এয়ার হোস্টেস জারিন জাবিনের সঙ্গে আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনানের সম্পর্কের অভিযোগের পর তাদের ছবি প্রকাশ করেছেন ত্বহার দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিকুন নাহার।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) রাতে এক ফেসবুক পোস্টে অভিযোগের বিষয়ে কথা বলেন তিনি। ওই পোস্টে আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সিসিটিভি ফুটেজ থেকে জারিন জাবিনের ছবিও প্রকাশ করেন তিনি।
পোস্টে সাবিকুন নাহার লিখেছেন, ‘ভক্তগণ যে আমাকে অপরাধী সাব্যস্ত করতে আমার অতীত জীবনের ছেড়ে আসা ভুল, অন্যায়, কলঙ্ক যা-ই বলি না কেন সামনে এনে একজন বর্তমান অপরাধীকে নিষ্কলুষ বানাচ্ছেন— এটা কি আহকামুল হাকিমিনের কাঠগড়ায় আদৌ মার্জনীয়? আপনারা তো আমার অতীতের অপবিত্রতা দ্বারা তার বর্তমান অপবিত্রতা ঢাকতে চাচ্ছেন মাত্র। তবে সত্যের প্রভাব তো দুর্দমনীয়, ওপরে যা-ই বলা হোক না কেন। ভক্তরা বলছেন, ৩-৪ আরও বিয়ে করবে সমস্যা কোথায়? আপনাদের কাছে আমার প্রশ্ন— কত মেয়ের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন। পিক নেবেন, একান্তে বসবেন, প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের নামে ইন্টারভিউ নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করবেন, কত মেয়ের সঙ্গে আর কত বছর? অতঃপর ছুলাছা রুবায়ার দাবি থেকে এ যোগাযোগ, অনুভূতির আদান-প্রদান হালাল থেকে হারাম হবে? কত বছর পর? কত মেয়ের সঙ্গে সময় কাটানোর পর।’
তিনি বলেন, ‘দুই বছর আগে রংপুরের এক মেয়ের সঙ্গে অনেক দিন হোয়াটসঅ্যাপে কানেক্ট থেকে আমার বেবির দেখাশোনার নাম করে মেয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলা, পিক নেওয়া, অতঃপর আমাকে প্রেসার দেওয়া- এ মেয়েকে আসার সময় বাসায় নিয়ে আসবে সে তার সঙ্গে। আমার বেবি দেখাশোনা করবে এ অজুহাতে আমাকে পাগল করা। তার বিশ্বস্ত ইয়ামিন জানে না? আমি কি ওদের প্রমাণ দিইনি? মেয়েটার পিক চেয়ে নিল, তার প্রশংসা করল নিজ চোখে দেখলাম এবং আবার বিয়ে করতে কেমন পাত্র চায় জিজ্ঞেস করল, এরপরও অনেক দিন এ মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখল। ইয়ামিন নিজ মুখে বলেছে, আপু মেয়েটাকে সরাইছি, ভাই আমার ওপর নারাজ। এর ভেতরেও আছে কত কথা- কয়টা লিখব।’
তিনি আরও বলেন, এর পরপরই শুরু করল আরেক মেয়ে নিয়ে। মেয়ের মা ক্যানসারে আক্রান্ত রোগী, তার মায়ের জন্য টাকা উঠায় আর এ সুবাদে মেয়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ। তবে এখানে ঐ মেয়েটার ইনটেনশন খারাপ ছিল না- তবে আদনান জনাবের উদ্দেশ্য ছিল মেয়েটা অবিবাহিত, অল্প বয়স কোনোভাবে তাকে বাগে আনা যায় কিনা। মেয়েটাকে নিজ দায়িত্বে ঢাকায় আনা, সব খরচ বহন করা, আমাকে কোনো একসেস না দেওয়া, আমি চেয়েছিলাম ওকে যদি হেল্পই উদ্দেশ্য হয় তবে মেয়েদের আমাকে ডিল করতে দাও, কিন্তু না সে এ মেয়ের সঙ্গে কত কত মাস যোগাযোগ রেখেছে। সে কি আস্ফালন ছিল, এ মেয়েকে পাওয়ার পর তার কতটুকু লিখে বোঝানো যায়!
তৃতীয় আরেকটি মেয়ে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তারপর আবার আরেক মেয়েকে মাদ্রাসা করে দেওয়া সঙ্গত কারণেই এ মেয়ের ডিটেইলস বললাম না স্থানও না। কারণ মেয়েটার বিয়ে হয়ে গিয়েছে জানি। এদের সবার সঙ্গে তার হালাল সম্পর্ক! ওকে মেনেও যদি নিই তবুও কি তার এভাবে মেয়েদের সঙ্গে নানা ইস্যু ক্রিয়েট করে জুড়ে থাকা উচিত? যেখানে সে নিজেই বলে তার নারী সংক্রান্ত সমস্যা আছে, মাহরাম দেখলেও প্রবলেম হয়।
তিনি বলেন, ‘রাস্তায় মেয়ে দেখলে আমি পাশে থাকা সত্ত্বেও সুবহানাল্লাহ, মাশাল্লাহ বলা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকা তার এ ক্যারেক্টারের কথা কে না জানে। কিন্তু কেউ বলবে না। তার নজর হেফাজত না করার কারণে সে ধ্বংস হয়েছে। আমি আমার পরিবার, আমার গোছানো সংসার, আমার দুটো বেবি ছন্নছাড়া আজ। আমি তার জন্য কী করিনি! ৫ বছরের সংসার জীবনে আজও তাকে আমি নতুন বরের মতো ট্রিট করি, সাজাই, এতকিছুর পরও সব ঠিক হয়ে যাওয়ার আশায় রঙিন রেখেছিলাম। তার কেন কারও প্রেম লাগবে, প্রেমিকা লাগবে! সে মানুষকে বলে আমি তাকে কষ্ট দিয়েছি- এর উত্তর কি জানেন! যে পুরুষের চোখে নতুন নারীর লিপ্সা তার জন্য নিজ স্ত্রীর অগাধ ভালোবাসাই যন্ত্রণা।’
সাবিকুন নাহার বলেন, পাশে থাকতে চাওয়াই যন্ত্রণা, কাছে থাকাই যন্ত্রণা। পরে আরেক মেয়ে আমার মাদ্রাসায় নার্সারির বাচ্চাদের পড়ায় আবার আমার বাসায়ও কাজ করে সে মেয়েকে টাকা-হাদিয়া দেয়, কিছু লাগলে তাকে বলতে বলে- তার নম্বর দেয়। তারপর থেকে শুরু হয় এ মেয়ের সঙ্গে। মেয়ে কাজে আসলে তার অস্থিরতা শুরু হয়ে যায়। আমি কিছুটা গেস করি কিন্তু বাদ দিই। অতঃপর একদিন আমার সঙ্গে মনোমালিন্য হওয়ায় আমাকে আদনান সাহেব থ্রেট দেয় ‘এমন কিছু করব যা কল্পনাও করতে পারবা না’। আমি কিছুটা সন্দেহ করি। তারপর তার ফোনে দেখি এ কাজের মেয়ের সঙ্গে ১৮ মিনিট কথা, এ মেয়ের আবার সেকি অভিমান ভরা মেসেজ; যেখানে লেখা- আমি আপনার ওপর রাগ আছি।
অনলাইনে এসব বলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি কেন এ প্ল্যাটফর্মে এগুলো বললাম? কিছুদিন আগে এক স্টুডেন্ট তার নামে অভিযোগ এনেছিল- হাদিয়া দেওয়ার ব্যপারে গড়িমসি নিয়ে, সে বোন কেন এনেছিল এটা একমাত্র ভুক্তভোগীই জানেন। সে অনেক মাস ধরে তাদের দারস্থ হচ্ছিলেন, সমাধান হয়নি। এখানে বলা মাত্রই তাদের টনক নড়ে, তারা অনলাইনের মানুষ অনলাইনেই কেবল পাওয়া যায়। তেমনই আমি দুই বছর ধরে সমাধানে আসতে চাচ্ছি আমাকে সাহায্য করা হয়নি, বসা হয়নি। কথা বলতেও সুযোগ দেয়নি, বড়রা ডাকলেও যায়নি। এবার ইনশাআল্লাহ সমাধান হবে।’
মন্তব্য করুন