মহিউদ্দীন মাহি
প্রকাশ : ১৮ মে ২০২৪, ০৪:০৭ এএম
আপডেট : ১৮ মে ২০২৪, ১১:২৬ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

এখানে না এলে এই ভালোবাসা অনুভব করা হতো না

কলকাতায় প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে অভিনেত্রী তারিন জাহান। ছবি :  অভিনেত্রীর সৌজন্যে
কলকাতায় প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে অভিনেত্রী তারিন জাহান। ছবি : অভিনেত্রীর সৌজন্যে

অভিনেত্রী তারিন জাহান। চার দশকের বেশি সময় ধরে দেশের ইন্ডাস্ট্রিতে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করে যাচ্ছেন তিনি। গত বছর হৃদি হকের ‘১৯৭১ সেই সব দিন’ সিনেমা দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক তার। এ বছরের ২৬ এপ্রিল ‘এটা আমাদের গল্প’ সিনেমা দিয়ে কলকাতায় অভিষেক হয় তার। মানসী সিনহার পরিচালনায় সিনেমায় বাংলাদেশের মেয়ে ‘মিসেস বসু’ চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন তারিন। কলকাতা থেকে মোবাইল ফোনে সিনেমার সফলতা ও কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে কালবেলার সঙ্গে কথা বলেন এ অভিনেত্রী। লিখেছেন মহিউদ্দীন মাহি

কালবেলা: টালিগঞ্জে ‘এটা আমাদের গল্প’ সিনেমা দিয়ে অভিষেক হয়ে গেল আপনার। সিনেমাটি মুক্তির পর থেকেই ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। কেমন উপভোগ করছেন?

তারিন: এটি আসলেই চমৎকার একটি অভিজ্ঞতা, পাশাপাশি আমার জন্য আবেগের। এমন ভালোবাসা সত্যি আমাকে অভিভূত করছে। এ সিনেমার শুটিং শুরু হয় কভিডের আগে। এমন একটি গল্পে নির্মাতা মানসীদি আমাকে তার প্রথম সিনেমায় কাস্ট করেছেন। এজন্য আমি আসলেই গর্বিত ও আনন্দিত। এখন দর্শকের ভালোবাসায় তা দ্বিগুণ বেড়েছে।

কালবেলা: পরপর দুটি সিনেমায় অভিনয় করে প্রশংসিত হচ্ছেন। যার দুটিই নারী নির্মাতার সিনেমা। বিষয়টি কেমন লাগছে?

তারিন: এটি আসলেই গর্বের বিষয়। বলতে গেলে আমি সত্যিই ভাগ্যবান। মজার বিষয় হলো, তাদের দুজনেরই প্রথম সিনেমায় আমি অভিনয় করেছি। দুটি কাজের অভিজ্ঞতা থেকে আমি একটি কথাই বলতে চাই—মেয়েরা এখন আর পিছিয়ে নেই। তারাও যে দক্ষ, তার প্রমাণই এ দুটি সিনেমা। কারণ হৃদির সিনেমাটি আমি যখন প্রথম করি এবং বড় পর্দায় সেটি যখন মুক্তি পায়, সবার প্রশংসায় আমরা মুগ্ধ হয়েছিলাম। ভালো লাগছিল; সরকারি অনুদানের সিনেমা নিয়ে দর্শকের এমন চাহিদা আসলেই প্রশংসার। কারণ এর আগে সরকারি অনুদানের সিনেমা মানেই দর্শকের মুখ ফিরিয়ে নেওয়া ছিল নিয়মিত ঘটনা। এ সিনেমাটি সেই প্রথা ভেঙে দেশ ও দেশের বাইরে প্রশংসিত হচ্ছে। এরপর মানসীদির ‘এটা আমাদের গল্প’ মুক্তি পেল, যা কলকাতায় দর্শক চাহিদায় এখন রয়েছে সবার ওপরে। অনেক হলো মালিক সিনেমাটি নেওয়ার জন্য নিয়মিত যোগাযোগ করছে বলেও জেনেছি। সবকিছু মিলিয়ে দুর্দান্ত লাগছে।

কালবেলা: এ সিনেমাটি নির্বাচনের কারণ কী?

তারিন: অবশ্যই এর গল্প। কারণ আমার কাছে যখন গল্পটি আসে তখনো আমি জানতাম না, সিনেমায় কারা অভিনয় করছেন। আমি শুধু গল্প ও চরিত্র দেখেই রাজি হয়ে গিয়েছিলাম। এরপর জানলাম সিনেমার কাস্টিং আরও দুর্দান্ত হয়েছে।

কালবেলা: বর্তমানে কলকাতায় আছেন, সেখানে নিয়মিত হল ভিজিট করছেন, যার ছবি আমরা আপনার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখতে পাচ্ছি। এই অভিজ্ঞতা জানতে চাই...

তারিন: এরই মধ্যে আমাদের সিনেমার শো বেড়েছে। এ সপ্তাহে কলকাতায় আরও ১০টি শো বেড়েছে। তাই এখানে নিয়মিতই আমি হল ভিজিটে যাই। যেই অভিজ্ঞতা আমার অভিনয় জীবনের স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কারণ এ গরমে দর্শক যেভাবে সিনেমাটি দেখার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন, তা আসলেই আনন্দের। এর মধ্যে দুটি অভিজ্ঞতার কথা বলি; আমাদের এ সিনেমা দেখতে চেন্নাই থেকে বিমানে করে দর্শক এসেছেন কলকাতায়। যার সঙ্গে আমার দেখা হওয়ার পর তার অনুভূতি শুনে আমি ইমোশনাল হয়ে পড়ি। এরপর আমাদের স্পেশাল স্ক্রিনিংয়ের আগে জানতে পারি সেখানে বৃদ্ধাশ্রম থেকে ৫০ জন নারী এসেছেন আমাদের ছবি দেখতে। যারা শো শেষ হওয়ার পর অশ্রু মুছতে-মুছতে বের হয়েছেন। এ মুহূর্তগুলোই একজন শিল্পীর জীবনের সবচেয়ে বড় সফলতা। এর চেয়ে বেশি আর কী চাই একজন শিল্পীর। এখানে এসে আমার হৃদয় জুড়িয়ে গেছে।

কালবেলা: আপনার কাছে কোনো কাজে যুক্ত হওয়ার প্রধান কারণ কী?

তারিন: আমি যে কোনো কাজের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আগে সেটির গল্প দেখি। কোন চরিত্রে অভিনয় করছি সেটি নিয়ে আমার কখনোই চাহিদা ছিল না। মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের চেয়ে গল্পটাই আমার কাছে বেশি প্রাধান্য পায়।

কালবেলা: হলে দর্শক আসছে না। এমন একটি অভিযোগ অনেক দিন ধরেই ঢাকাই সিনেমায় করা হচ্ছে। এর সঙ্গে কি আপনি একমত?

তারিন: নাহ। আমিও কখনোই এ অভিযোগের সঙ্গে একমত নই। দর্শকের ঘাড়ে দোষ দেওয়ার আগে আমি একটা কথা বলতে চাই—ভালো গল্প পেলে অবশ্যই হলে দর্শক যাবে। যেটির প্রমাণ বেশ কিছু সিনেমা এরই মধ্যে দিয়েছে। আমি যদি আমার দুটি সিনেমার কথা বলি, তাহলে এ দুটি সিনেমাই তার প্রমাণ।

কালবেলা: কলকাতায় নতুন সিনেমার অফার আসছে?

তারিন: হ্যাঁ, নতুন কিছু সিনেমায় কাজের অফার পাচ্ছি। কথা হচ্ছে। সেগুলো কনফার্ম হলেই সবাইকে জানানো হবে।

কালবেলা: বুম্বাদার (প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়) সঙ্গে আপনার ছবি দেখলাম। তার সঙ্গে কি কথোপকথন হয়েছে?

তারিন: প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় দুই বাংলার কিংবদন্তি। তাকে চেনেন না এমন সিনেমাপ্রেমী নেই বললেই চলে। তিনি নিজে থেকে আমাদের সিনেমাটি দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এবং আমার অভিনয় নিয়ে কথা বলেছেন। সবকিছুর খোঁজখবর নিয়েছেন।

কালবেলা: শেষ প্রশ্ন—কলকাতার দর্শক কি তারিনকে চিনতে পেরেছেন?

তারিন: তারা আমাকে আগে থেকেই চিনতেন। কারণ পশ্চিম বাংলায় আমাদের দেশের নাটকের অসংখ্য ভক্ত রয়েছে। যারা নিয়মিত বাংলাদেশের নাটক দেখেন। তাদের মধ্যে একজনের আমার সঙ্গে দেখাও হয়েছে। এক নারী তার মেয়েকে নিয়ে এসেছেন সিনেমা দেখতে। তিনি আমার নাটক আগে দেখেছেন, তাই সিনেমাটি দেখতে এসেছেন। এমন অসংখ্য দর্শকের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে এখানে না এলে এমন ভালোবাসা বুঝতাম না।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

৩৪তম বিসিএস পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মহিউদ্দীন, সম্পাদক জুয়েল

১০ বছর পর প্রকাশ্যে চবি ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ-সমাবেশ

সিআইডির সাবেক প্রধানসহ ৬ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

শত কোটি টাকা আত্মসাৎ / কাস্টমস কমিশনারের দুর্নীতির অনুসন্ধানে দুদক

সাত কলেজ নিয়ে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসক নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি

রাষ্ট্রীয় সহায়তায় উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের দাবি বাগছাসের

ভারতের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি বহাল থাকবে কি না জানাল পাকিস্তান

হত্যা মামলায় গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেপ্তার

পাকিস্তানিদের ভিসা দেওয়া নিয়ে বাংলাদেশের নতুন উদ্যোগ

লুমোস গ্লোবালের ধানমন্ডি শাখার উদ্বোধন

১০

ঈদের আগেই সব ফুটপাত মেরামতের নির্দেশ ডিএনসিসি প্রশাসকের

১১

কুয়েটে সংঘর্ষ ও শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় বিচারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি

১২

জমির বিরোধে রক্তাক্ত ৩ বছরের শিশু জোবাইদা

১৩

সবুজবাগ থানার ৫নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের কর্মিসভা অনুষ্ঠিত

১৪

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে যুক্ত হচ্ছে জব্বারের বলীখেলা ও সাম্পান বাইচ

১৫

নিজের গুলিতে প্রাণ গেল ভারতীয় সেনার

১৬

সরকার কত টাকার সম্পদ জব্দ করেছে, জানালেন প্রেস সচিব

১৭

কর্নেল কুরেশিকে আপত্তিকর মন্তব্য, মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ

১৮

‘বিয়ারিং কাজ না করায়’ খুলে যায় উড়োজাহাজের চাকা : বিমান কর্তৃপক্ষ

১৯

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ ২১ মে

২০
X