কিশোর গ্যাংবিরোধী র‌্যালিতে গ্যাং লিডার মিজান
রাজধানীর ডেমরায় কিশোর গ্যাং প্রতিরোধে পুলিশ ও এলাকাবাসীর সমন্বয়ে সচেতনতামূলক র‌্যালিতে সামনের সারিতে গ্যাং লিডার মিজানুর রহমান মিজানকে দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিষয়টি ভাইরাল হলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে একাধিক এলাকাবাসীর অভিযোগ, এসব নেতা পুলিশের সঙ্গে সামনের সারিতে থাকলে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা উৎসাহ পাবে এবং আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে পড়বে। সাধারণ মানুষের ধারণা এসব কিশোর গ্যাং পুলিশের ছত্রছায়ায় চলছে। একটা সময়ে এদের অপরাধ প্রবণতা কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। জানা গেছে, গ্যাং লিডার কিশোরদের ব্যবহার করে ডিএসসিসির ৬৫ নং ওয়ার্ডে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে। এ ছাড়া কয়েকদিন আগে মনিরুজ্জামান মনির মাস্টারের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে আহত করে। এ সময় তার অফিসে থাকা ৫০ লাখ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেন ডেমরা থানায়। স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ মশিউর রহমান মোল্লা সজলের নাম ব্যবহার করে এলাকায় বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা বলেন, মিজান ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাতারাতি টাকার কুমির বনে গেছে। তার বিরুদ্ধে এলাকার মানুষ ভয়ে মুখ খুলতে সাহস করে না। তার অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। এ বিষয়ে অভিযুক্ত কিশোর গ্যাং লিডার মিজানুর রহমান মিজান দৈনিক কালবেলাকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ থাকতেই পারে কারণ আমি রাজনীতি করি। এখানে অনেক গ্রুপিং থাকে, অপর পক্ষের লোকজন আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাবে এটা স্বাভাবিক বিষয়। তবে আমি কিশোর গ্যাংয়ের লিডার এ কথাটা একেবারেই ঠিক না। ডেমরা থানার ওসি মো. জহিরুল ইসলাম দৈনিক কালবেলাকে বলেন, আসলে নেতাদের সঙ্গে অনেক ধরনের লোকই তো র‌্যালির সামনে চলে আসে এ সময় আমরা তো কাউকে মানা করতে পারি না। এ ছাড়া অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আমরা চিনি না। সামনের দিকে এসব বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। উল্লেখ্য, বুধবার (১৪ মে) ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মো. ইকবাল হুসাইনের নির্দেশনা ও অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (ডেমরা জোন ও ক্রাইম) মাসুদুর রহমান মনিরের নেতৃত্বে কোনাপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির আয়োজনে কিশোর গ্যাং প্রতিরোধে একটি র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিনের কার্যক্রমের বিভিন্ন ছবি ডেমরা থানা প্রশাসন এবং গ্যাং লিডার মিজানের ফেসবুক পেজে আপলোড করে। ছবিতে ঢাকা ওয়ারী জোনের পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সামনের সারিতে ব্যানার হাতে পুলিশের কিশোর গ্যাং প্রতিরোধ র‌্যালিতে অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে।
১৭ মে, ২০২৪

চিত্রা নদীতে গোসলে নেমে কিশোর নিখোঁজ
নড়াইলে চিত্রা নদীতে গোসল করতে নেমে রায়হান শিকদার নামে এক কিশোর নিখোঁজ হয়েছেন। শনিবার (১১ মে) দুপুরে দিকে সদর উপজেলার ধোন্দায় এ ঘটনা ঘটে। নিখোঁজ রায়হান শিকদার একই উপজেলার নাকশী গ্রামের সাইফুল শিকদারের ছেলে। নিখোঁজের মামা মো. মামুন বলেন, শনিবার দুপুরের দিকে মাদ্রাসা থেকে মামা বাড়ি ধোন্দায় বেড়াতে এসেছিল রায়হান। খেলাধুলা পছন্দ করায় আমার গেঞ্জি পরে স্থানীয় তরুণদের সঙ্গে ফুটবল খেলতে নামে। খেলা শেষে রায়হানসহ তারা চিত্রা নদীতে গোসল করতে যায়। তবে সে ভালো সাঁতার জানত না। সে একটি কলা গাছের অংশ বুকে নিয়ে ভেসে ভেসে গোসল করছিল। হঠাৎ তার সঙ্গে থাকা তরুণরা দেখতে পায় রায়হান তাদের আশপাশে নাই। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করলেও তার কোনো সন্ধান মেলেনি। পরে ফায়ার সার্ভিসকে জানানো হয়। নড়াইল ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাস্টার মাসুদ রানা কালবেলাকে বলেন, খুলনা বিভাগে একটি মাত্র ডুবুরি ইউনিট। তারা বাগেরহাটের রামপালে পশুর নদীতে ছিল। সেখান থেকে রওনা দিয়েছে। তাদের আসতে অনেক রাত হওয়ায় গতকাল উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা যায়নি। রোববার (১২ মে) সকালে উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে।
১২ মে, ২০২৪

৫০০ টাকার জন্য শিশুকে নদীতে ফেলে দিল কিশোর
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে ৫০০ টাকার জন্য মুজাহিদ নামে এক শিশুকে নদীতে ফেলে হত্যা করেছে মো. শামীম হোসেন নামে এক কিশোর। শুক্রবার (১০ মে) দুপুরে উপজেলার সানন্দবাড়ী এলাকার পাটাধোয়া পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।  মো. মুজাহিদ সানন্দবাড়ী এলাকার পাটাধোয়া গ্রামের বাবুল আক্তারের ছেলে। আর কিশোর মো. শামীম একই গ্রামের বাসিন্দা।      জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে মুজাহিদ বাড়ির কাউকে না জানিয়ে গোপনে ৫০০ টাকার নোট নিয়ে দোকানে যায় বিস্কুট কিনতে। শামিম বিষয়টি দেখে তার পিছু নেয়। একপর্যায়ে শামিম শিশু মুজাহিদের কাছ থেকে জোর করে টাকা নিয়ে নেয়। পরে প্রলোভন দেখিয়ে বাড়ির কাছে নদীর পাড়ে নিয়ে যায়। মুজাহিদ টাকা নেওয়ার কথা মাকে বলার ভয় দেখালে শামিম তাকে নদীতে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও মুজাহিদকে পায়নি তার পরিবার। অন্যদিকে ভয়ে শামিমও আত্মগোপন করে। এলাকায় জনমুখে শামিম ও মুজাহিদের নিখোঁজের খবর ছড়িয়ে পড়ে। মুজাহিদকে না পাওয়ার বিষয়ে তার স্বজনরা শামিককে সন্দেহ করে পুলিশকে জানায়। পুলিশ শুক্রবার রাত ১২টার দিকে দেওয়ানগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদের পর শনিবার (১১ মে) শামিমকে ঘটনাস্থলে নেওয়া হলে সে মুজাহিদকে নদীতে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করে। নিহত মুজাহিদের মা সেলিনা পারভীন বলেন, মুজাহিদ আমাদের একমাত্র সন্তান। তাকে হারিয়ে আমি কীভাবে বাঁচব। আমি এ অপরাধের সুবিচার চাই। দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শামিমকে শুক্রবার রাত ১২টার দিকে দেওয়ানগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে আটক করা হয়েছে। শনিবার ঘটনাস্থলে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে মুজাহিদকে নদীতে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার কথা স্বিকার করে। তিনি বলেন, মুজাহিদ ছোট ছেলে, সাঁতার জানে না সে। ধারণা করা হচ্ছে, মুজাহিদের মৃত্যু হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা হয়নি। তবে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
১২ মে, ২০২৪

নয়াপল্টনে ককটেল বিস্ফোরণে কিশোর আহত
রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণে সানি (১৬) নামে এক কিশোর আহত হয়েছে। পুলিশ তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। গতকাল শনিবার দুপুরে নয়াপল্টন একটি গাড়ির শোরুমের সামনে ওই বিস্ফোরণ ঘটে। এতে সানির দুই হাত ও দুই পা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পল্টন থানার এসআই মোহাম্মদ আলী জানান, আহত সানিকে প্রথমে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি আরও জানান, ওই কিশোর ভাঙাড়ি টোকাত। ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি শপিং ব্যাগ পায়। সেখান থেকেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে তার হাত-পায়ের তালু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া বাম হাত ও দুই পায়ে স্প্রিন্টারের আঘাত লেগেছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সানি জানায়, তার বাবার নাম টিটু মিয়া। বাড়ি চট্টগ্রামে। নয়াপল্টন ও কাকরাইল এলাকায় ভাসমান থাকে এবং ভাঙাড়ি কুড়িয়ে বিক্রি করে। নয়াপল্টনে ভাঙাড়ি টোকাতে গিয়ে একটি শপিং ব্যাগ পায়। ব্যাগে হাত ঢোকাতেই দুটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়।
১২ মে, ২০২৪

বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল খেলতে গিয়ে বজ্রপাতে নিহত কিশোর
কুমিল্লার মুরাদনগরে বাড়ির পাশের মাঠে ফুটবল খেলতে গিয়ে বজ্রপাতে সিয়াম (১৩) নামের এক কিশোর নিহত হয়েছে।  শনিবার (১১ মে) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের উত্তর ত্রিশ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত কিশোর উত্তর ত্রিশ গ্রামের মো. হুমায়ুন মিয়ার ছেলে।  জানা যায়, শনিবার সকালে বাড়ির পাশের মাঠে বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল খেলতে যায় সিয়াম। খেলা চলাকালে সাড়ে নয়টার দিকে আচমকা ঝড়বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হয়। এ সময় বজ্রপাতে সিয়াম গুরুতর আহত হয়।  সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। এ সময় কুমিল্লা মেডিকেলে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
১১ মে, ২০২৪

চট্টগ্রামে বেপরোয়া কিশোর গ্যাং
চট্টগ্রাম নগরীতে মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে কিশোর গ্যাং। তুচ্ছ ঘটনায় মারামারি, খুনাখুনি চলছেই। তাদের থেকে পুলিশ, সংবাদকর্মী বা চিকিৎসক, কেউ-ই রেহাই পাচ্ছেন না। শহরে একের পর এক অপকর্ম ঘটিয়ে চলেছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। কিছুতেই যেন থামছে না তাদের দৌরাত্ম্য। গত দুই মাসে এই বন্দর নগরীতে আলোচিত দুই খুনে অভিযোগের আঙুল কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে উঠেছে। চলতি বছর এ নিয়ে অন্তত পাঁচটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তাদের নাম জড়িয়েছে। সবশেষ গত বৃহস্পতিবার রাতে ইপিজেড থানার আকমল আলী রোডের পকেটগেট এলাকায় মেহেদী হাসান নামে এক তরুণকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে তারা। এ ঘটনায় রিফাত নামে আরেক তরুণ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার পর থেকে চট্টগ্রামের ইপিজেড-বন্দর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা নানা আলোচনা করছেন। দায়িত্বশীলদের ভাষ্য, ইপিজেডের খুনের ঘটনাটি ‘ব্যক্তিগত ইস্যুকে’ কেন্দ্র করে। কালবেলার হাতে আসা সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে আকমল আলী পকেটগেট এলাকা থেকে রিকশায় চড়ে মূল সড়কের দিকে যাচ্ছিলেন দুই তরুণ। এ সময় রেলবিট চার রাস্তার মোড় এলাকায় রিকশা থামিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায় ৮ থেকে ১০ তরুণ ও কিশোর। হামলাকারীরা মূলত রিফাতকে লক্ষ্য করে হামলা চালালেও ছুরিকাঘাতে মেহেদি নিহত হন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা কালবেলাকে বলেন, রেলবিট এলাকায় অবৈধ দোকানপাট ও ঘরবাড়ি ঘিরে বেশ কিছুদিন ধরে দুই গ্রুপের বিরোধ চলছে। সেখান থেকে চাঁদা আদায় কেন্দ্র করেই মূলত এ বিরোধ। যেখানে স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা জড়িত। খুনের ঘটনাটি ব্যক্তিগত ইস্যু কেন্দ্র করে হলেও কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা জড়িত। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমন কালবেলাকে বলেন, ইপিজেড এলাকায় এক গার্মেন্টস কর্মী খুন হয়েছেন বলে শুনেছি। কে বা কারা জড়িত, জানা নেই। প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, ব্যক্তিগত বিষয় কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে সম্প্রতি এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত খুব বেড়েছে। মাদক বাণিজ্য-চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ তারা করছে। মদদ দিচ্ছেন ৫-৬ জন। তারা কখনো আওয়ামী লীগ না করলেও দলের নাম ভাঙিয়ে এসব করছেন। অনেক চেষ্টার পরও তাদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। নগর পুলিশের উপকমিশনার (বন্দর) শাকিলা সোলতানা বলেন, সাদিক ও রমজান নামে দুই পোশাককর্মীর মধ্যে কারখানার ভেতরের ঘটনা নিয়ে ঝগড়া হয়। কারখানার কর্মী রিফাত তাদের মধ্যে মীমাংসার চেষ্টা করছিলেন। তবে রিফাত রমজানের পক্ষ নিয়েছেন বলে সন্দেহ হয় সাদিকের। এজন্য সাদিক ইপিজেড এলাকার তার বন্ধুদের ঠিক করে রিফাতকে মারধর করার জন্য। কারখানা ছুটির পর সাদিকরা রিফাতের ওপর হামলা করে। সেখানে নিরীহ মেহেদি ছুরিকাঘাতের শিকার হন। পাঁচ মাসে ৫ খুন: চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে নগরীতে দুই পক্ষের বিরোধের জের ধরে পাঁচটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে খুলশী এলাকায় সাবেক এক কাউন্সিলরের অনুসারীদের দুই পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে ছুরিকাঘাতে নিহত হন বেলাল নামে এক সিএনজিচালক। ১৬ ফেব্রুয়ারি নগরীর খাজা রোডে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বন্ধুদের হাতে খুন হন সাদ্দাত হোসেন নামে এক তরুণ। ১৪ মার্চ কালুরঘাট এলাকায় সংঘর্ষ চলাকালে খুন হন রিভারভিউ হোটেলের ব্যবস্থাপক মো. রিয়াদ। ৫ এপ্রিল আকবরশাহ এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলার হাত থেকে ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে খুন হন ডা. কোরবান আলী এবং সবশেষ ইপিজেড এলাকায় নিহত হন মেহেদি হাসান। এসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আসামিদের তালিকায় বেশিরভাগই কিশোর। মূলত ২০১৮ সালে জামাল খান এলাকায় স্কুলছাত্র আদনান ইসফারকে গুলি করে হত্যার পর নগরী কিশোর গ্যাং আলোচনায় আসে। এর পরের বছর নগর পুলিশ এদের তালিকা করে। এরপর থেকে গত ছয় বছরে ৫৪৮টি অপরাধের ঘটনায় কিশোর গ্যাং জড়িত বলে জানায় পুলিশ। এর মধ্যে খুনের ঘটনা ঘটেছে ৩৪টি। পুলিশ ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকার নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, নতুন ভবন ও স্থাপনা নির্মাণে ইট-বালু সাপ্লাই বাণিজ্যসহ বিভিন্ন কিছুর নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে এসব কিশোর অপরাধীকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন কথিত রাজনৈতিক বড় ভাই ও কয়েকজন জনপ্রতিনিধি। যেখানে সরকারি বা খাসজমি দখল করে অবৈধ প্লট-বস্তি বাণিজ্য, ফুটপাত ও সড়কের দোকান থেকে চাঁদা আদায়, আধিপত্য বিস্তারসহ নানা অপরাধমূলক কাজে কিশোরদের ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব বড় ভাই মূলত রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকেন। নগরীতে আওয়ামী লীগের বিবদমান দুটি গ্রুপের শীর্ষ নেতার নাম ভাঙিয়ে চলে এসব কিশোর গ্যাং গ্রুপ। বিভিন্ন অপরাধে প্রশ্রয় দেওয়ার জন্য এ পর্যন্ত অন্তত ৬০ জন নেতার নাম উঠে এসেছে আলোচনায়। গত ২৮ মার্চ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৬টি কিশোর গ্যাং গ্রুপের ৩৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ ছাড়া নানা সময়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন গ্রুপের বহু সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছে।
১১ মে, ২০২৪

স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত কিশোর বিজ্ঞানী তারিফ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত
রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পাওয়া পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার কিশোর বিজ্ঞানী তাহের মাহমুদ তারিফ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৭ মে) ঈশ্বরদী-পাবনা সড়কের কালিকাপুর এলাকায় ট্রাক-অটোরিকশার সংঘর্ষে তিনি নিহত হন। নিহত তাহের মাহমুদ তারিফ ঈশ্বরদী পৌর শহরের নারিচা এলাকার মৃত আব্দুস সালামের ছেলে। সে ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবারের এইচএসসি পরীক্ষা অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। তারিফ ২০২১ সালে ৮ জুন ঈশ্বরদীর ইউএনও কার্যালয়ে সাংবাদিকদের অক্সিজেন জেনারেটরটির উদ্ভাবন সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন। ক্ষুদে এ বিজ্ঞানী ২০২২ সালে ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে ‘শেখ রাসেল’ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার গ্রহণ করে। ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবীর কুমার দাশ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ঈশ্বরদী উপজেলা শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার আরিফুল ইসলাম বলেন, বিজ্ঞানের সামগ্রী কেনার জন্য তারিফ পাবনা যাচ্ছিলেন। দুর্ঘটনায় নিহত হন তিনি। বিজ্ঞানে প্রতিভাধর কিশোর বিজ্ঞানীর মৃত্যুর ঘটনায় ছড়িয়ে পড়লে ঈশ্বরদীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। তিনি বলেন, করোনার সময় অল্প খরচে বাতাস থেকে অক্সিজেন উৎপাদন প্ল্যান্ট তৈরি করে দেশব্যাপী তাক লাগিয়েছিল তাহের মাহমুদ তারিফ। তখন সে ঈশ্বরদী সরকারি সাঁড়া মাড়োয়ারি স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল। করোনার আগে তার বাবা শ্বাসকষ্টে মারা যান। বাবার মৃত্যুর ঘটনায় তাহের মাহমুদ অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরির পরিকল্পনা শুরু করে। ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ রবিউল ইসলাম বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আমরা একজন ক্ষুদে বিজ্ঞানী ও মেধাবী শিক্ষার্থী হারালাম। সরকারি সাঁড়া মাড়োয়ারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম শাহীন বলেন, কিশোর বিজ্ঞানী তারিফ এ স্কুলে থাকা অবস্থায় অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরি করে দেশে তাক লাগিয়েছিল। অল্পবয়সে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল। আমরা একজন মেধাবী শিক্ষার্থীকে হারালাম। পাকশী হাইওয়ে ফাঁড়ির পুলিশ উপপরিদর্শক (এসআই) ফরিদুজ্জামান বলেন, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঈশ্বরদী থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে পাবনায় যাচ্ছিলেন তারিফ। পথে দাশুড়িয়ার কালিকাপুরে অজ্ঞাত একটি ট্রাকের সঙ্গে অটোরিকশার ধাক্কা লাগে। এতে তাহের মাহমুদ তারিফ গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সেখানে চিকিৎসা শেষে ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
০৮ মে, ২০২৪

ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় শিক্ষকের হাত ভেঙে দিল কিশোর গ্যাং
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে শ্রেণিকক্ষে ঢুকে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে ইভটিজিং করার প্রতিবাদ করায় এক শিক্ষককে পিটিয়ে দুই হাত ভেঙে দিয়েছে কিশোর গ্যাং। ভুক্তভোগী শিক্ষকের নাম মো. হাসান (৩৪)। তিনি উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের জামেয়া শরাফতিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক। গত রোববার (৫ মে) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের মদিনা বাজারের পূর্ব পাশে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে, একই দিন বেলা পৌনে ১১টার দিকে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের ওই মাদ্রাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণির কক্ষে এই ইভটিজিংয়ের ঘটনা ঘটে। হামলাকারী মো. রাজু (২৪) ও আবু নোমান (২৫) ওই মাদ্রাসা এলাকার বাসিন্দা। জামেয়া শরাফতিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক মো. শহীদ উল্যাহ অভিযোগ করে বলেন, বেলা পৌনে ১১টার দিকে বহিরাগত রাজু জামেয়া শরাফতিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ক্যাম্পাসে আসে। এরপর সে মাদ্রাসার ছাত্র নোমানের সহযোগিতায় ৬ষ্ঠ শ্রেণির কক্ষে ঢুকে এক ছাত্রীকে ইভটিজিং করে। ওই সময় ছাত্রী তার ভয়ে শ্রেণি কক্ষে থাকা বেঞ্চের নিচে লুকিয়ে যায়। এরপর ইভটিজিংয়ের শিকার ছাত্রীর অন্য সহপাঠীরা বাধা দিলেও রাজু তাকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। তিনি বলেন, খবর পেয়ে মাদ্রাসার নূরানী বিভাগের শিক্ষক মো. সোহেল এগিয়ে আসলে ইভটিজার রাজু ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা মাদ্রাসার ভেতরে ওই শিক্ষককে মারধর করে। তাৎক্ষণিক একই মাদ্রাসার শিক্ষক হাসান এগিয়ে এসে সহকর্মী শিক্ষকের ওপর হামলা ও ছাত্রীকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করলে তার সঙ্গেও ইভটিজারদের বিরোধ দেখা দেয়। ওই বিরোধের জের ধরে বিকেল ৫টার দিকে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য রাজু ও নোমানের নেতৃত্বে ৭-৮ জন কিশোর গ্যাং সদস্য গতিরোধ করে। পরে তারা শিক্ষক হাসানের ওপর হামলা চালায়। তখন হামলাকারীরা তাকে রাস্তায় দৌড়াতে দৌড়াতে বেধড়ক পেটায়। এতে তার দুই হাত ভেঙে যায়। হামলার শিকার শিক্ষকের শাশুড়ি বিবি খাদিজা ও শ্বশুর মো. সাহাব উদ্দিন বলেন, ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় কিশোর গ্যাং সদস্যরা এ হামলা চালিয়েছে। বর্তমানে হাসানকে জেলা শহর মাইজদীর জাপান বাংলাদেশ হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। জাপান বাংলাদেশ হাসপাতালের অর্থোপেডিক ডাক্তার আবদুর রহমান বলেন, তার একটি হাতে অপারেশন করে পাত বসানো হয়েছে। অন্য একটি হাতে প্লাস্টার করা হয়েছে। দুটি হাত ভেঙে গেছে। নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, বিষয়টি শুনেছি। ভুক্তভোগী শিক্ষকের পরিবারকে কোম্পানীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
০৭ মে, ২০২৪

ধানবোঝাই ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে কিশোর নিহত
নাটোরের সিংড়ায় ধানবোঝাই ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে মো. আরমান নামের এক কিশোর নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৭ মে) সকাল ৯টায় উপজেলার ছোট চোউরগাড়ি বিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মো. আরমান আলী পৌর এলাকার উত্তর দমদমা মহল্লার মো. গোলাম মোস্তফার ছেলে। আরমান সিংড়া দমদমা পাইলট হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সিংড়া থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সকালে আরমান তার মামার ট্রাক নিয়ে ছোট চোউরগাড়ি বিলে কাটা ধান আনতে যায়। ধানবোঝাই করে ফিরে আসার সময় রাস্তায় ওঠার সময় ট্রাকটি উল্টে যায়। এতে ট্রাক থেকে ছিটকে নিচে চাপা পড়ে। ঘটনাস্থলেই নিহত হয় আরমান। এ সময় তিনজন ধানকাটা শ্রমিকও আহত হয়েছেন। আরমান নিজেই ট্রাকটি চালাচ্ছিল। তিনি বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। আরমানের মরদেহ তার পরিবার বাড়িতে নিয়ে গেছে। উল্টে যাওয়া ট্রাকটি এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
০৭ মে, ২০২৪

মিঠাপুকুরে ব্যাংকে কিশোর গ্যাংয়ের হামলা, লুটপাট
রংপুরের মিঠাপুকুরে ডাচ-বাংলা এজেন্ট ব্যাংকিং শাখায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা হামলা চালিয়েছে। এ সময় ব্যাংকটির অফিস কক্ষ ভাঙচুরসহ প্রায় ১৫ লাখ টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। হামলায় এজেন্ট ব্যাংকিং শাখার উদ্যোক্তা আব্দুর রাজ্জাক গুরুতর আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মিঠাপুকুর উপজেলার ২নং রানীপুকুর ইউনিয়নের বলদিপুকুর বাজারে ডাচ-বাংলা এজেন্ট ব্যাংকিং শাখার অবস্থান। গতকাল সোমবার বিকেল ৩টার দিকে হঠাৎ কিশোর গ্যাংয়ের ১০-১২ সদস্য লাঠি, ছুরি, রড নিয়ে ভেতরে ঢুকে তাণ্ডব চালায়। তারা কম্পিউটার, ল্যাপটপ, চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর এবং ড্রয়ার ভেঙে টাকা লুটপাট করে নেয়। শাখাটির উদ্যোক্তা আব্দুর রাজ্জাক বাধা দিতে গেলে তার পায়ে ছুরি দিয়ে কোপ দেয়। এ সময় তার চিৎকারে বাজারে অবস্থানরত লোকজন ছুটে এসে কিশোর গ্যাংয়ের দুই সদস্য সজীব পাহান (২০) ও কনক পাহানকে (২০) ধরে ফেলে। অন্যরা পালিয়ে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘কিছু বুঝে ওঠার আগেই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা অফিসে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে। ড্রয়ার ভেঙে ১৫ লাখ টাকা নিয়ে গেছে তারা। এ ছাড়া ভাঙচুর করা হয়েছে তিন লক্ষাধিক টাকার মালপত্র।’ মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা ধরে দুজনকে পুলিশে দিয়েছে। তারা এখন থানা হেফাজতে আছে। এ নিয়ে মামলা হলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
০৭ মে, ২০২৪
X