আমরা বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে তাদের চিঠি পাঠিয়েছি। আমাদের যে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ আছে, সেটির একটা সভা আমরা করতে চাই। তাদের পরবর্তী পরিকল্পনা আমাদের বোঝার দরকার আছে। সেভাবেই আমাদের কার্যক্রম নিতে হবে। শ্রমবাজারের যেসব সমস্যা আছে—  তা নিরসনে দেশটির পরবর্তী যে নীতিমালা তৈরি হবে, সেখানে সেসব বিষয় নিশ্চিত করতে হবে। আমরা সেজন্য ওয়ার্কিং গ্রুপের সভা করতে চাই। আগামী মে মাসের মধ্যে সভা করার প্রস্তাব জানিয়েছি। মালয়েশিয়া এবং আমরা সভার এজেন্ডা ঠিক করছি। তিনি আরও বলেন, এই শ্রমবাজারে সিন্ডিকেট নিয়ে কথা আছে। এগুলো নিয়ে আমরা নিয়মিত আলোচনা করছি। সবমিলিয়ে আমরা এজেন্ডা ঠিক করছি বৈঠকের। আমরা মে মাসের মধ্যেই বসতে চাই। তবে মালয়েশিয়ার সরকারের ওপর নির্ভর করছে কবে নাগাদ বৈঠক হতে পারে। প্রসঙ্গত, মালয়েশিয়ায় যাওয়া বাংলাদেশি শ্রমিকরা ব্যাপক শোষণ ও অবিচারের মধ্যে রয়েছেন। মালয়েশিয়াকে তাদের স্বার্থ রক্ষায় উদ্যোগ নেওয়ার জন্য শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) জেনেভা থেকে এক বিবৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ। ওই বিবৃতিতে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কয়েক মাস ধরে মালয়েশিয়ায় বসবাসকারী বাংলাদেশি শ্রমিকরা খুব খারাপ অবস্থায় আছেন। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, শ্রমিকদের প্রতি শোষণ, অবিচার ও অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে রক্ষা করার পদক্ষেপ নিতে হবে। এ প্রসঙ্গে সচিব জানান, আমরা হাইকমিশনের মাধ্যমে বিষয়টি রিভিউ করছি। এটি প্রক্রিয়াধীন। আমরা আমাদের প্রতিক্রিয়া অবশ্যই জানাব। তবে আমার কাছে যে আপডেট আছে— তার পরিপ্রেক্ষিতে বলতে পারি— এখানে দুই ধরনের কর্মী আছে। একটি হচ্ছে যারা ডিমান্ডের বিপরীতে যাচ্ছে কিন্তু কাজ পাচ্ছে না, আরেকটি হচ্ছে ভিজিট ভিসায় গেছেন অথবা চুক্তি শেষ হওয়ার পর ওভার স্টে করছেন। এজন্য কখনো কখনো সংখ্যাটি বড় মনে হচ্ছে। আমি খোঁজ নিয়েছি, ডিমান্ডের বিপরীতে যারা গিয়েছেন কিন্তু কাজ পাননি, এমন সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার। কিন্তু যদি অন্যান্য ভিসায় গিয়ে যারা কাজ পাননি, তাদের হিসাব করলে এই সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে। আমরা আশা করছি যে, ডিমান্ডের বিপরীতে যারা গেছেন কাজ পাননি, তাদের ৩১ মে’র পরেই কাজে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে।   
২১ এপ্রিল, ২০২৪

বাজার ব্যবস্থাপনায় বঙ্গবন্ধুর সমবায় ভাবনা
বাজার ব্যবস্থাপনায় পরিবেশন এবং প্রচারণার মাধ্যমে যেমন যে কোনো পণ্যের তুমুল বিপণন ও বিনিময় সম্ভব, তেমনি পতনও নিশ্চিত করা সম্ভব। উত্তর-আধুনিক এ বিশ্বে বাজার ব্যবস্থাপনার এই কৌশল মানুষের ক্ষেত্রেও প্রয়োগ হতে দেখা যায়। তা ছাড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ক্ষমতা কাঠামোর দিক বিবেচনা করেও ভালো-খারাপ বা সত্য-মিথ্যা নিরূপণ হয়। পরিবেশন, মার্কেটিং কিংবা ব্র্যান্ডিংয়ের এ ধরনকে ব্যবহার করে স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে বিশেষ করে দেশ গঠনের কালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়। তার দর্শনকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়। কার্যত বঙ্গবন্ধুর একক নেতৃত্বগুণে বাঙালি স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। এ কারণেই এমন প্রোপাগান্ডা বা কুৎসা রটানো হয়েছিল। ঘরে-বাইরের স্বাধীনতাবিরোধীরা পরাজয়ের জ্বালা মেটাতে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন যেমন সমবায় ভাবনাসহ বাকশালকে আক্রমণের বিষয়বস্তু করেছিল। নতুনকে গ্রহণে স্বভাবতই মানবমনে একটা অন্তরীণ ভীতি ও অনীহা কাজ করে। জালিমরা সেই মানসিক স্বভাবকে আতঙ্ক এবং বিরোধিতার ক্ষেত্রমঞ্চে পরিণত করেছিল। অথচ বঙ্গবন্ধুর সমবায় ভাবনায় ঠিকাদার, দালাল ও মধ্যস্বত্বভোগীর কোনো স্থান ছিল না। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় জনগণের ভোগান্তির সুযোগ ছিল না। বঙ্গবন্ধুর ভাবনায় জমির মালিকানা জমির মালিকের কাছে রেখেই মালিক, শ্রমজীবী শ্রেণি এবং সরকার—সবার স্বার্থ সংরক্ষিত ও সুরক্ষিত ছিল। ফসলের এক ভাগ জমির মালিকের, এক ভাগ শ্রমিকের এবং এক ভাগ সরকারের ছিল। সরকারের নেওয়া সেই ভাগটুকুও দুর্যোগকালে জনগণের জন্য সংরক্ষিত ছিল। সাম্প্রতিক সময়ের বাজারের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করলে হুটহাট করে পণ্যের মূল্য বেড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে কৃষক ও ভোক্তাশ্রেণিই সবচেয়ে অসহায় অবস্থায় পড়ে যায়। কারণ কৃষক-শ্রমিক ও ভোক্তাশ্রেণির মাঝে একশ্রেণির মজুতদার ও দালালশ্রেণির উদয় ঘটেছে। যারা কৃষক এবং ভোক্তাশ্রেণিকে জিম্মি করে অযাচিত মুনাফা লুটে নিচ্ছে। বঙ্গবন্ধু এসব দালালশ্রেণি যারা সমাজকে কুরে কুরে খাচ্ছে তাদের চরম আঘাত করতে চেয়েছিলেন। সেই চিন্তা থেকেই তার সমবায় ভাবনা, যা একটা ভারসাম্যসম্পন্ন সমাজ বিনির্মাণের জন্য সবসময়ের জন্য প্রাসঙ্গিক। বঙ্গবন্ধুর এ চিন্তা বাস্তবায়ন করা গেলে কখনোই কেউ বাজার ব্যবস্থাপনায় অরাজকতা সৃষ্টি করতে পারবে না। কারণ এ ব্যবস্থায় পুরো সাপ্লাই চেইনের নিয়ন্ত্রণ জনগণের ওপর ন্যস্ত থাকত। সমস্যাকে জিইয়ে রাখে এবং অরাজকতা সৃষ্টি করে একশ্রেণির ব্যবসায়ী। এরাই ওই সময় বঙ্গবন্ধুর সমবায় ভাবনার বিরোধিতা করেছিলেন। এর সঙ্গে সিজনাল রাজনীতিবিদ, দুর্নীতিগ্রস্ত আমলা, দালালশ্রেণিও যুক্ত ছিল। বঙ্গবন্ধু যা বিশ্বাস করতেন তাই করতেন। যার প্রমাণ তিনি নিজেও পাটগাতী ইউনিয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতির সদস্য ছিলেন। বিশ্বমঞ্চে বাংলা সংস্কৃতির নেতৃত্বদানকারী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও সমবায় ভাবনার লালনকারী ছিলেন। নোবেল বিজয়ের পয়সা দিয়ে কৃষকের জন্য ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। অর্থাৎ বাংলা ও বাঙালিকে নিয়ে যারা চিন্তা করেছিলেন, তারা সমবায় ভাবনাকে লালন করেছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ঝড়-ঝঞ্ঝা, বিক্ষুব্ধ সময়কে চোখ রাঙিয়ে ১৯৮১ সালের ১৭ মে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। এর মাধ্যমে বাঙালির উবে যাওয়া আশা ফিরে আসে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, ভাত ও ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন। এককথায় পিতার অসমাপ্ত স্বপ্নকে বাস্তবায়নের চেষ্টায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। দিনে দিনে বাঙালির সাহস হয়ে উঠেছেন। জাতির পিতার অপূর্ণ স্বপ্নের আরেকটি হলো, সমবায় ভাবনার বাস্তবায়ন; যা পুঁজিবাদী ব্যবস্থার জন্য চ্যালেঞ্জের। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ ডিজিটাল ব্যবস্থা থেকে স্মার্ট ব্যবস্থার দিকে এগোচ্ছে। সেই অনুরণনে মডেল হিসেবে হলেও বঙ্গবন্ধুর ‘সমবায় ভাবনা’ বাস্তবায়নের উদ্যোগ প্রয়োজন। এ দর্শন বাস্তবায়ন করা গেলে পণ্যের কালোবাজারি থেকে শুরু করে মানুষের জীবনধারণের নাভিশ্বাস নাই হয়ে যাবে। এসবই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন-সাধের সোনার বাংলার উপাদান। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে, বঙ্গবন্ধুর মতো কেউ যেন শেখ হাসিনাকে ভুল ব্যাখ্যা করতে না পারে। অপপ্রচার চালাতে না পারে। কেননা বঙ্গবন্ধুর সময়ও অপপ্রচারকারী জমির মালিকানা জমির মালিকের থাকবে না, সরকার সব নিয়ে যাবে, এ ধরনের প্রোপাগান্ডা চালিয়েছিল। লেখক: রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব [email protected]
১৮ এপ্রিল, ২০২৪
X