রংপুরের পীরগাছার দুধিয়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৯ জোড়া বেঞ্চ গত মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) রাতে চুরি হয়। কিন্তু এ ঘটনার ৪ দিন অতিবাহিত হলেও থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ বা মামলা করা হয়নি। এমনকি চুরির এই ঘটনাটি খোদ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাও জানেন না।
জানা যায়, বুধবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে ওই বিদ্যালয়ের আয়া ও প্রহরী স্টোররুমের দরজার কব্জা কাটা এবং এক স্থানে বেঞ্চের চারটি তক্তা (কাঠ) দেখতে পান। পরে ভেতরে গিয়ে দেখেন স্টোরে রক্ষিত তৃতীয় শ্রেণির কক্ষের ৯ জোড়া বেঞ্চ নাই। এরপর বিষয়টি জানাজানি হলে খোঁজাখুুঁজির একপর্যায়ে ওই স্কুলের শিক্ষার্থীরা পার্শ্ববর্তী দুদু মিয়া নামের এক ব্যক্তির বাসার সামনে একটি ভ্যানে স্কুল বেঞ্চের লোহার কাঠামো লোড করতে দেখে শিক্ষকদের এসে বলেন। পরে শিক্ষকরা সেখানে গিয়ে থানা পুলিশের উপস্থিতিতে বেঞ্চের লোহার কাঠামোগুলো উদ্ধার করেন। তবে এই ঘটনার ৪ দিন অতিবাহিত হলেও এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ বা মামলা করা হয়নি।
এ বিষয়ে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মনোয়ারা বেগম কালবেলাকে বলেন, চুরি যাওয়া বেঞ্চের লোহার কাঠামোগুলো থানা পুলিশের উপস্থিতিতে উদ্ধার করা হয়েছে। যে বাসার সামনে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে সে বাসার মালিক বাসায় থাকেন না। বাসাটি তালাবদ্ধ থাকে। ভ্রাম্যমাণ ভাঙারি মালামাল ক্রেতা ওই ভ্যানওয়ালাকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। ওই ভ্যানওয়ালা কিছুটা অস্বাভাবিক হওয়ায় স্থানীয়দের সুপারিশের ভিত্তিতে তার কাছে লিখিত বিবৃতি নিয়ে ভাঙারি মালামাল ব্যবসায়ী চন্ডিপুর এলাকার মিলন মিয়ার জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। চুরির বিষয়টি এই ক্লাস্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষা অফিসারকে জানানো হয়েছে।
চুরির ঘটনায় কোনো মামলা করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই বাড়িতে অনন্তরাম কসাইটারী গ্রামের মৃত মোক্তার আলীর ছেলে নুরুজ্জামান ও রফিকুল ইসলামের ছেলে শামীমকে নাকি শিক্ষার্থীরা দেখেছেন। যা তারা পুলিশকে জানিয়েছেন। আমি এসআই শাহনেওয়াজকে বলেছিলাম এ বিষয়ে আমাদের পরবর্তী করণীয় কী? উনি বলেছিলেন ভ্যানওয়ালার বিবৃতির কপিটি আমার হোয়াটসএ্যাপে পাঠিয়ে দিয়েন, পরে বিষয়টি আমরা দেখব।
ওই স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আতিকুর রহমান অলিপ কালবেলাকে বলেন, চুরির ঘটনাটি আমরা থানা পুলিশকে জানিয়েছি। পুলিশের উপস্থিতিতে মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। পরে পুলিশের তরফে যা যা করণীয় আমরা তাদের করতে বলেছি।
পীরগাছা থানার সাব-ইন্সপেক্টর শাহনেওয়াজ কালবেলাকে বলেন, খবর পেয়ে আমি সঙ্গীয় কয়েকজনসহ সেখানে গিয়েছিলাম। আমাদের উপস্থিতিতে শিক্ষকরা ওই মালামাল উদ্ধার করে। তবে এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ বা মামলা হয়নি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আতিকুর রহমান কালবেলাকে বলেন, বিষয়টি আমি জানি না। খোঁজ নিচ্ছি।
পীরগাছা থানার ওসি সুশান্ত কুমার সরকার কালবেলাকে বলেন, আমি ওই সময় ছুটিতে ছিলাম। খোঁজ নিচ্ছি। অভিযোগ পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন