কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম
আপডেট : ০৭ জুলাই ২০২৩, ০৯:০৩ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সংসদে প্রধানমন্ত্রী

অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন একমাত্র আওয়ামী লীগই দিতে পারে

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : সংগৃহীত
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের আমলে সব নির্বাচনই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, একমাত্র আওয়ামী লীগই পারে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে। সেটা আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে পারি। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর স্পিকার অধিবেশনের সমাপ্তি টানেন।

সদ্য সমাপ্ত পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাত্র সিটি করপোরেশন নির্বাচন হলো। এই নির্বাচন নিয়ে কেউ একটি প্রশ্ন তুলতে পেরেছে? এত শান্তিপূর্ণ নির্বাচন বাংলাদেশে আগে কখনো হয়েছে?

সংসদে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রকে আগে নিজ দেশের মানুষের মানবাধিকার রক্ষার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, তারা (আমেরিকা) নিজের দেশের মানুষকে বাঁচাবে কী করে, সে চিন্তা আগে করুক। সেটাই তাদের করা উচিত।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে অনেকে বাংলাদেশে মানবাধিকারের খোঁজে আসে। আমার প্রশ্ন, ২০০১-এর নির্বাচনে যেভাবে হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ হয়েছিল; তখন সেই মানবাধিকারের ফেরিওয়ালারা কোথায় ছিল? তারা কেন চুপ ছিল? তাদের মুখে কেন কথা ছিল না? অনেকে আমাদের সবক দেন। মানবাধিকার শেখান। মানবাধিকার বঞ্চিত তো আমরা। যারা খুনিদের ইনডেমনিটি দিয়ে রক্ষা করে, আজ সেই তাদের কথা শুনে অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা, অনেক দেশ দেখি মানবাধিকারের কথা ওঠায়। আমরাই তো মানবাধিকার বঞ্চিত ছিলাম। ৩৫

বছর লেগেছে বাবা-মার হত্যার বিচার করতে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার নেই যারা বলেন, তারা ২০০১ দেখেননি? ১৫ আগস্ট দেখেননি? ১৫ আগস্ট থেকে আওয়ামী লীগ সরকার আসা পর্যন্ত এদেশে কী ছিল দেখেননি? তখন তারা চোখেও দেখেননি, কানেও শোনেননি কী কারণে—তা আমার বোধগম্য নয়।

আমেরিকায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমেরিকায় তো প্রতিদিন গুলি করে করে শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। স্কুলে, শপিংমলে, রাস্তায় হত্যা হচ্ছে। এমনকী বাঙালি মেয়ে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় ছিনতাই করতে গিয়ে হত্যা করছে। প্রতিদিনই তো তাদের প্রতিটি স্টেটে গুলি করে করে হত্যা করা হচ্ছে। ঘরের মধ্যে গিয়ে পরিবারসহ হত্যা করা হচ্ছে।

রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা যখন নির্যাতিত হচ্ছিল, ধর্ষণের শিকার হচ্ছিল, আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি। আমরা মানবিক কারণে যখন এতগুলো মানুষের দায়িত্ব নিতে পারি। এর থেকে মানবাধিকার সংরক্ষণ আর কী হতে পারে, সেটাই আমার প্রশ্ন?

বিএনপির ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালের আন্দোলনের সমালোচনা করে সংসদ নেতা বলেন, জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে মারা বিএনপির আন্দোলন। অবরোধ দিয়ে রেখেছে। সেই অবরোধ এখনো তোলেনি। অবরোধ দিয়ে মানুষ হত্যা করা বিএনপির চরিত্র। আজ তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা শুনি। মানবাধিকারের কথা শুনি।

বারবার বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে খেলা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর নির্বাচনের প্রহসন শুরু হয়। জনগণের ভোট নিয়ে ছিনিমিনি খেলা শুরু হয়। শুরু হয় ‘হ্যাঁ’, ‘না’ ভোটের প্রহসন। ‘হ্যাঁ’ বক্স পাওয়া যেত, ‘না’ বক্স নেই। ভোট দেওয়া লাগত না। এমনিতেই বক্স ভরে যেত। সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান মিলিটারি রুল ও সংবিধান লঙ্ঘন করেন। জিয়াউর রহমান নির্বাচনের নামে প্রহসন করে রাষ্ট্রপতি পদটি কলুষিত করেন। জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জনগণের ভোটের অধিকার সুরক্ষিত করেছি। ভোটাধিকার সম্পর্কে সচেতন করেছি এবং গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রেখেছি। ২০০৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত অগ্নি সন্ত্রাস, মানুষ হত্যা নানা ধরনের অপকর্ম করেও তারা কিন্তু এই গণতন্ত্র ধ্বংস করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ আছে বলেই গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে। আওয়ামী লীগ আছে বলেই মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। মানুষ নৌকায় ভোট দিয়ে স্বাধীনতা পেয়েছে। নৌকায় ভোট দিয়ে আকাল-মঙ্গা দূর হয়েছে। দুর্ভিক্ষ দূর হয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে।

ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে বলে সংসদকে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার আছে বলেই এটা করে দিয়েছি। আমরা না থাকলে কেউ এটা দেখতও না। মানুষের দিকে তাকাত না। কিছু কিছু লোক হোল্ডিং করে দাম বাড়ায়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ফেসবুকে যে পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে মেটা

যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ, শয্যা সংকটে মেঝেতে সেবা নিচ্ছেন রোগীরা

‘জুলাই জাতীয় সনদ’ স্বাক্ষরিত হবে ১৫ অক্টোবর

এক হওয়া ৫ ব্যাংকের কর্মীদের চাকরি নিয়ে প্রেস সচিবের যে বার্তা

যে কারণে গভীর রাতে স্বামীর কবর জিয়ারত করতে যান খালেদা জিয়া

তারেক রহমানের স্মৃতিবিজড়িত বটগাছ যমুনায় বিলীন

সকালে খালি পেটে ভুলেও খাবেন না যে ৭ খাবার

আগামীর বাংলাদেশে চাঁদাবাজি মাদক সন্ত্রাস থাকবে না : নজরুল ইসলাম আজাদ

গ্রামীণ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ১০ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি

১০

সামিতকে বেঞ্চে রেখেই ক্যাবরেরার একাদশ

১১

যে ৮ ধরনের মানুষের জন্য কফি খাওয়া বিপদজনক

১২

নির্বাচন নিয়ে কনফিউশনে দুই তথাকথিত সিনিয়র সাংবাদিক : প্রেস সচিব

১৩

বজ্রপাত প্রতিরোধে ২০০ তালের চারা রোপণ করল পুলিশ 

১৪

জামায়াত আমিরের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ

১৫

বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব থেকে ছিটকে গেলেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা

১৬

আমিরাতে আটক বাকি ২৫ বাংলাদেশি কবে ফিরছেন, জানাল সরকার

১৭

হত্যার পর মা-বাবাকে ঘরের ভেতরে পুঁতে রাখেন ছেলে

১৮

শান্তি রক্ষা মিশন নিয়ে দুঃসংবাদ দিল জাতিসংঘ

১৯

শাবিপ্রবির ২৫ শিক্ষার্থী বহিষ্কার, প্রতিবাদে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

২০
X