কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ বৈষম্যবিরোধী চেতনার পরিপন্থি : টিআইবি

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের লোগো। গ্রাফিক্স : কালবেলা
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের লোগো। গ্রাফিক্স : কালবেলা

সাম্প্রতিক সময়ে সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের ওপর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আক্রমণ, নির্বিচারে মামলা, ব্যক্তিগত ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে হেনস্তার উদ্দেশ্যে স্বার্থান্বেষী মহলের অপতৎপরতা বৈষম্যহীন ‘নতুন বাংলাদেশ’-এর অভীষ্টের জন্য ভালো বার্তা বয়ে আনবে না উল্লেখ করে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

বুধবার (৬ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।

‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কি ফাঁকা বুলি’ প্রশ্ন তুলে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়, মুক্ত সাংবাদিকতার পরিবেশকে বাধাগ্রস্ত করার এই প্রবণতার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে গণমাধ্যম ও সংবাদকর্মীদের জন্য ভয়ডরহীন পরিবেশ সৃষ্টির উদ্যোগ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি। একইসঙ্গে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতার ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার চর্চা নিশ্চিতের জন্য সংশ্লিষ্ট অংশীজনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

এ ব্যাপারে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, পতিত কর্তৃত্ববাদী সরকারের শাসনামলে মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে ১৪ বছরে ৪২ ধাপ নেমেছিলো বাংলাদেশ। এ সময়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাসংক্রান্ত সকল মানদণ্ডেই বাংলাদেশের ক্রমাবনতি হয়েছে। ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন প্রাণহানি ও রক্তের বিনিময়ে অর্জিত নতুন বাংলাদেশে এই অবস্থান থেকে উত্তরণের অভূতপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকেও এ প্রতিশ্রুতি বারবার দেওয়া হয়েছে- গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হবে না, ক্ষমতার প্রভাবের বাইরে থেকে দেশে সাংবাদিকতার স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে। কিন্তু আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, স্বার্থান্বেষী বিভিন্ন মহল দেশের কোনো কোনো গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা, হামলা, ঘেরাওয়ের হুমকিসহ নানাবিধ আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। দৃশ্যত, অতিক্ষমতায়িত কোনো কোনো মহলের স্বার্থের বাইরে গেলেই গণমাধ্যমকে আক্রমণ ও সাংবাদিক হেনস্তা, গণমাধ্যমকে দখল বা খেয়ালখুশিমতো পরিচালনার প্রচেষ্টা চলছে। যা আসলে মুক্ত গণমাধ্যমের সম্ভাবনার জন্য অশনি সংকেত।

গণমাধ্যমের ওপর এরূপ আঘাত ‘নতুন বাংলাদেশ’-এর অভীষ্টের জন্য মোটেই সুখকর বা ইতিবাচক নয় উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, নির্বিচার হুমকি, হামলা, ঘেরাও, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ক্ষোভের বশীভূত হয়ে যথেচ্ছ মামলা বা ঢালাওভাবে অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করা প্রকারন্তরে জনবিরোধী কর্তৃত্ববাদের পরিচায়ক। টিআইবি মনে করে, পতিত কর্তৃত্ববাদী সরকারের মতো গণমাধ্যমকে নিজের পোষ্যের মতো ব্যবহারের চেষ্টা ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত ‘নতুন বাংলাদেশ’-এর মুক্তচিন্তা ও বৈষম্যবিরোধী চেতনার পরিপন্থি। টিআইবি মনে করিয়ে দিতে চায়, ভিন্নমত ও মুক্ত গণমাধ্যমের ঢালাও নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তাহীনতা মূলত কর্তৃত্ববাদের পুনরাগমনের পথ সৃষ্টি করবে। আমরা বিশ্বাস করি, অবিলম্বে দেশে স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য ভয়ডরহীন উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টিতে সুস্পষ্ট ও কঠোর পদক্ষেপ নেবে অন্তর্বর্তী সরকার। অন্যথায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফাঁকা বুলিতে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।

ড. জামান আরও বলেন, টিআইবি বিশ্বাস করে, সাংবাদিকের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনো ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ থাকলে বা যারা সরাসরি কর্তৃত্ববাদের দোসরের ভূমিকা পালন করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত। কিন্তু পতিত কর্তৃত্ববাদী সরকারের সহযোগী ‘ট্যাগ’ দিয়ে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে যথেচ্ছ মামলা, তথ্য অধিদপ্তরের দেওয়া স্থায়ী ও অস্থায়ী প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল, হুমকি, বরখাস্ত করার মতো ঘটনা দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতার স্বপক্ষে কোনো ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে না। বরং, ‘ভিন্নমতের কারণেই স্বৈরাচারের দোসর’ অভিযোগ তোলার পেছনে স্বার্থান্বেষীদের দুরভিসন্ধি কাজ করছে। টিআইবি স্পষ্টভাবে বলতে চায়, শুধু সাংবাদিকতার জন্য কোনো সাংবাদিককে কখনোই শাস্তি দেওয়ার সুযোগ নেই পতিত সরকারের দোসর অভিযোগে ‘উইচ হান্টিং’ করে সাংবাদিক হয়রানির চলমান চর্চা অবিলম্বে বন্ধের উদ্যোগ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই আমরা। একইসঙ্গে সাংবাদিকতার ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার চর্চা নিশ্চিতের জন্য গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানাই।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

স্ত্রী-শাশুড়ি মিলে যুবককে হত্যাচেষ্টা, ঘরের বারান্দায় খোঁড়া হয়েছিল কবর

যে ৩ সময়ে আয়াতুল কুরসি পাঠ করলে বেশি উপকার মিলে

হরাইজন মডেল ইউনাইটেড নেশনস সেশন-১ : এক অনন্য সফলতা

ছেলে হত্যার বিচার ঠেকাতে ষড়যন্ত্রমূলক নতুন মামলা, ক্ষোভে শহীদ ছায়াদের পরিবার

সেপ্টেম্বরে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪১৭ মৃত্যু

সাধারণ যে ৬ ভুলের কারণে পারফিউমের ঘ্রাণ দ্রুত চলে যায়

বেনাপোল বন্দরে ৫ দিন পর আমদানি-রপ্তানি শুরু

হবিগঞ্জে নদী থেকে মাদ্রাসাছাত্রের মরদেহ উদ্ধার

আমরা একটা ঐক্যবদ্ধ জাতি দেখতে চাই: জামায়াত আমির

কিয়ামতের দিন যে ৫ প্রশ্নের জবাব না দিয়ে কেউ রেহাই পাবে না

১০

গাজা নিয়ে ট্রাম্পের ২০ দফায় কী আছে, কেন তুমুল আলোচনা

১১

ট্রলার সাজিয়ে নেচে-গেয়ে ঘরে ফিরলেন জেলেরা

১২

ম্যাচসেরার পুরস্কার নিয়ে শরিফুলের মানবিক উদ্যোগ

১৩

ড. ইউনূসের মুখাকৃতি দিয়ে অসুর বানানোর বিষয়ে যা বললেন রিজভী

১৪

ভোটের পরিবেশ ফিরিয়ে আনবে বিএনপি : সেলিম ভূঁইয়া

১৫

ওড়িশায় ভারী বৃষ্টি, ভূমিধসে নিহত ২

১৬

আইফোন কিনতে কিডনি বিক্রি করা সেই তরুণ কেমন আছেন?

১৭

বিতর্কিত বিচারে সাতজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করল ইরান

১৮

ভোমরা স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি শুরু

১৯

যেভাবে ফিটনেস ধরে রেখেছেন আলিয়া

২০
X