কালবৈশাখীর তাণ্ডবে লন্ডভন্ড সুন্দর মিয়ার ঘর
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের আদমপুর ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রামের বাসিন্দা সুন্দর মিয়া (৬৯)। মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। কৃষিশ্রমিক একমাত্র ছেলের রোজগারে নাতি-নাতনিসহ ৬ জনের সংসার চলে। নিজেও অসুস্থ। দুবার স্ট্রোক করেছেন। দু'বেলা খেয়ে না খেয়ে দিন কাটান। থাকার ঘরটিও ছিল নড়বড়ে।  বৃহস্পতিবার (২ মে) রাতে হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড় কেড়ে নেয় অসহায় সুন্দর মিয়ার ঘরটি।  তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, একমাত্র ছেলের রোজগারে কোনোরকম দু’বেলা-দু’মুঠো খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাছি। থাকার জন্য একমাত্র সম্বল ছিল ওই ঘরটি। তাও কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে ঘরের বেড়া, টিনের চাল উড়িয়ে নিয়েছে। বর্তমানে আমি অসহায়। এই ঝড়-বৃষ্টির সময়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে সুন্দর মিয়ার পরিবার। এখনো সরকারি-বেসরকারি কোনো সহায়তা পাননি তিনি।  স্থানীয়রা জানান, খুব কষ্টে দিন কাটছে সুন্দর মিয়ার। এ মুহূর্তে সকলে তার কাছে এগিয়ে আসা উচিত। এদিকে ওই দিনের কালবৈশাখী ঝড়ের আঘাতে বনগাঁও গ্রামের ২০-৩০টি বাড়ি-ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
০৫ মে, ২০২৪

কালবৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড সহস্রাধিক বসতবাড়ি
বান্দরবানের লামায় আঘাত হানে কালবৈশাখী ঝড়। বৃহস্পতিবার (২ মে) রাত সাড়ে ৩টায় ঘণ্টাব্যাপী আঘাত হানা ঝড়ে কমপক্ষে সহস্রাধিক বাড়িঘর লন্ডভন্ড হয়েছে। রাস্তার পাশে গাছ ভেঙে বৈদ্যুতিক তারের ওপর পড়ে ৩০টির ওপর বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে ও অসংখ্য স্থানে তার ছিঁড়ে পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। উপজেলার বিভিন্নস্থানে রাস্তায় গাছ ভেঙে পড়ে যোগাযোগ বন্ধ হয়েছে। স্থানীয় লোকজন, বিদ্যুৎ অফিস ও সড়ক- জনপদ বিভাগ কয়েক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে যোগাযোগব্যবস্থা স্বাভাবিক করলেও বিদ্যুৎ সচল হতে আরও দু-একদিন লাগতে পারে বলে জানিয়েছে পিডিবি লামার আবাসিক প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হোসেন। জানা যায়, কালবৈশাখী ঝড়ে উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নে সব এলাকায় কমবেশি বিধ্বস্ত হয়েছে। সবকয়টি ইউনিয়নে ছোটবড় বহুঘর আংশিক ভেঙে গেছে। এ ছাড়া রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড বৈদ্যভিটা এলাকায় বজ্রপাতে এক কৃষকের ৫টি ছাগল ও পূর্ব শিলেরতুয়া এলাকায় রমজান আলী মেম্বারের খামারে ঘর চাপা পড়ে ছাগল মারা গেছে। রূপসীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু মার্মা বলেন, গতরাতের কালবৈশাখী ঝড়ে আমার ইউনিয়নের দুই শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বৈদ্যভিটা ও পূর্ব শিলেরতুয়া এলাকার ৬টি ছাগল মারা গেছে। গাছ পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। সকাল থেকে স্থানীয় লোকজন নিয়ে গাছ কেটে যোগাযোগ স্বাভাবিক করেছি। কমবেশি সব মানুষের ক্ষতি হয়েছে। যাদের বসতবাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে তাদের ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ  হতে সহায়তা করা হবে।     লামা পৌরসভার হরিণঝিরি এলাকার হাবীব বলেন, আমাদের ৯নং ওয়ার্ডের কালবৈশাখী ঝড়ে অনেকের বসতবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে কয়েকটি পরিবার খোলা আকাশের নিচে দিনাতিপাত করছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করছি। লামা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা প্রস্তুত করছি। তালিকা লামা ইউএনওর সুপারিশ নিয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হবে। বরাদ্দ পেলে ক্ষতি বিবেচনা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। লামা ইউএনও মোহাম্মদ  কামরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কালবৈশাখী বাতাসের প্রবল ঘূর্ণিপাকের কারণে সব কয়টি ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি বসতবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। কয়েকটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা দিলে সরকারি অনুদানের ব্যবস্থা করা হবে।
০৩ মে, ২০২৪

কালবৈশাখী ঝড়ে বাড়িঘর লন্ডভন্ড
কক্সবাজারের পেকুয়ায় কালবৈশাখী ঝড়ের আঘাতে ১৫টি বাড়িঘর লন্ডভন্ড হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ মে) ভোরে উপজেলার উজানটিয়া ও মগনামা শীলখালী ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।  জানা যায়, ঝড়ে উজানটিয়া ইউনিয়নের মালেকপাড়া, ফেরাসিঙ্গা পাড়া, ষাড়ধুনিয়া পাড়া, বাজার পাড়া, শীলখালী, মগনামা ইউনিয়নের কালার পাড়াসহ আরও কয়েকটি এলাকা বিধ্বস্ত হয়ে যায়। তাছাড়া উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নগুলোতেও ছোটবড় বহু ঘর আংশিক ভেঙে গেছে। এ ছাড়া রাজাখালী ও মগনামায় বজ্রপাতে ২ লবণ চাষি নিহত হয়েছেন। উজানটিয়ার বাসিন্দা কক্সবাজার জজ কোর্টের আইনজীবী মীর মোশাররফ হোসেন টিটু বলেন, আমাদের ৮নং ওয়ার্ডের মালেকপাড়ায় কালবৈশাখী ঝড়ে বসতবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে কয়েকটি পরিবার খোলা আকাশের নিচে দিনাতিপাত করছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করছি।  উজানটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জল করিম বলেন, আমার ইউনিয়নে হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে আঘাতে ১০টি বাড়িঘর ভেঙে যায়। যেখানে ৫টি বাড়িঘর সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে যায় বলে তিনি দাবি করেন। এমনকি বেশকিছু দোকান-ঘরও ভেঙে যায়।  শীলখালী ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন জানান, তার ইউনিয়নে ছোটবড় ৩-৪টি ঘর আংশিক ভেঙে গেছে।   মগনামা ইউিপ সদস্যরা বলেন, আমাদের ইউনিয়নেও ৬-৭টি কৃষকের বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এদিকে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু তাহের বলেন, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে শুকানো খাবার বিতরণ করছি। এ ব্যাপারে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, বাতাসের প্রবল ঘূর্ণিপাকের কারণে সব কয়টি ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি বসতবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। আমি সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। তাছাড়াও ইউপি চেয়ারম্যানরা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা দিলে সরকারী অনুদানের ব্যবস্থা করা হবে। এদিকে বজ্রপাতে নিহত দুই লবণ চাষির পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
০২ মে, ২০২৪

কালবৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড শ্রীমঙ্গল
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে শিলাবৃষ্টি ও কালবৈশাখী ঝড়ে কয়েকশতাধিক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া গাছপালা উপড়ে গেছে, বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে। রোববার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে হঠাৎ মৌলভীবাজার জেলা দিয়ে এ ঝড় বয়ে যায়। এতে জেলা সদর, শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জ ও কুলাউড়া উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়ে। সরেজমিনে দেখা গেছে, কালবৈশাখী ঝড়ে অনেকের বসতঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। গাছ-বাঁশ ঘরের ওপরে পড়েছে। বিশেষ করে শ্রীমঙ্গল শহরে শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। সড়কে গাছ পড়ে বন্ধ হয়ে গেছে যান চলাচল। শহরের বিভিন্ন দোকানের চাল উড়ে গেছে। উপড়ে গেছে অসংখ্য বড় বড় গাছ। শ্রীমঙ্গল শহরের বাসিন্দা মামুন আহমদ বলেন, হঠাৎ প্রচণ্ড ঝড় আসে। এতে লন্ডভন্ড হয়ে যায় শ্রীমঙ্গল শহর। প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কয়েকশত গাছ ভেঙে পড়েছে। ঘরবাড়িসহ দোকানের টিন উড়ে গেছে। মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম সদর দপ্তর মো. নজরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, শনিবার রাতের ঝড়ে বড়লেখা উপজেলায় প্রায় ২০টি খুটি ভেঙ্গেছে অথবা পড়ে গেছে। শাহবাজপুর এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। অন্যান্য এলাকায় ক্রমান্বয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে। বিকেলে শ্রীমঙ্গল ও মৌলভীবাজারে প্রবল ঝড়বৃষ্টি হয়েছে। ফলে বর্তমানে এ দুই উপজেলার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে। ঠিকাদারসহ আলোর গেরিলা টিম লাইন পুনঃস্থাপনের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। সবাইকে আরেকটু ধৈর্যের সঙ্গে অপেক্ষা করার জন্য অনুরোধ করছি।
২৮ এপ্রিল, ২০২৪

আকস্মিক ঝড়ে লন্ডভন্ড পটুয়াখালী, নিহত ২
পটুয়াখালীর বাউফলে আকস্মিক ঝড়ে রাতুল নামে এক কিশোর ও সুফিয়া বেগম নামে এক নারী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া দুই জেলে নিখোঁজ ও আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। ঝড়ে কয়েকশ বাড়িঘর ও গাছপালা তছনছ হয়ে গেছে। রোববার (৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টা ৫ মিনিট পর্যন্ত প্রায় ৩৫ মিনিট স্থায়ী হয় এ ঝড়। নিহত রাতুল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের রায় তাঁতের কাঠি গ্রামের জহির সিকদারের ছেলে। আর সুফিয়া বেগম উপজেলার দাশপাড়া ইউনিয়নের চরআলগী গ্রামের মৃত আহম্মেদ প্যাদার স্ত্রী। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকাল ১০টার দিকে অন্ধকার হয়ে যায় পুরো বাউফল। পরে হঠাৎ ঝড়ের সঙ্গে শীলা বৃষ্টি ও বজ্রপাত ‍শুরু হয়। বাউফলের বিভিন্ন এলাকার প্রায় শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত ও কয়েক হাজার গাছ উপড়ে পড়ে। ঝড়ে উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নে ট্রলার ডুবির ঘটনায় ইব্রাহিম ফরাজি এবং ইসমাইল রাঢ়ী নামে দুই জেলে নিখোঁজ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান মো. এনামুল হক আলকাস মোল্লা। এ ছাড়া গোসিংগা গ্রামের আফসেরের গ্রেজ এলাকায় ঘরের ওপর গাছ পড়ে সাবিহা নামে এক নারী ও মেয়ে ইভা ও দুই বছর বয়সী শিশু গুরুতর আহত হয়েছেন। ঝড়ে বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে তার ছিঁড়ে গেছে। এতে বিদ্যুতের সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। শীলা বৃষ্টিতে তরমুজসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বাউফল জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মো. মজিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, ঝড়ে ৩৩ কেবি মেইন লাইনের তার ছিঁড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ২২টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে গেছে। তিনি বলেন, উপজেলার প্রায় সব এলাকাতেই বৈদ্যুতিক তারের ওপর গাছ পড়ে আছে। ঈদের আগে শ্রমিক সংকট থাকায় কাজে কিছুটা বিলম্ব হবে। পৌর শহরে রাতের মধ্যে বিদ্যুৎ দেওয়ার চেষ্টা করছি। তবে পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে কিছুটা সময় লাগতে পারে।  উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সাহা কালবেলাকে বলেন, দুপুর ৩টা পর্যন্ত ১৭ জনকে বাউফল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর আহত দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া এক কিশোরকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। ধারণা করছি, বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বশির গাজী বলেন, ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে কৃষি বিভাগ ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
০৭ এপ্রিল, ২০২৪

১০ মিনিটের ঝড়ে লন্ডভন্ড পিরোজপুর, একজনের মৃত্যু
পিরোজপুরে ১০ মিনিটের কালবৈশাখী ঝড়ে কয়েকশ বাড়িঘর লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। এ সময় রুবি নামে এক গৃহবধূ মারা গেছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন।  রোববার (৭ এপ্রিল) সকাল ৯টা ৪৫মিনিট থেকে ৯টা ৫৫মিনিট পর্যন্ত চলে এ ঝড়। ঝড়ে মারা যাওয়া ওই গৃহবধূ রুবি সদর উপজেলার মরিচাল এলাকার বাসিন্দা। এ সময় তার শিশুসন্তানও গুরুতর আহত হয়।  এদিকে ঝড়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে পুরো জেলার বিদ্যুৎ সংযোগ। গাছপালা ভেঙে পড়ে পিরোজপুরের সঙ্গে বরিশালের সড়কসহ বিভিন্ন এলাকার যোগাযোগও বন্ধ হয়ে গেছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এখন পর্যন্ত রুবি নামের একজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। শতাধিক ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। যাদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের জন্য শুকনো খাবার ও ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি বলেন, মৃতের পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হবে। তবে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পরে জানানো হবে।
০৭ এপ্রিল, ২০২৪

ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড ২৫ গ্রাম
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় ঘূর্ণিঝড়ে ৩টি ইউনিয়নের অন্তত ২৫টি গ্রাম লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। শতাধিক বসতঘর বিধ্বস্ত এবং চলতি ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। বুধবার (২৮ মার্চ) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উপজেলার বুড়াইচ পাচুড়িয়া ও বানা ইউনিয়নে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ঘরবাড়ি ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াও অসংখ্য গাছপালা ভেঙে এবং উপড়ে পড়েছে। অনেক জায়গায় সড়কের উপরে গাছ পড়ে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে অন্ধকার হয়ে যায় দুটি ইউনিয়নের গোটা কয়েকটি গ্রাম। গ্রামপুলিশ বেলায়েত হোসেন (৫৬) কালবেলাকে বলেন, বানা ইউনিয়নের দীঘল বানা, পণ্ডিত বানা, রুদ্র বানা, শিরগ্রাম, গড়ানিয়া, টাবনী, টোনাপাড়া, আউশের হাট, কঠুরাকান্দি, মাজপাড়া, আড়পাড়া। বুড়াইচ ইউনিয়নের পাকুড়ে, শিয়ালদি চরপাড়া, জয়দেবপুর, বড়গা, বিলপুটিয়া পানিগাতিসহ অন্তত ১৭টি গ্রামে ভয়াবহ ঝড় আঘাত হানে। সব থেকে বেশি ক্ষতি হয় বুড়াইচ ইউনিয়নের পাকুড়িয়াতে। ঝড়ে কাঁচা-আধাপাকা ঘরবাড়ি, গাছপালা, পেঁয়াজ, রসুন, ধনিয়া, ধান, গমসহ কৃষি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুতের তার ছিড়ে গ্রামগুলোতে বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়াও পাচুড়িয়া ইউনিয়নের যুগিবরাট, ভাটপাড়া, চাদড়া, পাচুড়িয়া, দেউলি, চরনারানদিয়া, ধুলজুড়ি, চরভাটপাড়াসহ ৮টি গ্রামে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ব্যাপারে পাচুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান কালবেলাকে বলেন, আমি এ মুহূর্তে ঢাকায় আছি। তবে শুনেছি আমার পাচুড়িয়া ইউনিয়ন ও পার্শ্ববর্তী বানা ইউনিয়নে ঝড়ে ৯টি গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। খোঁজখবর নিয়ে পরবর্তীতে বিস্তারিত তথ্য জানাব। আলফাডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদুল হাসান জাহিদ বলেন, বুধবার রাত একটার দিকে ঘূর্ণিঝড়ে দুই ইউনিয়নের অন্তত ২৫টি গ্রামের প্রায় শতাধিক কাঁচা-আধাপাকা বাড়িঘর ও কয়েকশ গাছপালা উপড়ে যায়। বিস্তীর্ণ জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। অনেকেই ঘরবাড়ি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে কাজ শুরু করা হয়েছে। পল্লী বিদ্যুত সমিতির আলফাডাঙ্গা সাব জোনাল অফিসের এ জি এম ফাহিম হাসান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের ফলে সেখানে কয়েকটি গ্রামে বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে, কয়েকটি খুঁটি ভেঙে পড়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করতে কাজ চলছে। ফরিদপুর জেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, এই ঝড়ে সাড়ে ৯ হেক্টর জমির পেঁয়াজ, সাড়ে তিন হেক্টর জমির সবজি, দুই হেক্টর জমির ধনিয়া, এক হেক্টর জমির ভুট্টা, পাঁচ হেক্টর জমির গম ও তিন হেক্টর জমির মসুর পুরোপুরি নষ্ট হয়েছে। এ ছাড়া ওই এলাকায় আর মাত্র ৭ থেকে ১০ দিন পর পেঁয়াজ উত্তোলন শুরু হতো। কিন্তু বৃষ্টির কারণে অপরিপক্ব পেঁয়াজ তুলে ফেলতে হচ্ছে। এসব পেঁয়াজ সংরক্ষণে অসুবিধা হবে। আলফাডাঙ্গা ইউএনও সারমীন ইয়াছমিন কালবেলাকে বলেন, উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করতে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও ক্ষতিগ্রস্তদের সর্বাত্মক সাহায্য সহযোগিতা করার আশ্বাস পেয়েছি। ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. কামরুল আহসান তালুকদার কালবেলাকে বলেন, স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরাসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করতে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সর্বাত্মক সাহায্য সহযোগিতা করা হবে।
২৮ মার্চ, ২০২৪

মিগজাউমের প্রভাবে লন্ডভন্ড ভারতের উপকূল, মৃত্যু ৮
ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের ভয়াবহ তাণ্ডবে ভারতের তামিলনাড়ুর চেন্নাইসহ দেশটির উপকূলীয় বেশকিছু জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে টানা দুদিন ধরে রেকর্ড বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ডুবে গেছে অনেক এলাকা। এই ঝড়ের কবলে পড়ে এখন পর্যন্ত চেন্নাইয়ে ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এতে আহত হয়েছেন অনেকে। এ ছাড়া অন্ধ্রপ্রদেশে গতকাল তিন ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালায় মিগজাউম। তবে ক্ষয়ক্ষতি তামিলনাড়ুতেই বেশি হয়েছে। খবর এনডিটিভির। ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট মিগজাউম সোমবার দুপুরে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। এর প্রভাবে তামিলনাড়ুর বিভিন্ন এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পুরো চেন্নাই শহর জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বৈদ্যুতিক খুঁটি এবং গাছপালা ভেঙে পড়ে। চেন্নাই বিমানবন্দরের রানওয়ে প্লাবিত হয়। জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বন্ধ রাখা হয় বিমানবন্দর। পরিস্থিতির বিবেচনায় তামিলনাড়ু সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করতে পরামর্শ দেওয়া হয়। পাশাপাশি আজ বুধবার পর্যন্ত দূরপাল্লার ট্রেনসহ রাজ্যের শতাধিক ট্রেনের শিডিউল বাতিল করা হয়। এ ছাড়া জলাবদ্ধতার কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয় ১৪টি সাবওয়ে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চেন্নাইয়ে আটজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পরে গতকাল মঙ্গলবার অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোর এবং মছলিপত্তনমের মধ্য দিয়ে স্থলভাগে আছড়ে পড়ে মিগজাউম। আছড়ে পড়ার সময় তার গতি ছিল ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়টি দক্ষিণবঙ্গের অন্তত ১১ জেলায় তাণ্ডব চালায়। এর আগে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় ৫ হাজার আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপন করে কর্তৃপক্ষ। সেখানে সরিয়ে নেওয়া হয় বহু মানুষকে।
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৩

মিগজাউমের প্রভাবে লন্ডভন্ড ভারতের উপকূল, মৃত্যু ৮
ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের ভয়াবহ তাণ্ডব দেখছে ভারত। তামিলনাড়ুর চেন্নাইসহ দেশটির উপকূলীয় বেশকিছু জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে টানা দুদিন ধরে রেকর্ড বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ডুবে গেছে অনেক এলাকা।   এই ঝড়ের কবলে পড়ে এখন পর্যন্ত চেন্নাইতে ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এতে আহত হয়েছেন অনেকে। ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট মিগজাউম সোমবার দুপুরে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। আগামী কয়েক ঘণ্টা ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।    এরই মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বৈদ্যুতিক খুঁটি এবং গাছপালা ভেঙে পড়েছে। প্লাবিত চেন্নাই বিমানবন্দরের রানওয়েও। জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বন্ধ রাখা হয়েছে বিমানবন্দর।   সেখানকার স্থনীয় আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মঙ্গলবার অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোর এবং মছলিপত্তনমের মাঝখান দিয়ে স্থলভাগে আছড়ে পড়বে মিগজাউম। তখন তার গতি থাকতে পারে ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার। ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ থাকতে পারে ১১০ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়টি দক্ষিণবঙ্গের অন্তত ১১ জেলায় তাণ্ডব চালাতে পারে বলেও শঙ্কা করা হচ্ছে।   চেন্নাই শহর এবং এর আশপাশের জেলাগুলোতে রাতভর ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় ৫ হাজার আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপন করেছে কর্তৃপক্ষ। সেখানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বহু মানুষকে। অনেকে ঝুঁকি নিয়েই অবস্থান করছেন বাড়িতে।   পরিস্থিতির বিবেচনায় তামিলনাড়ু সরকার সোমবার পুদুচেরি, কারাইকাল এবং ইয়ানাম অঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করেছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দূরপাল্লার ট্রেনসহ রাজ্যের শতাধিক ট্রেনের শিডিউল বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া জলাবদ্ধতার কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ১৪টি সাবওয়ে।   এদিকে আবহাওয়া গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়  ‘মিগজাউমে’ বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানার কোনো সম্ভাবনা নাই। তবে এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ৫ থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে ওপরে বৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।    ঘূর্ণিঝড়  ‘মিগজাউম’ এর প্রভাবে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের জেলাগুলোর ওপরে। বিশেষ করে রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা বিভাগে উত্তরের জেলাগুলো, চট্টগ্রাম বিভাগের উত্তরের জেলাগুলোর ওপরে।    দেশের মধ্যাঞ্চলের জেলাগুলোর ওপরে ৭৫ থেকে ১২৫ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর ওপরে ৫০ থেকে ১০০ মিলিমিটার ও রংপুর, ময়মনিসংহ, ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর ওপরে ২৫ থেকে ৫০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।  
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৩

ঘূর্ণিঝড় হামুনে লন্ডভন্ড কক্সবাজার
ঘূর্ণিঝড় হামুনের তাণ্ডবে পুরো কক্সবাজার লন্ডভন্ড হয়ে পড়েছে। বাতাসের তীব্রতায় কক্সবাজার পৌরসভাসহ উপকূলীয় উপজেলা মহেশখালী, কুতুবদিয়া, উখিয়া, চকরিয়া, পেকুয়া এবং টেকনাফসহ ৭১টি ইউনিয়নে বিধ্বস্ত ও আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ৩৭ হাজার ৮৫৪টি বসতবাড়ি। যেখানে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৫৪৯ বাসিন্দা। দেয়ালচাপায় নিহত হয়েছেন তিনজন। এখনো বিচ্ছিন্ন রয়েছে ইন্টারনেট ও বিদ্যুৎ সংযোগ। বলতে গেলে এক প্রকার অচল হয়ে পড়েছে প্রশাসনিকসহ সব কার্যক্রম।  বুধবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্য মতে, ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে জেলার ৭১টি ইউনিয়ন ও কক্সবাজার এবং মহেশখালীসহ ২টি পৌরসভাসহ সব ইউনিয়নে ৩৭ হাজার ৮৫৪ পরিবারের ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৫৪৯ জন বাসিন্দা ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়েছেন। ভেঙে পড়েছে পল্লীবিদ্যুতের ৩৫৪টি বৈদ্যুতিক খুঁটি। বিকল হয়েছে ২৩টি ট্রান্সফরমার। ৪৯৬ স্থানে বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে গেছে। ৮০০ স্থানে গাছ পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সন্ধ্যায় পৌরসভার দেড়শ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারে ১ বান ঢেউটিন ও নগদ ১ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে নিহতরা হলেন, কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলী এলাকার আবদুল খালেক (৪২), মহেশখালীর উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নের গোরস্তানপাড়ার হারাধন দে (৪৫) ও চকরিয়া উপজেলার বদরখালী গ্রামের আশকার আলী (৪৫)।  সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে আজ বুধবার রাত ৮টা পর্যন্ত শহরের বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ আছে। বিদ্যুৎ না থাকায় শহর থেকে প্রকাশিত ২০টি দৈনিক পত্রিকার কোনোটিই প্রকাশিত হয়নি। আদালতের বিচারিক কার্যক্রমেও পড়েছে প্রভাব। বিদ্যুৎ না থাকায় পানি সংকট দেখা দিয়েছে শহরজুড়ে। তবে সকাল থেকে উপড়ে পড়া গাছ কেটে শহরের প্রধান সড়ক, সৈকত সড়ক ও কলাতলী সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, এবারে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসন উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষের মাঝে নিরাপদে সরে আসার আগ্রহ দেখা যায়নি। ফলে ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়েছে।  জেলা প্রশাসন কার্যালয় এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী রানা বলেন, শতবর্ষী বট গাছ পড়ে আমার কম্পিউটার, ফটোস্ট্যাট মেশিনসহ ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সতর্কতা সংকেত জানলে এ ক্ষতি থেকে কিছুটা রক্ষা পাওয়া যেত।  কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে কক্সবাজার শহর লন্ডভন্ড হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় দুপুর পর্যন্ত মুঠোফোন নেটওয়ার্ক সমস্যা ছিল। এখনো ইন্টারনেট সেবা বন্ধ আছে। এ কারণে জেলা কার্যালয় থেকে মহেশখালী ও কুতুবদিয়া উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড় হামুন গতকাল মধ্যরাতের দিকে আঘাত হানবে বলে বলা হয়েছিল। কিন্তু রাত সাড়ে ৭টার দিকে প্রবল গতিবেগে ঘূর্ণিঝড়টি শহরে আঘাত হানতে শুরু করে। মাত্র দুই ঘণ্টার তাণ্ডবে পুরো শহর লন্ডভন্ড হয়ে যায়। ঘূর্ণিঝড়ে এ পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।  কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, কয়েক ঘণ্টার তাণ্ডবে পৌরশহরে কয়েক শতাধিক ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আংশিক ক্ষতি হয়েছে আরও সহস্রাধিক ঘর। আমরা উপড়ে পড়া গাছ কাটার নির্দেশ দিয়েছি। ক্ষতিগ্রস্তদের ঢেউটিন এবং ত্রিপল দিয়ে সহযোগিতা করছি। পৌরসভার নারী কাউন্সিলর শাহেনা আকতার পাখি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে তার তিনটি ওয়ার্ডে অন্তত দেড় হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে বিলীন হয়েছে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের শুঁটকি উৎপাদনের প্রায় ৭০০ মহাল। এদিকে জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে বলা হয়, রাতে রাতেই ৯৭টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৪০ হাজারের অধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। মানবিক সহায়তা হিসেবে কক্সবাজার সদর, রামু, ঈদগাঁও, চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া ও মহেশখালীতে ৫০ হাজার টাকা করে সর্বমোট সাড়ে ৪ লাখ টাকা ও ১৪ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও পাঁচ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ করা হবে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল গণি বলেন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অভ্যন্তরে বেশকিছু গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে। শহরের বিভিন্ন সড়কে বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব সংস্কার ও ঠিক করতে দু-তিন দিন সময় লেগে যেতে পারে। তিনি বলেন, রাত থেকে বিদ্যুৎ বোর্ডের লোকজন মাঠে নেমেছে। যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যুতের লাইন ঠিক করার চেষ্টা চলছে। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। মানবিক সহায়তা হিসেবে কক্সবাজার সদর, রামু, ঈদগাঁও, চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া ও মহেশখালীতে সাড়ে ৪ লাখ টাকা ও ১৪ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পাঁচ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ করা হবে।
২৫ অক্টোবর, ২০২৩
X