হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও রাফাহতে চলছে হামলা
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ, যুদ্ধবিরতি আলোচনা অব্যাহত থাকা এবং প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহতে দফায় দফায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এরকম অবস্থায় সেখান থেকে মালপত্র নিয়ে সরে যাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এ পর্যন্ত প্রায় ৮০ হাজার মানুষ রাফাহর পূর্বাঞ্চল থেকে সরে গেছে বলে জানা গেছে। এখনো বন্ধ রয়েছে গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাফাহ ক্রসিং। ফলে সেখাকার বেশিরভাগ মানুষ খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। পানীয় জলের সংকট আরও তীব্র হয়েছে। চালু থাকা হাসপাতালগুলোও টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে। এরই মধ্যে গাজার আল-শিফা হাসপাতালে মিলেছে তৃতীয় গণকবরের সন্ধান। এই গণকবর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা নিয়ে সমঝোতার ক্ষেত্রে ইসরায়েলকে আর কোনো ছাড় দিতে রাজি না থাকার কথা জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। গাজায় সাত মাস ধরে চলা ইসরায়েলের যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টায় মিশরের কায়রোয় আলোচনা অব্যাহত থাকার মধ্যে হামাস এ মনোভাবের কথা জানাল। এদিকে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে। প্রতিদিনই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এ আন্দোলনে শামিল হচ্ছে। খবর বিবিসি ও আলজাজিরার। গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ নগরীতে ইসরায়েলকে বড় কোনো অভিযান না চালানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সতর্ক করার পরও সেখানে ভারী গোলাবর্ষণ শুরু করেছে ইসরায়েল। রাফাহর একজন ত্রাণকর্মী বিবিসিকে বলেন, নগরীটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় তুমুল বোমা হামলা হয়েছে। এমন বোমা হামলা গত দুই সপ্তাহেও দেখা যায়নি। ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক জাতিসংঘ ত্রাণ সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) এই কর্মী বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে কয়েক মাইল দূরে রাফাহর পূর্বাঞ্চলে ঘন ঘন বোমা হামলা হয়। আর সেই বোমার আঘাতে কেঁপে উঠছে পশ্চিম রাফাহর ভবন, যেখানে তিনি রয়েছেন। এমন হামলার মুখে বাস্তুচ্যুত মানুষদের নিয়ে এলাকা ছেড়ে যাচ্ছে বেশকিছু গাড়ি। জানালা দিয়ে তা দেখতে পাওয়ার কথা জানান লুইস নামের এই ত্রাণকর্মী। তিনি বলেন, রাফাহতে এমন কিছু মানুষ আছে, যারা বেশিদূর যেতে অপারগ। কারণ তাদের অনেকেই বৃদ্ধ, আবার অনেকেই শিশু। নিরাপদ বলতে জায়গা খুব কম। গাজায় অল্পকিছু অবকাঠামোই দাঁড়িয়ে আছে। এ ছাড়া গাজার আর কোথাও নিরাপত্তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। রাফাহ নগরীতে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসন এরই মধ্যে প্রতিশ্রুত বোমার চালান ইসরায়েলে পাঠানো স্থগিত করে তাদের বড় সতর্কবার্তা দিয়েছে। ইসরায়েলের সেনারা স্থল অভিযানে গাজার ঘনবসতিপূর্ণ রাফাহ নগরীতে ঢুকলে যুক্তরাষ্ট্র তাদের অস্ত্র ও গোলা সরবরাহ করবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাইডেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও সেখানে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। আল-শিফা হাসপাতালে তৃতীয় গণকবরের সন্ধান, ৪৯ লাশ উদ্ধার : টানা সাত মাসের বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে চলছে ইসরায়েলি আগ্রাসন। এরই মধ্যে গাজার আল-শিফা হাসপাতালে মিলেছে তৃতীয় গণকবরের সন্ধান। এই গণকবর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আনাদোলু বলছে, গাজা উপত্যকায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে সাতটি গণকবর পাওয়া গেছে। অন্যদিকে, গত সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটিতে নৃশংস হামলা অব্যাহত রেখেছে। ইসরায়েলি এই আক্রমণের ফলে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ৩৪ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি লোক নিহত এবং আরও ৭৮ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। গাজার মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, আল-শিফা হাসপাতালে তিনটি গণকবর, দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে তিনটি এবং উত্তর গাজার কামেল আদওয়ান হাসপাতালে একটি গণকবর পাওয়া গেছে। সাতটি গণকবর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫২০টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরায়েলকে আর ছাড় দেবে না হামাস: কাতারে হামাসের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সদস্য ইজ্জাত এল-রেশিক গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, গত সোমবার গ্রহণ করা যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের বাইরে তারা যাবেন না। প্রস্তাবে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে গাজায় জিম্মি ইসরায়েলিদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে মুক্তি ও ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুদের ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা আছে। ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর বিষয়ে আন্তরিক নয় এবং রাফাহতে আগ্রাসন চালানো ও সীমান্ত ক্রসিং দখলের ঘটনা আড়াল করার মাধ্যম হিসেবে সমঝোতাকে ব্যবহার করছে তারা। তাই ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আর ছাড় দেওয়ার কোনো মানে নেই। হামাসের এ বক্তব্য নিয়ে ইসরায়েল তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি। গত সোমবার দেশটি ঘোষণা করে, হামাসের গ্রহণ করা তিন দফার ওই যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মানা সম্ভব নয়; কেননা এটির শর্তগুলো খুব দুর্বল এবং তা কার্যকর করার মতো নয়। দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠায় মঙ্গলবার থেকে কায়রোয় বৈঠকে বসেছেন হামাস, ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র, মিশর ও কাতারের প্রতিনিধিরা। এ বিষয়ে একটি সূত্রের বরাত দিয়ে মিশরের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত আল-কাহেরা টিভি জানায়, গতকাল সারা দিন ও রাতেও আলোচনা করেছেন প্রতিনিধিরা। ইতোমধ্যে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র জানায়, হামাস তার যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব সংশোধন করেছে এবং এটি পর্যালোচনার মাধ্যমে সমঝোতা প্রচেষ্টায় চলা অচলাবস্থা দূর করা যেতে পারে। হামাসের সর্বশেষ বিবৃতির কয়েক ঘণ্টা আগেও ওয়াশিংটন বলেছে, সমঝোতা থেকে খুব বেশি দূরে নয় দুই পক্ষ।
১০ মে, ২০২৪

পরামাণু বোমা তৈরির হুঁশিয়ারি ইরানের
মধ্যপ্রাচ্যে এখন আলোচনার শীর্ষে ইরানের সামরিক সক্ষমতা। দেশটি সম্প্রতি ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে। ফলে ইরানের আসলে কতটা সামরিক সক্ষমতা রয়েছে তা নিয়ে অনেকে মনে কৌতূহলের উদ্রেক হয়েছে। এমন অবস্থার মধ্যে পরামাণু বোমা তৈরির হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। বৃহস্পতিবার (৯ মে) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনির উপদেষ্টা কামাল গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, কোনো কারণে যদি ইরানের অস্তিত্ব হুমকির মুখোমুখি হয়, তবে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির বিষয়ে দেশটি তার নীতির পরিবর্তন করবে।  বৃহস্পতিবার ইরানের স্টুডেন্ট নিউজ নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, খামেনির এ উপদেষ্টা বলেন, আমাদের পারমাণবিক বোমা তৈরির কোনো সিদ্ধান্ত নেই। তবে ইরানের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়লে, আমাদের সামরিক অবস্থান পরিবর্তন করা ছাড়া কোনো বিকল্প থাকবে না। এর আগে ২০০০ সালের শুরুর দিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি পারমাণবিক অস্ত্রের উন্নয়ন নিষিদ্ধ করে একটি ফতোয়া জারি করেন। তিনি বলেন, ইসলামে এটি হারাম বা নিষিদ্ধ।  এরপর ২০২১ সালে ইরানের তৎকালীন গোয়েন্দামন্ত্রী বলেন, পশ্চিমা চাপের মুখে ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্রের দিকে অগ্রসর করতে পারে।  সম্প্রতি ইরানের পরমাণু অস্ত্র সক্ষমতা নিয়ে সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টে একটি নিবন্ধ লিখেছেন মার্কিন সাংবাদিক জবি ওয়ারিক। যেখানে তিনি দাবি করেন, ইরান পরমাণু বোমা তৈরির একেবারে দ্বারপ্রান্তে। সাংবাদিক জবি ওয়ারি লেখেন, ইরানের সঙ্গে করা পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসে বড় ভুল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। ফলে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের নজর এড়িয়ে পরমাণু অস্ত্র তৈরির পথে এগিয়ে যাচ্ছে দেশটি। নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়— বর্তমানে নিজেদের নাতাঞ্জ ও ফোরদো পরমাণু প্রকল্পে ৬০ শতাংশ হারে ইউরোনিয়াম সমৃদ্ধ করছে ইরান। পরমাণু অস্ত্র বা বোমা তৈরি করতে প্রয়োজন ৯০ শতাংশ বা তার বেশি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম। ইরান যে গতিতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, তাতে শিগগিরই পরমাণু অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা অর্জন করবে। জবি ওয়ারিক লেখেন, পশ্চিমা বিশ্ব দীর্ঘদিন ধরেই ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। জবাবে ইরান বলে আসছিল—তাদের এই প্রকল্প শান্তিপূর্ণ এবং বেসামরিক উদ্দেশ্যে নির্মিত। তবে, সম্প্রতি ইরানি কর্মকর্তরা বিষয়টিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করতে শুরু করেছেন। দেশটির পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ এসলামির একটি বক্তব্য ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। প্রথমবারের মতো ইরানের কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে তিনি বলেন, আগ্রাসন রুখতে ইরান এই অস্ত্র ব্যবহার করবে। নিবন্ধে বলা হয়— পরমাণু অস্ত্র বানানোর আগেই ইরানকে যদি থামানো না যায়, তাহলে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে গণবিধ্বংসী এই অস্ত্র বানানোর হিড়িক পড়ে যাবে। এই দৌড়ে সবার আগে নাম লিখাবে সৌদি আরব। দেশটির কার্যত শাসক মোহাম্মদ বিন সালমান এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন— ইরান পরমাণু বোমা বানালে বসে থাকবে না সৌদিও। অন্যদিকে আঞ্চলিক শক্তিধর তুরস্ককেও তখন থামিয়ে রাখা যাবে না। ভয়াবহ সেই প্রতিযোগিতার ফলে আবারও বিস্তার ঘটবে পরমাণু অস্ত্রের, যা গোটা বিশ্বের জন্যই হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
০৯ মে, ২০২৪

ফ্রান্সকে কঠোর হুঁশিয়ারি রাশিয়ার
ফ্রান্সকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাশিয়া। দেশটি জানিয়েছে, ইউক্রেনে সেনা পাঠালে তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু বানানো হতে পারে। বুধবার (৮ মে) আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যদি ফ্রান্সের সেনারা সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে প্রবেশ করে তাহলে অবশ্যম্ভাবীভাবে তারা রুশ সশস্ত্র বাহিনীর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে। আমার কাছে মনে হচ্ছে এরইমধ্যে প্যারিস তার প্রমাণ পেয়েছে।  তিনি দাবি করেন, ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর ব্যাপারে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ কেবল ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটো মিত্রদের থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়নি, বরং ফরাসির নাগরিকদের সংখ্যাগরিষ্ঠরাও এটি প্রত্যাখ্যান করেছে।  এর আগে সংবাদমাধ্যম জানায়, প্রথমবারের মতো ইউক্রেনে সরাসরি সেনা মোতায়েন করেছে ন্যাটোভুক্ত দেশ ফ্রান্স। ইউক্রেনের ৫৪তম ইনডিপেনডেন্ট ম্যাকানাইজড ব্রিগেডকে সহযোগিতার জন্য এই সেনা পাঠানো হয়েছে। যারা ফ্রান্সের তৃতীয় পদাতিক রেজিমেন্টের সদস্য। দেশটির ফরেন লিয়াজোঁ বা বিদেশিদের নিয়ে গঠিত সেনা ইউনিটের মূল অংশ তারা।  ইউক্রেনে প্রথম ধাপে এই ইউনিটের ১০০ সেনা গেছেন। ধাপে ধাপে আরও দেড় হাজার সেনা সেখানে পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে ফ্রান্স। রাশিয়ার দনবাসে ফরাসি সেনা পাঠানোর এই ঘটনাকে গুরুতর প্ররোচণামূলক পদক্ষেপ বলে মনে করছেন সামরিক বিশ্লেষকরা।  কারণ এই সেনাদের এমন জায়গায় পাঠানো হয়েছে, যেখানে সরাসরি যুদ্ধ চলছে। দনবাস অঞ্চলে রাশিয়ার সেনাদের অগ্রযাত্রা ঠেকাতে ইউক্রেনীয়দের প্রতিরোধ যুদ্ধকে সহায়তা দেবেন এই সেনারা। প্রথম ১০০ জনের মধ্যে গোলাবারুদ ও নজরদারি বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। হঠাৎ করে ফ্রান্সের এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় পেছনে কিছু কারণ আছে। তা হলো- আফ্রিকার সাহেল অঞ্চল থেকে সম্প্রতি ফরাসি সেনাদের চলে আসতে হয়েছে। সেই শূন্যস্থান পূরণ করেছে রাশিয়ান সেনারা।  আফ্রিকার ফরাসিভাষী দেশগুলোর ওপর ফ্রান্সের যে নিয়ন্ত্রণ ও সেখান থেকে আসা সম্পদের যে প্রবাহ, সেটা বিপ্লব ও বিদ্রোহের কারণে ভেঙে পড়েছে। এ ক্ষেত্রে রাশিয়ার একটা ভূমিকা আছে। এই ভূমিকার পেছনে ভ্লাদিমির পুতিনের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুতিনের এই কৌশলের কারণে ফ্রান্সের প্রভাব খর্ব হয়েছে এবং বিদেশে খনিশিল্প ও অন্যান্য ব্যবসায় ফ্রান্সের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বড় আঘাতটি এসেছে নাইজার থেকে। সেখান থেকে ফ্রান্সে ইউরেনিয়ামের বড় চালান আসত। পুতিন সেটাও হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিকভাবে নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছে ফ্রান্স।  
০৯ মে, ২০২৪

ইসরায়েলকে পুতিনের কঠোর হুঁশিয়ারি
ইসরায়েলকে কঠোর হুশিয়ারি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই খবর জানিয়েছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা রিয়া নভোস্তি। প্রতিবেদনে বলা হয়, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন- হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যেই ইসরায়েলি বাহিনী রাফা সীমান্ত ক্রসিং নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। সে সঙ্গে শহরটিতে বিমান হামলা অব্যাহত রাখা হয়েছে। এতে দুঃখিত হয়েছেন পুতিন। প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, রাফা শহরে ইসরায়েলকে কঠোরভাবে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন মেনে চলতে হবে। ইসরায়েলের ট্যাংক বহর ফিলিস্তিনের সীমান্ত নগরী রাফাতে প্রবেশ করেছে যা খুবই উদ্বেগজনক। পুতিনের বার্তা গোটা বিশ্বের কাছে পৌঁছে দিতে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সেখানে তিনি বলেন, রাশিয়া এই অনুপ্রবেশকে আগ্রাসন এবং ১০ লাখেরও বেশি নাগরিকের এলাকায় একটি অস্থিতিশীলতার কারণ হিসেবে দেখছে। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের বিভিন্ন ধারা কঠোরভাবে মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন। পুতিন জোর দিয়ে বলেছেন, রাফা শহরে মানবিক পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার মতো যে কোন হুমকিকে আগ্রাসন হিসাবে বিবেচনা করবে মস্কো। এদিকে গত কয়েক দিন ধরে মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় চলা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। কিন্তু ‘শর্ত পূরণ না হওয়ায়’ এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরায়েল। একই সঙ্গে তারা রাফা অঞ্চলে অভিযান অব্যাহত রাখারও ঘোষণা দিয়েছে তারা। বর্তমানে রাফা শহরে ১০ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি রয়েছেন। এই বিপুলসংখ্যক মানুষের জীবন আবারও হুমকির মুখে পড়েছে।
০৯ মে, ২০২৪

ইসরায়েলের রাফা অভিযান নিয়ে বাইডেনের কড়া হুঁশিয়ারি
গাজার রাফায় ইসরায়েলের হামলার সিদ্ধান্তের বিষয়ে আবারও অবস্থান স্পষ্ট করল যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রশাসন এখনই রাফায় স্থল অভিযান চায় না। এ বিষয়ে ইসরায়েলকে বিরত থাকতে সতর্ক করেছেন খোদ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, গাজার রাফা শহরে বড় ধরনের স্থল অভিযান শুরু করলে যুক্তরাষ্ট্র কিছু অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেবে। সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। বাইডেন বলেন, ‘যদি তারা রাফায় প্রবেশ করে আমি কিছু অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেব। আমি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভাকে স্পষ্ট বলেছি, যদি তারা জনবহুল এলাকগুলোতে অভিযান চালায়, তাহলে তারা আমাদের সমর্থন পাবে না।’ তবে ইসরায়েলকে নিরাপদ রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করার কাজ চালিয়ে যাবেন বলেও বক্তব্যে অঙ্গীকার করেন। এর আগে গাজায় ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর এই প্রথম ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ আটকে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। অস্ত্রের চালানটি গত সপ্তাহে ইসরায়েলে পাঠানোর কথা থাকলেও সেটি আপাতত পাঠানো হচ্ছে না বলে ইসরায়েলকে জানিয়েছেন ওয়াশিংটনের কর্মকর্তারা। ওই চালানে কয়েক হাজার কেজি বোমা ছিল। বিবিসি জানায়, এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের অস্ত্র ও গোলাবারুদের সবচেয়ে বড় জোগানদাতা যুক্তরাষ্ট্র। তেল আবিব যেন প্রতিবেশী আরব দেশগুলোর তুলনায় সুবিধাজনক অবস্থানে থাকে, তাই প্রতি বছর ৩৮০ কোটি ডলারের সামরিক সাহায্য দেয় মার্কিন প্রশাসন। গাজা যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক পশ্চিমা দেশেরই সমর্থন রয়েছে। কিন্তু তাদেরও আশঙ্কা, রাফায় ইসরাইলের সর্বাত্মক অভিযান অসংখ্য মানুষ হতাহতের ঘটনা ঘটবে এবং মানবিক বিপর্যয় নেমে আসবে। তাই যুক্তরাষ্ট্র এখনই রাফায় স্থল অভিযান চায় না। এ ছাড়া মনে করা হচ্ছে, হামাসের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সমর্থনের জন্য ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার ওপর চাপ বজায় রাখতে চায় বাইডেন প্রশাসন। মিসরের কায়রোয় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চলছে। ইসরাইল এ আলোচনায় কোনো আপসরফায় পৌঁছতে রাজি না হলে তাদের চড়া মূল্য দিতে বাধ্য করবে মার্কিন প্রশাসন। কারণ, এই যুক্তি যে মানা হবে, মধ্যস্থতকারী কাতার ও মিসরকে তার নিশ্চয়তা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েল যে মার্কিন সাহায্যনির্ভর বোমার চালান আটকে এবং আরও চালান আটকানোর হুমকি দিয়ে তা আবারও অনুধাবন করাল ওয়াশিংটন। ইসরায়েলের প্রতি হঠাৎ বাইডেনের বিরূপ আচরণের বিষয়ে আরও একটি কারণ আলোচনা হচ্ছে। তা হলো- যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে গাজা ইস্যুটি জড়িয়ে গেছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলকে সমর্থনের রাশ টেনে ধরতে ডেমোক্র্যাটিক সমর্থকদের কাছ থেকে প্রচণ্ড চাপের মুখে রয়েছেন।  কারণ, আসন্ন নির্বাচনে এই ইস্যুতে তরুণ ভোটারদের কাছ থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন বাইডেন। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলো ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ চোখ রাঙাচ্ছে বাইডেনের নির্বাচনী ফলাফলকে। এর জেরে ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগের অংশ হিসেবে বোমা সরবরাহ আটকে দেওয়া এবং রাফায় হামলার বিরোধিতা প্রকাশ করছেন বাইডেন।
০৯ মে, ২০২৪

রাফায় ঢুকল ইসরায়েলি ট্যাংক, সৌদির হুঁশিয়ারি
কারও কথাই শুনছেন না ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে কোনো যুদ্ধবিরতি হয়নি দাবি করে রাফায় অভিযানের অনুমোদন দিয়েছেন তিনি। এরপরই রাতের অন্ধকারে রাফায় ঢুকে পড়ে ইসরায়েলি ট্যাংক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফিলিস্তিন ও মিসরের কর্মকর্তারাও রাফায় ইসরায়েলি ট্যাংক ঢোকার তথ্য নিশ্চিত করেছে। মিসরের আল কাহেরা টেলিভিশন দেশটির ভেতরকার সীমান্তের অংশের ফুটেজ সম্প্রচার করেছে। ওই ফুটেজে বন্দুকযুদ্ধ ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এ ছাড়া ট্যাংক এবং হেলিকপ্টারের শব্দও শুনতে পাওয়া যায়। মিসরের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দেখে মনে হচ্ছে স্বল্প পরিসরে অভিযান চালানো হবে। অভিযান শেষে সৈন্য প্রত্যাহারের বিষয়েও মিসরকে জানিয়েছে ইসরায়েল। যদিও এ বিষয়ে মুখ খোলেনি তেল আবিব। যুক্তরাষ্ট্রও বিশ্বাস করে যে রাফায় বড় ধরনের অভিযান চালাবে না ইসরায়েল। তবে ইসরায়েলের পদক্ষেপ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে রাফায় বর্তমানে ১২ লাখ ফিলিস্তিনি রয়েছে। তবে এক লাখ গাজাবাসীকে রাফা থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল। তাই বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে বিশ্ব সম্প্রদায়। কয়েক মাস ধরেই নেতানিয়াহু বলে আসছিলেন, বন্দিবিনিময় চুক্তি হোক বা না হোক হামাসের সর্বশেষ শক্ত অবস্থান রাফাকে গুঁড়িয়ে দিয়েই দম নেবেন তিনি। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, হামাসের অবশিষ্ট ৬টি ব্যাটালিয়নের ৪টিই এই শহরে রয়েছে। তাদের বিশ্বাস সংগঠনের শীর্ষ কয়েকজন নেতাসহ রাফা শহরেই বন্দি অবস্থায় রয়েছে ইসরায়েলি জিম্মিরা। তবে রাফায় হামলা চালানোর সবুজ সংকেত দেওয়ার পর নেতানিয়াহু বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ইসরায়েল। রাফায় অভিযান বাদ দিয়ে হামাসের সঙ্গে বন্দি বিনিময় চুক্তি বাস্তবায়ন করতে নেতানিয়াহু প্রশাসনকে চাপ দিচ্ছে বিক্ষোভকারীরা। সোমবার রাতে ইসরায়েলের তেল আবিব ও জেরুজালেমে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। তবে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় ইসরায়েলের পুলিশ। এদিকে রাফা শহরকে লক্ষ্যবস্তু বানানো বিপজ্জনক বলে হুমকি দিয়েছে সৌদি আরব। এমন এক সময় রিয়াদ এমন কড়া ভাষায় কথা বলল, যখন রাফায় অভিযান আসন্ন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। সোমবার সৌদির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তারা ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন মেনে নেবে না। অধিকৃত অঞ্চলে ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধে বিশ্ব সম্প্রদায়কেও এগিয়ে আসারও আহ্বান জানিয়েছে সৌদি আরব।
০৭ মে, ২০২৪

শিক্ষানীতি সংশোধন না হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি হেফাজতের
বিবর্তনবাদ ও ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুর মতো ইসলামবিরোধী সব পাঠ্য সিলেবাস থেকে অপসারণসহ শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কারের দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। দ্রুততম সময়ের মধ্যে শিক্ষানীতি সংশোধন না করলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন সংগঠনের নেতারা। একই সঙ্গে সাত দফা তুলে ধরে তা বাস্তবায়ন এবং নেতাদের বিরুদ্ধে সব মামলা বাতিলের দাবি জানায় হেফাজত। গতকাল রোববার ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে (আইডিইবি) জাতীয় শিক্ষা সেমিনারে হেফাজত নেতারা এসব দাবি জানান। হেফাজতের আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হেফাজতের নায়েবে আমির ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। হেফাজতের আমিরের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী। মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, আতাউল্লাহ আমীন ও মুফতি কিফায়াতুল্লাহ আজহারীর সঞ্চালনায় প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন হেফাজতের সিনিয়র নায়েবে আমির খলিল আহমাদ কাসেমী, নায়েবে আমির সালাহ উদ্দীন নানুপুরী, মুফতি জসিম উদ্দীন, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী, মাওলানা মোবারকুল্লাহ, আহমাদ আলী কাসেমী, খোরশেদ আলম কাসেমী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি, মাওলানা মীর ইদরিস, মাওলানা জালালুদ্দীন, মুফতি হারুন বিন ইজহার, সহকারী মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হুসাইন রাজী, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি বশিরুল্লাহ, অর্থ সম্পাদক মুনির হুসাইন কাসেমী, গবেষক ও শিক্ষক ড. আসিফ মাহতাব, ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, মাওলানা জাবের কাসেমী, মাওলানা এনামুল হক মূসা প্রমুখ। লিখিত বক্তব্যে মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, জাতীয় পাঠ্যবই নিয়ে একের পর এক বিতর্ক হচ্ছে। কোনো জাতিকে পরাজিত করতে হলে সেই জাতির শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করাই যথেষ্ট। ধর্মপ্রাণ মুসলিম হিসেবে সন্তানদের গড়ে তুলতে হলে এই বিতর্কিত পাঠ্যপুস্তক প্রত্যাখ্যানের বিকল্প নেই। তিনি আরও বলেন, দেশের সচেতন অভিভাবকদের প্রতি আমাদের আহ্বান, বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা ও কারিকুলামের ব্যাপারে আরও সরব হোন। ইসলামবিরোধী হিন্দুত্ববাদী পাঠ্যবই প্রত্যাখ্যান করুন। স্কুলে আপনার সন্তানদের কী শেখানো হচ্ছে, তা জনসমক্ষে তুলে ধরুন। অঙ্কুরেই মুসলমানের ছেলেমেয়েদের ইমানি চেতনা ধ্বংসের আয়োজন করা হচ্ছে। সেক্যুলারিজমের নামে ইসলাম নির্মূলের এ চক্রান্ত আমরা সফল হতে দেব না ইনশাআল্লাহ। সেমিনারে হেফাজতের মহাসচিব শায়েখ সাজিদুর রহমান সাতটি দাবি তুলে ধরেন। এগুলো হলো ‘ইসলামী শিক্ষা বিষয়’ প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সব শাখায় আবশ্যিক করা। দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির সামষ্টিক মূল্যায়ন তথা বোর্ড পরীক্ষায় ‘ইসলামী শিক্ষা বিষয়’ পুনর্বহাল করা। বিতর্কিত ও প্রত্যাখ্যাত কোরআনবিরোধী বিবর্তনবাদ ও ট্রান্সজেন্ডারবাদসহ ইসলামবিরোধী সব পাঠ্য-রচনা সিলেবাস থেকে অপসারণ। আরব দেশগুলোর শ্রমবাজারে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকার জন্য আরবি ভাষার পাঠদান সর্বস্তরে বাধ্যতামূলক করা। এনসিটিবিতে ঘাঁপটি মেরে থাকা ষড়যন্ত্রকারী ও তাদের সহযোগীদের অপসারণ করে দেশপ্রেমিক ও ইসলামী মূল্যবোধসম্পন্ন ব্যক্তিদের দায়িত্বদান। ভবিষ্যতে বিতর্ক এড়াতে বিজ্ঞ আলেমদের পরামর্শের আলোকে পাঠ্যবইয়ের পুনঃসংস্করণ করা। ২০১৩ থেকে এ পর্যন্ত হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা।
০৬ মে, ২০২৪

৮০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা, হুঁশিয়ারি সংকেত
দেশের ২ অঞ্চলের ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। একইসঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টিও হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  রোববার (৫ মে) দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ সময় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এদিকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বেশকিছু অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। এই অবস্থায় নতুন করে হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। শনিবার (৪ মে) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার জন্য এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে। অপর এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টিও হতে পারে। 
০৫ মে, ২০২৪

ইসরায়েলগামী জাহাজের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি ইয়েমেনিদের
ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধের পর থেকে সরব ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতিরা। যুদ্ধে ফিলিস্তিনের সমর্থন জানিয়ে লোহিত সাগরে ইসরায়েলি জাহাজে হামলা চালিয়ে আসছে তারা। এবার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আরও কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে গোষ্ঠীটি। শুক্রবার (০৩ মে) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।   হুতিদের সামরিক শাখার মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি বলেন, নিজেদের আয়ত্তে থাকা যে কোনো জায়গায় ইসরায়েলগামী জাহাজে হামলা চালানো হবে। টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এমন হুঁশিয়ারি দেন। তিনি বলেন, ভূমধ্যসাগরের যেখানে আমরা পৌঁছাতে পারব সেখানেই ইসরায়েলের যে কোনো বন্দরগামী জাহাজে আমরা হামলা চালাব।  গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতা এবং ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে গত বছরের নভেম্বরে লোহিত সাগর, বাব এল-মান্দেব এবং এডেন উপসাগরে একের পর এক ইসরায়েলি জাহাজে হামলা চালিয়ে আসছে ইয়েমেনের হুতিরা। গাজায় যুদ্ধ না থামা পর্যন্ত এ হামলা চলবে বলেও বার্তা দিয়ে আসছে গোষ্ঠীটি।  হুতিদের হামলার ফলে লোহিত সাগর দিয়ে জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে অনেক কোম্পানি। এজন্য তারা হর্ন অব আফ্রিকা ঘুরে গন্তব্য পাড়ি দিচ্ছে। ফলে তাদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার কারণে একদিকে সময় লাগছে বেশি। অন্যদিকে পরিবহন ব্যয়ও বাড়ছে অনেক।  মার্কিন সেনা সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৯ নভেম্বর থেকে লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে ৫০টির বেশি জাহাজে হামলা চালিয়েছে হুতিরা। তাদের হামলার ভয়ে বেশিরভাগ জাহাজ কোম্পানি গুরুত্বপূর্ণ এসব নৌপথ এড়িয়ে গন্তব্যে পাড়ি দিচ্ছে। এতে পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে পশ্চিমারা। হুতিদের হামলার জবাবে বেশ কয়েকটি দেশের সমন্বয়ে একটি টহল জোট গঠন করে যুক্তরাষ্ট্র। এই জোট গঠন করেও ইরানপন্থি যোদ্ধাদের থামাতে না পেরে ইয়েমেনে হুতিদের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায় মার্কিন ও ব্রিটিশ বাহিনী। তবে হামলা করেও এখন পর্যন্ত তাদের থামাতে পারেনি পশ্চিমারা।
০৩ মে, ২০২৪

ইসরায়েলেকে কঠোর হুঁশিয়ারি ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর
মিসরের সীমান্তবর্তী শহর রাফায় হামলার ব্যাপারে ইসরায়েলকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। দলটির সিনিয়র নেতা ওসামা হামদান এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২ মে) নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  হিজবুল্লাহ-সমর্থিত লেবাননের আল মানার টিভিতে তিনি বলেন, শত্রুরা রাফায় স্থল অভিযান চালালে আলোচনা বন্ধ হয়ে যাবে। কেননা প্রতিরোধ আন্দোলন গোলাগুলোর মধ্যে কোনো আলোচনা করে না।  হামাসের এ নেতা বলেন, তাদের প্রতিরোধ সক্ষমতা এখনো উচ্চপর্যায়ে রয়েছে। দারুণ অবস্থায় রয়েছে প্রতিরোধ আন্দোলন। এ ছাড়া ইহুদিবাদীদের এলিট ব্রিগেডগুলো এখন গাজা উপত্যাকায় ধরাশায়ী হয়েছে।  তিনি বলেন, ইসরায়েল তাদের সক্ষমতা নিয়ে বাজি ধরেছে। অন্যদিকে প্রতিরোধ আন্দোলন তাদের প্রস্তুতি নিচ্ছে।  গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। গত নভেম্বরে সাত দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে ১১০ ইসরায়েলি বন্দিকে হামাস মুক্তি দিলেও এখনো তাদের হাতে শতাধিক বন্দি আছেন। অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। এ ছাড়া এ পর্যন্ত ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। বর্তমানে গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে আলোচনা চলছে। এতে মধ্যস্থতা করছে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র। রমজানের আগে এই চুক্তি আলোচনায় অগ্রগতি হলেও এখন দুপক্ষের মতবিরোধের কারণে তা স্থবির হয়ে পড়ে আছে। কাতার ও মিসরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তির জন্য দ্বিতীয় বার যুদ্ধবিরতির জন্য হামাস ও ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে হামাস প্রতিবারই স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে আসছে। এ ছাড়া তারা গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবি করছে। হামাসের এমন কঠোর প্রস্তাবের কারণে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কোনো সাড়া দেয়নি ইসরায়েল। দুপক্ষের মতানৈক্যের অবসান ঘটাতে গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েল সফরে যায় মিসরের একটি সরকারি প্রতিনিধি দল। এছাড়া একই দিনে হামাসের কাছে থাকা জিম্মিদের মুক্তির জন্য গোষ্ঠীটির প্রতি আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ ১৭টি দেশ চিঠি দেয়। বৃহস্পতিবার চিঠির প্রতিক্রিয়ায় হামাস নেতারা বলেন, তারা আন্তর্জাতিক চাপের কাছে মাথানত করবেন না। এর কয়েক ঘণ্টা পর তারা আবারও বলেন, ‘ফিলিস্তিনের জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও অধিকারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ যে কোনো প্রস্তাবকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত হামাস।’
০২ মে, ২০২৪
X