ভারত মহাসাগরে সোমালিয়া জলদস্যুদের কবলে পড়া জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিক পানির সংকটে আক্রান্ত হচ্ছেন চর্মরোগে। সংরক্ষিত পানি যাতে দ্রুত ফুরিয়ে না যায় এ কারণে রেশনিং করে ব্যবহার করতে হচ্ছে স্বাদু পানি। সপ্তাহে মাত্র এক-দুই বারের বেশি গোসল করার সুযোগ পাচ্ছেন না তারা। এ কারণে নাবিকদের শরীরে আস্তে আস্তে মারাত্মক আকার ধারণ করছে চর্মরোগ। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য জাহাজে যেসব ওষুধপত্র ছিল, তাও গেছে ফুরিয়ে। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত তাদের উদ্ধার তৎপরতা চালানোর অনুরোধ জানিয়েছেন নাবিকদের স্বজনরা।
সমুদ্রগামী বাণিজ্যিক জাহাজের ক্যাপ্টেন আতিক ইউ এ খান বলেন, ‘এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজের অধিকাংশ নাবিকই চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের কাছে নেই ওষুধপত্র। পানির সংকট মারাত্মক হয়েছে। সপ্তাহে মাত্র দু-একবার স্বাদু পানি পেলেও বাকি সময় সমুদ্রের লোনা পানি ব্যবহার করতে হচ্ছে।’
অবশ্য কবির গ্রুপের (কেএসআরএম) মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেছেন, ‘সব নাবিক সুস্থ আছেন। তাদের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। দস্যুদের সঙ্গে আমাদের আলোচনার অগ্রগতি আছে। আশা করছি, যে কোনো সময় নাবিকরা বন্দিদশা থেকে মুক্তি পাবেন।’
গতকাল শনিবার সকালে কথা হয় জিম্মি নাবিক শামসুদ্দিনের ভগ্নিপতি বদরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘শামসুদ্দিন এখন এক দিন, দুই দিন পরপর আমাদের কাছে ফোন করেন। বলেছেন, তারা ভালো আছেন। জাহাজে রক্ষিত খাবার এখনো মজুত আছে। তবে কমে এসেছে। এখন দস্যুরা আর নাবিকদের থেকে খাচ্ছে না। তারা উপকূল থেকে দুম্বা-খাসিসহ অন্যান্য খাবার নিয়ে আসছে। দস্যুরা তাদের সংগ্রহ করা খাবার খাচ্ছে। আবার নাবিকরা চাইলে তাদের খেতে দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘কবে এ জিম্মি দশা থেকে নাবিকরা মুক্তি পাচ্ছেন তা নিয়ে চিন্তা হচ্ছে। আমাকে ফোনে বলেছে, জাহাজ মালিক বা এসআর শিপিংয়ের পক্ষ থেকে তাদের মুক্তির বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে যাতে খোঁজ নিই। এরই মধ্যে আমি এসআর শিপিংয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন নাবিকদের দ্রুত ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।’
গত ৪ মার্চ আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে ৫৫ টন কয়লা নিয়ে যাত্রা শুরু করে এমভি আব্দুল্লাহ। ১৯ মার্চ সেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। এর মধ্যে ১২ মার্চ দুপুর দেড়টার দিকে ভারত মহাসাগরে জলদস্যুর কবলে পড়ে জাহাজটি।