ফেসিয়ালের পর এইডসে আক্রান্ত ৩ নারী
দীর্ঘ সময়ের জন্য নিজেকে তরুণ দেখাতে কসমেটিক সার্জারি এবং ইনজেকশনের আশ্রয় নিচ্ছেন অনেকে। মুখে ইনজেকশনের মাধ্যমে ত্বক সুন্দর ও টানটান রাখতে ‘ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল’ করেন কেউ কেউ। সম্প্রতি এই ফেসিয়াল-সংক্রান্ত ভীতিকর তথ্য সামনে এসেছে। ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল করে এইচআইভিতে আক্রান্ত হয়েছেন তিন নারী। বৃহস্পতিবার ইউএস সেন্টার ফর ডিজিস অ্যান্ড কন্ট্রোল (সিডিসি) জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো রাজ্যের একটি স্পাতে ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল করার কারণে সম্ভবত নারীরা এইচআইভিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। সিডিসি বলেছে, কসমেটিক ইনজেকশনের মাধ্যমে এইচআইভি সংক্রমণের ঘটনা এটাই প্রথম। এর আগে এমন ঘটনা ঘটেছে কি না, তাদের জানা নেই। আক্রান্ত নারীরা লাইসেন্সবিহীন স্পা থেকে ফেসিয়াল করিয়েছিলেন ২০১৮ সালে। সিডিসির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে এক নারী মেক্সিকোতে একটি লাইসেন্সবিহীন স্পা থেকে প্লেটলেট সমৃদ্ধ প্লাজমা মাইক্রোনিডলিং পদ্ধতির মাধ্যমে ফেসিয়াল করিয়েছিলেন। তারপর তিনি এইচআইভি পজিটিভ ছিলেন। এরপর ‘সিডিসি’ নিউ মেক্সিকোর স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে কসমেটিক ইনজেকশনের মাধ্যমে কীভাবে এইচআইভি সংক্রমণ ঘটেছে, তা তদন্ত করে। সিডিসি জানিয়েছে, যে নারী ইনজেকশনের মাধ্যমে ওষুধ গ্রহণ করেননি, তাকে সংক্রামিত রক্ত সঞ্চালনও দেওয়া হয়নি বা এইচআইভি সংক্রামিত কোনো সঙ্গীর সঙ্গে তার যৌন সম্পর্কও হয়নি। তিনি শুধু একটি ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল করেছেন এবং এর পর তার এইচআইভি পরীক্ষা পজিটিভ পাওয়া গেছে। ২০১৯ সালে নিউ মেক্সিকো হেলথ ডিপার্টমেন্ট বলেছিল, আলবুকার্কের ভিআইপি স্পাতে ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল গ্রহণের ফলে এইচআইভি সংক্রমণ হয়েছিল। স্পাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এবং সে সময় স্বাস্থ্য বিভাগ বলেছিল, যারা স্পাটিতে ফেসিয়াল করেছেন তাদের এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি এবং হেপাটাইটিস সি বিনামূল্যে পরীক্ষা করা হবে। সিডিসি বলছে, ২০২৩ সালের মধ্যে চার নারী এবং একজন পুরুষসহ পাঁচজন এইচআইভি রোগী শনাক্ত হয়েছে। পুরুষটি সেই চার নারীর একজনের স্বামী। সিডিসি জানিয়েছে, দুজন এইচআইভি আক্রান্ত রোগী বলেছেন, তারা কসমেটিক ইনজেকশন নেওয়ার আগে কোনোভাবে সংক্রামিত হয়ে থাকতে পারেন। তবে তিনজন রোগী স্পা থেকে এই সংক্রমণ পেয়েছেন। আমেরিকান একাডেমি অব ডার্মাটোলজি জানিয়েছে, ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল পদ্ধতিতে ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা সময় লাগে। বার্ধক্যের লক্ষণ লুকানোর জন্য মানুষ ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল চিকিৎসা গ্রহণ করে থাকে। এতে হাত থেকে রক্ত বের করে একই ব্যক্তির মুখে ইনজেকশন দেওয়া হয়।
২৮ এপ্রিল, ২০২৪

ফেসিয়ালের পর এইডসে আক্রান্ত ৩ নারী
দীর্ঘ সময়ের জন্য নিজেকে তরুণ দেখাতে কসমেটিক সার্জারি এবং ইনজেকশনের আশ্রয় নিচ্ছেন অনেকে। মুখে ইনজেকশনের মাধ্যমে ত্বক সুন্দর ও টানটান রাখতে ‘ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল’ করেন কেউ কেউ। সম্প্রতি এই ফেসিয়াল সংক্রান্ত ভীতিকর তথ্য সামনে এসেছে। ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল করে এইচআইভিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ জন নারী।  বৃহস্পতিবার, ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ অ্যান্ড কন্ট্রোল (সিডিসি)-এর বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো রাজ্যের একটি স্পা-তে ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল করার কারণে সম্ভবত নারীরা এইচআইভিতে আক্রান্ত হচ্ছেন।  সিডিসি বলেছে, কসমেটিক ইনজেকশনের মাধ্যমে এইচআইভি সংক্রমণের ঘটনা এটাই প্রথম। এর আগে এমন ঘটনা ঘটেছে কিনা তাদের জানা নেই। আক্রান্ত মহিলারা লাইসেন্সবিহীন স্পা থেকে ফেসিয়াল করিয়েছিলেন ২০১৮ সালে।  সিডিসির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে একজন মহিলা মেক্সিকোতে একটি লাইসেন্সবিহীন স্পা থেকে প্লেটলেট সমৃদ্ধ প্লাজমা মাইক্রোনিডলিং পদ্ধতির মাধ্যমে ফেসিয়াল করিয়েছিলেন। তারপরে তিনি এইচআইভি পজিটিভ ছিলেন। এর পরে ‘সিডিসি’ নিউ মেক্সিকোর স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে কসমেটিক ইনজেকশনের মাধ্যমে কীভাবে এইচআইভি সংক্রমণ ঘটেছে তা তদন্ত করে।  সিডিসি জানিয়েছে, যে মহিলাটি ইনজেকশনের মাধ্যমে ওষুধ গ্রহণ করেননি, তাকে সংক্রামিত রক্ত সঞ্চালনও দেওয়া হয়নি বা এইচআইভি সংক্রামিত কোনও সঙ্গীর সঙ্গে তার যৌন সম্পর্কও হয়নি। তিনি শুধু একটি ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল করেছেন এবং এর পরে তার এইচআইভি পরীক্ষা পজিটিভ পাওয়া গেছে।  ২০১৯ সালে নিউ মেক্সিকো হেলথ ডিপার্টমেন্ট বলেছিল, আলবুকার্কের ভিআইপি স্পা-তে ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল গ্রহণের ফলে এইচআইভি সংক্রমণ হয়েছিল। স্পাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এবং সে সময় স্বাস্থ্য বিভাগ বলেছিল, যারা স্পাটিতে ফেসিয়াল করেছেন তাদের এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি এবং হেপাটাইটিস সি বিনামূল্যে পরীক্ষা করা হবে।  সিডিসি বলছে, ২০২৩ সালের মধ্যে চারজন মহিলা এবং একজন পুরুষসহ পাঁচজন এইচআইভি রোগী শনাক্ত হয়েছে। পুরুষটি সেই চারজন নারীর একজনের স্বামী। সিডিসি জানিয়েছে, দুইজন এইচআইভি-আক্রান্ত রোগী বলেছেন, তারা কসমেটিক ইনজেকশন নেওয়ার আগে কোনোভাবে সংক্রামিত হয়ে থাকতে পারেন। তবে তিনজন রোগী স্পা থেকে এই সংক্রমণ পেয়েছেন। আমেরিকান একাডেমি অব ডার্মাটোলজি জানিয়েছে, ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল পদ্ধতিতে ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা সময় লাগে৷  বার্ধক্যের লক্ষণ লুকানোর জন্য মানুষ ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল চিকিৎসা গ্রহণ করে থাকে৷ এতে হাত থেকে রক্ত বের করে একই ব্যক্তির মুখে ইনজেকশন দেওয়া হয়৷  
২৭ এপ্রিল, ২০২৪

গরুর দুধে প্রাণঘাতী ভাইরাস শনাক্ত, আক্রান্ত এক ব্যক্তি
গরুর দুধে এবার শনাক্ত হয়েছে প্রাণঘাতী ভাইরাস বার্ড ফ্লু। যুক্তরাষ্ট্রে পাস্তরিত দুধে এ ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) টাইমস ম্যাগাজিনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  স্থানীয় সময় মঙ্গলবার মার্কিন খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গবেষণার সময় নমুনা হিসেবে নেওয়া গরুর দুধে ভাইরাসের অবশিষ্টাংশের অস্তিত্ব মিলেছে। ফলে মানব দেহে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।  বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গরুর দুধে প্রাণঘাতী এ ভাইরাস শনাক্ত হলেও এতে মানুষের জন্য ঝুঁকির মাত্রা খুব সামান্য।  মার্কিন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে গবাদিপশুর মধ্যে হাইলি প্যাথোজেনিক এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা (এইপিএআই) বা বার্ড ফ্লু  প্রকোপ দেখা দিয়েছে। আক্রান্ত পশুর সংস্পর্শে আসায় এক ব্যক্তিও আক্রান্তের খবর মিলেছে। যদিও তার উপসর্গগুলো মৃদু।  এইচপিএআই-এর এইচ৫এন১ ধরনে সংক্রমিত হয়ে লাখ লাখ হাঁস-মুরগি মারা গেছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো গরু গুরুতর অসুস্থ হয়নি।  মার্কিন খাদ্য ও ঔষুধ প্রশাসন জানিয়েছে, জাতীয় জরিপে আক্রান্ত প্রাণীর দুধে ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। প্রক্রিয়াজাতকরণের সময় এবং প্রক্রিয়াকরণের শেষেও একই অবস্থা দেখা গিয়েছে। সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, পাস্তুরিত দুধের নমুনাগুলোর কোয়ান্টিটেটিভ পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন (কিউপিসিআর) পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, পাস্তরিতকরণের প্রক্রিয়ার সময় উত্তাপের কারণে ভাইরাসটি নিস্ক্রিয় হয়ে গেছে। নমুনায় কেবল প্যাথোজেনের জেনেটিক উপাদানের অবশিষ্টাংশ শনাক্ত হয়েছে।   
২৫ এপ্রিল, ২০২৪

যক্ষ্মায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা সামাজিক বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন
সামাজিক কুসংস্কার বা স্টিগমার প্রভাব অনেক। যক্ষ্মায় আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা যক্ষ্মার কারণে বিভিন্ন সামাজিক বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। এ বিষয় নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনটিপি) ও আইসিডিডিআর,বি 'বাংলাদেশে যক্ষ্মা-সম্পর্কিত স্টিগমার অবস্থা' শীর্ষক এক গবেষণা পরিচালিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) গবেষণার তথ্যাদি ও ফল নিয়ে ঢাকাস্থ আইসিডিডিআর,বি সাসাকাওয়া মিলনায়তনে এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। গ্লোবাল ফান্ডের অর্থায়নে দেশে প্রথমবারের মতো যক্ষ্মা ও স্টিগমা নিয়ে এ গবেষণা কার্যক্রমটি পরিচালনা করা হয়। গবেষকরা জানান, স্টিগমাকে প্রায়ই এমন একটি সামাজিক আচরণ হিসাবে দেখা হয়, যেখানে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করা হয়। অপমানজনক ও নেতিবাচক আচরণের শিকার হয় তারা। গবেষণার মাধ্যমে যক্ষ্মারোগী ও তাদের পরিবারের সদস্য, সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিসহ যারা স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী করছে তাদের মধ্যে স্টিগমার উপস্থিতি ও মাত্রা সম্পর্কে অনুসন্ধান করা হয়।  ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজশাহী, সিলেট, চট্টগ্রাম এবং ঢাকা জেলার শহর ও গ্রামীণ এলাকায় পরিচালিত এই সমীক্ষায় স্টপ টিবি পার্টনারশিপের 'টিবি স্টিগমা অ্যাসেসমেন্ট ডেটা কালেকশন টুল' ব্যবহার করা হয়। অংশগ্রহণকারীরা ছিলেন গত পাঁচ বছরের মধ্যে যক্ষ্মায় আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্য, সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ব্যক্তিরা। ডা. সায়েরা বানুর অধীনে নাদিম রেজা, আইসিডিডিআর,বি’র পাবলিক প্রাইভেট মিক্সের টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার, তানজিনা রহমান, সিনিয়র স্ট্যাটিস্টিক্যাল অফিসার ও তামান্না সুলতানা, আইসিডিডিআর,বি’র রিসার্চ অফিসার গবেষণার ফল উপস্থাপন করেন। সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, প্রায় ২৮ শতাংশ যক্ষ্মা আক্রান্ত ব্যক্তি তাদের চিকিৎসা  গ্রহণ ও সেবাচক্রের প্রথম তিনটি পর্যায়ে স্টিগমার প্রভাব অনুভব করেন। তাদের পরিবারের প্রায় ২২ শতাংশ সদস্য স্টিগমার সম্মুখীন হন। আর ১৪ ভাগ যক্ষ্মা রোগী ও তাদের পরিবারের ১১ ভাগ সদস্য বাড়িতেও স্টিগমা অনুধাবন করেন। গবেষণার ফলে আর্থ-সামাজিক বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরে হয়েছে। গবেষণা থেকে জানা যায়, যক্ষ্মাসংক্রান্ত স্টিগমা নারীদের বেশি প্রভাবিত করে। এতে সামাজিকভাবে অসম্মান, হয়রানি ও আর্থিক অসুবিধায় পড়েন তারা।  এ সময় উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মো. টিটু মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর ড. মো. মাহাফুজার রহমান সরকার, এবং আইসিডিডিআর, বি-র সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ড. সায়েরা বানু প্রমুখ। আইসিডিডিআর,বি’র নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ বলেন, একসময় মানুষ যক্ষ্মা নিয়ে কথা বলতে ভয় পেত, তবে এখন দেশের যে কোনো প্রান্তে গেলেই যক্ষ্মার নাম শোনা যায়। এটা হয়েছে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের সফল উদ্যোগ, সরকারের বলিষ্ঠ ভূমিকা এবং পাশাপাশি আইসিডিডিআর,বি’তে যারা যক্ষ্মা নিয়ে কাজ করছেন, তাদের একনিষ্ঠতার কারণে। যক্ষ্মার কঠিন চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করতে হলে আমাদের এভাবেই যৌথভাবে কাজ করে যেতে হবে।” স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. টিটু মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এবং জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর মো. মাহাফুজার রহমান সরকারসহ অন্যান্য অতিথিরা গবেষণালব্ধ ফলের ওপর আলোকপাত করেন। সমাজের স্টিগমা কাটিয়ে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান গবেষক ও বক্তারা। গবেষণাটি বাংলাদেশে যক্ষ্মা-সংক্রান্ত স্টিগমার ব্যাপক প্রভাবকে তুলে ধরে এটিকে যক্ষ্মার সেবা গ্রহণ করার ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা হিসাবে চিহ্নিত করেছে। স্টিগমার কাঠামোগত এবং সামাজিক কারণগুলো মোকাবিলা করার জন্য জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আহবান জানানো হয়েছে, যার লক্ষ্য মানসম্পন্ন চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা এবং জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টাকে শক্তিশালী করা।
২৩ এপ্রিল, ২০২৪

কীভাবে বুঝবেন হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হতে যাচ্ছেন?
দেশের তাপমাত্রা যেন কমছেই না। হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন মারা গেছেন। আগে থেকেই যদি হিটস্ট্রোকের লক্ষণগুলো জানা থাকে তাহলে অনেকাংশে এর থেকে আমরা পরিত্রাণ পেতে পারি।  হিটস্ট্রোকের আগে ব্যক্তি চরম তৃষ্ণা অনুভব করতে পারে। সেইসঙ্গে ডিহাইড্রেটেড এবং আড়ষ্টতা অনুভব করতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক হিটস্ট্রোকের লক্ষণগেুলো-  তীব্র মাথাব্যথা প্রচণ্ড গরমে মাথাব্যথা হতে পারে। এ ছাড়া গরমে মানুষের মাইগ্রেন ট্রিগার করতে পারে। এটি হিটস্ট্রোকের একটি লক্ষণ হতে পারে। দ্রুত হৃদস্পন্দন হিটস্ট্রোকের আগে হৃদস্পন্দন স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত হতে পারে। প্রচণ্ড তৃষ্ণা, পানিশূন্যতা হিটস্ট্রোকের আগে ব্যক্তি চরম তৃষ্ণা অনুভব করতে পারে, সেইসঙ্গে ডিহাইড্রেটেড এবং আড়ষ্টতা অনুভব করতে পারে। শরীর নিজেকে ঠান্ডা করার জন্য অতিরিক্ত ঘাম তৈরি করতে পারে। বমি বমি ভাব মাথাব্যথা, দ্রুত হৃদস্পন্দন ও হাইপারভেন্টিলেশন থেকে অক্সিজেনের অভাব ইত্যাদির কারণে হিটস্ট্রোকের আগে বমি বমি ভাব হতে পারে। বিরক্তি বা প্রলাপ বকা অতিরিক্ত তাপের কারণে হিটস্ট্রোকের আগে মানুষ বিরক্ত বোধ করতে পারে, রাগান্বিত হতে পারে, অযৌক্তিক কথা বলতে পারে, এমনকি প্রলাপ বকতে করতে পারে। পেশিতে ব্যথা হিটস্ট্রোকের আগে যেসব লক্ষণ দেখা যায়, তারমধ্যে একটি হলো পেশি ব্যথা। যদিও সাধারণ ব্যথা ভেবে মানুষ এটা গুরুত্ব দেয় না। দুর্বলতা ও অজ্ঞান হয়ে যাওয়া অতিরিক্ত উত্তাপে শরীর স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কাজ করে। শরীরে আরও ক্লান্তি ও দুর্বলতা তৈরি হয়। ব্যক্তি অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারে। এগুলো হিটস্ট্রোকের লক্ষণ। কথা জড়িয়ে যাওয়া হিটস্ট্রোকের আরেকটি লক্ষণ কথা জড়িয়ে যাওয়া। ব্যক্তি অসংলগ্ন কথা বলতে শুরু করতে পারে। ঘাম না হওয়া হিটস্ট্রোকের একটি লক্ষণ হলো প্রচণ্ড গরমেও ঘাম না হওয়া। সাধারণত এর মানে হচ্ছে, শরীরে ঘাম হওয়ার মতো পানি আর নেই বা শরীরের প্রাকৃতিক শীতল প্রক্রিয়াটি কাজ করছে না।  মার্কিন অলাভজনক প্রতিষ্ঠান মায়ো ক্লিনিক জানাচ্ছে, গরম পরিবেশে থাকার কারণে দেহের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে গেলেই হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। দ্রুত ব্যবস্থা নিতে না পরলে মস্তিষ্ক, হৃদপিণ্ড, বৃক্ক ও পেশির ক্ষতি হয়। আর যত দেরি হবে চিকিৎসা নিতে ততই মৃত্যু ঝুঁকি বাড়বে। উল্লেখ্য, গরমে বাড়ির বাইরে কম-বেশি সবাইকেই বের হতে হয়। তবে হিটস্ট্রোক এড়াতে যতটা সম্ভব ছায়ার মধ্যে থাকার চেষ্টা করবেন। পানি ও পানি জাতীয় খাবারের মাধ্যমে হাইড্রেটেড থাকতে হবে। তবে কৃত্রিম চিনিযুক্ত পানীয় থেকে দূরে থাকার পরামর্শ চিকিৎসকদের। 
২২ এপ্রিল, ২০২৪

রাজধানীর ৩ শতাংশ শিশু অটিজমে আক্রান্ত
বিশ্বে প্রতি একশ’ জন শিশুর মধ্যে প্রায় একজন অটিজম এসপেকট্রাম ডিসঅর্ডারে ভুগছে। অর্থাৎ ১ শতাংশ শিশু এই ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত। তবে বাংলাদেশে ০.১৫ শতাংশ শিশুর মধ্যে অটিজম দেখা গেছে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরের ৩ শতাংশ শিশু এই ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।  রোববার (২১ এপ্রিল) বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগ আয়োজিত ওয়েবিনারে এসব তথ্য জানানো হয়। দুই ঘণ্টাব্যাপী এই ওয়েবিনারে অংশ নেন সাইকিয়াট্রিস্ট, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, সাইকোলজিস্ট ও অটিজম বিষয়ক বিভিন্ন পেশাজীবী।
২২ এপ্রিল, ২০২৪

বাড়ছে গরম বাড়ছে ডায়রিয়া আক্রান্ত বেশি শিশু
প্রচণ্ড তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে রাজধানীসহ সারা দেশে। ছোট-বড় সবাই গরমে কাবু। শরীরে দেখা দেয় পানিশূন্যতা। এ কারণে হাতের নাগালে থাকা বিভিন্ন অস্বাস্থ্যকর শরবত ও পানি খায় মানুষ। ফলে তারা আক্রান্ত হচ্ছে ডায়রিয়ায়। হাসপাতালে সাধারণ সময়ের তুলনায় এখন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ রোগী শিশু। ঈদের ছুটি শেষে রাজধানীতে জনসমাগম বাড়লে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা। রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর এলাকা থেকে দেড় বছর বয়সী শিশু রিফাত হোসেনকে নিয়ে রাজধানীর মহাখালীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) বা কলেরা হাসপাতালে এসেছেন বাবা রাশেদুল ইসলাম। তার ধারণা, তীব্র গরমের কারণেই তার সন্তান ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। গতকালও আমার বাচ্চা ভালো ছিল। রাতে তাকে সুস্থ নিয়েই ঘুমিয়েছি। রাত ১টার দিকে হঠাৎ বাচ্চার কান্নার আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায়। উঠে দেখি সে কান্না করছে আর বারবার মোচড় দিচ্ছে। এর কিছুক্ষণ পরই শুরু হয় পাতলা পায়খানা। সারারাতই আমাদের এভাবে যায়। এরপর সকালে তাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাই। তিনি ওষুধ লিখে দেন। সেগুলো খাওয়ানোর পরও কোনোভাবে পাতলা পায়খানা কমছিল না। তাই দুপুরের দিকে এই হাসপাতালে আসি। লালবাগের আরেক বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম। তিনি তার ছোট ভাই রিফাতকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন। দুদিন ধরে তার পাতলা পায়খানা হচ্ছে। প্রথমে স্থানীয় ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে খাওয়ানো হয়। কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় তারা ঢামেকের দ্বারস্থ হন। আইসিডিডিআর,বি সূত্র জানায়, সাধারণ সময়ে গড়ে সাড়ে ৩০০ রোগী ডায়রিয়া নিয়ে হাসপাতালটিতে আসেন। অথচ গত এক সপ্তাহে গড়ে প্রতিদিন চিকিৎসা নিচ্ছেন সাড়ে পাঁচশর বেশি রোগী। যার বেশিরভাগই শিশু। রোগীর বেশিরভাগই বলছেন গরমের কারণে তারা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলে, বছরে দুই সময় বর্ষার শুরু ও শীতের আগের সময়টায় ডায়রিয়া রোগীর চাপ বাড়ে। বর্তমানে গরমের কারণে ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তবে এই ডায়রিয়ায় তিন থেকে সাত দিনের মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়াই রোগী সুস্থ হয়ে যায়। হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, সেখানে প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ১৫ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। গত ৭ এপ্রিল ৪৬১ জন, ৮ এপ্রিল ৪৬৯ জন, ৯ এপ্রিল ৪১৪ জন, ১০ এপ্রিল ৪২৯ জন, ১১ এপ্রিল ৪৪৯ জন, ১২ এপ্রিল ৫৯৫ জন, ১৩ এপ্রিল ৫২৫ জন, ১৪ এপ্রিল ৪৩৪ জন, ১৫ এপ্রিল ৪৯১ জন এবং ১৬ এপ্রিল দুপুর ২টা পর্যন্ত ২৬১ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। অর্থাৎ গত ১০ দিনে ৪ হাজার ৫২৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট, ঢামেক হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, মোহাম্মদপুর ফার্টিলিটি সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত সপ্তাহের শুরু থেকে গরমের কারণে শিশুদের হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। ঢামেক হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ডায়রিয়া, জ্বর, টাইফয়েড আর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে শিশুরা। গরম বাড়ার আগে শিশু রোগী আসত ১২০ থেকে ১৫০ জন। এখন সে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০০ থেকে ২৫০-এ। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়রিয়া পানিবাহিত রোগ। দূষিত পানি পান করার কারণে এই রোগ হয়। সাধারণত দিনে কারও তিন বা তার চেয়ে বেশিবার পাতলা পায়খানা হলে তার ডায়রিয়া হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়। গরম এলেই ডায়রিয়ার সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করে। বিশেষ করে শিশু-কিশোররা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শহরে টেপের পানি সেপটিক ট্যাঙ্ক বা সুয়ারেজ লাইনের সংস্পর্শে এসে দূষিত হয়। অস্বাস্থ্যকর ও অপরিচ্ছন্ন জীবনযাপন, যেখানে-সেখানে পানির উৎসের কাছে মলত্যাগ, সঠিক উপায়ে হাত না ধোয়া, অপরিচ্ছন্ন উপায়ে খাদ্য সংরক্ষণ এবং ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে দোকান, রেস্তোরাঁ বা বাসায় পচন ধরা ফ্রিজের খাবার খাওয়াও ডায়রিয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। ডায়রিয়া থেকে তাৎক্ষণিক আরোগ্য লাভ হয় না। নিয়ম মেনে খাবার স্যালাইন আর ওষুধ খেলে তা ধীরে ধীরে কমে। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ কালবেলাকে বলেন, তীব্র তাপদাহের এই সময়ে মানুষের ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা দেখা দেয়। দুর্বল লাগে, ক্লান্তি ভর করে। রক্তচাপ কমে যায়। মাথা ঘুরায়। অবসাদ ভর করে। এ সময় মানুষ বাইরে বের হলে হাতের নাগালে থাকা বিভিন্ন অস্বাস্থ্যকর শরবত, পানি ও ভাজাপোড়া খাবার খায়। এসব অস্বাস্থ্যকর, ধুলাবালু মেশানো খাবারের কারণে সবচেয়ে বেশি ডায়রিয়া হয়। শিশু ও বৃদ্ধদের মধ্যে এই হার সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া প্রচণ্ড তাপদাহের কারণে হিট স্ট্রোক, টাইফয়েড, নিউমোনিয়া, জ্বর, সর্দি-কাশিতে ভোগে। প্রতিকারের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, তাপদাহের মধ্যে প্রয়োজন ছাড়া বিকেল ৩টা পর্যন্ত ঘরের বাইরে যাওয়া যাবে না। ঘর থেকে বের হলে অবশ্যই ছাতা ব্যবহার করবেন। খেটে খাওয়া মানুষ রোদের মধ্যে এক নাগাড়ে অনেক্ষণ কাজ করবেন না। এতে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি রয়েছে। পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি পান করবেন। বাইরের শরবত, ভাজাপোড়া খাবার খাবেন না। খাওয়ার আগে ২০ সেকেন্ড ভালোভাবে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। শিশু ও পরিবারের বয়স্কদের রোদ থেকে নিরাপদে রাখতে হবে। এর পরও কেউ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে বিলম্ব না করে নিকটস্থ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।
১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সেরেলাক নিয়ে ভয়ংকর তথ্য : শিশুরা দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত হতে পারে
বহুজাতিক খাদ্য প্রস্তুতকারী সংস্থা নেসলে বিশ্বের বহু দেশের মতো বাংলাদেশেও অত্যন্ত জনপ্রিয়। সুইজারল্যান্ডের প্রতিষ্ঠান নেসলের শিশুখাদ্য সেরেলাকের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বাংলাদেশে। সুইজারল্যান্ডের অলাভজনক বেসরকারি সংগঠন পাবলিক আই ও ইন্টারন্যাশনাল বেবি ফুড অ্যাকশন নেটওয়ার্কের যৌথ গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে সেরেলাক নিয়ে। পাবলিক আইয়ের প্রতিবেদন অনুসারে, সুইজারল্যান্ডে নেসলে তাদের পণ্য সেরেলাকে বাড়তি কোনো চিনি মেশায় না। তবে দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশ, ভারতসহ উন্নয়নশীল দেশ ও দরিদ্র দেশগুলোতে তারা সেরেলাকে চিনি মেশায়। আশঙ্কাজনক ব্যাপার হলো, শিশুদের জন্য নেসলের ব্র্যান্ড নিডোর যেসব পণ্য আছে তার সবগুলোতেই বাড়তি চিনি আছে। সুইজারল্যান্ডে বিস্কুট স্বাদের সেরেলাকে কোনো প্রকার চিনির ব্যবহার ছাড়াই বিক্রি করছে নেসলে। কিন্তু ঠিক একই পণ্যতে চিনি মিশিয়ে সেনেগাল, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নশীল কিংবা দরিদ্র দেশগুলোতে বিক্রি করছে। দক্ষিণ আফ্রিকা এবং সেনেগালে এ স্বাদের সেরেলাকের প্রতি প্যাকে ৬ গ্রাম চিনি রয়েছে।  পাবলিক আই ও ইন্টারন্যাশনাল বেবি ফুড অ্যাকশন নেটওয়ার্কের যৌথ গবেষণায় আরও ওঠে এসেছে, নেসলের ৯টি পণ্য বাংলাদেশের বাজারে বিক্রি হয়, যার প্রতিটিতেই বাড়তি চিনি আছে। গড়ে এসব পণ্য থেকে একটি শিশু সাধারণভাবে একবার যে পরিমাণ খাবার গ্রহণ করে তাতে প্রায় ৩ দশমিক ৩ গ্রাম বাড়তি চিনি রয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতে বিক্রি হওয়া সেরেলাকেও চিনি ব্যবহার করা হয়। এ ব্যাপারে দেশটির হিন্দুস্তান টাইমস, ইন্ডিয়া টুডে, ইন্ডিয়া ডটকমের মতো গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। নেসলের ১৫টি পণ্য চালু আছে ভারতের বাজারে, যার প্রতিটিতেই বাড়তি চিনি আছে। এসব পণ্যে গড়ে প্রায় ২ দশমিক ৭ গ্রাম বাড়তি চিনি রয়েছে। বাংলাদেশ ছাড়াও পাকিস্তান, নাইজেরিয়া, ফিলিপাইন, সেনেগাল, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, ইথিওপিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলোতেও নেসলের শিশুখাদ্য বাড়তি চিনির প্রমাণ মিলেছে। বিপরীতে জার্মানি এবং যুক্তরাজ্যের মতো ইউরোপীয় দেশগুলোতে এসব পণ্যে বাড়তি চিনি পাওয়া যায়নি। দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের উইটওয়াটারসরান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্যের অধ্যাপক ও শিশু বিশেষজ্ঞ কারেন হফম্যান জানান, শিশুর খাবারে চিনি যোগ করার কোনো বৈধ কারণ নেই। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ রয়েছে, রোগ প্রতিরোধের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক নির্দেশিকা অমান্য করে নেসলে গরিব দেশগুলোতে শিশুদের পণ্যে চিনি মেশায়। শিশুদের সেরেলাকে মেশানো এসব চিনি স্থূলতা এবং বেশ কিছু দীর্ঘস্থায়ী রোগের কারণ হতে পারে। ব্রাজিলের পারাইবা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি বিভাগের অধ্যাপক রডরিগো ভিয়ানা জানান, ‘এটা উদ্বেগজনক। শিশু ও কমবয়সীদের খাদ্যে অতিরিক্ত চিনি মেশানো উচিত নয়। এটা অপ্রয়োজনীয় তো বটেই, অত্যন্ত আসক্তি সৃষ্টিকারীও। এতে বাচ্চারা মিষ্টত্বের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। ফলে আরও বেশি মিষ্টি খাবারের দিকে ঝোঁকে। দেখা যায়, প্রাপ্তবয়স্ক জীবনে পৌঁছনোর আগেই তাদের খাদ্যে পুষ্টির শৃঙ্খলা নষ্ট হয়ে যায়।’ নেসলে বাংলাদেশের বিবৃতি আমরা আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই যে আমাদের শিশু খাদ্যশস্য পণ্যগুলো প্রাথমিক শৈশবকালের জন্য প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ, আয়রন ইত্যাদি পুষ্টির প্রয়োজনীয়তাগুলোর যথাযথ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য তৈরি করা হয়। আমরা কখনই আমাদের পণ্যের পুষ্টির মানের সঙ্গে আপস করি না এবং কখনই আপস করব না। আমরা ক্রমাগত আমাদের বিস্তৃত গ্লোবাল রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ককে আমাদের পণ্যের পুষ্টির প্রোফাইল বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করি। কমপ্লায়েন্স হলো নেসলে বাংলাদেশের একটি অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য এবং আমরা এর সঙ্গে কখনই আপস করব না। আমরা এটাও নিশ্চিত করতে চাই যে বাংলাদেশে উৎপাদিত আমাদের পণ্যগুলো CODEX মান (WHO এবং FAO দ্বারা প্রতিষ্ঠিত একটি কমিশন) এবং যুক্ত শর্করাসহ সমস্ত পুষ্টির প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে সম্পর্কিত স্থানীয় স্পেসিফিকেশন (প্রয়োজন অনুসারে) সম্পূর্ণ এবং কঠোরভাবে মেনে চলছে। যোগ করা শর্করা হ্রাস নেসলে বাংলাদেশের জন্য একটি অগ্রাধিকার। গত ৫ বছরে, আমরা বৈকল্পিকের উপর নির্ভর করে ইতিমধ্যেই ৪০% পর্যন্ত যোগ করা শর্করা কমিয়েছি। আমরা নিয়মিত আমাদের পোর্টফোলিও পর্যালোচনা করি এবং পুষ্টি, গুণমান, নিরাপত্তা এবং স্বাদের সঙ্গে আপস না করে যোগ করা শর্করার মাত্রা আরও কমাতে আমাদের পণ্যগুলোকে উদ্ভাবন এবং সংস্কার করা চালিয়ে যাচ্ছি। নেসলে বাংলাদেশ ভোক্তাদের সর্বোত্তম পুষ্টি সরবরাহ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা আমরা ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে করে আসছি এবং সবসময় আমাদের পণ্যগুলিতে পুষ্টি, গুণমান এবং নিরাপত্তার সর্বোচ্চ মান বজায় রাখব।
১৮ এপ্রিল, ২০২৪

ক্যানসার আক্রান্ত অভিনেত্রীর পাশে ফারহান
ছোট পর্দার অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা মুশফিক আর ফারহান। ব্যক্তিজীবনে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মাঝেমধ্যেই প্রশংসিত হন তিনি।  উদার তারকা হিসেবে ভক্তদের মাঝে পরিচিত এই অভিনেতা। এবার ক্যানসার আক্রান্ত শিল্পীকে আর্থিক সহায়তা করেছেন ফারহান। গত দু’বছর ধরে জরায়ু মুখের ক্যানসারে আক্রান্ত ছোটপর্দার পরিচিত অভিনেত্রী আফরোজা হোসেন।  দেশে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি। তবে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে নেওয়া হয়েছে অভিনেত্রীকে।  চিকিৎসক জানিয়েছেন, তার ক্যানসার নিয়ন্ত্রণে থাকলেও মেরুদণ্ডের নার্ভের জরুরি অপারেশন প্রয়োজন।  কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে পারছেন না আফরোজা। এমন অবস্থায় তার পাশে দাঁড়ালেন ফারহান।  অভিনেত্রীর চিকিৎসার জন্য নগদ ২ লাখ টাকা দিয়েছেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন আরেক জনপ্রিয় অভিনেত্রী মনিরা মিঠু্।  পোস্টে জানান, ফারহানের সঙ্গে শুটিং চলাকালীন আফরোজার অসুস্থতার কথা বলেন তিনি।  এতে আগেবপ্রবণ হয়ে পড়েন ফারহান। কিছুক্ষণের মধ্যেই ২ লাখ টাকা ক্যাশ দিয়ে দেন এই অভিনেতা। 
১০ এপ্রিল, ২০২৪

চর্মরোগে আক্রান্ত জিম্মি নাবিকরা
ভারত মহাসাগরে সোমালিয়া জলদস্যুদের কবলে পড়া জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিক পানির সংকটে আক্রান্ত হচ্ছেন চর্মরোগে। সংরক্ষিত পানি যাতে দ্রুত ফুরিয়ে না যায় এ কারণে রেশনিং করে ব্যবহার করতে হচ্ছে স্বাদু পানি। সপ্তাহে মাত্র এক-দুই বারের বেশি গোসল করার সুযোগ পাচ্ছেন না তারা। এ কারণে নাবিকদের শরীরে আস্তে আস্তে মারাত্মক আকার ধারণ করছে চর্মরোগ। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য জাহাজে যেসব ওষুধপত্র ছিল, তাও গেছে ফুরিয়ে। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত তাদের উদ্ধার তৎপরতা চালানোর অনুরোধ জানিয়েছেন নাবিকদের স্বজনরা। সমুদ্রগামী বাণিজ্যিক জাহাজের ক্যাপ্টেন আতিক ইউ এ খান বলেন, ‘এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজের অধিকাংশ নাবিকই চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের কাছে নেই ওষুধপত্র। পানির সংকট মারাত্মক হয়েছে। সপ্তাহে মাত্র দু-একবার স্বাদু পানি পেলেও বাকি সময় সমুদ্রের লোনা পানি ব্যবহার করতে হচ্ছে।’ অবশ্য কবির গ্রুপের (কেএসআরএম) মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেছেন, ‘সব নাবিক সুস্থ আছেন। তাদের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। দস্যুদের সঙ্গে আমাদের আলোচনার অগ্রগতি আছে। আশা করছি, যে কোনো সময় নাবিকরা বন্দিদশা থেকে মুক্তি পাবেন।’ গতকাল শনিবার সকালে কথা হয় জিম্মি নাবিক শামসুদ্দিনের ভগ্নিপতি বদরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘শামসুদ্দিন এখন এক দিন, দুই দিন পরপর আমাদের কাছে ফোন করেন। বলেছেন, তারা ভালো আছেন। জাহাজে রক্ষিত খাবার এখনো মজুত আছে। তবে কমে এসেছে। এখন দস্যুরা আর নাবিকদের থেকে খাচ্ছে না। তারা উপকূল থেকে দুম্বা-খাসিসহ অন্যান্য খাবার নিয়ে আসছে। দস্যুরা তাদের সংগ্রহ করা খাবার খাচ্ছে। আবার নাবিকরা চাইলে তাদের খেতে দেওয়া হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘কবে এ জিম্মি দশা থেকে নাবিকরা মুক্তি পাচ্ছেন তা নিয়ে চিন্তা হচ্ছে। আমাকে ফোনে বলেছে, জাহাজ মালিক বা এসআর শিপিংয়ের পক্ষ থেকে তাদের মুক্তির বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে যাতে খোঁজ নিই। এরই মধ্যে আমি এসআর শিপিংয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন নাবিকদের দ্রুত ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।’ গত ৪ মার্চ আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে ৫৫ টন কয়লা নিয়ে যাত্রা শুরু করে এমভি আব্দুল্লাহ। ১৯ মার্চ সেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। এর মধ্যে ১২ মার্চ দুপুর দেড়টার দিকে ভারত মহাসাগরে জলদস্যুর কবলে পড়ে জাহাজটি।
০৭ এপ্রিল, ২০২৪
X