মহান মে দিবসে শোষণ-বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের।
বুধবার (১ মে) সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি দীপক শীল এবং সাধারণ সম্পাদক মাহির শাহরিয়ার রেজা এক যৌথ বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে মে দিবসের বিপ্লবী প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে শোষণ-বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন নেতারা। তারা বলেন, মহান মে দিবসে নতুন করে শপথ নিয়ে শ্রমজীবী মানুষকে সব ধরনের শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করতে হবে। শ্রমিকশ্রেণির রক্তস্নাত লাল পতাকা ঊর্ধ্বে তুলে ধরে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে সকল দাবি দাওয়া আদায় করে নিতে হবে। বর্তমান সরকার ইতোমধ্যেই শ্রমিকশ্রেণির মানুষের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যত শ্রমিককে হত্যা করা হয়েছে তার কোনো বিচার এখন পর্যন্ত জনগণ পায় নাই।
নেতারা বলেন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন তার ইতিহাস অর্পিত দায় থেকে সর্বদায় শ্রমিকশ্রেণির মানুষের পাশে রয়েছে। শোষণ-বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কৃষক, শ্রমিক, জনতার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলায়ে ছাত্র ইউনিয়নের প্রতিটি নেতাকর্মী লড়াই করবে এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ঐক্য সাধনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন নিশ্চিত করা হবে।
নেতারা অবিলম্বে শ্রমজীবী মানুষের জন্য রেশনের ব্যবস্থা করার দাবি জানান। বন্ধ করে দেওয়া কল-কারখানা চালু, ন্যূনতম শ্রমসময় ৮ ঘণ্টা নির্ধারণ, জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকাসহ সব সেক্টরে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ, অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত, আইএলও কনভেশন অনু্যায়ী শ্রম আইন সংশোধন, শ্রমিকদের অকারণ হয়রানি এবং ছাঁটাই বন্ধ, শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধসহ সঠিক সময়ে চলতি মাসের বেতন এবং উৎসব বোনাস প্রদান, সব ধরনের শ্রমিক হত্যার বিচার দাবি করেন নেতারা।
উল্লেখ্য, আজ মহান দিবসের ১৩৮তম বার্ষিকী। ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে আমেরিকার শিকাগো শহরের হে মার্কেটের সামনে জমায়েত হওয়া শ্রমিকদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণের ঘটনায় শহিদদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে এ দিবস পালিত হয়। সেদিন দৈনিক আট ঘণ্টার কাজের দাবিতে শ্রমিকরা হে মার্কেটে জমায়েত হয়েছিল। তাদের ঘিরে থাকা পুলিশের প্রতি এক অজ্ঞাতনামার বোমা নিক্ষেপের পর পুলিশ শ্রমিকদের ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে। ফলে প্রায় ১০-১২ জন শ্রমিক ও পুলিশ নিহত হয়।
মন্তব্য করুন