নাটক : অর্থহীন ভালোবাসা
সুমন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র। ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে এসে পরিচয় হয় কলেজ পড়ুয়া আনিকার সঙ্গে। পরিচয় থেকে প্রেম কিন্তু সেই প্রেমে বাধ সাধে গ্রামের এক প্রভাবশালীর বখাটে মাদকাসক্ত ছেলে। সে জোর করে আনিকাকে বিয়ে করতে চায় কিন্তু আনিকা ও তার পরিবার তাতে রাজি নয়। এখানেই ঘটে বিপত্তি, মারা যায় আনিকা। সুমন ও আনিকার ভালোবাসা কি তাহলে অর্থহীন হয়ে যাবে? কিন্তু কেন ও কী কারণে মারা যায় আনিকা দেখতে হলে আগামী ২৮ মে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় চোখ রাখুন Joyoddhoni drama ইউটিউব চ্যানেলে। এখানে সুমন চরিত্রে অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা আশরাফ সুপ্ত ও আনিকার চরিত্রে অভিনয় করেছেন নবাগত লাস্যময়ী সাকিবা মারিয়া। আরও অভিনয় করেছেন সৌরভ, সেজান সুমন, রফিক মিন্টুসহ অনেকে। নাটকটি রচনা ও পরিচালনা করেছেন মো. আব্দুর রায়হান ও চিত্রনাট্য করেছেন পাপ্পু রাজ।
২৬ মে, ২০২৪

জাহ্নবীর ভালোবাসা
প্রয়াত বলিউড অভিনেত্রী শ্রীদেবী ও প্রযোজক-অভিনেতা বনি কাপুর দম্পতির বড় কন্যা জাহ্নবী কাপুর। বি-টাউনে পা রেখেই নিজেকে প্রমাণ করেছেন তিনি। অভিনয় করেছেন ইন্ডাস্ট্রির বাঘা বাঘা নির্মাতার সঙ্গে। অভিনয় ছাড়াও জাহ্নবী আলোচনায় ছিলেন তার প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে। এবার নায়িকা নিজেই প্রকাশ্যে আনলেন তার প্রেমিকের নাম। এর পরই শুরু হয় আলোচনা। আগে থেকেই গুঞ্জন রয়েছে, ভারতের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার শিন্ডের নাতি শিখর পাহাড়িয়ার সঙ্গে প্রেম করছেন জাহ্নবী। তবে এ বিষয়ে কখনোই মুখ খোলেননি তিনি। তবে দুজনকেই নানা সময় একসঙ্গে দেখা গেছে। এবার শিখরকে নিয়ে মন্তব্য করে ‘প্রেমের সম্পর্ক’-এ সিলমোহর দিলেন এই নায়িকা। তার পরবর্তী সিনেমার প্রচারে গিয়ে মির্চি প্লাসকে জাহ্নবী কাপুর বলেন, ‘আমার বয়স যখন ১৫-১৬ বছর, তখন থেকেই শিখর আমার জীবনে আছে। আমি মনে করি, আমার স্বপ্নই তার স্বপ্ন, তার স্বপ্নই আমার স্বপ্ন। আমরা খুবই ঘনিষ্ঠ। আমরা পরস্পরের সাপোর্ট সিস্টেম। বলা যায়, আমরা একে অপরকে বড় করেছি।’ ‘ধড়ক’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন জাহ্নবী। এরপর ‘রুহি’, ‘গুঞ্জন সাক্সেনা: দ্য কার্গিল গার্ল’, ‘ঘোস্ট স্টোরিজ’ সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি। তার অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘বাওয়াল’। আগামী ৩১ মে মুক্তি পাবে জাহ্নবীর ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস মাহি’। সিনেমাটির প্রচারণায় ব্যস্ত এই অভিনেত্রী।
১৮ মে, ২০২৪

এখানে না এলে এই ভালোবাসা অনুভব করা হতো না
অভিনেত্রী তারিন জাহান। চার দশকের বেশি সময় ধরে দেশের ইন্ডাস্ট্রিতে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করে যাচ্ছেন তিনি। গত বছর হৃদি হকের ‘১৯৭১ সেই সব দিন’ সিনেমা দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক তার। এ বছরের ২৬ এপ্রিল ‘এটা আমাদের গল্প’ সিনেমা দিয়ে কলকাতায় অভিষেক হয় তার। মানসী সিনহার পরিচালনায় সিনেমায় বাংলাদেশের মেয়ে ‘মিসেস বসু’ চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন তারিন। কলকাতা থেকে মোবাইল ফোনে সিনেমার সফলতা ও কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে কালবেলার সঙ্গে কথা বলেন এ অভিনেত্রী। লিখেছেন মহিউদ্দীন মাহি কালবেলা: টালিগঞ্জে ‘এটা আমাদের গল্প’ সিনেমা দিয়ে অভিষেক হয়ে গেল আপনার। সিনেমাটি মুক্তির পর থেকেই ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। কেমন উপভোগ করছেন? তারিন: এটি আসলেই চমৎকার একটি অভিজ্ঞতা, পাশাপাশি আমার জন্য আবেগের। এমন ভালোবাসা সত্যি আমাকে অভিভূত করছে। এ সিনেমার শুটিং শুরু হয় কভিডের আগে। এমন একটি গল্পে নির্মাতা মানসীদি আমাকে তার প্রথম সিনেমায় কাস্ট করেছেন। এজন্য আমি আসলেই গর্বিত ও আনন্দিত। এখন দর্শকের ভালোবাসায় তা দ্বিগুণ বেড়েছে। কালবেলা: পরপর দুটি সিনেমায় অভিনয় করে প্রশংসিত হচ্ছেন। যার দুটিই নারী নির্মাতার সিনেমা। বিষয়টি কেমন লাগছে? তারিন: এটি আসলেই গর্বের বিষয়। বলতে গেলে আমি সত্যিই ভাগ্যবান। মজার বিষয় হলো, তাদের দুজনেরই প্রথম সিনেমায় আমি অভিনয় করেছি। দুটি কাজের অভিজ্ঞতা থেকে আমি একটি কথাই বলতে চাই—মেয়েরা এখন আর পিছিয়ে নেই। তারাও যে দক্ষ, তার প্রমাণই এ দুটি সিনেমা। কারণ হৃদির সিনেমাটি আমি যখন প্রথম করি এবং বড় পর্দায় সেটি যখন মুক্তি পায়, সবার প্রশংসায় আমরা মুগ্ধ হয়েছিলাম। ভালো লাগছিল; সরকারি অনুদানের সিনেমা নিয়ে দর্শকের এমন চাহিদা আসলেই প্রশংসার। কারণ এর আগে সরকারি অনুদানের সিনেমা মানেই দর্শকের মুখ ফিরিয়ে নেওয়া ছিল নিয়মিত ঘটনা। এ সিনেমাটি সেই প্রথা ভেঙে দেশ ও দেশের বাইরে প্রশংসিত হচ্ছে। এরপর মানসীদির ‘এটা আমাদের গল্প’ মুক্তি পেল, যা কলকাতায় দর্শক চাহিদায় এখন রয়েছে সবার ওপরে। অনেক হলো মালিক সিনেমাটি নেওয়ার জন্য নিয়মিত যোগাযোগ করছে বলেও জেনেছি। সবকিছু মিলিয়ে দুর্দান্ত লাগছে। কালবেলা: এ সিনেমাটি নির্বাচনের কারণ কী? তারিন: অবশ্যই এর গল্প। কারণ আমার কাছে যখন গল্পটি আসে তখনো আমি জানতাম না, সিনেমায় কারা অভিনয় করছেন। আমি শুধু গল্প ও চরিত্র দেখেই রাজি হয়ে গিয়েছিলাম। এরপর জানলাম সিনেমার কাস্টিং আরও দুর্দান্ত হয়েছে। কালবেলা: বর্তমানে কলকাতায় আছেন, সেখানে নিয়মিত হল ভিজিট করছেন, যার ছবি আমরা আপনার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখতে পাচ্ছি। এই অভিজ্ঞতা জানতে চাই... তারিন: এরই মধ্যে আমাদের সিনেমার শো বেড়েছে। এ সপ্তাহে কলকাতায় আরও ১০টি শো বেড়েছে। তাই এখানে নিয়মিতই আমি হল ভিজিটে যাই। যেই অভিজ্ঞতা আমার অভিনয় জীবনের স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কারণ এ গরমে দর্শক যেভাবে সিনেমাটি দেখার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন, তা আসলেই আনন্দের। এর মধ্যে দুটি অভিজ্ঞতার কথা বলি; আমাদের এ সিনেমা দেখতে চেন্নাই থেকে বিমানে করে দর্শক এসেছেন কলকাতায়। যার সঙ্গে আমার দেখা হওয়ার পর তার অনুভূতি শুনে আমি ইমোশনাল হয়ে পড়ি। এরপর আমাদের স্পেশাল স্ক্রিনিংয়ের আগে জানতে পারি সেখানে বৃদ্ধাশ্রম থেকে ৫০ জন নারী এসেছেন আমাদের ছবি দেখতে। যারা শো শেষ হওয়ার পর অশ্রু মুছতে-মুছতে বের হয়েছেন। এ মুহূর্তগুলোই একজন শিল্পীর জীবনের সবচেয়ে বড় সফলতা। এর চেয়ে বেশি আর কী চাই একজন শিল্পীর। এখানে এসে আমার হৃদয় জুড়িয়ে গেছে। কালবেলা: আপনার কাছে কোনো কাজে যুক্ত হওয়ার প্রধান কারণ কী? তারিন: আমি যে কোনো কাজের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আগে সেটির গল্প দেখি। কোন চরিত্রে অভিনয় করছি সেটি নিয়ে আমার কখনোই চাহিদা ছিল না। মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের চেয়ে গল্পটাই আমার কাছে বেশি প্রাধান্য পায়। কালবেলা: হলে দর্শক আসছে না। এমন একটি অভিযোগ অনেক দিন ধরেই ঢাকাই সিনেমায় করা হচ্ছে। এর সঙ্গে কি আপনি একমত? তারিন: নাহ। আমিও কখনোই এ অভিযোগের সঙ্গে একমত নই। দর্শকের ঘাড়ে দোষ দেওয়ার আগে আমি একটা কথা বলতে চাই—ভালো গল্প পেলে অবশ্যই হলে দর্শক যাবে। যেটির প্রমাণ বেশ কিছু সিনেমা এরই মধ্যে দিয়েছে। আমি যদি আমার দুটি সিনেমার কথা বলি, তাহলে এ দুটি সিনেমাই তার প্রমাণ। কালবেলা: কলকাতায় নতুন সিনেমার অফার আসছে? তারিন: হ্যাঁ, নতুন কিছু সিনেমায় কাজের অফার পাচ্ছি। কথা হচ্ছে। সেগুলো কনফার্ম হলেই সবাইকে জানানো হবে। কালবেলা: বুম্বাদার (প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়) সঙ্গে আপনার ছবি দেখলাম। তার সঙ্গে কি কথোপকথন হয়েছে? তারিন: প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় দুই বাংলার কিংবদন্তি। তাকে চেনেন না এমন সিনেমাপ্রেমী নেই বললেই চলে। তিনি নিজে থেকে আমাদের সিনেমাটি দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এবং আমার অভিনয় নিয়ে কথা বলেছেন। সবকিছুর খোঁজখবর নিয়েছেন। কালবেলা: শেষ প্রশ্ন—কলকাতার দর্শক কি তারিনকে চিনতে পেরেছেন? তারিন: তারা আমাকে আগে থেকেই চিনতেন। কারণ পশ্চিম বাংলায় আমাদের দেশের নাটকের অসংখ্য ভক্ত রয়েছে। যারা নিয়মিত বাংলাদেশের নাটক দেখেন। তাদের মধ্যে একজনের আমার সঙ্গে দেখাও হয়েছে। এক নারী তার মেয়েকে নিয়ে এসেছেন সিনেমা দেখতে। তিনি আমার নাটক আগে দেখেছেন, তাই সিনেমাটি দেখতে এসেছেন। এমন অসংখ্য দর্শকের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে এখানে না এলে এমন ভালোবাসা বুঝতাম না।
১৮ মে, ২০২৪

ভালোবাসা উদযাপনে তুরস্কে ফারিণ
অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ। ক্যারিয়ারে তার এখন বসন্ত চলছে। দেশ ও দেশের বাইরে থেকে পাচ্ছেন কাজের সুযোগ। হচ্ছেন প্রশংসিত। তবে এর মধ্যেও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে রয়েছে তার আলাদা আয়োজন। প্রেমের সম্পর্কের ৯ বছরপূর্তি উপলক্ষে উড়ে গেছেন তুরস্কে। এবারের ঈদ ঢাকায় করেননি অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ। কলকাতায় ফিল্মফেয়ার পুরস্কার গ্রহণ করেই ৫ এপ্রিল তুরস্কে যান এই অভিনেত্রী। সেখানেই স্বামী রেজওয়ানের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেন তিনি। যার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন ফারিণ। সেখান থেকে এই অভিনেত্রী জানান, ঈদ ও প্রেমের ৯ বছর উপলক্ষে তুরস্কে আসা। দেশটি অসাধারণ সুন্দর। ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে বিয়ে করেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ। তার স্বামী শেখ রেজওয়ান। তিনি বিদেশে কর্মরত।
১৬ এপ্রিল, ২০২৪

খালিদের জন্য ভালোবাসা
‘যদি হিমালয় হয়ে দুঃখ আসে এ হৃদয়ে, সে কিছু নয় শত আঘাতেও, নিঃস্ব যে আজ তার আবার, হারানোর ভয়’—গানের কথাগুলোর মতোই হারিয়ে গেলেন কণ্ঠশিল্পী খালিদ। না ফেরার দেশে চলে গেলেন চাইম ব্যান্ডের এই সদস্য। মাত্র ৫৮ বছর বয়সে তার চলে যাওয়া কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না সহকর্মীরা। নিজেদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খালিদের সঙ্গে কাটানো স্মৃতি ও তার গানের লাইন শেয়ার করে জানাচ্ছেন বিদায়। চাইছেন আত্মার শান্তি। নগর বাউল জেমস খালিদের কালজয়ী গান ‘কোনো কারণে ফেরানো গেলো না তাকে’ এই গানের দুই লাইন শেয়ার করে লিখেছেন, ‘সে যে হৃদয় পথের রোদে, একরাশ মেঘ ছড়িয়ে, হারিয়ে গেল নিমিষেই।’ সংগীতশিল্পী ফাহমিদা নবী খালিদের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান। কান্না ভেজা কণ্ঠে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি আর খালিদ একসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম। ওর এমন অকাল মৃত্যু আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। তার আত্মার শান্তি কামনা করছি।’ সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর খালিদের মৃত্যুর সংবাদ কিছুতেই মানতে পারছেন না। এরপর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একযুগ আগের একটি ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘কোনো বাঁধনে বাঁধা তো গেল না তাকে, সে যে হৃদয় পথের রোদে একরাশ মেঘ ছড়িয়ে, হারিয়ে গেল নিমেষেই।’ গানের দুটি লাইন শেয়ার করে তিনি আরও লিখেছেন, ‘নিজের গাওয়া প্রিন্স মাহমুদের অমর গানের সঙ্গে হারিয়ে গেলেন চাইম ব্যান্ডের প্রিয় ভোকালিস্ট খালিদ ভাই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। রেখে গেলেন একরাশ মায়া। খালিদ ভাইয়ের মায়াবী কণ্ঠ একেবারে নিস্তব্ধ হয়ে গেল। কৈশোর ও যৌবনের প্রিয় গায়ক খালেদ ভাইয়ের এই মৃত্যুতে আমি হারিয়ে ফেললাম খুব প্রিয় একটা কণ্ঠ! জাতি হারালো নিভৃতচারী এক কিংবদন্তিকে! আমি আমরা শোকাহত। খালিদ ভাইয়ের আত্মার শান্তি কামনা করি। মহান আল্লাহ তার পরিবারকে এই শোক বইবার শক্তি দিন। আমিন। ছবিটি আমার বিয়ের এক যুগপূর্তিতে তোলা ১০/০৭/২০০৪, সেদিন মিতালী মুখার্জি দিদিও ছিলেন।’ বাংলাদেশের জনপ্রিয় গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক প্রিন্স মাহমুদ খালিদের দুটি লাইন, ‘কোনো বাঁধনেই বাঁধা তো গেল না কিছুতেই ...’ লিখে তার আত্মার শান্তি কামনা করেন। এ ছাড়া শূন্য ব্যান্ড, আর্টসেল, ওয়ারফেজ, শিরোনামহীন, অর্থহীনসহ দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ডগুলো তার আত্মার শান্তি কামনা করে নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করে। সোমবার সন্ধ্যায় নিজের বাসায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন খালিদ, সঙ্গে সঙ্গেই তাকে নেওয়া হয় কাছের কমফোর্ট হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার বয়স হয়েছিল ৫৮ বছর। তার জন্ম গোপালগঞ্জে। সেখানেই তার দাফন হয়েছে। তার স্ত্রী ও এক পুত্র সন্তান রয়েছে। এক নজরে সংগীতশিল্পী খালিদ পুরো নাম : খালিদ সাইফুল্লাহ জন্ম : ১ আগস্ট ১৯৬৫ গোপালগঞ্জ মৃত্যু : ১৮ মার্চ ২০২৪ ঢাকা স্ত্রী : শামীমা জামান ছেলে : সন্তান জুয়াইফা আরিফ শিক্ষা জীবন স্কুল : এস এম মডেল গভ. হাই স্কুল গোপালগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, দর্শন বিভাগ ব্যান্ড : চাইম অ্যালবাম চাইম (১৯৮৫) - চাইম ব্যান্ড নারী (১৯৯৬) - চাইম ব্যান্ড জন্ম (২০০২) - চাইম ব্যান্ড কীর্তনখোলা (২০০৫) - চাইম ব্যান্ড সরলতার প্রতিমা (২০০৭) একক ঘুমাও (২০০৮) একক উল্লেখযোগ্য গান সরলতার প্রতিমা, যতটা মেঘ হলে বৃষ্টি নামে, কোনো কারণেই ফেরানো গেল না তাকে, যদি হিমালয় হয়ে দুঃখ আসে, তুমি নেই তাই, হয়নি যাবার বেলা, নীল টিপ, নীরা ক্ষমা কর, ঘুমাও তুমি ঘুমাও গো জান ইত্যাদি।
২০ মার্চ, ২০২৪

‘টাকা দিয়ে কি ভালোবাসা পাওয়া যায়’ লিখে গৃহবধূর আত্মহত্যা
বরিশাল নগরীতে বিয়ের দেড় মাসের মাথায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এক গৃহবধূ। তার মরদেহের পাশে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে।  মঙ্গলবার (৫ মার্চ) বিকেল ৪টার দিকে নগরীর ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মতাসার এলাকার ব্যাপারী বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। মৃত সাদিয়া আক্তার (২৩) ওই এলাকার মাহবুব আলম বেপারীর মেয়ে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ জানুয়ারি বরিশাল সদর উপজেলার রায়পাশা-করাপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের কাঞ্চন হাওলাদারের ছেলে রুবেল হাওলাদারের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় সাদিয়ার। বিয়েতে মেয়েকে স্বর্ণালংকার ও জামাইকে ফ্রিজ, গলার চেইন ও আংটি দেওয়া হয়। এতে ৮ লাখ টাকা খরচ হয়।  এরপরই যৌতুকের দাবিতে সাদিকে নির্যাতন শুরু করে রুবেল ও তার মা। এমনকি প্রতি রাতে সাদিয়াকে মারধর করত রুবেল। সম্প্রতি রুবেল বিদেশ যাওয়ার কথা বলে সাদিয়ার পরিবারের কাছে তিন লাখ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে পারবে না বলে জানালে নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় রুবেল।  নির্যাতন সইতে না পেরে গত রোববার বাবার বাড়িতে চলে আসে সাদিয়া। মঙ্গলবার বিকেলে ঘরে ঢুকে ভেতর থেকে দরজা আটকে গলায় ফাঁস দেয় সাদিয়া। পরিবারের লোকজন টের পেয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় দরজা ভেঙে সাদিয়াকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়।  পরে পুলিশে খবর দিলে কাউনিয়া থানা পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠায়।  এ সময় তার মরদেহের পাশে একটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে সাদিয়া লেখেন, ‘আমি কী দোষ করেছিলাম, এমন একজন মানুষের জন্য নিজের জীবনটাই শেষ করে দিলাম। প্রত্যেক রাতে ডিভোর্স দেওয়ার জন্য জ্বালায়। আমাকে বিয়ে দিয়েছিলে কেন। আমি তোমাদের কাছে বোঝা? টাকা চাইলে তো মন পাওয়া যায় না। টাকা দিয়ে কী ভালোবাসা পাওয়া যায়। আমি তোমাদের কষ্ট দিতে চাই না বাবা-মা, আমি একটু সুখ চাই।’ কাউনিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দুদিন আগে সাদিয়ার বাবাকে খবর দিয়ে নেওয়া হয় রুবেলের বাড়িতে। এরপর মেয়েকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। এমনকি ওই বাড়িতে আবার আসতে হলে তিন লাখ টাকা দাবি করেন রুবেল। এ কারণে ক্ষোভে সাদিয়া আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন বলে ধারণা করা যায়। তার লেখা চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউনিয়া থানার ওসি আসাদুজ্জামান বলেন, গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
০৬ মার্চ, ২০২৪

ভালোবাসা দিবসের পরেই কেন থাপ্পড় দিবস?
১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসের পর থেকে অ্যান্টি ভ্যালেনটাইনস উইক শুরু হয়। অ্যান্টি-ভ্যালেন্টাইনের প্রথম দিনে পালিত হয় স্ল্যাপ ডে (থাপ্পড় দিবস!)। যেসব ব্যক্তি সম্প্রতি ব্রেকআপের মধ্য দিয়ে গেছেন তাদের জন্য এই দিনটি বিশেষভাবে বিখ্যাত। তবে এই দিনে আপনার প্রতারক সঙ্গীকে সরাসরি চড় মারবেন তা কিন্তু নয়। থাপ্পড় দিবসটি মূলত আপেক্ষিক। এখানে থাপ্পড়ের অর্থ আপনি আপনার সাফল্য বা কথা দিয়ে সঠিক সময়ে তাকে বার্তা দিবেন। থাপ্পড় দিবস কেন পালিত হয়? ভ্যালেন্টাইনস সপ্তাহে দম্পতিরা একে অপরের প্রতি তাদের ভালবাসা প্রকাশ করেন। যারা ভ্যালেন্টাইনস সপ্তাহ উদ্‌যাপন করতে পারেননি, এটি তাদের জন্য। গোটা বিশ্বেই এই চলতি সপ্তাহের নাম ‘অ্যান্টি-ভ্যালেন্টাইন’। যারা তাদের সঙ্গীর প্রতি সন্তুষ্ট নয়, তারা অ্যান্টি ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহ পালন করেন। অ্যান্টি ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহ শুরু হয় স্ল্যাপ ডে দিয়ে। প্রতি বছর ১৫ ফেব্রুয়ারি স্ল্যাপ ডে পালন করা হয়। এর পেছনে আকর্ষণীয় কারণ রয়েছে। যারা প্রেমে প্রতারিত হয়েছেন তাদের জন্য এই দিনটি বিশেষ। থাপ্পড় দিবস উদযাপনের পেছনের কারণ হলো আপনি আপনার সেই সঙ্গীকে বলতে পারেন যে আপনি তার প্রতি রাগান্বিত। একটি কড়া থাপ্পড় মেরে জীবন থেকে পুরনো বাজে ও তিক্ত স্মৃতিগুলোকে ফেলে দিতেই স্ল্যাপ ডে। এই দিন থেকে সুখী জীবনযাপনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন অনেকেই।
১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

ভালোবাসা দিবসে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর বাগদান
বাগদান সেরেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবাননিজ। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে চার বছরের সঙ্গী জোডি হেইডেনের সঙ্গে  বাগদান সারেন তিনি। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বার্তা সংস্থা এপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন দ্য লজে হেইডেনকে বিয়ের প্রস্তাব দেন আলবাননিজ। আর এ প্রস্তাবে সঙ্গে সঙ্গে সাড়া দেন চার বছরের পুরোনো প্রেমিকা। ২০২০ সালে মেলবোর্নে একটি ডিনারে তাদের প্রথম দেখা হয়েছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ছবিও শেয়ার করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে লেখা হয়েছে, সে হ্যাঁ বলেছে।  আস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে এটিই প্রথম কোনো প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় থাকাকালে বাগদানের ঘটনা। এ নিয়ে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো আলবাননিজ বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে চলেছেন।   আস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবার সঙ্গে সুখবরটি ভাগ করে নিতে পেরে খুবই আনন্দ হচ্ছে। এটি বিস্ময়কর বিষয়, আমি এমন সঙ্গী পেয়েছি যার সঙ্গে বাকি জীবন কাটাতে চাই।  বাগদানের খবরের পর থেকেই শুভেচ্ছা পাচ্ছেন হেইডেন। সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, বন্ধু-বান্ধব ও পরিবার থেকে শুরু করে এমন অনেকের থেকে উষ্ণ বার্তা পাচ্ছি যাদের সঙ্গে আমরা ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত নই। শুভেচ্ছাগুলো সত্যিই দারুণ। তাদের সবাইকে শুভেচ্ছা।  শুভেচ্ছাবার্তা জানানোর তালিকায় রয়েছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুক্সন ও যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত শেফ নাইজেলা লসন। শুভেচ্ছা জানিয়ে অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ভালোবাসা একটি সুন্দর বিষয়। আমি আপনাদের দুজনের জন্য খুবই খুশি।  আলবাননিজ জানান, বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার জন্য অনেক পরিকল্পনাই করেছিলেন তিনি। এজন্য ভালোবাসা দিবসকেই ( ভ্যালেন্টাইনস ডে) বেছে নেন। বিয়ের আংটির নকশায়ও তিনি সাহায্য করেছেন।  এর আগে নিউ সাউথ ওয়েলসের সাবেক ডেপুটি প্রিমিয়ার কারমেল টেবুটের সঙ্গে আলবাননিজের বিয়ে হয়েছিল। তাদের সংসারে ২৩ বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে। তবে ২০১৯ সালে এ জুটি আলাদা হয়ে যান। 
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

ইগো বা ব্যক্তিত্ব দেখালে প্রেমে পূর্ণতা পায় না!
'প্রেম' শব্দটি খুবই ছোট। অথচ বহন করছে বিশালত্বের ভার। 'প্রেম' নিয়ে ছোট থেকেই শুনে আসছি। বড়দের মুখে'তো অহরহ। মাঝেমধ্যে এ নিয়ে তারা হাসাহাসিও করত আবার কখনও বা মুখ ভারী। কিন্তু আমি বুঝতাম না বলে শুধু শুনতাম আর দেখতাম। প্রেমের বিশালত্ব নিয়ে বুঝে উঠতে শুরু করি নবম শ্রেণিতে ওঠার পর। এই শ্রেণিতে আসার পর থেকে নিজেকে ভিন্নভাবে আবিষ্কার করতে শুরু করি। কেননা, আগে পড়াশোনা আর খেলাধুলার ভিতর নিজেকে দেখতে পেতাম। অথবা পরে থাকতাম বিভিন্ন বই নিয়ে। কিন্তু এখন আর পড়ালেখা বা খেলাধুলায় মন বসে না। নবমে ওঠার আগে কিছু বিখ্যাত লেখকদের লেখা বই কিনেছিলাম পড়ব বলে। তবে হঠাৎ রুচির পরিবর্তন হতে শুরু করল। ঐ বইগুলোর দিকে তাকাতেও ইচ্ছে হচ্ছিল না। ভিতরে ভিতরে শেক্সপিয়রের লেখা 'রোমিও জুলিয়েট' পড়তে ইচ্ছে হচ্ছিল। প্রতিনিয়ত কারণ খুঁজি। হঠাৎ আমি এমন কেন হয়ে গেলাম। এটা কি আমার ইচ্ছেগত পরিবর্তন? পরে একটা সময়ে বুঝতে পারি, কোনো মেয়ের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছি আমি। ভিতরে নতুন কোনো অনুভূতি কাজ করছে। যদিও কারও সাথে শেয়ার করার সাহস হচ্ছিল না। তবে অনুভুতিটা ভালো লেগে যায়। আমি পুরোপুরিভাবে একটা মেয়ের দিকেই আকৃষ্ট হচ্ছি। কিভাবে হলাম, কেন হলাম কিছুই জানি না। চোখের দেখাতেই ভালো লেগেছিল। এদিকে তাকে নিয়ে প্রতিরাতে রঙিন রঙিন স্বপ্নগুলো চোখের ওপর হানা দিচ্ছে। ছোট করে গল্পটা বলি! একটি মাদ্রাসায় পড়তাম আমি। তখন সবে অষ্টম পার করেছি। নবমে ওঠার কিছুদিন পরই মাদ্রাসায় একটি সুন্দরী মেয়ে আসলো। মেয়েটাকে প্রথমবার দেখে একটু অদ্ভুত মনে হয়েছে। আমিতো তাকে দেখে অবাক হয়ে যাই। মেয়ে নাকি পরী! পাঠক হয়তো বলবেন, সিনেমার ডায়লগ দিচ্ছি। কিন্তু একদমই তা নয়। আমি সেদিনের অনুভূতিটাই তুলে ধরছি মাত্র। আপনারা যাই বলুন, এমন মায়াবী মেয়ে এর আগে দেখিনি। এদিকে পরবর্তী সংবাদে আমারতো খুশি আর ধরে না। মেয়েটি আমাদের মাদ্রাসাতেই ভর্তি হয়েছে। ক্ষণিকের জন্য মনে হয়েছিল এর থেকে বেশি খুশি আমি আর কখনও হইনি। আগে ক্লাস তেমন করতাম না, তবে এখন আর বাদ যায় না। দিনগুলো খুব ভালো কাটতে লাগলো। তবে একটা বিষয়ে খুব বেশি সাবধান থাকতাম। মেয়েটি যেন বুঝতে না পারে আমি তার প্রতি দুর্বল। আমি চেয়েছিলাম সেই আমার প্রতি দুর্বল হোক। তাই সেভাবেই চলতাম। এককথায় ইমপ্রেস করার চেষ্টা। যদিও আমার এসব ধারণা ভুল ছিল। তবে যখন বুঝতে পেরেছি তখন দেরী হয়ে গিয়েছিল। মেয়েরা নিজে থেকে ছেলেদের প্রতি দুর্বল হয় না। আর হলেও তা বুঝতে দেয় না। এসএসসি পরীক্ষা খুব কাছাকাছি চলে আসায় রাতে কোচিং করতাম। মেয়েটাও আসতো কোচিংয়ে। বসতো আমাদের মাথার ওপরে, মানে দুইতলায়। প্রতিদিন যেকোনো অজুহাতে একবার হলেও দেখে আসতাম। মাঝেমধ্যে ওদের ক্লাসেও ঢুকে পড়তাম, অন্যদের সাথে কথা বলতাম। কিন্তু ওর সাথে কথা বলার সাহস হতো না। যদিও কথা বলার জন্য ভিতরটা ফেঁটে যেত। অথচ ব্যক্তিত্ব রক্ষার জন্য এমন ভাব নিতাম যেন ওকে চিনিই না। অনেকে এটাকে ইগো মনে করতে পারেন। কিন্তু আমি চাইতাম, ও আমার প্রতি আকৃষ্ট হোক। কিন্তু কথায় আছে 'মেয়েদের বুক ফাঁটে তবুও মুখ ফোটে না'। এভাবে এসএসসি পরীক্ষা শেষ হয়ে গেল। সবার নতুন রকমের চিন্তা শুরু হলো। বিশেষ করে কে কোথায় ভর্তি হবে, কি বিষয় নিয়ে আগাবে, কোনটা ভালো হবে, কোনটা মন্দ হবে ইত্যাদি। আমারও একই চিন্তা। তবে ভুলে যাইনি ওর কথা। কিভাবে ভুলব, ও'তো আমার সবটা জুড়ে মিশে আছে।  এদিকে নতুন কলেজে ভর্তি হয়েছি। নতুন মুখ, নতুন বন্ধন সাথে সুন্দরীসব মেয়েদের আনাগোনা। কিন্তু কারও প্রতিই আমার নজর আটকায় না। আমি পরে আছি তাকে নিয়েই। দিনের পর দিন যায়, ওর প্রতি দুর্বলতাও তত বাড়ে। আর এগুতে চাই না, এখানেই শেষ করি।  তখন ওদেরও এসএসসি শেষ হয়েছে। পরীক্ষা শেষেই ও ওর বাবার কাছে বেড়াতে যায়। বলতে ভুলে গিয়েছি, ও ওর নানা বাড়িতেই বড় হয়েছে। আমি ভেবেছিলাম ও হয়তো আমাদের কলেজেই ভর্তি হবে। সেই আশা নিয়েই স্বপ্ন বুনে চলেছিলাম। কিন্তু আমি ভুল রাতে স্বপ্ন বুনেছিলাম। ওর বাবা তার ঐখানের একটি কলেজে ভর্তি করে দেয়।  এটা জানতে পেয়ে ভেতরে ভেতরে অনেক ভেঙে পরি আমি। পেছনের দিনগুলোর কথা মনে পরতে থাকে। কষ্টটা বেড় দ্বিগুণ হয়ে যায়। ভিতরের কান্না দেখানো যায় না তাই বুঝানো'ও সম্ভব হয় না। সেই শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ও'কে নিয়ে আমার ভাবনাগুলো কারও সাথে শেয়ার করিনি। বুঝতে দেইনি কাউকে। আমাদের ব্যাপার আমাদের ভেতরেই রাখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ও চলে যাবার পর অনুভব করি প্রিয় কিছু হারানোর ব্যাথা। তাই নিজেকে হালকা করতে খুব কাছের এক বন্ধুর সাথে শেয়ার করি। খুলে বলি সবকিছু। এখনও অনেক ভালোবাসি, তাও বললাম। এখন একটু নিজেকে হালকা মনে হচ্ছিল। আমার বলা শেষ হওয়ার পর দুজনেই চুপচাপ বসে আছি। মাঝে মাঝে ও আমার দিকে তাকাচ্ছিলো। একটু পর সন্ধ্যা নেমে যায়। ও বলল, এখন যেতে হবে। কিছু বলবি না আমায়? আমার অনুভূতি নিয়ে কিছুই কি বলার নেই তোর? জিজ্ঞেস করলাম ও'কে। তখন ও আমায় বলল, জীবনে এরকম অনেক কিছুই হয়। এগুলা খুবই স্বাভাবিক। নিজেকে নতুনভাবে গুছিয়ে নে। ক্যারিয়ারের দিকে খেয়াল দে। আর হ্যাঁ তোর স্বপ্নের রাজকন্যার কিছুদিন আগে বিয়ে হয়ে গেছে। আর কোনো কথা না বলেই ও ওর বাড়ির দিকে পা বাড়ায়। অন্যদিকে নিথর আমি পলকহীন ওর চলে যাওয়া দেখছি।
১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

ভালোবাসার পোস্টমর্টেম 
আনিসের অস্থিরতায় আমারও ঘুম ভেঙে গেল। ঘরে আলো নেই। গভীর রাত। কিন্তু সে ঘুমাচ্ছে না। বললাম, ‘কীরে সমস্যা কী’? আমার দরাজ আওয়াজে সে যেন আরও গুটিয়ে গেল। রাতে সময় মত খেতেও আসেনি। মেসের নিয়ম, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে খেতে না আসলে শেষের জনকেই সব গোছাতে হয়। আনিস যেন তাতেও রাজি। সম্ভবত সে প্রেমে পড়েছে। নতুন দিওয়ানা। এ কারণেই কিছুক্ষণ পরপর ফোন আসে। আর রুমের বাইরে যায়।  এক ধরনের অস্থিরতা, চাঞ্চল্য কাজ করছে আনিসের মধ্যে। প্রেমে পড়লে সাধারণত এটিই হওয়ার কথা। একটু এগিয়ে অন্ধকারে ঢিল মেরে বললাম, ‘কীরে, কাল কী দেখা হবে?’ সাথে সাথেই সে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল, ‘দোস্ত, আমি পাগল হয়ে যাব। ও তো রাজি। কালই প্রথম দেখা। কী করব, কী বলব, কিছুই বুঝতে পারছি না রে!’ বুঝলাম, ঢিলটা মিস হয়নি।  বন্ধু হলেও আনিস আমাকে গুরু বলে মানে। আমি নাকি সবকিছুই একটু আগেভাগে বুঝতে পারি। সেজন্য সব বিষয়ে আমার কাছে পরামর্শ চায় সে। আমিও চাওয়ামাত্র পরামর্শ দিই না। বলি, পরে বলব। এরপর কিছুটা ঘাটাঘাটি করে চিন্তা করে তারপর পরামর্শের ভান্ডো খুলি। তাতে আনিসের কাছ থেকে আদায় করা ট্রিট হালাল হয় বটে।  এই যেমন, আনিস বলল, সে যাকে পছন্দ করে, তার সাথে প্রথম দেখায় সে কী বলবে, কী পরবে বা কী আচরণ করবে, তা জানতে চায়। আমি বুঝতে পারলাম, দৈনন্দিন স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে কিছুটা হলেও সমস্যা হচ্ছে আনিসের। এক ধরনের উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা কাজ করছে তার। এ কারণে তার হার্টবিট এখন অনেক বেশি। যাকে বলে, হৃদস্পন্দন।  আনিস আমাকে বলল, ‘দোস্ত, আমার তো ঘুম আসছে না! কী করব, বল না। আমার মন তো উথাল-পাথাল করছে!’ ঠান্ডা মাথায় বললাম, ‘সমস্যাটা তোর মনে না নারে পাগল, সমস্যাটা তোর মগজে। সেখানেই আসলে ফুল ফোটে প্রেম-ভালোবাসার। এর ফলে ব্রেইনে যে জটিল ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া হয়, তাতে বোঝা যায়, এটা স্বাভাবিক এবং ব্যায়াম, পানি ও খাবারের মতোই প্রয়োজনীয়।’ আমি বললাম, ‘এই মুহূর্তে তোর ব্রেইনের এক ডজন অংশ সচল। সুখানুভূতির হরমোন ডোপামিন, আদর-সোহাগের হরমোন অক্সিটোসিন এবং অ্যাড্রেনালিনের মতো রাসায়নিক নির্গমণে একত্রে কাজ করছে তারা। যার তোর মধ্যে এক ধরনের উচ্ছ্বাসপূর্ণ আবেগ তৈরি হচ্ছে।’ আনিস বলল, ‘তাহলে প্রেম হৃদয়ে বাস করে, কবি, সাহিত্যিকদের এমন দাবি কি ভুল?’ আমি বললাম, ‘আমরা যখন কাউকে ভালোবাসি, তখন শারীরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার বেশিরভাগই অথবা অন্তত শুরুটা ঘটে মস্তিষ্কে। প্রেম-ভালোবাসা আসলে বিভিন্ন অংশে বিভক্ত ব্রেইনকে একত্রিত রাখতে সহায়তা করে। গবেষণায় এর বিপরীত প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে সিঙ্গেল অথবা প্রেমবিরহে থাকা ব্যক্তির মস্তিষ্কে।’ দোস্ত, ‘বিরহের ভয়ও তো আছে!’ বললাম, ‘খুব স্বাভাবিক’। আনিস বলল, ‘বিরহ হলে কী কী হতে পারে, বল তো?’ এককথায় বললাম, ‘বারবার স্মৃতি রোমন্থন হতে পারে, ভেরি সিম্পল’। ‘শুধু এটুকুই?’ আমি বললাম, ‘এটাই মূল। বারবার তোর মনে হবে সেই প্রেমিকার কথা। তার সাথে কাটানো আনন্দঘন মুহূর্ত, স্মৃতিপূর্ণ এলাকা, অবস্থান, সবই তোকে মনে করিয়ে দেবে বিরহ ব্যাথা। পুরোনো সুখস্মৃতি, সুখানুভূতিই তখন বিঁধবে কাঁটার মত। ফলে ব্রেকআপের বেদনায় ট্রমা তৈরির ঝুঁকি বেশি। ব্যক্তি তখন অতিরিক্ত চিন্তা ও দুঃখ থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে। জীবনের সবচেয়ে বেদনাদায়ক ঘটনাগুলোর একটি হতে পারে সম্পর্কের সমাপ্তি।’  ‘আর না দোস্ত, প্লিজ। আমি কোনো ব্রেকআপ চাই না। বরং সম্পর্ককে সাদরে লালন করতে চাই। সেটা করতে কী করতে পারি বল। ‘আমি বললাম, ‘সম্পর্ককে গুরুত্ব দিতে হবে। তাকে পছন্দের কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে। আবেগ নিয়ন্ত্রণের স্কিল বাড়াতে হবে। প্রিয়জনের ইতিবাচক বিষয়গুলো খুঁজতে হবে। সম্পর্কের প্রতি শ্রদ্ধা, মমত্ব রাখতে হবে। যেসব কারণে সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, তার সীমানা নির্দিষ্ট করতে হবে। এ নিয়ে কথা বলতে হবে খোলামেলা। একসাথে আনন্দে কাটাতে কিছুসময় বের করে নিতে হবে। তাহলেই সম্পর্ক টেকসই হবে।’  প্রেম ভালোবাসার পোস্টমর্টেম করতে করতে কখন যে ভোর হয়ে গেল, টের পাইনি। আনিস বলল, ‘দোস্ত, আজ ভালোবাসা দিবস। বন্ধু হিসেবে প্রথম ভালোবাসা তোর জন্য।’ বাইশ বছর পর সেই আনিসের সাথে দেখা। শাহবাগে ফুল কিনছে। মাঝ বয়স পার করছি দু’জনই। আনিস আমাকে দেখে জড়িয়ে ধরল। বলল, ‘দোস্ত, তোর জন্য আজও অটুট, যেন সদ্য ফোটা ফুল’।
১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
X