জামিন পেলেন ইমরান খান
জামিন পেয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বুধবার (১৫ মে) তিনি জামিন পান। তবে জামিন পেলেও কারাগার থেকে বের হতে পারবেন না তিনি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  ইমরান খানের আইনজীবী বলেন, বুধবার ইসলামাবাদে ইমরান খান জমি দুর্নীতির মামলায় জামিন পেয়েছেন। তবে অন্য দুই মামলায় জামিন না মেলায় তাকে এখনো কারাগারে থাকতে হবে। জেল থেকে বের হতে পারবেন না তিনি।  পাকিস্তানের সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী ও তার স্ত্রীকে গত সপ্তাহে নতুন এ মামলায় অভিযুক্ত করা হয়। অভিযোগে বলা হয়, ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকাকালে এক আবাসন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে জমি উপহার নেন। তবে ইমরান খানের দাবি, তিনি কোনো ভুল করেননি। এজন্য তিনি ইসলামাবাদ হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন।  ইমরান খানের দলের আইনজীবী নাইম হায়দার পানজুথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে জামিনের তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আরও দুই মামলায় জামিন না মেলায় ইমরান খানকে কারাগারে থাকতে হবে। এর একটি হলো রাষ্ট্রীয় গোপন নথি ফাঁস এবং অন্যটি হলো ইসলামী আইন লংঘন করে বিয়ে করা।  গত বছরের আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছেন ইমরান খান। চারটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন তিনি। তবে এরই মধ্যে দুই মামলার সাজা স্থগিত করা হয়েছে।  পাকিস্তানের সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কয়েক ডজন মামলা রয়েছে। একইসঙ্গে তার স্ত্রী বুশরা বিবিও কারাগারে রয়েছেন। ২০১৮ সালে বেআইনিভাবে ইমরান খানকে বিয়ে করার অভিযোগ এনে কারাগারে রাখা হয়েছে তাকে।   
১৫ মে, ২০২৪

সিনেট নির্বাচনে পিটিআইয়ের প্রার্থী দিলেন ইমরান খান
পাকিস্তানে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনের পর ইতোমধ্যে সরকার গঠিত হয়েছে। এখন সংসদের উচ্চকক্ষ সিনেট নির্বাচনের পালা। আগামী ২ এপ্রিল সিনেট নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এই ভোট উপলক্ষে নিজেদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দলের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের অনুমোদনের পর শনিবার (১৬ মার্চ) প্রার্থীদের নামের চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণা করেছে পিটিআই। খবর জিও নিউজের। গত সপ্তাহে মেয়াদ শেষ হলে সিনেটের ৩৮টি আসন ফাঁকা হয়। এসব আসনে আগামী মাসে ভোটের আয়োজন করবে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)। ঘোষিত তপশিল অনুযায়ী, গতকাল শনিবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। এর আগে প্রার্থীদের নাম পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইমরান খান চূড়ান্ত করেছেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন দলের সিনিয়র নেতা আসাদ কায়সার। তবে সব সন্দেহ দূর করে শনিবারই এক এক্সবার্তায় ইমরান খান অনুমোদিত প্রার্থীদের নামের একটি তালিকা প্রকাশ করে পিটিআই। এখানে প্রদেশভিত্তিক প্রার্থীদের নামের তালিকা দেওয়া হলো : খাইবার পাখতুনখাওয়া সাধারণ আসন : মুরাদ সাঈদ (কভারিং : আজহার মাশওয়ানি) ফয়সাল জাভেদ খান মির্জা আফ্রিদি ইরফান সেলিম খুররম জিশান টেকনোক্র্যাটস : আজম স্বাতী ইরশাদ হোসেন নারী : আয়েশা বানো রুবিনা নাজ পাঞ্জাব সাধারণ আসন : হামিদ খান জুলফি বুখারি (কভারিং : ওমর সরফরাজ চিমা এবং কর্নেল ইজাজ মিনহাস) টেকনোক্র্যাটস : ডা. ইয়াসমিন রশিদ নারী আসন সানাম জাভেদ
১৭ মার্চ, ২০২৪

ইমরান খান বন্দি থাকা কারাগারে সন্ত্রাসী হামলার চেষ্টা
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বন্দি থাকা আদিয়ালা কারাগারে সন্ত্রাসী হামলার চেষ্টা চালানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০৭ মার্চ) ডনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের পুলিশ ও কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের (সিটিডি) যৌথ চেষ্টায় এ হামলা বানচাল করা হয়েছে। এ ছাড়া এ ঘটনায় বুধবার রাতেই তিনজনকে আটক করেছে।  পুলিশ জানিয়েছে, আটক সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ভারী অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করা হয়েছে। এ ছাড়া তাদের অজ্ঞাত জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।  রাওয়ালপিন্ডি পুলিশের এক মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানান, পুলিশ ও সিটিডি আদিয়ালা কারাগারে হামলার চেষ্টা বানচাল করেছে। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে আটক করা হয়েছে। আটক তিন ব্যক্তি আফগানিস্তানের বাসিন্দা।  রাওয়ালপিন্ডি পুলিশের প্রধান সাইদ খালিদ হামদানি বলেন, তাদের কাছ থেকে স্বয়ংক্রিয় ভারী অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া তাদের কাছে হ্যান্ড গ্রেনেড, ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) ও কারাগারের মানচিত্রও পাওয়া গেছে।  তিনি জানান, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো বর্তমানে কারাগার ও তার আশপাশের এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।  সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আদিয়ালা কারাগার বর্তমানে বন্দিতে ঠাসা। এটিতে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ বন্দি রয়েছেন।  কারাগারটিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানসহ সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীও রয়েছেন।   
০৭ মার্চ, ২০২৪

এবার আইএমএফের দ্বারস্থ হবেন ইমরান খান
পাকিস্তানে নির্বাচনের পর প্রায় দুই সপ্তাহ হতে চলেছে। এরমধ্যে পার্লামেন্টে যেতে জোট করেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআই। অন্যদিকে সরকার গঠনে জোটবন্ধ হয়েছে পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল-এন) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। এরমধ্যে নতুন বার্তা দিয়েছেন ইমরান খান।  বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ডনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, পিটিআই সিনেটর আলি জাফর বলেছেন, আমি আপনার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিচ্ছি। খান সাহেব (ইমরান খান) জানিয়েছেন, তার পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে চিঠি ইস্যু করা হবে।  তিনি বলেন, আইএমএফ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ যে কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থার মূলনীতি হলো কোনো দেশে কাজ করার বা তাদের ঋণ দেওয়ার জন্য তাদের পূর্বশর্ত হলো সুশাসন থাকা। আর সুশাসন নিশ্চিতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো গণতন্ত্র।  তিনি আরও বলেন, গত ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে রাতের অন্ধকারে জনগণের ম্যান্ডেট চুরি হয়েছে। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু না হলে যে কোনো সংস্থার উচিত তাদের ঋণ না দেওয়া। কেননা এ ঋণ জনগণের জন্য পরবর্তীতে বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।   পিটিআইয়ের এ সিনেটর বলেন, তার দল নির্বাচনের বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত চায়। আইএমএফের কাছে পাঠানো চিঠিতে এ শর্তটি সামনে রাখা হবে।  গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রথম, পিএমএল-এন দ্বিতীয় ও পিপিপি তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে। তবে কোনো কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসন পেলেও ভোট কারচুপির অভিযোগ করে আসছে পিটিআই। দলটির দাবি, অনেক আসনে তাদের সমর্থিত প্রার্থীকে ফল পরিবর্তনের মাধ্যমে জোর করে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর প্রতিবাদে নির্বাচনের পর থেকে দেশজুড়ে সমমনা দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে আসছে পিটিআই। এমনকি আদালতের দ্বারস্থ পর্যন্ত হয়েছে দলটি। এ ছাড়া মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) কারচুপি ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় বিতর্কিত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) সিকান্দার সুলতান রাজার অবিলম্বে পদত্যাগ দাবি করেছেন পিটিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গহর আলি খান।
২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

নির্বাচনকে ‘মাদার অব অল রিগিং’ বললেন ইমরান খান
পাকিস্তানে ‘মাদার অব অল রিগিং’-এর অবসান করতে হবে বলে জানিয়েছেন পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান। এ ছাড়া ভোট কারচুপি পাকিস্তানকে বিশ্বব্যাপী হাসির পাত্রে পরিণত করছে বলেও জানান তিনি। খবর এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) কারাবন্দি ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করেন তার বোন আলেমা খান। সাক্ষাৎ শেষে আদিয়ালা কারাগারের বাইরে সাংবাদিকদের আলেমা খান জানান, তার কাছে এসব কথা বলেছেন ইমরান খান। বিভিন্ন মামলায় ৩৪ বছরের সাজা পেয়ে বর্তমানে এই কারাগারে বন্দি রয়েছেন ইমরান খান। এ সময় আলেমা খানের কাছে সাংবাদিকরা জানতে চান ‘মাদার অব অল রিগিং’-এর দ্বারা ইমরান খান কী বোঝাতে চেয়েছেন। এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এর মানে হলো পিটিআইকে ভেঙে দেওয়া, নির্বাচনী প্রতীক ব্যাট কেড়ে নেওয়া, দলের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে না দেওয়া, প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে সরে যেতে বাধ্য করা এবং সভা-সমাবেশের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা। ইমরানের বোন আলেমা বলেন, ইমরান খান দেশে দায়মুক্তির সংস্কৃতির অবসান চান। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের সুনাম রক্ষা করতে জনগণের ম্যান্ডেটকে সম্মান করা উচিত বলেও জানিয়েছেন তিনি। ইমরান বলেছেন, নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের দিন ও নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে কারচুপির মাধ্যমে পাকিস্তানের জনগণকে তাদের প্রতিনিধি বাছাইয়ের গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ভোটের দিন ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু যখন দেখল তা কাজ করেনি, তখন নির্লজ্জভাবে রাতের আঁধারে ভোটের ফল পরিবর্তন করা হয়েছে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রথম, পিএমএল-এন দ্বিতীয় ও পিপিপি তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে। তবে কোনো কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসন পেলেও ভোট কারচুপির অভিযোগ করে আসছে পিটিআই। দলটির দাবি, অনেক আসনে তাদের সমর্থিত প্রার্থীকে ফল পরিবর্তনের মাধ্যমে জোর করে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর প্রতিবাদে নির্বাচনের পর থেকে দেশজুড়ে সমমনা দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে আসছে পিটিআই। এমনকি আদালতের দ্বারস্থ পর্যন্ত হয়েছে দলটি। এ ছাড়া মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) কারচুপি ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় বিতর্কিত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) সিকান্দার সুলতান রাজার অবিলম্বে পদত্যাগ দাবি করেছেন পিটিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গহর আলি খান।
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

দাবি পিটিআই নেতার / ফের প্রধানমন্ত্রী হবেন ইমরান খান
ক্ষমতা থেকে উৎখাতের পর নানা আইনি জটিলতার মধ্য দিয়ে সময় পার করছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। নির্বাচনে তাকে আটকাতে চেষ্টার কোনো কমতি রাখা হয়নি। এমনকি তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) দলীয় প্রতীক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এরপরও পিটিআই মনোনীত প্রার্থীরা সর্বোচ্চ আসন পেয়েছেন। এবার ফের ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী হবেন বলে দাবি করেছেন তার দলের এক নেতা। সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ডনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  পিটিআইয়ের সিনেটর ফয়সাল জাভেদ বলেন, ইমরান খান মিয়ানওয়ালি থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। আর আল্লাহর কৃপায় তিনি আবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হবেন।  জিও নিউজের এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, গত ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে দেশটির ইতিহাসে অভূতপূর্ব ভোটার উপস্থিতি দেখা গিয়েছে।  পিটিআইয়ের এ নেতা গত বছরের ৯ মের সহিংসতা ও ধড়পাকড়ের পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন। এরপর পেশোয়ার হাইকোর্টে শুনানি চলাকালে আজ তিনি জনসম্মুখে আসলেন।  এর আগে পিটিআইয়ের বর্তমান চেয়ারম্যান গওহর আলি খান বলেন, পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের যারা জাতীয় পরিষদ এবং খাইবার পাখতুনখাওয়াও পাঞ্জাবে নির্বাচিত হয়েছেন তারা নতুন দলে যোগ দিচ্ছেন। এসব প্রার্থী সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের হয়ে পার্লামেন্টে যাবেন। তিনি বলেন, আমাদের প্রার্থীরা পরস্পরের সম্মতিতে তাদের হলফনামা জমা দিয়েছেন। আজ আমরা ঘোষণা দিচ্ছি, পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলে যোগ দিচ্ছেন। গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রথম, পিএমএল-এন দ্বিতীয় ও পিপিপি তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে। তবে কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। ফলে জোট গঠন করে সরকার আসার চেষ্টা করছে বড় দলগুলো। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছার কথা জানিয়েছে পিএমএল-এন ও পিপিপি। এর আগে গত রোববার ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে পিটিআই মনোনীত প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী ওমর আইয়ুব খান বলেন, পিপিপি ও পিএমএল-এন ৪০টি আসনও জিততে পারেনি। তাদের এবং অন্য সবাইকে জনগণের কথা শুনতে হবে। দেশের জনগণ ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিয়েছে এবং তারা সুন্দর পাকিস্তান চায়। বিলাওয়াল ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ও নওয়াজ শরিফ নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান মুসলিম লিগের (পিএমএল-এন) গত ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ঘটে যাওয়া জালিয়াতির প্রধান সুবিধাভোগী বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

ক্ষমতায় গেলে সবাইকে ক্ষমা করে দেবেন ইমরান খান
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জানিয়েছেন, যদি তার দল আরেকবার ক্ষমতায় আসে; তাহলে কোনো ‘রাজনৈতিক প্রতিশোধ’ নেবেন না। এর বদলে সবাইকে ক্ষমা করে দিয়ে পাকিস্তানের উন্নয়নের জন্য কাজ করবেন তিনি। রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে শনিবার ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করতে যান পিটিআইর জ্যেষ্ঠ নেতা আলী মুহাম্মদ খান। ওই সময় তাকে এ কথা জানান ইমরান খান। আলী মুহাম্মদ খান আরও জানিয়েছেন, ইমরান খান তাকে বলেছেন, পাকিস্তানকে এগিয়ে নিতে হলে একটি ন্যায় ও সমন্বয়সাধন কমিটি গঠন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ব্যাপারে মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে (সাবেক টুইটার) একটি পোস্ট করেন আলি মুহাম্মদ খান। তিনি ইমরান খানের বক্তব্য উদ্ধৃত করে লেখেন, ‘ক্ষমতায় আসার পর, আমরা কোনো রাজনৈতিক প্রতিশোধ নেব না। আমরা দেশ ও জাতিকে সামনে এগিয়ে নেব, দেশ এবং জাতির উন্নয়নের জন্য।’ ইমরান খান কারাগার থেকে আরও বলেন, ‘আমাদের ন্যায় ও ক্ষমাশীলতার সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে। তেহরিক-ই-ইনসাফ, ক্ষমতায় আসার পর, পাকিস্তানকে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাবে। কোনো প্রতিশোধ নয়।’ তিনি আরও জানান, ইমরান খান দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়াত অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার কথা উল্লেখ করেছেন, যিনি দেশকে গড়ার জন্য একটি ন্যায় ও সমন্বয়সাধন কমিশন গঠন করেছিলেন। গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ২৬৬ আসনের মধ্যে ২৬৫টি আসনে নির্বাচন হয়। এতে ইমরান খানের পিটিআইর স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৯২টি আসনে জয় পান। তবে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন না করায় তার দলের সরকার গঠনের সম্ভাবনা খুবই কম। এবারের নির্বাচনে নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লিগ-এন (পিএমএলএন) দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭৫টি আসন পেয়েছে। আর বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ৫৪টি আসন। ধারণা করা হচ্ছে, পিপিপির সমর্থন নিয়ে পাকিস্তানে নতুন সরকার গঠন করবে পিএমএল-এন। তবে এই সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নওয়াজ শরিফকে দেখা যাবে না।
১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

মাওলানা ফজলুর রহমানের কাছে যে বার্তা দিলেন ইমরান খান
পাকিস্তানের নির্বাচনে ভোটগ্রহণের পর থেকে একের পর এক দৃশ্যপট বদলাচ্ছে। এখনও চলছে ভাঙা গড়ার খেলা। দেশটিতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ঠেকাতে কৌশলের কোনো কমতি রাখা হয়নি। এরপরও নির্বাচনে সর্বোচ্চ আসন পেয়েছেন তার সমর্থিত দলের প্রার্থীরা। ফলে সরকার গঠনেরও বার্তা দেওয়া হয়েছে দলের পক্ষ থেকে। এসব নানা ঘটনার পরিক্রমায় পাকিস্তানের অন্যতম রাজনৈতিক দল জমিয়তে উলেমা-ই-ইসলামির (জেইউআই-এফ) প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমানের বার্তা দিয়েছেন ইমরান খান।  পাকিস্তানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) একটি প্রতিনিধি দল ইমরান খানের বার্তা নিয়ে মাওলানা ফজলুর রহমানের বাসায় গিয়েছেন। সেখানে গিয়ে ইমরান খানের বার্তা পৌঁছে দেন তারা।  পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, প্রতিনিধি দলের মধ্যে পিটিআইয়ের অন্যতম নেতা আসাদ কায়সার, আমির দেগার, ফজল আহমেদ এবং ব্যারিস্টার সাইফ ছিলেন। এ ছাড়া দলের বর্তমান চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গওহর আলি খানের যাওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত যেতে পারেননি। দলটি নির্বাচনের দেশের চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে মাওলানার সঙ্গে বৈঠক করেছেন।  এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, বৈঠকে প্রতিনিধি দল মাওলানা ফজলুর রহমানের কাছে ইমরান খানের বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন। তারা মাওলানাকে ভোটে কারচুপির বিরুদ্ধে যৌথভাবে কাজ করতে আমন্ত্রণ জানান।  বৈঠকের পর মাওলানার দলের নেতা হাফিজ হামদুল্লাহ বলেন, জেইউআই-এফ পিটিআইয়ের প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানিয়েছে। মাওলানা ফজলুর রহমান বর্তমান পরিস্থিতিতে বৈঠককে ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, দলের প্রধান ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, জেইউআই-এফ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে।  এদিকে জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে সাবেক সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়ার নির্দেশে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন মাওলানা ফজলুর রহমান। ইমরান খানকে ২০২২ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার তৎপরতা শুরু হয়েছিল পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) নামের একটি জোটের মাধ্যমে। নওয়াজ শরিফের দল পিএমএল-এন, বিলাওয়াল ভুট্টোর দল পিপিসিহ বেশ কয়েকটি দল মিলে জোটটি গঠন করে। এ জোটের প্রধান ছিলেন মাওলানা ফজলুর রহমান। মাওলানা ফজলুর রহমান বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে এ অনাস্থা প্রস্তাবের বিপক্ষে ছিলাম। কিন্তু অন্য দলগুলোর চাপাচাপির মুখে আমি না বললে পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতাকে রক্ষা করছি বলে তকমা লাগানো হতো।
১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

এক হয়ে গেলেন নওয়াজ-বিলাওয়াল, এখন কী করবেন ইমরান খান
দেন-দরবার শেষে একসঙ্গে জোট গড়ে সরকারে আসার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছেন নওয়াজ শরিফের দল পিএমএল-এন ও বিলাওয়াল ভুট্টোর দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। ফলে আবারও একসঙ্গে ক্ষমতায় আসার পথ অনেকটা প্রশস্ত করে ফেলেছে দল দুটি। এখন স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন আসছে নওয়াজ-বিলাওয়াল জোটকে ঠেক্কা দিতে এবারের নির্বাচনে ব্যাট ছাড়াই সেঞ্চুরি হাঁকানো ইমরান খান কোন পথে হাঁটবেন? মঙ্গলবার রাতে ইসলামাবাদে এক যৌথ বৈঠক শেষে বিলাওয়ালের বাবা আসিফ আলি বলেন, পাকিস্তানকে সংকট থেকে বের করে আনার জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকার গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অর্থনৈতিক, সন্ত্রাসবাদ বা সমঝোতা, যাই হোক না কেন আমরা পাকিস্তানের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করব। পিটিআইও এই সমঝোতা প্রচেষ্টার অংশ। আমরা তাদের এই প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানাই। তিনি বলেন, পাকিস্তান, দেশের মানুষের উন্নয়ন ও দারিদ্র্য থেকে মুক্তির প্রচেষ্টায় নওয়াজ শরিফ ও অন্যদের সমর্থনের মাধ্যমে আমাদের সহযোগিতা করা উচিত। ২০২২ সালে ইমরান খানের পিটিআই সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) জোট সরকার। পিএমএল-এন ও পিপিপির সমন্বয়ে গঠিত হয়েছিল এই জোট। গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত সরকারে ছিল দল দুটি। নওয়াজ-বিলাওয়ালের জোট গড়ার খবরে শুধু দুই শব্দে জবাব দিয়েছে কারাবন্দি ইমরান খানের দল পিটিআই। এক এক্সবার্তায় দলটি বলেছে, ‘ম্যান্ডেট চোর’। সরাসরি কারও নাম উল্লেখ না করলেও মূলত নওয়াজ ও বিলাওয়ালকে উদ্দেশে করেই এমন বার্তা দিয়েছে পিটিআই। এ ছাড়া তাদের এই জোট নিয়ে এখানো কোনো মন্তব্য করেননি ইমরান খান। তবে গতকাল মঙ্গলবার কারাগারে বসেই দলের পরবর্তী করণীয় নিয়ে বেশ কয়েকটি বার্তা দিয়েছেন তিনি। ইমরান খান বলেছেন, পিএমএল-এন, পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ও এমকিউএম-পির সঙ্গে জোট সরকার গঠন করবে না তার দল। তবে অন্য দলের জন্য দরজা খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এমনকি ইমরান খান কেন্দ্র ও পাঞ্জাবে এমডব্লিউএমের সঙ্গে জোট সরকার গঠনের জন্য পিটিআইকে অনুমতি দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন দলের মুখপাত্র রওফ হাসান।
১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

দ্য হিল থেকে অনুদিত / আরও বেশি ক্ষমতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হতে চান ইমরান খান
বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচন পাকিস্তানের সমস্যাগুলো সমাধান না করে বরং দেশটিকে আরও গভীর সংকটের মধ্যে নিমজ্জিত করেছে৷ দেশের ক্ষমতাধর সামরিক এলিটরা যেমনটা চেয়েছিল তা হয়নি। তারা নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল)-এর জয়ের জন্য চেষ্টার কোনো কমতি রাখেনি। তবে পাকিস্তানি ভোটাররা ইমরান খানকেই বেছে নিতে চেয়েছেন। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফকে (পিটিআই) ভোট দিয়ে বংশবাদী রাজনীতির প্রতি মানুষ তাদের চূড়ান্ত অসন্তোষই যেন দেখালেন।  ইমরান খান ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। সেনাবাহিনী সে সময় ইমরান খানকে সমর্থন দিয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০২২ সালের এপ্রিলে এক সংসদীয় অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হন ইমরান খান। আগে থেকেই নানামুখী সংকট চলতে থাকা দেশটিতে এই সময়ে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট আরও তীব্র আকার ধারণ করে।  ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার পেছনে সেনাবাহিনীর হাত ছিল বলে সন্দেহ করা হয়। ষড়যন্ত্রের জন্য আমেরিকার সঙ্গে সামরিক এলিটদের দায়ী করেছিলেন ইমরান খান। তাই পাকিস্তানের সামরিক এলিটরা কোনোভাবেই চায়নি ইমরান খান আবারও দেশের প্রধানমন্ত্রী হোন। এ কারণে নওয়াজ শরিফ গং-কে সবধরনের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে তারা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তার দল পিটিআইকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার সব ধরনের চেষ্টাই করা হয়েছে। এমনকি ইমরান খানকে কারাগারে রেখেই নির্বাচন আয়োজন করা হয় এবং পিটিআইকে নির্বাচন থেকে নিষিদ্ধ করা হয়।  পাকিস্তানি তরুণদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে ইমরান খানের। তারা পিটিআইকে সমর্থন করেছে এবং বাধা ও প্রতিকূলতা কাটিয়ে দলের জন্য কাজ করে গেছে। তারা ব্যাপক দমন-পীড়নের স্বীকার হয়েও হার মানেনি। তারা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইমরান খানের বক্তব্য দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দিয়েছে। যদিও নির্বাচনে পিটিআইয়ের জনপ্রিয় প্রতীক নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীদের কোনো একক প্রতীকে নির্বাচন করতে দেওয়া হয়নি। তারা স্বতন্ত্রভাবে ভিন্ন ভিন্ন প্রতীকে নির্বাচন করেছেন। মানুষ ভোটের মাধ্যমে ইমরান খানের প্রতি তাদের সমর্থন দেখিয়েছে।  সবধরনের বাধা সত্ত্বেও নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসনে জয় পেয়েছে পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীরা। কারাগারে থেকেও ইমরান খান যে ভোট বিপ্লব দেখিয়েছেন তা অবাক করেছে সমগ্র পাকিস্তানকে। নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েও সরকার গঠন করতে পারছেন না ইমরান খান। সামরিক পৃষ্ঠপোষকতায় নওয়াজ শরিফ ও বিলাওয়াল ভুট্টো-গং ক্ষমতাসীন হলেও তাতে পাকিস্তানি নাগরিকদের মতের প্রতিফলন ঘটে না। ফলে নির্বাচনের পর পাকিস্তানের রাজনৈতিক সংকটের সমাধান না হয়ে বরং সংকটকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।  পিটিআই দাবি করেছে, তারা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা সত্ত্বেও প্রতারিত হয়েছে। পিটিআইকে সরকার গঠন করতে দেওয়ার স্বীকৃতির দাবিতে রাস্তায় নামতে ইচ্ছুক দলটির নেতা-কর্মীরা। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থেকে পিটিআইকে বঞ্চিত করা হয়েছিল এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে পাকিস্তানের পূর্ববর্তী নির্বাচনগুলোতেও সামরিক সংস্থার অপছন্দের যে কোনো দলের ক্ষেত্রে এমনটাই হয়েছে। দলগুলো তখন সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দর কষাকষি করে এগিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজেছে।  পাকিস্তানের প্রতিটি প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রধানরা ক্ষমতায় থাকার জন্য কোনো না কোনো সময়ে সামরিক জেনারেলদের সঙ্গে যোগসাজশ করেছেন। স্থায়ী রাষ্ট্রকাঠামো বিনির্মাণে ব্যর্থ হয়েছেন এবং উচ্ছৃঙ্খলতার শিকারও হয়েছেন একেকজন। পাকিস্তানের জন্য জরুরি হলো- সামরিক বাহিনীকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখা এবং রাজনীতিবিদরা সামরিক বাহিনীকে রাজনৈতিক বিরোধের চূড়ান্ত সালিশ হতে না দিয়ে একে অপরের সঙ্গে আপস মীমাংসায় কাজ করা।  তবে ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের পর এটি আরও বেশি কঠিন হয়ে পড়েছে বলে মনে হচ্ছে। ইমরান খানের রাজনীতির জন্য বড় সুবিধা হলো তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা হয় দুর্বৃত্ত না-হয় বিশ্বাসঘাতক। ইমরান খান সর্বদা রাজনীতিতে সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপ মোকাবিলা করতে পছন্দ করেছেন। তিনি আরও বেশি ক্ষমতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার অভিপ্রায়ে জনপ্রিয়তা লাভ করতে চান। অন্যদিকে তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা সামরিক বাহিনীর আশীর্বাদে ক্ষমতায় থাকতে চায়। তারা জোট সরকার গঠন করতে আগ্রহী বলে মনে হচ্ছে। ভোটাররা সামরিক এলিটদের উচিত জবাব দিতে চেয়েছিলেন। তবে ইমরান খানসহ রাজনৈতিক নেতাদের পদক্ষেপ সেনাবাহিনীর রাজনৈতিক ভূমিকা অব্যাহত রাখার মঞ্চ তৈরি করতে পারে। যদি রাজপথে সহিংসতা হয়, তাহলে দেশে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য আবারও সেনাবাহিনী সামনে চলে আসতে পারে। এদিকে ব্যক্তিস্বার্থের খেয়ালে পাকিস্তানের রাজনীতিবিদরা দেশের অর্থনীতিকে সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করেছেন এবং বৈদেশিক সম্পর্ককে বিপর্যস্ত করে তুলেছেন।  পাকিস্তান যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তার সমাধান ছিল একটি সুষ্ঠু  নির্বাচন এবং জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় আসা একটি শক্তিশালী সরকার। ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন সেই পথে শক্ত বাধা হয়ে দাঁড়ালো। নির্বাচন পাকিস্তানকে আরও গভীর সংকটের মধ্যে নিমজ্জিত করেছে৷  হোসেন হাক্কানি: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত। ভাষান্তর: মুজাহিদুল ইসলাম 
১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
X