সরকারি স্কুলের বেঞ্চ চুরি, জানেন না শিক্ষা কর্মকর্তা
রংপুরের পীরগাছার দুধিয়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৯ জোড়া বেঞ্চ গত মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) রাতে চুরি হয়। কিন্তু এ ঘটনার ৪ দিন অতিবাহিত হলেও থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ বা মামলা করা হয়নি। এমনকি চুরির এই ঘটনাটি খোদ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাও জানেন না। জানা যায়, বুধবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে ওই বিদ্যালয়ের আয়া ও প্রহরী স্টোররুমের দরজার কব্জা কাটা এবং এক স্থানে বেঞ্চের চারটি তক্তা (কাঠ) দেখতে পান। পরে ভেতরে গিয়ে দেখেন স্টোরে রক্ষিত তৃতীয় শ্রেণির কক্ষের ৯ জোড়া বেঞ্চ নাই। এরপর বিষয়টি জানাজানি হলে খোঁজাখুুঁজির একপর্যায়ে ওই স্কুলের শিক্ষার্থীরা পার্শ্ববর্তী দুদু মিয়া নামের এক ব্যক্তির বাসার সামনে একটি ভ্যানে স্কুল বেঞ্চের লোহার কাঠামো লোড করতে দেখে শিক্ষকদের এসে বলেন। পরে শিক্ষকরা সেখানে গিয়ে থানা পুলিশের উপস্থিতিতে বেঞ্চের লোহার কাঠামোগুলো উদ্ধার করেন। তবে এই ঘটনার ৪ দিন অতিবাহিত হলেও এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ বা মামলা করা হয়নি। এ বিষয়ে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মনোয়ারা বেগম কালবেলাকে বলেন, চুরি যাওয়া বেঞ্চের লোহার কাঠামোগুলো থানা পুলিশের উপস্থিতিতে উদ্ধার করা হয়েছে। যে বাসার সামনে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে সে বাসার মালিক বাসায় থাকেন না। বাসাটি তালাবদ্ধ থাকে। ভ্রাম্যমাণ ভাঙারি মালামাল ক্রেতা ওই ভ্যানওয়ালাকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। ওই ভ্যানওয়ালা কিছুটা অস্বাভাবিক হওয়ায় স্থানীয়দের সুপারিশের ভিত্তিতে তার কাছে লিখিত বিবৃতি নিয়ে ভাঙারি মালামাল ব্যবসায়ী চন্ডিপুর এলাকার মিলন মিয়ার জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। চুরির বিষয়টি এই ক্লাস্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষা অফিসারকে জানানো হয়েছে।  চুরির ঘটনায় কোনো মামলা করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই বাড়িতে অনন্তরাম কসাইটারী গ্রামের মৃত মোক্তার আলীর ছেলে নুরুজ্জামান ও রফিকুল ইসলামের ছেলে শামীমকে নাকি শিক্ষার্থীরা দেখেছেন। যা তারা পুলিশকে জানিয়েছেন। আমি এসআই শাহনেওয়াজকে বলেছিলাম এ বিষয়ে আমাদের পরবর্তী করণীয় কী? উনি বলেছিলেন ভ্যানওয়ালার বিবৃতির কপিটি আমার হোয়াটসএ্যাপে পাঠিয়ে দিয়েন, পরে বিষয়টি আমরা দেখব। ওই স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আতিকুর রহমান অলিপ কালবেলাকে বলেন, চুরির ঘটনাটি আমরা থানা পুলিশকে জানিয়েছি। পুলিশের উপস্থিতিতে মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। পরে পুলিশের তরফে যা যা করণীয় আমরা তাদের করতে বলেছি। পীরগাছা থানার সাব-ইন্সপেক্টর শাহনেওয়াজ কালবেলাকে বলেন, খবর পেয়ে আমি সঙ্গীয় কয়েকজনসহ সেখানে গিয়েছিলাম। আমাদের উপস্থিতিতে শিক্ষকরা ওই মালামাল উদ্ধার করে। তবে এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ বা মামলা হয়নি। উপজেলা শিক্ষা অফিসার আতিকুর রহমান কালবেলাকে বলেন, বিষয়টি আমি জানি না। খোঁজ নিচ্ছি। পীরগাছা থানার ওসি সুশান্ত কুমার সরকার কালবেলাকে বলেন, আমি ওই সময় ছুটিতে ছিলাম। খোঁজ নিচ্ছি। অভিযোগ পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।  
২৭ জানুয়ারি, ২০২৪

৭ মাস ‘অনুপস্থিত’ মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা
ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার নাজমিন সুলতানা গত সাত মাস কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। কর্মকর্তা-কর্মচারী হাজিরা খাতার হিসাব অনুযায়ী, সর্বশেষ গত জুন মাসের ৬ তারিখে তিনি অফিস করেছিলেন। এরপর আর অফিসে আসেননি।  একাডেমিক সুপারভাইজারের দীর্ঘদিন অনুপস্থিতির কারণে মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শনসহ শিক্ষার মান উন্নয়নে বিভিন্ন কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আলোচনা হলে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে একাডেমিক সুপারভাইজারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান। বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) সকালে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে গেলে একাডেমিক সুপারভাইজার নাজমিন সুলতানার দেখা মেলেনি। অফিসে কর্মরত অফিস সহায়ক আবুল বশর জানান, নাজমিন সুলতানা অসুস্থ থাকায় দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।  নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা অফিসের এক কর্মচারী জানান, নাজমিন সুলতানা ৬-৭ মাস ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। এর আগেও মাসে এক-দুই দিন অথবা দুই মাসে একবার ঢাকা থেকে সোনাগাজীতে আসতেন। শিক্ষা অফিসে এসেই উপস্থিতির হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত দিনগুলোতে স্বাক্ষর করেন। এমনভাবে স্বাক্ষর করেন যেন তিনি মাসে একদিনও অনুপস্থিত থাকেন না। হাজিরা খাতা দেখলে মনে হবে তিনি প্রতিদিন উপস্থিত থাকেন। এটা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারও জানেন। শিক্ষা অফিসার সব জেনেও না জানার ভান করে থাকেন। এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে একাডেমিক সুপারভাইজার নাজমিন সুলতানার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।  উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. নুরুল আমিন বলেন, একাডেমিক সুপারভাইজার নাজমিন সুলতানা অসুস্থ থাকায় দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। আমাকে মৌখিকভাবে শারীরিক অসুস্থতার কথা জানিয়েছেন। লিখিতভাবে কোনো ছুটি নেননি। গত ডিসেম্বর মাসে একদিন সোনাগাজী এসেছিলেন। আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টা জানিয়েছি। জেলা শিক্ষা অফিসার বিষয়টা সম্পর্কে জানেন। জেলা শিক্ষা অফিসার শফি উল্লাহ জানান, একাডেমিক সুপারভাইজার নাজমিন সুলতানা ছুটি না নিয়ে দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিছুদিন আগে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ছুটির আবেদন করেছে। ছুটি মঞ্জুর হয়েছে কিনা জানি না। একাডেমিক সুপারভাইজার না থাকায় সোনাগাজী মাধ্যমিক শিক্ষার কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে।  উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান বলেন, আমি সোনাগাজীতে এক বছরের বেশি সময় ধরে আছি। কিন্তু একাডেমিক সুপারভাইজার নাজমিন সুলতানাকে কখনো দেখিনি। একাডেমিক  সুপারভাইজারের অনুপস্থিতির কারণে এ উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে বলেছি একাডেমিক সুপারভাইজারের অনুপস্থিতির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবগত করার জন্য। প্রয়োজনে আমিও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানাব।
২৬ জানুয়ারি, ২০২৪

নৌকার পক্ষে ভোট চাওয়া সেই শিক্ষা কর্মকর্তা বদলি
সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আব্দুল মমিন মণ্ডলের পক্ষে নৌকা প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করা চৌহালী উপজেলার সেই মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আরিফ সরকারকে বদলি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিরাজগঞ্জ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্বে) মো. আফছার আলী। তিনি বলেন, চৌহালী উপজেলা শিক্ষা অফিসারের বদলির বিষয়ে অধিদপ্তর থেকে পাঠানো পত্রের অনুলিপি পেয়েছি। আরিফ সরকারের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ ছিল বলেও জানান তিনি। সোমবার (২২ জানুয়ারি) মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) রুপক রায় স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাকে নওগাঁ জেলার পোরশা উপজেলায় বদলির আদেশ দেওয়া হয়। এর আগে গত ২২ ডিসেম্বর আরিফ সরকারের বিরুদ্ধে নৌকা প্রতীকের পক্ষে ভোট প্রার্থনা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের নৌকার প্রচার চালাতে চাপ সৃষ্টির অভিযোগ ওঠে। ওই অভিযোগে তাকে তলব করেন সিরাজগঞ্জ-৫ আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী জজ মো. সোহেল রানা।
২৪ জানুয়ারি, ২০২৪

অনুম‌তি ছাড়াই বিদেশ গেলেন ৪ শিক্ষক, জানেন না শিক্ষা কর্মকর্তা
কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ জন সহকারী শিক্ষক বিদেশ চলে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ফলে শিক্ষকের অভাবে পাঠদান বন্ধ হওয়ার উপক্রম। বিদেশ যাওয়া ৪ শিক্ষক হলেন, উপজেলার পতনঊষা ইউনিয়নের মাইজগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইসরাত জাহান, মির্জাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাবিবুর রহমান, বৃন্দাবনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মোরশেদুল ইসলাম ও সদর ইউনিয়নের চৈতন্যগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মুর্শেদা খাতুন।  বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগণ। তাদের মধ্যে মুর্শেদা খাতুন কোথায় গেছেন জানা যায়নি। বাকি ৩ জন যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, মাইজগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইসরাত জাহান চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে চিকিৎসাজনিত ছুটি কাটিয়ে ৩ অক্টোবর থেকে আর স্কুলে আসেননি। পরে জানা যায় তিনি যুক্তরাজ্য চলে গেছেন। মির্জাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাবিবুর রহমান গত ২২ জানুয়ারি স্কুলে যোগাদান করে মাত্র ১ দিন ক্লাস করান। এরপর ২৩ জানুয়ারি থেকে আর স্কুলে আসেননি। বৃন্দাবনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মোরশেদুল ইসলাম সেপ্টেম্বরের ১০ তারিখ থেকে বিদ্যালয়ে আর উপস্থিত হননি। পরে জানা যায় এই তিনজন যুক্তরাজ্যে চলে গেছেন। চৈতন্যগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মুর্শেদা খাতুন ১২ অক্টোবরের ৫ দিন আগে তিনি চিকিৎসাজনিত ছুটি কাটিয়েছেন ২ মাস। এরপর আর বিদ্যালয়ে যোগদান করেননি। তিনি কোথায় গেছেন জানা যায়নি। মাইজগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস খান, মির্জাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুন মিয়া, বৃন্দাবনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজিয়া বেগম ও চৈতন্যগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরেন্দ্র কুমার সিংহ বলেন, তারা কেউ আমাদেরকে কিছু বলেননি। কেউ ছুটি কাটিয়ে আর আসেননি আবার কেউ কিছু না বলেই বিদ্যালয় থেকে চলে গেছেন। পরবর্তীতে লোকমুখে শুনেছি তারা বিদেশে চলে গেছেন। বিষয়টি অবগত হওয়ার পর আমরা সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে চিঠি দিয়েছি। তাদের পরিবর্তে নতুন করে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। শিক্ষক সংকট থাকায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান তারা। অভিযুক্ত শিক্ষকদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাবিবুর রহমান, ইসরাত জাহান, মোরশেদুল ইসলাম স্টুডেন্ট ভিসায় যুক্তরাজ্যে গিয়েছেন। আর মুর্শেদা খাতুন কোথায় গেছেন জানা যানি। আবার দেশে এসে শিক্ষকতায় যোগদান করবেন কিনা পরিবারের সদস্যরা জানেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার কয়েকজন সহকারী শিক্ষক জানান, চিকিৎসার কথা বলে অনেকেই ২ মাস ছুটি কাটান। আসলে এই দুইমাস তারা বিভিন্নভাবে দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য প্রসেসিং করেন। হঠাৎ এভাবে যাওয়াটা মোটেও ঠিক হয়নি তাদের। বাচ্চাদের কথা ও দেশের কথা চিন্তা না করে এভাবে নিজের স্বার্থের জন্য চলে গেলেন তিনি। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, যারা ছুটি কাটিয়ে স্কুলে আসেননি বা না জানিয়ে কোথাও চলে গেছেন তাদেরকে আমরা নোটিশ পাঠিয়েছি। বিদেশে যাওয়ার কোনো অনুমতি নেই। তিনি আরও বলেন, যারা বিদেশ গিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা অলরেডি হয়ে গেছে। আমরা কাউকে এসব বিষয়ে ছাড় দিই না। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খোরশেদ আলম বলেন, এ রকম ঘটনা শুধু এই অঞ্চলে হচ্ছে, যা কখনও মানা যায় না। আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। যারা এভাবে না বলে চলে গেছে তারা এই কাজটি ঠিক করেনি। চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিয়ে চলে যেতে পারত। যারা দুই মাসের অধিক ছুটি কাটিয়ে বিদ্যালয়ে আসেনি আমরা তাদের বিরুদ্ধে মামলা করব।
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৩

ঘুষকে সম্মানী বলা সেই শিক্ষা কর্মকর্তা বদলি
‘ঘুষের টাকাকে সম্মানী ও পারিশ্রমিক’ দাবি করা জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার সেই মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বদলি হয়েছেন। তাকে নওগাঁর রানীনগর উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা পদে বদলি করা হয়। গত রোববার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপুল চন্দ্র বিশ্বাসের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ওই প্রজ্ঞাপনে সারা দেশের ১৮ জনকে বদলি করা হয়েছে। তালিকার সাত নম্বরে শফিকুল ইসলামের নাম রয়েছে। আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করতে হবে। অন্যথায় একই তারিখে অপরাহ্নে তাৎক্ষণিকভাবে অবমুক্ত হবেন বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ রয়েছে। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে স্কুল-মাদ্রাসায় কর্মচারী নিয়োগ ও এনটিআরসি শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির ফাইল অনলাইনে পাঠাতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ তুলেন শিক্ষকরা। স্কুল-মাদ্রাসায় কর্মচারী নিয়োগ বোর্ডের সদস্য হিসেবে তাকে সরাসরি ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা দিতে হয়। এ টাকা কম হলে তিনি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্টদের কটু কথা বলেন। এ ছাড়া শিক্ষক-কর্মচারীদের অনলাইনে এমপিওভুক্তির ফাইল পাঠাতে তিনি তার বিকাশে ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা চেয়ে নেন। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম টাকা নেওয়ার কথা অকপটে স্বীকার করে বলেন, এই টাকা ঘুষ নয়, সম্মানী ও পারিশ্রমিক। কর্মচারী নিয়োগে সম্মানী ও অনলাইনে এমপিওভুক্তির ফাইল পাঠাতে পারিশ্রমিক নিই। পাঁচ থেকে ছয়টি স্কুল-মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক ও সুপারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শফিকুল ইসলাম গত ৫ মে আক্কেলপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। এ পর্যন্ত স্কুল-মাদ্রাসা মিলে ৮ থেকে ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অফিস সহকারী, অফিস সহায়ক, নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া নিয়োগ হয়েছে। এসব নিয়োগে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন তিনি। এই টাকা কেউ বিকাশে, কেউবা প্রতিষ্ঠান প্রধানের মাধ্যমে তাকে দিয়েছেন। তিনি নিয়োগ ও এমপিও ফাইল অগ্রগ্রামীর টাকার রসিদও দেওয়ার কথা বলেছেন। তবে তিনি কাউকে এ টাকার রসিদ দেননি। উল্লেখ্য, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেছিলেন, আমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে উপজেলার স্কুল-মাদ্রাসায় কর্মচারী নিয়োগ বোর্ডের সদস্য। এখানে ডিজির প্রতিনিধিও থাকেন। পরীক্ষা শেষে প্রতিষ্ঠান প্রধান একটি খাম ধরিয়ে দেন। খাম খুলে দেখা যায়, ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা রয়েছে। এটা ঘুষ নয়, সম্মানী। আমাকে যে টাকা দেওয়া হয় এটা সম্মানজনক নয়। ডিজির প্রতিনিধিকে আমার চেয়ে আরও বেশি টাকা সম্মানী দেওয়া হয়।
৩১ অক্টোবর, ২০২৩

সপ্তাহে দু’একদিন অফিস করেন প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, আসেন রিজার্ভ সিএনজিতে!
জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফেরদৌসের বিরুদ্ধে সপ্তাহে এক দিন অথবা দুদিন ইচ্ছামতো অফিস করার অভিযোগ উঠেছে। তিনি সপ্তাহে এক দিন বা দুদিন সিএনজি রিজার্ভ নিয়ে এসে কিছুক্ষণ অফিস করে চলে যান টাঙ্গাইলের গোপালপুরে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদ ফেরদৌস এর আগে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে বদলি হয়ে জামালপুরের ইসলামপুরে আসেন। ইসলামপুরে আসার ৬ মাস পার হতেই তাকে পুনরায় বদলির আদেশ দেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। বদলির আদেশে সংক্ষুব্ধ হয়ে আদেশের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি। এরপর থেকেই ইচ্ছামতো অফিস করতে থাকেন মোহাম্মদ ফেরদৌস। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে আরও জানা গেছে, তিনি অনেক সিনিয়র হওয়া সত্ত্বেও প্রমোশন পাননি। তার কর্মকাণ্ড প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তার ওপর সন্তুষ্ট নয়। সরেজমিনে দেখা গেছে, আগস্টের শেষ সপ্তাহে তিনি এক দিন অফিস করেছেন। যদিও তার অফিস কক্ষ নিয়মিত যথাসময়ে খোলা হয় এবং বন্ধ করা হয়। আগস্টের শেষ সপ্তাহের বুধবার এক দিন ট্রেনিং ছিল বলে জানিয়েছেন সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল গফুর। শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফেরদৌস নিয়মিত অফিস না করে সপ্তাহে এক দিন অথবা দুদিন অফিস করার বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল গফুর মোবাইলে সব বলা যাবে না বলে অফিসে সরাসরি যোগাযোগ করতে বলেন। তিনি বলেন, তিনি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, তিনি কখন কোথায় থাকেন সব জানি না। এ বিষয়ে জানতে চেয়ে ফোন করলে গত বৃহস্পতিবার জামালপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান কালবেলাকে জানান, মোহাম্মদ ফেরদৌসের ছুটির বিষয়ে কোনো তথ্য আমার কাছে নেই।  বদলির আদেশের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি জামালপুরে যোগদানের পূর্বেই সেই মামলা হয়েছে। সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) মোহাম্মদ ফেরদৌসকে অফিসে না পেয়ে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, জেলা অফিসে আছেন তিনি। জামালপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অফিসে গিয়ে তাকে ফোন করা হলে তিনি তখনো জেলা অফিসে আছেন বলে জানান।  জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা)  হারুন অর রশীদের সামনে তাকে ফোন করা হয়। যখন বলা হয়, আপনি জেলা অফিসে আসেননি, তখন অন্য কাজে ব্যস্ত আছেন এবং আগামীকাল অফিসে আসেন বলে ফোন কেটে দেন। এ সময় সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ ইসলামপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফেরদৌসের মিথ্যা কথা বলার ঘটনায় বিব্রত হয়ে বলেন, তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।  
০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
X