

বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (বুটেক্স) প্রথম সমাবর্তন আয়োজন করতে না পারলেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিচ্ছে দ্বিতীয় সমাবর্তন ফি। বারবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানানোর পরও সমাধান না করায় ক্ষোভে ফুঁসছেন সাবেক ও সদ্য পাস করা স্নাতক শিক্ষার্থীরা।
প্রতিষ্ঠার পর এখনো কোনো সমাবর্তন আয়োজন করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়টি। প্রথম সমাবর্তন আয়োজন করা হবে মর্মে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সমাবর্তন ফি নিলেও তা আয়োজন করতে পারেনি। তবু দ্বিতীয় সমাবর্তনের নামে নতুন করে রেজিস্ট্রেশন ফি আদায় করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
প্রায় এক বছর আগে নির্ধারিত প্রথম সমাবর্তনের তারিখ পেরিয়ে গেলেও এখনো সেই অনুষ্ঠান অনিশ্চিত রয়ে গেছে। কোনো নতুন তারিখ বা আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছাড়াই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আবারও ফি নেওয়ায় শুরু হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা।
গত বছর ৭ সেপ্টেম্বর বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। সে অনুযায়ী গাউন, গিফট প্যাক, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টসহ সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হলেও দেশের রাজনৈতিক পটভূমি ও উপাচার্য পরিবর্তনের কারণে অনুষ্ঠানটি স্থগিত হয়। এরপর এক বছরের বেশি সময় পার হলেও সমাবর্তনের নতুন সময়সূচি ঘোষণা করেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা মূল সনদপত্র তোলার সময় দ্বিতীয় সমাবর্তনের নামে নতুন করে রেজিস্ট্রেশন ফি নেওয়া শুরু করেছে প্রশাসন। সনদ ও সমাবর্তন রেজিস্ট্রেশন ফ্রি হিসেবে নিচ্ছে তিন হাজার টাকা।এতে শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন তুলেছে, যেখানে প্রথম সমাবর্তনের কোনো নিশ্চয়তা নেই, সেখানে দ্বিতীয় সমাবর্তনের নামে ফি নেওয়া কতটা যুক্তিসঙ্গত।
৪৬তম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী জিয়াউর রহমান বলেন, যেখানে প্রথম কনভোকেশনের কোনো তারিখ নেই, কোনো নোটিশও নেই, সেখানে দ্বিতীয় কনভোকেশনের নামে কেন টাকা দিতে হবে? এই টাকা কোথায় যাচ্ছে— তা নিয়েও কেউ কিছু বলছে না। এটি সরাসরি প্রতারণা।
একই ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী ইফতেখার আলম বলেন, মূল সার্টিফিকেট তুলতেই আমাদের অনেক টাকা দিতে হয়— ট্রান্সক্রিপ্ট, সার্টিফিকেট, অন্যান্য ফি মিলে প্রায় পাঁচ হাজার টাকার মতো। তার ওপর কনভোকেশনের জন্য বাড়তি ফি দেওয়া অনেকের জন্যই কষ্টসাধ্য। সমাবর্তনের তারিখ না জেনেই ফি নেয়া একেবারেই অযৌক্তিক।
আরেক সাবেক শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান আতিক বলেন, দুই বছর আগে প্রথম সমাবর্তনের ফি নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। ওয়েবসাইটে কোনো নোটিশ বা ব্যাখ্যাও নেই। এখন আবার নতুন ফি নেওয়া হচ্ছে— এটা চরম দায়িত্বহীনতা।
বুটেক্সের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মারজানী তুবন নাহার বলেন, ২০১৮ সালে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ছিল, মূল সার্টিফিকেট তুলতে হলে কনভোকেশনের ফিও দিতে হবে। তবে এখন শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রেশন করলেই সার্টিফিকেট পাচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জুলহাস উদ্দিন জানান, রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে গত বছর নির্ধারিত তারিখে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়নি। আমরা নতুন করে মন্ত্রণালয়ে অনুমতির আবেদন করেছি। অনুমতি পেলে এ বছরই প্রথম সমাবর্তন এবং পরের বছর দ্বিতীয় সমাবর্তন আয়োজন করা হবে।
মন্তব্য করুন