কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৫০ পিএম
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:১১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বুড়িগঙ্গা দূষণে ৪০ শতাংশ দায়ী ২৫১ পয়োনিষ্কাশন লাইন

বুড়িগঙ্গা নদীতে সরাসরি অপরিশোধিত বর্জ্য এসে মিশছে। ছবি : সংগৃহীত
বুড়িগঙ্গা নদীতে সরাসরি অপরিশোধিত বর্জ্য এসে মিশছে। ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের সবচেয়ে দূষিত নদীগুলোর অন্যতম বুড়িগঙ্গার মাত্র ৬ কিলোমিটারের মধ্যে ২৫১টি পাইপলাইনের মাধ্যমে সরাসরি অপরিশোধিত বর্জ্য এসে মিশছে। এ নদীর দূষণের ৩০-৪০ শতাংশই হচ্ছে এসব পাইপলাইনের মধ্য দিয়ে।

সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, কামরাঙ্গীরচরের শেখ রাসেল স্কুল থেকে ফরাশগঞ্জ ব্রিজ পর্যন্ত ২৫১টি পাইপলাইনের মাধ্যমে অপরিশোধিত বর্জ্য ফেলা হচ্ছে।

রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার (আরডিআরসি) পরিচালিত ‘ঢাকা নদীর দূষণ পরিস্থিতি’ শীর্ষক গবেষণায় বাম তীরে (পুরান ঢাকা) ১৩৭টি এবং ডান তীরে (কেরানীগঞ্জের দিকে) ১১৪টি পয়োনিষ্কাশন লাইন পাওয়া গেছে।

আরডিআরসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ বলেন, মাঠপর্যায়ে তদন্তের মাধ্যমে পয়োনিষ্কাশনের সংযোগগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে।

এসব পাইপলাইন পাগলা পয়োশোধনাগারে (এসটিপি) স্থানান্তরের পরামর্শ দেন তিনি। ক্ষুদ্র পরিসরের প্রকল্প মাত্র ২৫-৩০ কোটি টাকা ব্যয়েই সম্পন্ন হতে পারে বলেও জানান তিনি।

এজাজ বলেন, যদি ২৫১টি পয়োনিষ্কাশন সংযোগ বন্ধ করা যায়, তাহলে বুড়িগঙ্গা নদীর ৩০-৪০ শতাংশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।

স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, বুড়িগঙ্গা নদী দূষণের প্রাথমিক উৎস অপরিশোধিত পয়োবর্জ্য নিষ্কাশন, শিল্প বর্জ্য, বর্জ্য ফেলার পয়েন্ট এবং পানির যানবাহন থেকে নির্গত বর্জ্য।

পয়োনিষ্কাশন নিয়ন্ত্রণ না করলে নদীর পানি কখনোই পরিষ্কার বা ব্যবহারযোগ্য হবে বলেও জোর দেন তিনি।

এসব সংযোগ থেকে অপরিশোধিত পয়োনিষ্কাশন কার্যকরভাবে ব্যবস্থাপনার জন্য বিভিন্ন স্থানে ছোট থেকে মাঝারি পয়োশোধনাগার (এসটিপি) স্থাপনের পরামর্শ দেন এই পরিবেশবিদ।

অধ্যাপক মজুমদার বলেন, জুন-সেপ্টেম্বর সময়ে বুড়িগঙ্গার পানির গুণগত মান পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্ধারিত জাতীয় মানদণ্ডের মধ্যে বা কাছাকাছি থাকে। তবে, অন্য সময়ে পানির গুণগতমান ধারাবাহিকভাবে অনুমোদিত মাত্রা ছাড়িয়ে যায়।

গবেষণায় আরও বলা হয়, নদীর তীর বরাবর ২৫৭টি বর্জ্য ফেলার পয়েন্ট বুড়িগঙ্গা নদীর দূষণের অন্যতম কারণ। এর মধ্যে ডান তীরে ১৪৮টি এবং বাম তীরে রয়েছে ১০৯টি।

এ ছাড়া শিল্প কারখানা থেকে অপরিশোধিত বর্জ্য ফেলা হচ্ছে ৯৩টি স্থানে। এর মধ্যে বাম তীরে ৩৫টি এবং ডান তীরে ৫৮টি পয়েন্ট রয়েছে।

গবেষণায় আরও দেখা গেছে, নিকটবর্তী নদীগুলোতে অতিরিক্ত দূষণের উৎস চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে তুরাগ নদীর সঙ্গে ৯৯টি এবং বালু নদীর সঙ্গে ১০টি অপরিশোধিত বর্জ্য সংযোগ এবং তুরাগ নদীতে ১৩১টি, টঙ্গী খালে ৫১টি ও বালুতে ৩২টি বর্জ্য ফেলার সংযোগ পাওয়া গেছে।

এজাজ বলেন, বুড়িগঙ্গায় যে পরিমাণ পানি প্রবাহ হয়, তার ৯০ শতাংশ সরবরাহ করে তুরাগ নদী, কিন্তু গাজীপুরসহ তুরাগ নদীর বিভিন্ন স্থানে দূষিত হচ্ছে।

তিনি বুড়িগঙ্গাকে প্রাকৃতিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদীর তীরে অপরিশোধিত পয়োনিষ্কাশন ও বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত নদীগুলোর মধ্যে একটি বুড়িগঙ্গা। প্রতিদিন শহরের ৬০ হাজার ঘনমিটারেরও বেশি বিষাক্ত বর্জ্য এ নদীর পানিতে ফেলা হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

৩৬ ঘণ্টার হরতাল চলছে

নাশতার জন্য সেরা ১২ খাবার

কেমন থাকবে আজ ঢাকার আবহাওয়া

৩৩২ কোটি টাকায় ‘রোজ গার্ডেন’ কিনে রাষ্ট্রের ক্ষতি, অনুসন্ধানে দুদক

ক্যানটিন থেকে তুলে নিয়ে রাবির ২ শিক্ষার্থীর ওপর হামলা

আজ ঢাকায় আসছেন কমনওয়েলথ মহাসচিব

নারীর হাতে মার খেয়ে অস্ত্র ফেলে পালাল ৩ ছিনতাইকারী

সেলস অ্যাডমিন বিভাগে নিয়োগ দিচ্ছে স্কয়ার গ্রুপ

যুদ্ধবিরতির মধ্যেও গাজায় ইসরায়েলি হামলা, নিহত ২৫

নাসির গ্রুপে চাকরির সুযোগ, আবেদন করুন আজই

১০

রাজধানীতে আজ কোথায় কী

১১

২০ নভেম্বর : ইতিহাসের এই দিনে যা ঘটেছিল

১২

অ্যাকাউন্টস বিভাগে নিয়োগ দিচ্ছে ইবনে সিনা

১৩

২০ নভেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

১৪

বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

১৫

তারেক রহমানের জন্মদিন আজ

১৬

ট্রাক-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের দুইজন নিহত, আহত ৪

১৭

ফেনসিডিলসহ স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আটক

১৮

জকসুতে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে নির্বাচন করবেন সাংবাদিক সম্পদ

১৯

দুর্নীতিবাজদের বর্জন করুন, জনগণের ভরসা হতে চাই : শাকিল উজ্জামান

২০
X