ফ্রান্সকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাশিয়া। দেশটি জানিয়েছে, ইউক্রেনে সেনা পাঠালে তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু বানানো হতে পারে। বুধবার (৮ মে) আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যদি ফ্রান্সের সেনারা সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে প্রবেশ করে তাহলে অবশ্যম্ভাবীভাবে তারা রুশ সশস্ত্র বাহিনীর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে। আমার কাছে মনে হচ্ছে এরইমধ্যে প্যারিস তার প্রমাণ পেয়েছে।
তিনি দাবি করেন, ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর ব্যাপারে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ কেবল ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটো মিত্রদের থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়নি, বরং ফরাসির নাগরিকদের সংখ্যাগরিষ্ঠরাও এটি প্রত্যাখ্যান করেছে।
এর আগে সংবাদমাধ্যম জানায়, প্রথমবারের মতো ইউক্রেনে সরাসরি সেনা মোতায়েন করেছে ন্যাটোভুক্ত দেশ ফ্রান্স। ইউক্রেনের ৫৪তম ইনডিপেনডেন্ট ম্যাকানাইজড ব্রিগেডকে সহযোগিতার জন্য এই সেনা পাঠানো হয়েছে। যারা ফ্রান্সের তৃতীয় পদাতিক রেজিমেন্টের সদস্য। দেশটির ফরেন লিয়াজোঁ বা বিদেশিদের নিয়ে গঠিত সেনা ইউনিটের মূল অংশ তারা।
ইউক্রেনে প্রথম ধাপে এই ইউনিটের ১০০ সেনা গেছেন। ধাপে ধাপে আরও দেড় হাজার সেনা সেখানে পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে ফ্রান্স। রাশিয়ার দনবাসে ফরাসি সেনা পাঠানোর এই ঘটনাকে গুরুতর প্ররোচণামূলক পদক্ষেপ বলে মনে করছেন সামরিক বিশ্লেষকরা।
কারণ এই সেনাদের এমন জায়গায় পাঠানো হয়েছে, যেখানে সরাসরি যুদ্ধ চলছে। দনবাস অঞ্চলে রাশিয়ার সেনাদের অগ্রযাত্রা ঠেকাতে ইউক্রেনীয়দের প্রতিরোধ যুদ্ধকে সহায়তা দেবেন এই সেনারা। প্রথম ১০০ জনের মধ্যে গোলাবারুদ ও নজরদারি বিশেষজ্ঞ রয়েছেন।
হঠাৎ করে ফ্রান্সের এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় পেছনে কিছু কারণ আছে। তা হলো- আফ্রিকার সাহেল অঞ্চল থেকে সম্প্রতি ফরাসি সেনাদের চলে আসতে হয়েছে। সেই শূন্যস্থান পূরণ করেছে রাশিয়ান সেনারা।
আফ্রিকার ফরাসিভাষী দেশগুলোর ওপর ফ্রান্সের যে নিয়ন্ত্রণ ও সেখান থেকে আসা সম্পদের যে প্রবাহ, সেটা বিপ্লব ও বিদ্রোহের কারণে ভেঙে পড়েছে। এ ক্ষেত্রে রাশিয়ার একটা ভূমিকা আছে। এই ভূমিকার পেছনে ভ্লাদিমির পুতিনের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পুতিনের এই কৌশলের কারণে ফ্রান্সের প্রভাব খর্ব হয়েছে এবং বিদেশে খনিশিল্প ও অন্যান্য ব্যবসায় ফ্রান্সের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বড় আঘাতটি এসেছে নাইজার থেকে। সেখান থেকে ফ্রান্সে ইউরেনিয়ামের বড় চালান আসত। পুতিন সেটাও হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিকভাবে নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছে ফ্রান্স।
মন্তব্য করুন