সিন্ডিকেট চক্র সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করছে : ডা. ইরান 
সরকার নিত্যপণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিলেও এর কোনো কার্যকারিতা বাজারে নেই বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান। তিনি বলেছেন, বিগত ১৫ বছরে কখনোই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি সরকার। কারণ, কালোবাজারি সিন্ডিকেট চক্র সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করছে। শুক্রবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যায় নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ লেবার পার্টি আয়োজিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইরান এ কথা বলেন। তিনি বলেন, সরকার কেবল হাঁকডাকই দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিলেও আন্তর্জাতিক বাজারে যখন দাম নিম্নমুখী, তখনো সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। সরবরাহ প্রক্রিয়ায় যাতে সিন্ডিকেটের আধিপত্য তৈরি না হয়, সে ক্ষেত্রে সরকারের যে বহুবিধ ভূমিকা প্রয়োজন, সেসব পদক্ষেপ সরকার গ্রহণ করেনি। সরকার সিন্ডিকেটকে সুবিধা করে দিতে ভারসাম্য তৈরি থেকে বিরত থেকেছে। ফলে কতিপয় কোম্পানিই পুরো বাজারে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। সরকারের ছায়াতলে থাকা এসব সিন্ডিকেট জনগণের পকেট থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ লেবার পার্টির সভাপতি মাওলানা আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন লেবার পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এস এম ইউসুফ আলী, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম রাজু, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব খন্দকার মিরাজুল ইসলাম, যুগ্মমহাসচিব তরিকুল ইসলাম সাদী, মোহাম্মদ রুম্মান সিকদার, মহানগর যুগ্ম সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম, গণঅধিকার পরিষদ (একাংশ) ঢাকা মহানগরের সদস্য সচিব ইমাম উদ্দিন, ইসলামী ঐক্য আন্দোলন মহানগর সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, লেবার পার্টির মহানগর সদস্য মুক্তিযোদ্ধা বাদশা মিয়া, ছাত্রমিশন সভাপতি সৈয়দ মো. মিলন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আরিফ সাকিল ও প্রচার সম্পাদক হাফিজুর রহমান, কেন্দ্রীয় সদস্য মো. পারভেজ বেপারী প্রমুখ।
২৯ মার্চ, ২০২৪

আ.লীগের জনভিত্তি শূন্যের কোঠায় : ডা. ইরান 
লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেছেন, আওয়ামী লীগ ৭ জানুয়ারি তামাশার নির্বাচন করে দেউলিয়া দলে পরিণত হয়েছে। ডামি নির্বাচনের পাতানো সার্কাসের এমপি-মন্ত্রীরা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের অবস্থা নড়বড়ে, তাদের জনভিত্তি শূন্যের কোঠায়।  মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীতে কালো পতাকা মিছিল ও সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।  তিনি বলেন, যে কোনো সময় এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াতে হবে। তাই এই সরকার ও সরকারি দলের লোকজন আবোলতাবোল বকছেন। আমরা তামাশার সংসদকে কালো পতাকা দেখিয়ে গণঅনাস্থা প্রকাশ করছি। ডা. ইরান বলেন, চাল-ডাল, আটা-চিনি, ভোজ্যতেল, শিশু খাদ্য ও শাকসবজির মূল্যবৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষ আজ দিশাহারা। নিয়ন্ত্রণহীন সিন্ডিকেটগোষ্ঠী, নিয়ন্ত্রণহীন বাজার মূল্যের কারণে সাধারণ মানুষের জীবন-যাপন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে ‘মুনাফা শিকারি’ লুটেরাদের হাতে। পণ্য পরিবহনে দুর্নীতি, হয়রানি ও চাঁদাবাজি হচ্ছে। বাজারে অসৎ ব্যবসায়ী ও মুনাফাখোরদের একচেটিয়া প্রভাব কমানো না গেলে দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া নিয়ন্ত্রণে আসবে না। লেবার পার্টির ঢাকা মহানগরের যুগ্ম সম্পাদক এনামুল হকের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন লেবার পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান রামকৃষ্ণ সাহা, অ্যাডভোকেট জোহরা খাতুন, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব খন্দকার মিরাজুল ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব হেলাল উদ্দিন চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক মনির হোসেন খান, মহিলা সম্পাদিকা নাসিমা নাজনিন সরকার, কেন্দ্রীয় নেতা মো. জনি হোসেন, মহানগর নেতা তারিকুল ইসলাম, ছাত্রমিশন সভাপতি সৈয়দ মো. মিলন ও যুগ্ম সম্পাদক মো. লিটন খান প্রমুখ।
৩০ জানুয়ারি, ২০২৪

শাবনূরকে সতর্ক করলেন নির্মাতা মানিক
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফিরে নতুন দুটি সিনেমার ঘোষণা দেন ঢালিউড নায়িকা শাবনূর। ছবি দুটি হলো ‘রঙ্গনা’ ও ‘মাতাল হাওয়া’। ইতোমধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে রঙ্গনায় শাবনূরের ফার্স্ট লুক। পোস্টারটি প্রকাশের পর নেটিজেনদের কাছ থেকে যেমন পজিটিভ মন্তব্য এসেছে, তেমনি মিলেছে নেগেটিভ কমেন্ট। ভক্তদের একটি অংশ চান না যে শাবনূর এ সিনেমায় অভিনয় করুক। অন্যদিকে ‘মাতাল হাওয়া’ সিনেমার রিহার্সালে অংশগ্রহণ করেছেন এ অভিনেত্রী। চয়নিকা চৌধুরীর পরিচালনায় মাতাল হাওয়া ছবিতে শাবনূরের বিপরীতে দেখা যাবে মাহফুজ আহমেদকে। এ ছাড়া শাবনূরকে নিয়ে অনেক আগেই ‘দুই নয়নের আলো’ সিনেমার সিক্যুয়াল তৈরির ঘোষণা দিয়েছেন ছবিটির নির্মাতা মোস্তাফিজুর রহমান মানিক। এমনকি শাবনূরের বায়োপিকও বানাতে চান তিনি। ২০০৫ সালে মানিকের ‘দুই নয়নের আলো’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন শাবনূর। চিত্রনায়িকা শাবনূরের অভিনয়ে ফেরা এবং ‘রঙ্গনা’ সিনেমায় অভিনয় করার বিষয়ে নায়িকার প্রতি কিছু আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী নির্মাতা মোস্তাফিজুর রহমান মানিক। তবে পরিচালক হিসেবে নয়, শাবনূরভক্ত হিসেবে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। অন্য শাবনূর ভক্তদের মতো নির্মাতা মানিকও চান ‘মানহীন’ চলচ্চিত্রে শাবনূর যেন অভিনয় না করেন। নির্মাতা মানিকের ভাষ্য, প্রয়োজনে তার ‘দুই নয়নের আলো ২’ ছবিটি বাদ দিয়ে হলেও শাবনূর যেন চলচ্চিত্র নির্বাচনে সতর্ক হন। তার অভিমত হলো, দীর্ঘদিন পর শাবনূর অভিনয়ে নিয়মিত হতে যাচ্ছেন, এখন ভুল করলে ভক্তরা নায়িকার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন। শাবনূরের উদ্দেশ্যে মানিক লিখেছেন, এটা ১৯২৪ সাল না, ২০২৪ সাল। এ বিষয়ে ফেসবুকে একটি পোস্টও দিয়েছেন নির্মাতা। মানিক লিখেছেন, ‘গত কয়েকদিনে একটি পোস্টারকে কেন্দ্র করে, সবার প্রিয় অভিনেত্রী শাবনূরকে যেভাবে ট্রল করা হয়েছে, তা মনে হয় শাবনূর-এর এত বছরের অভিনয় জীবনে কোনোদিন করা হয়নি। একজন শাবনূর ভক্ত হিসেবে এটা মেনে নেওয়া কষ্টকর। খোদ শাবনূর ভক্তরা একে বয়কটের ডাক দিয়েছে। যাই হোক এই ট্রলের যুগে, শাবনূর-এর যদি আবার মুভি করতেই হয়, অত্যন্ত বুঝেশুনে করা উচিত’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, বর্তমান সময়ের অনেক মেধাবী এবং জনপ্রিয় পরিচালক তার সাথে কাজ করতে আগ্রহী। চয়নিকা চৌধুরী, রায়হান রাফি, নিয়ামূল মুক্তা, বুলবুল বিশ্বাস ইতোমধ্যে তার সাথে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ আমাকে নিজে বলেছেন তাকে নিয়ে কাজ করার কথা। আমার মনে হয় নিজেকে আরও ফিট করে আরও সময় নিয়ে এই সব পরিচালকদের সাথে রাজকীয়ভাবে তার ফেরা উচিত’। মানিক লিখেছেন, ‘চয়নিকা দিদির মাতাল হাওয়া নিয়ে যে কথা হচ্ছে সেটা হতে পারে শাবনূর-এর প্রপার কামব্যাক। এটার জন্য অপেক্ষা করা উচিত। মোট কথা এক্সপেরিমেন্ট-এর কোনো সুযোগ নেই এই সময়ে। মনে রাখতে হবে এটা ১৯২৪ না, এটা ২০২৪। বিখ্যাত সব পরিচালক, প্রযোজক, কাহিনিকার, ডিওপি, এমনকি অসংখ্য স্পট বয়ের প্রচেষ্টার সাথে শক্তিশালী অভিনয় দক্ষতার মিশেলে গড়ে উঠেছে শাবনূর-এর আজকের সার্বজনীন ইমেজ। কিছু লোকের অদক্ষতা, ভাইরাল হবার প্রচেষ্টা আর শাবনূর-এর নিজের খামখেয়ালির জন্য, এই ইমেজ, এই জনপ্রিয়তা, এই প্রতিমা ধ্বংস হোক, আমিসহ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অগণিত শাবনূর ভক্ত তা কোনোদিন চায় না’। শেষে নির্মাতা লিখেছেন, ‘প্রয়োজনে আমার মুভিও রিজেক্ট করুন, তবু কাউকে নিজের ইমেজ শেষ করার সুযোগ দেবেন না প্লিজ। মূর্খ অদক্ষ কোনো মেকআপম্যান যদি আপনার উপদেষ্টা হয় তাহলে বলার কিছু নাই। আপনি এদের ব্যক্তিগতভাবে ভালোবাসুন কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু নিজের ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রে এদের বর্জন করুন, দরকারে আমাকেও বর্জন করুন। আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে এই কথাগুলো বলতে না পেরে এই পোস্ট দিলাম। আশা করি ভুল বুঝবেন না’।
১০ জানুয়ারি, ২০২৪

দিনাজপুরে নৌকা প্রতীকে আটবার বিজয়ী হলেন মোস্তাফিজুর রহমান
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-৫ (পার্বতীপুর-ফুলবাড়ী) আসনে টানা অষ্টবারের মতো বিপুল ভোটে জয়ী হলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার। ১৪০টি কেন্দ্রের ফলাফলে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৪২৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাড. হযরত আলী বেলাল (ট্রাক) পেয়েছেন ২৬ হাজার ৪৮২ ভোট। পার্বতীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, ৩৫ বছর ধরে একটানা একই আসনের সংসদ সদস্য উত্তরের জননন্দিত রাজনীতিক সাবেক মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান। আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে ১৯৮৬ সালে প্রথমবারের মতো দিনাজপুর-৫ (পার্বতীপুর-ফুলবাড়ী) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। পরবর্তীতে ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১,২০০৮ এবং ২০১৪ সালেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালে বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ২০০৯ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত ভূমি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ পর্যন্ত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
০৮ জানুয়ারি, ২০২৪

শাবনূরের জন্য নির্মাতাকে হুমকি
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফিরে নতুন দুটি সিনেমার ঘোষণা দেন ঢালিউড নায়িকা শাবনূর। ছবি দুটি হলো ‘রঙ্গনা’ ও ‘মাতাল হাওয়া’। ইতোমধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে রঙ্গনায় শাবনূরের ফার্স্ট লুক। অন্যদিকে ‘মাতাল হাওয়া’ সিনেমার রিহার্সালে অংশগ্রহণ করেছেন এ অভিনেত্রী। চয়নিকা চৌধুরীর পরিচালনায় মাতাল হাওয়া সিনেমায় শাবনূরের বিপরীতে দেখা যাবে মাহফুজ আহমেদকে। অন্যদিকে শাবনূরকে নিয়ে অনেক আগেই ‘দুই নয়নের আলো’ সিনেমার সিক্যুয়াল তৈরির ঘোষণা দিয়েছেন ছবিটির নির্মাতা মোস্তাফিজুর রহমান মানিক। এমনকি শাবনূরের বায়োপিকও বানাতে চান তিনি। কিন্তু শাবনূরকে নিয়ে কাজ করতে চাওয়ায় হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে তাকে। অজ্ঞাত একটি নম্বর থেকে তাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি। শবানূরকে নিয়ে কোনো সিনেমা বা কাজ না করার হুমকি দিয়েছেন ওই অজ্ঞাত ব্যক্তি। একটি ফোন নম্বর উল্লেখ করে মোস্তাফিজুর রহমান মানিক বলেন, ‘জানি না, একে কী বলব! এই নম্বর থেকে ফোন করে আমাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, আমি যেন শাবনূর আপাকে নিয়ে কোনো কাজ না করি। তার কথা অমান্য করলে আমার খুব ক্ষতি হবে। আমি হুমকিদাতার পরিচয় জানার চেষ্টা করছি। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’ উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে মানিকের ‘দুই নয়নের আলো’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন শাবনূর।
০৭ জানুয়ারি, ২০২৪

নির্বাচন নিয়ে জনগণের আগ্রহ নেই : ডা. ইরান
লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেছেন, ‘একতরফা’ নির্বাচন নিয়ে জনগণের মধ্যে কোনো আগ্রহ নেই। জনগণ ডামি প্রার্থির ডামি নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করবে। আগামী ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনে তারা ভোট দিতে যাবে না। বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নির্বাচন বর্জন এবং অসহযোগ আন্দোলনের পক্ষে জনমত গড়তে মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর পুরানা পল্টন এলাকায় লেবার পার্টির পক্ষে লিফলেট বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন। মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, একতরফা নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা এখন জনগণের প্রতিপক্ষ। সাধারণ মানুষ ভোটাধিকার হরণকারীদের বিভিন্নভাবে নাজেহাল করছে। আওয়ামী লীগ মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও জনগণকে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। নৌকা মার্কায় ভোট না দিলে গায়েবী মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাধারণ মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করছে। এটা সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। কর্মসূচিতে লেবার পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান রামকৃষ্ণ সাহা, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব খন্দকার মিরাজুল ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব মো. হেলাল উদ্দিন চৌধুরী, মহিলা সম্পাদিকা নাসিমা নাজনিন সরকার, বাদশা মিয়া, মহানগর নেতা এনামুল হক, মো. লিটন খান, ছাত্রমিশনের সভাপতি সৈয়দ মো. মিলন ও প্রচার সম্পাদক হাফিজুর রহমানসহ নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
২৬ ডিসেম্বর, ২০২৩

নির্বাচনের নামে তামাশার উৎসব চলছে : ডা. ইরান
আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনের নামে তামাশার আয়োজন করেছে বলে মন্তব্য করে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেছেন, বিএনপির অফিসে তালা ঝুলিয়ে এই সরকার নির্বাচনের নামে তামাশার উৎসব করছে। দেশের প্রধানতম রাজনৈতিক দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে লক্ষাধিক মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা। নেতাকর্মীদের অধিকাংশ জেলে অথবা গ্রেপ্তারের ভয়ে বনে-জঙ্গলে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।  রোববার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে ‘একতরফা’ তপশিল বাতিল এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে চলমান অবরোধ কর্মসূচির সমর্থনে রাজধানীতে ঢাকা মহানগর লেবার পার্টির বিক্ষোভ মিছিল-পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। পুরানা পল্টন হতে শুরু হয়ে মিছিলটি বিজয়নগর পানির টেংকি, পল্টন মোড়, তোপখানা রোড, সচিবালয়, প্রেস ক্লাব, বায়তুল মোকাররম হয়ে প্রেস ক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শেষ হয়। ডা. ইরান বলেন, সরকার বিএনপিকে ভাঙার চেষ্টা করে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। বিএনপির কয়েকজন লোভী-বহিষ্কৃত নেতাকে দিয়ে নতুন নতুন দল তৈরি এবং দু-একজনকে ভাগিয়ে নৌকায় তুলে আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে, আইন-আদালত বলতে কিছু অবশিষ্ট নেই। এই সরকার যা চায় আদালত, নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেদার তাই করছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম, মির্জা আব্বাস ও আমির খসরুসহ অন্যরা সরকারের পাতানো একতরফা নির্বাচনে যেতে রাজি না হওয়ায় মিথ্যা ও হয়রানি করতেই কারাগারে রাখা হয়েছে।  তিনি দেশপ্রেমিক জনগণ ও রাজনৈতিক শক্তিকে নির্বাচনের নামে তামাশার উৎসব বুমেরাং করতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। নগর সহসভাপতি নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন-দলের ভাইস চেয়ারম্যান রামকৃষ্ণ সাহা, অ্যাডভোকেট জহুরা খাতুন জুঁই, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব খন্দকার মিরাজুল ইসলাম, যুগ্ম-মহাসচিব মুফতি তরিকুল ইসলাম সাদী, মোহাম্মদ রুম্মান সিকদার, মহিলা সম্পাদিকা নাসিমা নাজনিন সরকার, নারীনেত্রী পারভিন আক্তার, কেন্দ্রীয় সদস্য মো. রাসেল হোসেন, নগর সদস্য ছাত্রমিশন সভাপতি সৈয়দ মো. মিলন, যুগ্ম-সম্পাদক মো. ইয়াসিন হোসেন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক রেজোয়ান হোসেন প্রমুখ।
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৩

বিএফইউজে-সিইউজের বিবৃতি / সাংবাদিক লাঞ্ছনাকারী মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর মনোনয়ন বাতিল দাবি 
সাংবাদিকদের লাঞ্চনাকারী মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীকে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে দেয়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন-সিইউজে। শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) এক যৌথ বিবৃতিতে উভয় সংগঠনের নেতারা এ দাবি জানান। বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুক ও মহাসচিব দীপ আজাদ, সিইউজে সভাপতি তপন চক্রবর্তী ও সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, নির্বাচনের আগেই আচরণবিধি লঙ্ঘনের ব্যাপারে প্রশ্ন করায় যিনি সাংবাদিকদের গায়ে হাত তোলার মতো ঔদ্ধত্য দেখাতে পারেন কেউই তার কাছে নিরাপদ নয়।  সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, বিতর্কিত এই ব্যক্তি আগেও বিভিন্ন সময় নানা বিতর্কিত কর্মকান্ড ছাড়াও সাংবাদিকদের হুমকি, মিথ্যা মামলায় জড়ানোসহ সাংবাদিক বিদ্বেষী নানা ঘটনা ঘটিয়েছেন। একজন রাজনীতিবিদের কাছ থেকে আমরা তা কখনো প্রত্যাশা করিনা।   নেতারা তার মনোনয়ন বাতিলের জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের প্রতি আহ্বান জানান একই সঙ্গে সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় তার বিরূদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি দাবি জানান।
০২ ডিসেম্বর, ২০২৩

স্তন ক্যান্সার সচেতনতা দিবস: লাজ ভয় আর নয়
অক্টোবর মাস ব্রেস্ট বা স্তন ক্যান্সার সচেতনতার মাস। নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে গোটা বিশ্বে পালিত হচ্ছে মাসটি। স্তন ক্যান্সার বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে বার্ষিক প্রচারণা কর্মসূচি এটি। এই অক্টোবর মাস সহ বছরের অন্যান্য সময়ে স্তন ক্যান্সার সচেতনতা বৃদ্ধির প্রচারনাকালে মানুষ গোলাপী ফিতা পরিধান করে। স্তন ক্যন্সারের কারণে যারা মৃত্যুবরণ করেছে তাদের স্মরণে, আক্রান্ত হয়েও যারা বেঁচে আছে তাদের সম্মান দেখাতে এবং স্তন ক্যান্সারকে পরাজিত করতে একসাথে কাজ করা মানুষদের প্রতি সমর্থন যোগাতে এই গোলাপী ফিতা পরিধান করা হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও নানা কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে পালিত হয় স্তন ক্যান্সার সচেতনতার এই মাস। এছাড়া, ১০ই অক্টোবর বাংলাদেশে স্তন ক্যান্সার সচেতনতা দিবস হিসেবে বেসরকারিভাবে পালিত হয়।  যদিও নারী  এবং পুরুষ উভয়েই স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারে, পুরুষের স্তন ক্যান্সার অনেকাংশে বিরল। নারীদের মধ্যে প্রতি ৪ জন ক্যান্সার আক্রান্তের অন্তত ১ জন স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত এবং ক্যান্সার জনিত প্রতি ৬টি মৃত্যুর ১ টি স্তন ক্যান্সারের কারনে ঘটে। আন্তর্জাতিক সংস্থা আইএআরসি (The International Agency for Research on Cancer) এর তথ্য মতে ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী সনাক্ত ক্যন্সারের মধ্যে স্তন ক্যন্সার ছিল শীর্ষে। ২০২০ সালে গোটা বিশ্বে নতুন করে সনাক্ত স্তন ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা ২.২ মিলিয়নেরও বেশি এবং এ কারণে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৬৮৫,০০০ জনের। বিশ্বব্যাপী প্রতি ৮ জন নারীর মধ্যে ১ জনের স্তন ক্যান্সার হতে পারে এবং প্রতি ৩৬ জন আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যুর সম্ভাবনা রয়েছে ১ জনের। প্রতি ৬ মিনিটে একজন নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় এবং প্রতি ১১ মিনিটে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত একজন নারী মারা যায়। অতি সম্প্রতি (০২ সেপ্টেম্বর ২০২২) দ্য ব্রেস্ট জার্নালে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে অনুমান করা হয়েছে যে, ২০৪০ সালের মধ্যে স্তন ক্যান্সারে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা প্রতি বছর ৩ মিলিয়ন অতিক্রম (৪০% বৃদ্ধি) করবে এবং এর ফলে প্রতি বছর ১ মিলিয়নেরও অধিক মৃত্যু (৫০% বৃদ্ধি) ঘটবে।  ২০২০ সালে, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে প্রায় ৫ লক্ষ নারী স্তন ক্যান্সারে মারা গেছে যা সারা বিশ্বে মোট মৃত্যুর প্রায় তিন চতুর্থাংশ। স্তন ক্যান্সার সারা বিশ্বের মত বাংলাদেশেও নারীমৃত্যুর অন্যতম কারণ। বাংলাদেশে ২০২০ সালে ১৩ হাজারের বেশি নারী নতুন করে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় যা নারীদের মধ্যে মোট ক্যান্সারের ১৯ শতাংশ। স্তন ক্যান্সারের কারনে মৃত্যু হয় ৬৭৮৩ জনের যা ক্যান্সারের কারনে মোট নারী মৃত্যুর প্রায় ১৫ শতাংশ।   ব্রেস্ট বা স্তন মানবদেহের বক্ষদেশের উপরিভাগে অবস্থিত এক জোড়া গ্রন্থিযুক্ত অঙ্গ যা সংযোজক কলা, চর্বি এবং স্তন কলার সমন্বয়ে গঠিত। স্তন ক্যান্সার বলতে স্তনকোষের অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি পাওয়াকেই বোঝায়। আমাদের শরীরে কোন অংশের কোষ খুব দ্রুত এবং অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি পেয়ে এক প্রকারের অস্বাভাবিক লাম্প বা চাকা তৈরি করে যাকে সাধারণতঃ টিউমার বলা হয়। এই টিউমার বেনাইন এবং ম্যালিগন্যান্ট -এই দুই ধরনের হয়ে থাকে। স্তন টিউমারের অধিকাংশই বেনাইন হলেও এর ১০ থেকে ১৫ শতাংশ টিউমার ম্যালিগন্যান্ট টাইপের হয়। স্তনের এই ম্যালিগন্যান্ট টিউমারকেই স্তন ক্যান্সার বলা হয়।   স্তনের যেসব পরিবর্তনে মনোযোগী হতে হবে :  বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, একেবারে শুরুর দিকে স্তন ক্যান্সারের তেমন উল্লেখযোগ্য লক্ষণ বা উপসর্গ প্রকাশ না পেলেও সময়ের সাথে এক বা একাধিক লক্ষণ প্রকাশ হতে থাকে। স্তনের এসব পরিবর্তন একজন নারী নিজে নিজেই অথবা তার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী অনুভব করতে পারে। তবে, অধিকাংশ পরিবর্তন শুধুমাত্র ম্যামোগ্রাম, এমআরআই, বা আল্ট্রাসাউন্ডের মতো ইমেজিং পদ্ধতির মাধ্যমেই সনাক্ত করা সম্ভব হয়। স্তন ক্যান্সারের লক্ষণ বা উপসর্গসমূহ নিম্নরুপ:  o    স্তনে এক বা একাধিক লাম্প বা চাকা অনুভূত হওয়া যা আগে ছিল না o    আগে অনুভূত হওয়া কোন চাকা পরিবর্তিত হওয়া o    স্তনের আকার বা আকৃতিতে পরিবর্তন o    স্তনের যেকোনো জায়গায় চামড়া ফ্যাকাশে, লাল বা ফোলা ওঠা o    স্তন বা স্তনবৃন্তে ব্যথা হওয়া যা সহজে দূর হয় না o    স্তনবৃন্তের শেপ বা আকৃতি আগের চেয়ে পরিবর্তিত হওয়া যেমন, অসমান হওয়া, চ্যাপ্টা হওয়া বা বেঁকে যাওয়া  o    স্তনবৃন্ত থেকে দুধ ছাড়া অন্য কোন তরল নিঃসরণ হওয়া o    বগলে ফুলে যাওয়া বা চাকা দেখা দেয়া   উপরের যেকোন এক বা একাধিক উপসর্গ অথবা স্তনের অন্য কোন পরিবর্তন নারী নিজে অথবা তার চিকিতসক যেই-ই বুঝতে পারুক না কেন পরিবর্তনটি সঠিকভাবে নির্ণয় করার জন্য চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা জরুরী। চিকিৎসক প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে পরিবর্তনটি স্তন ক্যান্সার কি না তা নির্ণয় করবেন। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে রোগীর সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। আর  তাই নিয়মিত স্তন পরীক্ষা করে দেখতে হবে অস্বাভাবিক কোনো পরিবর্তন চোখে পড়ে কি না।  স্তন ক্যান্সারের কারণ ও ঝুঁকি :  অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এটা জানা সম্ভব হয় না যে ঠিক কি কারনে তাদের ক্যান্সার হয়েছে। BRCA1 এবং BRCA2 জিন মিউটেশনকে স্তন ক্যানসারের কারন হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন বিজ্ঞানীরা। এই জিন মিউটেশন মা বাবা থেকে তাদের বাচ্চাদের শরীরে স্থানান্তরিত হতে পারে। বায়োলজিক্যালি ক্যান্সার এর জন্যে কোষের ক্ষতিগ্রস্ত ডিএনএ কেই দায়ী বিবেচনা করা হয়। কিন্তু কেন বা কিভাবে ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা এখনও অনেকাংশে অজানা। ডিএনএ এর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণ এটি জেনেটিক কিংবা পরিবেশগত, অথবা উভয়ের সমন্বয়ে হতে পারে। যা হোক, স্তন ক্যান্সারের সাথে যুক্ত কিছু নির্দিষ্ট রিস্ক ফ্যাক্টর বা ঝুঁকির কারণ রয়েছে। স্তন ক্যান্সারের ঝুকি সমূহকে অপরিহারযোগ্য ও পরিহারযোগ্য এই দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়।  স্তন ক্যান্সারের অপরিহারযোগ্য ঝুঁকি সমুহ :  লিঙ্গ: সাধারনভাবে স্তন ক্যান্সার কেবল মাত্র মহিলাদের হয়ে থাকে বলে ধারণা করা হলেও এটা পুরুষদেরও হয়ে থাকে। তবে, পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের প্রায় ১০০ গুণ বেশি ঘটে।  বয়স: বয়স বৃদ্ধির সাথে একজন মহিলার স্তন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়তে থাকে। ৪০ বছরের কম বয়সী মহিলাদের মধ্যে স্তন ক্যান্সারের হার কম। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত মহিলাদের কেবলমাত্র ৪ শতাংশের বয়স ৪০ এর নীচে। স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তের হার ৪০ বছর বয়সের পরে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে এবং ৭০ বছরের বেশি বয়সী মহিলাদের মধ্যে সর্বোচ্চ। এক গবেষনায় দেখা গেছে আক্রমণাত্মক স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত তিনজনের মধ্যে দুইজন ৫৫ বছর বয়সের অধিক।  জাতি: জাতিভেদে স্তন ক্যান্সার এর ঝুকি কম বেশী হয়। অন্যান্য জাতির তুলনায় ককেশীয় মহিলাদের মধ্যে স্তন ক্যান্সার আক্রান্তের হার বেশী।  পারিবারিক ইতিহাস এবং জেনেটিক ফ্যাক্টর: যদি কোন মহিলার মা, বোন, বাবা বা সন্তানের স্তন বা ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারের ইতিহাস থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে  তার স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। ৪০ বছরের কম বয়সী একজন নিকটাত্মীয়ের স্তন ক্যানসার থাকলে এই রোগের সম্ভাবনা বাড়ে।  ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যের ইতিহাস: যদি কারও একটি স্তনে ক্যান্সার ধরা পড়ে, তাহলে ভবিষ্যতে অন্য স্তনে ক্যান্সার ধরা পড়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।  ঋতুস্রাব এবং সন্তান জন্মদান বিষয়ক: অল্প বয়সে (১২ বছরের কম) ঋতুস্রাব শুরু হওয়া, অধিক বয়সে মেনোপজ (৫৫ বছর এর পরে) শুরু হওয়া, অধিক বয়সে প্রথম সন্তান জন্ম দেয়া, অথবা সন্তান একেবারেই না হওয়া ইত্যাদি স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি  বাড়ায়।  ঘন স্তন টিস্যু: স্তন টিস্যু অধিকতর ঘন হলে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এর ফলে স্তনের লাম্প বা চাকা সনাক্ত করা কঠিন হয়ে যায়।   জেনেটিক পলিমরফিজম: কিছু জিনের জেনেটিক পলিমরফিজমের কারনে স্তন ক্যান্সার এর ঝুঁকি কম-বেশী হয়। এই জেনেটিক পলিমরফিজমের কারনে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে এমনকি একই জনগোষ্ঠীর বিভিন্নজনের মধ্যে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা কম বেশী হয়।   নিয়ন্ত্রন বা পরিহারযোগ্য ঝুঁকি সমূহ :  অপর্যাপ্ত শারীরিক ক্রিয়াকলাপ: তুলনামূলকভাবে কম শারীরিক শ্রমের সাথে অলস জীবনযাপন স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।  অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা: শারীরিক স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজন স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে। মেনোপজের পরবর্তী সময়ে এই ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। শরীরের অতিরিক্ত চর্বি ইস্ট্রোজেন হরমোন উৎপাদন করে, যা ক্যান্সারের সহায়ক হিসেবে কাজ করে।  খাদ্যাভ্যাস: খাদ্যতালিকায় শাকসবজি বা ফলমূলের চাইতে চর্বি ও প্রাণীজ আমিষ বেশি থাকলে এবং প্রসেসড ফুড বেশি খেলে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।  অ্যালকোহল পান: ঘন ঘন অ্যালকোহল সেবন স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। যত বেশি অ্যালকোহল পান করা হয়, ঝুঁকি তত বেশি হয়।  সন্তান গ্রহণ ও ব্রেস্টফিডিং: যারা দেরিতে সন্তান গ্রহন করে, একেবারেই সন্তান জন্ম দেয় না,  বা সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ায় না তাঁদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে।  বুকে রেডিয়েশন থেরাপি: তিরিশ বছর বয়সের পূর্বে বুকে রেডিয়াশন থেরাপি নিলে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে। জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল: জন্ম নিয়ন্ত্রণ করতে যেয়ে দীর্ঘদিন ধরে পিল খেলে বা হরমোন ইনজেকশন নিলে স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি থাকে। কম্বাইন্ড হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি (এইচআরটি): মেনোপজের জন্য নির্ধারিত যৌথ হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি গ্রহণ করলে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।  আমেরিকার ন্যাশনাল ব্রেস্ট ক্যান্সার ফাউন্ডেশন কিন্তু একটি মজার তথ্য জানিয়েছে। তাদের তথ্য মতে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত ৬০-৭০ শতাংশ মহিলার এই ঝুঁকির কারণগুলির সাথে কোন সম্পর্ক নেই। পক্ষান্তরে, এসব ঝুঁকিতে আছেন এমন মহিলাদের অনেকেরই  কখনই স্তন ক্যান্সার হতে দেখা যায় না। স্তন ক্যান্সার সচেতনতা বলতে আমরা কি বুঝি?  স্তন ক্যান্সার সচেতনতা বলতে এক প্রকারের প্রচেষ্টা বোঝায় যার মাধ্যমে প্রচলিত ভুল ধারনা এবং সামাজিক স্টিগ্মা, ট্যাবু ইত্তাদি দূর করে স্তন ক্যান্সারের লক্ষণ, সনাক্তকরণ এবং চিকিতসার উপর সঠিক শিক্ষার দেয়া হয়।  স্তন ক্যান্সার বিষয়ে সচেতনতার যথেষ্ঠ অভাব রয়েছে আমাদের সমাজে। স্তন ক্যান্সার নিয়ে লজ্জা বা সামাজিক ট্যাবুও রয়েছে। সামাজিক রক্ষণশীলতার কারণে বাংলাদেশে নারী বা পুরুষ যে কেউই প্রকাশ্যে স্তন বিষয়ক কোন আলোচনা করতে অস্বস্তি বোধ করে। একইভাবে নারীদের স্তনে কোন পরিবর্তন বা প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিলেও তারা তা গোপন রাখে। এমনকি অনেকেই মা বা স্বামীর কাছেও প্রথমদিকে গোপন রাখার চেষ্টা করে। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে জনৈক খন্দকার শাহানা বিলকিস তার নিজের স্তন ক্যন্সার সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন “যেহেতু স্তন একটা গোপন অঙ্গ হিসেবেই বিবেচিত এবং যেহেতু ব্যাপারটি আমাকে তেমন একটা যন্ত্রণা দিত না, অতিরিক্ত ব্যথাও ছিল না, তাই আমি ব্যাপারটি নিয়ে আর ডাক্তারের শরণাপন্ন হইনি।” সেই সঙ্গে ছিল লজ্জা ও জড়তাও। শাহানার মতই অধিকাংশ নারীই চিকিতসকের কাছে আসে একেবারে শেষ পর্যায়ে। অনেক ক্ষেত্রে তখন আর তেমন কিছুই করার থাকে না। রোগী শুধু মৃত্যুর প্রহর গুনতে থাকে। তাই স্তন ক্যান্সারকে লজ্জা পাওয়া বা গোপন রোগ হিসেবে চিন্তা করার অবকাশ নেই। জীবনের দামে লজ্জার দাম পরিশোধ করা কোন ভাবেই সমীচিন নয়।  প্রাথমিক পর্যায়ে স্তন ক্যান্সার সনাক্তকরণ :   সমাজের সকলে সচেতন হলে স্তন ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়েই দ্রুত সনাক্ত করা সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন প্রাথমিক পর্যায়ে দ্রুত সনাক্ত করা গেলে স্তন ক্যান্সার ক্ষেত্রবিশেষে পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য এবং এর মাধ্যমে স্তন ক্যান্সার জনিত মৃত্যুহার হ্রাস করা সম্ভব। প্রাথমিক পর্যায়েই দ্রুত সনাক্তকরন তিনটি ধাপে সম্পন্ন করতে হয়।  ১। Breast Self-Examination (BSE) বা স্তনের স্ব-পরীক্ষা: চিকিৎসকেরা ২০ বছর বয়স থেকে বাড়িতে বসে নিজেই নিজের স্তন পরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এর মাধ্যমে স্তনে কোন্রুপ অস্বাভাবিকতা বা পরিবর্তন থাকলে তা বোঝা যায়।   ২। Clinical Breast Examination (CBE): একজন ডাক্তার বা অন্য কোন পেশাদার স্বাস্থ্যসেবী দ্বারা স্তনের পরীক্ষা করানো হয়। ২৯ থেকে ৩৯ বছর বয়সের মধ্যে, মহিলাদের প্রতি ১ থেকে ৩ বছরে একবার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর দ্বারা CBE করানো উচিত। ৪০ উর্দ্ধ বয়সের মহিলাদের প্রতি বছর ১ বার নিয়মিত CBE করানো দরকার।  ৩। Mamography: ম্যামোগ্রাফি হল স্তনের এক ধরনের কম মাত্রার এক্স-রে। ম্যামোগ্রাফি স্তন টিস্যুর বৈশিষ্টপূর্ণ ভর বা মাইক্রোক্যালসিফিকেশন পরীক্ষা করে স্তন ক্যান্সারের প্রাথমিক সনাক্তকরণ নিশ্চিত করে থাকে। ঝুঁকির মাত্রার উপর নির্ভর করে ম্যামোগ্রামের সাথে স্তনের এমআরআইও করা যেতে পারে।  স্তন স্বাস্থ্য পরিকল্পনা :  ৪০ বছর বা তার বেশি বয়সী মহিলাদের প্রতি বছর একটি ম্যামোগ্রাম করা উচিত। যতদিন তারা সুস্থ থাকে ততদিন এই রুটিন চালিয়ে যাওয়া উচিত। ২৯ থেকে ৩৯ বছর বয়সী মহিলাদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার অংশ হিসাবে পেশাদার স্বাস্থ্যকর্মীর নিকটে  প্রতি ১-৩ বছর অন্তর একটি ক্লিনিকাল স্তন পরীক্ষা (CBE) করানো উচিত। ৪০ বছর বয়সের পরে, মহিলাদের প্রতি বছর একজন পেশাদার স্বাস্থ্যকর্মীর দ্বারা CBE করা উচিত। ২০ এর অধিক বয়সী মহিলারা প্রতি মাসে একবার নিয়মিতভাবে স্তনের স্ব-পরীক্ষা (BSE) করতে পারেন। তবে স্তনের স্ব-পরীক্ষা করার সময় একজন স্বাস্থ্যকর্মীকে দিয়ে দেখিয়ে নিবেন  যে তাদের স্ব-পরীক্ষার কৌশল সঠিক কি না? স্তন ক্যান্সারের জন্য উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা মহিলাদের প্রতি বছর একটি এমআরআই এবং ম্যামোগ্রাম করা উচিত। ড. মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান : অধ্যাপক, ফার্মেসি ডিসিপ্লিন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা। 
১০ অক্টোবর, ২০২৩
X