পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিককে বাধা, থানায় অভিযোগ
বরগুনার আমতলীতে পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিককে বাধা দেওয়াসহ ভয়ভীতি ও খুন জখমের অভিযোগ উঠেছে। এতে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ওই সাংবাদিক। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আমতলীর শুলিশাখালী ইউনিয়নের বাজারখালী স্লুইসগেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগপত্র ও ভুক্তভোগী ওই সাংবাদিকের বক্তব্য সূত্রে জানা গেছে, বাজারখালী এলাকার স্লুইসগেট এলাকায় স্থানীয় নান্নু চৌকিদারের ছেলে সাইদুর চৌকিদার অবৈধভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সরকারি জমিতে পাকা ঘর নির্মাণ করছে। এমন খবর পেয়ে সাংবাদিক আল আমিন বাবু ও মনিরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা দেখতে পান। সেখানে সংবাদ প্রকাশের জন্য ভিডিও ধারণ করেন তারা। এ সময় অভিযুক্ত সাইদুর চৌকিদার ছুটে এসে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা দেন। উত্তেজিতভাবে অকথ্য ভাষায় তাদের গালাগাল করেন তিনি। এ সময় সাংবাদিক মনিরুল প্রতিবাদ করলে তাকেও ভয়ভীতিসহ খুন জখমের হুমকি দেওয়ার কথাও অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।  পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরে অভিযুক্ত সাইদুর চৌকিদারকে বিবাদী করে ও মনিরুল ইসলামকে ১ নম্বর সাক্ষী করে  আল আমিন বাবু আমতলী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে আমতলী থানার এসআই বিশ্বজিৎ শীলকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু। এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাইদুর চৌকিদারকে মোবাইল ফোন যোগাযোগের চেষ্টা করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু কালবেলাকে বলেন, তথ্য সংগ্রহ করার সময় বাজারখালী এলাকায় সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ার বিষয়টি শুনেছি। একটি অভিযোগও আমরা পেয়েছি। অভিযোগের বিষয়ে তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
১৫ মার্চ, ২০২৪

আমতলী পৌরসভা নির্বাচন / মেয়র পদে হ্যাটট্রিক বিজয় পেলেন মতিয়ার রহমান
বরগুনার আমতলী পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন মোবাইল প্রতীকের প্রার্থী মতিয়ার রহমান। এ নিয়ে তিনি পর পর তিনবার আমতলী পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হলেন। শনিবার (৯ মার্চ) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হয়। পরে ভোটের ফল প্রকাশ করে নির্বাচন অফিস।  হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি  মতিয়ার রহমান ৬ হাজার ৪৭৩ ভোট পান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক মেয়র ও আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল আহসান খান নান্নু হ্যাঙ্গার প্রতীকে পেয়েছেন ৫ হাজার ৭৭০ ভোট। ১৯৯৮ সালের ১৫ অক্টোবর আমতলী পৌরসভা প্রতিষ্ঠা হয়। প্রতিষ্ঠাকালে পৌর প্রশাসক হিসেবে তৎকালীন আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মানিক চন্দ্র দে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৯ সালের ৬ মে নির্বাচনে প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মো. আ. ছত্তার মৃধা। ২০০৫ সালের ৩০ জুলাই দ্বিতীয় নির্বাচনে নির্বাচিত হন বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল আহসান খান নান্নু। তৃতীয় দফা ২০১১ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত এবং ২০১৯ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নৌকা প্রতীক নিয়ে দ্বিতীয় দফায় নির্বাচিত হন মেয়র মো. মতিয়ার রহমান।
০৯ মার্চ, ২০২৪

আমতলী পৌর মেয়রকে খুঁজছে পুলিশ, কঠোর ইসি
বরগুনার আমতলী পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিয়ার রহমানকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীকে উদ্দেশ্য করে কটূক্তিমূলক বক্তব্য দেওয়া, সাধারণ ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো এবং নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে এ মামলা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্দেশে শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) আমতলী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সেলিম রেজা বাদী হয়ে আমতলী থানায় করা মামলায় মেয়র মতিয়ার রহমান মতিকে একমাত্র আসামি করে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) নির্বাচন কমিশনের উপসচিব (আইন) আব্দুছ সালামের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম সরোয়ার ফোরকানকে নিয়ে কটূক্তিমূলক বক্তব্য দেওয়া, সাধারণ ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো এবং নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে আমতলী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সেলিম রেজাকে মেয়র মতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরগুনা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল হাই আল হাদী। অভিযোগ ও মামলার বিষয়ে জানতে আমতলী পৌর মেয়র মতিয়ার রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ না করায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এ‌ বিষয়ে বরগুনার নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আবদুল হাই আল হাদী বলেন, বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় আমি নির্বাচন কমিশনের চিঠি পেয়েছি। চিঠির নির্দেশনা অনুযায়ী আমতলী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমতলী থানায় মেয়র মতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে মামলা হয়েছে। এখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু কালবেলাকে বলেন, আমতলী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সেলিম রেজা বাদী হয়ে আমতলী পৌর মেয়র মতিয়ার রহমানকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। আসামি পালাতক থাকায় গ্রেপ্তার করা যায়নি।
০৫ জানুয়ারি, ২০২৪

১৪ ডিসেম্বর: আমতলী হানাদারমুক্ত দিবস আজ
আমতলী থানা হানাদারমুক্ত দিবস আজ ১৪ ডিসেম্বর। ১৯৭১ এই দিনে বরগুনার আমতলী থানা হানাদারমুক্ত হয়েছিল। ১১ ডিসেম্বর বরগুনার বুকোবুনিয়া ক্যাস্প থেকে নৌকাযোগে প্রয়াত হাবিলদার হাতেম আলী, আফাজ উদ্দিন বিশ্বাস ও মোয়াজ্জেম হোসেনের নেতৃত্বে দু’দল মুক্তিবাহিনী পঁচাকোড়ালিয়া হয়ে আড়পাঙ্গাশিয়া বাজারে আসে। ১২ ডিসেম্বর আফাজ উদ্দিন বিশ্বাস ও নুরুল ইসলাম পাশা তালুকদারের নেতৃত্বে একদল মুক্তি বাহিনী কুকুয়া ইউনিয়নের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পৌছেন। ওখানে প্রয়াত সাবেক এমপি নিজাম তালুকদারের নেতৃত্বে অস্থায়ী ক্যাস্প করা হয়। অপরদিকে গলাচিপার মুজিব বাহিনীর হারুন-অর-রশিদ ও আবদুর রব মিয়ার নেতৃত্বে একদল মুক্তিকামী যোদ্ধা ওই ক্যাম্পে আসেন। দু’গ্রুপ আমতলী থানা মুক্ত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।   এদিকে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সভাপতি এবিএম আসমত আলী আকন, ন্যাপ নেতা গাজী আমীর হোসেন ও স্কুলশিক্ষক দলিল উদ্দিন মিয়া আমতলী থানা শান্তিপূর্ণভাবে মুক্ত করতে মুক্তি বাহিনী ও পুলিশের মধ্যে সমঝোতার উদ্যোগ নেয়। ওই সময় আমতলী থানায় কোনো পাক বাহিনী ছিল না। থানায় ছিলেন ওসি রইস উদ্দিন ভূইয়া, কয়েকজন পুলিশ ও রাজাকার বাহিনী। ১৩ ডিসেম্বর সকালে তারা ওসি রইস উদ্দিন ভূইয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন। ওসি শান্তিপূর্ণভাবে আমতলী থানা মুক্তি বাহিনীর হাতে ছেড়ে দিতে রাজি হয়ে ক্যাম্পে তাদের মাধ্যমে একটি চিঠি পাঠায়। এ চিঠি মুক্তি বাহিনীর ক্যাম্পে মধ্যস্থতাকারীরা পৌঁছে দেয়। মুক্তি বাহিনীর সদস্যরা সন্ধ্যায় থানার পশ্চিম প্রান্তে চাওড়া নদীর পাড়ে একে পাইলট হাই স্কুল সংলগ্ন স্থানে অবস্থান নেয়। ওদিকে ওসি রইস উদ্দিন ভুইয়ার পাঠানো চিঠিটি ছিল একটি পাতানো ফাঁদ। মুক্তি বাহিনীরা থানায় আসলে গুলি করে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। ওসির এ পরিকল্পনা মুক্তিবাহিনী জেনে যায়। রাত আনুমানিক ৮টার দিকে মুক্তি ও মুজিব বাহিনী যৌথভাবে জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে। জবাবে রইস উদ্দিন ও রাজাকার বাহিনী বর্ষার মত গুলি ছোঁড়ে। শুরু হয় যুদ্ধ। রাতভর গুলি বিনিময়ে এক নৌকার মাঝি শহীদ হয় (তার নাম পাওয়া যায়নি)। কাক ডাকা ভোরে গলাচিপার মুজিব বাহিনীর গেরিলা যোদ্ধা হারুন-অর-রশিদ মতান্তরে ফেরদৌস হায়দার নদী পার হয়ে থানার প্রাচীর ঘেঁষে একটি গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। বিকট শব্দে গ্রেনেডটি বিস্ফোরিত হয়। পুলিশ ও রাজাকার বাহিনী মানসিকভাবে ভেঙে পরে। অপরদিকে মুক্তিকামী জনতা দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্ত থেকে বিজয় মিছিল নিয়ে থানার দিকে আসতে থাকে এবং মুক্তিবাহিনী নদী পার হয়ে উত্তর প্রান্ত থেকে থানার দিকে অগ্রসর হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে ওসি রইস উদ্দিন, পুলিশ ও রাজাকার বাহিনী সাদা পতাকা উত্তোলন করে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানান। ১৪ ডিসেম্বর সকাল ৮টায় মুক্তি ও মুজিব বাহিনী যৌথভাবে এবং জাগ্রত জনতা জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে থানার প্রথম ফটকে প্রবেশ করে। এ সময় ওসি রইস উদ্দিন ভূইয়া ও তার বাহিনী অস্ত্র তুলে আত্মসমর্পণ করে। পরে আওয়ামী লীগ নেতা আফাজ উদ্দিন বিশ্বাস ও নুরুল ইসলাম পাশা তালুকদার ওসি রইস উদ্দিনসহ তার সহযোগীদের আটক করে। মুক্তিযোদ্ধা আফাজ উদ্দিন বিশ্বাস আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং উপস্থিত জনতা জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে আমতলী থানাকে মুক্তাঞ্চল ঘোষণা করা হয়।
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৩
X