নিউ কালিডোনিয়াজুড়ে বিক্ষোভ, জরুরি অবস্থা জারি
নির্বাচন সম্পর্কিত নতুন আইনকে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে ফ্রান্স শাসিত নিউ কালিডোনিয়া। এর ফলে অঞ্চলটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফ্রান্স নিজেদের শাসিত নিউ কালেডোনিয়ায় জরুরি অবস্থা জারি করেছে। এ ছাড়া অঞ্চলটিতে স্থিতিশীলতা আনতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। দেশটিতে প্রদেশিক নির্বাচনের আইন পরিবর্তন করায় অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়।  সোমবার (১৩ মে) থেকে শুরু হওয়া এ সহিংসতায় এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ চারজন নিহত হয়েছেন। এলাকাটিতে কারফিউ জারির পরও এ অস্থিতিশীলতা অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় শতাধিক লোক আহত হয়েছেন।  সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা থেকে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। এ সময় কর্তৃপক্ষকে গ্রেপ্তারের ব্যাপক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।  বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল আটাল বলেন, অঞ্চলটি আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ১৭০০ কর্মী রয়েছেন। এর সঙ্গে অতিরিক্ত এক হাজার ফোর্স পাঠানো হয়েছে।  ফ্রান্সের নতুন আইন অনুসারে নিউ কালিডোনিয়ায় যেসব ফরাসি নাগরিক ১০ বছরের বেশি সময় ধরে বসবাস করছেন তারা প্রাদেশিক নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন। এটি অনেকটাই নিউ ক্যালিডোনিয়ার নাগরিকত্ব লাভের সমান।  নতুন এ আইনের বিরুদ্ধে স্থানীয়রা ফুঁসে উঠেছে। তাদের দাবি, অবিলম্বে বিতর্কিত এ আইনটি বাতিল করতে হবে। এ জন্য বুধবার বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছে।  আলজাজিরা জানিয়েছে, এ বিক্ষোভের জেরে দেশটিতে প্রায় দুই শতাধিক বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। 
১৬ মে, ২০২৪

‘আইএলওকে যে সহযোগিতা করার দরকার, আমরা সেটা চালিয়ে যাচ্ছি’
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থাকে (আইএলও) যে সহযোগিতা করার দরকার, আমরা সেটা চালিয়ে যাচ্ছি বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক। মঙ্গলবার (১৪ মে) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইএলও প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।  আইনমন্ত্রী বলেন, আইএলওকে যে সহযোগিতা করার দরকার, আমরা সেটা চালিয়ে যাচ্ছি। সেজন্যই মূলত আমরা ৩ দিন ধরে শ্রম আইনের খসড়া নিয়ে আলোচনা করেছি। এখানে মূলত কিছু কিছু ইস্যু আছে, যেগুলো অ্যামেন্ডমেন্টে থাকার কথা বলা হয়েছে।  তিনি বলেন, সেখানে আলোচনার মাধ্যমে আমাদের দেশের বাস্তবতায় গ্রহণযোগ্য হবে কি হবে না, সেই সিদ্ধান্ত আমরা নেব। কিছু কিছু ইস্যু আছে, যেগুলো মনে হয়েছে গ্রহণযোগ্য, সেগুলো আমরা গ্রহণ করেছি। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সে জন্য এ বিষয়ে আমি বিস্তারিত বলব না। কারণ বিস্তারিত বলতে গেলে হয়তো আমি কোথাও ভুল করব, সেজন্য আমি বলব না। আনিসুল হক বলেন, শ্রম আইন সংশোধনের বিষয়ে কিছু বিষয় এসেছিল যে ব্যাপারে নীতিনির্ধারক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত দিতে হবে। আমি বলেছি, নীতিনির্ধারক পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে। আমরা গ্রহণ করব কী করব না সেটা পরের সিদ্ধান্ত। কিছু কিছু বিষয় আছে ত্রিপক্ষীয় কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে। ‌তাদের বক্তব্য নোট করেছি, তাদের বক্তব্য সেখানে তুলে ধরব। তিনি বলেন, আইএলও’র কমিটি অব এক্সপার্ট আমাদের আইনটা দেখেছেন, পড়েছেন, সেখানে তারা আন্তর্জাতিক মান নিয়ে কিছু সুপারিশ দিয়েছেন। আইনমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা যে থ্রেশহোল্ড (ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের ক্ষেত্রে শ্রমিকদের সম্মতির হার) ১৫ শতাংশে নিয়ে এসেছি, তারা এটির প্রশংসা করেছেন। তারা চায় এটা আরও কমে আসুক। 
১৪ মে, ২০২৪

শিগগির হচ্ছে পূর্ণাঙ্গ সড়ক আইন
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুসহ ক্ষতি কমাতে পূর্ণাঙ্গ সড়ক আইন শিগগির সংসদে পাস হবে। গতকাল শনিবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’র (নিসচা) দশম মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, নতুন আইনে চালক-সহকারী, পরিবহন মালিক এবং ট্রান্সপোর্ট এজেন্সিসহ সংশ্লিষ্ট সবার দায়িত্ব বিশ্লেষণ করা হয়েছে। অর্থাৎ কে কোন দায়িত্বে থাকবেন এবং কোন ধরনের গাফিলতিতে কি ধরনের শাস্তি—সব স্পষ্ট করা হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনা এখন দেশে জাতীয় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। ২০২৩ সালে ৫ হাজার ৪৯৫টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন ৫ হাজার ২৪ জন। নিয়ম অনুযায়ী শহরে ২৫ ভাগ সড়ক থাকতে হয়। কিন্তু আমাদের দেশে কোনো শহরেই তা নেই। এর জন্য উড়াল সড়ক হচ্ছে। সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছয় দফা নির্দেশনাও দিয়েছেন। অদক্ষ ও অসচেতন চালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি, চালকের মোবাইল ফোনে কথা বলা, অনিরাপদ ও ভাঙা সড়ক, ট্রাফিক আইন মেনে না চলা এমন অনেক কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। এর বাইরে যেসব কারণ আছে, সেগুলো আপনারা খুঁজে বের করে আমাদের জানান। আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে। সড়কে যাতায়াতের সময় সবাইকে সাবধান ও সচেতন হতে হবে। নিসচার চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের মহাসচিব এস এম আজাদ। নিসচার কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব গণি মিঞা বাবুল, স্পন্সর প্রতিষ্ঠান ভিসতার ব্যবস্থাপনা পরিচালক লোকমান হোসেন আকাশ ছাড়াও সারা দেশের সংগঠনটির সদস্য ও কর্মীরা এতে অংশ নেন।
১২ মে, ২০২৪

নজিরবিহীন সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন যৌনকর্মীরা, সংসদে আইন পাস
স্বেচ্ছায় যৌনকর্ম করা কোনো অপরাধ নয়—বছর দুয়েক আগেই এমন স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। এবার রীতিমতো পার্লামেন্টে আইন পাস করে যৌনকর্মীদের দেওয়া হচ্ছে যুগান্তকারী কিছু সুযোগ-সুবিধা। অনুমোদন হওয়া এ-সংক্রান্ত আইনে বলা হয়েছে, একটা নির্দিষ্ট সময় পর যৌনকর্মীরা সরকারি চাকরিজীবীদের মতো পেনশন পাবেন সরকারের পক্ষ থেকে। শুধু পেনশন নয়, প্রত্যেক যৌনকর্মীর থাকবে স্বাস্থ্যবিষয়ক ইন্স্যুরেন্স। যার আওতায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তারা বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবেন। এ ছাড়া বেকারত্ব ভাতা পাবেন তারা। যৌনকর্মে নামার পর কাজ না পেলে সরকার অর্থ প্রদান করবে। থাকছে পারিবারিক ভাতাও। নতুন আইন অনুযায়ী মাতৃত্বকালীন ছুটিও পাবেন যৌনকর্মীরা। টেলিগ্রাফের রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্বে প্রথমবারের মতো যৌনকর্মীদের এমন সুযোগ-সুবিধা দিয়ে একটি আইন অনুমোদন করেছে বেলজিয়াম। সম্প্রতি দেশটির পার্লামেন্টে এই আইনের ওপর দীর্ঘ আলোচনা হয়। এরপর আইনটির পক্ষে পড়েছে ৯৩ ভোট। বিরুদ্ধে একটি ভোটও পড়েনি। তবে ভোটদানে বিরত ছিলেন ৩৩ জন পার্লামেন্ট সদস্য। এর আগে ২০২২ সালে স্বেচ্ছায় যৌনকর্মকে অপরাধ নয় বলে স্বীকৃতি দেয় বেলজিয়াম। ইউরোপের মধ্যে এমন অবস্থান নেওয়া প্রথম দেশ তারা। সেই স্বীকৃতির পর এবার যৌনকর্মীদের ব্যাপক সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা দিল বেলজিয়াম। আলোচিত এই আইনে যৌনকর্মীদের বেশকিছু অধিকারও দেওয়া হয়েছে। খদ্দেরের অধীনে চলে যাওয়ার পরও যৌনকর্মে অস্বীকৃতি জানাতে পারবেন। শাস্তির ভয় ছাড়াই যে কোনো সময় যৌনকর্মে বিঘ্ন ঘটানোর অধিকার পাবেন যৌনকর্মীরা। যে কোনো সময় কোনো প্রকার পূর্ব নোটিশ ছাড়াই চুক্তি ভঙ্গ করতে পারবেন। এতে তারা বেকরত্ব ভাতার অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন না। যৌনকর্মীরা যাতে অন্য কাজে যোগ দিতে পারেন, সেটা নিশ্চিত করতে তাদের পরিচয় সুরক্ষিত রাখতে হবে। আইনে আরও বলা হয়েছে, যৌনকর্মী যদি ৬ মাসের মধ্যে কোনো খদ্দেরকে ১০ বারের বেশি প্রত্যাখ্যান করেন, তাহলে তাকে নিয়োগকারী এ ব্যাপারে সরকারের সহায়তা চাইতে পারেন। কিন্তু তাকে বরখাস্ত করতে পারবেন না। আইনটিতে আরও বলা হয়েছে, যে কক্ষে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা হয়, সেখানে যৌনকর্মীর জন্য একটি এলার্ম বাটন থাকবে। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যই এই ব্যবস্থা রাখা হবে। পর্নোগ্রাফিক অভিনেতা, অভিনেত্রী, কোনো স্ট্রিপার বা ওয়েবক্যাম পারফরমারের জন্য এই আইন প্রযোজ্য নয়। বেলজিয়ামে যৌনকর্মীদের বেশ কিছু ইউনিয়ন নতুন এই আইনকে স্বাগত জানিয়েছে। তারা বলছে, আইনটির কারণে যৌনকর্মীরা সুরক্ষিত থাকবেন।
০৯ মে, ২০২৪

চার মাসে ১৭৬ শিশু হত্যার শিকার : আইন ও সালিশ কেন্দ্র
গত চার মাসে ১৭৬ শিশু হত্যা এবং ২২৬ জন শিশু সহিংসতার শিকার হয়েছে। বুধবার (৮ মে) এ তথ্য জানায় বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র। আইন ও সালিশ কেন্দ্র জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল- এই চার মাসে ১৭৬ জন শিশু হত্যার শিকার হয়েছে। সারা দেশে শিশুদের প্রতি বিভিন্ন ধরনের সহিংসতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সংস্থাটি জানায়, দেশে ১৭৬ জন শিশু হত্যার মধ্যে ৯৭ বালক ও ৭১ বালিকা রয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৮ জন ছেলে না মেয়ে তা চিহ্নিত করা যায়নি। তারা বিভিন্ন কারণে হত্যার শিকার হয়েছে। ৪১ জন হারিয়ে গিয়েছিল, নির্যাতনের পর ২৮ এবং আত্মহত্যা করেছে ৩৬ জন। সংস্থাটি আরও জানায়, সহিংসতার শিকার ২২৬ শিশুর মধ্যে ১৭০ বালিকা ও ৫৫ বালক রয়েছে। সহিংসতার শিকার হওয়াদের মধ্যে ১ জন ছেলে না মেয়ে তা জানা যায়নি। তাদের মধ্যে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে ১৯, শারীরিক নির্যাতনের শিকার ২৭, ধর্ষণের শিকার ১৫ বালক, ধর্ষণ ৯৩ এবং গণধর্ষণের শিকার হয়েছে ২২ জন।
০৮ মে, ২০২৪

খুলনার পিপি এক মাস আইন পেশায় থাকতে পারবেন না
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিচারকের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হেয়প্রতিপন্নমূলক বক্তব্য সংবলিত ভিডিও প্রকাশ এবং আদালত অবমাননা করার দায়ে খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জহিরুল ইসলাম পলাশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন হাইকোর্ট। তাকে এক মাসের জন্য পিপির দায়িত্ব ও আইন পেশা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুলের পরবর্তী শুনানির জন্য ১০ জুন দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট। গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে পিপির পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান। বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার খোন্দকার রেজা-ই রাকিব।
০৮ মে, ২০২৪

আইন ভেঙে কলেজ শিক্ষক করছেন ‘চেয়ারম্যানগিরি’
নোয়াখালীর সুবর্ণচরের সৈকত সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক তিনি। যদিও তিনি নিজেকে অধ্যাপক বলে দাবি করেন। অথচ অধ্যাপক পদটি সহকারী অধ্যাপকের দুই ধাপ ওপরে। তার নাম বেলায়েত হোসেন। সরকারি কলেজের শিক্ষক হিসেবে সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯ অনুযায়ী তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হতে পারেন না। অথচ বিধিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে জয়ী হন তিনি। এখন চেয়ারম্যান হিসেবেই ব্যস্ত সময় পার করছেন। ব্যস্ততার কারণে কলেজে ক্লাস নেন না। অথচ নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলে নিচ্ছেন। আইনের লঙ্ঘন করে চেয়ারম্যান পদে বসে থাকা বেলায়েতের বিষয় নিয়ে কলেজের শিক্ষকদের পাশাপাশি এলাকার সচেতন মানুষের মধ্যেও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা-১৯৭৯-এর ২৫ ধারায় বলা হয়েছে, ‘সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের বা রাজনৈতিক দলের কোনো অঙ্গসংগঠনের সদস্য হইতে অথবা অন্য কোনোভাবে উহার সহিত যুক্ত হইতে পারিবেন না, অথবা বাংলাদেশে বা বিদেশে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করিতে বা কোনো প্রকারেই সহায়তা করিতে পারিবেন না। এ ছাড়া সরকারি কর্মচারী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করিতে অথবা নির্বাচনী প্রচারে অংশগ্রহণ করিতে বা অন্য কোনোভাবে হস্তক্ষেপ করিতে বা প্রভাব খাটাইতে পারিবেন না।’ এ বিষয়ে জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ মো. ফিরোজ মিয়া কালবেলাকে বলেন, এমপিওভুক্ত কলেজ সরকারি হয়ে গেলে শিক্ষক-কর্মচারীরা পুরোপুরি সরকারি কর্মচারী হয়ে যান। সুতরাং সরকারি কর্মচারী হিসেবে কোনোভাবে তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে এবং ভোটে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। এটা আইনের সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯৩ সালে নোয়াখালীর সুবর্ণচরের চরবাটা ইউনিয়নে সৈকত কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার তিন বছর পর ১৯৯৬ সালে পৌরনীতি বিষয়ের প্রভাষক পদে চাকরি হয় বেশিরভাগ তৃতীয় শ্রেণির সনদধারী বেলায়েত হোসেনের। কোনো পরীক্ষায় তিনি প্রথম শ্রেণি পাননি। এসএসসিতে দ্বিতীয় শ্রেণি, এইচএসসিতে তৃতীয় শ্রেণি, বিএ-তে তৃতীয় শ্রেণি আর এমএ-তে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পাস করেন বেলায়েত। চাকরিতে যোগদানের পর প্রথম কয়েক বছর তিনি নিয়মিত কলেজে ক্লাস নিতেন। কিন্তু ২০০৩ সালে প্রথমবার সুবর্ণচরের চর আমান উল্যাহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। পরপর দুইবার জয়ী হয়ে ২০১১ সাল পর্যন্ত ‘চেয়ারম্যানগিরি’ করেন এই শিক্ষক। এরপর সর্বশেষ ২০২১ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি ফের ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। কিন্তু ২০১৮ সালেই সৈকত কলেজ জাতীয়করণ হয়। অর্থাৎ এমপিওভুক্ত কলেজটি সরকারি হয়। সরকারি কলেজের শিক্ষক হিসেবে তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হতে পারেন না। কিন্তু তিনি আইনের তোয়াক্কা না করেই চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে ‘চেয়ারম্যানগিরি’ চালিয়ে যাচ্ছেন। নিয়মিত কলেজে না এলেও হাজিরা খাতায় বেলায়েতের নিয়মিত স্বাক্ষর রয়েছে। মাস শেষে বেতন-ভাতাও তুলে নেন তিনি। নিজে ক্লাসে না গিয়ে নিজাম উদ্দিন নামে একজনকে দিয়ে ভাড়া করে তাকে দিয়ে ক্লাস নিচ্ছেন বেলায়েত হোসেন। নিজামকে মাসে হাজার দশেক টাকা দেন তিনি। এ নিয়ে সৈকত সরকারি কলেজের অন্য শিক্ষকরা চরম ক্ষুব্ধ। স্থানীয় সচেতন নাগরিকরাও বেলায়েতের চেয়ারম্যান পদ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কলেজের একাধিক শিক্ষক জানান, বেলায়েত হোসেন চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে কলেজে নিয়মিত আসেন না। এলেও তিনি ক্লাস নেন না। অবশ্য তিনি তার পরিবর্তে নিজাম উদ্দিন নামে একজনকে বদলি খাটাচ্ছেন। নিজামকে মাসে প্রায় ১০ হাজার টাকা দেন বেলায়েত। বাদ বাকি বেতন-ভাতা তিনি ভোগ করেন। সরকারি কর্মচারী হয়েও বেলায়েত চেয়ারম্যান পদে থেকে নৈতিকতাবিরোধী কাজ করছেন বলেও অভিযোগ অন্য শিক্ষকদের। এ প্রসঙ্গে বেলায়েত হোসেন চেয়ারম্যান বলেন, আমি নিয়ম মেনেই চেয়ারম্যান পদে আছি। নিয়মটি সরকারি চাকরি আইনের কোথায় আছে—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সেটি সময় হলে বলব। এরপর ফোন কেটে দেন তিনি।
০৬ মে, ২০২৪

সৈকত সরকারি কলেজ / আইন ভেঙে ‘চেয়ারম্যানগিরি’ করছেন কলেজের শিক্ষক
নোয়াখালী সুবর্ণচরের সৈকত সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক বেলায়েত হোসেন আইন ভেঙে ‘চেয়ারম্যানগিরি’ করছেন। এ ছাড়াও নিজেকে অধ্যাপক বলেই দাবি করেন তিনি। অথচ অধ্যাপক পদটি সহকারী অধ্যাপকের দুই ধাপ উপরে।  সরকারি কলেজের শিক্ষক হিসেবে সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯ অনুযায়ী তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হতে পারেন না। অথচ বিধিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে জয়ী হন বেলায়েত। এখন চেয়ারম্যান হিসেবেই ব্যস্ত সময় পার করছেন। ব্যস্ততার কারণে কলেজে ক্লাস নেন না। অথচ নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলে নিচ্ছেন তিনি। আইন লঙ্ঘন করে চেয়ারম্যান পদে বসে থাকা বেলায়েতের বিষয় নিয়ে কলেজের শিক্ষকদের পাশাপাশি এলাকার সচেতন মানুষের মধ্যেও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা,১৯৭৯- এর ২৫ ধারায় বলা হয়েছে, (১) সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের বা, রাজনৈতিক দলের কোনো অঙ্গসংগঠনের সদস্য হইতে অথবা অন্য কোনোভাবে উহার সহিত যুক্ত হইতে পারিবেন না, অথবা বাংলাদেশে বা বিদেশে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করিতে বা কোনো প্রকারেই সহায়তা করিতে পারিবেন না। (৩) সরকারি কর্মচারী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করিতে অথবা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করিতে বা অন্য কোনোভাবে হস্তক্ষেপ করিতে বা প্রভাব খাটাইতে পারিবেন না। জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ মো. ফিরোজ মিয়া কালবেলাকে বলেন, এমপিওভুক্ত কলেজ সরকারি হয়ে গেলে শিক্ষক-কর্মচারীরা পুরোপুরি সরকারি কর্মচারী হয়ে যান। সুতরাং সরকারি কর্মচারী হিসেবে কোনোভাবে তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে এবং ভোটে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। এটা আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। জানা গেছে, ১৯৯৩ সালে নোয়াখালীর সুবর্ণচরের চরবাটা ইউনিয়নে সৈকত কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার তিন বছর পর ১৯৯৬ সালে পৌরনীতি বিষয়ের প্রভাষক পদে চাকরি হয় শিক্ষাজীবনে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় তৃতীয় শ্রেণির সনদধারী বেলায়েত হোসেনের। কোনো পরীক্ষায় তিনি প্রথম শ্রেণি পাননি। এসএসসিতে তার ফল দ্বিতীয় শ্রেণি, এইচএসসিতে তৃতীয় শ্রেণি। বিএ পাস করেন তৃতীয় শ্রেণি পেয়ে। আর দ্বিতীয় শ্রেণি পেয়ে এমএ পাস করেন বেলায়েত। চাকরিতে যোগদানের পর প্রথম কয়েক বছর তিনি নিয়মিত কলেজে ক্লাস নিতেন। কিন্তু ২০০৩ সালে প্রথমবার সুবর্ণচরের চরআমান উল্যাহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন বেলায়েত। পরপর দুইবার জয়ী হয়ে ২০১১ সাল পর্যন্ত ‘চেয়ারম্যানগিরি’ করেন এই শিক্ষক। এরপর সর্বশেষ ২০২১ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি ফের ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। কিন্তু ২০১৮ সালেই সৈকত কলেজ জাতীয়করণ হয়। অর্থাৎ এমপিওভুক্ত কলেজটি সরকারি হয়। সরকারি কলেজের শিক্ষক হিসেবে বেলায়েত হোসেন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হতে পারেন না। কিন্তু তিনি সরকারি চাকরি আইনের তোয়াক্কা না করেই চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে ‘চেয়ারম্যানগিরি’ চালিয়ে যাচ্ছেন।  নিয়মিত কলেজে না আসলেও হাজিরা খাতায় বেলায়েতের নিয়মিত স্বাক্ষর রয়েছে। মাস শেষে বেতন-ভাতাও তুলে নেন তিনি। নিজে ক্লাসে না গিয়ে নিজাম উদ্দিন নামে একজনকে দিয়ে ভাড়াটিয়া ক্লাস নিচ্ছেন বেলায়েত হোসেন। নিজামকে মাসিক হাজার দশেক টাকা দেন তিনি। এ নিয়ে সৈকত সরকারি কলেজের অন্যান্য শিক্ষকরা চরম ক্ষুব্ধ। স্থানীয় সচেতন নাগরিকরাও বেলায়েতের চেয়ারম্যান পদ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কলেজের একাধিক শিক্ষক জানান, বেলায়েত হোসেন চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে কলেজে নিয়মিত আসেন না। আসলেও তিনি ক্লাস নেন না। ফলে শিক্ষার্থীরা ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অবশ্য তিনি তার পরিবর্তে নিজাম উদ্দিন নামে একজনকে বদলি খাটাচ্ছেন। নিজামকে মাসে প্রায় ১০ হাজার টাকা দেন বেলায়েত। বাদ বাকি বেতন-ভাতা তিনি ভোগ করেন। সরকারি কর্মচারী হয়েও বেলায়েত চেয়ারম্যান পদে থেকে নৈতিকতাবিরোধী কাজ করছেন বলেও অভিযোগ করেন অন্য শিক্ষকরা।  এ প্রসঙ্গে বেলায়েত হোসেন চেয়ারম্যান বলেন, আমি নিয়ম মেনেই চেয়ারম্যান পদে আছি। নিয়মটি সরকারি চাকরি আইনের কোথায় আছে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সেটি সময় হলে বলব। এরপর ফোন কেটে দেন তিনি। 
০৫ মে, ২০২৪

জনগণের কথা চিন্তা করে আইন তৈরি করতে হবে : আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিশেষ কারও চোখের দিকে তাকিয়ে কিংবা কারও ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষা করে ভালো আইন তৈরি করা যায় না। তাই যে যাই বলুক, আইন প্রণয়ণের ক্ষেত্রে সবসময় দেশের জনগণের কথা চিন্তা করতে হবে এবং জনবান্ধব আইন প্রণয়ন করতে হবে। তাহলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও উদ্দেশ্য উভয়ই বাস্তবায়ন হবে। রোববার (৫ মে) সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) ২০২৪-২৫ এর খসড়া চূড়ান্তকরণবিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি। মানসম্পন্ন আইন প্রণয়নে দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, লেজিসলেটিভ কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়াতে দেশি-বিদেশি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি লেজিসলেটিভ ক্যাডার সার্ভিস গঠনের বিষয়েও কাজ করতে হবে। বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কর্মকর্তাদের আন্তরিকভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘লজ অব বাংলাদেশ’ লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের খুবই জনবান্ধব একটি কাজ। এর মাধ্যমে জনগণ মুহূর্তেই বাংলাদেশে প্রচলিত সব আইন দেখে নিতে পারেন। এখন ‘লজ অব বাংলাদেশ’-এর আলোকে ১৯৭২ সাল থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে জারিকৃত সব এসআরও এবং অন্যান্য বিধি-বিধানের সংকলনে অনলাইনভিত্তিক ‘রুলস অব বাংলাদেশ’ তৈরি করা গেলে জনগণ খুবই উপকৃত হবে। এটি খুব তাড়াতাড়ি তৈরি করতে হবে।  লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরীর সভাপতিত্ব অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় আইন ও বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এতে বিভাগের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাগণ অংশ নেন। 
০৫ মে, ২০২৪
X