

অবিলম্বে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করা, তফসিলের আগে গণভোট ও পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবিসহ পাঁচ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বেলা ১১টায় রাজধানীর পল্টন মোড়ে অনুষ্ঠিত জমায়েতে দলের মুখপাত্র ও যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, বিএনপি সংস্কারকে বারংবার বাধাগ্রস্ত করেছে, তারা রাষ্ট্র সংস্কার চায় না, সুষ্ঠু ধারার রাজনীতি চায় না। তাদের সিনিয়র নেতাদের কথাবার্তায় এটা বারংবার স্পষ্ট হয়েছে। কিন্তু জুলাই অভ্যুত্থানের পর দেশকে আর কোনো অবস্থাতেই আগের পরিস্থিতিতে ফিরে যেতে দেওয়া যাবে না। তাই সংস্কার করতেই হবে। সে জন্য অবিলম্বে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ দিতে হবে এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করতে তফসিলের আগেই গণভোট দিতে হবে।
তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরে আমাদের রাজপথে নামতে হবে, দাবি আদায়ে আন্দোলন করতে হবে তা আমরা ভাবিনি, কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের বাধ্য করেছে। তাদের তিনটা অঙ্গীকার ছিল। আমরা বলব, সেই অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করুন। সংস্কারের জন্য কমিশন হয়েছে, ঐকমত্য কমিশন হয়েছে, জুলাই সনদ হয়েছে, সনদে স্বাক্ষর হয়েছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের ব্যাপারে সবাই একমত হয়েছে, সংস্কার বাস্তবায়নে গণভোটের বিষয়েও সবাই একমত হয়েছে; এখন গড়িমসি কিসের? আগামী ১০ তারিখের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি না হলে আমরা ঢাকায় লোকে লোকারণ্য করে সমাবেশ করব ইনশা আল্লাহ।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুখপাত্র আরও বলেন, দ্রুতই গণভোটের তারিখ ঘোষণা করতে হবে। জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে হবে না। দুটির তফসিলও একসঙ্গে হবে না। আমরা নভেম্বরে গণভোটের বিষয় বারংবার বলেছি। আপনারা কালক্ষেপণ করেছেন। এখন যদি নভেম্বর গণভোট করতে না পারেন, তাহলে যেদিনই দেন গণভোট আগে হতে হবে।
আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রয়োজনে জাতীয় নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হবে না; দুই মাস পরে করেন। কিন্তু গণভোট ছাড়া কোনো জাতীয় নির্বাচন হবে না। রাষ্ট্র সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। কারণ রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য আমাদের তরুণ ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছে। আমরা মাত্র আন্দোলন শুরু করেছি। আন্দোলন ক্রমে তীব্র হবে। আপনারা আন্দোলন চাইলে আন্দোলনই হবে।
মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, যারা বলে সংস্কার চায় না, তাদের সঙ্গে আমাদের সমঝোতা করতে বলেন? যারা দেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছে, যারা পুরোনো বন্দোবস্ত টিকিয়ে রাখতে চায়, তাদের সঙ্গে সে সমঝোতা করতে বলেন? এটা তামাশা।
পল্টন মোড়ে জমায়েতে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতৃবৃন্দ।
জমায়েত শেষে গণমিছিলসহ প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি জমা দিতে যায়। প্রতিনিধি দলে ছিলেন বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. মুহাম্মাদ আবু তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদসহ আট দলের শীর্ষ নেতারা।
মন্তব্য করুন