‘অপতথ্য রোধে সরকার, পেশাদার গণমাধ্যম এবং সুশীল সমাজ একসঙ্গে কাজ করতে পারে’
অপতথ্য রোধে সরকার, পেশাদার গণমাধ্যম এবং সুশীল সমাজ অংশীদার হয়ে একসঙ্গে কাজ করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ মাইডাস সেন্টারে দক্ষিণ এশিয়ায় বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উদযাপন উপলক্ষে ইউনেস্কো, টিআইবি এবং আর্টিকেল নাইন্টিন আয়োজিত ‘বর্তমান বৈশ্বিক পরিবেশগত সংকটের প্রেক্ষাপটে মুক্ত গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, সরকারের সমালোচনা করা সমস্যা নয়। সত্য তথ্যের ওপর ভিত্তি করে যে কোনো সমালোচনা করলে সেটা সরকার স্বাগত জানায়। যখন পরিকল্পিতভাবে অপতথ্যের প্রচার করা হয়, দেশের উন্নয়ন থামানোর জন্য সাংবাদিকতার অপব্যবহার করা হয়, অপতথ্য প্রচারের জন্য পরিবেশকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়, সেটিই সমস্যা তৈরি করে। এক্ষেত্রে অপতথ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সাংবাদিকতা বন্ধে সরকার, পেশাদার গণমাধ্যম এবং সুশীল সমাজ একসঙ্গে অংশীদার হয়ে কাজ করতে পারে। তিনি আরও বলেন, তথ্যের অবাধ প্রবাহের সঙ্গে সঙ্গে সমাজের সর্বস্তরে অপতথ্যের অস্তিত্ব বিরাজ করে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খুবই কার্যকর, যখন এর ব্যবহার করা হয়। অপতথ্যের বিস্তৃতির মাধ্যমে যখন গণমাধ্যমের স্বাধীনতার অপব্যবহার করা হয়, তখন এটি অত্যন্ত নেতিবাচক হয়। এটি সমাজে গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে নেতিবাচকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং জনগণের ক্ষতি করে। এ ব্যাপারে আমাদেরক সতর্ক থাকতে হবে। অপতথ্য প্রতিরোধ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, সরকার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চায়। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। আমাদের সর্বোচ্চ আইন সংবিধানের মাধ্যমে এ বিষয়গুলোর সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। আমরা গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য সংগ্রাম করেছি, জীবন উৎসর্গ করেছি এবং একটি দেশ তৈরি করেছি। তিনি বলেন, যখন আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলবো তখন সেটা জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে হতে হবে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা যাতে কোনো গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য অপব্যবহার না হয়। যখনই আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা চিন্তা করব, তা যেন গণমাধ্যমের সঠিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে হয়, অপব্যবহারের ক্ষেত্রে নয়। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৫ বছরে গণমাধ্যমের বিস্তৃতির জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন এবং গণমাধ্যমের দ্রুততার সঙ্গে বিকাশ হয়েছে। সরকারের যদি গণমাধ্যম্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ বা প্রভাব বিস্তারের উদ্দেশ্যে থাকতো তাহলে সরকার গণমাধ্যমের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে চাইত না। এটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে সরকারের অঙ্গীকারের একটি উদাহরণ। প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, সরকার জলবায়ু ও পরিবেশের বিষয়টি মাথায় রেখে ১০০ বছরের পরিকল্পনা ডেল্টা প্ল্যান প্রণয়ন করেছে। নেদারল্যান্ডস সরকারের সহায়তার ২১০০ সালে এটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য প্রাথমিকভাবে দায়ী না হলেও, বাংলাদেশ এর অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। যেহেতু জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কেন্দ্রীয়ভাবে সরকারের অঙ্গীকার রয়েছে, তাই যারা এর বিরুদ্ধে কাজ করছে তাদের সরকার মেনে নেওয়ার কোনো কারণ নেই। তাই পরিবেশ সুরক্ষা পক্ষে প্রতিবেদন বা সাংবাদিকতা সরকার অবশ্যই স্বাগত জানাবে। কারণ ডেল্টা প্ল্যান অনুযায়ী আগামী ১০০ বছরে দীর্ঘমেয়াদে দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা, ভূমি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, বাস্তুসংস্থান ও পরিবেশ নিয়ে সরকার কাজ করছে। প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত পরিষ্কার আমরা পরিবেশের সুরক্ষা দিতে চাই। যারা এর বাইরে অন্য কিছু করবে তাদের ব্যাপারে সাংবাদিকরা সঠিকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করলে সেটাকে সরকার স্বাগত জানাবে। কারণ এটি পরিবেশের ব্যাপারে সরকারের কেন্দ্রীয় অঙ্গীকারের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। সরকার শুধু উন্নয়নে বিশ্বাস করে না বরং টেকসই উন্নয়নে বিশ্বাস করে, যা পরিবেশগত সুরক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করে। তিনি বলেন, প্রতিবেদন প্রকাশের ক্ষেত্রে মৌলিক সততা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকার যে কোনো ধরনের সমালোচনা সব সময় স্বাগত জানাবে এবং দেশের যে কোনো প্রান্তের প্রতিবেদক বা সাংবাদিককে সুরক্ষা দেবে। সত্য ও বৈজ্ঞানিক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদন প্রকাশ করলে এমনকি সরকারের সমালোচনা করলেও সেটি সরকার প্রশংসা করবে ও স্বাগত জানাবে। প্যানেল আলোচনায় আরও অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ফন লিন্ডে, ইউনেস্কোর বাংলাদেশ প্রতিনিধি ও অফিস প্রধান সুজান ভাইজ, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এবং মাছরাঙা টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক ও ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের চেয়ারম্যান রেজোয়ানুল হক। প্যানেল আলোচনা সঞ্চালনা করেন আর্টিকেল নাইন্টিন-এর বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক শেখ মঞ্জুর-ই-আলম। প্যানেল আলোচনার পূর্বে বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপন করেন দি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান শামসুদ্দিন ইলিয়াস এবং ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক উসরাত ফাহমিদা।
০২ মে, ২০২৪

শোষণ-বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের আহ্বান
মহান মে দিবসে শোষণ-বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের। বুধবার (১ মে) সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি দীপক শীল এবং সাধারণ সম্পাদক মাহির শাহরিয়ার রেজা এক যৌথ বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান।  বিবৃতিতে মে দিবসের বিপ্লবী প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে শোষণ-বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন নেতারা। তারা বলেন, মহান মে দিবসে নতুন করে শপথ নিয়ে শ্রমজীবী মানুষকে সব ধরনের শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করতে হবে। শ্রমিকশ্রেণির রক্তস্নাত লাল পতাকা ঊর্ধ্বে তুলে ধরে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে সকল দাবি দাওয়া আদায় করে নিতে হবে। বর্তমান সরকার ইতোমধ্যেই শ্রমিকশ্রেণির মানুষের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যত শ্রমিককে হত্যা করা হয়েছে তার কোনো বিচার এখন পর্যন্ত জনগণ পায় নাই।  নেতারা বলেন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন তার ইতিহাস অর্পিত দায় থেকে সর্বদায় শ্রমিকশ্রেণির মানুষের পাশে রয়েছে। শোষণ-বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কৃষক, শ্রমিক, জনতার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলায়ে ছাত্র ইউনিয়নের প্রতিটি নেতাকর্মী লড়াই করবে এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ঐক্য সাধনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন নিশ্চিত করা হবে। নেতারা অবিলম্বে শ্রমজীবী মানুষের জন্য রেশনের ব্যবস্থা করার দাবি জানান। বন্ধ করে দেওয়া কল-কারখানা চালু, ন্যূনতম শ্রমসময় ৮ ঘণ্টা নির্ধারণ, জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকাসহ সব সেক্টরে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ, অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত, আইএলও কনভেশন অনু্যায়ী শ্রম আইন সংশোধন, শ্রমিকদের অকারণ হয়রানি এবং ছাঁটাই বন্ধ, শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধসহ সঠিক সময়ে চলতি মাসের বেতন এবং উৎসব বোনাস প্রদান, সব ধরনের শ্রমিক হত্যার বিচার দাবি করেন নেতারা।   উল্লেখ্য, আজ মহান দিবসের ১৩৮তম বার্ষিকী। ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে আমেরিকার শিকাগো শহরের হে মার্কেটের সামনে জমায়েত হওয়া শ্রমিকদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণের ঘটনায় শহিদদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে এ দিবস পালিত হয়। সেদিন দৈনিক আট ঘণ্টার কাজের দাবিতে শ্রমিকরা হে মার্কেটে জমায়েত হয়েছিল। তাদের ঘিরে থাকা পুলিশের প্রতি এক অজ্ঞাতনামার বোমা নিক্ষেপের পর পুলিশ শ্রমিকদের ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে। ফলে প্রায় ১০-১২ জন শ্রমিক ও পুলিশ নিহত হয়।
০১ মে, ২০২৪

শ্রমিক সমাজ বেঁচে থাকাই কষ্টকর: রিজভী 
শ্রমিক সমাজের এখন বেঁচে থাকাই কষ্টকর বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। এর আগে আগামীকাল মহান মে দিবসের সমাবেশ উপলক্ষে আলোচনা সভা করে শ্রমিক দল। রিজভী বলেন, ১ মে, ঐতিহাসিক মহান মে দিবসে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের উদ্যোগে আগামীকাল দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শ্রমিক সমাবেশ করবে এবং সমাবেশ শেষে একটি বর্ণাঢ্য শ্রমিক র‌্যালি নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ করবে।   এ বিষয়ে শ্রমিক দলের পক্ষ থেকে পুলিশ কমিশনার বরাবর পত্র দিয়ে তাদের অবহিত করা হয়েছে বলে জানান রিজভী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিবিএস’র হিসাব অনুযায়ী, ১২ কোটি ভোটারের মধ্যে ৭ কোটি ৩৫ লাখ শ্রমিক। শ্রমিক সমাজের মর্যাদার জন্য একটি দিন বিশ্ব স্বীকৃতি দিয়েছে-মে দিবস। বাংলাদেশে আজ সবচেয়ে অবহেলিত শ্রমিক সমাজ। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি, বাজারমূল্যের সঙ্গে অসংগতি, কম মজুরিতে শ্রমিক সমাজের এখন বেঁচে থাকাই কষ্টকর। তিনি বলেন, সরকারের ফ্যাসিবাদী মনোভাব ও অগণতান্ত্রিক শ্রমআইনে মালিক পক্ষের স্বার্থকে প্রধান্য দেওয়ায় শ্রমিক সমাজ সর্বত্র হয়রানিসহ নানাবিধ অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে। শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়া ও অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার থেকে দূরে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। উপরোক্ত প্রস্তাবিত অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল-২০২৩ এর মাধ্যমে শ্রমিক কর্মচারীদের দাবি উত্থাপনের অধিকারকে আইন করে বন্ধ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আরও বলেন, বর্তমানে অগণতান্ত্রিক ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে সাজানো সংসদ তৈরি করে একক ক্ষমতায় স্বৈরাচারী কায়দায় দেশ পরিচালনা করছে। ২৮ অক্টোবর আন্দোলনের সময়ে কারাবন্দি শ্রমিকদল নেতা ফজলুর রহমান কাজলের হাতে হ্যান্ডকাপ, পায়ে ডান্ডাবেড়ী পরা অবস্থায় হাসপাতালের বারান্দার ফ্লোরে বিনা চিকিৎসায় হত্যা, মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনে চার জন গার্মেন্টস শ্রমিক- আঞ্জুয়ারা খাতুন, রাসেল হাওলাদার, জালাল উদ্দিন ও মো. ইমরানকে আওয়ামী সন্ত্রাসী ও পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে। রিজভী বলেন, চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে শ্রমজীবী মানুষের জীবন আজ ওষ্ঠাগত। সরকারের-গ্যাস বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে এর প্রভাব শুধু সাধারণ জনগণের ওপরই নয়, উৎপাদন খাত শিল্প-কলকারখানাগুলোতেও পড়েছে। ফলে বন্ধ হচ্ছে কলকারখানা। সরকারি খাতের পাটকল ও চিনিকলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে বেকার হয়েছে লাখ লাখ শ্রমিক। মানবেতর পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের পরিবার। টাকার অভাবে তাদের সন্তানদের লেখাপড়া বন্ধ হচ্ছে। অন্যদিকে সরকারি দপ্তরগুলোতে নিয়মিত পদ বিলুপ্ত করে আউট সোর্সিং নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। ফলে শ্রমের ক্ষেত্রগুলো  ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে শিক্ষিত লাখ লাখ বেকার। অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্র অর্জনকারী সোনালি আঁশ খ্যাত পাটের উৎপাদন ও বিপণন বন্ধ, বাংলাদেশের মানুষের খাদ্য তালিকার অন্যতম উপাদান আমাদের দেশে তৈরি স্বাস্থ্যসম্মত চিনির পরিবর্তে ক্যামিকেল যুক্ত বিদেশি চিনির ওপর বিদেশনির্ভরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশ  হারাচ্ছে শ্রমজীবী মানুষের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা। রিজভী বলেন, অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন গঠন, শোভন কাজ, নিরাপদ কর্মক্ষেত্রসহ অন্যদের ন্যায় শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থার দাবিতে শ্রমিক শ্রেণি তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্লাটফর্ম হিসাবে শ্রমিক দল কর্তৃক আয়োজিত মে দিবসের শ্রমিক সমাবেশ ও র‌্যালিতে সর্বস্তরের শ্রমজীবী মানুষ অংশ নিবেন এমন বিএনপি আশা করে বলে জানান রিজভী। তিনি বলেন, শ্রমিক দলের পক্ষ থেকে ১২ দফা দাবি সম্বলিত লিফলেট, পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন করা হয়েছে। মহান মে দিবস পালনের লক্ষ্যে শ্রমিক দলের পক্ষ থেকে গঠিত পাঁচটি উপকমিটি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি, স্মরণকালের ভয়াবহ দাবদাহ উপেক্ষা করে অধিকার প্রতিষ্ঠার এই মহান দিনে শ্রমজীবী মানুষ তাদের দুঃখ-কষ্ট যাতনার প্রতিবাদে শ্রমিক দলের সমাবেশে উপস্থিত হবেন সেই সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ শীর্ষ জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বর্তমান শ্রম পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য রাখবেন।
৩০ এপ্রিল, ২০২৪

‘ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন সমাজ বিপ্লবী’
গণ বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী  চিকিৎসক হিসেবে মানুষের শারীরিক চিকিৎসায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে পারতেন। কিন্তু তিনি শুধু মানুষের চিকিৎসায় নয়, সমাজের চিকিৎসায়ও নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রাণপুরুষ ও গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্নদ্রষ্টা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের স্মরণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ব্যতিক্রমধর্মী ক্ষণজন্মা মানুষ ছিলেন। আমাদের সময় তো নয়ই আগের সময়ে তার মতো সমাজ বিপ্লবী মানুষ আমরা পাইনি। তিনি স্বপ্ন দেখতেন তবে তা ব্যক্তিগত পরিচিতি বা ব্যক্তিগত মুনাফার জন্য নয়। তিনি তার জীবনে যত  প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন তার সবই সামাজিক মালিকানায় পরিচালিত। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর কাছে স্বাধীনতা মানে ছিল সামাজিক পরিবর্তন, সকল নাগরিকের সমাজ এবং রাষ্ট্রে সমান অধিকার, সমান সুযোগ লাভ। এ সময় বক্তব্য রাখেন, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি সদস্য সাবেক বিচারপতি মোহাম্মদ আব্দুর রউফ, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, ফরিদা আখতার এবং অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। বক্তারা বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বিকল্প চিন্তার মানুষ ছিলেন। অনেক নতুন কিছু তিনি করে দেখিয়েছেন, অনেক প্রথমের তিনি জন্ম দিয়েছেন। সমাজের ভালোর জন্য সমাজের মানুষের ভালোর জন্য বিশেষ করে নারী মুক্তির জন্য তিনি অনেক দৃষ্টান্ত তৈরি করে গেছেন। তার মতো অকৃত্রিম, খাঁটি দেশপ্রেমিক আর তৈরি হবে কি না সন্দেহ। স্মরণ সভায় অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সহধর্মিণী ও গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি শিরীন হকসহ অন্যান্য ট্রাস্টিরা উপস্থিত ছিলেন।
২৩ এপ্রিল, ২০২৪

দেশে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছে জামায়াত
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের বিভিন্ন থানার উদ্যোগে সুবিধা বঞ্চিতদের মাঝে ঈদসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এতে মহানগরী ও থানা জামায়াতের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বুধবার (১০ এপ্রিল) মু. আতাউর রহমান সরকার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে নেতারা বলেন, এ দেশে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য জামায়াত কাজ করে যাচ্ছে। দেশ মাতৃকার অগ্রগতি ও উন্নয়নে জামায়াত নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। মানুষের মুক্তির সংগ্রামে এ কাফেলা আপসহীন ভূমিকা পালন করবে ইনশাআল্লাহ। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের মোহাম্মদপুর, তুরাগ, ভাষানটেক, শেরেবাংলা নগর, গুলশান, ক্যান্টনমেন্ট ও মিরপুর থানার সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মাঝে ঈদসামগ্রী বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াতের মজলিশে শূরা সদস্য ও মোহাম্মদপুর থানা নায়েবে আমীর মাহাদী হাসান, থানা শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য রবিউল ইসলাম রুবেল, রুহুল আমিন, থানা কর্মপরিষদ সদস্য আশরাফুল আলমসহ বিভিন্ন পর‌্যায়ের নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
১০ এপ্রিল, ২০২৪

বিচ্ছিন্ন আন্দোলনে জাতির মুক্তি মিলবে না : রাশেদ খাঁন
গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেছেন, কোন বিচ্ছিন্ন আন্দোলনে জাতির মুক্তি মিলবে না। তাই আগামীতে বুকে সাহস নিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামতে হবে। তাহলেই এই সরকারের পতন ঘটবে। শুক্রবার (৫ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর তোপখানা রোডের শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদ আয়োজিত ‘বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে রমজানের ভূমিকা’- শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে এ কথা বলেন তিনি। রাশেদ খাঁন বলেন, ১০ টাকা কেজি চাল ও ঘরে ঘরে চাকরির নামে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে আওয়ামী লীগ। এটা সত্য, আমরা এই প্রতারক সরকারকে আন্দোলন করে হঠাতে ব্যর্থ হয়েছি। ২৮ অক্টোবর থেকে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার মতো রাজনৈতিক আন্দোলন বাংলাদেশে হয়নি, যার দায় রাজনৈতিক নেতৃত্বের। এখানে একজন রিকশাওয়ালা বললেন, তিনি ২৮ অক্টোবর থেকে রাজপথে, আজও ঘরে ফেরেননি। কিন্তু রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ভূমিকা কী? এ কারণে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পুলিশ হুইসেল দিলে পালিয়ে যাবে- এমন নেতৃত্ব চাই না, সাউন্ড গ্রেনেড মোকাবিলা করতে পারবে- এমন ছাত্র ও যুব নেতৃত্ব চাই। তিনি আরও বলেন, গণঅধিকার পরিষদ তার সর্বোচ্চ সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে রাজপথে ছিলো, এখনও আছে। কিন্তু আমরা এককভাবে আর কত কী করতে পারবো?  সকলকে নামতে হবে, সাহসী ভূমিকা রাখতে হবে- তাহলেই এই সরকারের পতন হবে। কোনো বিচ্ছিন্ন আন্দোলনে জাতির মুক্তি মিলবে না। দলের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় গার্মেন্টস মালিকরা শ্রমিকদের বেতন-বোনাস এখনও দেয়নি। অবিলম্বে বেতন বোনাস পরিশোধের দাবি জানাই। তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে সরকার নতুন কোনো নাটক সাজাচ্ছে কিনা- আমাদের সন্দেহ হচ্ছে। এই ডামি সরকারকে বিশ্বাস নেই, তারা ক্ষমতায় থাকতে নানা রকম পরিকল্পিত নাটক সাজায়। বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা সম্পদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার ফয়েজ হোসেন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক জোটের সভাপতি মোশারফ হোসেন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম, ইসলামি শ্রমিক আন্দোলনের সহসভাপতি হারুন অর, জাতীয় শ্রমিক পার্টির সভাপতি বাচ্চু মিয়া, বিপ্লবী শ্রমিক সংহতির সভাপতি মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ সভাপতি মঞ্জুর মোর্শেদ মামুন, ঢাকা মহানগর উত্তর শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি মাহবুবুল হক শিপন প্রমুখ।
০১ জানুয়ারি, ১৯৭০

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি / তথ্য-ন্যায্য সমাজ গঠনে এগিয়ে আসুন
বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স সোনিয়া কুইপ সঠিক ও মানসম্মত তথ্য প্রবাহের মাধ্যমে একটি তথ্য-ন্যায্য সমাজ গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল সাউথ এশিয়া সেন্টার ফর মিডিয়া ইন ডেভেলপমেন্ট (স্যাকমিড) ও ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) মিডিয়া স্টাডিজ অ্যান্ড জার্নালিজম বিভাগের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশে সামাজিক ও ডিজিটাল মিডিয়ার ঝুঁকি: উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। ইউআইইউ উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম মিয়ার সভাপতিত্বে সঞ্চালনা করেন ইউআইইউর এমএসজে বিভাগের প্রধান ড. শেখ মোহাম্মদ শফিউল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক ড. মারিও হিয়ারস্টেইন ও স্যাকমিডের উপপরিচালক সৈয়দ কামরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইসর নামিয়া আখতার এবং স্যাকমিডের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য নাজার-ই-জিলানী। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।
০৩ এপ্রিল, ২০২৪

বন কর্মকর্তা হত্যায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি নাগরিক সমাজের
কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জের দোছড়ি বন বিটের কর্মকর্তা সাজাদুজ্জামানকে নির্মমভাবে হত্যায় জড়িতদের অতিসত্বর আইনের আওয়ায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে নাগরিক সমাজ। রোববার (৩১ মার্চ) এ সংক্রান্ত একটি চিঠি প্রধান বন সংরক্ষক বরাবর পাঠায় নেতৃবৃন্দ। চিঠিতে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উল্লেখ করেন, দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জের দোছড়ি বন বিটের কর্মকর্তা সাজাদুজ্জামানের মৃত্যুর সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, প্রয়াত সাজাদুজ্জামান শনিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জের আওতাভুক্ত রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণমারা এলাকায় বনের জমি রক্ষা করতে গিয়ে ভূমি দস্যুদের নির্মমতার শিকার হন। উখিয়া রেঞ্জের হরিণমারা অংশ থেকে পাহাড় কেটে বালু সরবরাহ করার সময় একটি মিনি ট্রাক (ডাম্পার) সাজাদুজ্জামানকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি। এ ঘটনায় আহত হন আরও এক বন কর্মকর্তা। এ ঘটনায় নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা সাজাদুজ্জামানের অপহত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ও তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানিয়েছেন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এর আগে ২০২০ সালের ৭ আগস্ট মো. ইউসুফ উদ্দীন নামে মহেশখালী বন রেঞ্জ কর্মকর্তা পাহাড় ও বনখেকোর হাতে অপহত্যার শিকার হয়েছিল। সে ঘটনারও সঠিক ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার হয়নি। পাহাড় ও বন খেকোদের দমন করতে না পারার ব্যর্থতা এসব অপরাধীকে আরও বেপরোয়া করে তুলেছে। যারই ধারাবাহিকতায় মো. ইউসুফের পর সাজাদুজ্জামানকে আবারও অপহত্যার শিকার হতে হলো। নেতৃবৃন্দ নির্মম এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তারা প্রয়াত মো. ইউসুফ ও সাজাদুজ্জামানের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ এবং আহত বন কর্মকর্তার চিকিৎসা দেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে বনভূমি সুরক্ষায় ভূমিদস্যুদের বাড়তি ঝুঁকিতে থাকা কর্মীদের জন্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা ও নিরাপদ কর্মক্ষেত্র তৈরির উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ জানানোসহ দেশের বনভূমি রক্ষায় এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন তারা। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন নেতৃবৃন্দ। চিঠিতে সই করেছেন- মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুলতানা কামাল, নিজেরা করি এর সমন্বয়কারী খুশী কবির, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) এর নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির ও স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের পরিবেশ বিজ্ঞানবিভাগ ও ডিন, বিজ্ঞান অনুষদের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার।
৩১ মার্চ, ২০২৪

সমাজসেবা অধিদপ্তরে ৩৪৮ জনের বিশাল নিয়োগ 
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে সমাজসেবা অধিদপ্তর। প্রতিষ্ঠানটি স্থায়ীভাবে রাজস্ব খাতের ৩২ টি পদে মোট ৩৪৮ জনকে নিয়োগ দেবে আবেদনটি শুরু হবে  ১ এপ্রিল থেকে চলবে  আগামী ২১ এপ্রিল পর্যন্ত। ১ এপ্রিল থেকে আবেদন শুরু হয়ে চলবে আগামী ২২ এপ্রিল পর্যন্ত। আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। প্রতিষ্ঠানের নাম : সমাজসেবা অধিদপ্ততর। পদের নাম ও পদসংখ্যা ১. প্রধান সহকারী পদ সংখ্যা : ১৮টি  ২. কম্পিউটার অপারেটর। পদসংখ্যা : ৪টি  ৩. সাঁট-লিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটর। পদসংখ্যা : ০২টি ৪. ইন্সট্রাকটর। পদসংখ্যা : ০২টি ৫. ইন্সট্রাকটর ফর ট্রেড কোর্স। পদসংখ্যা : ০৩টি  ৬. স্টেরিও টাইপিং মেশিন অপারেটর। পদসংখ্যা : ০১টি  ৭. সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর। পদসংখ্যা: ০১টি ৮. ফিল্ড সুপারভাইজার। পদসংখ্যা : ২০টি  ৯. গ্রাজুয়েট টিচার। পদসংখ্যা : ১৪টি  ১০. অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক। পদসংখ্যা : ৫৭টি  ১১. ডাটা এন্ট্রি অপারেটর। পদসংখ্যা : ৩১টি  ১২. হিসাব সহকারী। পদসংখ্যা : ০৮টি ১৩. স্টোর কিপার। পদসংখ্যা: ৪টি ১৪. টেলিফোন অপারেটর। পদসংখ্যা :০১টি   ১৫. বেঞ্চ সহকারী। পদসংখ্যা : ০১টি  ১৬. নার্স পদসংখ্যা : ০৪টি  ১৭. কম্পাউন্ডার। পদসংখ্যা : ৩২টি  ১৮। গাড়ি চালক পদসংখ্যা : ০২টি  ১৯. ফটোকপি অপারেটর পদসংখ্যা : ০২টি  ২০. কারিগরি প্রশিক্ষক (উপজেলা) পদসংখ্যা : ১১টি  ২১. হেলপার :  পদসংখ্যা : ০২টি  ২২. ফিডার এটেনডেন্ট পদসংখ্যা : ০১টি  ২৩. আয়া পদসংখ্যা : ০৫টি  ২৪. এ্যাটেনডেন্ট পদসংখ্যা :০২টি ২৫. দারোয়ান পদসংখ্যা : ০৪টি  ২৬. নিরাপত্তা প্রহরী পদসংখ্যা : ১৫টি ২৭. বাবুর্চি পদসংখ্যা : ২০টি  ২৮. সহকারী বাবুর্চি। পদসংখ্যা : ০২টি  ২৯. মালি পদসংখ্যা :০১টি  ৩০. পরিচ্ছন্নতা কর্মী-০৪ ৩১. অফিস সহায়ক পদসংখ্যা : ৬৭টি  ৩২.বার্তাবাহক পদসংখ্যা :০৮টি   আবেদনের যোগ্যতা : প্রতিটি পদে আবেদনের জন্য আবেদনের যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা এবং বয়সসীমা আলাদা আলাদা। পদভেদে আবেদনের যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা এবং বয়সসীমার শর্তাবলি জানা যাব নিচের বিজ্ঞপ্তিতে ।  বয়স : প্রার্থীর বয়স ০১-০৪-২০২৪  তারিখে ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে হতে হবে । তবে মুক্তিযোদ্ধা/শহীদ মুক্তিযোদ্ধার  সন্তানদের   ক্ষেত্রে বয়স ৩২বছর  ।  আবেদনের নিয়ম : আগ্রহী প্রার্থীরা (http://dss.teletalk.com.bd) ওয়েবসাইট থেকে আবেদনপত্র পূরণ করে ২১ এপ্রিল ২০২৪ তারিখে পর্যন্ত জমা দিতে পারবেন ।
২৯ মার্চ, ২০২৪

ই-সিগারেট / নতুন মোড়কে পুরনো সর্বনাশ
ই-সিগারেট। ধূমপানের আধুনিক ভার্সন। ধূমপায়ীরা একে বলে থাকে ভেপ (Vape)। আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এই ই-সিগারেট ইতোমধ্যে পৌঁছে গেছে এদেশের তরুণদের হাতেও। শুরুতে যখন ই-সিগারেট বাজারজাত হয়, তখন বলা হয়েছিলো যে ‘এটি ধূমপান ছাড়ার বিকল্প। সিগারেটের চেয়ে কম ক্ষতিকর। সেই সঙ্গে স্টাইলিশও।’ এসব বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে অনেকেই ফ্যাশন হিসেবে ই-সিগারেটের দিকে ঝুঁকে পড়েন। নিজেদের অজ্ঞাতসারে আসক্ত হয়ে পড়ে। সিগারেট কোম্পানিগুলো এখন বিনিয়োগ করছে ই-সিগারেটে। টার্গেট তরুণ সমাজ। গত একদশকে বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলো ই-সিগারেটেও বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেছে। তরুণদেরকে প্রলুব্ধ করার জন্যে নানানরকম প্রচারণা তারা চালাচ্ছে। বিশেষত ওটিটি ফ্লাটফর্মে নাটক সিনেমায় যে হরহামেশা ধূমপান ও ভেপিং করতে দেখা যায়। এটা মোটেও কাকতালীয় নয়, বরং সঙ্ঘবদ্ধ বিজ্ঞাপনী প্রচারণার অংশ। নায়ক-নায়িকা শিল্পী-মডেল মিউজিশিয়ানদের প্রকাশ্যে ভেপিং করার জন্য মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার দেয় এই তামাক কোম্পানিগুলো। যা দেখে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে তরুণরা। গোপনে ভেপিং মেলা আয়োজনের মাধ্যমেও তরুণদের আকৃষ্ট করার অপচেষ্টা তারা চালাচ্ছে। আসলে এটি তরুণ প্রজন্মকে নেশায় আসক্ত করার সর্বশেষ কৌশল। ব্যাপারটা এমন নয় যে ভেপিং একেবারেই নতুন কিছু। ধূমপানের আদি ও বহুল ব্যবহৃত রূপটিকে আধুনিকতার মোড়কে নতুনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। নিকোটিনসহ ক্ষতিকর যে রাসায়নিক উপাদানগুলো বিড়ি-সিগারেটে পাওয়া যায়, প্রায়ই একই জিনিস আছে ই-সিগারেটেও। তবে সেবন রীতি এবং বাহ্যিক রূপটিতে কিছু নতুনত্ব আনা হয়েছে। বাঁকানো পাইপ, কলম, ফোন কিংবা পেনড্রাইভ- এমন অনেক বিচিত্র আকারের ই-সিগারেট পাওয়া যায়। মেশানো থাকে নানা সুগন্ধি ফ্লেভার। মোট কথা তরুণ সমাজকে আকৃষ্ট করার সব ব্যবস্থাই আছে এতে। নতুন মোড়কে এটি একটি পুরনো সর্বনাশ। সর্বশেষ জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ এর প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ৪৮ শতাংশ তরুণ, যাদের বয়স ২৪ বছর বা তার নিচে। অর্থাৎ বাংলাদেশ এখন ‘ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট’ সময়কাল অতিবাহিত করছে যেখানে, নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর তুলনায় কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বেশি। আর বাংলাদেশে ই-সিগারেটের ব্যবহারকারীদের অধিকাংশই এই কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী। আশ্চর্যে বিষয় হচ্ছে ই-সিগারেট যে সিগারেটের মতই ক্ষতিকর এটা অধিকাংশই জানে না। তারা ই-সিগারেটকে একটি ক্ষতিহীন ধূমপান ও স্মার্টনেসের অংশ হিসেবে বিবেচনা করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) তামাক নিয়ে তাদের প্রতিবেদনে ই-সিগারেটকে সুনিশ্চিতভাবে স্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর পণ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত ইতোমধ্যেই ২০১৯ সালে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এছাড়া শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরসহ পৃথিবীর ৩২টি দেশ এসব পণ্য নিষিদ্ধ করেছে। অস্ট্রেলিয়া ইতিমধ্যেই ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপ নিচ্ছে। কারণ দেশটিতে ই-সিগারেট এতটাই সহজলভ্য যে এটাকে মহামারি হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে ই-সিগারেট নিয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা উল্লেখ নেই। এমতবস্থায় এফসিটিসি’র আলোকে বিদ্যমান ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ (সংশোধীত ২০১৩) সংশোধন করে ই-সিগারেট বা হিটেড টোব্যাকে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন। ২০৪০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অর্জনের লক্ষ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে এই বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে আরও শক্তিশালী ও বাস্তবমূখী করতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ছয়টি সংশোধনীর প্রস্তাব করেছে। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি সংশোধনী হলো-ই-সিগারেট ও হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্ট (এইচটিপি) নিষিদ্ধ করা। অন্যান্য প্রস্তাবগুলো হলো-তামাক কোম্পানির সকল সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বাতিল করা, বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রি নিষিদ্ধ করা এবং সিগারেটের প্যাকেটের গায়ে স্বাস্থ্যঝুঁকির চিত্র ৫০ ভাগ থেকে বাড়িয়ে ৯০ ভাগ করা। আশা করা যায় প্রস্তাবিত সংশোধনীগুলো অতিদ্রুত পাস করে আইনে রূপদানের জন্য সরকার তথা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাযথ পদক্ষেপ নেবে। একটি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং ইতিবাচক পরিবর্তনে তরুণ জনগোষ্ঠীর অবদান অতি গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনায় ই-সিগারেট আমদানি, বিক্রয় ও বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করতে হবে। ই-সিগারেট বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হলে তরুণ ও কিশোর বয়সীদের ধূমপানে আসক্ত হওয়া থেকে বিরত রাখা যাবে, যা ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে সহায়তা করবে। লেখক: চেয়ারম্যান, ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক হেলথ, অতীশ দীপংকর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
২৮ মার্চ, ২০২৪
X