জুলাই আন্দোলনে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ইমরুল কায়েস (২৯) হত্যাচেষ্টা মামলায় নওগাঁ-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. ওমর ফারুক সুমনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিনহাজুর রহমানের আদালত এই আদেশ দেন।
এর আগে, মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর আলম তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
আটক রাখার আবেদনে বলা হয়, আসামি এ মামলার ঘটনায় জড়িত মর্মে তথ্য পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তারের পর এই আসামিকে মামলার ঘটনা সংক্রান্তে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে আসামির দেওয়া তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামিকে জেলহাজতে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন। মামলার তদন্ত অব্যাহত আছে। আসামি জামিনে মুক্তি পেলে চিরতরে পলাতক হওয়াসহ মামলা তদন্তে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে। আসামির দেওয়া তথ্য যাচাইয়ান্তে পরবর্তী সময়ে তাকে পুলিশ রিমান্ডের প্রয়োজন হতে পারে।
আসামি পক্ষের আইনজীবী রোকেয়া বেগম জামিন চেয়ে শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, আসামি একজন নওগাঁর সাবেক এমপি। তিনি স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করে বিজয়ী হন। আসামি কোনো দলের সংসদ সদস্য ছিলেন না। তিনি একজন আইনজীবী এবং নওগাঁ জেলার-৬ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়ে তার কর্ম-দক্ষতা দেখিয়েছেন। তিনি ঘটনা সম্পর্কে অবগত নন। মামলার সঙ্গে তার সম্পৃক্ত নেই। ঢাকায় তার রাজনৈতিক পেক্ষাপট তৈরি হয়নি এবং তৈরি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আসামি শারীরিকভাবে মারাত্মক অসুস্থ। তার চিকিৎসা সঠিকভাবে না করা হলে জীবননাশের আশঙ্কা রয়েছে। এমতাবস্থায় আসামির জামিনে থাকা একান্ত প্রয়োজন। যে কোনো শর্তে আসামির জামিনের প্রার্থনা করছি।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. হারুন অর রশিদ জামিনের বিরোধিতা করে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামির জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে, গত ৮ অক্টোবর রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে সাবেক এমপি মো. ওমর ফারুক সুমনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
মামলার অভিযোগ বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ১৯ জুলাই ঢাকার মোহাম্মদপুর থানাধীন বেড়িবাঁধ তিন রাস্তার মোড়ে শান্তিপূর্ণ মিছিলের অংশগ্রহণ করেন ভুক্তভোগী মো. ইমরুল কায়েস ফয়সাল। সেদিন আন্দোলনকারীদের ওপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে হত্যার উদ্দেশে গুলি বর্ষণ করলে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে যান। পরে সময়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ১৮৪ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যাচেষ্টা মামলাটি দায়ের করেন।
মন্তব্য করুন