আজ পর্দা উঠছে কান চলচ্চিত্র উৎসবের
বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় এবং প্রভাবশালী চলচ্চিত্র উৎসব ‘কান চলচ্চিত্র উৎসব’। ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলের শহর কানে বসেছে ২০২৪-এর ৭৭তম আসর। মঙ্গলবার ১৪ মে বাংলাদেশ সময় রাত সোয়া ১১টা আসরের পর্দা উঠছে। খবর : কান অফিসিয়াল  ফ্রান্সের কান সৈকতে আবারও বসছে সিনেমার বর্ণিল আয়োজন ‘কান চলচ্চিত্র উৎসব’। ৭৭তম এই আসর ১৪ থেকে ২৫ মে ১২ দিনব্যাপী চলবে। বরাবরের মতো এবারও লালগালিচায় আলো ছড়াবেন হলিউড-বলিউডসহ বিশ্বের নামিদামি তারকারা। ‘ফুরিওসা : অ্যা ম্যাড ম্যাক্স সাগা’ সিনেমার উদ্বোধনী প্রদর্শনী থাকছেন ক্রিস হেমসওয়ার্থ।  উৎসবের উদ্বোধনী সন্ধ্যায় হলিউড তারকা মেরিল স্ট্রিপের হাতে তুলে দেওয়া হবে ‘পাম ডি অর’ সম্মাননা।  এ বছর কান উৎসবে দুই হাজারের বেশি সিনেমা জমা পড়েছে। সেখান থেকে মূল প্রতিযোগিতা স্বর্ণপাম বিভাগে জায়গা করে নিয়েছে ১৯টি চলচ্চিত্র। এবারের উৎসবে আরও কিছু উল্লেখযোগ্য মুহূর্তের সাক্ষী হবেন সিনেপ্রেমীরা। এবারের উৎসবের প্রতিযোগিতা বিভাগের প্রধান জুরি মার্কিন অভিনেত্রী ও পরিচালক গ্রেটা গারউইগ। অন্যরা হলেন মার্কিন অভিনেত্রী লিলি গ্ল্যাডস্টোন, ফরাসি অভিনেত্রী ইভা গ্রিন, ফরাসি অভিনেত্রী ওমর সাই, টার্কিশ চিত্রনাট্যকার ও আলোকচিত্রী ইবরু সেলান, লেবাননের অভিনেত্রী ও নির্মাতা নাদিন লাবাকি, স্প্যানিশ নির্মাতা হুয়ান আন্তোনিও বায়োনা, ইতালীয় অভিনেতা পিয়েফ্রানসেস্কো ফ্যাভিনো ও জাপানি নির্মাতা কোরে-এডা হিরোকাজু। অন্যদিকে এবার উৎসবের ক্রিটিকস উইক শাখার প্রধান জুরির দায়িত্ব পালন করছেন স্প্যানিশ পরিচালক রুদ্রিগো সরোগয়েন।  
১৪ মে, ২০২৪

রাজশাহীতে আম পাড়া উৎসব শুরু বুধবার
নিরাপদ ও বিষমুক্ত আম বাজারজাতকরণে ‘ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার’ প্রকাশ করেছে রাজশাহীর জেলা প্রশাসন। আগামী বুধবার গুঁটি জাতের আম নামানোর মধ্য দিয়ে রাজশাহীতে আম পাড়ার উৎসব শুরু হচ্ছে। গতকাল জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে জেলার সংশ্লিষ্ট অংশীজন নিয়ে আম পরিবহন, বাজারজাতকরণ ও সংগ্রহবিষয়ক মতবিনিময় সভায় রাজশাহীর কোন আম কবে নামানো যাবে, সেই তারিখ ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ। ডিসি বলেন, প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী, আম পরিপক্ব হওয়া সাপেক্ষে ১৫ মে থেকে নামানো যাবে গুঁটি জাতের আম। গোপালভোগ, লক্ষণভোগ, লকনা ও রানীপছন্দ আম ২৫ মে থেকে; হিমসাগর ও খিরসাপাত ৩০ মে; ল্যাংড়া ও ব্যানানা আম ১০ জুন; আম্রপালি ও ফজলি আম ১৫ জুন নামানোর সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। আর আশ্বিনা ১০ জুলাই ও গৌড়মতি ১৫ জুলাই থেকে নামাতে পারবেন বাগান মালিকরা। সবার শেষে ২০ আগস্ট থেকে বাজারে পাওয়া যাবে ইলামতি জাতের আম। ডিসি শামীম আহমেদ বলেন, নির্ধারিত সময়ের আগে কোনো কৃষক বা ব্যবসায়ী অপরিপক্ব আম নামালে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাটগুলোয় সার্বক্ষণিক পুলিশ থাকবে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সহকারী কমিশনাররাও বিষয়টি দেখভাল করবেন।
১৩ মে, ২০২৪

১২তম হিফযুল কোরআন অ্যাওয়ার্ড ও কোরআন উৎসব অনুষ্ঠিত
অনুষ্ঠিত হয়েছে ১২তম হিফযুল কোরআন অ্যাওয়ার্ড ও কোরআন উৎসব। রোববার (১২ মে) রাজধানীর বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটিতে আয়োজিত হয় এই অনুষ্ঠান।  অনুষ্ঠানে তানযীমুল উম্মাহ ফাউন্ডেশনের পরিচালিত শাখাসমূহের ১ হাজার ২৩৪ জন হাফেজ শিক্ষার্থীকে ক্রেস্ট, সনদ, পাগড়ি/স্কার্ফ, অ্যাওয়ার্ড ব্যাগ প্রদান করা হয়। পাশাপাশি সম্মাননা প্রদান করা হয় তাদের পিতা-মাতাকেও।  জাতীয় ও অন্তর্জাতিক পর্যায়ের ইসলামী চিন্তাবিদ, কোরআন গবেষক, হাজার হাজার হাফেজের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে তানযীমুল উম্মাহর এই বর্ণিল আয়োজন। সকাল থেকেই অভিভাবকদের হাত ধরে অনুষ্ঠানস্থলে আসতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের বেশিরভাগই ছিলেন পবিত্র কোরআনের হাফেজ। আইসিসিবি হলরুমের দৃষ্টিনন্দন শোভাবর্ধন করেছে কোরআন-হাদিসের বাণীতে রং-বেরঙের অত্যাধুনিক ডিজাইনের নানা ব্যানার-ফেস্টুন। শুরু থেকেই বিভিন্ন সুরে সুললিত কণ্ঠে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের সুরের মূর্ছনায় মুখরিত হয়ে ওঠে অনুষ্ঠানস্থল; শিক্ষার্থীদের কণ্ঠে মনোমুগ্ধকর হামদ-নাত ও ইসলামি সংগীত, বক্তৃতা, আলোচনা, কবিতা আবৃত্তিসহ চমৎকার পরিবেশনায় সকলের মন কাড়ে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অতিরিক্ত সচিব মো. হাবিবুর রহমান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর হাফেজ ড. এ. বি. এম হিযবুল্লাহ, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ফাদিলাতুশ শায়খ সাইয়েদ কামাল উদ্দীন জাফরী। 
১২ মে, ২০২৪

যা দেখি যা শুনি / সিডনির বৈশাখী উৎসব
আজ অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরে বৈশাখী মেলা। এই মেলা প্রায় তিন দশক আগে শুরু হয়েছিল। প্রতি বছর বঙ্গবন্ধু কাউন্সিল অস্ট্রেলিয়া মেলার আয়োজন করে থাকে। মেলার দুদিন আগে আমি সিডনিতে এসেছি। দুদিন আগে থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আয়োজকদের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছিল, বৃষ্টি অনুষ্ঠান আয়োজনে কোনো বাধা হবে না। সিডনি প্রবাসী বাঙালিদের কাছে বৈশাখী মেলার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বৈশাখী মেলার আয়োজন এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। গুরু সদয় দত্ত (১০ মে ১৮৮২-২৫ জুন ১৯৪১) ছিলেন বাঙালি জাতিসত্তা নির্মাণের অনন্য সাধারণ পথিকৃৎ। তিনি ব্রতচারী আন্দোলনের প্রবক্তা। ব্রতচারী গুরু সদয় দত্ত প্রায় ১০০ বছর আগে বিশ্বমানব হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং বলে দিয়েছিলেন, বিশ্বমানব হতে হলে ঠিক কী করতে হবে। বিশ্বমানব হবি যদি কায়মনোবাক্যে বাঙালি হ। তাই ‘বিশ্বমানব হবি যদি কায়মনে বাঙালি হ’ কথাটা আমাদের মননে আর মগজে দারুণ নাড়া দিয়েছে। বাঙালিদের বিদেশযাত্রার ইতিহাস অনেক লড়াই ও অনেক সংগ্রামের। উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশি অস্ট্রেলিয়ান (বাংলা: অস্ট্রেলীয় বাংলাদেশি) বলতে অস্ট্রেলীয় নাগরিক বা বাসিন্দাদের বোঝায়, যাদের পূর্ণ বা আংশিক বাংলাদেশি ঐতিহ্য রয়েছে বা যারা বাংলাদেশ থেকে দেশত্যাগ (?) করে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করে। ২০২১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশে জন্মগ্রহণকারী প্রায় ৫১ হাজার ৪৯১ জন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করে। উপরন্তু, সেখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান (অস্ট্রেলিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন); কিন্তু তাদের সংখ্যা অনিশ্চিত। বৃহত্তম বাংলাদেশি সম্প্রদায় প্রধানত নিউ সাউথ ওয়েলস এবং ভিক্টোরিয়া রাজ্যে উপস্থিত রয়েছে, যেখানে সিডনি এবং মেলবোর্ন শহরে বিশাল ঘনত্ব রয়েছে। আবার ব্রিটেনে তিন পুরুষের বাঙালির সংখ্যা বাড়তে বাড়তে অনেক হয়েছে। যুক্তরাজ্যের ২০০১ সালের আদমশুমারির তথ্যমতে, প্রায় ৩ লাখ ব্রিটিশ-বাংলাদেশি (৫,০০,০০০ জন ২০০৯ আদমশুমারি) পূর্ব লন্ডনে (টাওয়ার হ্যামলেট ও নিউহ্যাম) বসবাস করে। যাদের বেশিরভাগই সিলেট বিভাগের অধিবাসী। তথ্যমতে, ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের মধ্যে ৯৫ শতাংশই সিলেটের অধিবাসী। শুধু যুক্তরাজ্য এবং মধ্যপ্রাচ্য নয়, যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষ করে নিউইয়র্ক শহর, নিউজার্সি ও অন্যান্য প্রদেশে বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি বসবাস করে। এ ছাড়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান এবং পশ্চিমা দেশগুলো যেমন—ইতালি, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ায়ও প্রচুর প্রবাসী বাংলাদেশি বসবাস করে। বিগত দুই দশকে প্রবাসী বাঙালিরা বিশ্ব বাঙালিয়ানা নিয়ে কর্মকাণ্ড বিস্তৃত করেছে। শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউরোপীয় ইউনিয়ন এজেন্সি ফর অ্যাসাইলাম (ইইউএএ) প্রকাশিত এক পরিসংখ্যানে নতুন এই তথ্য উঠে এসেছে। গত বছর বাংলাদেশিদের আশ্রয় আবেদনের প্রধান গন্তব্য ছিল ইতালি। ইইউ প্লাসে আশ্রয় চেয়ে করা বাংলাদেশিদের আবেদনের ৫৮ শতাংশই ইতালিতে থেকে করেছেন। অর্থাৎ ২০২৩ সালে ২৩ হাজার ৪৪৮ জন বাংলাদেশি ইতালিতে আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। এর পরই বাংলাদেশিদের সবচেয়ে বেশি আশ্রয় আবেদন জমা পড়েছে ফ্রান্স ও রোমানিয়ায়। ইইউতে বাংলাদেশিদের মোট আশ্রয় আবেদনের ২৫ শতাংশই ফ্রান্সে জমা দিয়েছেন। গত বছর ১০ হাজার ২১৫ জন বাংলাদেশি ফ্রান্সে আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেছেন। একই সময়ে রোমানিয়ায় আশ্রয় চেয়েছেন ২ হাজার ৮২২ জন বাংলাদেশি। এরপর অস্ট্রিয়ায় ১ হাজার ৪০৯, গ্রিসে ৬৪০, আয়ারল্যান্ডে ৪৪৫, স্পেনে ৩৮০, সাইপ্রাসে ৩১৪, জার্মানিতে ১৬৪, মাল্টায় ১১৮ জন ও অন্যান্য দেশে ৩৭৭ জন বাংলাদেশি আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেছেন। পরিসংখ্যান যা বলে তাতে আমরা নিশ্চিত হতে পারি, বাংলাদেশিদের বিদেশ যাওয়ার আগ্রহ বেড়েছে। আগ্রহ বেড়েছে জীবিকার তাগিদে, প্রবণতা বেড়েছে উন্নত শিক্ষার আকাঙ্ক্ষায় এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে দায়ে পড়ে আসার ঘটনাও আছে। এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করা যায়, বাঙালি যখন সময়-সুযোগ পেয়েছে, তখন সংস্কৃতির কথা জানান দিয়েছে। তাই এখন পৃথিবীর দেশে দেশে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বর্ষবরণ উৎসব খুবই আন্তরিকতার সঙ্গে করছে। অনলাইন পত্রিকায় দেখলাম, সুইজারল্যান্ডের অলিম্পিক শহর লুজানে যথাযোগ্য মর্যাদায় বর্ষবরণ উদযাপিত হয়েছে। লুজান শহরে বসবাসকারী বাংলার সংস্কৃতিপ্রেমী কিছু প্রবাসী বাঙালির উদ্যোগে দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। বাঙালির ঐতিহ্যবাহী রং-বেরঙের পোশাকে ও নানা ধরনের ব্যানার এবং হরেক রকমের ফেস্টুন হাতে বাজনার তালে তালে বিপুলসংখ্যক বাঙালি ও বিভিন্ন দেশের নারী-পুরুষ, কিশোর-কিশোরী ও শিশুরা অংশগ্রহণ করে মঙ্গল শোভাযাত্রায়। ২৭ এপ্রিল এথেন্সে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের আয়োজনে দূতাবাস প্রাঙ্গণে মঙ্গল শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বাংলাদেশি খাবার উৎসবের সঙ্গে দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা উদযাপন করা হয়। বাংলাদেশি বন্ধুদের আমন্ত্রণে অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজন গ্রিক নাগরিক উপস্থিত হন। এর মধ্যে দুজন বাঙালি সাজে সজ্জিত হয়ে আসেন। তারা পাঞ্জাবি ও হাতে মেহেদি দিয়ে অনুষ্ঠানে হাজির হন। আলাপের শুরুতে ‘কেমন আছেন ভাই’ বলে বাংলা ভাষায় সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। তারা বলেন, বাংলার সংস্কৃতি তাদের খুব ভালো লাগে। তাই এক বন্ধুর আমন্ত্রণে এই অনুষ্ঠানে বাঙালির সাজে এসেছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর উৎসবকে দেখেছেন এভাবে: ‘উৎসব একলার নহে। মিলনের মধ্যেই সত্যের প্রকাশ—সেই মিলনের মধ্যেই সত্যকে অনুভব করা উৎসবের সম্পূর্ণতা। একলার মধ্যে যাহা ধ্যানযোগে বুঝিবার চেষ্টা করি, নিখিলের মধ্যে তাহাই প্রত্যক্ষ করিলে তবেই আমাদের উপলব্ধি সম্পূর্ণ হয়।... মিলনের মধ্যে যে সত্য, তাহা কেবল বিজ্ঞান নহে, তাহা আনন্দ, তাহা রসস্বরূপ, তাহা প্রেম। তাহা আংশিক নহে, তাহা সমগ্র; কারণ, তাহা কেবল বুদ্ধিকে নহে, তাহা হৃদয়কেও পূর্ণ করে। যিনি নানা স্থান হইতে আমাদের সকলকে একের দিকে আকর্ষণ করিতেছেন, যাঁহার সম্মুখে, যাঁহার দক্ষিণ করতলছায়ায় আমরা সকলে মুখোমুখি করিয়া বসিয়া আছি, তিনি নীরস সত্য নহেন, তিনি প্রেম। এই প্রেমই উৎসবের দেবতা—মিলনই তাঁহার সজীব সচেতন মন্দির।’ ১৯৬৭ সালের আগে ঘটা করে পহেলা বৈশাখ পালনের রীতি তেমন একটা জনপ্রিয় হয়নি। ষাটের দশকে বাঙালি জাতিসত্তা নির্মাণের চূড়ান্ত সময়ে বর্ষবরণ ও রবীন্দ্রসংগীত চর্চার আন্দোলনে ১৯৬৭ সালে সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট রমনা পার্কে অশ্বত্থ গাছের নিচে প্রথম বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুরু করে। এটাকে কেন্দ্র করে মেলাও শুরু হয় কিছুদিন পর। বাঙালির সর্বজনীন লোক-উৎসব পহেলা বৈশাখ। সম্রাট আকবরের শাসনামলে বাংলা সনের যাত্রা শুরু হয়। সম্রাট আকবরের নির্দেশে রাজ-জ্যোতিষী ও পণ্ডিত আমির ফতেহ উল্লাহ সিরাজী বাংলা সন তৈরিতে গবেষণা শুরু করেন। অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন, সম্রাট আকবরের হাতেই বাংলা সনের গণনা শুরু। কালের পরিক্রমায় এই বাংলা বছর গণনায় এসেছে নানা পরিবর্তন। শুরুতে বাংলা নববর্ষের প্রথম মাস ছিল অগ্রহায়ণ। পরবর্তী সময়ে বাংলা সনের দিন ও তারিখ নির্ধারণ নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। ভাষাতত্ত্ববিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বঙ্গাব্দের বেশ কিছু সংস্কার করেন, গণনার সুবিধার্থে বৈশাখ থেকে ভাদ্র মাস পর্যন্ত দিনের সংখ্যা প্রতি মাসে ৩১ এবং আশ্বিন থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত ৩০ দিন গণনার বিধান চালু হয়। পহেলা বৈশাখ ও বৈশাখী মেলা ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে বাঙালির প্রাণের উৎসব ও প্রাণের মেলা হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছে দীর্ঘদিন। নানা প্রতিকূলতায়ও বাঙালিরা এই মেলা উদযাপন করেছে, আনন্দ-উল্লাস করে নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়েছি। কিন্তু এখনো কিছু মানুষ বৈশাখী মেলাকে ধর্মীয় প্রেক্ষাপটে বিচার করতে চান। এ বিচার-বিবেচনা শুধু বাংলাদেশ রাষ্ট্র হওয়ার পরে নয়, আগেও করা হয়েছিল। কিন্তু প্রাণের উৎসব থেমে থাকেনি। কারও ‘হিন্দুয়ানি’ অনুষ্ঠান বলায় পহেলা বৈশাখ উদযাপন বন্ধ হয়ে যায়নি। এ প্রসঙ্গে আহমদ রফিকের ‘বাঙালির শ্রেষ্ঠ সেক্যুলার জাতীয় উৎসব বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধের কিছু কথা টেনে আনা যেতে পারে। তিনি লিখেছেন: “আমরা নির্দ্বিধায় বলি বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠান বাঙালির শ্রেষ্ঠ বা সর্বোত্তম জাতীয় উৎসব। একে বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য থেকে বিচ্ছিন্ন করা যাবে না। তা বাংলাদেশের রাজনীতিতে, এর শাসনযন্ত্রে যত পরিবর্তনই ঘটুক। শুধু দই-মিষ্টি খাইয়ে একে ধরে রাখা যাবে না। রাখতে হবে হৃদয় ও মননের আন্তরিকতায়, ঐতিহ্য রক্ষার দায়িত্ব পালনে। বাংলা নববর্ষ তথা পহেলা বৈশাখকে আমি এভাবেই দেখি। দেখি যুক্তিতে, আবেগে গ্রাম-নগরের একাত্মতায়, ঐতিহ্যিক সেতুবন্ধে। ধর্মীয় হেফাজতের নামে এখানে কোনো বাধা-নিষেধ আরোপ কেউ মানবে না। তেমন চেষ্টা তো বিশ শতকের প্রথমার্ধে ধর্মীয় অজুহাতে, পরে রাজনৈতিক উন্মাদনায় অনেক চলেছে। কিন্তু তাতে বড় একটা কাজ হয়নি, স্থায়ী সুফল ফলেনি। ১৯৬৭ সালের জুন মাসে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সংগীত নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। এর আগে ১৯৬৫ সালের পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের সময় পাকিস্তান রেডিও-টেলিভিশনে রবীন্দ্রসংগীত প্রচার বন্ধ থাকে। বাজেট অধিবেশনে রাজশাহী থেকে নির্বাচিত বিরোধীদলীয় সদস্য মজিবর রহমান চৌধুরীর এক প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী খাজা শাহাবুদ্দিন মন্তব্য করেন যে, পাকিস্তানি আদর্শের সঙ্গে না মিললে রেডিও-টেলিভিশনে রবীন্দ্রসংগীত প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হবে। খান এ সবুর পহেলা বৈশাখ উদযাপন এবং রবীন্দ্রসংগীতকে হিন্দু সংস্কৃতির অংশ বলে মন্তব্য করেন। জাতীয় পরিষদের এই বিতর্কের সংবাদ ঢাকার সংবাদপত্রে (দৈনিক পাকিস্তান ও অবজারভার, ২৩-২৮ জুন ১৯৬৭ দ্রষ্টব্য) প্রকাশিত হলে বাঙালি বুদ্ধিজীবীরাও বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৬৭ সালের ২৫ জুন ১৮ জন বুদ্ধিজীবী সরকারি বক্তব্যের সমালোচনা করে এক বিবৃতি দেন: সরকারি মাধ্যম হতে রবীন্দ্রসংগীতের প্রচার হ্রাস ও বর্জনের সিদ্ধান্ত প্রকাশ করা হইয়াছে। এই সিদ্ধান্ত আমরা অত্যন্ত দুঃখজনক বলে মনে করি। বঙ্গবন্ধু ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি এক ভাষণে বলেন, ‘জ্ঞান আহরণের পথে এই সরকার যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করিয়াছে, যার নজির বিশ্বে বিরল। আমরা মীর্জা গালিব, সক্রেটিস, শেক্সপিয়র, অ্যারিস্টটল, ডানতে, লেনিন, মাও সে তুং পড়ি জ্ঞান আহরণের জন্য, আর দেউলিয়া সরকার আমাদের পাঠ নিষিদ্ধ করিয়া দিয়াছে রবীন্দ্রনাথের লেখা, যিনি একজন বাঙালি কবি এবং বাংলায় কবিতা লিখিয়া যিনি বিশ্বকবি হইয়াছেন। আমরা এই ব্যবস্থা মানি না—আমরা রবীন্দ্রনাথ পড়িবই, আমরা রবীন্দ্রসংগীত গাহিবই এবং রবীন্দ্রসংগীত এই দেশে গাওয়া হইবেই। আমি রেডিও এবং টেলিভিশনে রবীন্দ্রসংগীতের ওপর হইতে সর্বপ্রকার বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করিয়া অবিলম্বে পর্যাপ্ত পরিমাণে রবীন্দ্রসংগীত প্রচারের দাবি জানাই।” বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখ বরাবরই বাঙালি চৈতন্যে আনন্দের উৎস হয়ে থাকবে উৎসবে-অনুষ্ঠানে, উদযাপনে। ঢাকার বৈশাখী মেলার প্রাণকেন্দ্র ধরা যেতে পারে রমনার বটমূলকে। রমনার বটমূলকে কেন্দ্র করে শাহবাগ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, দোয়েল চত্বর, টিএসসি এলাকায় দেশি খাবার ও পণ্যের পসরা সাজায় দোকানিরা। এর বাইরে ঢাকার নিকটবর্তী শুভাঢ্যার বৈশাখী মেলা, সোলারটেক মেলা, শ্যামসিদ্ধি মেলা, ভাগ্যকুল মেলা, টঙ্গীর স্নানকাটা মেলা, মিরপুর দিগাঁও মেলা, রাজনগর মেলা ও কুকুটিয়া মেলা উল্লেখযোগ্য। বৈশাখী মেলা শুধু ‘বৈশাখী মেলা’ নামেই নয়, আরও অনেক নামে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এ মেলা কোথাও ‘বর্ষবরণ মেলা’, কোথাও ‘নববর্ষ মেলা’ আবার কোথাও ‘বান্নি মেলা’ নামে পরিচিত। বিভিন্ন জেলা শহরে ও গ্রামে বৈশাখী মেলার দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে। এসব মেলা বহু আগে থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত এসে পৌঁছেছে। কোন স্থানের বৈশাখী মেলা কবে থেকে শুরু হয়েছে, এর স্বচ্ছ ইতিহাস না থাকলেও ধারণা করা হয়, কোনো কোনো বৈশাখী মেলার বয়স ১০০ বছর বা তারও বেশি। বৈশাখ উপলক্ষে আয়োজিত সোনারগাঁয়ের ‘বউমেলা’র কথা এ প্রসঙ্গে বলা যেতে পারে। এ মেলাকে স্থানীয়রা ‘বটতলার মেলা’ বলে আখ্যায়িত করে। এলাকাবাসীর ধারণা, এই মেলা এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতি বছর পহেলা বৈশাখ এই মেলা শুরু হয়ে ৫ বৈশাখ শেষ হয়। আবার সোনারগাঁ থানার পেরাব গ্রামের পাশে অনুষ্ঠিত হয় ‘ঘোড়ামেলা’। এই মেলার একটি ব্যতিক্রম দিক হচ্ছে, মেলা চলাকালে নৌকার ভেতর খিচুড়ি রান্না করা হয়। তারপর কলাপাতায় সেই খিচুড়ি সবাইকে পরিবেশন করা হয়। দিনাজপুরের ফুলতলী, রানীশংকৈল, রাজশাহীর শিবতলীর বৈশাখী মেলাও বর্তমানে বিরাট উৎসবের রূপ নিয়েছে। কুমিল্লার নাঙ্গলকোট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, মহেশপুর, সাভার, রংপুরের পায়রাবন্দ, দিনাজপুরের ফুলছড়িঘাট এলাকা, মহাস্থানগড়, মণিপুর, বরিশালের ব্যাসকাঠি-বাটনাতলা, গোপালগঞ্জ, খুলনার সাতগাছি, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, চাঁদপুর, মানিকগঞ্জ, ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল অঞ্চল, সিলেটের জাফলং, মাদারীপুর, টুঙ্গিপাড়া ও মুজিবনগর এলাকায়ও ব্যাপৃত আকারে বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন জেলা ও গ্রামে অনুষ্ঠিত এসব অসংখ্য বৈশাখী মেলা মানুষকে দীর্ঘদিন ধরে বিনোদন ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি দিয়ে আসছে। দেশের বাইরে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বৃহৎ পরিসরে ‘বৈশাখী মেলা’র আয়োজন করা হয়ে থাকে। প্রতি বছর এই মেলা সিডনি অলিম্পিক পার্কে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রবাসী বাঙালিদের জন্য এই মেলা বিশেষ তাৎপর্য বহন এবং আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি করে। ইংল্যান্ডের লন্ডনেও বৈশাখ উপলক্ষে প্রবাসী বাঙালিদের আয়োজনে ‘পথ উৎসব’ বা ‘স্ট্রিট ফেস্টিভ্যাল’ করা হয়। এই উৎসব ইউরোপে অনুষ্ঠিত সর্ববৃহৎ এশীয় উৎসব বলা হয়ে থাকে। গ্রামীণ সমাজ থেকে বৈশাখী মেলা শুরু হলেও বর্তমানে বৈশাখী মেলার উপকরণ ও উদযাপনে ভিন্নতা এসেছে। নাগরিক জীবন পহেলা বৈশাখে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তবে নতুন মাত্রা যোগ করতে গিয়ে আমাদের ঐতিহ্যের যাতে বিকৃত উপস্থাপন না হয়, সেদিকেও লক্ষ্য রাখা বাঞ্ছনীয়। বর্তমানে যারা পঞ্চাশোর্ধ্ব জীবনযাপন করছেন তারা বৈশাখী মেলার প্রকৃত রূপ দেখতে পেয়েছেন। শুধু তাই নয়, উৎসবের পাশাপাশি স্বৈরাচার-অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদও এসেছে পহেলা বৈশাখের আয়োজনে। ১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে বের হয় প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রা, যা ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর ইউনেস্কো এই শোভাযাত্রাকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মর্যাদা দেয়। একজন বিশিষ্ট লেখক তার বৈশাখী মেলার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে লিখেছেন: ‘গরিবরা সারা বছর এই মেলার জন্য অপেক্ষা করত। তাদের বিনোদনের প্রধান মাধ্যম ছিল এসব মেলা।... আমাদের গ্রামীণ মেলায় গান-বাজনা তুলনামূলকভাবে কম হতো। গ্রামীণ ও লোকজ সংস্কৃতির প্রদর্শনীর ব্যাপারটাই ছিল প্রধান।’ আর ঢাকার বৈশাখী মেলা সম্পর্কে একই লেখায় তিনি লিখেছেন: ‘সুদীর্ঘকাল ঢাকায় অবস্থান করার অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, বাংলা নববর্ষ ও পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে এখানে যে উৎসব অনুষ্ঠিত হয়, তার ধরন গ্রামীণ মেলা থেকে অনেকটা ভিন্ন। ঢাকায় তথা মহানগরীতে যে বৈশাখী উৎসব ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়, তাতে লোকজ সংস্কৃতির এবং শিল্পকর্মের প্রদর্শনী হলেও প্রাধান্য বিস্তার করে আছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ অন্যান্য কার্যক্রম।’ পহেলা বৈশাখ উদযাপনে আমাদের জাতীয় চেতনা ও ঐতিহ্যের সামগ্রিক প্রতিচ্ছবির দেখা মেলে। একদিকে যেমন উৎসবে মেতে ওঠে নবীন-প্রবীণ, শিশু-কিশোররা; অন্যদিকে নিজস্ব সংস্কৃতি সম্পর্কে আমাদের নতুন প্রজন্মও পরিমার্জিত ধারণা লাভ করতে পারে। এ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বাঙালির যে হাজার বছরের ঐতিহ্য, তা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ধারণ ও লালন করা সহজতর হবে। তবে বৈশাখী মেলার নামে অপসংস্কৃতি চর্চা কারোই কাম্য নয়। নববর্ষে বাড়তি একটি বোনাস ঘোষণা করেছে সরকার। এতদিন ধরে ধর্মীয় উৎসবে বছরে দুটি বোনাস দেওয়া হয়ে এলেও নতুন বোনাসকে অসাম্প্রদায়িক বোনাস হিসেবে দেখছে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দিয়ে আসা আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। ‘উৎসব ভাতা যা আছে তা ধর্মভিত্তিক। কেউ ঈদে, কেউ বৌদ্ধ পূর্ণিমায়, কেউ বড়দিনে পায়। সব ধর্মের, সব সম্প্রদায়ের মানুষ একই সময়ে কোনো ভাতা পাচ্ছে না। বাংলা নববর্ষে সবাইকে ভাতা দেওয়া হবে।’ মুসলমানরা দুই ঈদে, হিন্দুরা পূজায় এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা তাদের ধর্মীয় উৎসবে ওই ভাতা পেতেন। বৈশাখী ভাতাকে সর্বজনীন উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, পহেলা বৈশাখে গ্রামের তৈরি পণ্য বেশি কেনাবেচা হয়, এটা গ্রামীণ অর্থনীতির ওপর ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার হবে। বৈশাখী ভাতা চালু হওয়ায় বাংলা সংস্কৃতির বিকাশে সহায়ক হবে। শিকড় সংবলিত আত্মার টান, উৎসবের মুখরতায় আমাদের ঐতিহ্যের যথাযথ চর্চা ও উদযাপন হবে—এমন প্রত্যাশাটুকু থাকবে সচেতন বাঙালিদের, এটাই স্বাভাবিক। এই স্বাভাবিকত্ব বজায় রেখে জাতিগত চেতনায় ঋদ্ধ হয়ে, সম্প্রীতি-বন্ধন অটুট রেখে বাংলাদেশকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব আমাদের সবার। রবীন্দ্রনাথের ভাষায় বলা যায়: ‘সংসারে প্রতিদিন আমরা যে সত্যকে স্বার্থের বিক্ষিপ্ততায় ভুলিয়া থাকি, উৎসবের বিশেষ দিনে সেই অখণ্ড সত্যকে স্বীকার করিবার দিন—এজন্য উৎসবের মধ্যে মিলন চাই। একলার উৎসব হইলে চলে না।’ [অস্ট্রেলিয়ার সিডনি থেকে] লেখকঃ প্রকাশক ও সম্পাদক abnews24.com
১২ মে, ২০২৪

তহুরা-সাগরিকাদের গোল উৎসব
তহুরা খাতুন একাই করলেন ৭ গোল। জাতীয় দলের স্ট্রাইকারের সঙ্গে গোল উৎসবে মেতেছিলেন সাগরিকাও। চার গোল করেছেন উঠতি এ ফরোয়ার্ড। তাতে আতাউর রহমান ভূঁইয়া কলেজ স্পোর্টিং ক্লাব ১৭-০ গোলে জামালপুর কাচারিপাড়া একাদশকে উড়িয়ে দিল। কমলাপুর শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচের সপ্তম মিনিটে গোল উৎসবের সূচনা করেন স্বপ্না রানী। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে শেষ করেছেন সাগরিকা। মাঝে আরও ১৫ বার কাচারিপাড়া একাদশ জাল থেকে বল কুড়াতে হয়েছে। ম্যাচে তহুরা খাতুন ও সাগরিকার হ্যাটট্রিকের ম্যাচে জোড়া গোল করেছেন সুরভী আকন্দ প্রীতি। স্কোরশিটে নাম লেখান স্বপ্না রানী, কোহাতি কিসকু, সুরমা জান্নাত, মুনকি আক্তার।
১০ মে, ২০২৪

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈশাখী উৎসব অনুষ্ঠিত
বৈশাখী মেলা শুধু একটি সাধারণ মেলা নয়। এটি বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই ঐতিহ্যকে স্মরণে রেখে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে শনিবার (৪ মে) বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে দক্ষিণ বঙ্গের সব থেকে বড় মেলা ‘বৈশাখী উৎসব’ আয়োজিত হয়েছে।  দক্ষিণবঙ্গের সব থেকে বড় এ বৈশাখী মেলাতে দিনব্যাপী মানুষের ঢল নামে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরাসহ খুলনা অঞ্চলের সাধারণ মানুষের উপস্থিতি মেলাকে প্রাণবন্ত করে তোলে। দিনব্যাপী এ মেলাতে দর্শনার্থীদের জন্য প্রধান আকর্ষণ ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে তৈরি ২৫টি স্টল। এসব স্টলে নানা রকমের খাবার, পিঠাপুলি, পোশাক, হস্তশিল্প, সাজ সরঞ্জাম, খেলনা, কাগজের তৈরি ঘর সাজানোর জিনিসপত্র, রং-তুলির আঁকা নকশা, নানা রকমের পণ্যসামগ্রী এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসসহ শরবত, ঠান্ডা পানীয়, লাচ্ছি, কুলফির ব্যবস্থা ছিল। এ ছাড়াও নাগরদোলা এবং রাতে দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ক্লাবের অংশগ্রহণে কনসার্টের আয়োজন। সরেজমিনে দেখা যায়, মৃত্তিকা কুঠির, বাঙালিয়ানা, সৌন্দর্যে ঊর্ণিষা, খড়ের ঘরসহ বাহারি নামের স্টলগুলোর সৌন্দর্যে সকাল থেকেই খান জাহান হলের মাঠে লোকসমাগম বাড়তে থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাঠ জনসমাগমে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল বয়সের মানুষেরা উৎসবে মেতে ওঠে।  অনুভূতি জানতে চাইলে মামুনুর রশীদ নামের এক দর্শনার্থী বলেন, বৈশাখ আমাদের বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রতভাবে জড়িত। সময় পেয়েই পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছি। বাচ্চারা এখানে এসে অনেক খুশি। নাগরদোলায় উঠল, বিভিন্ন জিনিস কিনতে পেরেছি সবকিছু মিলিয়ে খুবই ভালো লাগছে। করোনা মহামারির পরে দীর্থ ৪ বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগ আয়োজিত এ মেলার আয়োজক কমিটির সদস্য জহুরুল তানভীর বলেন, ২০১৯ সালের পর আবারো খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মিলে আমরা বৈশাখী মেলার আয়োজন করেছি, যেন আমাদের পুরোনো যেই পহেলা বৈশাখের একটা আমেজ থাকত সেই আমেজটার ধারাবাহিকতা বজায় থাকে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বরাবরই বাংলা সংস্কৃতিকে প্রাধান্য দিয়ে এসব উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন করে থাকে। আমাদের এই উদযাপনে আমরা বিভিন্ন বাংলা সংস্কৃতিকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি।
০৪ মে, ২০২৪

ইতালিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের পিঠা উৎসব
বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য প্রবাসে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে ইতালির ব্রেসিয়াতে ঐতিহ্যবাহী পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার (৩ মে) দিনব্যাপী পিঠা মেলার আয়োজন করেছে ইতালির ব্রেসিয়াতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা। নতুন প্রজন্মকে বাংলা কৃষ্টি কালচারে উদ্বুদ্ধ করতে আর বিদেশিদের কাছে বাংলা সংস্কৃতি তুলে ধরতে এমন আয়োজন বলছেন আয়োজকরা। এখানে মোট জনসংখ্যা প্রায় ৫ লাখ, যার মধ্যে ৩ হাজারের মতো প্রবাসী বাংলাদেশি। প্রতি বছর ইতালিয়ানদের পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিরা নানা আয়োজনে বাংলাদেশের কৃষ্টি-কালচারকে বিদেশিদের মাঝে তুলে ধরে।  এরই ধারাবাহিকতায় এ বছর ইমরান, শাহিন ও পলাশ তিন বন্ধুর উদ্যোগে ও বাংলাদেশ কমিউনিটির আয়োজনে বিদেশিদের কাছে সাড়া সাজানো পিঠা মেলার আয়োজন করা হয়।  যেখানে বাংলাদেশিদের পাশাপাশি বিদেশিদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। এই ধরনের আয়োজনে তারা অংশগ্রহণ করতে পেরে অনেক খুশি।  অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে স্থানীয় পৌরসভার প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ফিতা কেটে মেলার উদ্বোধন করা হয়। পরে স্থানীয় নারীরা নিজ নিজ স্টল নিয়ে দেশীয় পিঠার পশরা সাজায়। যেখানে পুলি, পাটিসাপটা, তেলের পিঠা, নারকেল পিঠা, ফুল পিঠা, জামাই পিঠাসহ নানা প্রকার দেশীয় পিঠা শোভা পায়।  প্রবাসে এত সুন্দর আয়োজনে আসতে পেরে তারাও অনেক খুশি। পাশাপাশি আয়োজকদেরকেও ধন্যবাদ জানান অংশগ্রহণকারীরা।  দুপুর গড়িয়ে বিকেলের শুরুতেই স্থানীয় সকল সামাজিক, রাজনৈতিক ও আঞ্চলিক সংগঠনের নেতারাসহ হাজারও প্রবাসীর উপস্থিতিতে মেলা হয়ে ওঠে লাল সবুজের এক টুকরো বাংলাদেশ।  পিঠার পাশাপাশি আয়োজকরা নারী, পুরুষ ও নতুন প্রজন্মের শিশুদের জন্য দেশীয় খেলার আয়োজন করেন। যেখানে নতুন প্রজন্মের কোমলমতি শিশুদেরকে নিজ দেশের খেলার সঙ্গে পরিচয় হতে সাহায্য করে। এবং আয়োজকরা এ বিষয়টিকে খুব ইতিবাচকভাবে ভাবছেন। পরিশেষে মেলায় স্টল দাতাদের ও খেলায় অংশগ্রহণকারীদের মাঝে আকর্ষণীয় পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
০৪ মে, ২০২৪

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে উড়ল রং-বেরঙের ঘুড়ি
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি) হয়ে গেল ঘুড়ি উৎসব-১৪৩১। শুক্রবার (৩ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের আয়োজনে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। ‘নতুন দিনের নতুন ভোরে গাইব নতুন গান, জীর্ণতাকে দূরে ঠেলে জুড়াব আজ প্রাণ’ এই স্লোগানে দুই দিনব্যাপী বৈশাখী উৎসবের প্রথম দিনে ঘুড়ি উৎসবের সঙ্গে ছিল আরও বিভিন্ন আয়োজন। আয়োজক সূত্রে জানা যায়, পুরোনো দিনের ঐতিহ্য ধরে রাখতে এবং নতুন প্রজন্মকে এই ঘুড়ি উৎসবের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেই তাদের এই আয়োজন। বিকেল ৪টায় শুরু হওয়া এ ঘুড়ি উৎসবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি মেতে ওঠেন খুলনাবাসীরাও। বিভিন্ন আকার-আকৃতির রং-বেরঙের ঘুড়িতে ছেয়ে যায় আকাশ। তৈরি হয় মনোরম দৃশ্য। দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠ মুখর হয়ে ওঠে। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে উৎসবের আমেজ। নাগরদোলার ক্যাঁচর ক্যাঁচর শব্দ মনে করিয়ে দেয় পুরোনো গ্রামবাংলার ঐতিহ্য। দুই দিনব্যাপী আয়োজনের দ্বিতীয় দিনে আগামীকাল থাকবে বৈশাখী মেলা। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক ডিসিপ্লিন থেকে নানা রকমের খাবার, পোশাক, হস্তশিল্প, সাজ সরঞ্জাম নিয়ে থাকবে দোকান। তীব্র গরমকে মাথায় রেখে বিভিন্ন ধরনের শরবত এবং ঠান্ডা পানীয়, লাচ্ছি, কুলফির ব্যবস্থা থাকবে বলেও জানান আয়োজকরা। সবমিলিয়ে অনুষ্ঠান ঘিরে থাকবে নাচ, গানসহ নানা আয়োজন।
০৩ মে, ২০২৪

রাজশাহীতে হাসান আজিজুল হক সাহিত্য উৎসব শুরু
ভারত ও বাংলাদেশের শতাধিক কবি-সাহিত্যিকের অংশগ্রহণে রাজশাহী কলেজ মিলনায়তনে ‘হাসান আজিজুল হক সাহিত্য উৎসব- ২০২৪’ শুরু হয়েছে। শুক্রবার (৩ মে) সকালে দুই দিনব্যাপী এ উৎসবের উদ্বোধন করেন একুশে পদক জয়ী বিশিষ্ট লেখক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইবিএস শাখার বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক সনৎ কুমার সাহা। এরপর ‘লেখক’ পত্রিকার মোড়ক উন্মোচন করেন ভাষা সংগ্রামী মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জী। লেখক পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক রুহুল আমিন প্রামাণিকের সভাপতিত্বে ও লেখক পরিষদের সহ-সভাপতি আকবারুল হাসান মিল্লাতের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন লেখক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড. তসিকুল ইসলাম রাজা। এ সময় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন হাসান আজিজুল হক সাহিত্য উৎসব-২০২৪ এর সদস্য সচিব হাসনাত আমজাদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার, বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি ও প্রাক্তন সচিব কবি আসাদ মান্নান, পশ্চিমবঙ্গ বাংলা একাডেমির পুরস্কারপ্রাপ্ত বিশিষ্ট কবি মৃদুল দাশগুপ্ত, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) তরফদার মো. আক্তার জামীল। এ সময় সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, রাজশাহীর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. অলীউল আলম, রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আব্দুল খালেক, রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জুবাইদা আয়েশা সিদ্দীকা, ভাষা সংগ্রামী মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মো. আব্দুল মান্নান। উদ্বোধনী পর্ব শেষে প্রথম সেশনে কবিতা বিষয়ক আলোচনা ও কবিতা পাঠ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পোস্ট মাস্টার জেনারেল (অব.) কবি শফিকুল আলম শফিক। এ পর্বে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন মোহাম্মদ কামাল, মাহবুবুর রহমান বাদশাহ, মাহী ফ্লোরা, সালাম তাসির, আউয়াল আনোয়ার, শাহনাওয়াজ প্রামানিক সুমন, স ম তুহিন, মঈন ফারুক, হাবিবুল ইসলাম তোতা, রেহানা জামান, রেহানা সুলতানা শিল্পী, সিকতা কাজল, ওয়ালী উল ইসলাম, মাহফুজ মুজাহিদ, শামীমা নাইস, নাদিম সিনা বাসেত হোসেন প্রামাণিক, সাফওয়ান আমিন, নুরজাহান রহমান নীরা, লোকমান হোসেন। দ্বিতীয় সেশনে রজনীকান্ত সেনকে নিয়ে আলোচনা ও গান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক প্রফেসর ড. মুহম্মদ আব্দুল জলিল। তৃতীয় সেশনে কবিতা আবৃত্তি অনুষ্ঠানে অংশ নেন রাজশাহী আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র ও রাজশাহী আবৃত্তি পরিষদের কবিরা। চতুর্থ সেশনে ছড়া পাঠ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিশুসাহিত্যিক জাহাঙ্গীর আলম জাহান। এ পর্বে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন সুখেন মুখোপাধ্যায়, শচীন্দ্রনাথ গাইন, আলমগীর মালেক আজিজ রাহমান, এস এম খলিল বাবু, চন্দ্রশীলা ছন্দা মামুন সারওয়ার, মাসুম আওয়াল, কামাল মুস্তাফা, ওমর ফারুক নাজমুল, আহমেদ টিকু, কামাল খাঁ, লিয়ন আজাদ, মনিরুল ইসলাম মনি কাবেরী সাহা, অরুণ শীল, উৎপলকান্তি বড়ুয়া, সোহেল মল্লিক ও আবু জাফর দিলু। পঞ্চম সেশনে ‌চলচ্চিত্র নির্মাতা ও নাট্যজন আহসান কবীর লিটন নির্মিত হাসান আজিজুল হকের জীবন নির্ভর প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘গল্পলোকের চিত্রকর’ প্রদর্শিত হয়েছে। আয়োজকরা জানান, দু’দিনব্যাপী এ উৎসব শেষ হবে শনিবার (৪ মে)। সমাপনী অনুষ্ঠানের এই উৎসবে ছয়জনকে ‘হাসান আজিজুল হক সাহিত্য উৎসব-২০২৪’ পদক প্রদান করা হবে।  পদকপ্রাপ্ত গুণিজনরা হলেন, কবি জুলফিকার মতিন (কবিতা), আখতার হুসেন (শিশুসাহিত্য), অধ্যাপক গোলাম কবির (প্রবন্ধ সাহিত্য), ড. কানাইলাল রায় (গবেষণা), ফেরদৌস হাসান (কথাসাহিত্য) ও রাশেদা খালেক (ভ্রমণ সাহিত্য)।
০৩ মে, ২০২৪

গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু ধানের ফসল কর্তন উৎসব
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বঙ্গবন্ধু ধান-১০০ এর ফসল কর্তন উৎসব ও মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় সদর উপজেলার হরিদাসপুর ইউনিয়নের আড়পাড়া গ্রামে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ে ফসল কর্তন উৎসব ও মাঠ দিবসের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপপরিচালক সঞ্জয় কুমার কুন্ডু। ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান ড. মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সৃজন চন্দ্র দাসের সঞ্চালনায় সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাফরোজা আক্তার, কৃষক সায়াদ উদ্দিন প্রমুখ। আড়পাড়া গ্রামের কৃষক সায়দ উদ্দিনের জমিতে উৎপাদিত বঙ্গবন্ধু ধান-১০০ কেটে ফসল কর্তন উৎসব ও মাঠ দিবস উদযাপন করা হয়। প্রধান অতিথি সঞ্জয় কুমার কুন্ডু বলেন, জিংক ও পুষ্টি সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধু ধান-১০০ প্রতি হেক্টরে আড়পাড়া গ্রামের জমিতে ৭.৮১ টন ফলন দিয়েছে। গোপালগঞ্জের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এস এম আশিক ইকবাল বলেন, মাটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে সুষম মাত্রায় সার ব্যবহার করলে সার কম প্রয়োজন হয় এবং ফসলের উৎপাদনও ভলো হয়। অন্যদিকে মাটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করে আন্দাজ করেবেশি মাত্রায় রাসায়নিক সার ব্যবহার করলে ফসলের উৎপাদন যেমন ব্যাহত হয় তেমনই ধীরে ধীরে মাটির উর্বরতা কমে গিয়ে উৎপাদন ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। এত কৃষকের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। তাই জমির মাটি পরীক্ষা করে সুষম মাত্রায় সার ব্যবহারের আবশ্যকতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট, গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে কৃষকদের এ ধরনের সহায়তা বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে। প্রদর্শনীর কৃষক মো. রবিউল ইসলাম বলেন, আমি পূর্বে অতিরিক্ত সার ব্যবহার করে যে ফলন পেয়েছি এবং এবার মৃত্তিকা বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীদের পরামর্শে তাদের দেওয়া কম পরিমাণের সার ব্যবহার করে বেশি ফলন পেয়েছি। মাঠ দিবসে অংশে নেওয়া আরেক কৃষক গোলাম কিবরিয়া বলেন, তিনি অতিরিক্ত মাত্রায় সার ব্যবহার করে তার ফসলের অনেক ক্ষতি হয়েছে, অনেক জায়গায় তার জমির ধান পুড়ে গেছে আবার অনেক জায়গায় ধান চিটা হয়ে গেছে। মৃত্তিকা বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে অল্প সার প্রয়োগে প্রদর্শনী কৃষকের ধান অনেক ভালো হয়েছে। সার কম ব্যবহার করায় তার খরচও অনেক কমে গেছে।
২৯ এপ্রিল, ২০২৪
X