প্রয়োজনে আবারও শাপলা চত্বরে কর্মসূচি : হেফাজতে ইসলাম
পাঠ্যপুস্তকে কোরআনবিরোধী বিবর্তনবাদ ও ট্রান্সজেন্ডারবাদসহ ইসলামবিরোধী সকল পাঠ্যরচনা সিলেবাস থেকে অপসারণসহ শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কারের দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষানীতি সংশোধন না করলে কঠোর আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারি দেন সংগঠনের তারা। দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে আবারও কর্মসূচি পালনের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে বলে জানায় হেফাজত নেতারা।  রোববার (৫ মে) সকালে রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে (আইডিইবি) ‘বর্তমান জাতীয় শিক্ষা কারিকুলাম ও নতুন পাঠ্যপুস্তকের বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক জাতীয় শিক্ষা সেমিনারে হেফাজত নেতারা এই দাবি জানায়। হেফাজতের আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হেফাজতের নায়েবে আমির ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। এ সময় হেফাজতের আমীরের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী।  আতাউল্লাহ আমীন ও মুফতী কিফায়াতুল্লাহ আজহারীর সঞ্চালনায় উপস্থাপিত প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন হেফাজতের সিনিয়র নায়েবে আমির খলিল আহমাদ কাসেমী, নায়েবে আমির সালাহ উদ্দীন নানুপুরী, মুফতী জসিম উদ্দীন, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী, মাওলানা মোবারকুল্লাহ, আহমাদ আলী কাসেমী, খোরশেদ আলম কাসেমী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি, মাওলানা মীর ইদরিস, মাওলানা জালালুদ্দীন, মুফতী হারুন বিন ইজহার, সহকারী মহাসচিব মুফতী সাখাওয়াত হুসাইন রাজী, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী বশিরুল্লাহ, অর্থ সম্পাদক মুনির হুসাইন কাসেমী, গবেষক ও শিক্ষক ড. আসিফ মাহতাব, ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, মাওলানা জাবের কাসেমী, মাওলানা এনামুল হক মূসা প্রমুখ। লিখিত বক্তব্যে শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, জাতীয় পাঠ্যবই নিয়ে একের পর এক বিতর্ক হচ্ছে। শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। কোনো জাতিকে পরাজিত করতে হলে সেই জাতির শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করাই যথেষ্ট। ধর্মপ্রাণ মুসলিম হিসেবে আপনাদের সন্তানদের গড়ে তুলতে হলে এই বিতর্কিত পাঠ্যপুস্তক প্রত্যাখ্যানের বিকল্প নেই। তিনি বলেন, দেশের সচেতন অভিভাবকদের প্রতি আমাদের আহ্বান, বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা ও কারিকুলামের ব্যাপারে আপনারা আরো সরব হোন। ইসলামবিরোধী হিন্দুত্ববাদী পাঠ্যবই প্রত্যাখ্যান করুন। স্কুলে আপনার সন্তানদের কী শেখানো হচ্ছে তা জনসম্মুখে তুলে ধরুন। আমাদের জাতীয় পাঠ্যপুস্তক আজ হিন্দুত্ববাদের কবলে পড়েছে। অঙ্কুরেই মুসলমানের ছেলে-মেয়েদের ঈমানি চেতনা ধ্বংসের আয়োজন করা হচ্ছে। সেক্যুলারিজমের নামে ইসলাম নির্মূলের এই চক্রান্ত আমরা সফল হতে দেবো না ইনশাআল্লাহ। সেমিনারে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব শায়েখ সাজিদুর রহমান ৭টি দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো- ‘ইসলামী শিক্ষা বিষয়’ প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সব শাখায় আবশ্যিক বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির সামষ্টিক মূল্যায়ন তথা বোর্ড পরীক্ষায় ‘ইসলামী শিক্ষা বিষয়’ পুনঃ:বহাল করতে হবে। বিতর্কিত ও প্রত্যাখ্যাত কোরআন বিরোধী বিবর্তনবাদ ও ট্রান্সজেন্ডারবাদসহ ইসলামবিরোধী সব পাঠ্য-রচনা সিলেবাস থেকে অপসারণ করতে হবে। আরব দেশগুলোর শ্রমবাজারে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকার জন্য আরবি ভাষার পাঠদান সর্বস্তরে বাধ্যতামূলক করতে হবে। উল্লেখ্য, ভারতের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরাও এ উদ্দেশ্যে আরবি ভাষা শিখে এগিয়ে রয়েছেন। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) ঘাপটি মেরে থাকা ষড়যন্ত্রকারী ও তাদের সহযোগীদের চিহ্নিতকরণপূর্বক অপসারণ করে দেশপ্রেমিক ও ইসলামি মূল্যবোধসম্পন্ন ব্যক্তিদের দায়িত্ব দিতে হবে। ভবিষ্যতে বিতর্ক এড়াতে দেশের নির্ভরযোগ্য বিজ্ঞ আলেমদের পরামর্শের আলোকে পাঠ্যবইয়ের পুনঃসংস্করণ করতে হবে। ২০১৩ থেকে অদ্যাবধি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা সরকারের নীতিনির্ধারক মহলের প্রতি আমাদের প্রস্তাব ও যৌক্তিক দাবিগুলো বাস্তবায়নের আহ্বান জানাই। একইসঙ্গে দেশের জনগণকে ইসলামবিরোধী ও জাতীয় মূল্যবোধ পরিপন্থি এ শিক্ষা কারিকুলামের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাই। অন্য বক্তারা বলেন, বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে দেশের সাধারণ মানুষ শুধু উদ্বিগ্ন নন। অভিভাবকেরা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। অবিলম্বে শিক্ষা নীতির ভুল চিহ্নিত করে নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়ন করতে হবে। ওহীর শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। আজকে আমাদেরকে বদ্ধ ঘরে কর্মসূচি পালন করতে হচ্ছে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে আবারও কর্মসূচি পালনের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।
০৫ মে, ২০২৪

‘পশ্চিমা অপসংস্কৃতিতে গা ভাসিয়ে ঈদ আনন্দ উদযাপন করা সম্পূর্ণ হারাম’
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান বলেছেন, ঈদের দিন হলো মুসলমানদের জন্য আনন্দ এবং খুশির দিন। শরিয়তের সীমারেখার মধ্যে ঈদের আনন্দ ও খুশি উদযাপনে কোনো প্রকার বাধা নেই। তবে ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড ও পশ্চিমা অপসংস্কৃতিতে গা ভাসিয়ে ঈদ আনন্দ উদযাপন করা সম্পূর্ণ হারাম। বুধবার (১০ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এসব কথা বলেন। নেতৃদ্বয় বলেন, দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার মধ্য দিয়ে অর্জিত সংযম ও সহমর্মিতার শিক্ষায় সমুজ্জ্বল ঈদুল ফিতর বিশ্ব মুসলিমের কাছে পবিত্র আনন্দের বার্তা নিয়ে সমুপস্থিত। ধনী-গরিবের মধ্যে আনন্দ ভাগাভাগির এক মোক্ষম সুযোগ হচ্ছে ঈদুল ফিতর। আমরা দেশের জনগণসহ বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করছি। কারাবন্দি আলেম মাওলানা মামুনুল হকের ব্যাপারে আমীরে হেফাজত ও মহাসচিব বলেন, অত্যন্ত ব্যথিত মনে জানাচ্ছি, এখনো আমাদের হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হক কারাবন্দি হয়ে আছেন। জামিন পাওয়া তার সাংবিধানিক অধিকার। অনতিবিলম্বে তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে ২০১৩ সাল থেকে অদ্যাবধি হেফাজতের নামে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার জন্য আমরা সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি। তারা আরও বলেন, বর্তমানে দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ফলে নিম্ন আয়ের অসহায় গরিব মানুষের জন্য জীবিকা নির্বাহ করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। তাদের ঘরে আজ নেই ঈদের কোনো আনন্দ ও খুশির আমেজ। তাই সেসব দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মুখে হাসি ফোটাতে এবং তাদের দুঃখ-কষ্ট লাঘব করতে সমাজের বিত্তশালী ও সামর্থ্যবানদের এগিয়ে আসার জন্য আমরা আহ্বান করছি। হেফাজতের শীর্ষ দুই নেতা আরও বলেন, রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস রমজানে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে তাকওয়া, তাহারাত ও সহমর্মিতার যেই শিক্ষা আমরা অর্জন করেছি তা আমাদের আগামী এগারো মাস নিজের জীবনে প্রতিফলন করতে হবে। তাহলেই আমরা সফলকাম হবো। আল্লাহ আমাদের সবাইকে রমজানের শিক্ষা নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করার তৌফিক দান করুন।
১০ এপ্রিল, ২০২৪

কারাবন্দি আলেমদের বিষয়ে কথা বললেন হেফাজত আমির
কারাবন্দি আলেমদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ্ মুহিবুল্লাহ্ বাবুনগরী। একই সঙ্গে তিনি পাঠ্যপুস্তকে ইসলাম বিদ্বেষী লেখার কড়া সমালোচনা করেন। শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে ফটিকছড়ির আল জামিয়া ইসলামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগর মাদ্রাসার বার্ষিক সভার আখেরি মোনাজাতের আগে দেওয়া বক্তব্যে মাদ্রাসার মোহতামিম (মহাপরিচালক) ও হেফাজত আমির এসব দাবি করেন। হেফাজত আমির আল্লামা শাহ্ মুহিবুল্লাহ্ বাবুনগরী আরও বলেন, ইহুদি গোষ্ঠী ফিলিস্তিনের নিরীহ মানুষের ওপর নির্বিচারে হামলা ও হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে যা কেবল নিন্দনীয় নয়, চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন। তাই বিশ্ব মুসলিম উম্মাহকে ইসরায়েল সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।  দুই দিনব্যাপী মাদ্রাসার বার্ষিক সভায় সমাপনী দিনে আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদ মাইজভান্ডারী, আল্লামা খলিল আহমদ কোরাইশী,  আল্লামা আব্দুল হক হক্কানি, খোরশেদ আলম কাসেমী, আব্দুল বাসেত খান, গাজী সানাউল্লাহ রহমানী, মিজানুর রহমান বোখারী, বদরুল আলম হামিদী, মাহমুদ হাসান বাবুনগরী, জুনায়েদ আল হাবিব, সাখাওয়াত হোসেন রাজী, হাবিবুল্লাহ মাহমুদ কাসেমী, মূফতী হারুন ইজহার, মুফতি রেজাউল করিম আবরার ও রফিকুল ইসলাম মাদানি।
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৩

ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা হেফাজতে ইসলামের
আগামী ২৯ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মহিউদ্দিন রাব্বানী। এর আগে বাদ জুমা এক মিছিলপূর্ব সমাবেশে এ ঘোষণা দেন সংগঠনটির মহাসচিব সাজিদুর রহমান। তিনি বলেন, আমরা দেখতে চাই অতি অল্প সময়ের মধ্যে মামুনুল হকসহ সব আলেম-ওলামাদের মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় ২৯ ডিসেম্বর শুক্রবার সারা দেশ থেকে জনগণ জড় হয়ে মহাসমাবেশ করবে। মাওলানা মামুনুল হকসহ কারাবন্দি আলেমদের মুক্তি, হেফাজতের নামে দায়েরকৃত সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ফ্রি মিক্সিংসহ ইসলামবিরোধী পাঠ বাতিল এবং হেফাজতে ইসলাম ঘোষিত ১৩ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে এই বিক্ষোভ সমাবেশ করে হেফাজতে ইসলাম। দলটির কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাহফুজুল হক বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মাওলানা মামুনুল হকসহ সব আলেমকে মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগেই হেফাজতে ইসলাম কঠোর কর্মসূচিতে যাবে।
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৩

হেফাজতে ইসলামের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। নতুন কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বিক্ষোভ সমাবেশ।  বুধবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত জামিয়া হুসাইনিয়া আরজাবাদ মিলনায়তনে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীলদের এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর নায়েবে আমীর মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া। বৈঠকে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে মাওলানা মামুনুল হকসহ অনেক আলেমকে বিনা অপরাধে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে। সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেমদের ন্যূনতম সম্মান দেখানো হচ্ছে না। তারা যতটুকু আইনি সহায়তা পাওয়ার অধিকার রাখেন সে ক্ষেত্রেও অন্যায়ভাবে বৈষম্য করা হচ্ছে। দেশের শান্তিপ্রিয় আলেম সমাজের সাংবিধানিক অধিকার ও মানবাধিকার নির্মমভাবে হরণ করা হচ্ছে। যেসব আলেম ইতিমধ্যে কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন, মাসের বেশিরভাগ দিন তাদেরকে এক আদালত থেকে আরেক আদালতে হাজিরার জন্য ঘুরপাক খেতে হচ্ছে। আলেমদের সাথে হয়রানিমূলক এ সকল আচরণ দ্রুত বন্ধ করতে হবে। এ ছাড়াও অনতিবিলম্বে মাওলানা মামুনুল হকসহ সকল কারাবন্দি আলেমদের নি:শর্ত মুক্তি এবং ২০১৩ সাল থেকে অদ্যাবধি হেফাজতের নামে দায়ের করা সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জন্য বৈঠক থেকে জোর দাবি জানানো হয়েছে। বৈঠকে আগামী শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) বাদ আসর, রাজধানীতে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে মাওলানা মামুনুল হকসহ সকল কারাবন্দী আলেমের মুক্তি, হেফাজত নেতাকর্মীদের নামে দায়ের করা সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং শিক্ষা ব্যবস্থায় ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক বিষয়াদী বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ ছাড়া সভায় বলা হয়, ধর্মীয় মতাদর্শ ও ইসলামী রীতিনীতির সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক ফ্রি মিক্সিং শিক্ষা পদ্ধতি বন্ধ করে শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে। সহশিক্ষার এই ধারা পরিবর্তন করে স্বতন্ত্র ধারার প্রবর্তন করতে হবে। এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে অভিভাবককে। এ ছাড়া শিক্ষক প্রশিক্ষণের নামে যে তামাশা শুরু হয়েছে তা এখনই বন্ধ করতে হবে। একবিংশ শতাব্দীতে বিজ্ঞানের উৎকর্ষতার যুগে বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি এবং প্রযুক্তিগত পরিবর্তনকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চালক বলে বিশ্বাস করা হয়। সেখানে আমাদের শিক্ষকদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণ না দিয়ে যেভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, তা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী, মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী, মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব, মাওলানা মনজুরুল ইসলাম আফেন্দী, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস মানিকনগর, মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমদ, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী, মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী, মাওলানা লোকমান মাজহারী, মুফতী মাসউদুল করীম, মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, মুফতী কিফায়েতুল্লাহ আজহারী, মাওলানা জুবাইর আহমাদ, মাওলানা ফায়সাল আহমেদ, মুফতি শরিফুল্লাহ, মাওলানা আলী আকবর কাসেমী, মাওলানা রাশেদ বিন নুর, মাওলানা সানাউল্লাহ খান, মাওলানা নুর মোহাম্মদ, মাওলানা এনামুল হক মুছা, মাওলানা আমিনুল ইসলাম কসেমী, মুফতী আব্দুল মালেক প্রমুখ।
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৩

বড় কর্মসূচি নিয়ে আসছে হেফাজতে ইসলাম
গ্রেপ্তার সব নেতাকর্মীর মুক্তি ও সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার না করায় কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। শনিবার (২ ডিসেম্বর) হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রচার সম্পাদক মুফতি কিফায়াতুল্লাহ আজহারী গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি এ তথ্য জানান।  বিজ্ঞপ্তিতে মাওলানা মামুনুল হক, মুফতি মুনির হুসাইন কাসেমীসহ হেফাজতের কারাবন্দি সকল আলেম উলামার মুক্তির দাবি জানানো হয়। নয়তো এহেন পরিস্থিতিতে অনতিবিলম্বে আমিরে হেফাজত আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী সাথে পরামর্শক্রমে তাওহিদি জনতাকে সাথে নিয়ে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা দেবে তারা।  বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১৩ সাল থেকে অদ্যাবধি হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের নামে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।  বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মাহাসচিব আল্লামা শায়খ সাজেদুর রহমান বলেছেন, গত ২৫ অক্টোবর ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে আয়োজিত জাতীয় ওলামা মাশায়েখ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই সম্মেলন থেকে ঘোষিত দাবিসমূহের অন্যতম দুটি দাবি ছিল- মাওলানা মামুনুল হক, মুফতি মুনির হুসাইন কাসেমীসহ হেফাজতের কারাবন্দি সকল আলেম উলামার মুক্তি এবং ২০১৩ সাল থেকে অদ্যাবধি হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের নামে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার। তিনি বলেন, ২৫ শে অক্টোবরের উলামা মাশায়েখ সম্মেলন থেকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে এসব দাবি বাস্তবায়ন করার জন্য জোর দাবি জানানো হয়েছিল। ইতিমধ্যে ৩০ নভেম্বর পার হয়ে গেছে। আলহামদুলিল্লাহ, এই সময়ের মধ্যে মুফতি মুনির হুসাইন কাসেমী ও মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। এ জন্য আমরা আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। হেফাজত মহাসচিব আরও বলেন, অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় হলো, মাওলানা মামুনুল হকসহ বাকি যে সমস্ত আলেম এখনও কারাবন্দি আছেন তাদের ব্যাপারে এবং হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের নামে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে এখনো কোনো বাস্তব উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। যার ফলে হেফাজতের নেতাকর্মী ও সারাদেশের উলামায়ে কেরাম ও আপামর তৌহিদি জনতার মাঝে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। 
০২ ডিসেম্বর, ২০২৩

হেফাজতের ৭ দাবি, ৩ কর্মসূচি ঘোষণা
গ্রেপ্তার সব নেতাকর্মীদের মুক্তি ও সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার জন্য সাত দাবি ও তিন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। বুধবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। হেফাজতে ইসলামের নেতা মাওলানা মামুনুল হক, মুনির হুসাইন কাসেমিসহ হেফাজতের কারাবন্দি সব নেতাকর্মীদের মুক্তি, ২০১৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত হেফাজত নেতাকর্মীদের নামে দায়ের হওয়া সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং হেফাজতের ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে এই ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর সভাপতিত্বে ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা সাদিকুর রহমান। ঘোষণা পত্রে ফিলিস্তিনে ইহুদিবাদী ইসরাইলের হামলা ও নির্বিচারে নিরীহ নারী-শিশু ও পুরুষদের হত্যার তীব্র নিন্দা জানানো হয়। সেই সঙ্গে ইসরাইলের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা বলা হয়। আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে গ্রেপ্তার সব নেতাকর্মীদের মুক্তি দেওয়ার কথা বলা হয়।  আমিরের লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান আল্লামা আজিজুল হক ইসলামাবাদী। অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি খলিল আহমদ কাসেমী, কেন্দ্রীয় নেতা মাহফুজুল হক, সালাহউদ্দিন (পীর সাহেব নানুপুর) উবায়দুল্লাহ ফারুক, ইসমাইল নূরপুরী, আবদুর রব ইউসুফী, মুফতি মুবারক উল্লাহ, মিজানুর রহমান সাঈদ, মুসতাক আহমদ, নাজমুল হক হাক্কানি, জুনায়েদ আল হাবিব, খুরশিদ আলম কাসেমি, মাওলানা মুহিউদ্দীন রাব্বানী, সাব্বির আহমদ রশিদ, মঞ্জুরুল ইসলাম আফিন্দী, মাওলানা আনোয়ারুল করিম, মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজি, আব্দুল কাইয়ুম সুবহানি, আব্দুল হামিদ (পীর সাহেব মধুপুর), আব্দুল কাদের, মুফতি বশিরুল্লাহ, জহুরুল ইসলাম, আহমদ আলী কাসেমী, নাজমুল হোসাইন কাসেমী, জালাল উদ্দিন আহমদ, আব্দুল কুদ্দুস কাসেমী, নায়েবে আমির মাওলানা আইনুল বাবুনগরী, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মাওলানা এয়াকুব ওসমান, মীর ইদ্রিস প্রমুখ। খলিল আহমদ কাসেমী বলেন, আমাদের দাবিগুলো সরকার যত দ্রুত মেনে নিবে ততই তাদের জন্য মঙ্গল।  জুনায়েদ আল হাবিব বলেন, ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে প্রমাণতি হয়েছে স্বাধীনতার পর শাপলা চত্বরে সবচেয়ে বেশি হত্যাকাণ্ড আপনারা চালিয়েছেন। এর বিচার দেশের মাটিতে হবে ইনশাআল্লাহ। আমাদের কী অপরাধ? রমজান মাসে ইফতারের আগে এমনকি ইতিকাফে বসা অবস্থায় গ্রেপ্তার করেছেন। আমাদের ফাঁসির সেলে ও কারাগারে রাখা হয়েছে। এ দেশের কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে একজন আলেমও জড়িত নন। অবিলম্বে আমাদের দাবি মেনে নিন। নচেত কীভাবে আঙুল বাঁকা করতে হয় হেফাজতে ইসলাম তা জানে। নভেম্বরের মধ্যে মুক্তি না দিলে সরকার পালানোর পথ পাবে না। মুহিউদ্দীন রাব্বানী বলেন, মামুনুল হক দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নাম। তিনি একজন মজলুম জননেতা। অবিলম্বে তাকেসহ হেফাজতের সব নেতাকর্মীদের মুক্তি দিতে হবে। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। একইসঙ্গে কাদিয়ানিদের অপতৎপরতা বন্ধ, অমুসলিম ঘোষণা ও নিষিদ্ধ করতে হবে। তা না হলে হেফাজতের কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। আবদুল হামিদ বলেন, এই শেখ হাসিনার সরকার কানেও শোনে না, চোখেও দেখে না। এটা বৈবী সরকার। এদেরকে সরাতে মুগুর লাগবে। এই সরকারের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করতে হবে। প্রয়োজনে গুলি খাবো তবুও আপস করব না। নাজমুল হোসাইন কাসেমী বলেন, এই সরকারের আমলে আমাদের অনেক আলেম গায়েবি ও বায়বীয় মামলার আসামি। পাপিয়া ও পরী মণিরা কারাগারে ডান্ডাবেরি খায়না। আর মামুনুল হক ও মুনির হুসাইন কাসেমি ডান্ডাবেরি খায়। এই সরকার টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া সমস্ত মুসলমানদের ডান্ডাবেড়ি পরিয়েছে। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে কারাবন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তি না দিলে পরবর্তী কর্মসূচির জন্য প্রস্তুত থাকুন। মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, নির্বাচনের আগে আলেমদের মুক্তি না দিলে নির্বাচনে তার জবাব দেওয়া হবে। আলেমদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। মীর ইদ্রিস বলেন, দ্বীন কায়েমের জন্য হেফাজতে ইসলাম ছিল, আছে এবং থাকবে। কিন্তু এই সরকার আলেমদের মুক্তি দেওয়ার নামে কথা রাখেননি। তাদের আর হোমিও চিকিৎসা দিয়ে লাভ নেই তাদের এলোপ্যাথি চিকিৎসা দিতে হবে। আলেমরা কাপড়ের টুপির বদলে লোহার টুপি পড়তে প্রস্তুত। আলেমদের মুক্তি না দিলে আগামী নির্বাচনে খবর আছে। সদ্য কারামুক্ত নেতা নূর হোসাইন নূরানি বলেন, আল্লাহ যদি কারো বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন তাহলে কিন্তু বংশে বাতি দেওয়ার কেউ থাকবে না। অবিলম্বে মাওলানা মামুনুল হককে মুক্তি দিতে হবে। এয়াকুব ওসমান বলেন, সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে হেফাজত যদি আবার শাপলা চত্বরে যায় আপনারা পালানোর পথ পাবেন না। মামুনুল হকের ছেলে ইমামুল হক বলেন, হেফাজতে ইসলাম যে আয়োজন করেছে সেজন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। অন্য বক্তারা বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার মামলাবাজ ও জালেম। তারা আলেমদের নিয়ে প্রতারণা করছে। ইসরাইলের কারাগার ও বাংলাদেশের কারাগারের কোনো পার্থক্য নেই। সেখানে ফিলিস্তিনের মুসলমানদের গুলি করে মারা হচ্ছে। বাংলাদেশের আলেমদের কারাগারে নিক্ষেপ করছে। আলেমদের নিয়ে টালবাহানা করলে আলেমরা রক্ত দিতে প্রস্তুত আছে। অতএব আলেমদের মুক্তি নিয়ে মুনাফেকি বন্ধ করুন। আগামী নির্বাচনে ফ্যাক্টর হবে মাওলানা মামুনুল হক। তাদের পক্ষে যারাই থাকবেন তাদের বিজয় সন্নিকটে ইনশাআল্লাহ। তারা অবিলম্বে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানান। প্রয়োজনে সময় বেঁধে দিন। এই সময়ের মধ্যেই মুক্তি না দিলে কিসের নির্বাচন কিসের কী? হেফাজতে ইসলাম যা করার তাই করবে। তারা আরও বলেন, আলেমদের মুক্তি না দিয়ে ভোটের জন্য জনগণের কাছে যাবেন না। হেফাজতে ইসলামকে সরানো যাবে না। বরং ওই সরকার (ইমরান এইচ সরকার) সরে গেছে। কিন্তু হেফাজতে ইসলাম রয়ে গেছে। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়া হোক। তারা বলেন, ফিলিস্তিন ইসইস্যুতে সংসদে বিল পাস করুন। প্রয়োজনে হেফাজতের মাধ্যমে এক কোটি মুজাহিদ ফিলিস্তিন যেতে প্রস্তুত। এক্ষেত্রে ইসরাইলি পণ্য বর্জনের দাবি জানান বক্তারা। তাদের ৭ দাবিসমূহ হলো ১. ইহুদিবাদী অবৈধ সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইল ফিলিস্তিনি মুসলমানদের ওপর নির্বিচারে হামলা, ধারাবাহিক নিপীড়ন ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে নৃশংসতার চূড়ান্ত সীমা অতিক্রম করেছে। এই হানাদার দখলদার বাহিনী গাজায় হাজারও শিশু, নারী এবং বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করে ক্রমাগত মানবাধিকার লঙ্ঘন করেই চলছে। তাই আজকের সম্মেলন নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর অবিলম্বে ইসরায়েলি হামলা বন্ধ ও ইসরায়েলের সঙ্গে সব পর্যায়ের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা, তাদের সব পণ্য বর্জন করা ও বাণিজ্যিকভাবে তাদের বয়কট করার জন্য বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব রাষ্ট্রের প্রতি জোরাল আহ্বান জানাচ্ছে। ২. প্রায় তিন বছর ধরে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় কারাগারে বন্দি আছেন হেফাজতের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, অর্থ সম্পাদক মুফতি মুনীর হোসাইন কাসেমী, মুফতি ফখরুল ইসলাম ও মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীসহ আরও অনেক আলেম। মিথ্যা ও সাজানো মামলায় তাদের এত দীর্ঘ সময় সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে সরকার বন্দি করে রেখেছে। আজকের সম্মেলন কারাবন্দি সব হেফাজত নেতাকর্মীদের আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে মুক্তি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছে।  ৩. ২০১৩ সাল থেকে অদ্যাবধি হেফাজতে ইসলামের নেতা কর্মীদের নামে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।  ৪. ইসলামবিরোধী সব অপশক্তি প্রতিরোধ, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও মজলুম মানবতার অধিকার প্রতিষ্ঠায় সর্বস্তরের আলেম ও তৌহিদি জনতাকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। ৫. আল্লাহ, রাসুল সা. ও ইসলাম ধর্মের অবমাননা এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে কুৎসা রোধে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আইন পাস করতে হবে। ৬. সরকারিভাবে কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা এবং তাদের প্রচারণা ও ষড়যন্ত্রমূলক সব অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে। ৭. ঐতিহ্যবাহী দারুল উলুম দেওবন্দের ফতোয়া অনুযায়ী ভারতের মাওলানা সাআদ সাহেবের বিভিন্ন বয়ান শরীয়তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং চরম বিতর্কিত ও তার মনগড়া চিন্তার ওপর প্রতিষ্ঠিত। তাই বাংলাদেশে মাওলানা সাদ সাহেবের আগমন স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। শুরায়ি নেজামের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ওলামায়ে কেরামকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সহযোগিতা করতে হবে। এক্ষেত্রে নতুন কোনো পরিস্থিতি তৈরি করতে দেওয়া যাবে না। সরকার এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আজকের সম্মেলন জোর দাবি জানাচ্ছে। যেসব কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে  ১. আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে কারাবন্দি হেফাজতের সব নেতাকর্মীর মুক্তি ও হেফাজত নেতাকর্মীদের নামে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। ২. আগামী ৩ মাসের মধ্যে সারা দেশে হেফাজতে ইসলামের জেলা, উপজেলা ও মহানগর কমিটি গঠন করা হবে।  ৩. আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে চট্টগ্রাম, সিলেট, বি.বাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে শানে রেসালাত সম্মেলন করা হবে। পর্যায়ক্রমে অন্য সকল জেলাতেও অনুষ্ঠিত হবে।
২৫ অক্টোবর, ২০২৩

হেফাজতের ওলামা মাশায়েখ সম্মেলন ২৫ অক্টোবর
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের পূর্বঘোষণা অনুযায়ী ২৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনের তারিখ পরিবর্তন করে ২৫ অক্টোবর নির্ধারণ করা হয়েছে। ওইদিন সকাল ৯টায় রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।  বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) সকালে উত্তরা দারুল উলূম বাবুস সালাম ফাউন্ডেশনে মাওলানা মাহফুজুল হকের সভাপতিত্বে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে অনুষ্ঠতিব্য জাতীয় ওলামা মশায়েখ সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিশেষ কারণবশত ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনের তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। একইসঙ্গে উক্ত সম্মেলন সফলভাবে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে রাজধানী ঢাকাকে ১০টি জোনে ভাগ করা হয়েছে। প্রত্যেক জোনে গণসংযোগ ও দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য একটি সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটিও গঠন করা হয়েছে। আজকের সভায় ২৫ তারিখের সম্মেলনে দেশের সর্বস্তরের উলামায়ে কেরামদের দাওয়াত দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আগামী ২৫ অক্টোবর হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে অনুষ্ঠতিব্য জাতীয় উলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে দেশের সর্বস্তরের উলামায়ে কেরাম অংশগ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করার জন্য আমীরে হেফাজত আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান উদাত্ত আহ্বান জানান। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আল্লামা জুনায়েদ আল হবিব, আল্লামা মুহিউদ্দিন রাব্বানি, মাওলানা নাজমুল হাসান, মুফতি মাসউদুল করিম, মুফতি বশিরুল্লাহ, মুফতি কিফায়াতুল্লাহ আজহারী, মুফতি জাকির হোসাইন, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, মুফতী কামাল উদ্দিন, মাওলানা ফয়সাল আহমদ, মাওলানা আলি আকবর, মাওলানা আমিনুল ইসলাম, মাওলানা হাসান জুনায়েদ ও মাওলানা আব্দুল মালেক।
১৯ অক্টোবর, ২০২৩
X