খুলনায় শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় উঠছে একনেকে
অবশেষে অনুমোদন পেতে যাচ্ছে খুলনা শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প। ইতোমধ্যে প্রকল্পটি যাচাই-বাছাই করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপনের জন্য চূড়ান্ত করেছে পরিকল্পনা কমিশন। এটি ছাড়াও অনুমোদনের জন্য একনেকে উপস্থাপন করা হবে আরও ৯টি উন্নয়ন প্রকল্প। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে চলতি অর্থবছরের নবম সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন একনেক চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সভায় প্রকল্পগুলো অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। এর বাইরে আগে অনুমোদন পাওয়া বেশ কয়েকটি প্রকল্প একনেক সভার অবগতির জন্য উপস্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়টি খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলায় স্থাপন করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ১ হাজার ৯৪৩ কোটি টাকা ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু পরিকল্পনা কমিশনের আপত্তির মুখে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি, আসবাব এবং নির্মাণ খাত থেকে ৬৯ কোটি টাকা কমিয়ে সংশোধন করে ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা। পরে প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে। দেশের স্বাস্থ্য শিক্ষাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে খুলনায় মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ১ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা। একনেকে অনুমোদন পেলে চলতি বছর শুরু হয়ে ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন ও মৌলিক অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটির উদ্দেশ্য অবকাঠামোগত ও প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের মাধ্যমে শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে খুলনা অঞ্চলের সবচেয়ে আধুনিক উন্নত স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা, দেশের স্বাস্থ্য খাতে সর্বাধুনিক মানের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি, রোগীদের জন্য সর্বাধুনিক মানের সার্বক্ষণিক ওয়ান-স্টপ স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা করা, খুলনা বিভাগের সব মেডিকেল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ, নার্সিং কলেজ বা ইনস্টিটিউট ও সমজাতীয় অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এক ছাতার নিচে নিয়ে আসা এবং মানসম্মত স্নাতকোত্তর মেডিকেল শিক্ষা ও গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা। প্রকল্পটির অনুমোদনের বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের মতামতে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে খুলনা জেলা এবং আশপাশের প্রায় ২ কোটি মানুষকে উন্নত চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হবে। মানসম্মত স্নাতকোত্তর মেডিকেল শিক্ষা ও গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করাসহ খুলনা বিভাগের সব মেডিকেল শিক্ষা-সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান একই ছাতার নিচে আনা যাবে এবং প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে ২ হাজার ৭৩৬ জনের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। এসব কারণে প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য একনেক সভায় উপস্থাপনের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে। একনেক সভার কার্যতালিকা সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের নবম একনেক সভায় শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ছাড়া আরও ৯টি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ক্যাপাসিটি বিল্ডিং অব স্ট্যাটিসটিকস সার্ভিস বেজড অন প্ল্যাটফর্ম প্রকল্প, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের চায়না এইড প্রজেক্ট অব বার্ন ইউনিট অব চিটাগং মেডিকেল কলেজ হসপিটাল ইন বাংলাদেশ শীর্ষক প্রকল্প। একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রস্তাবিত দুটি প্রকল্প। এগুলো হলো পিরোজপুর ও ঝালকাঠি জেলার গুরুত্বপূর্ণ পল্লি অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প এবং বরিশাল জোলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত প্রোগ্রাম ফর সাসটেইনেবিলিটি ইন দ্য টেক্সটাইল অ্যান্ড লেদার সেক্টর (স্টিল) প্রকল্প অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। এ ছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত সিলেটের ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের উৎপাদন পদ্ধতি ওয়েট প্রসেস থেকে ড্রাই প্রসেসে রূপান্তরকরণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ঢাকা জেলায় বিদ্যমান সার্কিট হাউস ভবনের স্থলে নতুন অত্যাধুনিক সার্কিট হাউস ভবন নির্মাণ, জননিরাপত্তা বিভাগের বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের নবসৃজিত গাজীপুর (৬৩ বিজিবি) ব্যাটালিয়নের অবকাঠামোগত বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্প এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আরবান রেজিলিয়েন্স প্রজেক্ট (ইউআরপি): ডিডিএম অংশ (তৃতীয় সংশোধিত) প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য একনেকে উপস্থাপন করার জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া একনেকে অবগতির জন্য বেশ কয়েকটি প্রকল্প উপস্থাপন করা হবে। যেগুলো ইতোমধ্যে পরিকল্পনামন্ত্রী তার নিজস্ব ক্ষমতাবলে অনুমোদন দিয়েছেন। এসব প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ‘তিতাস গ্যাস ফিল্ডের লোকেশন-এ তে ওয়েলহেড কম্প্রেসর স্থাপন (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্প, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্ট্রেন্থদেনিং দ্য ক্যাপাসিটি অব ওয়েদার অ্যান্ড ক্লাইমেট সার্ভিসেস প্রকল্প, স্থানীয় সরকার বিভাগের রংপুর সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডে বিভিন্ন রাস্তায় সড়কবাতি স্থাপন (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্প। একসিলেটিং ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল ইনক্লুশন অব স্ম্যালহোল্ডার ফার্মারস দ্য স্ট্রং প্রডিউসারস অর্গানাইজেশন (একসেস) প্রকল্প।
৭ ঘণ্টা আগে

রাতে ঢাকায় আসছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা আজ বুধবার (৮ মে) রাতে ঢাকায় আসছেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সৌজন্য সাক্ষাৎ হওয়ার কথা। সেখানে তিনি শেখ হাসিনাকে দিল্লি সফরের আমন্ত্রণ পৌঁছে দেবেন। কোয়াত্রার সঙ্গে আলোচনায় সীমান্ত হত্যা গুরুত্ব পাবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। আজ দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। কোয়াত্রার সফরে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ভারত আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী। তাদের সঙ্গে নানা বিষয় আছে। স্বাভাবিকভাবে নানা বিষয় আলোচনা হবে। তিনি আসার পর আমরা বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব। সীমান্ত হত্যার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা অবশ্যই সীমান্ত হত্যার বিপক্ষে। দুই দেশে এটি যাতে না হয় সে লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি এবং সীমান্তে যারা প্রহরী, দুই পক্ষে যারা আছেন তারা যেন কোনো ক্ষেত্রে এমন বলপ্রয়োগ না করে। প্রাণহানি যেন না ঘটে সেটির জন্য আমরা রেগুলার কনসালটেশনের মধ্যে আছি। ভারতের পররাষ্ট্র-সচিব আসলে আমরা এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। গত ২০ এপ্রিল ঢাকায় আসার কথা ছিল ভারতের পররাষ্ট্র-সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার। তবে অনিবার্য কারণে তার পূর্বনির্ধারিত সেই সফর স্থগিত করা হয়।
১৭ ঘণ্টা আগে

শেখ হাসিনা জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিত করেছেন : সাদেকা হালিম
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সাবেক তথ্য কমিশনার অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেছেন, প্রত্যেক সরকারি কর্মকর্তা প্রজাতন্ত্রের সেবাদাতা। তথ্য জনগণের অধিকার। কর্মকর্তারা তথ্য হেফাজতকারী, তথ্য কুক্ষিগত করে রাখতে পারে না। শেখ হাসিনা জনগণের সেই অধিকার নিশ্চিত করেছেন তথ্য অধিকার আইনের মাধ্যমে। এতে কর্মকর্তাদের মধ্যে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার বিকাশ ঘটেছে। মঙ্গলবার (৭ মে) বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের আয়োজনে কর্মকর্তাদের তথ্য অধিকার আইন ও বিধিবিধানবিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। উপাচার্য বলেন, সকল জায়গায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রয়োজন। দেশের জনগণ ও মানুষ প্রত্যেকে তথ্যের দাবি রাখে। একটা সময়ে তথ্য গোপন করে রাখা হতো। কিন্তু এটা জনগণের অধিকার।  এ সময় কর্মকর্তাদের উদ্দেশে উপাচার্য বলেন, কোনো গণমাধ্যম ও সাধারণ একজন জনগণও যদি তথ্য চায় কর্মকর্তার তা দিতে বাধ্য। তবে সঠিক নিয়ম অনুযায়ী তথ্য সরবরাহ করতে হবে। সেবাদাতা যে মাধ্যমে তথ্য চাইবে ঠিক সেভাবেই তথ্য দিতে হবে।  খাদ্যের ভেজাল রোধ ও জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কর্মকর্তাদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ভেজাল খাদ্য রোধে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। খাদ্যের গুনগত মান ও পুষ্টির দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। ভেজাল রোধে কঠোর শাস্তির পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জাকারিয়া। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, তথ্য অধিকার সম্পর্কে অনেকই জানেন না। ভোক্তাদের অধিকার নিশ্চিতে আমরা সবসময় প্রস্তুত। খাদ্যের যথাযথ মান নিশ্চিতে আমাদের সকলে কাজ করছে। প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে সশরীরে ও অনলাইনে দুই শতাধিক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। প্রশিক্ষণ শেষে প্রশ্ন-উত্তর পর্বের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। এ সময় বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের অন্য সব কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
০৭ মে, ২০২৪

শেখ হাসিনা বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন : ড. সেলিম মাহমুদ 
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং সংসদ সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশে দীর্ঘ গণতন্ত্রিক সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন। দেশের ধ্বংস হওয়া নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করে তিনি মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। আজ বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ ভোট দিতে পারছে। গণতন্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতিটি সুফল তিনি মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন।  ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির আমন্ত্রণে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি হিসেবে ভারতের ছত্রিশগড় প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ভিষ্ণু দেও সাই, উপ মুখ্যমন্ত্রী অরুণ‌ সাও, এমপি, এমএলএ এবং বিজেপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ এসব কথা বলেন।  ড. সেলিম মাহমুদ আরও বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক অকৃত্রিম বন্ধুত্ব, বিশ্বাস, ভালোবাসা ও আবেগের বন্ধনে আবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে বিস্ময়কর উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি এনে বিশ্বকে অবাক করেছেন। অন্যদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির নেতৃত্বে গত ১০ বছরে ভারতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। দুই দেশের মানুষের ভাগ্যের ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত ভবিষ্যত বিশ্বে নানা ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেবে এই বিশ্বাস আমাদের নেতৃত্ব ও জনগণের রয়েছে।
০৫ মে, ২০২৪

বঙ্গবন্ধু কন্যাকে নৌকাখচিত চেয়ার উপহার দিতে চান হিরু কারিগর
তিন মাস শ্রম দিয়ে দৃষ্টিনন্দন নৌকাখচিত একটি চেয়ার বানিয়েছেন কাঠমিস্ত্রি হীরেন্দ্র চন্দ্র সরকার (হিরু)। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চেয়ারটি উপহার দিতে চান তিনি।  হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার আদাঐর গ্রামের বাসিন্দা হীরেন্দ্র চন্দ্র সরকার হিরু। তিন যুগ ধরে কাঠমিস্ত্রি পেশার সঙ্গে জড়িত। তারা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান হিসেবে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তার অগাত বিশ্বাস ভক্তি ভালবাসা শৈশব থেকেই। তাই তো সাধ্যের জায়গা থেকেই প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যার জন্য একটি নান্দনিক চেয়ার বানানোর ইচ্ছে জাগে তার মনে। সেই ইচ্ছা থেকে সেগুন ও গামাইর কাঠ সংগ্রহ করে তিন মাস ধরে রাত-দিন পরিশ্রম করে চেয়ারের কাজ শেষ করেন হিরু কারিগর। কাজটি করতে তার প্রায় অর্ধ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এখন অপেক্ষা শুধু প্রধানমন্ত্রীকে উপহার হিসেবে তুলে দেওয়ার। বিভিন্ন মিডিয়াকর্মী ও নেতাদের শরণাপন্ন হচ্ছেন তার স্বহস্তে বানানো চেয়ারটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। এখন ব্যতিক্রমী এই চেয়ারটি দেখতে অনেকে ভিড় জমাচ্ছেন তার বাড়িতে। মাধবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক এরশাদ আলী বলেন, আওয়ামী লীগ পরিবারের ওই কাঠমিস্ত্রি অত্যন্ত দলপরায়ন। বড় মাপের শিল্পীও। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তার নিঃস্বার্থ নিবেদন তথা উপহারটুকু পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা সাধ্যমত উপরে আলাপ করার চেষ্টা করব। উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ওসমান মোল্লা বলেন, অনেক সময় ও মেধা খাটিয়ে হিরু ভাই যে চেয়ারটি বানিয়েছেন তা অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন। সে ওই চেয়ারটিতে কাউকে বসতেও দেন না। এটা আরও প্রমাণ করে তৃণমূল আওয়ামী লীগ,বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি জনমানুষের ভালোবাসা কতটুকু। এই ধরনের শিল্পীকে সরকারি প্রণোদনার অন্তর্ভুক্ত করাও এখন সময় দাবি। চেয়ারের কারিগর কাঠমিস্ত্রি হীরেন্দ্র চন্দ্র সরকার বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জন্য উপহার হিসেবে চেয়ারটি ৩ মাস আগে বানানো শুরু করি। দিনরাত পরিশ্রম করে যত্ন নিয়ে চেয়ারটি বানিয়েছি শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেওয়ার জন্য।  হিরু চেয়ারটি প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে পৌঁছে দিতে মিডিয়ার লোকজনের সহযোগিতা চান। চেয়ারটি প্রধানমন্ত্রীকে উপহার হিসেবে দিতে না পারলে তার আক্ষেপ থেকে যাবে বলে জানান তিনি। কাঠমিস্ত্রি হিরো জানান আরও জানান, প্রতিদিনের পূজায় এই উপহারটুকু যাতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর হয় ও সেটা যেন তার কাছে পৌঁছে দিতে পারেন সে প্রার্থনা করে যাচ্ছেন।
০৩ মে, ২০২৪

মহান মে দিবসে সব মেহনতি মানুষকে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহান মে দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব মেহনতি মানুষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। আগামীকাল বুধবার ‘মহান মে দিবস’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, বিশ্বের শ্রমজীবী ও মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার গৌরবোজ্জ্বল ত্যাগের ঐতিহাসিক দিন ‘মহান মে দিবস-২০২৪’ উপলক্ষে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব মেহনতি মানুষকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক গড়বো দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ’ যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি। ১৮৮৬ সালের পহেলা মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে রক্তাক্ত আন্দোলনে শ্রমিকের ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আত্মাহুতি দেওয়া বীর শ্রমিকদের প্রতিও প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন শোষিত, বঞ্চিত ও শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি ১৯৭২ সালে জাতীয় শ্রম নীতি প্রণয়ন করেন এবং প্রথম মহান মে দিবসকে শ্রমিক সংহতি দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। জাতির পিতা মে দিবসে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন। তিনি শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে মজুরি কমিশন গঠন করেন এবং নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করেন। ১৯৭২ সালে মহান মে দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। সেই ভাষণে তিনি শ্রমিকদের মজুরির হার বৃদ্ধি এবং যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত ও দুর্দশাগ্রস্ত শ্রমিকদের এডহক সাহায্য প্রদানের ঘোষণা দেন। তিনি পরিত্যক্ত কল-কারখানা জাতীয়করণ করে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী এবং শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করেন। জাতির পিতার উদ্যোগে বাংলাদেশ ১৯৭২ সালের ২২ জুন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সদস্যপদ লাভ করে। আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশের শ্রমজীবী মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও কল্যাণে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মালিক-শ্রমিকের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সুসম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যমে নিরাপদ কর্মপরিবেশ, সামাজিক নিরাপত্তা ও শ্রমিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ শ্রম আইন যুগোপযোগী ও আধুনিকায়ন করে ‘বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন-২০১৮’ প্রণয়ন করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন খাতে কর্মরত শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়েছে। এই তহবিল থেকে যে কোনো শ্রমিক কর্মরত অবস্থায় দুর্ঘটনাজনিত কারণে স্থায়ীভাবে অক্ষম হলে অথবা মৃত্যুবরণ করলে, জরুরি চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ ও দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসার জন্য এবং শ্রমিকদের সন্তানের উচ্চশিক্ষার জন্যও আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন। আমরা রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের সার্বিক কল্যাণে আর্থিক সহায়তা প্রদানে একটি কেন্দ্রীয় তহবিল গঠন করেছি এবং সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি। এ শিল্পের কর্মহীন এবং দুস্থ শ্রমিকদের সর্বোচ্চ তিন মাসের নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করে চলমান সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হয়েছে। সকল সেক্টরে শ্রমিকদের বেতনভাতা বাড়ানো হয়েছে। শ্রমিকদের সামাজিক মর্যাদা, স্বাস্থ্য ও সেইফটি নিশ্চিতকল্পে জাতীয় শ্রমনীতি-২০১২, জাতীয় শিশুশ্রম নিরসন নীতি-২০১০, জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি নীতিমালা-২০১৩, বাংলাদেশ শ্রম  বিধিমালা-২০১৫ এবং গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি-২০১৫ প্রণয়ন করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এবং কার্যক্রম আরো সুদৃঢ় হয়েছে। শিল্প-কারখানায় কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন পরিদপ্তরকে অধিদপ্তরে উন্নীত করা হয়েছে। শ্রমিক ও তাদের পরিবারের কল্যাণে বিভিন্ন সেবার সম্প্রসারণ ও জোরদারকরণে আমরা শ্রম পরিদপ্তরকে সম্প্রতি অধিদপ্তরে রূপান্তরিত করেছি। শ্রমিক ভাইবোনদের যে কোনো সমস্যাসংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণ, অভিযোগ নিষ্পত্তি ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদানের জন্য সার্বক্ষণিক টোল ফ্রি হেল্প লাইন (১৬৩৫৭) চালু করা হয়েছে। শিল্প কারখানায় বিশেষ করে গার্মেন্টস শিল্পে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যথাযথ পরিদর্শন ও মনিটরিং ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, মহান মে দিবসের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে শ্রমিক-মালিক পরস্পর সুসম্পর্ক বজায় রেখে জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধিতে নিবেদিত হবেন। মে দিবসের চেতনায় দেশের শ্রমিক-মালিক ঐক্য জোরদার করে শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণ ও দেশের সার্বিক উন্নয়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ তথা উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব; এটাই হোক আমাদের মে দিবসের অঙ্গীকার।’ তিনি ‘মহান মে দিবস-২০২৪’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করেন।
৩০ এপ্রিল, ২০২৪

শেখ হাসিনা বিশ্ব মানবতার আলোকবর্তিকা : মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব মানবতার আলোকবর্তিকা বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক।  রোববার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি অডিটরিয়ামে আরিফুর রহমান খান রচিত ‘শেখ হাসিনা মানবিকতার আলোকবর্তিকা’ শীর্ষক গ্ৰন্থের মোড়ক উন্মোচন ও আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব মানবতার আলোকবর্তিকা শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশেরই প্রধানমন্ত্রী নন, বিশ্বে একজন মানবিক নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করছেন বিশ্বের দরবারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশকে স্বাধীন করেছেন কেবল একটি পতাকা ও একটি নতুন ভূখণ্ডের জন্য নয়। তিনি জাতিকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন এ দেশ যদি স্বাধীন হয়, তাহলে এ দেশের মানুষ তাদের মৌলিক অধিকার ফিরে পাবে, মানুষ খেয়ে পড়ে বাঁচবে। যার জন্ম না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না, আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক হতে পারতাম না। বঙ্গবন্ধু তার নিজের জীবন বাজি রেখে পাকিস্তানের কাছে মাথা নত করেননি বলেই আমরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি।  আ.ক.ম মোজাম্মেল হক বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে হত্যা করলেও তার দুই কন্যা বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান। আর প্রাণে বেঁচে যান বলেই দেশ বেঁচে যায়। তিনি দেশে ফেরত এসে আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করে, আবার অনেক লড়াই সংগ্ৰামের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। তিনি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে। শেখ হাসিনা যদি দেশে ফিরে না আসতেন, তবে এ বিচার হতো না। তিনি শুধু দেশের উন্নয়নই করেন নাই, তিনি এদের বিচার করে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন।  অধ্যাপক ড. মো. হারুন অর রশিদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে কবি আসলাম সানি, লেখক আরিফ উর রহমান খান, ভোরের কণ্ঠের সম্পাদক মো. হাফিজুর রহমানসহ অনেক বক্তৃতা করেন। 
২৮ এপ্রিল, ২০২৪

যা দেখি যা শুনি / দেশপ্রেম—বঙ্গবন্ধু, দেশবন্ধু ও শেখ হাসিনা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস দুজনই বেশি বছর বাঁচেননি। যদিও দেশবন্ধুর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল আর বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। দুজনেরই ৫৫ বছর বয়সের জীবন ছিল। আর নেতাজি সুভাষ বোস ৪৮ বছর বেঁচে ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন ৩৬ (১৯৩৯-১৯৭৫) বছরের আর দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের সক্রিয় রাজনৈতিক জীবন মাত্র ৯ বছরের (১৯১৭-১৯২৫)। বঙ্গবন্ধু লেখায় আমরা পাই (‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থের শুরুতে সংযোজিত হয়েছে)—‘একজন মানুষ হিসেবে সমগ্র মানবজাতি নিয়েই আমি ভাবি। একজন বাঙালি হিসেবে যা কিছু বাঙালিদের সঙ্গে সম্পর্কিত তাই আমাকে গভীরভাবে ভাবায়। এই নিরন্তর সম্পৃক্তির উৎস ভালোবাসা, অক্ষয় ভালোবাসা, যে ভালোবাসা আমার রাজনীতি এবং অস্তিত্বকে অর্থবহ করে তোলে।’ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা এখন বাঙালি জাতির বিকল্পহীন অবলম্বন। ‘নিউজ উইক’ পত্রিকায় শেখ হাসিনাকে নিয়ে কভার স্টোরি করা হয়েছিল, সেখানে প্রতিবেদক শেখ হাসিনাকে ‘বিস্ময়কর রাজনৈতিক নেতা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আর দেশবন্ধু বিষয়ে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘স্মৃতিকথা’য় সুভাষচন্দ্রের একটি উল্লেখ রয়েছে: ‘সুভাষকে করপোরেশনের কাজ দিবার পর একদিন আমাকে বলিয়াছিলেন, I have sacrificed my best man for this Corporation এবং সেই সুভাষকেই যখন পুলিশ ধরিয়া লইয়া গেল, তখন তাঁহার দৃঢ় বিশ্বাস জন্মিয়াছিল, তাঁহাকে সর্বদিক দিয়া অক্ষম ও অকর্মণ্য করিয়া দিবার জন্যই গভর্নমেন্ট তাঁহার হাত-পা কাটিয়া তাঁহাকে পঙ্গু করিয়া আনিতেছে।’ ঠিক এ পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষিপ্ত দেশবন্ধু তার একটি বক্তৃতায় বলেছিলেন: ‘if love of country is a crime, I am a criminal. If Mr. Subhas Chandra Bose is a criminal, I am a criminal.’ এই সংকলনের ‘সমকাল’-এর লেখার তৃতীয়টি হলো সুভাষচন্দ্রের নিজের দেশবন্ধুর ওপর একটি দীর্ঘ মূল্যবান প্রবন্ধ, সেটি তিনি রচনা করেছিলেন মান্দালয় জেলে ১৯২৬-এর ফেব্রুয়ারি মাসে। তিনি লিখেছিলেন: ‘ভারতের হিন্দু জননায়কদের মধ্যে দেশবন্ধুর মতো ইসলামের এত বড় বন্ধু আর কেউ ছিলেন বলে মনে হয় না। তিনি হিন্দু ধর্মকে এত ভালোবাসতেন যে, তার জন্য প্রাণ দিতে প্রস্তুত ছিলেন অথচ তাঁর মনের মধ্যে গোঁড়ামি আদৌ ছিল না।’ ভারতবর্ষের ধর্মীয় বিভিন্নতার বিষয়ে এই উদার মহানুভবতার আদর্শকেই সুভাষচন্দ্র তার নিজের রাজনীতিতেও প্রতিফলিত করতে চেয়েছিলেন। সুভাষচন্দ্র শ্রদ্ধাভরে লিখেছিলেন: ‘চিত্তরঞ্জনের জাতীয়তাবাদ পূর্ণতা লাভ করত আন্তর্জাতিক সংযোগের মধ্যে। কিন্তু সেই বিশ্বপ্রেমের জন্য নিজের দেশের প্রতি প্রেম তিনি বিসর্জন দেননি। আবার তার সঙ্গে এও ঠিক যে, এই স্বজাতি প্রেম তাঁর মধ্যে কোনো সংকীর্ণ আন্তকেন্দ্রিকতাও তৈরি করেনি।’ দেশবন্ধুর এই অপূর্ণ স্বপ্ন এবং আশার মধ্যেই তার ‘সর্ববৃহৎ উত্তরাধিকার খুঁজে পেয়েছিলেন নেতাজি। পরের লেখাটি সেকালের শ্রেষ্ঠ সমাজবিজ্ঞানী বিনয়কুমার সরকারের হিন্দু-মুসলিম চুক্তিনামার বিশ্লেষণ। মূল প্রবন্ধটি ইংরেজিতে ১৯২৮ সালে ফরোয়ার্ড পত্রিকার বিশেষ দেশবন্ধু সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল। বিনয়কুমারের স্পষ্ট পর্যবেক্ষণ: “হিন্দু-মুসলিম প্যাক্ট দ্বারা চিত্তরঞ্জন হিন্দুদিগকে ‘অসম্ভব রকমের’ স্বার্থ ত্যাগ করিত বলিয়াছিলেন সত্য, কিন্তু এই তথাকথিক স্বার্থ ত্যাগের দ্বারা তিনি রাষ্ট্রের ভিত্তি আরও সুদৃঢ় করিবার প্রয়াসই পাইয়াছিলেন।” দেশবন্ধু উপলব্ধি করেছিলেন যে, হিন্দু-মুসলিম সমস্যা অনেকাংশেই খাওয়া-পরার সমস্যা। বর্তমান যুগের আধুনিক আইন, বিদ্রোহ, গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রনীতির আলোকে বিনয়কুমার দেশবন্ধুর এই চুক্তিনামার মূল্যায়ন করেন। তিনি পাঠকদের বুঝিয়ে বলেন: ‘বাংলার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের স্বার্থের ন্যায্য হিস্যা ও অধিকার নির্দিষ্ট করিবার জন্য এই প্যাক্টের সৃষ্টি। পাঠক খেয়াল করে দেখবেন, বঙ্গবন্ধু ও দেশবন্ধুর মধ্যে কি অপূর্ব মিল। মুসলিম বিশ্বের প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহমর্মিতার নিদর্শন পাওয়া যায় চতুর্থ আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে। এই যুদ্ধ ইসরায়েলিদের কাছে ইয়াম কিপুর যুদ্ধ আর আরবদের কাছে অক্টোবর যুদ্ধ হিসেবে পরিচিত। তা ছাড়া এই যুদ্ধ ১৯৭৩ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ, রমজান যুদ্ধ ইত্যাদি বিভিন্ন নামেও পরিচিত। ১৯৭৩ সালের ৬ অক্টোবর এই যুদ্ধ শুরু হয় এবং ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এই যুদ্ধ শুরু হলে আরব দেশসমূহের সঙ্গে বাংলাদেশের একাত্মতা বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশ ইসরায়েলি আক্রমণের তীব্র নিন্দা করে। নিপীড়িত মানবতার জন্য বঙ্গবন্ধু সর্বদাই চিন্তিত থাকতেন এবং তাঁদের সহায়তা করতে সচেষ্ট ছিলেন বলে তিনি আরবদের ন্যায়সংগত এই যুদ্ধে আরব দেশসমূহকে সমর্থন জানান। তিনি শুধু নৈতিক সমর্থন জানিয়েই থেমে থাকেননি, সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য সেখানে সামরিক চিকিৎসকদল প্রেরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। উল্লেখ্য যে, তখন পর্যন্ত অনেক আরব দেশ বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি প্রদান করেনি, তদুপরি মানবিক দিক বিবেচনা করে অনিশ্চয়তা ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার মধ্যেও বঙ্গবন্ধু সাহায্য প্রেরণ করেছিলেন। তাঁর সেই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত ছিল সাহসী ও সুদূরপ্রসারী। উল্লেখ্য যে, ওই যুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে খুবই অল্পসংখ্যক মুসলিম দেশ ক্ষমতাশীল আমেরিকা, ইউরোপ ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এই ধরনের সাহসী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল।’ দুই. গত ২৫ এপ্রিল জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসক্যাপ) ৮০তম অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ব্যাংককে চলমান এ সম্মেলনে তিনি ইউক্রেন-রাশিয়া এবং ফিলিস্তিন-ইসরায়েল-ইরানে সংঘাত বন্ধে বিশ্বনেতাদের প্রতিও আহ্বান জানান। শেখ হাসিনা বলেন, ‘ফিলিস্তিনে গণহত্যা চলছে। গণহত্যা কতটা ভয়াবহ, ১৯৭১ সালে আমরা দেখেছি। বিশ্বের যেখানেই থাকি না কেন ফিলিস্তিনসহ যেসব জায়গায় হত্যা-অবিচার চলছে, তা বন্ধ করতে বলব।’ যুদ্ধ, আগ্রাসন ও নৃশংসতা বন্ধ এবং আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘হামলা শুধু হতাহতের সংখ্যা বাড়ায়, কোনো সমাধান আনতে পারে না। কিন্তু আলোচনা শান্তি আনতে পারে।’ এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা তার উদ্যোগ ও শাসনামলে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর বাংলাদেশে ‘পার্বত্য শান্তিচুক্তি’র কথা উল্লেখ করেন, যা জনগণের মধ্যে শান্তি ফিরিয়ে এনেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আঞ্চলিক বিরোধ ও উত্তেজনা নিষ্পত্তি করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘সর্বোপরি জাতীয় সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি আমাদের পারস্পরিক সম্মান দেখাতে হবে।’ শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, বিশেষ করে আসিয়ানকে প্রচেষ্টা বাড়ানোর আহ্বান জানান। একই সঙ্গে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে অবশ্যই দারিদ্র্য ও ক্ষুধার অভিন্ন সংকটের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়াতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আসিয়ানের ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেছেন। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আসিয়ানের জোরালো ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমারে সংঘাত শুরুর পর সেখান থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গারা। মানবিক কারণে তাদের আশ্রয়ও দেওয়া হয়েছে। সারা বিশ্বেই এটি মানবিকতার অনন্য উদাহরণ। তবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে দেরি হচ্ছে। তাদের সম্মানের সঙ্গে ফেরত পাঠাতে হবে। এজন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে মিয়ানমারে। আসিয়ানকে এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।’ রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলা এবং মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ সংঘাত নিয়ন্ত্রণে আসিয়ানকে ভূমিকা রাখারও আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। তিন. জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের ইতিহাস অনেকের জানা নেই। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের দূরদর্শিতার অসংখ্য উদাহরণের একটি। বঙ্গবন্ধু পররাষ্ট্রবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন পরিচালক ও উপসচিব মোহাম্মদ জমিরকে (রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির) ডেকে শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের একটি দলকে প্রেরণের বিষয়ে প্রশাসনিক সব কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও টিমের সঙ্গে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। সেনাপ্রধান ব্রিগেডিয়ার কেএম সফিউল্লাহ ও ডাইরেক্টর মেডিকেল সার্ভিস কর্নেল খুরশিদ উদ্দিন আহমেদকে ডেকে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে আরব ও মুসলিম দেশগুলো আজ বিশাল বিপদের সম্মুখীন, এই সময়ে তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের মানবিক কর্তব্য। যদিও আমাদের ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা আছে, তবুও অত্যাচারিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের কর্তব্য।’ পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু সেনাসদরের সাতজন অফিসার ও ২১ জন সৈনিককে এই কাজের জন্য নিয়োজিত করলেন এবং দ্রুত প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিলেন। মিশনে যাওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু ২৮ জনের দলকে তার অফিসে আমন্ত্রণ করে তাদের দিকনির্দেশনা দিয়ে বলেন, ‘আপনাদের সফল কর্মকাণ্ডের ওপর নির্ভর করছে অত্যাচারিত মানুষের কল্যাণ এবং বাংলাদেশের সম্মান ও ভবিষ্যতের অনেক সিদ্ধান্ত।’ জাতির পিতার এই ভবিষ্যদ্বাণী সঠিক হয়েছিল। চিকিৎসকদলের সঙ্গে মিশর ও সিরিয়ার জন্য ৪ টন চা পাঠানো হয়। আমরা জেনে থাকব বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম বিদেশ সফর ছিল ভারতে এবং সেটা ছিল কলকাতায়। ওই সফর নানা কারণে বিশেষ গুরুত্ব বহন করেছিল। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন ও অবদান রাখার জন্য বঙ্গবন্ধু ভারতীয় সরকার এবং জনগণকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। বিশেষ করে তিনি মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর অবদান ও ত্যাগের জন্য তাদের ধন্যবাদ জানান। সেইসঙ্গে ভারতীয় বাহিনীকে স্বাধীন বাংলাদেশের সীমানা ত্যাগ করার জন্য তিনি ভারত সরকারকে অনুরোধ জানান। উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধুর ভারত সফরকালীন ৭ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যকার আলোচনার পর যুক্ত ইশতেহারে সরকারি ঘোষণায় জানানো হয় যে, ২৫ মার্চের মধ্যেই ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন। তবে এই সময়ের আগে ১২ মার্চের মধ্যে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর অন্যতম ব্যাটালিয়ন ৪ গার্ড রেজিমেন্ট বঙ্গবন্ধুকে ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে গার্ড অব অনার প্রদান করে। ১৭ মার্চের মধ্যেই ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা সসম্মানে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন। বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী চিন্তা ও সঠিক নেতৃত্বের ফলেই এটা সম্ভব হয়েছিল। ১৯৭৩ সালের ২৩ মে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিশ্বশান্তি পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত শান্তি সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে ‘জুলিও কুরি শান্তি পদক’ প্রাপ্তিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রদত্ত ভাষণের কিছুটা অংশ এখানে সংযোজন করা যেতে পারে। “আমরা চাই বিশ্বের সর্বত্র শান্তি বজায় থাকুক, তাকে সুসংহত করা হোক। বৃহৎ শক্তিবর্গ, বিশেষভাবে আগ্রাসী নীতির অনুসারী কতিপয় মহাশক্তির অস্ত্রসজ্জা তথা অস্ত্র প্রতিযোগিতার ফলে আজ এক সংকটজনক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা চাই, অস্ত্র প্রতিযোগিতায় ব্যয়িত অর্থ দুনিয়ার দুঃখী মানুষের কল্যাণের জন্য বিনিয়োগ করা হোক। তাহলে পৃথিবী থেকে দারিদ্র্যের অভিশাপ মুছে ফেলার কাজ অনেক সহজসাধ্য হবে। আমরা সর্ব প্রকারের অস্ত্র প্রতিযোগিতার পরিবর্তে দুনিয়ার সকল শোষিত ও নিপীড়িত মানুষের কল্যাণে বিশ্বাসী বলেই বিশ্বের সব দেশ ও জাতির বন্ধুত্ব কামনা করি। ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বিদ্বেষ নয়’—শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের এই নীতিতে আমরা আস্থাশীল। তাই সামরিক জোটগুলোর বাইরে থেকে সক্রিয় নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি আমরা অনুসরণ করে চলেছি। শুধু সরকারের নীতিই নয়, আন্তর্জাতিক শান্তি ও সংহতি সুদৃঢ় করা আমাদের সংবিধানের অন্যতম অনুশাসন। আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, আমাদের সংবিধান জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা এই ৪টি স্তম্ভের ওপরই রচিত। এই আদর্শের ভিত্তিতে আমরা একটি শোষণমুক্ত সমাজব্যবস্থা কায়েম করতে চাই।” লেখক: রাজনৈতিক বিশ্লেষক
২৮ এপ্রিল, ২০২৪

চলতি বছরই থাইল্যান্ডের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি হবে : শেখ হাসিনা
বাংলাদেশের একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করার জন্য থাইল্যান্ডকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরই দেশটির সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) সই হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের কাছে থাইল্যান্ড একটি সম্ভাবনাময় অংশীদার। দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি সমুদ্রবন্দর কেন্দ্রিক যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে। সকালে থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গভর্নমেন্ট হাউসে যান শেখ হাসিনা। এ সময় থাই প্রধানমন্ত্রী জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাকে স্বাগত জানানো হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে থাই কুহ ফাহ বিল্ডিংয়ের সামনের লনে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। এ সময় থাইল্যান্ডের সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল কর্তৃক প্রদত্ত গার্ড অব অনার পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে স্রেথা থাভিসিন তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের শেখ হাসিনার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। শেখ হাসিনা পরে সরকারি ভবনের অতিথি বইয়ে স্বাক্ষর করেন। বৈঠক শেষে সরকারি বাসভবন ত্যাগের আগে শেখ হাসিনা সেখানে আনুষ্ঠানিক মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এর আগে গতকাল বুধবার ৬ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে থাইল্যান্ডে পৌঁছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে পৌঁছলে বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে উষ্ণ অভ্যর্থনায় বরণ করে নেওয়া হয়। থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত মন্ত্রী পুয়াংপেট চুনলাইদ অভ্যর্থনা জানান। 
২৬ এপ্রিল, ২০২৪

বদলে যাওয়া এই বাংলাদেশই দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। ২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের। কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায় না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই। প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয় এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো, মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া হচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন। যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ, যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে বিনির্মিত হবে। কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি। লেখক: সভাপতি, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট
২৬ এপ্রিল, ২০২৪
X