ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনের শপথ আটকে রাখার অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক।
বুধবার (২১ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে তৃণমূল নাগরিক আন্দোলন আয়োজিত এক সভায় তিনি এ অভিযোগ করেন।
জয়নুল আবদিন ফারুক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হাসিনার বিচারের প্রতি আমাদের যেমন আস্থা ছিল না, তেমনি এখনো ভরসা পাচ্ছি না। দেখলাম- হামিদ নাটক, নাটক দেখলাম আইভির, আরেক নাটক দেখলাম ফারিয়ার নাটক। হচ্ছেটা কী দেশে? বাংলাদেশের জনগণের মূল দাবিগুলো অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা কি এসব?
তিনি প্রশ্ন তোলেন, তাহলে গ্রেপ্তার করারই বা কী দরকার ছিল, আর জামিন দেবারও কী দরকার ছিল?
তিনি বলেন, ৯ মাসে অন্তর্বর্তী সরকারের পরিচালনায় বিচার বিভাগের উপর মানুষের আস্থা, হাসিনা আমলের চেয়েও বেশি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বর্তমানে বিচারকদের রায় প্রভাবিত হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রতি প্রশ্ন রেখে সাবেক এই বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ বলেন, আপনার হাতে ক্ষমতা আল্লাহ দিয়েছেন, জনগণ পাশে আছে। তাহলে কীসের এত ভয়? আপনার তো ভয় পাওয়ার কথা না। কারণ সবাই আপনার সঙ্গে, শুধু আওয়ামী লীগ ছাড়া। তাহলে কেন ইশরাক শপথ নিতে পারছেন না? ইশরাকের সমর্থকদের কেন সিটি করপোরেশনে তালা দিতে হলো? ইশরাক কেন আজ মৎস্য ভবন থেকে শাহবাগ অভিমুখে মিছিল করছেন? আপনারা যদি কারও কান কথা শুনে ইশরাকের শপথ গ্রহণকে বন্ধ করে থাকেন, তাহলে এটি খুব ঘৃণিত কাজ করেছেন।
তিনি বলেন, আমি এসব প্রসঙ্গে যাব না, আর আব্দুল হামিদ প্রসঙ্গেও যেতে চাই না। এমনকি নায়িকার নাটক মঞ্চস্থেও আমি যেতে চাই না। এসব মঞ্চস্থ হচ্ছে, কারণ আজ বেলা ১১টায় নির্বাচন কমিশনের সামনে একটি রাজনৈতিক দলের (এনসিপি) বিক্ষোভ মিছিল হলো।
বিএনপির এই নেতা বলেন, যে নির্বাচন কমিশন ঠিক একটি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যার কোনো সমালোচনা ইতোমধ্যে হয়নি, ঠিক তখনই তাকে (নির্বাচন কমিশন) নিয়ে কেন, কী কারণে এবং কার ইঙ্গিতে কমিশনের সামনে বিক্ষোভ হচ্ছে?
তিনি আরও বলেন, আমার মনে হয় তলে তলে আপনারা তাদের কথা শুনে ইশরাকের শপথ করাননি এবং হামিদের মতো লোককে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন। বিভিন্ন নাটক মঞ্চস্থ করে দেশের মানুষের ভোটের অধিকারের পথ থেকে বঞ্চিত করার পরিকল্পনা হচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি নিজের আস্থার অভাবের কথা উল্লেখ করে ফারুক বলেন, আপনাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) উপর আস্থা-বিশ্বাস সব হারিয়ে গেছে। আপনার (প্রধান উপদেষ্টার) সমালোচনা হাসিনা করেছে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে, সংসদ ভবনে দাঁড়িয়ে। আপনাকে কোর্টের বারান্দায় দাড় করিয়েছে হাসিনা।
তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আপনাদের ওপর আস্থা, আপনাদের ওপর বিশ্বাস সবকিছুই মানুষ আজ হারিয়ে ফেলেছে। এসব হারিয়ে যাওয়ার পর কী হবে? কেউ লন্ডন চলে যাবে, কেউ আমেরিকা চলে যাবে। কেউ পরিবেশের নামে বিদেশ চলে যাবে। আপনার আশপাশের যারা কান কথা দিয়ে আপনাকে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে নিচ্ছে, তারা তখন কেউই আপনার পাশে থাকবে না। আপনার সুনাম এবং আপনার অর্জনকে এরা ক্ষুন্ন করে চলে যাবে।
জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সহসাধারণ সম্পাদক এবং আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মফিজুর রহমান লিটনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির শিশু বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামান, নির্বাহী কমিটির সদস্য আ ক ম মোজাম্মেল হক, তাঁতী দলের নেতা কাজী মনিরুজ্জামান মনির, কৃষক দল নেতা আব্দুল্লাহ আল নাইম, মৎসজীবী দলের সাবেক নেতা ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ।
মন্তব্য করুন