বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে বাধা নৈরাজ্য ঢাকতে
ব্যাংকিং খাতের লুটপাট, নৈরাজ্য ও অনিয়ম ধামাচাপা দিতেই বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলে মনে করেন সাংবাদিক নেতারা। দ্রুত এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে সাংবাদিকদের আগের মতো নির্বিঘ্নে প্রবেশাধিকার দেওয়া না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। গতকাল বুধবার ইআরএফ কার্যালয়ে ‘সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকারে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা আরোপ বিষয়ে নেতৃবৃন্দকে অবহিতকরণ’ শীর্ষক সভায় এসব কথা বলেন তারা। সভায় বক্তব্য দেন বিএফইউজে (একাংশ) সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ডিইউজের একাংশের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, সাজ্জাদ আলম খান তপু, অন্য অংশের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ, সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ, ইআরএফের সাবেক সভাপতি ও ইংরেজি দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, ইউএনবির সম্পাদক ফরিদ হোসেন, সিনিয়র সাংবাদিক সোহেল মঞ্জুর, ইআরএফের সাবেক সভাপতি মনোয়ার হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান ও এস এম রাশিদুল ইসলাম প্রমুখ। ইআরএফ সভাপতি রেফোয়েত উল্লাহ মীরধার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম। সাংবাদিক নেতাদের অবস্থানে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াবের শীর্ষ নেতৃত্ব। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, সামনে বাজেট আসছে। এমন সময়ে কেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে? সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংকিং খাতে যে নৈরাজ্য চলছে তারই অংশ হিসেবে সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশ বন্ধ করা হয়েছে। দেশের ৭-৮টা ব্যাংকের মালিক একটা গ্রুপ। রাতারাতি আরও এক ব্যাংকের মালিকানা বদলে গেল। তিনি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সাংবাদিক সংগঠনগুলোকে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। বিএফইউজের একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা আমাদের এই যৌক্তিক দাবি আদায় করতে পারব। ঢাকার বাইরে থাকায় সভায় সরাসরি অংশ নিতে না পারলেও ইআরএফের দাবি আদায়ে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিএফইউজের অন্য অংশের সভাপতি ওমর ফারুক ও সাধারণ সম্পাদক দীপ আজাদ। ডিইউজের একাংশের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে এমন একজন গভর্নরকে বসানো হয়েছে, তিনি ওই পদের যোগ্যই নন। তার যে দুর্বলতা, সেটি ঢাকার জন্যই তিনি সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। প্রয়োজনে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের গেটে অবস্থান নেব। গভর্নরকে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশ করতে দেব না। বিএফইউজের একাংশের মহাসচিব আব্দুল কাদের গণি চৌধুরী বলেন, ব্যাংকিং খাতে এখন আড়তদার তৈরি হয়েছে, একজনই অনেক ব্যাংকের মালিক। এ ছাড়া রিজার্ভ চুরি, ভল্টের সোনা চুরির মতো ঘটনার খবর যেন জনগণের সামনে না আসে, তাই চোরদের পাহারা দেওয়ার জন্যই এমন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ডিইউজের একাংশের সভাপতি (নির্বাচিত) সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে আগের মতো প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ বলেন, প্রতিষ্ঠান যখনই তথ্য দেবে না, তখনই লুকোচুরির বিষয় থাকবে বলে আমরা ধরে নেব। সাংবাদিকদের প্রবেশ উন্মুক্ত করা না হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গেট বন্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। ইআরএফের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক শামসুল হক জাহিদ বলেন, অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রকাশ করলে তাদের সমস্যা হওয়ার কারণেই প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। ইউএনবির সম্পাদক ফরিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে নিজেদেরই ক্ষতি করছে। তারা কোনো বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতেই এমন করছে কি না সেটিও খতিয়ে দেখা দরকার।
১৬ মে, ২০২৪

অনিয়ম ঢাকতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে বাধা
ব্যাংক খাতের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা ঢাকতে সাংবাদিকদের অবাধ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ নিয়ে ব্যাংকিং নিয়ে সংবাদ কাভার করা সাংবাদিকদের মধ্যে অসন্তোষ জন্ম নেয়। ফলে বিক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা আজ বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে অবস্থান নেন। তবে বিষয়টি সমাধানের জন্য বেলা ১১টার দিকে অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মীরধা ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে বৈঠক করেন।  বৈঠকে শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক সাংবাদিকদের বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এখন থেকে সাংবাদিকরা ব্যাংকের নির্দিষ্ট অনুমতিপত্র (প্রবেশ পাস) নিয়ে শুধু মুখপাত্রের কাছে যেতে পারবেন। তবে কোনো কর্মকর্তা যদি সাংবাদিকদের পাস দেন, সেক্ষেত্রে তারা শুধু সেই কর্মকর্তার কাছে যেতে পারবেন। তবে আগের মতো তারা অবাধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো বিভাগে প্রবেশ করতে পারবেন না। এ বিটের বিপোর্টার রহিম শেখ বলেন, সাংবাদিকদের জন্য আগে বাংলাদেশ ব্যাংকে অবাধ যাতায়াত ছিল। বর্তমানে সেখানে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এখন সাংবাদিকরা পাস ইস্যুর মাধ্যমে ব্যাংকের শুধু নির্দিষ্ট কর্মকর্তার কাছে যেতে পারবেন। এর বাইরে অন্য কোথাও বা কোনো কর্মকর্তার কাছে যেতে পারবেন না। এর মাধ্যমে সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে অবাধ যাতায়াত বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে। তিনি জানান, এর আগেও পাস ইস্যুর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রবেশ করতে হতো। তবে ভেতরে অবাধ যাতায়াত ছিল। বর্তমানে তা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।  তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনরের সঙ্গে আজ দেখা করে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এতে তিনি কোনো সমাধান দেননি। এর প্রতিবাদে আমরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি।
২৫ এপ্রিল, ২০২৪
X